তুই যে আমারই পর্ব-২০+২১

0
4029

#তুই_যে_আমারই
#আঁখি আজমীর নুরা
part 20

এভাবে ছটপটাতে ছটপটাতে দুজনেরই রাতটা কেটে যায়। সকালবেলা আঁখি ঘুম থেকে উঠতে অনেকটা,দেরি হয়ে যায়। তাই কোনোরকম ড্রেস পরে স্কুলে চলে গেলো। দেখলো গেইটের সামনে আজকে আয়াজকে দেখতে পাইনি। কারণ আয়াজের অফিসের একটা প্রবলেম হয়েছে যার কারণে দ্রুত অফিসে যেতে হয়। তাই আর যাওয়া হলোনা।
এদিকে ক্লাসে দুই ঘন্টা যেতেই আঁখির পেটের মধ্যে কুটুর কুটুর আওয়াজ বের হচ্ছে। কারণ অনেকক্ষণ না খেয়ে আছে। রাতেও খাইনি। সকালেও তাড়াহুড়ায় কিছু খাওয়া হয়নি। টিফিন পিরিয়ডে ক্যান্টিনে গিয়ে ফটাফট বিস্কিট নিয়ে খেতে থাকে। খেতে খেতে হঠাৎ নোটিশ করলো আয়াজ সামনে বসে আছে। আর এক নজরে আঁখির দিকে চেয়ে আছে। আঁখি অবাক চোখে তাকায় আর সাথে ভিষণ রাগও হয়। কেন এসেছে এই লোকটা এখানে? কি চায় তার? আঁখি উঠে যেতেই নিলে আয়াজ আঁখির হাত ধরে বসিয়ে দেয় আর বলতে লাগে,
-কি হয়েছে খাবার শেষ না করে উঠে যাচ্ছিস কেন?
আঁখি কোনো কথায় বলছে না। বিরক্তি নিয়ে এদিক ওদিক তাকাচ্ছে।
–রাতে খেয়েছিলি? চেহেরার এই অবস্থা কেন? চুপ করে আছিস কেন?
–তখন দেখলাম রিয়া আসছে। আমি সাথে সাথেই রিয়াকে ডাক দিলাম। আঁখি রিয়াকে ডাকতে দেখে আয়াজ বলে উঠলো ওকে কেনো ডাকছিস? প্লিজ বাড়ি ফিরে চল।

–রিয়া আসতেই রিয়াকে নিয়ে চলে যেতে নিলেই আয়াজ আঁখির হাত চেপে ধরে আর বলতে লাগে কি হলো আমার কথার একটা আনসারও কিন্তু আমি পাই নি।
এবার আঁখির যেনো অসম্ভব মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। তাই আঁখি রিয়াকে বলে
–রিয়া এই লোকটাকে বল এখান থেকে এই মুহূর্তে চলে যেতে। এভাবে যেন রোজ রোজ আমাকে বিরক্তি না করে। লোকটাকে বারন কর এখানে যেনো আর না আসে। যদি নেক্সট টাইম লোকটা এখানে এসেছেতো আমি এমন কোনো অঘটন ঘটিয়ে ফেলবো যার মাশুল সারাজীবন দিয়েও শেষ করতে পারবে না। বলেই আঁখি ওখান থেকে হনহনিয়ে চলে যায়।
-আর আয়াজ সেতো যাবার পানে চেয়ে আছে। আর মনে মনে বলে ঠিক আছে আর আসবো না। তাও তুই হ্যাপি থাক।

পরেরদিন থেকে আয়াজ আর স্কুলে আসে না। আঁখিও নিজের মতো করে চলতে লাগে। কখনো খাই আবার কখনো খাইনা। খেলেও দুই একটা মুখে তুলে উঠে যায়। হোস্টেলের খাবার একদম খেতে পারে না। পুরো একমাস চলে যায় এর মধ্যে। আঁখির এক্সাম ও শেষ হয়ে যায়। এরমধ্যে আঁখি বুঝে যায় যে, সে নিজের অজান্তে আয়াজকে কতোটা ভালোবেসে ফেলেছে। কিন্তু যতই যায় হয়ে যাক সে আয়াজকে এতো তারাতাড়ি কিছুতেই ক্ষমা করবে না। বুঝুক ভালোবাসার মানুষকে অবিশ্বাস করার ফল।

আয়াজ যেনো আর পারছেই না। যেই মেয়ে তার অভ্যাস হয়ে গেছে আর সেই মেয়েকেই কিনা পুরো একটি মাস না দেখে আছে। নাহ আর না অনেক হয়েছে। কালই আমি আঁখির স্কুলে যাব। যা হওয়ার হোক।
পরেরদিনই আয়াজ স্কুলে যায়। আর দুর থেকে দেখে আঁখি আসছে। দেখেই যেনো বুকটা হাহা করে উঠলো।
–পুরো শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছো। চোখের নিচে খালি জমে গেছে। দৌড়ে আঁখির কাছে গেলাম।
এভাবে হঠাৎ কাউকে সামনে আসতে দেখে থমকে গেলাম। সামনে তাকিয়ে দেখি আয়াজ ভাইয়া। আমি কিছু বলতে যাব তার আগেই আয়াজ ভাইয়া বলে উঠলো
–শরীরের এই অবস্থা করেছিস কেন?
আমি মাথা নিচু করে চুপ করে আছি। আমাকে এভাবে চুপ থাকতে দেখে আয়াজ ধমক দিয়ে উঠলো
–আমি ধমক খেয়ে আয়াজ ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে দেখলাম চোখ মুখ লাল টকটকে হয়ে আছে। রাগি চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি কিছুটা ভয় পেয়ে গেলাম।
–কি হলো?
–ততাতে আপনার কি?
–আমার কি তাই না! আমার থেকে দূরে থেকেই তো তুই ভালো থাকতে চেয়েছিলি তাহলে এই অবস্থা করেছিস কেন?
–আমি চুপ করে আছি কোনো কথায় বলছি না। কারণ উত্তর দেওয়ার মতো কিছুই নেই।
–সকালে খেয়েছিস?
–এমন প্রশ্নে কি উত্তর দিবো কিছুই খুঁজে পাচ্ছি না। কারণ হোস্টেলে উঠেছি পর্যন্ত সকালে একদিনও ব্রেকফাস্ট করা হয়ে উঠে না। কজ রাতে ঘুম হয়না। এদিকে ভোরবেলা নামায পরে শুলেই আর উঠতে পারি না। যখন উঠি তখন স্কুলের সময় হয়ে যায়।
—সমস্যা কি কথা বলছিস না কেন? তোকে কি বোবায় পেয়েছে?
–খখেয়েছি!
–মিথ্যা বলার জায়গা পাসনা। এক চড় মারলে সব মিথ্যে গুছে যাবে।
–মাথা নিচু করে আছি আমি।
হঠাৎ আয়াজ ভাইয়া আমাকে হাত ধরে কোথায় যেনো নিয়ে যেতে থাকে। আমাকে গাড়িতে উঠিয়ে গাড়ি স্টার্ট করতেই আমি জিজ্ঞেস করে উঠলাম
-কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন আমাকে?
-আয়াজ কোনো কথায় বলছে না।
–যাব না আমি। আমার স্কুলে লেইট হয়ে যাচ্ছে।
–কোনো সাউন্ড নাহ… চুপ থাকবি একদম।

আয়াজ আমাকে একটা রেস্টুরেন্টের সামনে নিয়ে গেলো। আমাকে নিয়ে ভিতরে গেলো। দেখলাম অনেক খাবার অর্ডার করেছে
–এতো খাবার কে খাবে?
–মানুষ খাবে।
তারপর আয়াজ একটা প্লেটে খাবার বেড়ে নিয়ে আয়াজ আমার সামনে খাবার ধরলো আর বললো নে হা কর।
আমিও আর ভনিতা না করে খেয়ে নিলাম। কারণ অনেকদিন ভালো মন্দ কিছু খাওয়া হয়নি।
–আয়াজ আমাকে খাওয়াচ্ছে আর আমি তৃপ্তি নিয়ে খাচ্ছি। আয়াজ আমার খাওয়া দেখেই তার আর বুঝতে বাকি নেই সবকিছু।
আপনি খখাবেননা?
–নাহহ। তুই খা। আমার খাওয়া নাখাওয়াতে তোর কি এসে যায়।
কথাটা শুনে যেন মনটা কালো হয়ে গেলো। উনি আমাকে এভাবে বলতে পারলেন? খাওয়ার ইচ্ছেটাই যেনো মিটে গেছে। তাই বললাম
–আর খাবো না।
-আচ্ছা হয়েছে। খাচ্ছি! বলেই মুখে খাবার তুলে নিলো আয়াজ। ব্যাপারটা আমার অনেক ভালো লাগলো।
এরপর আয়াজ আমাকে বলল

কালকে থেকে আমি বাসা থেকে খাবার নিয়ে আসবো। হোস্টেলের খাবার আর খেতে হবে না। আমি আর কিছু বললাম নাহ। কজ আমি নিজেও হোস্টেলের খাবার খেতে পারছি না। আমাকে খাইয়ে দিয়ে মুখ মুছে দিলো। আর বলল স্কুলের তো আর টাইম নেই। তাই আর স্কুলে যাওয়া হলোনা।

এরপর আয়াজ আমাকে গাড়ি করে নিয়ে, কই যেনো যাচ্ছে। আমি কিছু জিজ্ঞেস করলাম নাহ আর। দেখলাম একটা লেকের পাশে গাড়িটি পার্ক করলো। তারপর আমাকে নিয়ে লেকের পাশে গিয়ে বসলো। আমি একমনে পানিগুলোর দিকে তাকিয়ে আছি। কি স্বচ্ছ পানিগুলো।

দুইজনই চুপচাপ বসে আছি। হঠাৎ আয়াজের চোখে আইসক্রিম স্টল চোখে পরলো। আর ভাবলো আঁখিতো অনেক পছন্দ করে আইসক্রিম। তাই সে উঠে গিয়ে দুটো আইসক্রিম নিয়ে আসলো। এনে আমার হাতে দিলো। আমি ভিষণ খুশি হয়ে গেলাম। সাথে সাথেই দুটো প্যাকেটই ছিড়ে খেতে শুরু করলাম। একবার ডান হাতেরটাতে কামড় দিচ্ছি তো আরেকবার বাম হাতেরটা।
আয়াজ আঁখির আইসক্রিম খাওয়া দেখে হাসছে। আমি উনাকে হাসতে দেখে বললাম,
–আপনার জন্য আনেননি যে? আপনি খাবেন না?
–খাবোতো
–কই থেকে খাবেন। আমি কিন্তু ভাগ দিতে পারবো না বলে দিচ্ছি।
হঠাৎ দেখলাম আয়াজ আমার দিকে এগিয়ে এসে আমার ঠোঁট দুটো আঁকড়ে ধরে তার ঠোঁটের মাঝে। আমি যেনো চমকে গেলাম। এরপর কিছুক্ষণ পর আয়াজ আমাকে ছেড়ে দিয়ে বলল
–নে আমার খাওয়া হয়ে গেছে। আসলে আঁখি আইসক্রিম খেতে গিয়ে সারা মুখে মাখিয়ে ফেলেছিলো। যার জন্য আয়াজ আর নিজেকে ধরে রাখতে পারে নি।

আচমকা এমন হওয়ায় আমি চুপ হয়ে যায়। বেশ অনেকক্ষণ এভাবে নিরবে কেটে যাওয়ার পর….

আয়াজ আমার হাতটা তার হাতের মুঠোয় নিলো আর বলল আমাকে কি এখনো ক্ষমা করা যায়না। আর কতো এভাবে শাস্তি দিবি? প্লিজ বাড়ি চলে আয়। আমার কলিজাটা।

আমি কিছুই বলছি না। চুপ করে আছি। কিছু বলতে আমার ভালো লাগছে না।
চলবে

#তুই_যে_আমারই
#আঁখি আজমীর নুরা
part 21
হঠাৎ নোটিশ করলাম লেকের কোনায় অনেক সুন্দর কাশফুল। আমি দৌড়ে উঠে কাশফুল গুলোর কাছে গেলাম। গিয়ে অনেক গুলো ফুল নিলাম। এতো সফট ফুলগুলো, আমার ভিষণ ভালো লাগে। ওগুলো নিয়ে আমি খেলতে থাকি। আয়াজ দূর থেকে বসে আঁখির কান্ডকারখানা দেখে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে হিরে মুক্তো দিলেও এতো খুশি হতো না। যতটা খুশি কাশফুল গুলো পেয়ে হয়েছে। আয়াজ ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো আড়াইটে বেজে গেছে। তাই আয়াজ বলল চল অনেক হয়েছে। লাঞ্চ করবি বলেই আঁখিকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে হাত ধরে নিয়ে যেতে থাকে। এরপর আয়াজ সহ দুজনেই লাঞ্চ করেই আয়াজ আঁখিকে হোস্টলে পৌঁছে দেয়। আর বলে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে ঘুমোবি। আঁখি কিছু না বলে চলে যেতে লাগে। আঁখি যেতেই আয়াজ ও চলে যায়।

আয়াজ বাসায় গিয়ে সাওয়ার নিয়ে নিচে যায় যায়। গিয়েই মাকে বলে
–আম্মু আঁখির খাবার এখন থেকে বাসায় রেডি করিও। আমি নিয়ে যাবো। হোস্টেলের খাবার মেয়েটা খেতে পারছে না।
–আচ্ছা। আয় খেতে বস।
-নাহ আম্মু বাইরে থেকে খেয়ে এসেছি।
–রোজিনা চৌধুরী আর কিছু বললেন নাহ।

আয়াজ উপরে এসে ভাবতে থাকে কি করে তার প্রিয়তমার রাগ ভাঙ্গাবে। পরক্ষণেই কিছু একটা ভাবলো তারপর মুচকি হেসে লম্বা একটা শান্তির ঘুম দিলো।
এরমধ্যে তিনদিন পার হয়ে যায়। কিন্তু একদিনইও আয়াজ আর আঁখির মুখোমুখি হয়নি। ড্রাইভারকে দিয়ে খাবার পাঠাতে থাকে।
আমি যেনো একটু অবাক ই হয়। বাট কিছু বললাম নাহ। মনে মনে খুশি হলাম। কারণ আমি আয়াজ ভাইয়া থেকে দূরে থাকতে চায়। পরেরদিন স্কুল ছুটির পর দেখলাম আয়াজ দাঁড়িয়ে আছে।
আমি চমকে গেলাম এভাবে দেখে। তারপর আয়াজ আমাকে হাত ধরে গাড়িতে বসিয়ে দেয়। আর চোখ দুটো কাপড় দিয়ে বেঁধে দেয়। আমি জিজ্ঞেস করলাম কি হলো চোখ বেঁধেছেন কেনো?
উনি কোনো কথায় বলছে না। একমনে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছে। গাড়ি থামতেই আয়াজ আমাকে হাত ধরে নামিয়ে নিয়ে কই যেনো নিয়ে যায়। এরপর আয়াজ আমার চোখ দুটো খুলে দেয়। আমি চোখ মেলতেই অবাক হয়ে যায়। কারণ একটা খোলা মাঠে চারদিকে লাভশেফের বেলুন আর সব বেলুনে সরি লিখা আছে। চারদিকে গোলাপে ভরপুর হয়ে আছে। এরপর আকাশে ধুমধাম আওয়াজ হতেই উপরে তাকালাম। দেখলাম বিকেলের আকাশে তারাবাজি দিয়ে সরি লিখাটা আর্ট হচ্ছে।
এরপর আয়াজ আমার দুইতহাত ধরে বলল জানি তোকে বিশ্বাস না করে অনেক বড় অপরাধ করেছি আর সব থেকে বড় অপরাধ করেছি রাগের মাথায় তোর সাথে অমানবিক অত্যাচার করে। অনেকতো শাস্তি দিয়েছিস। অনেকতো কষ্ট পেয়েছি, এবারও কি ক্ষমা করা যায়না। প্লিজ ক্ষমা করে দে আমাকে এবারের মতো। প্লিজ এবারের মতো ক্ষমা করে দে আমিও আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম নাহ। আয়াজকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিলাম। অনেকক্ষণ কাঁদার পর আয়াজ বলল
–হয়েছেতো। আর কতো কাঁদবি? চোখ মুখতো লাল করে ফেলেছিস। এবারতো থাম। দেখতো আমার শার্টটা কি করেছিস? একদম নাকের পানি চোখের পানিতে ভিজিয়ে ফেলেছিস। কাঁদতে কাঁদতে সমুদ্র করে ফেলবি নাকি।
–আমি চোখ মুছে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছি। আর আয়াজ সে আমার মুখটা উঁচু করে তুলে ধরে আর ছোট্ট একটা চুমু দিয়ে বলে ভালোবাসি।
–আমিও জড়িয়ে ধরে বললাম মমমমি টু।
আয়াজ অবাক চোখে আমার দিকে তাকায়। আর বলে
– কি.কি বললি। আবার বল।
–আমি আয়াজকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললাম ভালোবাসি আপনাকে। অনেক ভালোবাসি।
আয়াজ আমাকে কোলে তুলে নিয়ে চারদিকে ঘোরাতে থাকে কারণ আয়াজের কাছে এতো পরিমাণ খুশি লাগছে মনে হচ্ছে এই যেনো এক ঈদের খুশি।
–আরে আরে নামান
–তুই জানিস আমি আজকে কতোটা খুশি। আমার ভালোবাসার মানুষটাকে নিজের করে পেয়ে গেছি এর থেকে বড় খুশি আর কিবা হতে পারে।
–হুম জানিতো।

এভাবেই বেশ ভালোই দিন চলতে থাকে। এরমধ্যে আজিফার বিয়ের ডেট ফিক্সড হয়ে যায়। আমিও হোস্টেল থেকে ফিরে আসি। আজিফা আপু বিয়ে বলে কথা। আর আমি কিনা ওখানে পড়ে থাকবো। আর তাছাড়া যার থেকে দূরে থাকতে চেয়েছি এখনতো তাকে ছাড়া আমার যেনো চলেই না।

পরেরদিন সবাই শপিংয়ে বের হয়। আয়াজ ভাইয়া আমি ইফতি আপু ইফাজ ভাইয়া সবাই যায় শপিংমলে। আমাকে আয়াজ ভাইয়া হাত ধরে আছে। ভিষণ বিরক্ত লাগছে বিষয়টা। তাই বললাম
–কি হহয়েছে? এএএমন ভাবে হহাত ধরে আআআছেন কেন? ছছছাড়ুন না।
বলতেই আমার দিকে চোখ রাঙ্গিয়ে তাকালো।
–সসরি। আর হহবে নাতো। কিন্তু আয়াজ কোনো কথায় বলছে না। একমনে এটা ওটা দেখে যাচ্ছে।

আসলে শপিংয়ে আসার পর থেকে একটা ছেলে সে কবে থেকেই আমার পিছু ঘুরছিলো। তাই বিরক্ত হয়ে আস্ক করলাম এমন ভাবে পিছু নিয়েছেন কেন?
–তখন ছেলেটি বলল, আপনি ওমুক স্কুলে পড়াশোনা করেন তাইনা?
-জ্বি। বাট আপনি কি করে জানলেন?
–আপনি কিছুদিন যাবত একটা হোস্টেলে ছিলেন? তাই নাহ?
–জ্বি
– আমি ওই হোস্টেলের সামনের বিল্ডিংটাতে থাকতাম। আপনাকে প্রায় সময়ই নোটিশ করতাম। কিন্তু হটাৎ কিছুদিন যাবত আপনাকে দেখছি না। হোস্টেলের কেয়ার টেকার থেকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারলাম আপনি নাকি চলে গেছেন। মনটা অনেক খারাপ হয়ে যায়। কারণ আপনাকে আমার অনেক ভালো লাগতো। আনফরচুনেটলি আপনার সাথে আজকে এই শপিংমলে দেখা হয়ে গেলো। বিলিব করবেন কিনা জানিনা আমার অনেক হ্যাপি লাগছে।
–ওও আচ্ছা মুচকি হেসে বললাম।
–আপনি কি সিঙ্গেল?
–একটু হেসে বললাম আমি বিবাহিত
–কিহ? এতো তাড়াতাড়ি বিয়ে?
–জ্বি। আসলে বিষয়টা অনেক লম্বা কাহিনি। পরে একদিন বলবো।
–আচ্ছা আমরা কি বন্ধু হতে পারি?
–হ্যাঁ অবশ্যই।
-এরপর ছেলেটা আমাকে একটা ফুলের তোড়া দিয়ে ফ্রেন্ডশিপ নিবেদন করে। আমিও খুশি মনে নিয়ে নিলাম।

তখনই আয়াজ এসে জিজ্ঞেস করলো কি হচ্ছে এখানে। আয়াজ ভাইয়ার চোখ মুখের দিকে তাকিয়ে ভয়ে ঢোক গিলতে লাগলাম।
ছেলেটা বলল
–কে আপনি?
–হাসবেন্ড
–ওওও
–জ্বি। চলো আঁখি বলেই আমার হাতটা ধরে ওখান থেকল নিয়ে যেতে থাকে।

কিছুদূর যেতেই আমি বললাম আআআসলে ছেলেটা ফুলগুলো…..
–কিছু জিজ্ঞেস করেছি?
–নাহ। আআসলে
–কি আসলে নকলে। একটু এদিক ওদিক গেলাম আর ওমনি ফুল নেওয়া হচ্ছে।
–ওই ছছছেলেটাতো ববন্ধু হিসেবে দিলো তাই নননিলাম।
–কেনো নিবি কেন? ছেলেদের হাত থেকে ফুল নিতে আপনার খুব ভালো লাগে তাই না।
–সসরি
–থাক আর বলতে হবেনা।
সেই থেকে যে হাতটা ধরে আছে এখনো ছাড়ার কোনো নাম নেই।
-বজ্জাত পোলা। নাকের ডগায় সবসময় রাগ। ফাযিল কোনেকার। ধ্যাত!
চলবে