গল্পের নামঃ- #তুই_তারারে_ভিনদেশী(সিজন-২)
লেখিকাঃ- #konika_islam (sanju)
part:10
সন্ধ্যা ৬টার দিকে সবাই চলে এসেছে সবাই একসাথে বসে আড্ডা দিচ্ছিল। আফরিন ব্যস্ত রান্না ঘরে। আদিত্যও তা দেখে বলে
” তোরা আড্ডা দে আমি আসছি। অহনা তো বলছে তাকে বিয়েতে ৩টা লেহেঙ্গা দিতে হবে এইটা ঐটা৷ আদিত্য গিয়ে দেখে আফরিন ওদের জন্য সন্ধ্যার নাশতা দিচ্ছে, চা নুডলস।
আফরিন একটা আপেল খাচ্ছে আর কাজ করছে। আদিত্য হুট করে আফরিনপর হাত থেকে আপেলটা নিয়ে নেয় আফরিন দেখে আদিত্য। আফরিন বলে
” কি হয়েছে? আদিত্য আপেল টায় কামড় বসয়ি চিবুতে চিবুতে বলে
” আপেল খেতে ইচ্ছে করছিল,। আফরিন বলে
” আমাকে বলতে পারতেন কেটে দিতাম। আদিত্য আফরিনকে নিজের কাছে নিয়ে আসে এক টানে আর হালকা করে ফু দিয়ে চুলগুলো সরিয়ে বলে
” এটা খেতে কি সমস্যা? আফরিন কি বলবে। নিজেকে ছাড়াতে ছাড়াতে বলে
” কোনো সমস্যা নেই৷ কিন্তু আমাকে ছাড়ুন। আদি বলে
” ধরলাম কই যে ছাড়বো। বলেই নিজের কাছে নিয়ে আসে। আফরিন বলে
” আপনাকে আবার মরিচ খায়িয়ে দিব। আফরিন আর কিছু বলতে যাবে তার আগেই আদিত্য আফরিনকে কিস করে বসে। আর আফরিন চুপ হয়ে যায়। ডিপ একটা কিস করে বলে
” এই একটা মেডিসিন, আর আমি কাছে৷ আসলে এমন কর কেন? খেয়ে ফেলব আমি? আফরিন বলে
” আপনি একটা অসভ্য হুটহাট কিস করে বসেন। আমি আপনার বিয়ে করা বউ না। আর আপনি কাছে৷ আসলেই বেচারা হার্ট আমার লাফাতে লাগে।
আদিত্য বলে
” সামথিং সামথিং? আফরিন রেগে চোখ পাকিয়ে বলে
” নাথিং, জান এখান থেকে নয়তো সবাইকে ইলিশ মাছের জায়গায় আপনাকে ভেজে খাওয়াবে। আদিত্য বলে
” নিরামিষ একটা। বুঝনা আমি এমন কেন করি? আফরিন আদিত্যর দিকে তাকিয়ে বলে
” কিছু জিনিস না বুঝাই ভালো। আদিত্য নিজের হাত আলগা করতেই আফরিন ওদের খাবর নিয়ে ড্রয়িং রুমে চলে যায়। আদিত্যর রাগ হচ্ছে। আফরিনে জেনে বুঝে এমনটা কেন করছে।
___________
সবাই একসাথে গল্প করছে আর আদিত্য ফোন নিয়ে ব্যস্ত। তার মুখে কোনো কথা নেই। হঠাৎ করেই আহান দুষ্টামি করে বলে
” আফরিন তোমার বয়ফ্রেন্ড আছে, থাকলে বলো অহনা আর আমার সাথে তোমাদেরও বিয়ে হয়ে যাবে ? আফরিন বলে
” নাহ, ভাইয়া কেউ নেই । আদিত্য আফরিনের দিকে তাকিয়ে বলে
” তাহলে সমস্যা কি? কেউ নেই। তোমাকে যে আমি ভালোবাসি এটা সবাই জানে বুঝে তুমি কেন বুঝো না!?
আদিত্যের কথা শুনে সবাই অবকা, কারণ কেউ প্রস্তুত ছিল না। আফরিন বলে
” আমরা এই ব্যাপারে কথা না বলি। আদিত্য রেগে দাড়িয়ে বলে
” এত কিসের দেমাগ!? আফরিনও রেগে যায় আর বলে
” কিসের দেমাগ মানে? দেমাগ কোথায় থেকে আসছে? আদিত্য বলে
” দেমাগি নয়তো কি!! সবসময়ই তো এড়িয়ে চলো। আফরিন বলে
” দেমাগি আমি না আপনি মি. আদিত্য। আপনি জানেন ভেবেছিলাম হয়তো আপনি ভালো হয়েগিয়েছেন। কিন্তু আপনি? আপনিতো আপনি।
আদিত্য কিছু বলতে যাবে তার আগেই কৌশাল বলে
” আহ আদিত্য লিমিটে থাক। মেয়েটা এখনো পর্যন্ত নিজেকে নরমাল করতে পারিনি। আন্টি মারা গেছেন সবে একটা মাস। আদিত্য বলে
” সে তো আফরিনের আপন মা না। আফরিন এবার উঠে আদিত্যকে চড় বসিয়ে দেয়। আদিত্য রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আফরিনের দিকে। আফরিন বলে
” আপন নাকি পর আপনি জানেন? মানুষের একটা লিমিট থাকা উচিত যেটা আপনি সেই কখন ক্রশ করেছেন। সব সম্পর্ক রক্তের হয় না কিন্তু সেটা হয় অনেক আপন। আর আপনি আমাকে ভালোবাসেন বললেন? সত্যি!! আপনার কাছে তো সম্পর্কের কোনো মূল্য নেই। আদিত্য বলে
” ভুলটা আমারই তোমার মতো মেয়েকে আমি মাথায় করে রেখেছিলাম। আহান বলে
” আদি ইস্টপ। আদি বলে
” তুই চুপ থাক। বলেই চলে যায় বাসা থেকে।
আর আফরিন বসে পরে সোফায় চোখ বেয়ে পানি পরছে। আদিত্য এমন কেন? এই এক মাসে এই চিনলো তাকে? আর এটা কি আদেও ভালোবাসা!! অহনা আফরিনকে শান্ত করে ঐদিন রাতে আহান কৌশাল কোনরকম খেয়ে বেড়িয়ে পরে আদিত্যকে খুঁজতে। অহনা, অন্যা আফরিনের সাথেই থাকে।
_______________
৪ দিন পর আজ আফরিন ভার্সিটিতে এসেছে, সামনে যেতেই দেখ আদিত্য আহান আর কৌশাল দাড়িয়ে। আফরিন চুপচাপ ওদের পাশকাটিয়ে চলে যায় আফরিনের সাথে যায় অন্যাও। অহনা কিছু কথা বলে চলে আসে। আদিত্যরও এতে কিছু যায় আসে না ভাব নিলেও ভিতরের অগ্নি ফুটন্ত লাভায় পরিণত হয়েছে।
রেস্টুরেন্টে বসে আছে অন্যা, কৌশাল আহান আর অহনা সাথে আদিত্যও। অন্যা বলে
” ভাইয়া আফরিন আর ৫টা মেয়ের মতো ভাবে না। আমি যতদূর জানি ও খুব তাড়াতাড়ি কোনো ডিসিশন নেয় না। আপনি সেদিন একটু বেশি বলে ফেলেছেন।
আদিত্য বলে
” হ্যা সব মানলাম কিন্তু ওতো আমাকে যে ভাবে ইগনোর কর মনে হয় আমি কোনো মশা মাছির থেকেও তুচ্ছ। আহান বলে
” সেটাই স্বাভাবিক। কারণ কাজই এমন করিস। আদিত্য বলে
” আই লাভ হার। কৌশাল বলে
” ভালোবাসি বললেই ভালোবাসা পাওয়া যায় না। আমাকেই দেখ না অন্যাকে কম বলি? অন্যা কৌশালের দিকে অপরাধী দৃষ্টিতে তাকায়।
আদিত্য বলে
” তো এখন আমি কি করব?? অহনা বলে
” কালকে বিকেলে আফরিনকে পার্কে নিয়ে আসবো তখন না হয়, আদি ভাইয়া বাকি কাজটা করে ফেলবে। সবাই রাজি
বিকেল ৪টা আফরিন, অহনা আর অন্যা পার্কে এসেছে। অহনা পরেছে একটা আকাশী কালারের চুরিদার। অন্যা টপস জিনস। আর আফরিন পরেছে হুয়াইট কালারের লং ড্রেস। আহান অহনাকে ফোনে মেসেজ করে দেয় যে তারা চলে এসেছে।
কিন্তু ফোন সাইলেন্ট থাকাতে অহনা খেয়াল করেনি। তখনই একটা ছেলে এসে এক গুচ্ছ গোলাপ ফুল দিয়ে আফরিনকে পিছন থেকে ডেকে মাথা নিচু করে বলে
“আরশি আই লাভ ইউ। আফরিন পিছনে ফিরে দেখে ছেলেটা মাথা নিচু করে আছে। আর আরশি যেহেতু বলেছে তাহলে হয়তো ভুল। কারণ তার পাশ দিয়ে একটু আগে সেম একটা ড্রেস পরা মেয়ে গিয়েছে। আফরিন হালকা হেসে বলে
” ভাইয়া, আমি আরশি না আফরিন। ছেলেটা মাথা তুলে আফরিনকে দেখে ভেবাচেকা খেয়ে যায়। ছেলেটা বলে
” সরি সরি আপু। আসলে আমি ভুলবশত। আফরিন বলে
” আরে সমস্যা নেই। আপনি উঠে দাড়ান। ছেলপটা নিজের হাতের ফুল গুলো এগিয়ে দেয় আর বলে
” আপু ফুল গুলো ধরুন আমি একটু আমার জুতার ফিতাটা ঠিক করি। অন্যা হেসে বলে
” আহারে বেচারা। আফরিন ফুল গুলো ধরে ছেলেটা উঠে দাড়ায় আর পিছু তাকিয়ে দেখে মেয়েটা চলে গিয়েছে। ছেলেটা বলে
” আপু যাকে প্রপোজ করতে চেয়েছিলাম সে চলে গিয়েছে ফুলগুলো না হয় আপনি রেখেদিন। আফরিন বলে
” আমি কি ভাবে? অহনা ঝাড়ি দিয়ে বলে
” মজা করছেন? ফাইজলামি? তখনই কৌশাল বলে উঠে
” কি হচ্ছে এখানে? অন্যা বলে
” দেখেন না? আফরিন দুষ্টামি করে বলে
” প্রপোজ করা হচ্ছে। আদিত্য বলে
” অহহ আচ্ছা। আফরিন আদিত্যর কন্ঠ শুনে বলে
” আপনি এখানে? আদিত্য বলে
” কেন ডিস্টার্ব করলাম বুঝি? আহান সেই ছেলেটাকে ধমক দিয়ে বলে
“যাহ এখান থেকে। ছেলেটা ভয় পেয়ে যায় কিছু সময় দাড়িয়ে চলে যায়।আদিত্য আবার বলে
” সেদিন না বললা তোমার বয়ফ্রেন্ড নেই আর আজকেই? অহনা কিছু বলতে যাবে আদি বলে
” তোমার সাথে আমি কথা বলছি না । আফরিন আদিত্যর কথা শুনে রেগে যায় আর বলে
” সেদিন বলিছি নেই আজকে হয়েছে তাতে আপনার কি? আদিত্য বলে
” ৪ দিনেই বয়ফ্রেন্ড বাহ। তা কত নাম্বার? আফরিন বলে
” কত নাম্বার মানে!! অন্যা বলে
” ভাইয়া কথাটাতো শুনুন। আদিত্য রেগে ধমক দিয়ে বলে
” কথা বলতে বারণ করেছি। আর কত নাম্বার মানে এটাই যে কত নাম্বার বয়ফ্রেন্ড? তোমরা মেয়েরাতো আবার ঝাকে ঝাকে বয় ফ্রেন্ড নিয়ে ঘুরো। আর যেমন মেয়ে তেমন স্বভাব। আফরিন রেগে আদিত্যর শার্টের কর্লার ধরে বলে
“একটা মেয়েকে জাজ করার আগে ভুলে যাবেন না বাসায় আপনারও মা, বোন ভাবি আছে।
আদিত্য বলে
” ও শাট-আপ, ড্রামা বন্ধ করো। আফরিন কিছু না বলেই চলে যায় অন্যা বলে
“আদি ভািয়া সব কিছুর একটা লিমিট থাকে। আজকে আপনি যা করেছেন বেশি বেশি সেখানে আফরিনের কোনো দোষ ছিল না।
পরে অহনা আদিত্যকে সব কিছু বললে আদিত্য চোখ বুজে নিজের চুল খামচে ধরে কৌশাল বলে
” এখন যা হয়েছে তার জন্য একমাত্র তুই দাই। আদিত্য কাউকে কিছু না বলে চলে যায় আফরিনের পিছু পিছু কিন্তু তার আগেই আফরিন সেখন থেকে বেড়িয়ে গিয়েছে। আজ প্রচন্ড রকম ভাবে কান্না পাচ্ছে। আর কখনোই আসবে না সে এই আদিত্যর অহংকার দিয়ে তৈরি এর শহরে। চলে যাবে অনেক দূরে।
চলবে
রিচেক-হয়নি। ভুলত্রুটি ক্ষমার চোখে।