তুই হবি আমার পর্ব-১৪

0
1962

#তুই_হবি_আমার??
#DîYã_MôÑî
#পর্ব__১৪

স্টেইজের সামনে গিটার নিয়ে চেয়ার সেট করছে সাদিয়া। সব বাচ্চারা ওর সামনেই গালে হাত দিয়ে বসে আছে। সাদিয়া মুচকি হেসে চেয়ার টেনে পায়ের ওপর পা তুলে স্পিকার ঠিক করলো। গিটারের কট ঠিক করে ক্যামেরার দিকে তাকালো সাদিয়া,,,

— Tu Aata hein Sinee mein Jab jab Saanse Bhartii hyun…. Tere dilke galliyon se mein har rojj gujarti hyun
সাদিয়া নিজের মুখটা মাস্ক দিয়ে ঢেকে ফেললো আর স্পিকার মাস্কের উপর দিয়ে সেট করলো।

— Hawyaan ke jese chaltain hein tu Mein ne tu jesi murti hyun.. Koon tujhe yu pyar karega jese mein karti hyun
OoooooooOwoooooooWooooo
একটা ফোন বের করে ফোনটার দিকে একনজর তাকালো।

— Meri najar ka saafar tujhpe he aakein rukein,, keheine ko bakiyein hein kya.. kehna tha jo keh sakee
গিটারটা একটু সরিয়ে উঠে দাড়ালো। বাচ্চারাও দাড়িয়ে গেলো। সাদিয়া স্টেজ থেকে নেমে ইশারায় বাচ্চাদের বসে থাকতে বললো।

— Meri nigaahein hein teri nigahoon ko tujhe khabar tha bekhabar,, Mein tujhse hi chup chup kar teri aakhein parti hyun Koon tujhe yu pyar karega jese mein karti hyun
OoooooooOwoooooooWooooo
ক্যামেরা সাদিয়ার দিকে ঘোরাতেই সাদিয়া মানা করলো। ইশারায় বাচ্চাদের দিকে রাখতে বললো।

— Tum jo mujhe ya mila Sapne hyuye saarfire,, Hanthon mein aati nehi Udte hein lamhe mere.. Meri hasi tujhse meri khusi tujhse tujhe khabar tha bekadar,,
সাদিয়া ধীরে ধীরে ওরনা দিয়ে নিজের পুরো মুখটা ঢেকে ফেললো কারন ইতিমধ্যে ভিডিও পাবলিক হয়ে পুরো দেশে ভাইরাল হয়ে গেছে। সাদিয়ার চেহারাটাও আবছা দেখা যাচ্ছে। নেটে বিভিন্ন কমপ্লিমেন্ট আসছে।

— Jisdin tujhko na dekhun pagal pagal bhirti hyun Koon tujhe yu pyar karega jese mein karti hyun
OoooooooOwoooooooWooooo
গান শেষ হতেই ম্যাডামদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাড়ি চলে আসলো সাদিয়া। স্বুলের গেট থেকে বের হতেই যা কষ্ট। প্রচন্ড ভীর জমে গেছে।

বাড়ি এসে জুতাগুলো ছুড়ে মেরে সোফায় বসে ওরনা খুলতে লাগলো সাদিয়া গরমে ঘেমে ভিজে গেছে।
সাদিয়া : বাবাহ কি ভীর। মনে হচ্ছিলো ভীরেই মরে যাবো। সুম্পিরে নিলে ভালো হতো। অন্ততো একা মরতে হতো না। ওকে নিয়ে মরতাম।

ঠিক তখন সম্রাটের ফোন আসে,,
— বোন ঠিক আছিস.?
— আর ঠিক.? গরমে সিদ্ধ হয়ে গেছি। ১০মিনিটে এলাকার সবাই এসে হাজির। যেখানে ৫০জন ছিলে না সেখানে ৫০০+.
— এজন্যই বলেছিলাম যেখানে সেখানে একা গান গাইত। যাস না। কষ্ট হবে তোর।
— ঠিক বলেছো। তো তুমি কি করছো.?
— মাত্র অপারেশন থিয়েটার থেকে বের হলাম দেখি ওটির বাইরে বিরাট ভীর ভেবেছি পেসেন্টের লোক পরে দেখি তোর গানের ভিডিও। দুজন গান শুনে কাঁদছে,, বাকিরা মেয়েটার পরিচয় খুজতেছে।
— কাঁদছে.? বেচারারা নির্ঘাত ছ্যাকা খেয়েছে। আর এতো তাড়াতাড়ি ভাইরাল হলাম তোমার তো গর্ব হওয়ার কথা। তোমার বোনের কতো গুন দেখছো.?
— হ্যা সেজন্যই আমার সুনামে ভাগ বসাচ্ছে। আগে তোকে সম্রাটের বোন বলতো আর আমাকে বেস্ট হার্ট সার্জন সম্রাট খাঁন এখন আমাকে সাদিয়ার ভাই হিসাবে চিনবে। সম্রাট খাঁনকে ভুলে যাবে।
— হিংসুটে।
— হুম অনেক। খেয়েছিস.?
— কি খাবো ভাবছি। তুমি সুম্পিকে আনছো না কেন.? ও থাকলে আমাকে কতো কিছু বানিয়ে দেয়। নিজের রান্না ভালো লাগে না আমার।
— ভাবি বানাবি নাকি রাধুনি.?
— চাকরানি। হ্যাপি.?
— হা হা হা। কাল যাবো ওদের বাড়ি। ওকে বলে রাখিস।
— এখনই বলছি। টাটা দাভাই।

সাদিয়া ফোন কেটে সুমিকে ফোন করে। সুমি তখন বাড়ির ছাদে দাড়িয়ে গাছে পানি দিচ্ছিলো। কিন্তু একবার রিং হতেই সুমি ফোন রিসিভ করে।
— হাই ভাবি।
— বাব্বাহ এতো সুন্দর করে ডাকছিস.? সকালের জন্য কিন্তু এখনো রেগে আছি।
— তোমার আরীব কাল আবার আসবে তো। তখন নাহয় ওকে তোমার সাথে কফি খেতে পাঠিয়ে দিবো। হ্যাপি.?
— তুই ওকে ডিরেক্ট অপমান করলি কেন.?
— তুমি ওর চামচামি করছো.? আর আমি দাভাইকে বললাম তোমাকে আমার চাকরানি করবো।
— কিহহ..?
— কি না জি। শোধ নিবো তোমাদের বিয়েটা একবার হোক। আরীবের সাফাই গাও অনেক তাইনা.? দেখো তোমার কি করি।
— নতুন করে আবার কি করবি.? তুই তো সবসময় আমার পেছনে লেগেই থাকিস।
— থাকবোই তো। তুমি তো আমার ভাবি,, আমার বড় আপু। আম্মু আব্বু চলে যাওয়ার পর তোমরা দুজন না থাকলে আমি এতোদিনে,,
— তোর মুখে সেন্টিমেন্টাল কথা মানায় না বেবি। ডোন্ট বি সিরিয়াস। বি হ্যাপি & ডেভিল।
— দোয়া বদদোয়া একসাথে.? একদিকে সুখি হতে বলছো অন্যদিকে শয়তান।
— তুই যে চাকরানি বানিয়ে দিলি.. তার বেলায়.?
— ভুল হইছে ওটা চাকরানি না রাজরানি হবে। আমি যাওয়ার পর সম্রাটের সাম্রাজ্যের একমাত্র রানি,, ওহ সরি সম্রাটের বউকে সম্রাঙ্গী বলে।
— এতো কথা কিভাবে বলিস আল্লাহ মালুম।
— মুখ দিয়ে বলি। এমন ছোট ছোট কথায় আল্লাহকে টেনে আল্লাহর সময় নষ্ট করো কেন.? যাই হোক কাল আমরা আসছি তোমাদের বাড়ি।
— কেন.?
— বা রে আমার আপুটাকে চাকরানি থুরি রাজরানি করে আনতে হবে না.? এই তোমার বাবা আমার ভাইয়াকে পছন্দ করে তো.? ঝামেলা পাঁকালে কিন্তু আমি আমার ডাইনি থেরাপি ইউজ করবো।
— থাক থাক। উরনচন্ডি একেবারে। কথায় কথায় ভয় দেখায়। বয়সের চেয়ে বেশি পাঁকা।
— কম বয়সে অনেক কিছু জেনে ফেলেছি। দেখে ফেলেছি। অনুভব করেছি তারই কুফল। সবসময় ভয়ে ভয়ে থাকতে হয়। প্রিয় মানুষদের হারানোর ভয়।
— সব ঠিক হয়ে যাবে। আমি চাইনা আমার ছোট্ট সাদিয়া বেবিটা এসব ভেবে আবার মন খারাপ করে। এমনিতেও আগের সাদিয়ার সাথে এখনকার সাদিয়ার মিল নেই। তবুও মাঝে মাঝে ইমোশনাল করিয়ে কাঁদায় আমাকে। এটা ঠিক না।
— সরি টাটা।

???
মেঘ নিজের রুমে বসে ফোনে একটা ভিডিও রিপিটলি দেখছে। হাত থরথর করে কাঁপছে। বুকের ভেতর চিনচিন করে ব্যাথা করছে। অদ্ভুদ যন্ত্রনা। ফোনটা রেখে শাওয়ার নিতে চলে গেলো ও।

মেঘ : কেন রোজ কেন করলে এমন.? তুমি কি সত্যিই বুঝতে না আমার অনুভুতি। জানি আমি ভুল করেছি। অন্যায় করেছি তাই বলে এভাবে শাস্তি দিবে.? কোথায় আছো তুমি.? কিভাবে খুজবো তোমায়.? তোমার জন্য আমি এখনো ওদের কিছু করিনি। যদি ওদের হাতে তুমি থাকো সেভয়ে কিন্তু তুমি? জানি বেঁচে আছো তুমি। কারন তুমি না থাকলে এ পৃথিবিতে আমারও জায়গা নাই। তোমাকে অনুভব করি এখনো। তোমার মেঘরোদ্দুর কখনো তোমায় কষ্ট দিতে চায়নি রোজ। সে সবসময় চেয়েছে তোমাকে ভালো রাখতে। আমাকে আমার মনের সব কথা তোমাকে বলার একটা সুযোগও দিলে না..

মেঘ ফ্রেস হয়ে রওশনদের বিয়ের ডেকোরেশনের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।


আরাভ আলিজা এসেছে সবেমাত্র।। মেঘ ওদের দেখে উপরে চলে গেলো।
আলিজা : ভাইয়া কি এখনো নিজেকে দোষি মনে করে.? দেখো আমাদের বিয়েটাতো হয়েই গেছে । ভালো আছি আমরা। এবার ভাইয়ারর

আরাভ : মেঘ কখনো কোনো মেয়ের দিকে চোখ তুলেও তাকাবে না। ওকে আমি খুব ভালো করেই চিনি। ও যেখানে রোজকে বসিয়েছে যে বুকে রোজকে ঠাই দিয়েছে সেটা অন্য কাউকে দিতে পারবে না। আমাদের বিয়েটা ওই ডেটেই জোর করে দিয়েছিলো কারন ও রোজকে কথা দিয়েছিলো। কিন্তু সে বিষয়ে তো কিছু বলিনি আমরা।

আলিজা : আর কতদিন এভাবে চলবে.?
আরাভ : যতদিন না পর্যন্ত ও নিজের মনের ভুল সংশোধন করতে পারবে ততদিন। ওকে বোঝাতে হবে রোজ নেই।

আলিজা : তো সেটা কি তুমি বোঝাবে..
আরাভ : মাথা খারাপ.? কুহুকে বলবো। ও না মেঘের চামচা.? এবার তুমি মন ভালো করো। আর হ্যা তোমার মাথা ব্যাথা & বমি কমেছে.? ডক্টরের কাছে যাবে.?

আলিজা : ধুর না। ট্রেসের জন্য এমন হয়েছিলো। এখন ঠিক আছি। কিন্তু সমস্যা হলো কাল বিয়ে হবে ঠিক আছে কিন্তু কিভাবে হবে.? রওশন ভাইয়া অনুষ্ঠান করবে না বলেছে আর মেঘ ভাইয়া সব ডেকোরেশন করছে।

আরাভ : আমাদেরটা অনুষ্ঠান হয়েছিলো। এদেরটায় কি হবে বুঝতে পারছি না। দেখা যাক কি হয়।


সকালে গায়ে হলুদ আর দুপুরে মেহেদি পড়ানো হলো ঈশাকে। বিকালে রেজিস্ট্রি। মেঘ একাই সবটা দেখছে। কলেজের কিছু স্টুডেন্টও এসেছে।

কলি : দেখো মেঘ ভাইয়াকে মৌমাছির চাক মনে হচ্ছে।
সৌরভ :মানে?
কলি : মেয়েগুলো কিভাবে ঘিরে আছে। উফফ এদের বেশি কথা না বললে কথা কানে যায় না। কিছুক্ষন পর যেই মেঘ ঝারি দেবে তখন ভ্যা ভ্যা করে কাঁদতে কাঁদতে আসবে।

সৌরভ : আমি কখনো টেরই পাইনি যে মেঘের মনেও কেউ আছে যাকে মেঘ এভাবে পাগলের মতো ভালোবাসে। আর সেই মেয়েটা রোজ। কেন এমন হলো ? অবশ্যই মেঘের ভুল ছিলো তবে সেটার সত্যতা যাচাই করতো রোজ,, রোজ তো হেরে যাওয়ার মেয়ে ছিলো না। তাহলে আল্লাহ কেন এভাবে ওকে আমাদের কাছ থেকে কেড়ে নিলো।

ওদিকে মেঘের ঝারি খেয়ে এক এক করে সব মেয়ে স্টেজের কাছে চলে গেলো। মেঘ কাজি নিয়ে ঈশাদের সামনে আসলো। কাজি বিয়ে পড়ানো শুরু করলো।

মেঘ : তোমার এই কাজটাও করে দিলাম রোজ। এবার তো ফিরে আসো। দেখো আমি এখন আর তোমাকে তুই বলবো না। তুমি তো মানা করেছিলে যেন আমি তোমাকে তুই বলে না ডাকি। তোমার প্রেসটিজ পাঞ্চার হয়। তাহলে আমি যখন তোমার কথা শুনছি। তুমি কেন শুনছোনা.? কেন রোজ.?

???
সাদিয়া আর আরীব কলেজ ক্যাম্পাসে হেটে হেটে কথা বলছে। সুমিও আছে তবে কিছুটা দুরত্ব রেখে হাটছে।

আরীব : চলো কোথাও ঘুরে আসি।
সাদিয়া : যখন তখন আমার ঘুরতে যাওয়ার অভ্যাস নেই। আপনি বরং সুম্পি কে নিয়ে যান। আপনার অনেক বড় পাংখা ও।

আরীব ঘাড় ঘুরিয়ে সুমির দিকে তাকালো। সুমি চোখ বড় বড় করে সাদিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।

সুমি : আমি যাবো না।
সাদিয়া : অকে। তো আরীব ভাইয়া আপনি এবার ফিরে যান। এই কলেজে হুটহাট করে আসা, আমার সাথে কথা বলা অনেকে টলারেট করতে পারছে না। আমারও প্রবলেম হচ্ছে,, ইরিটেটিং লাগছে।

আরীব : তাহলে অন্য কোথাও মিট করি.?
আরীবের দিকে ভ্রু কুচকে তাকালো সাদিয়া। এই ছেলেটা এতো গায়ে পড়া কেন,, সাদিয়া এই প্রথম কোনো সুপাস্টারকে দেখলো যে মেয়েদের পিছনে আঠার মতো লেগে থাকতে চায়।

সাদিয়া : বাংলাদেশে ফিরবেন কবে.?
আরীব : ৫দিন পর।

সাদিয়া : এই ৫দিন আমাদের বাড়ি থাকুন। আমার দাভাই এর বিয়ে। তারপর সোজা ব্যাগ গুছিয়ে নিজের বাড়ি ফিরবেন।

আরীব : তোমাদের বাড়ি.?
সাদিয়া : আপনার সব ফর্মালিটি শেষ করে বিকালে এখানে আসবেন। চলো সুম্পি।

সাদিয়া সুমির হাত ধরে ক্লাসের দিকে হাটতে শুরু করলো। আরীব ব্লাসিং হয়ে দুই হাতে চুল ঝেরে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেলো।

সুমি : এটা কি হলো.?
সাদিয়া : কি হবে.? উনি আমার সাথে টাইম স্পেন্ড করার জন্য পাগল। আর তুমি তোমার ক্রাশের জন্য। তাই বিয়ে অবধি তোমার ক্রাশকে তোমার সামনে রেখে দিচ্ছি,, এটাকে বিয়ের গিফট ভেবে নাও। এতে তুমিও খুশি আর উনিও। টাটা আমার ক্লাস আছে। বিকালে আবার তোমাদের বাড়ি যেতে হবে।

সুমি : তুই সবকিছুতে এতো হিসাব করিস্ কেন.? উপরে উপরে খুশি করে কি লাভ যদি ভেতরটাই শূণ্য থাকে.. আরীবকে হ্যা বলে দে।

সাদিয়া : আমি এখনো বাচ্চা,,, এতো তাড়াতাড়ি প্রেম করলে দাভাই বিয়ে দিয়ে দিবে। তাই ওসবে আমি নেই।। আর তুমি তো সুবিধার না নিজের ক্রাশের জন্য ননদকে বলির পাঠা বানাচ্ছো,,, আচ্ছা মেয়ে পাঠাদের কি পাঠি বলে?

সুমি : এসবের শেষ কবে.?
সাদিয়া : যেদিন নিজেকে পুরোপুরি তৈরি করতে পারবো। যেদিন কারোর ওপর আমাকে নির্ভর করতে হবে না। যেদিন সবার সব অপমানের জবাব দিতে পারবো। বাদ দাও তো। দাভাই কি বলেছে.? হানিমুনে কোথায় নিয়ে যাবে.?

সুমি : সুযোগের সৎ ব্যবহার।
সাদিয়া : জেনেরালি এমন কথা শুনলে মেয়েরা লজ্জা পায় আর তুমি আমাকে চোখ গরম দেখাও। ভালো লাগে না।

সুমি : ক্লাসে যা। আমি বাড়ি চলে যাবো আজ।
সাদিয়া : অকে। টাটা বিকালে দেখা হবে। আর শোনো আমার জন্য রেজালাটা সুন্দর করে বানাবে। গিয়েই খাবো

সাদিয়া এক ছুটে ক্লাসে চলে গেলো। সুমি এখনো ওর দিকে তাকিয়ে আছে,,
সুমি : ও ভাইয়ার বিয়ে ঠিক করতে যাচ্ছে নাকি বিয়ের ভোজ খেতে.? আমি এতো ভালো রান্না করি.? নাকি কথা ঘুরানোর জন্য বললো এসব।

???
রওশন : মেঘ এবার তোমাকে গিফট দেবার পালা। বলো কি চাও।

সৌরভ : চেয়ে নে ভাই,, এমন সুযোগ বারবার আসেনা। রওশন ভাইয়া নিজে জিজ্ঞাসা করছে।

আরাভ : তুই চুপ ককরেই থাক। আমি আমারটা চেয়ে নেই ভাইয়া আমার একটা নতুন কিউট বউউউ ( ঠিক তখনই আলিজা ঈশাকে নিয়ে হাজির। আলিজা ঠোট বাঁকিয়ে আরাভের দিকে তাকাতেই আরাভ রওশনের কানের কাছে গিয়ে ফিসফিস করে বললো) বউ চাই।

আলিজা : কি চাও..??
আরাভ : বই। ভাবছি এখন থেকে বই পড়বো।

আলিজা : আমি স্পষ্ট শুনেছি তুমি বউ চাও বলেছো।
আরাভ : শুনেছো যখন তখন জিজ্ঞাসা করছো কেন.?

আলিজা : কি বললে,,আজ থেকে আমাদের বিছানা রুম বালিশ কাবার্ড সব আলাদা।
আরাভ : আরে আরে রাগছো কেন.? সব আলাদা হলে সমস্যা নাই বিছানা এক হলেই হবে। এতোদিনের অভ্যাস বউ ছাড়া রাতে থাকবো কিভাবে তারওপর আলাদা থাকলে এরা আংকেল হবে কিভাবে.? আমার কথা না ভাবো এদের কথা তো ভাববে.?

আরাভের কথায় সবাই ঠোট চেপে হাসলেও মেঘ ফোনের স্ক্রিনের ওপর ভেসে থাকা রোজের মুখটা দেখছে আর কাঁটাচামচ চেপে ধরে রাগ কমাচ্ছে। হুট করে ওখান থেকে উঠে চলে গেলো মেঘ। সবাই অসহায় চোখে তাকালো

আলিজা : ভাইয়া কি আর আগের মতো নরমাল হবে না.? আমাদের কোনো আড্ডায় যোগ দেয় না,, খুব প্রয়োজন না হলে কথা বলেনা,, হাসে না,, কাঁদেও না।

ঈশা : ওকে ওর মতো ছেড়ে দাও। নিজেকে সামলে উঠতে দাও,,
কলি : ৬মাস হয়ে গেছে। আরো সময় দিতে হবে.? যদি হিতে বিপরীত হয়.?

ঈশা : আমিও প্রথমে তেমনটাই ভেবেছিলাম। কিন্তু পরিস্থিতি বুঝে কাজ করলে হয়তো সুফলও পেতে পারি। আমাদের সবাইকে এক করাটা ওর রোজের দায়িত্ব ছিলো। আজ সব দায়িত্ব শেষ। এবার যা হবে সব ওর ইচ্ছাতে।

আরাভ : আল্লাহর উপর ভরসা রাখি,,, তিনি যা করবেন,, চাইবেন সেটায় সবার ভালোই হবে।


অভিকে মেঝেতে ফেলে গরম সিক দিয়ে ওর পিঠের চামড়া পোড়াচ্ছে মেঘ। অভির মুখ কাপড় দিয়ে বেধে রেখেছে যেন ও কথা বলতে না পারে। অভির রক্ত দিয়ে মেঝেতে একবার রোজের নাম লিখছে আবার মুছে দিচ্ছে,, কন্টিনিউয়াসলি রক্ত নিয়ে এমন করছে।

গার্ডস : স্যার এভাবে না পুড়িয়ে আমাদের বলুন আমরা ওর বডিতে কেরসিন দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেই।

মেঘ : উহু না। ওকে এভাবে আস্তে আস্তে যত্নসহকারে কষ্ট দিবো। ওর জন্য কুশান আংকেল রোজকে ভুল বুঝে মেরেছিলো,,, ওর মৃত্যু এতো তাড়াতাড়ি হলে আমার যে রাগ হবে খুব। তোমরা বরং তেল গরম করে আনো,, ফুটন্ত তেল। সেক দিতে হবে তো। যাও।

গার্ডস চলে যেতেই মেঘ আবার রক্ত নিয়ে খেলতে শুরু করে। সেক দিয়ে অভির পিঠের শক্ত চামড়া টেনে টেনে তুলছে।

মেঘ : তোর অনেক শখ রোজকে বিয়ে করারা। ওর কপালে চুঁমু দেবার আজ দিবি,, অনেক চুঁমু দিবে তবে সেটা আমার পোষা কুকুরকে,, আমার কুকুরটা অনেকদিন মানুষের ঠোট কামড়ায় খায়নি। আজ খাবে।

গার্ডস গরম তেল এনে দিতেই মেঘ গ্লোবস পড়ে সেটা ধরে অভির মাথার সামনে দাড়ায়। তারপর তেলগুলো আস্তে আস্তে ওর পিঠে ঢালতে থাকে,, ব্যাথায় নড়ার ক্ষমতাও চলে গেছে অভির। চোখদুটো বুজে আসছে,, মেঘ অভির গাল উচু করে টেনে ধরলো,, তারপর ডগিকে ওর সামনে ধরলো,, ডগির পিঠে চিমটি দিতেই ডগি অভির সারা মুখে কামড় দিতে লাগলো।

মেঘ : নাহ,, আর দরকার নেই,, ভালো লাগছে না আর। গার্ডস এটার বডিতে ৫-৬টা গুলি ভরে দূরের ময়লার স্তুপে ফেলে আসো। মুখটা থেতলে দিবা আর হ্যা যদি ওর ফ্যামিলির কেউ ওকে খোজে তাহলে কি করবা.?

গার্ডস : ওর হাত দিয়ে আগেই সুইসাইড নোট লিখিয়ে নিয়েছিলাম। কোনো সমস্যা হবে না স্যার।

মেঘ : গুড জব।

চলবে,,,