তুমি নামক প্রাপ্তি পর্ব-১৬

0
3041

#তুমি_নামক_প্রাপ্তি
#Part:16
#Suraiya_Aayat

রাত10.30,,,,,,

সবে রাতের খাবার শেষ করে আরমান সাহেব ড্রয়িং রুমের সোফাতে পায়ে পা তুলে বসে আছেন ৷ দলের লোক কাজ ঠিকঠাক করেছে কিনা সেই খবরও এখনো উনি পেলেন না, যদিও জানেন যে যে করেই হোক কাজ ঠিকঠাক হবেই, এক একজনকে প্রায় 50 হাজার করে টাকা দিয়েছেন আর্শিয়ানকে তুলে আনার জন্য , এতো টাকা দিয়ে কাজ করানোর পর ভুল ক্রুটির কোন জায়গায় থাকে না ৷
সকালে একটা পান আর রাতে একটা পান না খেলে ওনার দিনটা যেন জমে না ঠিক, তাই আজো তার ব্যাতিক্রম হয়নি ৷ পানটা মুখে পুরে টিভির দিকে তাকিয়ে আছেন ৷ টিভিতে রোজ একই খবর, নারী পাচার, কন্যা সন্তানের নিঁখোজ ৷ এইসব খবর গুলো উনি দেখলে ওনার মুখে পৈশাচিক এক হাসি ফুটে ওঠে ৷
আহান খেয়ে রুমে চলে গেছে তাড়াতাড়ি কারন মুগ্ধতা কান্না করছিলো ৷ আফসানা বেগম কিচেনে রয়েছেন, আজকে রাত্রে উনি খাবেন না, ভালো লাগছে না তার শরীরটা ৷
এইকদিন সানা লক্ষ করেছে যে আফসানা বেগমের মন মেজাজ একদমই ভালো নেই, অবশ্য ভালো না থাকারই কথা,সাংসারিক এমন টানাপোড়েনে ওনার মনটা বিষিয়ে গেছে, সানার ও যেন এই বাড়িতে আর মন টেকেনা , সবসময় কোথাও না কোথাও একটা ভয় কাজ করে ৷
সবার খাওয়া হলেও এখনো সানা খাইনি,কথায় আছে না স্বামী না খেলে স্ত্রী দের আগে আগে খেতে নেই, কথাটা প্রচলিত হলেও সানা বিশ্বাস করে না কিন্ত আহানকে রেখে আগে আগে খেতে ওর একদম ভালো লাগে না, মানুষ টার সারাদিনের স্ট্রাগেল আর দৌড়ঝাপ এর কথা ভাবলেই সানার কষ্ট লাগে তাই যতখন না আহান বাসায় ফেরে ততখন ও খাই না ৷

অনেকক্ষন ধরে কানের কাছে নারীপাচারের নিউজ বেজেই যাচ্ছে যা সানার একদম ভালো লাগছে না,আর যাই হোক মেয়ে হয়ে মেয়েদের ওপর এমন লাঞ্ছনা কারোর ই সহ্য হয় না ‌৷ আহান হলে হয়তো এতক্ষন গিয়ে রিমোটটা কেড়ে নিয়ে দুটো ঝাড়ি দিয়ে টিভির চ্যানেলটাই পাল্টে দিতো কিন্ত এটা আরমান সাহেব সম্পর্কে ওর শ্বশুর হয় তাই চাইলেও এই কাজটা ও করতে পারবে না ৷
কিছুটা অপ্রস্তুত হয়েও সানা বলল
” বাবা টিভির ভলিউমটা একটু আস্তে দিন মুগদ্ধতা ঘুমাচ্ছে ৷”

এতোখন ধরে মনযোগ দিয়ে টিভির দিকে তাকিয়ে খবর শুনছিলেন আরমান সাহেব , সানার কথা শুনে আরমান সাহেব একটু অমোনযোগী হয়ে বললেন
” কিছু বললে বৌমা !”

” বলছিলাম কি বাবা একটু টিভির সাউন্ডটা যদি কম দিতেন, মুগ্ধতা ঘুমাচ্ছে ৷”

সানার কথা শুনে আরমান সাহেব হো হো করে হেসে বললেন
” ওহহ এই ব্যাপার আমি ভাবলাম কি না কি, আরে কিছু হবে না,দিদিভাই জেগে যাবে না, আরে দেখছো না টিভিও নারী পাচার নিয়ে পুলিশের মধ্যে কি দফারফা অবস্থা ৷”
কথাটা বলে হো হো করে হাসতে লাগলেন ৷

সানা ওনার এই অদ্ভুদ ব্যবহারে বড্ড অবাক হলো, একটা মানুষ কিভাবে এতোটা অদ্ভুত ব্যাবহার করতে পারে তাও সমাজে নারীদের অনীরাপত্তা নিয়ে ৷ কথাগুলো ভেবে ওর সারা শরীর শিউরে উঠলো, গলা দিয়ে আর ভাতের দলাগুলো নামছে না, কষ্ট করে মুখের এক লোকমা ভাতটা গিলে প্লেটটা হাতে করে কিচেনে চলে গেল, কিচেনে গিয়ে ভাতগুলো ফেলে দিয়ে হাত ধুতে নিলেই আফসানা বেগম বলে উঠলেন
” কি হলো সানা তুমি না খেয়ে ফেলে দিলে যে !”

” এমনিই ভালো লাগছে না মা ৷”

” শরীর টরির ঠিক আছে তো !”

সানা মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ জানালো ৷ আরমান সাহেবের এই অদ্ভুত ব্যাবহারের কথাটা আফসানা বেগমের কাছে বলবে কি না সেটা ভাবছে, অবশেষে বলেই ফেলল
” মা একটা কথা বলবো ?”

আফসানা বেগম নির্লিপ্ত ভাবে বললেন
” হমমম ব,,,,”

কথাটা বলেও যেন আর বলা হলো না আফসানা বেগমের তার আগেই বাসার দরজার বেল বেজে উঠতেই সানা তাড়াতাড়ি ছুটে গেল ৷

দরজাটা খুলেই সানা বেশ অবাক হলো তার কারণ পুলিশের পোশাক পরা বেশ কয়েকজন লোক দাঁড়িয়ে আছে আর ছোট্ট আর্শিয়ান একটা পুলিশের কোলে ঘুমাচ্ছে তা দেখে সানার সারা শরীর কেঁপে উঠলো , পুলিশ দেখে ভয়ে থরথর করে কাঁপতে লাগলো , মুখ দিয়ে আওয়াজ বেরোচ্ছে না কোন ৷

হঠাৎ একটা পুলিশ বলে উঠলো
” ইনি আপনাদের বাড়ির ছেলে তো ?”

সানা আর্শিয়ানের দিকে তাকালো , ছেলেটা বেঘোরে ঘুমোচ্ছে বেঘোরে তবুও ভয় লাগছে , এর আগে কখনো বাসায় এভাবে পুলিশ আসেনি আর তাছাড়া আরু ই বা কোথায় ! আরূ তো কখনো আর্শিয়ানকে একা ছাড়ে না তাহলে কি আরুর কি কিছু হলো ! কথাটা ভেবে জোরে চিৎকার দিল সানা
” বাবা আম্মু পুলিশ এসেছে ৷”

টিভির খবরের মাঝেও আরমান সাহেবের কানে সানার বলা পুলিশ আওয়াজটা ভেসে উঠতেই ওনার কলিজা শুকিয়ে গেল ৷
উনি মনে মনে ভাবলেন
” এই বুঝি আমার পর্দা ফাঁস হয়ে গেল , এখন কি হবে !”
কথাটা ভেবেই উনি হুড়মুড় করে ওনার রুমের দিকে চলে যেতে নিলেই হঠাৎ আফসানা বেগম বলে উঠলেন
” কোথায় চলে যাচ্ছে তুমি? বাসায় পুলিশ এসেছে আর তুমি কাপুরুষের মত পালিয়ে যাচ্ছ? একটা কথা মনে রেখো যারা পাপ করে তাদের মনে পাপের ভয় থাকে ৷”
আরমান সাহেব নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার জন্যে বেশ জোর গলায় বলে উঠলো
” এই মেয়ে মানুষের মাথার তার ছিড়ে গেছে দেখছি , কখন কার সামনে কি বলতে হয় তা জানেনা দেখছি ৷ বাসায় পুলিশ এসেছে আর তুমি আমাকে দোষারোপ করতে শুরু করে দিলে ! আচ্ছা বেয়াদপ ৷”(রগের মাথায়)

আফসানা বেগম চোখ রাঙিয়ে বললেন
” এতই যখন নির্দোষ তুমি হও আর তোমার মনে পাপের ভয়ে যদি না থেকে থাকে তাহলে পালাচ্ছিলে কেন?”

আমি তো আহান কে ডাকতে যাচ্ছিলাম ৷

” তুমি আহানকেই বা ডাকতে যাচ্ছিলে কেন, আগে কি তুমি যেতে পারতে না !”

আফসানা বেগমের ক্রমাগত প্রশ্নের তির ওনার দিকে ছুটে আসায় উনি মেজাজ হারালেন
” তুমি দেখতে বড্ড প্যাচাল বাধাচ্ছো , বেশি কথা না বলে চলো দেখি ওরা কি জন্য এসেছে ৷”

কথাটা শুনে আরমান সাহেব সামনের দিকে এগিয়ে গেলেন, আরমান সাহেবের দিকে রাগী চোখ করে তাকিয়ে ওনার পিছন পিছন গেলেন আফসানা বেগম ৷ আরমান সাহেব গিয়ে বলতে লাগলেন
” কি চাই ?”( উনি এখনো আর্শিয়ান কে দেখেননি)

দলের মধ্যে থেকে একটা পুলিশ বলে উঠলেন
“এই বাচ্চাটা তো আপনাদের বাড়ীর ছেলে তাইনা ! বাচ্চাটাকে কেউ কিডন্যাপ করার চেষ্টা করেছিল, সৌভাগ্যবশত আমরা সেই খবর পেয়ে বাচ্চাটাকে রেস্কিউ করতে পারি ৷”

আরমান সাহেব এবার আর্শিয়ানকে দেখে চমকে উঠলেন , খানিকটা পিছিয়ে গেলেন ভয়ে তারপর নিজেকে খানিকটা সামলানোর চেষ্টা করে বললেন “এইতো আমার আরশিয়ান দাদুভাই , কে ওর এত বড় ক্ষতি করার চেষ্টা করেছিল !”
কথাটা বলে পুলিশের কাছে তাড়াতাড়ি গিয়ে আর্শিয়ানকে নিজের কোলে তুলে নিলেন ৷

পুলিশ বলে উঠলো
” দুজনকে দেখেছিলাম কিডন্যাপ করতে, তবে আনফরচুনেটলি দুজনই পালিয়েছে আমরা কাউকে ধরতে পারিনি ৷”
আরিশের নির্দেশ অনুযায়ী সাজিয়ে কথাগুলো বলছে ৷
কথাটা শুনে আরমান সাহেবের ভ্রু কুচকানো থেকে সোজা হয়ে গেলো ৷ উনার আর কোন ভয় নেই ,উনি সম্পূর্ণ নিরাপদ ৷ কথাটা শুনে সাথে সাথে একগাল হাসি নিয়ে বললেন
” আমার দাদুভাই কে ফিরে পেয়েছি এটাই অনেক আর কিছু চাইনা ৷ আপনাদের অনেক ধন্যবাদ ৷”

তার মধ্যে থাকা একটি জুনিয়র পুলিশ বলে উঠলো “খেয়াল রাখবেন বাচ্চাটার আর তার মাকে আমরা কোথাও খুঁজে পাইনি, খুঁজে পেলে আমরা আপনাদেরকে নিশ্চয় জানাবো, অথবা তার ফেরার জন অপেক্ষা করূন বলে চলে গেলেন ৷

_____

এতক্ষণ ধরে গোটা এয়ারপোর্ট ধরে বিধ্বস্ত ভাবে ঘুরছিল আরু কিন্ত যখন জানতে পারলো যে নিহান ওকে মিথ্যা কিছু বলেনি বরং যা বলেছে ঠিক ই বলেছে যে আরশিয়ান ঢাকা তে আছে তখন মনের ভিতর জুঁড়ে অদ্ভুত এক প্রশান্তি বিরাজ করছে ওর৷ তাছাড়া এতক্ষণ ফোনে চার্জ ছিলোনা, কোন রকম ভাবে ম্যানেজ করে একটা ফোনের বুথ থেকে ফোন করেছে বাসায় ওর আম্মুর কাছে ৷ উনি বলেন যে আর্শিয়ানকে পুলিশ কিছুখন আগে দিয়ে গেছে ৷

প্লেন দু ঘন্টা লেট, কথাটা ভেবে আরুর মেজাজ বিগড়ে যাচ্ছে, সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত অবস্থা ওর ৷ এয়ারপোর্টের যাত্রীদের বসার জায়গায় হাত পা ছড়িয়ে বসে আছে আরু, চুলগুলো এলোমেলো চোখ-মুখ উস্কোখুস্কো ,ওকে দেখে কোন স্বাভাবিক মষ্তিষ্কের মানুষ বলে মনে হবে না ৷ আরুর মনে এখন কিছুটা হলেও শান্তি লাগছে ৷ প্লেন আসার এখনো দুই ঘন্টা দেরি আর এই এক ঘন্টা ও পুরো এয়ারপোর্ট তন্নতন্ন করে খুজেছে , যদি আর্শিয়ানকে সেখানে কোথাও পাই ৷ প্রায় 12 ঘন্টা হয়ে গেল আরু আর্শিয়ানকে দেখেনি যেখানে ও ছেলেটাকে ছেড়ে এক মুহূর্তও থাকার কথা ভাবতেও পারেনা ৷ আরুর চোখে যেন আগুনের ফুলকি ঝরছে, টকটকে লাল চোখ যা সবকিছুকে যেন নিমেষেই ভষ্ম করে দেবে ৷ ওর ছেলেকে যে বা যারা ওর থেকে কেড়ে নেওয়ার জন্য কেউ এত কিছু প্ল্যান করেছে তাদেরকে যদি আরু কখনো সামনে পায় তাহলে তাদেরকে ও কেটে টুকরো টুকরো করে পদ্মায় ভাসিয়ে দেবে ৷

________

“তুমি আমার দাদুভাই কে কিডন্যাপ করার চেষ্টা করেছিলে তাই না বলো ! ”
আরমান সাহেব এর গলায় ছুরি ধরে ৷

আরমান সাহেব এবার ভয়ে ভয়ে বললেন
” এই বেয়াদপ মহিলা গলা থেকে ছুরি সরা ৷ বারবার ছুরি দিয়ে ভয় দেখাস তুই কি ভাবিস আমি ভয় পেয়ে যাব , আর যে কাজ আমি করিনি তার দাইভার আমি কেন নেব !”

উনি একরকম ভাবে বললেন
” আমি জানি তুমি আরশিয়ানের ক্ষতি করার চেষ্টা করেছো, কি এমন ক্ষতি করেছে ছোট বাচ্চা ছেলেটা তোমার যে তুমি তার পিছনে এভাবে পড়ে রয়েছ?কিসের এত শত্রুতা তার সাথে তোমার ? তুমি কি জানো একটা মায়ের তার সন্তানকে হারানো কতোটা কষ্টকর কতটা বেদনাদায়ক ৷
যখন আমার মেয়ে আমার কাছে ফোন করে হাঁপাতে হাঁপাতে পাগলের মত করে বলছিল
” আম্মু জানো আমি আর্শিয়ানকে কোথাও খুঁজে পাচ্ছিনা, ওকে আমি সব জায়গায় খুজেছি আমি কোথাও পাইনা, ও কি তোমার কাছে আছে ! ”

ওর কথার পরিবর্তে আমি যখন বললাম যে
” হ্যাঁ আরশিয়ান আমার কাছে আছে ৷”
তখন ও ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে দিল ৷
এই কষ্টটা ঠিক কতটা ভয়ানক তা কি তুমি জানো ?

আর কি বলেছে যানো আমার মেয়েটা ?
” আম্মু আমার আর্শিয়ানটা না খুব ছোট,ও আমাকে ছাড়া একদম থাকতে পারে না ,ও খুব ভয় পায় রাতের অন্ধকারে , তুমি ওকে সাথে করে নিয়ে ঘুমিয়ো ,ওর একটু যত্ন রেখো , খেয়াল রেখো যতক্ষণ না আমি আসছি তুমি ওকে প্লিজ বকাঝকা করো না , আর ওর হাত পা কেটে গেলে তুমি একটু মলম লাগিয়ে দিও ,ও না একদম ব্যাথা সহ্য করতে পারে না , আসলে কি ও তো জানেও না যে ব্যাথা পেলে ঠিক কষ্ট টা কত হয় কারন আমি ওকে কখনো ব্যথা পেতে দিইনি ৷ আর্সিয়ানের খিদে পেলে ও কখনও মুখ ফুটে বলে না যে
” আম্মু আমার খিদে পেয়েছে ৷”
তুমি একটু ওকে জোর করে খাইয়ে দিও , আমার ছেলেটাকে তুমি আব্বুর মতো যেন আবার অবহেলা করো না ৷”
কথাগুলো বলে আরু ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদতে লাগলো ৷
একটা মায়ের কান্নার আর্তনাদ কি তা তুমি কখনো বুঝবে না, কিন্ত তুমিতো নরপশু ৷

আরমান সাহেব এই সুযোগে আফসানা বেগম এর হাত থেকে কেড়ে ছুরিটা নিয়ে জানলা দিয়ে বাইরে ফেলে দিয়ে বললেন
” নাটকবাজ মহিলা দিনদুপুরে নাটক করা বন্ধ করে তুইও ঘুমা আর আমাকে ঘুমাতে দে , আর এই আর্শিয়ানকে নিয়ে ঘুমা , আমাকে আর বিরক্ত করিস না বলে শুয়ে পড়লো ৷

আফসানা বেগম মেঝেতে বসে চিৎকার করে কাঁদছেন ,উনি যে নিরুপায়, কিছু করার নেই তার ৷

💕

আরুর চোখটা জ্বালা করছে, চোখের সামনেটা ঝাপসা হয়ে আসছে , হঠাৎ পাশে কারোর উপস্থিতি অনুভব করে বুঝতে আর বাকি রইলো না মানুষটা কে ,তাই বুঝে সেখান থেকে উঠে চলে যেতে নিলেই মনুষটা ওর হাত ধরে নিলো, তার যে অনেক কিছু বলার আছে ৷

Suraiya Aayat

#চলবে,,,,,,