তুমি হৃদয়ে লুকানো প্রেম পর্ব-৩৬+৩৭

0
276

#তুমি_হৃদয়ে_লুকানো_প্রেম
#তাহিরাহ্_ইরাজ
#পর্ব_৩৬

” ছ্যা ছ্যা পুতলা। শেষমেষ এই ছিল তোর মনে? চোখের জল নাকের জল এক করে সুইজারল্যান্ডের মাটিতে গঙ্গা যমুনা বানিয়ে ফেলছিস! শেইম অন ইয়্যু। ”

হতবিহ্বল দুয়া ভুলে গেল দুঃখ। তৎক্ষণাৎ তাকালো ডান পাশে। তার ফ্যাল ফ্যাল দৃষ্টি নিবদ্ধ হলো তূর্ণ’তে!
.

নীলচে সোফায় বসে ফোনালাপে মগ্ন দুয়া। কর্ণে ঠেকিয়ে রাখা মোবাইল। অপর প্রান্ত হতে শোনা যাচ্ছে,

” ছোটাপু! তোমার ওখানে খুব ভাল্লাগছে? মজা করছো তাই না? ”

” হাঁ ভাইয়্যু। মজা হচ্ছে। বাট আই মিস্ ইয়্যু। ”

ছোট্ট জাহিন হেসে উঠলো। বললো,

” ইশ্ ছোটাপু বাচ্চাদের মতো মন খারাপ করে। কিন্তু জাহিন মন খারাপ করে না। মিস্ করছে না তো। ”

দুয়া অভিমানী কণ্ঠে শুধালো,

” কেন? ভাইয়্যু আমায় মিস্ করে না কেন? ”

” আম্মু মানা করছে তো। বলেছে ছোটাপু চলে আসবে। আমার জন্য মজার মজার চকোলেট, গিফটস্ আনবে। তাই তো জাহিন মিস্ করে না। ”

অশ্রুসজল নয়নে হেসে উঠলো দুয়া।

” তাই? ”

” হাঁ তো। তুমিও মন খারাপ করো না। ঠিক আছে? মন খারাপ হলে তূর্ণ ভাইয়া আছে না? তাকে বলবে। তোমায় বড় বড় বিদেশী চকলেট কিনে দেবে। মন একদম ভালো হয়ে যাবে। হুম। ”

দুয়া বাঁ হাতের তর্জনী ছুঁয়ে অশ্রু কণা মুছে নিলো।

” ওকে ভাইটা। ছোটাপু তাই করবে। তুমিও মন খারাপ করো না। আম্মু আব্বু ওদের দেখে রেখো কেমন? ”

” আমি দেখে রাখি তো। আমি তো গুড বয়। সব্বাইকে দেখে রাখি। ”

” এই না হলে আমার সোনা ভাইয়্যু। আই লাভ ইউ ভাইয়্যু। ”

জাহিন ফটাফট বললো,

” আই লাভ ইউ ঠু। আচ্ছা রাখি। হোমওয়ার্ক করতে হবে তো। বাই বাই। আল্লাহ্ হাফিজ। ”

” আল্লাহ্ হাফিজ। আসসালামু আলাইকুম। ”

” ইশ্ রে! ভুলে গেছি। ওয়া আলাইকুমুস সালাম। টা টা। বাই বাই। ”

যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হলো দুই পক্ষের। দুয়া ভেজা নেত্রে মোবাইলের দিকে তাকিয়ে। আদুরে ভাইটার কথা বড্ড মনে পড়ছে। ওকে আলিঙ্গন করে আদর করতে ইচ্ছে করছে। সোনা ভাইটা কত বড় হয়ে গেছে! বুঝদার হয়ে গেছে। দুয়া অনেকটা সময় ধরে অন্যমনস্ক, দুঃখ ভারাক্রান্ত হয়ে রইলো। যা পছন্দ হলো না একান্ত মানুষটির। তাই তো পরিবেশ স্বাভাবিক করার সামান্য এক প্রচেষ্টা,

” ছ্যা ছ্যা পুতলা। শেষমেষ এই ছিল তোর মনে? চোখের জল নাকের জল এক করে সুইজারল্যান্ডের মাটিতে গঙ্গা যমুনা বানিয়ে ফেলছিস! শেইম অন ইয়্যু। ”

হতবিহ্বল দুয়া ভুলে গেল তার দুঃখ। তৎক্ষণাৎ তাকালো ডান পাশে। তার ফ্যাল ফ্যাল দৃষ্টি নিবদ্ধ হলো তূর্ণ’তে! তূর্ণ কেমন নাক সিঁটকালো।

” ইশ্। ওঠ ওঠ। সুইসদের দামী সোফা দিলি তো ভিজিয়ে। আহা রে! বিদেশীদের শখের দামী সোফা। গেল রে যমুনায় ভেসে গেল। ”

আফসোস প্রকাশ করলো তূর্ণ। তাতে মেজাজ বিগড়ে গেল মেয়েটির। সোফা ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো সে। তূর্ণ’র পানে এগোতে এগোতে বললো,

” কি বললে? আমি বিদেশীদের দামী সোফা ভিজিয়ে দিয়েছি? যমুনায় সোফা ভেসে গেছে? ”

তূর্ণ পেছাতে পেছাতে বললো,

” অফকোর্স। কোনো সন্দেহ? ”

” ইয়াহ্। সন্দেহ তো আছেই। তাই তো নিরীক্ষা করে দেখতে চাই। যমুনায় তুমিও ভেসে গিয়েছো কি না। ”

টেনে টেনে কথাটা বললো দুয়া। তূর্ণ হাত দিয়ে ওকে থামাতে নির্দেশ দিলো।

” ওয়েট। ওখানেই থাম। এমন চু.রেল এর মতো এগিয়ে আসছিস কেন? ”

মধুরতম হাসি উপহার দিলো দুয়া। এক পা দু পা করে এগোতে লাগলো আর বললো,

” আমি না তোমার বিবিজান? তোমার সন্নিকটে আসতে কিসের মানা? ”

তূর্ণ’র কাছে ভাবসাব সুবিধার ঠেকছে না। তাই তো পিছু হটে দিলো এক দৌড়। তৎক্ষণাৎ পিছু নিলো দুয়া। কর্কশ গলায় বলতে লাগলো,

” পালাচ্ছো কেন? দাঁড়াও বলছি। আমার নামে এতবড় অপবাদ! আজ তোমার একদিন কি আমার একদিন। ”

তূর্ণ দৌড়ে বেডের অপর প্রান্তে চলে গেল। মিথ্যা মিথ্যা শাসনের ভঙ্গিতে বললো,

” অবাধ্য নারী। কতবড় সাহস! প্রাণের স্বামীকে ধাওয়া করছিস। পাপ হবে রে পাপ। ”

” হোক। আজ তো আমি তোমার চাপাবাজির হেস্তনেস্ত করেই ছাড়বো। ”

তূর্ণ এক লাফে বিছানায় উঠে পড়লো। ভ্রু নাচিয়ে প্রশ্ন করলো,

” আচ্ছা? কি করবি সোনা বউ আমার? ”

দুয়াও বিছানায় উঠে পড়লো। মুখোমুখি দাঁড়িয়ে দু’জনে। একজনের চোখে জিজ্ঞাসু ভাব তো আরেক জনের চোখে চ্যালেঞ্জিং মনোভাব। চোখে চোখে অস্পৃশ্য লড়াই হলো। তূর্ণ চোখের ইশারায় জানতে চাইলো কি করবে! দুয়া রহস্যময় হাসলো। তূর্ণ কিছু বুঝে ওঠার পূর্বেই ঝুঁকে গেল দুয়া। আর তূর্ণ কোনোকিছু বুঝে ওঠার পূর্বেই আ.ক্রমণ! বালিশের
আ|ক্রমণ সোজা আদ্রিয়ান আয়মান তূর্ণ’র ডান বাহুতে। হতবিহ্বল তূর্ণ’র মুখপানে তাকিয়ে দাঁত কেলিয়ে হাসলো দুয়া।

” ক্যালানি হবে ক্যালানি। ”

কিছু বুঝে ওঠার পূর্বেই বাম বাহুতে আঘাত। তূর্ণ তৎক্ষণাৎ দুয়া’র বাঁ হাত ধরে টান দিলো। প্রশস্ত বক্ষপটে হুমড়ি খেয়ে পড়লো মেয়েটা। মৃদু আঘাত পেল নাকে। বালিশসহ তার মাইরা’কে পেশিবহুল দু হাতে আবদ্ধ করে নিলো তূর্ণ। চোখে চোখ রেখে বললো,

” কত্ত বড় সাহস। বিদেশী বালিশ দিয়ে প্রাণের স্বামীকে মা”রছিস! আজ তো তোকে আমি..! ”

দুয়া হাসি হাসি মুখে শুধালো,

” কি করবেন সাহেব? ”

তূর্ণ দুর্বোধ্য হাসলো। যা বোধগম্য হলো না মেয়েটির। সে সংশয় মিশ্রিত চাহনিতে তাকিয়ে। হঠাৎ বিপরীত পক্ষ হতে পাল্টা আ|ক্রমণ। উদরে এলোমেলো রূপে ছুটে বেড়াচ্ছে পুরুষালি হাতটি। সুড়সুড়িতে অতিষ্ঠ মেয়েটি ছটফট করতে লাগলো। দু’জনের মধ্যকার ব্যবধান স্বরূপ থাকা বালিশটি লুটিয়ে পড়লো বিছানায়। আরো ঘনিষ্ঠ হলো তারা। দুয়া নিজেকে বাঁচাতে বাঁ হাতে ঠেলে দিচ্ছে বক্ষপট। তবে বিন্দুমাত্র সরাতে ব্যর্থ। তূর্ণ’র বাম হাতে পৃষ্ঠদেশ আঁকড়ে ধরা। ডান হাত ছুটে বেড়াচ্ছে উদরের যত্রতত্র। হাসতে হাসতে মেয়েটির দিশেহারা অবস্থা। দুজনের লড়াই চলতে চলতে একসময় ভারসাম্য বজায় রাখা দুষ্কর হলো। এলোমেলো ভঙ্গিতে বিছানায় লুটিয়ে পড়লো কপোত-কপোতী। নিম্নে দুয়া। তার উপরিভাগে তূর্ণ। আর পারছে না দুয়া। ঘন ঘন শ্বাস পড়ছে। ততক্ষণে থেমে গেছে অবাধ্য দুষ্টু হাতটি। দু’জনের অধরে লেপ্টে হাসি। চোখেমুখে দুষ্টুমির ছাপ। ঘন ঘন পড়ছে শ্বাস। আস্তে আস্তে মানুষটির অধরে লেপ্টে থাকা হাসির রেখা মিলিয়ে গেল। নয়নে বাসা বাঁধলো নে শা। ঘোর লাগা সে নে”শা! নে|শাময় চাহনি ঘুরে বেড়াতে লাগলো ডাগর ডাগর আঁখি জোড়ায়। কখনোবা সুডৌল নাক পেরিয়ে নিম্নে। ওষ্ঠাধরে দৃষ্টি নিবদ্ধ হতেই গণ্ডস্থল মরুভূমির ন্যায় খাঁ খাঁ করে উঠলো। তৃষ্ণার্ত-পীড়িত হৃদয় একটুখানি ছুঁয়ে দেয়ার বাসনায় ক্লিষ্ট! বারবার নিজেকে সংযত করতে চেয়েও ব্যর্থ হৃদয়। অবশেষে মনের ধারে হেরে গেল মস্তিষ্ক। একটু একটু করে ঝুঁকে গেল মানুষটি। হঠাৎই সম্বিৎ ফিরে পেল দুয়া। ততক্ষণে মানুষটি অতি সন্নিকটে। ওষ্ঠে ছুঁয়ে যাচ্ছে তপ্ত শ্বাস। ধক করে উঠল হৃদয়। শিহরিত তনুমন। তূর্ণ কেমন মোহাচ্ছন্ন চাহনিতে তাকিয়ে। বৃদ্ধাঙ্গুল আলতো করে ছুঁয়ে যাচ্ছে অধর। চোখের ভাষায় কিছু বোঝাতে উদগ্রীব মানুষটি। কেন তার মাইরা পড়তে পারছে না সে ভাষা? কেন অপেক্ষা নামক যাতনায় তারে আরো ভোগান্তি দিচ্ছে? কেন?

তূর্ণ’র মনোবাসনা বুঝি মেয়েটির বোধগম্য হলো। তাই তো আবেশে মুদিত করে নিলো নেত্রজোড়া। ডান হাতে আঁকড়ে ধরলো অর্ধাঙ্গের বুকের ধারে সোয়েটার। হালাল সঙ্গিনীর মৌন সম্মতি পড়তে বিন্দুমাত্র কালক্ষেপণ হলো না মানুষটির। চোখেমুখে ফুটে উঠলো তৃপ্তিকর আভা। আস্তে ধীরে আরো ঝুঁকে গেল তূর্ণ। দূরীকরণ হলো দু’জনার মধ্যকার দূরত্ব। সন্ধি হলো অধরে অধরে। এত বছরের হৃদয়ে লালনকৃত অনুভূতি। কখনো যা প্রকাশ করা হয়ে ওঠেনি। দূর হতে শুধু দেখে গেছে‌। রেখেছে তারে আগলে। আজ এতগুলো বছর বাদে হৃদয়ে লুকানো প্রেম স্বার্থক! মাইরা এখন তার হালাল সঙ্গিনী। যারে ছুঁয়ে দেয়া হালাল। পবিত্রতায় ভরপুর। তূর্ণ আঁখি পল্লব বদ্ধ করে মুহুর্তটুকু উপভোগ করতে লাগলো। নীরবে টেনে নিলো আরো সন্নিকটে। একান্ত জনের প্রদানকৃত প্রথম প্রগাঢ় স্পর্শ। হৃদয়ের অন্তঃস্থল হতে অনুভব করতে লাগলো দুয়া। অক্ষিকোল গড়িয়ে পড়লো দু ফোঁটা অশ্রু। নিভৃতে নিজের সনে আরো আগলে নিলো একান্ত সঙ্গীকে।

নিশুতি রাত। বিছানায় রাখা আকর্ষণীয় মোড়কে মোড়ানো উপহার। হাতে ছোট্ট শুভ্র চিরকুট। তাতে গোটা গোটা অক্ষরে লেখা,

” লালাভ রঙে নিজেকে সাজাও একান্ত জনের তরে। আমি অপেক্ষায় রয়েছি প্রিয়া। ”

অজানা অনুভূতিতে আবিষ্ট হলো তনুমন। চিরকুটটি বুকে আগলে নিলো দুয়া। অধরে লেপ্টে লজ্জালু হাসি।
.

বালুচরের বুকে আকর্ষণীয় সজ্জা। সম্মুখে শান্ত জলধারা। বালির বুকে ছোট ছোট কদম ফেলে পদযুগলে মেখে নিলো বালুর স্পর্শ। যত অগ্রসর হচ্ছে বিমুগ্ধ হচ্ছে নয়ন। পথের দু ধারে ক্ষুদ্রাকৃতির মোজাইক গোলাকার ভোটিভ টি-লাইট। বর্গাকৃতি টেবিলের চারিদিকে লম্বা স্ট্যান্ড লাইট। টেবিলের ওপর সুষ্ঠু রূপে আয়োজন। শুভ্র টেবিলক্লথ, ডিনারওয়ার, কাপড়ের ন্যাপকিন, কাটলারি সবটাই মানানসই। আকর্ষণীয়! টেবিলের মধ্যখানে একটি গোলাকার সমতল বাটি রাখা। এটি জল দিয়ে পূর্ণ করা এবং এতে রাখা কিছু রঙিন ভাসমান মোমবাতি। মোমবাতির পাশে ভেসে বেড়াচ্ছে কিছু গোলাপের পাপড়ি। নিশুতি রাতে হলদে কৃত্রিম আলোয় এমন আয়োজন সত্যিই মনোমুগ্ধকর! চোখ ধাঁধানো! দুয়া মুগ্ধ নয়নে অবলোকন করতে করতে কখন যে টেবিলের ধারে পৌঁছে গেল টেরও পেলো না। হঠাৎ তার ধ্যান ভঙ্গ হলো। পিছু ঘুরে তাকালো দুয়া। বৃদ্ধি পেল হৃদস্পন্দন।

এগিয়ে আসছে তূর্ণ। পড়নে তার সফেদ রঙা ব্লেজার। অন্তরালে লালচে শার্ট। চুলগুলো জেল দিয়ে সেট করা। অধর কোণে মোহনীয় দ্যুতি। মেয়েটির হৃদস্পন্দনের গতি ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। তেমনিভাবে তূর্ণ’র বিমোহিত চাহনি নিবদ্ধ তার মাইরা’তে। মেয়েটির পড়নে লালাভ ব্লেজার এবং মেক্সি প্লেটেড স্কার্ট। কোমরে বাঁধা আকর্ষণীয় মোটা বেল্ট। চুলগুলো বাঁ পার্শ্বে সাইড সুইপ্ট কার্ল করা। মুখশ্রীতে হালকা প্রসাধনীর ছোঁয়া। তাতেই অপরূপা লাগছে! তূর্ণ মুখোমুখি দাঁড়ালো। তার অবাধ্য চাহনিতে মিইয়ে গেল মেয়েটি। লাজুকলতার ন্যায় নত হলো মুখশ্রী। তূর্ণ মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে রইলো। মৃদু স্বরে আওড়ালো,

” মাশাআল্লাহ্! ”

লাজে রাঙা মেয়েটি বাম দিকে ঘুরে দাঁড়ালো। মুচকি হাসলো তূর্ণ। মেয়েটির কোমল হাত ধরে চেয়ারের পানে এগিয়ে গেল। সযত্নে বসালো চেয়ারে। নিজে বসলো বিপরীত দিকের চেয়ারে। দুয়া আশেপাশে দৃষ্টি বুলিয়ে মিহি স্বরে বললো,

” থ্যাংকস। ”

” ফর হোয়াট? ” তূর্ণ বাঁ ভ্রু উঁচু করে তাকিয়ে।

দুয়া লাজুক হেসে বললো,

” ফর এভরিথিং। ”

” কিন্তু ম্যাডাম। আজ যে শুকনো ধন্যবাদে মন ভরবে না। চাহিদা ভিন্ন কিছু। ”

” কি? ” জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে দুয়া।

তূর্ণ মুচকি হাসলো।

” সময়মতো বুঝতে পারবে। ”

টেবিলে একনজর চোখ বুলিয়ে বললো,

” লেটস্ এনজয় দ্যা ক্যান্ডেল লাইট ডিনার। ”

মাথা নাড়ল দুয়া। তূর্ণ একে একে খাবারের ওপর হতে আবরণ সরিয়ে ফেললো। দৃশ্যমান হলো খাবার। উষ্ণ গোলাপী মিসো বিফ সালাদ। মিক্সড ওয়ার্ম ভেজিটেবল। ডেজার্ট হিসেবে রয়েছে ভ্যানিলা ফ্লেভারড পান্না কোটা। সঙ্গে ফ্রুট শ্যাম্পেন। লোভে আচ্ছন্ন হলো দুয়া।

” ওয়াও! দারুণ আয়োজন করেছো তো। দেখেই জিভে পানি চলে এসেছে। ”

” তাই? তাহলে দেরি কিসের? লেটস্ স্টার্ট। ”

হেসে সম্মতি জানালো দুয়া। মুখে নিলো মিসো বিফ সালাদ।

” উম্ মজা। তবে সব ই লাইট খাবার। ”

” ইচ্ছে করেই লাইট অ্যারেঞ্জ করেছি। রাতেরবেলা এত ভারী খাবার খাওয়া অনুচিত। এর ওপর আজ তো মোটেও নয়। ”

তৎক্ষণাৎ প্রশ্ন করলো দুয়া।

” কেন? আজ কি এমন বিশেষ? ”

কিছু বললো না তূর্ণ। শুধু অধর কা’মড়ে দুর্বোধ্য হাসলো। দুয়া অবশ্য তা লক্ষ্য করেনি। সে আরেক চামচ মুখে তুলতে উদ্যত হতেই বাঁধা প্রাপ্ত হলো। তার মুখে মিক্সড ওয়ার্ম ভেজিটেবল তুলে দিয়েছে তূর্ণ। দুষ্টুমি করে বললো,

” ক্যান্ডেল লাইট ডিনারে নিজ হাতে খাওয়া নিষিদ্ধ। জানো না বোকা মেয়ে? ”

হাসলো দুয়া। খাবার চিবুতে চিবুতে বললো,

” জানা ছিল না। আজ জানলাম। ”

” জানবে কি করে? আগে কি মাস্টার তূর্ণ ছিল তোমার জীবনে? ছিল না তো। তাই জানতে না। এখন নিত্যনতুন কত পাঠ জানবে। শিখবে। বেহিসেবি পাঠ শেখার জন্য প্রস্তুত হন মিসেস জাহিরাহ্ দুয়া। ”

দুয়া নিঃশব্দে হাসলো। অবুঝ মেয়েটি এ কথায় বেশি ভাবলো না। চুপটি করে নিজ হাতে তূর্ণকেও খাইয়ে দিলো। মাঝেমধ্যে টুকটাক কথাবার্তা, একে অপরকে খাইয়ে দেয়া পর্ব চললো।

চলবে.

#তুমি_হৃদয়ে_লুকানো_প্রেম
#তাহিরাহ্_ইরাজ
#পর্ব_৩৭ ( তূর্ণয়া স্পেশাল )

মেয়েটির মুখশ্রীতে লাজুকতা। দৃষ্টি নিবদ্ধ সম্মুখে হাঁটু গেড়ে বসে থাকা মানবের পানে। তার কোমল দু’টো হাত আবদ্ধ তূর্ণ’র হাতের মুঠোয়। নয়নে নয়ন রেখে প্রেমিক পুরুষটি বলতে লাগলো। তার পুরুষালি ভারিক্কি স্বরে উচ্চারিত হতে লাগলো তাহসান এর গানের কিছু শব্দমালা,

” তুমি ভাবনায় ডুবে থাকা
দূর আকাশের নীলিমায়
তুমি হৃদয়ে লুকানো প্রেম
মিশে থাকা গভীর মুগ্ধতায়

তুমি এলে মন ছুঁলে
অন্যরকম হয়ে যাই
ইচ্ছে গুলো জড়োসড়ো
ভালোবাসি বলে তাই

আমার আমি বলতে তোমায় জানি
ঐ আকাশ জানে তুমি আমার কতখানি। ”

কোমল হাতের ত্বকে ওষ্ঠ ছুঁয়ে দিলো তূর্ণ। আঁখি জোড়া নিমীলিত হলো মেয়েটির। রূক্ষ হাতের মুঠোয় পেলব হাত দু’টো আঁকড়ে ধরে উঠে দাঁড়ালো তূর্ণ। এগিয়ে এলো সন্নিকটে। দু’জনার মধ্যকার দূরত্ব প্রায় শূন্যের কোঠায়। একান্ত জনের উপস্থিতি অনুভব করে নেত্র মেলে তাকালো দুয়া। চোখে চোখ রেখে মানুষটি বলতে লাগলো,

” তুমি হৃদয়ে লুকানো প্রেম আমার
যারে সযতনে আগলে রেখেছি অজস্র কাল।
হবে কি আমার মাইরা?
রাঙাবে কি নিজেকে আমারই রঙে?
কথা দিচ্ছি ভালোবাসার রঙধনুতে রাঙাবো তোমায়
আগলে আগলে রাখবো আগামী সহস্র কাল। ”

মেয়েটির আঁখি জোড়া নোনাজলে পূর্ণ হলো। চোখেমুখে তৃপ্তির আভা। নিজে থেকে আরেকটু এগিয়ে এলো দুয়া। ঘুচিয়ে দিলো সমস্ত ব্যবধান। নিজের হাত দু’টো মুক্ত করলো স্বামীর বাঁধন হতে। দু কপোলে দু হাত রেখে মিহি স্বরে বলতে লাগলো,

” অপেক্ষায় রয়েছি বহু পূর্ব হতে। আর যে সহে না প্রিয়। আমি তো তোমারই। তবে কিসের এত দ্বিধা? আমায় রাঙিয়ে তোলো তোমারই রঙে। আমি যে শুধু তোমাতেই রঙিন হতে চাই। ”

সম্মতি পেয়ে গেল মানুষটি। মুখশ্রীতে ছড়িয়ে পড়লো ঝলমলে আভা। আর বিলম্ব সইলো না। তৎক্ষণাৎ টেনে নিলো তার মাইরা’কে। দু হাতের মধ্যিখানে আবদ্ধ করে নিলো। দুয়াও সযতনে লেপ্টে গেল মানুষটির সুঠাম বক্ষপটে। দু হাতে আঁকড়ে ধরলো পৃষ্ঠদেশ। মুখ লুকালো গলদেশে। তূর্ণ’র বাঁ হাতটি দুয়া’র পিঠে লেপ্টে তো আরেক হাতে আবদ্ধ ঘাড়। অর্ধাঙ্গীর কাঁধে লুকানো তার মুখশ্রী। কাঁধে উষ্ণ জলের ছোঁয়া পেয়ে ঘাবড়ে গেল মেয়েটি। নিজেকে সরিয়ে নিলো। বাহুবন্ধনে আবদ্ধ থেকেই দু হাতের আঁজলায় ভরে নিলো অর্ধাঙ্গের মুখখানা। লক্ষ্য করলো মানুষটির নেত্রে নোনাজল। নোনাজল থাকবে না? তার এত বছরের হৃদয়ে লুকানো প্রেম যে আজ স্বার্থক। পূর্ণতার পথে। আবেগী হয়ে পড়লো দুয়া। এই একটি মানুষের ভালোবাসার পরিমাণ এতটাই প্রশস্ত যে তা মাপা কঠিন। তার ভালোবাসার সামনে দুয়া অতি নগণ্য। সাধারণ। দুয়া আজ স্বার্থক। ভাগ‌্যবতী। এই প্রেমিক পুরুষের ভালোবাসায় সিক্ত তার তনুমন। আর মাত্র কিয়ৎক্ষণ। অতঃপর তূর্ণ’র ভালোবাসায় রাঙা হতে চলেছে সে!

দুয়া স্বামীর অবস্থা অনুধাবন করতে সক্ষম হলো। নিজেকে এগিয়ে নিলো একটুখানি। ললাটে ছুঁয়ে দিলো কোমল ওষ্ঠ। তূর্ণ হৃদয়ের অন্তঃস্থল হতে পবিত্রতম ছোঁয়াটুকু উপলব্ধি করলো‌। নিজেও দু হাতের আঁজলায় ভরে নিলো মাইরা’র মুখখানি। দু ভ্রুয়ের সন্ধিস্থলে ছুঁয়ে দিলো ওষ্ঠ। নিম্নে ধাবিত হলো ওষ্ঠ। দু নেত্রপাতায় একে একে ছুঁয়ে দিলো। সুডৌল নাকেও ছোঁয়া লেপ্টে গেল। অতঃপর ওষ্ঠ আরো নিম্নে নেমে এলো। কোমল ওষ্ঠের উপরিভাগে মানুষটির তপ্ত প্রশ্বাস। শিউরে উঠলো দুয়া। দু হাতে আঁকড়ে ধরলো অর্ধাঙ্গের কাঁধ। তাতেই বেসামাল হলো পৌরুষ চিত্ত। নিভৃতে আরো সান্নিধ্যে এলো। ঘুচে গেল সবটুকু দূরত্ব। সন্ধি হলো অধরে অধরে। আঁখি জোড়া মুদিত করে দুয়া আঁকড়ে ধরলো অর্ধাঙ্গের গলদেশ। তূর্ণ’ও আগলে নিলো তার মাইরা’কে।

অধর সন্ধি বিচ্ছেদ শেষে লাজুক মেয়েটি মুখ ঘুরিয়ে দাঁড়ালো। ঘন শ্বাস পড়ছে তার। মানুষটির অধরকোলে লেপ্টে তৃপ্তির আভা। সে এক পা দু পা করে দুয়া’র পানে অগ্রসর হতে লাগলো। তা অনুধাবন করে সরে গেল দুয়া। সেথা হতে সরে যাওয়ার উদ্যোগ নিতেই থমকে গেল। বাঁ কাঁধে অনুভব করলো শক্তপোক্ত হাতটি। তাকে থামিয়ে দিলো তূর্ণ। এগিয়ে এসে ঘুচিয়ে দিলো মধ্যকার দূরত্ব। মানুষটির বক্ষদেশে মিশে কোমল কায়া। তূর্ণ’র ডান হাতটি আস্তে ধীরে দুয়া’র উদরে স্থাপিত হলো। অর্ধাঙ্গিনীর ডান কাঁধের উন্মুক্ত অংশে অঙ্কন করতে লাগলো ওষ্ঠ স্পর্শ। শিহরিত মেয়েটি উদরে স্থাপিত হাতটি আঁকড়ে ধরলো। মুদিত হয়ে এলো নেত্রপল্লব।

শুভ্র বিছানায় শায়িত দুয়া। বিপরীতে উপস্থিত মানুষটি। ললাটে চুমু এঁকে দিলো তূর্ণ। নে.শাক্ত স্বরে বলতে লাগলো,

” মাইরা! আমার মাইরা। জানো কেন তোমায় ডাকি এ নামে?”

লাজে রাঙা মেয়েটির আঁখি যুগল নিমীলিত। কিচ্ছুটি বললো না সে। কর্ণে অনুভব করলো উষ্ণ শ্বাস।

” কেননা তুমি আমার প্রিয়তমা। বাংলায় প্রিয়তমা। আরবিতে মাইরা। আমার হৃদয়ে লুকানো প্রেম। ”

কর্ণপাতায় ঠোঁটের ছোঁয়া এঁকে দিলো তূর্ণ। সময়ের সঙ্গে ঘুচে যেতে লাগলো সবটুকু দূরত্ব। পরিপূর্ণতা পেল আজ তূর্ণ’র হৃদয়ে লুকানো প্রেম। দুয়া’তে নিমজ্জিত হলো মানুষটি। রাত্রি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে একত্রিত হলো দু’জনে। তূর্ণ’র ভালোবাসায় রাঙা হলো দুয়া।

আদিত্যর কিরণে আলোকিত ধরনী। নিজস্ব ফ্লাটের কক্ষে বিছানায় হেলান দিয়ে বসে নিশাদ। মন খারাপের মেলা বসেছে তনুমনে। গতকাল তাকে হসপিটাল হতে ডিসচার্জ করা হয়েছে। কয়টা দিন সে শুধু অপেক্ষার প্রহর গুণে গেছে। মন বলেছে এই বুঝি এলো নি ষ্ঠু র মেয়েটি। তার সনে সাক্ষাৎ হবে। ভালো লাগায় ছেয়ে যাবে অন্তঃস্থল। কিন্তু না। এলো না মেয়েটি। তার সনে দেখা তো দূরের কথা। বিন্দুমাত্র আলাপণ অবধি হলো না। হবে কি করে? সেই নি ষ্ঠুর রমণীর হৃদয়ে তো তার ঠাঁই নেই। সে তো সম্পর্কে শুধুমাত্র বড় ভাইয়ের বন্ধু। এমন জনের জন্য কেউ বুঝি উতলা হয়? হয় না তো। তবে সে কেন উতলা হবে? না হওয়াটাই তো স্বাভাবিক। তবুও এই স্বাভাবিক বিষয়টি কেন মানছে না হৃদয়! কেন ছু*রিকাঘাতে ক্ষ তবিক্ষত হচ্ছে অন্তঃপুর? কেন? জানা নেই তার। মনটা আরো খারাপ হলো। সবটা অসহ্য, বিরক্তিকর লাগছে। কিচ্ছুটি সহ্য হচ্ছে না। বিরক্ত হয়ে বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো নিশাদ। পা বাড়ালো ডাইনিংয়ে। খিদে পেয়েছে খুব। সকাল থেকে অভুক্ত যে।

উন্মুক্ত বেলকনিতে রাখা চেয়ার। তাতে বসে তূর্ণ। তার বুকে পৃষ্ঠদেশ ঠেকে মাইরা’র। দু’জনে উষ্ণ চাদরের অন্তরালে। মেয়েটির এলোকেশ নিয়ে দুষ্টুমিতে মত্ত তূর্ণ। কখনো চুলগুলো কাঁধ হতে সরিয়ে অধর ছুঁয়ে দিচ্ছে। কখনোবা অপরিপক্ক হাতে চুলে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বেনুনি করার চেষ্টা করছে। মেকি বিরক্তি প্রকাশ করলো দুয়া।

” উফ্! কি করছো চুল নিয়ে? লাগছে তো। ”

” খুব লেগেছিল? ”

কণ্ঠস্বরে কেমন ভিন্নতা। দুয়া ডান কাঁধে মুখখানি এনে স্বামীর পানে তাকালো। মানুষটির চোখেমুখে এখন দুষ্টুমির ছাপ। সবটা বোধগম্য হতেই লালিমায় আচ্ছাদিত হলো মুখশ্রী। দৃষ্টি সরিয়ে মৃদু স্বরে বললো,

” বেশরম পুরুষ! ”

সশব্দে হেসে উঠলো তূর্ণ। দুয়াকে গাঢ় আলিঙ্গনে আবদ্ধ করে বললো,

” বিবিজান। পৃথিবীর সকল পুরুষই তার অর্ধাঙ্গীর কাছে বেশরম। বেলাজ। নইলে মানবসভ্যতা এগোবে কি করে? হুঁ?”

লাজে রাঙা মেয়েটি উদরে রাখা হাতে চিমটি কাটলো। ক্ষীণ স্বরে বললো,

” ইশ্! থামবে তুমি? ”

কর্ণে অধর ঠেকিয়ে ফিসফিসিয়ে বললো তূর্ণ,

” শুরু করার পূর্বেই থামতে বলছো? তবে কি ইনিয়ে বিনিয়ে শুরুয়াতের ইশারা দিলে? ”

আর সহ্য করা সম্ভব হলো না। লাজুক মেয়েটি তড়িঘড়ি করে উঠতে চাইলো। কিন্তু বাঁধাপ্রাপ্ত হলো তৎক্ষণাৎ। ওকে নিজ বাহুডোরে আবদ্ধ করে রেখেছে মানুষটি। টুপ করে ফুলো ফুলো কপোলে ঠোঁট ছুঁয়ে দিলো। ভদ্র কণ্ঠে বললো,

” আচ্ছা। থেমেছি। এবার চুপটি করে বসো। আর উপভোগ করো দিবালোকের সৌন্দর্য। ”

আর দিরুক্তি করলো না দুয়া। স্বামীর বক্ষদেশে দেহ এলিয়ে দিলো। নীরবে উপভোগ করতে লাগলো ভিনদেশের সৌন্দর্য। দূরের পাহাড়ে নিবদ্ধ হলো দৃষ্টি।

সিলিংয়ের অংশবিশেষ লাল রঙে আচ্ছাদিত। মধ্যখানে ঝাড়বাতি। পুরো হল জুড়ে অসংখ্য চেয়ার – টেবিল। লাল রঙের মধ্যে কারুকার্য খচিত চেয়ার, সোফাগুলো দেখতে বেশ আকর্ষণীয়। কৃত্রিম আলোয় নজরকাড়া পরিবেশ। দুয়াকে একটি চেয়ারে বসিয়ে বিপরীত দিকের চেয়ারে বসলো তূর্ণ। অর্ডার প্লেস করা হয়ে গেছে।

” হোটেলের এই অংশটা খুব সুন্দর তাই না? দেখলেই মন ভালো হয়ে যায়। ”

মোবাইল স্ক্রল করতে করতে মাথা নেড়ে সম্মতি জানালো তূর্ণ। আশপাশে চোখ বুলাতে লাগলো দুয়া। হঠাৎ স্তব্ধ হলো! ছিঃ এসব কি? চোখমুখ বিকৃত করে ফেললো মেয়েটি। মোবাইলে দৃষ্টি নিবদ্ধ স্বত্ত্বেও তা অনুধাবন করতে পারলো তূর্ণ।

” হোয়াট হ্যাপেন্ড? মুখ এমন করে রেখেছিস কেন? ”

” ও-ও কিছু না। ”

নেতিবাচক জবাবে তূর্ণ চোখ তুলে তাকালো। বুঝতে পারলো না ঠিক কি হয়েছে।

” কি হয়েছে? বলবি তো। না বললে বুঝবো কি করে? আমি তো আর অন্তর্যামী নই। ”

” আরে এর মধ্যে অন্তর্যামী টেনে আনছো কেন? ”

” তাহলে? বল কি হয়েছে। ”

স্বল্প ঝুঁকে গেল দুয়া। ক্ষীণ স্বরে বললো,

” তেমন কিছু না। ভিনদেশী রো মা ন্স চলছে আর কি। তাই..”

হেসে উঠলো তূর্ণ। মোবাইলে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে বললো,

” এজন্য এই অবস্থা? ”

দুয়া কিঞ্চিৎ অবাক হয়ে বললো,

” তুমি হাসছো? আমি রিয়েক্ট করবো না তো কি করবো? এভাবে ওপেন প্লেসে এসব ঠিক? ”

” ওরা বিদেশী। ওদের সংস্কৃতিতে এসব একদম নরমাল। ওরা এতে অভ্যস্ত। ”

দুয়া চোখমুখ কুঁচকে ফেললো। বিষয়টি তার মোটেও পছন্দ হয়নি। যদিওবা তাদের কি বলবে? সংস্কৃতি, পারিবারিক শিক্ষা বলেই তো এসব হচ্ছে! ওসবে আর মাথা ঘামালো না সে। কিছুক্ষণ বাদে ওদের অর্ডারকৃত খাবার চলে এলো। এগ অ্যান্ড বেল পেপার্স শাকশুকা উইদ বার্লে অ্যান্ড ফেটা। মজাদার লাগছে দেখতে। খেতেও নিশ্চয়ই সুস্বাদু হবে! ভোজনের পূর্বের দোয়া পড়ে ওরা খেতে শুরু করলো।

চলবে.