তুমি আমার অধিকার পর্ব-০৮

0
243

#তুমি_আমার_অধিকার🍂
#লেখক_সাব্বির আহাম্মেদ
#পার্টঃ8

নিরা অনেকক্ষণ ধরে ওয়েট করছে হদয়ের জন্য হদয়ের আসার নাম গন্ধ নেই । নিরা হদয়ের নাম্বারে কল দিলো
হ্যালো কই তুমি হুম…

-এইতো বেবি চলে আসছি একটু ওয়েট ”

আজকে তাদের বিয়ে করার কথা ছিলো…
কিছুক্ষণের মধ্যে হদয় চলে আসলো ।
নিরাঃ- এতক্ষণ লাগে তুমার সেই কখন থেকে ওয়েট করছি আমি । এই কড়া রোদে আমি ঘেমে গেছি জলদি চলো

নিরা তার সাথে করে অনেক টাকা পয়সা আর গহনাঘাটি নিয়ে এসেছে । এটা হদয়কে সে বলেনি কিন্তু হদয় এই বিষয়টা আগে থেকে জানে । সে এই দিনটির জন্য অনেক আগে থেকে প্লান করে নিয়েছে ।

আচ্ছা এইবার নিরার সম্পর্কে কিছুটা জেনে নেই আমারা
নিরা আর নিলয়ের বাবা ব্যবসায়িক সূএে বন্ধু ছিলো সে থেকে তাদের পরিচয় । তারপর দুই বন্ধু মিলে নিলয় আর নিরাকে একসাথে করার ডিসিশন নিলো ।

নিরার বাবার আগে থেকে নিরা আর হদয়ের সম্পর্কটা কথাটা জানতো কিন্তু ওনি নিলয়ের বাবার কাছে বিষয়টা চেপে গিয়েছিলেন ।

আচ্ছা আমরা কোথায় যাচ্ছি হদয়… আমাদের তো আজ বিয়ে করার কথা ।

_হুম তবে এতো তাড়াহুড়ার কি আছে সবেমাএ তুমি মুক্তি পেয়েছো একটু চিল করো ।

হদয়ের কথার ধরণ গুলো নিরার থেকে অদ্ভুত মনে হচ্ছে আজকে । সে আর. তেমন কিছু বললো না হদয়কে ।

নিরা আর হদয় বাইকে করে এসে হোটেলের সামনে দাড়ালো

হদয়ঃ আজ রাতটা এই হোটেলে কাটিয়ে কালকে তুমায় নিয়ে কোথাও ঘুরতে যাবো ।

নিরাঃ- কি বলো সত্যি নাকি ( এক প্রকার লাফিয়ে হদয়কে জাপটে ধরলো)
হদয়ঃ- হুম সত্যি ।

এইদিকে আমাদের হিরোইন অন্তী আজ দুই দিন ধরে কিচ্ছুটি খাচ্ছে না । সারাদিন রুমের দরজা‌‌ দিয়ে বসে থাকে ।

অন্তীর বাবা হারুন সাহেব বুজতে পারলেন তাদের মেয়েটার রাগ এইভাবে ভাঙ্গানো যাবে না । তারা নিলয়ের বন্ধু অথৈ আর আবির কলে দিয়ে তাদের বাসায় আসতে বললো ।

আবির আর অথৈ তো কিছুই বুজতে পারলো না হঠৎা করে তাদেরকে তলব করার মানে কি..?? তবে অথৈ খুব খুশি প্রিয় বন্ধুর সাথে তার দেখা হবে ।

_ তারা দুজনে এখন অন্তীদের বাসার সামনে দাড়িয়ে দরজা নক করতেই হারুন সাহেব দরজা খুলে দিলো ।

অথৈঃ- আসসালামু ওয়ালাইকুম…….. কেমন আছেন আংকেল

হুম ভালো ভেতরে আসো তুমরা ।
তারা ভেতরে ডুকলো । আচ্চা আংকেল অন্তী কোথায় তাকে দেখছি না যে,

সেটার জন্য তুমাদের দুজনকে আসতে বললাম ।

আজ দুই দিন ধরে রুমের দরজা দিয়ে বসে আছে । আমাদের সাথে কথাও বলছে না খাবারও ঠিক মতো খাচ্ছে না ।

আবিরঃ- এখন কোথায় সে??

ওই যে সামনের রুম দেখো কি হয়েছে তার ।

অথৈ আর আবির তারা দুজনেই অন্তীর রুমের সামনে দাড়িয়ে বললো
এই অন্তী দরজা খুল….
এই দেখ আমরা চলে আসছি, প্লিজ দরজা খুল!!
রুম থেকে অন্তীর কেনো সাড়া শব্দ নেই,
অনেকক্ষণ পর অন্তীর সাড়া শব্দ না‌ পেয়ে আবির আর অথৈ হতাশ । তারপর অথৈ নিলয় বলছে তোকে নিয়ে যেতে এটা বলতেই ঠাস করে দরজা খুলে গেলো ।

আবির আর অথৈ ধড়ফড়িয়ে রুমে ডুকলো । রুমের চারদিকে আসবাবপএ গুলো এলেমেলো হয়ে আছে, সুনসান নির্জন হয়ে পুরো রুমটা । খাটের এক কোণে এক বসে আছে অন্তী..
~~~

_ অন্তীর চেহারা দেখে মনে হচ্ছে এই কয়েকদিনে মেয়েটা না খেয়ে কতটা শুকিয়ে গেছে ।

_ কিরে কি হয়েছে তর কতটা শুকিয়ে গেছিস তুই তর খেয়াল আছে হুম…

_ অন্তী অথৈর দিকে চেয়ে রইলো কেনো কথা বললো না ।

আচ্ছা বাবা । চল এখন আর কিছু খেয়ে নে নিলয়ের বাসায় যামু ।

_ এতক্ষণে মনে হলে অন্তী তার প্রাণ ফিরে পেয়েছে সে একপ্রকার ঝাপিয়ে পড়লো অথৈর দিকে সত্যি তুই আমায় নিয়ে যাবি হুম..

_ আরে বাবা হুম নিয়ে যাবো । এখন লক্ষী মেয়ের মতো যা যা বলছি তা করে রেডি হয়ে আয় ।

_অন্তী এক লাফে খাট থেকে নেমে তুই দাড়া আমি এক্ষুণি আসতাছি..

অথৈঃ- আরে ধীরে সুস্থে যায় পড়ে যাবি হা হা হা করে হেসে উঠলো অথৈ আর আবির ।

হারুন সাহেব এতক্ষণ অন্যকাজে বিজি ছিলো । অন্তীর এই হন্তদন্ত দেখে সে তো পুরাই টাস্কি খেয়ে গেলো । তবে মনে মনে খুশি হলো মেয়েটার অবশেষে রাগ ভাঙ্গলো ।

*
*

*
= এই দিকে রাতে খেয়ে দেয়ে নিরা আর হদয় রুমে আসলো ।

হদয়ের হাবভাব দেখে নিরার তেমন সুবিধার মনে হচ্ছে না ।
শোয়ার সময় হদয় নিরার কাছে আসলো ।

– কি হলো তুমি কাছে আসছো কেনো??
– না তেমন কিছু না । ( হদয়)

আচ্ছা শুনো না নীরা । তুমি কি আমায় বিশ্বাস করো??
নীরাঃ- কি বলো এইসব তুমাকে বিশ্বাস করবো না কেনো??
হদয়ঃ- তাহলে আমি যেটা চাইবো দিবে??

নীরাঃ- কি চাও আমার থেকে তুমি..

_ দেখো আমরা তো বিয়ে করবো । তো আজ আমি যা চাইবো তা দিতে হবে । এই বলে হদয় নিরার ওপর ঝাপিয়ে পড়লো ।
নিরা কিছু বুজার উঠার আগেই হদয় নীরার ঠোটে ঠোট মিলিয়ে দিলো । নীরা বাধা দিতে চাইলে আবার দিলো না ভাবলো সে তো আমায় বিয়ে করবে তাহলে এইগুলো করলে সমস্যা কি??

_ নীরাও হদয়ের সাথে তাল মিলিয়ে দিলো হারিয়ে গেলো দুজন দুজনাতে..

______

অথৈ আবির অন্তী নিলয়দের বাসার সামনে এসে দাড়ালো ।
অন্তী হাত কচলাচ্ছে তার মন চাচ্ছে এই গেট দরজা ভেঙ্গে নিলয়ের কাছে ছুটে যেতে..

অতঃপর অন্তী নিলয়ের বাবা মা ভাইবোন সবার সাথে দেখা করে নিলয়ের রুমের সামনে এসে দাড়ালো ।

_ নিলয় পুরাপুরি সুস্থ হয় নি তবে মোটামোটি বললে চলবে.
রুমের দরজা খুলা ছিলো । অন্তী এক দৌড়ে তার বুকের ওপর পড়লো ।

_ এইদিকে নিলয়ের বেচারার তো জানটা প্রায় গেলো ।
অন্তীর এই কাহিনি নিলয় বড় বড় চোখ করে অন্তীর দিকে তাকালো ।

_ কি করছো তুমি?? ছাড়ো মরে যাবো তো..
_ না ছাড়বো না মরে গেলে যাও! তুমার কত সাহস আমাকে তখন যেতে বললা । আর এতোদিন কেনো খোজ নিলা না ।

_ আজ তুমাকে মেরে ফেলবো । এই বলে অন্তী আরো চেপে ধরলো নিলয়কে ।

আবির আর অথৈ এতক্ষণ ধরে আংকেল আন্টির সাথে কথা বলে রুমে ডুকলো ।
অথৈ চোখে হাত‌ দিয়ে বললো এইইইইইইই আমরা কিছু দেখিনি আর অন্তী মেম অনকে হয়েছে এইবার রোমান্টিকতা থামান ।

অন্তী অল্হাদ স্বরে বলে উঠলো থামবো না । তুই এসেছিস কেনো কুওী চলে যায় ।

অথৈঃ- ওমা, এই মেয়ে দেখি পুরা ডেন্জারাস হয়ে গেছে এখন।

এতক্ষণ পর নিলয় বেচারার মুখে খই ফুটলো নীরার সাথে এখনো আমার ডিভোর্স হয় নি তবে পেপার চলে এসেছে সাইন দেওয়া বাকি ।

_অন্তীর এতক্ষণের দুষ্টামি এখন চুপসে গেলো সে নিলয়ের থেকে সরে বসলো ।

আবিরঃ- নিলয় আমি একটা প্লান ভেবে রেখেছি ।
নিলয়ঃ- কি প্লান শুনি

চল কোথাও ঘুরতে যাই । তুই অনেক দিন ঘরে কাটিয়েছিস আর মনটাও ভালো হয়ে যাবে ।

_ এইবার ঘুরার কথা শুনে অন্তীর মনটা নেচে উঠলো তবে কাউকে বুজতে দিলো না ।

_ নিলয়ঃ- হুম কোথায় যাওয়া যায় ঠিক হয়েছে??
আবিরঃ- হুম কক্সবাজার যাওয়া যায়, কি বলিস সুমদ্র সৈকত দেখা যাবে ।

নিলয়:- হুম ঠিক বলছিস, কালকেই রওয়ানা হই ওকে ।

অনেকক্ষণ আড্ডা দেওয়ার পর সবাই বাসায় চলে গেলো । অন্তীও তেমন সমস্যা করলো না সেও চলে এলো..
*

*

*
এইদিকে হদয় আর নীরা সকাল সকাল উঠে গেলে । হদয় কাকে যেনো কল দিলো একটু পর একটা প্রাইভেট কার চলো আসলো সাথে দুইজন ছেলে ।
_ হদয় নীরার দিকে তাকিয়ে হেসে বললো এইগুলো আমার ফ্রেন্ডস তারাও যাবে আমাদের সাথে আমরা আজকে থেকে কালকে রওয়ানা দিবো কক্সবাজারের উদ্দেশ্য..

নীরাঃ- হুম ওকে ।

নদীর পাশে নিলয় অনমনা হয়ে বসে আছে । অন্তীর পাগলামো দিন দিন বেড়ে চলছে । আগে অধিকার কম দেখাতো কিন্তু এখন তো জোর করে অধিকার দেখাতো শুরু করে দিয়েছে । অন্তীকে কল দিয়েছে আসতে বলেছে সে ।

চলেব..