তুই যে আমারই পর্ব-২২+২৩

0
4934

#তুই_যে_আমারই
#আঁখি আজমীর নুরা
part 22
উফফ…. আর কতক্ষণ ধরে রাখবেন?
–সাটআপ ধমক দিয়ে বলে উঠে।
আমি ভয়ে এবার চুপ মেরে যায়। না জানি কখন গালের উপর ঠাস করে লাগিয়ে দেয়। আয়াজ ওয়াচের দোকানে ঢোকে ওয়াচ দেখতে থাকে। আমার একটা ওয়াচ দেখেই বেশ ভালো লাগে। বাট ভয়ে আয়াজ ভাইয়া কে বলতে পারছি না।
হটাৎ আয়াজ ওয়াচটা আমার হাতে পরিয়ে দিতে দিতে বলতে থাকে, সবকিছু তে এতো ভয় পেলে কেমনে হবে।যেসব জিনিসে আমাকে ভয় পাওয়া দরকার সেসব জিনিসে একধাপ এগিয়ে করতে যাস। আর যেসব জিনিস নির্ভয়ে চাইতে হয় সেসব জিনিসে নিজেকে আমার ভয়ে গুটিয়ে রাখিস। স্টুপিড!

বাসায় এসে সবাই কি কি শপিং করেছে সব দেখাতে থাকে। এরপর যে যার যার রুমে চলে যায়। আঁখি ওয়াসরুম থেকে বের হয়ে দেখে আয়াজ খাটের উপর শুয়ে আছে। আর হা আঁখির দিকে তাকিয়ে আছে। আঁখি যেনো ভিষণ লজ্জা পেয়ে যায়। কারণ গায়ে একটা টাওয়েল ছাড়া আর কিছুই নেই। আয়াজ উঠে আঁখিকে একটান দিয়ে বুকের উপর ফেলে আর হাতটা আঁখির ভিজা চুলের ভিতর দিয়ে আঙুল দিয়ে পরশ বুলাতে থাকে।
আঁখি লজ্জায় উঠে যেতে চাইলে আয়াজ চেপে ধরে। আর আঁখির লজ্জা মাখা মুখে চুমু দিতে থাকে। আর বলছে
–জানিস তোকে এই অবস্থায় কতোটা হট দেখাচ্ছে। মন চাচ্ছে একদম খেয়ে ফেলি। আঁখি এবার ভিষণ লজ্জা পায় ফলে আঁখি আয়াজকে ধাক্কা দিতে উঠে আলমারির কাছে চলে যায়। আর দ্রুত জামা বের করতে থাকে।

আয়াজ পিছন থেকে এসে আঁখির পেট জড়িয়ে ধরে হাত দিয়ে স্লাইড করতে থাকে আর কিছুক্ষণ পর পর আলতো আলতো চাপ দিতে দিতে কানের পাশে ফিসফিসিয়ে বলতে লাগে কয়দিন এভাবে পালিয়ে পালিয়ে থাকবি। আর মাত্র কটাদিন, আজিফার বিয়েটা ভালোই ভালোই মিটে যাক তারপর তোকে পারমানেন্টলি আমার করার পালা। চাইলেও তখন আর পালিয়ে বেড়াতে পারবিনা। দিনশেষে ঠিকি আমার কাছে ধরা দিতে হবে বলছে আর আঁখির গলায় নাক ঘসছে।

এদিকে আঁখির মরে যাওয়া অবস্থা। চোখ মুখ খিঁচে জামাগুলো নিয়ে এক দৌড়ে ওয়াশরুমে গিয়ে টাস করে দরজাটা লক করে দেয়। আর জোরে জোরে নিশ্বাস নিতে থাকে। হার্ট বিট যেনো অনেক দ্রুত গতিতে লাফাচ্ছে। আয়াজের প্রত্যেকটা কথা বার বার কানে বাজছে। পারছেনা শুধু মাটি ফাঁক করে ভিতরে ঢুকে যেতে।

আয়াজ আঁখি যেতেই মুচকি হেসে নিচে চলে যায়। নিচে গিয়ে ড্রয়িং রুমে বসে টিভি দেখছে। আর বাবার সাথে আজিফার বিয়ে নিয়ে আলোচনা করছে।
উপর থেকে আঁখি নিচে নেমে দেখে আয়াজ ড্রয়িংরুমে বসে আছে তাই আর ওদিকে যায়নি। সোজা কিচেনে চলে গেলো। গিয়ে দেখলাম খালামনি রান্না করছে।

–কি রান্না করছো খালামনি?
-চিংড়ি আর সোল মাছ দিয়ে বেগুন বসালাম।
-ওও আর কিছু থাকবে আজকের ডিনারে?
–হুমম তাতো থাকবে। পাট শাক রান্না করবো, ব্রকোলি ভাজি করবো, চিকেন হবে।
–ওহ। আমি আর কিছু না বলে খালামনির সাথে পাটশাক কাটতে থাকি। আর গল্প করতে থাকি।
খালামনি এটা কি পিটা বানাচ্ছ?
–এটাকে দুধপুলি বলে
–অনেক ইয়াম্মি হয় এটা খেতে। দেখি কিভাবে বানাচ্ছ। আমিও শিখি কিভাবে বানাও।
-তাই হুমম।

সন্ধ্যা হতেই খালামনি পিটা গুলো বেরে আমাকে বলল ড্রয়িংরুমে সবাইকে দিয়ে আসি যেনো।
আমিও বাধ্য মেয়ের মতো নিয়ে টেবিলে সবাইকে পরিবেশন করতে থাকি।
আয়াজ অবাক নয়নে তাকিয়ে আছে। কারণ আঁখিকে একদম বউ বউ লাগছে। পরক্ষণেই ভাবলো বউই তো তার। এটা আবার ওতো ভাবাভাবির কি আছে। আমারও না মাঝে মাঝে কি যে হয়।

_______________
দুইদিন পরই আজিফার বিয়ে। তাই পুরো বাড়ি সাজানো হচ্ছে। ডেকোরেটেড, স্টেজ কেমন হবে সবকিছু আয়াজকে দেখতে হচ্ছে। হাতে মোটেও সময় পাচ্ছে না। বেচারা ভিষণ চাপের ভিতর আছে।

মেহন্দি প্রোগ্রামে আঁখি ইফতি সহ আরো অনেক শারি পড়ে। হলুদের সাজে যেনো মেয়েটাকে অসম্ভব কিউট লাগছে। আয়াজ হা হয়ে আছে। পিচ্চিটাকে শাড়িতে যেনো বড় বড় লাগছে। মনে মনে হাসলো। পরক্ষণেই মাথার মেজাজ যেনো অসম্ভব বিগড়ে গেলো। কারণ কোথাকার কোন ছেলের সাথে গালকে ভেটকায় ভেটকায় কথা বলছে।
–এই মেয়ে কি ছেলেদের সাথে কথা না বলে থাকতে পারে না। কি সুন্দর গালকে ভেটকিমাছের মতো করছে দেখো। মনতো চাচ্ছে ঠাঠিয়ে দেয়। আমার কাছে আসলেতো তোতলানির জন্য মুখ থেকে কথায় বের হয়না। বেয়াদব মাইয়া।

এখানে এতো হাসাহাসি কিসের।
–আরে আয়াজ ভাই কেমন আছেন?
–ভালো আছি। তুমি?
–আমি এইতো ভালো আছি।
–হুমম তাতো থাকবায় হাসি বিতরণ বিনোদন চলছে কথাটা আঁখির দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে বলল।
–জ্বি?
-নাহ কিছু নাহ। আসি তাহলে বলেই আঁখির দিকে আগুন দৃষ্টি নিক্ষেপ করে চলে আসলাম ওখান থেকে।

এদিকে,
আঁখি যেনো কেঁদে দিবে।
–এইরে সেরেছে। এখন কি যে করি। মনে হয় ভিষণ রেগে গিয়েছে। এখন কি যে করি। উফফ আঁখি তুই কেন বারবার ভুলে যাস তুই বাঘের নজরের সিমানার ভিতর আছিস। কেন তুই এই ছেলের সাথে কথা বলতে গেলি। তাও আবার হেসে। তোরকি কোনো ভয়ডর নেই মনে। বেশ হয়েছে। মর তুই এবার। আযরাইলটাতো রেগে গেলো। শয়তান মাইয়া তোর সাথে এটাই হওয়া উচিত।

এইযে আপু কি এতো ভাবছেন?
-নাথিং।
-ওহ
-আচ্ছা পরে কথা বলবো। একটু কাজ আছে বলেই ওখান থেকে চলে আসলাম। আর মিঃ এংরি ম্যানকে এদিক ওদিক খুঁজছি। কিন্তু বেটা বজ্জাত গেলোটা কোথায়। হটাৎ নজর গেলো গেইটের কাছে কোন একটা লোকের সাথে কথা বলছে। আমি চট করে ওখানে যায়।
আয়াজ ভাইয়া আমাকে দেখেও যেনো না ভান করে আছে। যেনো আমি নামক একটা মানুষ পাশে দাড়িয়ে আছি সে যেনো দেখতেই পাইনি।
–আমি এটেনশন পাওয়ার জন্য একবার কাশি দিচ্ছি একবার গলা খাঁকারি দিচ্ছি। কিন্তু শালারপুত থাকাইও না। হটাৎ আয়াজ ওখান থেকে চলে যায়। আর আমি বেচারি চোখ বড় বড় তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছি। কুত্তা তুই আমাকে ইগনোর করিস? এই আঁখিকে? হুমম শালা রাক্ষস এই আঁখি যে তোকে পাত্তা দিচ্ছে। অন্য কোনো মেয়ে হলে তোকে উস্টা মেরে পালাতো। এই জন্য মানুষ বলে দাঁত থাকলে দাঁতের মর্যাদা বুঝে না। হালা উগান্ডার হাতি.. বলেই সামনে তাকাতে আয়াজকে দেখলাম সে আমার দিকে চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে আছে। আমি তাকাতেই মাথাটাকে তাচ্ছিল্য করে নাড়িয়ে ওখান থেকে চলে গেলো।

আর এদিকে আমি বেক্কলের মতো চেয়ে আছি। কি হলো এটা? তারমানে এতক্ষণ সে আমার কথাগুলো শুনছিলো। এমনিতেই আগুন হয়ে আছে আর আমি ভালো করে ঘি ঢেলে দিলাম। ওরে আল্লাহ দড়ি ফালাও আমি উঠে পড়ি….এ্যাএ্যাএ্যা
চলবে

#তুই_যে_আমারই
#আঁখি আজমীর নুরা
part 23
এরপর আমি আয়াজ ভাইয়া যেখানে গেছে সেখানে তার পাশে গিয়ে দাড়ালাম।
-বববলছিলাম কি সসসরি।
কিন্তু বেটা এমন ভান করে আছে, মনে হচ্ছে সে আমাকে শুনতেই পাইনি। একমনে ফোন টিপেই যাচ্ছে। মনে হচ্ছে এই মূহুর্তে সব থেকে বেশি ইম্পর্ট্যান্ট কাজ হচ্ছে ফোন টিপা। যেনো এটা না টিপলে বাংলাদেশ উল্টো হয়ে যাবে। বেটা বজ্জাত!
-শুনুননা! আআমি না ইচ্ছে কককরে এএমন ককরিনিতো।
এবার আয়াজ ওখান থেকে উঠে চলে গেলো। আর আমি তাকিয়ে আছি। কি করবো এখন। মনেতো হয় ভিষণ রেগে আছে। আল্লাহ হেল্প মি যেনো এই পোলার রাগ তাড়াতাড়ি ভাঙ্গাতে পারি।

পিছন থেকে ইফতি আপু হাঁপাতে হাঁপাতে বলল,
-তুই এখানে দাঁড়িয়ে আছিস? আর আমি পুরো বিয়ে বাড়িতে তোকে খুঁজে বেড়াচ্ছি।
-কেন?
-কেন মানে? আজিফাকে স্টেজ উঠাবে। তুই না থাকলে কেমনে? চল তাড়াতাড়ি বলেই আঁখি হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে থাকে।

এরপর আপুর সাথে অনেক পিক উঠালাম। মজাও করলাম। যেহেতু কনসার্ট হচ্ছে সবাই গানের তালে তালে অনেক মজা করছে। আমি আর ইফতি আপুও গেলাম। গিয়ে সবার সাথে নাচতে থাকি। হটাৎ মনে হলো আমার শাড়ির পিছনে পিনটা খুলে গেলো। ইসসরে কি যে করি। তাই ওখান থেকে সাইড হয়ে একটা নিরিবিলি কর্ণারে যায়। গিয়ে পিনটা বাঁধার অনেক ট্রাই করছি। বাট পারছি না। পিঠের উপর করো স্পর্শ পেতেই চমকে গেলাম। সামনে আয়নায় তাকিয়ে দেখি আয়াজ ভাইয়া। মুখটাকে বাংলার পাঁচের মতো করে পিনটা লাগিয়ে দিচ্ছে। লাগানো শেষ করেই চলে যেতেই আমি দৌড়ে গিয়ে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলাম। আর বললাম…

-প্লিজ সরি! আর বলবো নাতো কথা।
-আয়াজ আমার হাতটা ছাড়াতে থাকে ততই আমি আরো শক্ত করে চেপে ধরে থাকি।
–প্লিজ প্লিজ
-আঁখি ছাড়তে বলছি!
-উম নাহ। আগে বলেন ক্ষমা করে দিয়েছেন।?
-হুম ছাড় এবার।
-নাহ আমি জানি, আপনি মন থেকে আমাকে ক্ষমা করেননি। এমনি মুখের উপর বলছেন।
–এরপর আয়াজ আঁখিকে পিছন থেকে ছাড়িয়ে সামনে নিয়ে আসে। আর আমার দুগালে দুহাত দিয়ে বলতে লাগে,
–আর কখনো বলবি?
-নাহ
-মনে থাকবে
-হুম থাকবে।
– পাক্কা?
-হুম পাক্কা। বলতেই আয়াজ আমার নাকটা টেনে দিয়ে নাকের সাথে নাক ঘষে দিলো। আর বলল খাসনি কেন?
-এহ?
-এহ নয় হ্যাঁ। না খেয়ে আছিস কেন? খালি নাচলে গাইলে হবে? খেতে হবে না? রাতে খাসনি কেন?
-মনে ছিলো নাহ।
-কী? খেতে আবার মনে থাকা লাগে নাকি?
-ওই আআসলে পিক তোলা আর ইফতি আপুর সাথে মজা করছি তো।
–হয়েছে আর সাত পাঁচ চৌদ্দ বোঝাতে হবেনা। আয় আমার সাথে।, বলেই আয়াজ তার সাথে নিয়ে যেতে লাগলো। তারপর একসাথে দুইজনে খাবার শেষ করলাম।

সকালে বারোটা বাজে আরিফা আপুর চিল্লানিতে ঘুম থেকে উঠে কোনোরকম ব্রাশ করে ঢুলে ঢুলে টেবিলের সামনে গেলাম। চোখ দুটো ঘুমে ঢুলুঢুলু হয়ে আছে। টেবিলে বসেই জুড়তেছি। আয়াজ এসে চোখ বড়সড় করে আঁখির দিকে চেয়ে আছে। কারণ রাতে থ্রি কোয়াটার পেন্ট আর সেন্টু গেঞ্জি পরে ঘুমিয়েছে সেটা পরেই নিচে নেমে এসেছে। মেয়েটা ঘুমের মধ্যে এতটা বিভোর যে, বাসায় এতো গুলো মানুষের সামনে কিসব ড্রেস পরে নেমে গিয়েছে যেন কোনো খবরই নেই। রিডিউকিলাস।

আঁখি! আঁখি! কারো চেঁচানিতে যেনো আঁখি আঁতকে উঠলো।
–কি কি কি হয়েছে?
-স্টুপিড রুমে গিয়ে এক্ষুনি চেঞ্জ করে আয়। নয়তো থাপরিয়ে দাঁত বত্রিশটা ফেলে দিবো। আউট চিল্লিয়ে বলে উঠলো।

আমি ভয়ে ভো দৌড় দিলাম। রুমে এসে দ্রুত চেঞ্জ করে নিলাম। দেন নিচে গেলাম। নিচে আসতেই আয়াজ বলে উঠলো বিয়ে অবধি যদি কোনো টি-শার্ট, গেঞ্জি পরেছি তো মেরে ভর্তা করে দিবে।

বিকেলে সবাই পার্লারে যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছি, কিন্তু আয়াজ ভাইয়ার দেওয়া সে ওয়াচটা পাচ্ছি নাহ। উফফ গেলো কোথায়। ড্রেসিং টেবিলের উপরেইতো রেখেছিলাম। এমনিতেই সবকিছু নাকের ডগার সামনে ঘুরাঘুরি করে। যখন প্রয়োজন হয় তখন সারাদিন খুঁজলেও পাইনা। এ কেমন প্রবলেম বুঝি না। এদিকে ইফতি আপু এসে তাড়া দিয়ে গেলো।
-কিরে এখনো হয়নি তোর? বের হতে হবেতো!
-উফফ আপু আর বলোনা। ওইদিন যে ওয়াচটা কিনলাম ওইটা কোথাও খুঁজে পাচ্ছি না।
–কই রেখেছিলি?
-এখানেইতো রেখেছিলাম। বুঝলাম না কই হারালো। এরপর ইফতি আপু সহ আমার সাথে খুঁজা শুরু করলো।

এই আঁখি ড্রেসিং টেবিলের ফটকের নিচে ওটা কি দেখা যাচ্ছে দেখতো।
-কোথায়?
-ওই যে চকচক করছে ওটা। দাঁড়া আমি নিচ্ছি।

দেখতো এটা কিনা।

আরে আপু এটাইতো। নিচে পরে গিয়েছিল মেবি। ওকে আপু চলো এবার। তারপর সবাই পার্লারে রওনা হলাম।

কনভেনশন সেন্টারে এসেই আমার সর্বপ্রথম আয়াজ ভাইয়ার উপর নজর পরলো। মাই গড আমারতো মরে যাওয়ার অবস্থা। আরেক দফা ক্রাশ খেলাম। ব্লাক সুটে যা লাগছে না। আমারতো সেন্সলেস হয়ে যাওয়ার অবস্থা। কজ ভিষণ সুন্দর লাগছে আয়াজ ভাইয়াকে।
এদিকে আয়াজেরও সেম সিচুয়েশন। এক পলকে প্রিয়তমার দিকে তাকিয়ে আছে। দুজন দুজনের থেকে চোখ যেনো পরছেই না। বাইরে আতশবাজির ফাটানোর সাউন্ডে ধ্যান থেকে ফিরে আসলাম। মনে হয় বর এসেছে। তাই তাড়াতাড়ি করে বরকে বরন করতে চলে গেলাম। মজা মাস্তিতে বরকে বরন করা শেষ হলো।

হটাৎ আয়াজ ভাইয়ার চোখাচোখি হতেই সে ঠোঁট নাড়িয়ে বলল সো হট। তারপর একটা ফ্লাইং কিস ছুঁড়ে দিলো। আমি আশেপাশে তাকাতে লাগলাম কেউ দেখলো কিনা। কি নির্লজ্জ ছেলেরে বাবা। তাই ওখান থেকে সরে গেলাম। নয়তে এই ছেলের বিশ্বাস নেই। কখন কোন সময় কি করে বসে।

বিদায় বেলায় মনটা যেনো ভিষণ খারাপ হয়ে আছে। কারণ আপু আমার সুখ দুঃখের সাথী ছিলো। যেতেই আমি আপুকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কান্না করে করছি। আপুও আমাকে শক্ত করে চেপে ধরে আছে। আর আয়াজ?
সে এক কোণে দাঁড়িয়ে আছে। আজিফা গিয়ে ভাইয়া বলেই জড়িয়ে ধরলো। আয়াজও তার বোনকে পরম আদরে বুকে জড়িয়ে আছে। আর চোখের জল ফেলছে। আমি অবাক হয়ে আছি। কারণ আমি এই প্রথম আয়াজ ভাইয়াকে কাঁদতে দেখেছি। কারণ আগে কখনো আমি আয়াজ ভাইয়ার চোখে পানি দেখিনি। শত কষ্ট পেলেও নাহ। কতটা কষ্ট পেলে একটা ছেলে কাঁদে সেটা হয়তো আয়াজ ভাইয়াকে না দেখলে বুঝতেই পারতাম না।
চলবে