#তোকেই ভালোবাসি
#লেখক – তানভীর হৃদয় নীল
##পর্ব – ১৮
পুলিশ অফিসার – তোমার নাম তানভীর?
তানভীর – হে কোনো সমস্যা?
পুলিশ অফিসার – তোমাকে আমাদের সাথে একটু থানায় যেতে হবে।
তানভীর – আমি আপনাদের সাথে থানায় যাবো কেন?
পুলিশ অফিসার – মন্ত্রী আসাদুজ্জামান চৌধুরীর ছেলে রনি চৌধুরী। ও তার লোকজনদের খুন করার অপরাধে।
তানভীর – কি বলতে চাইছেন আপনি? কীসের ভিত্তিতে এইসব বলছেন?
পুলিশ অফিসার – আমাদের কিছু করার নেই। স্যারের আদেশ আমাদের মানতে হবে। আমাদের সাথে থানায় চলো।যা বলার থানায় গিয়ে বলবে।
তানভীর – আপনি বলবেন আর আমি আপনার সাথে থানায় চলে যাবো? যখন যাকে ইচ্ছা তাকে সন্দেহের উপর ভিত্তি করে থানায় নিয়ে যাবেন?
– আপনি দেখেছেন আমি রনিকে মেরেছি? যার জন্য আপনি আমাকে থানায় নিয়ে যেতে এসেছেন। সেই রনি চৌধুরী ইকরাম ভাইকে মেরে তার লাশ গায়ে করে দিয়েছে? দুজন মেয়েকে ধর্ষন করেছে। সাথে ওর বন্ধুদের নিয়ে। তখন কোথায় ছিলেন আপনি?
– শুধু মাত্র সন্দেহের উপর ভিত্তি করে। এসেছেন আমাকে থানায় নিয়ে যেতে।এই শুনুন আপনাদের রনি চৌধুরী কিছু মহৎ কাজের নমুনা।
– বলেই মোবাইলে রেকর্ড করা রনির কথাগুলো শুনালাম। মোবাইলে রেকর্ড করা রনির কথাগুলো শুনে। পুলিশ অফিসার চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে।
তানভীর – এইরকম আরো কতো মানুষকে মেরেছে। তার প্রমাণ হয়তো আমার কাছে নেই। কিন্তু আপনারা তো সেগুলো জানতেন।একের পর এক অপরাধ করে গেছে রনি। আর আপনি কিংবা আপনার ডিপার্টমেন্ট ওর বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ তো নেন নি। বরং ওকে সাহায্য করেছেন।
– একজন ধর্ষিতা বোন। তার ধর্ষকদের শাস্তির দাবিতে আদালতে বিচার চাইতে গিয়েছিলি। যেখানে আপনারা অপরাধীদের বিচার না করে। ওই বোনটাকে পতিতা হিসেবে প্রমাণ করে দিয়েছেন।আইনের লোক হয়ে এইসব করতে লজ্জা করে না আপনাদের?
মামুন – আরে ছোট্ট ভাই কাকে কী বলছো?ওরা টাকা ছাড়া কিছু বুঝে না। টাকা জন্য মানুষ খুন করতেও দ্বিধা বোধ করে না। এইসব ওদের না বলে একটা কুকুরকে বললেও কাজে লাগবে।
পুলিশ অফিসার – আজকে হাতে কোনো প্রমাণ নেই।তাই কিছু করতে পারলাম না। কিন্তু পরের বার আসলে হাতকড়া লাগিয়ে সোজা থানায় নিয়ে যাবো।
– বলেই রাগ দেখিয়ে চলে গেলেন। পুলিশ চলে যাওয়ার পর রবিন ভাই বললো,রনি আর তার লোকজনদের কে মেরেছে?
মামুন – লোকজনদের আমরাই মেরেছি। আর রুনিকে মেরেছে তানভীর।
রবিন – তুমি ওকে মারতে গেলে কেন? এখন যদি তোমার কিছু হয়। তখন কি করবে?
তানভীর – আমার আবার কি হবে?আমাকে মারার জন্যই তো। লোকজন নিয়ে রাত দুইটায় বাসায় এসেছিলো।আমাকে না পেয়ে বাসার সবার গায়ে হাত তুলে।
– ভাবিকে সহ সবাইকে হাত পা আর মুখ বেঁধে ফ্লোরে ফেলে রেখেছিলো। আমি বাসায় যাওয়ার পর। আমাকে মেরে ফেলতে চাইছিলো। কিন্তু সোহেলের ফোনে ফোন দিয়ে সেটা বলে। মামুন ভাইদের কাছে ফোনটা থাকায় বেঁচে গেছি।
রবিন – রনির সাথে সোহেলের কি সম্পর্ক?
তানভীর – ওর বুদ্ধিতেই রনি ইকরাম ভাইকে মেরে ফেলে।গাড়ি নষ্টের মিথ্যা নাটক সাজিয়ে।মাঝ রাস্তায় লোকজন নিয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলো। আর সেই ফাঁকে রনি লোক দিয়ে এইসব করে।
মেহেদী – ওর এতো সাহস হলো কী করে? আমাদের সাথে বেইমানি করার। মামুন ওকে ধরে এখানে নিয়ে আয়।জেন্ত মাটির নিচে পুঁতে ফেলবো আজকে। (রেগে গিয়ে)
মামুন – ভাই সোহেল কে তো গতকাল রাতের মেরে নদীতে ফেলে দিয়েছি।
রবিন – কে মেরেছে ওকে?(অবাক হয়ে)
মামুন – রাতে ছোট্ট ভাই ফ্যাক্টরিতে এসে এইসব জানতে পারে। তখন সাথে সাথে সোহেল কে মেরে ফেলে। তারপর লোকজন দিয়ে নদীতে ফেলে আসতে বলে।
মেহেদী – তুমি যে রাতে লোকজন দিয়ে যাকে খুশি ধরে এনে মেরে ফেলছো। মেরে রাস্তার মাঝে লাশ ফেলে দিতে বলে। আজকে যদি পুলিশের হাতে কোনো প্রমাণ থাকতো।তখন কি করতে?(কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে)
তানভীর – আমি আবার কখন…….
মেহেদী – আমার সাথে মিথ্যা বলে কোনো লাভ নেই। ভুলে যেও না আমার বাসার সামনে দিয়ে কিন্তু শুভর বাসায় যেতে হয়। আমি এটাও জানি রনির বন্ধুদের তুমিই মেরেছো।
মামুন – ভাই আপনি এতো কিছু জানলেন কীভাবে? এইসবের তো কোনো প্রমাণ নেই। সবচেয়ে বড় কথা তানভীর যাদেরকে মারছে। তারা প্রত্যেকেই বিভিন্ন অপরাধে জড়িত।
মেহেদী – ওর সাথে থেকে এইকদিনে তোর ও খুব সাহস হয়ে গেছে দেখছি। যাই হোক যা করার সাবধানে করো।আমি তোমাকে এইসব কাজে বাঁধা দিবো না। কোনো সাহায্য লাগলে আমাকে জানাবে।
রবিন – ওইদিন টিভিতে নিউজ দেখে তোমার হাসার রহস্যটা আজকে বুঝলাম।এতো কিছু করলে অথচ আমি কিছু জানি না।
তানভীর – এখনো অনেক কিছু বাকি আছে। যাই হোক এখন বাসায় চলেন। আপনার জন্য বাসার সবাই অনেক চিন্তা করছে।
রবিন – ঠিক আছে চলো।
– তারপর সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাসায় চলে গেলাম। গাড়ি থেকে নেমে বাসার ভিতরে গিয়ে দেখি।সবাই চুপচাপ হয়ে সোফায় বসে আছে। আমাদের দেখে সবার মুখে কিছুটা হাসি ফোটনো।
– নিশি ভাবি বসা থেকে উঠে রবিন ভাইয়ের কাছে এসে বললো, এতোক্ষণ লাগে তোমাদের সিলেট থেকে আসতে?
তানভীর – ভাইয়াকে নিয়ে রুমে যান ভাবি। ভাইয়ার এখন রেস্টের প্রয়োজন।এইসব জিগ্গেস করার অনেক সময় পাবেন।
নিশি – হয়েছে আর বলতে হবে না। আপনিও আপনার রুমে গিয়ে রেস্ট নিন।(হেসে হেসে)
– কিছু না বলে হাসতে হাসতে উপরে রুমে চলে গেলাম। ওয়াসরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে রুমে এসে দেখি নুসরাত খাটের উপর বসে আসে। দেখে মনে হচ্ছে কিছু বলতে চাই। কিন্তু ভয়ে বলতে পারেন না।
– হঠাৎ মামুন ভাই ফোন দিয়ে বললো, ছোট্ট ভাই টাকাগুলো কী করবো?
তানভীর – এখন আপনার রুমে রেখে দিন। কালকে ঢাকা যাওয়ার সময় নিয়ে যাবো।
মামুন – ঠিক আছে।(বলেই ফোন কেটে দিলো)
নুসরাত – কে ফোন দিয়েছিলো?
তানভীর – তুই এতোকিছু জেনে করবি? আর তুই এই রুমে কী করছিস?(ধমক দিয়ে)
নুসরাত – কেন?আমি কী এই রুমে আসতে পারি না?
তানভীর – এক কথা তোকে কতো বার বলতে হবে হ্যাঁ?তোর কি লজ্জা শরম বলতে কিছু নেই নাকী?(রেগে গিয়ে)
নুসরাত – তুই কেন আমার সাথে এইরকম বাজে ব্যবহার করিস? প্লিজ আমাকে একটু বোঝার চেষ্টা কর।(হাত ধরে)
তানভীর – ঠাসস ঠাসসসস।তোকে কতোবার না করছি গাঁয়ে দেওয়ার জন্য।আর কী বুঝবো তোকে হ্যাঁ?(রেগে গিয়ে)
নুসরাত – আমি তোকে ভালবাসি। প্লিজ আমার সাথে এমন করিস না।(গালে হাত দিয়ে কেঁদে কেঁদে)
তানভীর – থাক তুই তোর ভালোবাসা নিয়ে। তোর মেয়ের ভালোবাসা আমার দরকার নেই।যদি তোর ভালো চাস। তাহলে আমার থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করবি?(ধমক দিয়ে)
– বলেই সাথে চলে গেলাম।সাদে গিয়ে কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে। তারপর নিচে গেলাম রাতের খাবার খাওয়া জন্য। খাওয়া দাওয়া শেষ করে।সবার সাথে কিছুক্ষণ গল্প করলাম।
– কিন্তু নুসরাত রাতে খাবার খেতে নিচে আসি নি। নুসরাত কে না দেখে। সবাই জানতে চাইলো, নুসরাত কোথায়? রাতের খাবার খেতে আসেনি কেন? আমাদের মাঝে কোনো ঝামেলা হয়েছে কী না?
– প্রতিবারই মিথ্যা কথা বলি। যে আমাদের মাঝে কিছু হয়নি। নুসরাত রাতের খাবার খাবে না। এইজন্য নিচে আসে নি।
– তারপর আরো ঘন্টাখানেক সবার সাথে গল্প করে। উপরে রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। পরের দিন সকালে………..।।
চলবে।