তুমি আমার জিবন পর্ব-১০

0
125

#তুমি_আমার_জিবন
#লেখিকা_তৃষা_খাতুন
পর্ব ১০

আরে এতো দিন পরে তোকে দেখে খুশি তে এতো জোরে জড়িয়ে ধরেছিলাম।

সিমির কথা শুনে সবাই হেসে দেয়।

আরুর আম্মু সিমি কে বলে, সিমি আহি তোর রুমে নিয়ে যা ।

আরু তুমি আব্রাহাম এখন কে নিয়ে তুমি রুমে যাও।

আরুর মায়ের কথা মত আরু আর আব্রাহাম রুমে চলে আসে ফ্রেশ হওয়ার জন্য।

আরু রুমে এসে হিজাব খুলতে শুরু করে। আব্রাহাম ওয়াশরুমে ঢুকে। ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ে। আরু ফ্রেশ হয়ে বিছানায় বসতে, আব্রাহাম বলে,

আরু

হুম বলেন।

না থাক কিছু না।

আব্রাহাম এর কথা শুনে আরু ভ্র কুঁচকে বলে,

এখনই তো ডাকলেন , ডেকে আবার বলছেন কিছু না।

আরে বাদ দেও। কথা টা বলে উঠে দাঁড়াতে সিমি এসে দরজায় নক করে।

আরু দুলাভাই কে নিয়ে আয়। বড় আম্মা ডাকে।

ওকে তুই যা, আমরা আসছি।

চলেন। বলেই রুম থেকে বের হয়ে খাবার টেবিলে বসে আরু।আরুর পিছে পিছে আব্রাহাম ও বসে। আরুর এক পাশে আহি এক পাশে আব্রাহাম বসেছে। আরুর মা কাকি সবাই বেড়ে খাওয়াচ্ছে। এদিকে বেচারা আব্রাহাম খেতে পারছে না তাও দুই শাশুড়ি তাঁর প্লেটে খাবার তুলে দিচ্ছেন। এদিকে আব্রাহাম টেবিলের নিচ দিয়ে আরুর হাত ধরে।

হাত ধরাই আরু আব্রাহামের দিকে তাকাই। আব্রাহাম চোখের ইশারায় বলে, খেতে পারছিনা।

আরুর মা আব্রাহাম কে খেতে না দেখে বলে,

কি হলো বাবা খাচ্ছ না কেন। তোমাকে একটু মাংস দি।

আরুর মায়ের কথা শুনে বলে,

না মা আমি খেতে পারছিনা। আমাকে আর খাবার দিয়েন না।

আব্রাহাম এর কথা শুনে আরুর মা বলে,

আরে বাবা লজ্জা পাচ্ছো কেন। এটা তোমারই বাড়ি। তুমি আস্ত আস্তে খাও।

_____________

খাওয়ার শেষে সবাই আরুর রুমে এসে আড্ডা দিচ্ছে। আরুর মা রুমে এসে বলে,

তোমরা নিজেদের রুমে যাও। আব্রাহাম আরুর রেস্ট নিক ।

আরুর মা নিজের রুমে চলে গেল কথা টা বলে।

এদিকে আরু তার বাবাকে বলে দেয় আরু রাজশাহীতে ভর্তি হবে। তাই এ কলেজ থেকে যেন টিসি এনে দেয়।

আরু আহি কে বলে, আহি এখানে তোমার কোনো অসুবিধা হচ্ছে না তো।

আরে না ,কিজে বলো। এখানে আমার কেন অসুবিধা হবে।

আচ্ছা ঠিক আছে। অসুবিধা হলে বলিও।

ওকে‌ তোমার এখানে থাকো।আর সিমি চলো আমরা আড্ডা দি। ভাইয়া মনে হয় ঘুমাবেন।

আচ্ছা চলো বলেই আহি আর সিমি আরুর রুম থেকে বের হয়ে যায়।

আরু রুমের দরজা লাগিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ে। আব্রাহাম ও শুয়ে আছে। আব্রাহাম আরুকে টেনে নিজের বুকের কাছে নিয়ে আসে। আরু আব্রাহাম কে বলে,

কি হয়েছে এভাবে টানছেন কেন।

বিয়ে করে কি কোলবালিশ নিয়ে ঘুমানোর জন্য কি বিয়ে করেছি।

আব্রাহাম এর কথা শুনে আরু মুচকি হাসি দিয়ে বলে,

তো কি জন্য বিয়ে করেছেন।

আব্রাহাম আরুকে জরিয়ে ধরে বলে,

বউ কে আদর করার জন্য।

আব্রাহাম এর কথা শুনে আরু আব্রাহামের বুকে মুখ লুকিয়ে হাসে।

এভাবে গল্প করতে করতে আরু আর আব্রাহাম ঘুমিয়ে পড়ে।

__________________

সন্ধ্যায় ছোট বড় সবাই মিলে গল্প করে সময় পার করে। রাতে খাবার খেয়ে রুমে এসে আরু ফ্রেশ হয়ে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল আঁচড়াতে আঁচড়াতে আয়নাতে তাকিয়ে দেখি আব্রাহাম তাকিয়ে আছে আমার দিকে।

আরু আব্রাহাম কে বলে,

কি হয়েছে আপনার কাল থেকে খেয়াল করছি , আপনি শুধু আমার দিকে তাকিয়ে থাকেন।

আরুর কথা শুনে আব্রাহাম বলে,

এতো সুন্দর বউ থাকলে তো তাকিয়ে থাকতেই হবে।

আব্রাহাম এর কথা শুনে আরু বলে,

দুনিয়ার আর কোনো ছেলের মনে হয় সুন্দরী বউ নেই, শুধু আপনারই আছে।

আরুর কথা শুনে আব্রাহাম মুচকি হেসে আরুকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলে,

অবশ্যই আমার একার সুন্দরি বউ আছে।

আব্রাহাম আস্তে আস্তে আরুকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলে,

আমাদের কি সামনে এগোনো উচিত।

আরু বলে,

আজ হলেও এগুতে হবে কদিন পর হলেও এগুতে হবে।

আব্রাহাম বলে,

তার মানে তোমার কোনো আপত্তি নেই।

আরু মুচকি হেসে আব্রাহাম কে নিজের থেকে ছারিয়ে।নিজে আব্রাহাম কে জরিয়ে ধরে বলল

না আমার কোনো আপত্তি নেই।

(এর পর কি হলো বা হয়েছে নিশ্চয় বুঝতে পারছেন)

____________________

সকাল নয় টা বাজে আরু এখনো ঘুমাচ্ছে। আব্রাহাম সেই সকালে উঠে নামাজ পরে বাইরে হাঁটা হাঁটি করে এসে দেখে আরু এখোনো ঘুমাচ্ছে। তাই আরু কে না ডেকে নিজে তৈরি হয়ে ভার্সিটি তে চলে যায়।

সেই দিনের পরের দিন আরু রা চলে আসে এ বাড়িতে।ও বাড়ি থেকে আসার ২ মাস হয়ে গেছে। আব্রাহাম আরুকে আহির কলেজ এ ভর্তি করিয়ে দেয়। আরু আর আহি প্রতিদিন এক সাথে কলেজ এ যাওয়া আসা করে। আব্রাহাম রোজ কার মতো আজ ও নিজের কর্মস্থলে চলে গেল। এদিকে আরু এখনো ঘুমাচ্ছে। প্রতি দিন এক সাথে দুইজন ঘুম থেকে উঠে। কিন্তু এ দুই দিন থেকে আরুর শরীর একটু খারাপ তাই সে দেরি করে ঘুম থেকে উঠে।

সকাল থেকে বমি করতে করতে আরুর অবস্থা কাহিল। আরুর এ অবস্থা আব্রাহাম জানে না। আব্রাহাম যখন নামাজে পর হাঁটা হাঁটি করতে যাই তখন থেকে আরু বমি করে। আব্রাহাম আসার কিছু ক্ষন আগে ঘুমিয়ে পড়ে।

সকাল ১১টা বাজে। আজ আরু রুম থেকে বের হচ্ছে না দেখে আব্রাহাম এর মা আরুর রুমে এসে দেখে আরু এখনো ঘুমাচ্ছে। তিনি আরুর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলে,

আরু কি হয়েছে মা এতো বেলা পর্যন্ত ঘুমাচ্ছিস।

আরু পিটপিট করে চোখ মেলে তাকালে দেখতে পায় আব্রাহাম এর মা বলে,

কি হয়েছে রে মা আজ এতো বেলা হয়ে গেল ঘুম থেকে উঠে না। শরীর খারাপ করছে নাকি।

ঘুম জড়ানো কন্ঠে বলে,

জানিনা মা সকাল থেকে কেমন বমি হচ্ছে।

আরুর কথা শুনে আব্রাহামের মা কিছু টা চিন্তিত হয়ে বলেন।

হটাৎ করে এমন হচ্ছে নাকি, অনেক দিন ধরে।

আরু বলে না আজ সকালে হলো আগে হয় নি।

আব্রাহাম এর মা বলে,

এখন উঠে ফ্রেস হয়ে আয়। আমি নাস্তা নিয়ে আসি

কথাটা বলে আব্রাহাম এর মা চলে গেল।আরু উঠে গোসল করে বের হয়ে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল মুছতে শুরু করে। হঠাৎ করে মাথা কেমন ঘুরে উঠলো।ও বিছানায় শুয়ে পড়ে। আব্রাহাম এর মা রুমে নাস্তা নিয়ে এসে দেখে আরুর চুল থেকে পানি পরছে। বিছানার এক পাশ ভিজে গেছে।

আরুকে বলে,

কি হয়েছে চুল না মুছে কেন শুয়ে আছিস মা ।

আমার মাথা কেমন ঘুরাচ্ছে।

আব্রাহাম এর মায়ের কিছু মনে হতেই মুচকি হেসে, আরুকে বলে,

আরু তোর কি এ মাসে প্রিয়ড হয়েছে।

আরু আব্রাহাম এর মা এর কথা শুনে বলে না। হয়নি।

আব্রাহাম এর মা বলে, কবে হবে ডেট কি পার হয়েছে।

না আমার মনে নাই।

আব্রাহাম এর মা আরুর কথা শুনে বলে, ওঠে এখন নাস্তা কর আমি আসছি।

চলবে