তোর আসক্তি পাগল করেছে আমায় ২ পর্ব-৪১+৪২

0
608

#তোর_আসক্তি_পাগল_করেছে_আমায়
#সিজন_০২
#সাবিয়া_সাবু_সুলতানা
৪১.

বেদ সবার আড়ালে সারার হাত টেনে সাইট কাটে, সবার থেকে আলাদা হয়ে গিয়ে বাড়ির উল্টো সাইটে চলে যায় হঠাৎ করেই বেদের এমন টানাটানিতে হকচকিয়ে যায় কিছু বলতে নিলেই বেদ অন্য হাত দিয়ে সারার মুখে রাখে। সারিফ আর রুহি আগে ছিল তাই পিছনের দিকে কী হয়েছে সেই বিষয়ে তারা অবগত নয় সারিফ আলতো স্পর্শে রুহির হাতের আঙুলে আঙুল ছুয়ে রেখে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে সারিফের রুহি লজ্জা পেলেও তার এই মুহূর্তে ভালো লাগছে তাই সেও অনুভব করছে সময়টাকে এই মুহূর্ত টাকে।

বেদ সারাকে টেনে এনে কর্নার সাইটের বারান্দায় নিয়ে এসে দাঁড়ায় করিয়ে দেয়। সারা ভ্রু কুঁচকে বেদের দিকে তাকায় দেখে সে কেমন মোহনীয় ভাবে তার দিকে তাকিয়ে আছে এটা দেখেই সারা শিউরে ওঠে তার সারা শরীরে কম্পন উঠে যায় বেদের এমন নেশাগ্রস্ত মোহনীয় চাহনি দেখে। বেদ একটু একটু করে সারার দিকে এগিয়ে যেতে থাকে আর বেদের এগিয়ে আসা দেখে সারা রেলিং এর দিকে পিছনে সরে যেতে থাকে তবে এই মুহূর্ত দুইজনের চোখ একে অপরের উপর নিবন্ধ হয়েছে পরিবেশ টাও যেনো হটাৎ করেই কেমন একটা রোমাঞ্চকর হয়ে উঠেছে চাঁদের আলোয় কর্নার সাইটের এই বারান্দায় আবছা আলোয় আলোকিত হয়ে আছে হয়ে আছে এতে অবশ্যই দুইজনের মুখের অবয়ব বোঝা যাচ্ছে সাথে পরিবর্তিত প্রতিক্রিয়াও সারা একেবারে রেলিং এর সাথে ঠেকে যেতেই সারা কিছুটা চমকে উঠে বেদের চোখ সরিয়ে চকিতে একবার পিছনে ফিরে তাকায় দেখে আরো জায়গা নেই তার পিছনের এবার সামনের দিকে তাকাতেই দেখে বেদ একদম তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে মাত্র সামান্যতম গ্যাপ বেদের তপ্ত নিঃশ্বাস আছড়ে পড়ছে সারার মুখের উপরে। সাথে সাথে সারা মৃদু কেঁপে উঠে পরনের টপ খামছে ধরে তার সারা শরীরে শিউরে উঠে কম্পন শুরু হয়ে গেছে বেদ এক দৃষ্টিতে নেশাগ্রস্ত ভাবে সারার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে সারার মুখের প্রতিক্রিয়া বুঝতে বেদের একটুও অসুবিধা হয়না এতে তার ঠোঁটের কোণে মৃদু হাসি ফুটে ওঠে। বেদ হাত বাড়িয়ে সারার কোমর আকড়ে ধরে তার বলিষ্ঠ হাতের দ্বারা, নিজের সাথে মিশিয়ে নেয় সারা কিছুটা চমকে গিয়ে বেদের শার্ট খামছে ধরে পিট পিট করে বেদের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে বেদের চোখের দিকে তাকাতে দেখতেই পায় কেমন ঘোর লেগে আছে সারা যেনো ওই চোখের মাঝে ডুবে যাচ্ছে সাথে সাথে চোখ ঘুরিয়ে নেয় সারা তবে হয়তো বেদের পছন্দ হয়নি এটা তাই অন্য হাতে সারার মুখ আকড়ে ধরে নিজের মুখের সমান করে নেয় আস্তে আস্তে নিজের মুখটাও ঝুঁকিয়ে নিয়ে আসে সারার মুখের উপরে আসতে আসতে দূরত্ব মিটে গিয়ে মিলে যায় একে অপরের অধরযুগল সাথে সাথে সারা চোখ চেপে বন্ধ করে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বেদকে।

————-

এদিকে সবার বেদ সারা উধাও হয়ে যেতে একে একে সবাই গায়েব হয়ে যায় নিমেষে যে যার মতো করে। ওম জাকিয়া সবার চোখ এড়িয়ে ছাদে চলে আসে তবে আজ যেনো এই পুরো রওশন বাড়িতে রোম্যাঞ্চকতায় ভরে উঠেছে।
ছাদের এক কোণে থাকা দোলনাতে বসে পড়ে দুইজন কারোর মুখে কোনো কথা নেই একে অপরকে শুধু অনুভব করে যাচ্ছে। এক সময়ে এই নীরবতার চাদর সরিয়ে জাকিয়া মৃদু স্বরে ডেকে ওঠে,

-“ওম?

-” হু! ওমও একইভাবে মৃদু কন্ঠে সাড়া দিয়ে ওঠে।

-“তুমি এত গুলো বছরে কখনো আমাকে মনে করেছিলে? মিস করেছিলে? মনে ছিল আমার কথা? জাকিয়া কিছুটা ভারী কন্ঠে জিজ্ঞেস করে ওঠে।

জাকিয়ার প্রশ্ন শুনে ওম সোজা হয়ে বসে একপলক তীক্ষ্ণ চোখে তাকায় জাকিয়ার মুখের দিকে দেখে কেমন মুখটা ফুলে আছে এটা যে স্পষ্ট অভিমানের ছাপ সেটা বুঝতে বাকি থাকেনা ওমের এটা দেখেই নিঃশব্দে হাসে। হাত বাড়িয়ে জাকিয়াকে কাছে টেনে নেয় ওম জাকিয়ার মাথাটা নিজের কাঁধের ওপর রেখে গাড়ো করে নিজের সাথে জড়িয়ে নেয়। ওমের এমন কাজে জাকিয়া কিছুটা চমকে গেলেও কোনো প্রতিক্রিয়া করেনা চুপচাপ নিজের মাথা এলিয়ে দেয় ওমের কাঁধে।

-“আমার স্মৃতির পাতায় এখনও উজ্জ্বল হয়ে আছে সেইদিন গুলো যা আমি চাইলেও কখনই ভুলতে পারবোনা শুধু দিন গুলোই না হাস্যউজ্জ্বল একটা মুখ ও সব সময়ে আমার চোখের পাতায় এসে কড়া নেড়ে যেতো প্রতিটা মুহূর্ত প্রতিটা ক্ষণে তাই তাকে ভোলার তো কোনো প্রশ্নই ওঠেনা। এই পাঁচ বছরের এমন কোনো দিন রাত মুহূর্ত যায়নি যে সেই মুখ আমার চোখের পাতায় এসে ধরা দেইনি তাকে আমার স্মৃতির পাতায় থেকে আমার হৃদয়ে স্থান দিয়েছি তাই কিভাবে ভুলতে পারি। ওম মোলায়েম কন্ঠে বলে ওঠে।

এদিকে ওমের কথা শুনে জাকিয়া কাঁধের থেকে মাথা তুলে মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে একভাবে ওমের মুখের দিকে ইতি মধ্যেই চোখের কোণে ভিড় করেছে অশ্রুকনারা সেও যে একইভাবে ওমকে মিস করেছিলো প্রতিটা ক্ষণ মুহূর্ত স্বল্প পরিচয়ে দুইজন একে অপরকে পছন্দ করে ফেলেছে দুর্বল হয়ে পড়েছে শুধু দুইজন মুখে প্রকাশ করেনি একে অপরের মনের মধ্যে থাকা অনুভূতি তবে তাদেরও বুঝতে বাকি ছিলোনা যে তাদের মধ্যে একে অপরের মধ্যে অনুভূতি আছে।
তবে ওম ফিরে আসতে আরো গভীর ভাবে বুঝতে পারে একে অপরের মধ্যে থাকা সুপ্ত অনুভূতি। তবে পরে ওম যোগাযোগ না করতে জাকিয়াও কোনো ভাবে যোগাযোগ করিনি। আর ওম তাদের দুইজনের ভবিষ্যতের কথা ভেবে দূরে থেকেছে এত গুলো বছর তবে তাদের মধ্যে সুপ্ত অনুভূতি ভালোবাসার টানে আবারো তারা আজ এক জায়গায়।

ওম জাকিয়ার দিকে তাকিয়ে দেখে সেই তার দিকে তাকিয়ে আছে আর চোখের কোণে ভিজে উঠেছে ওম হাত বাড়িয়ে জাকিয়ার কোমরে আকড়ে ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয় নিজের অধর স্পর্শ করায় জাকিয়ার কপালে গভীর ভাবে । জাকিয়ার থেকে সরে আসতেই একে অপরের দিকে গভীর ভাবে তাকিয়ে একে অপরকে আষ্টেপিষ্টে জড়িয়ে ধরে।

————–

সাঁঝ রুমের দরজা বন্ধ করে দিয়ে ঘুরে তাকায় দেখে পুরো রুমে ক্যান্ডেলের আলোয় আলোকিত হয়ে আছে সারা রুমে গোলাপের ঘ্রাণে সুভাসিত হয়ে আছে আর মৃদু মন্দ মোহনীয় আলোকিত পরিবেশের মাঝে বসে আছে বেলা দৃষ্টি তার দিকে একভাবে চেয়ে আছে তার দিকে তবে হঠাৎই সাঁঝের ভ্রু কুঁচকে যায় কারণ বেলা তার দিকে তাকিয়ে থেকেই উঠে বিছানা থেকে নেমে দাঁড়িয়ে বারান্দার দিকে এগিয়ে যায়। সাঁঝ বেলার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থেকে নির্নিমেষ তার বুঝতে বাকি নেই বেলার মনের মধ্যে এখনও অভিমান অবশিষ্ট আছে আজ পার্টিতে যতো তার সাথে নরমাল থাকুক না কেনো আর যতো তার আর বেলার সম্পর্কের তিক্ততা সবার আড়াল করে যাক না কেনো তার বউ এখনও যে তার উপরেই অভিমান করে বসে আছে আর এটা যে থাকায় স্বাভাবিক সেটা সাঁঝেরও জানা কথা, পাঁচটা বছর কোনো কম কিছু নয় শুধু তাই নয় ভালোবাসার মানুষটার সাথে এই সময়েও অন্য কোনো মেয়ের নিয়ে খবর শোনাও কম যন্ত্রণার নয় সাথে ছিল কিছু ভুল বোঝাবুঝি আর তার থেকে বেশি রাগ আর অভিমান সাঁঝ বেলার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে।

সাঁঝ একবার পুরো রুমটা চোখ বুলিয়ে নিয়েই এগিয়ে যায় বেলার দিকে এখন তার বউয়ের রাগ অভিমান ভাঙ্গাতে হবে নাহলে না জানি তার কপালে কি কি লেখা আছে তার ভালো করেই জানা আছে এরপর কি কি হতে চলেছে।

———–

একদিকে পুরো রওশন বাড়িতে রোম্যাঞ্চকতায় ঘিরে আছে আর অন্য দিকে ওই একই বাড়িতে শুরু হয়ে গেছে ষড়যন্ত্রের জাল বিছানো মৃত্যুর ফাঁদ পাততে শুরু করে দিয়েছে মেতে উঠেছে তাদের নোংরা খেলায় সব কিছু ধ্বংস করে দিতে। কতক্ষণ টিকবে এই আনন্দের রেস এরমধ্যে যে ঝড়ের আনাগোনা শুরু হয়ে গেছে কালো নিকশ অন্ধকারে যে গ্রাস করে নিতে চলেছে রওশন বাড়ি কখন না এই হাসি আনন্দ কান্নায় যন্ত্রণায় পরিনত হয়ে যায়।

চলবে….. ?

#তোর_আসক্তি_পাগল_করেছে_আমায়
#সিজন_০২
#সাবিয়া_সাবু_সুলতানা
৪২.
সাঁঝ ধীর পায়ে এগিয়ে বারান্দার দিকে, বেলার পাশে ঘেঁষে দাঁড়িয়ে চোখ স্থির করে সামনে নিস্তব্ধতায় কেটে যায় কয়েক মুহূর্ত তারপরেই সাঁঝ তার মাথা ঘুরিয়ে চোখ স্থির করে বেলার মুখের তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ করে বেলাকে যে এই মুহূর্তে চুপচাপ হয়ে দাঁড়িয়ে দূরের দিকে তাকিয়ে আছে তবে তার মুখে ফুটে আছে একরাশ অভিমানের ছাপ যেটা চেষ্টা করেও সরিয়ে ফেলতে পারেনি মুখ থেকে, সাঁঝ বেলার মুখের অবস্থা দেখে নিঃশব্দে হাসে সে জানত এমনি কিছু হবে কারণ তার রানী যে বড়ই অভিমানীনি।

-“বেলা! মৃদু আওয়াজে ডেকে ওঠে সাঁঝ।

সাঁঝের নরম কন্ঠস্বর শুনেই বেলা অদূরে থেকেই চোখ ফিরিয়ে সাঁঝের দিকে দৃষ্টি নিবন্ধ করে চোখের কোণে ফুটে উঠছে আসতে আসতে বিন্দু বিন্দু অশ্রুকনা। সাঁঝ বেলার মুখের দিকে তাকিয়ে একহাত বাড়িয়ে টেনে নেয় নিজের বুকের উপর বেলাকে, চেয়ে ও বেলা উপেক্ষা করতে পারেনা এই বন্ধন। তাদের এতদিন বিয়ের বয়েস হয়ে গেলেও তা আজ সমাজের সামনে স্বীকৃতি দিলো যদিও এই নিয়ে কোনো মাথা ব্যথা কখনই ছিলোনা বেলার কারণ সমাজের স্বীকৃতি কি সেটা বড় কথা আসল মানুষটি তার কাছে বড় সেই যদি তার কাছে না থাকে তাহলে স্বীকৃতি নিয়ে কি করবে আর এতদিনের জমে থাকা রাগ কমে গেলেও অভিমান যে সেই একই আছে যা একটু একটু গলে গেলেও অবশিষ্ট এখনও বেঁচে আছে এত বছরের অভিমান কি এত সহজেই ভেঙে যাবে।

-“বেলা সুইটহার্ট ।

সাঁঝের ডাকে মাথা উঁচু করে তাকালে সাঁঝ দুই হাতের মাঝে বেলার মুখটা তুলে ধরে তার মুখের সামনে।

-” আমি জানি তোমার মনে এখন কি চলছে অনেক প্রশ্নরাই তোমার মনে উঁকি দিয়ে যাচ্ছে। তবে আমি প্রমিশ করছি কাল সকালের পর থেকে তোমার আছে সব কিছুই পরিষ্কার হতে শুরু করবে কেনো কিসের জন্যে তোমার আমার এই বিচ্ছেদ ছিল কেনো এতদিন আমি তোমাকে দূরে রেখেছিলাম নিজের থেকে। সাঁঝ মোলায়েম কন্ঠে বলে ওঠে বেলার কপালে কপাল ঠেকিয়ে ।

-“আমি তোমাকে ভুল বুঝিনি সাঁঝ তবে তোমার আমাকে ভুল বুঝিয়ে রাখাটা আমাকে কষ্ট দিয়েছে তোমার শীতল নির্বাক দৃষ্টি আমাকে জ্বালিয়ে দিয়েছে তোমার নির্লিপ্ততা আমাকে শেষ করে দিয়েছে এত বছর। কান্না ভাঙা গলায় বলে ওঠে বেলা।

-” আমি জানি সুইটহার্ট। সাঁঝ ধীর কন্ঠে বলে ওঠে।

-” আমি ওই মহিলার কোনো কথায় কোনো কিছুই বিশ্বাস করেনি তোমার এমন পাথর ও কঠিনতার জন্যে আমি চলে গিয়েছিলাম ভুলে থাকতে চেয়েছিলাম কিন্তু তা দাওনি প্রতিটা মুহূর্ত আমাকে তুমি তোমার কথা মনে করিয়ে গেছ। বেলা কান্না সিক্ত গলায় বলে ওঠে।

-” তুমি যেখানে আমার সেখানে আমি কি করে তোমাকে আমার কথা ভুলে থাকতে দেই বলো তুমি?

-” আমি অনেক কষ্ট পেয়েছি সাঁঝ। তুমি আমাকে খুব কষ্ট দিয়েছো। বেলা বলে ওঠে ।

-“আমি জানি সুইটহার্ট, তবে এবার তোমার সব কষ্ট আমি ভুলিয়ে দেবো আমার ভালোবাসা দিয়ে আর তারপরে কাল সকাল থেকে অনেক কিছুই হতে শুরু করবে যার দরুন তোমার কষ্ট দেখবে হাওয়া হয়ে গেছে। সাঁঝ গম্ভীর কন্ঠে রহস্যময় ভঙ্গিতে বলে ওঠে।

-” ম্যাডিকে তুমি কি করেছ সাঁঝ? বেলা হঠাৎ করেই প্রশ্ন করে ওঠে।

বেলার প্রশ্ন শুনে সাঁঝের মুখে বাঁকা হাসি ফুটে ওঠে, সাঁঝের আর বুঝতে বাকি থাকেনা সে বেলার কাছে ধরা পড়ে গেছে। বেলার দিকে তাকিয়ে বাঁকা হেসে বলে ওঠে,

-” তোমার কি মনে হয় কি করতে পারি আমি?

-“তারমানে ওকে তুমি.. ।

বেলা বিস্ময় নিয়ে বলে ওঠে তবে কথার মাঝেই সাঁঝ বেলাকে থামিয়ে দেয়। কঠিন হয়ে বলে ওঠে সাঁঝ,

-“সাড়ে চার বছর ধরে ওকে সহ্য করে গেছি এটাই কি অনেক নয় আমার জন্যে?

সাঁঝের প্রশ্ন শুনে খানিকটা হতচকিত হয়ে যায় বেলা তারপরেই মুখে ফুটে ওঠে মৃদু হাসি। সে নিজেও জানে গোয়া যাওয়ার পর থেকে ম্যাডি নামের ছেলেটা সবসময় তাকে বিপদের ফেলার চেষ্টা করেছিলো তবে বেলা সব দিকে থেকেই নিজেকে সেফ করে নিত তার সাথে ছিল সাঁঝের নিবন্ধতা প্রতিটা মুহূর্ত বেলার উপর সাঁঝের কড়া নজর থাকতো তার লোকেরা সব সময়ে বেলার আশে থাকতো প্রটেক্ট করার জন্যে যেটা বেলারও অজানা ছিলনা সাঁঝ যে তাকে প্রতি মুহূর্তে নজরে রাখত এটা জানার পর সাঁঝের উপরে রাগ আর অভিমানটা আরো জাকিয়ে বসতো একটু একটু করে।

-“বেলা… ।

সাঁঝের ডাকে বেলা তার ঘোরে থেকে বেরিয়ে আসে দেখে এক দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে আছে মানুষটা কেমন গভীর ভাবে বেলা ওই চোখের দিকে তাকাতেই বেলার সারা শরীর শিরশির করে কেঁপে ওঠে।

-” আজ আমাদের বিয়ের পাঁচ বছর পূর্ণ হয়েছে যদিও আমাদের সাথে থাকা কয়েকদিনের। সাঁঝ কিছুটা বলেই থেমে যায় বেলার মুখের দিকে তাকিয়ে।

তবে সাঁঝকে আর কোনো কথা বলতে না দিয়েই বেলা আষ্টেপিষ্টে জড়িয়ে ধরে সাঁঝকে। বেলা জানে এই মানুষটা তাকে কতটা ভালোবাসে আর এখনও কিছুটা হয়তো কষ্ট পাচ্ছে তাকে কষ্ট দেওয়ার জন্যে তবে বেলা এই কষ্ট পেতে দেখতে পারবে না। তাকে বকুক মারুক যায় করুক না কেনো তবু সে হাসি মুখে মেনে নেবে কিন্তু এই মানুষটার কষ্ট সে দেখতে পারবে না। সাঁঝ ও আর কোনো কথা না বলেই বেলাকে নিজের সাথে জড়িয়ে ধরে থাকে। বাইরের হালকা বয়ে যাওয়া হাওয়ায় বেলার চুল এলোমেলো হয়ে যায় সাথে শরীরে শীতলতা বয়ে যায়। তবে একে অপরের সাথে মিশে থাকে একে অপরের শরীরে ওমে এই শীতলতা কে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নিজেদের মধ্যে নিবন্ধ হয়ে আছে দুজনেই। দুজনের মনেই একই যন্ত্রণা কষ্টের মেলা বয়ে যাচ্ছে। তবে সেটা নিজের নিজের মধ্যে রেখে দিয়েছে একে অপরের স্পর্শে সব কিছুর না পাওয়া মিটিয়ে নিচ্ছে মুখে থেকে কোনো শব্দ ব্যবহার না করেও বুঝিয়ে দিচ্ছে নিজেদের মনের কথা।

কত সময় কেটে গেছে জানা নেই, সাঁঝ তার মুখে নামিয়ে এনে এবার বেলার কাঁধে গুঁজে শুষে নেয় বেলার শরীরের মিষ্টি ঘ্রাণ, একহাত ডুবে যায় বেলার চুলের ভাজে আর অন্য হাত বেলার উদরের উপরের ওড়না সরিয়ে স্পর্শ করে যায় উন্মুক্ত উদরে। সাঁঝের এমন স্পর্শে কেঁপে ওঠে বেলা আরো একটু বেশি করে আকড়ে ধরে সাঁঝের বুকের আরো গভীরে ঢুকে যায় বেলা। আসতে সাঁঝের হাত ঘুরে বেড়ায় বেলার শরীরের আনাচে কানাচে আর এতেই বেলা থেকে থেকেই কেঁপে ওঠে যেটা গভীর ভাবে উপভোগ করে সাঁঝ। সাঁঝ বেলাকে কিছুটা উত্যক্ত করার পরেই বেলার মুখের উপরে ঝুঁকে আসে এক হাত ঘাড়ে পিছন শক্ত হয়ে বসে বেলার মুখ তুলে ধরে তার একদম মুখের সামনে ছুয়ে ছুয়ে আছে তাদের অধর বেলা এতক্ষণ চোখ চেয়ে থাকলেও সাঁঝের নেশাগ্রস্ত গভীর চোখের দিকে তাকিয়ে বেলা চোখ চেপে বন্ধ করে নেয় তার শরীরের সমস্ত ভার ছেড়ে দেয় সাঁঝের শরীরে উপরে, তার হাত দুটো আকড়ে ধরে সাঁঝের কোমর আর বুকের কাছের শার্ট, হাতের নখ শার্ট ভেদ করে বিদ্ধ হয় চামড়ায় তবে এত কোনো বিকার হয়না সাঁঝের। ছুয়ে ছুয়ে থাকা অধর আসতে আসতে একে অপরের মাঝে ডুবে যেতে থাকে মিশে যেতে থাকে একে অপরের মাঝে স্পর্শ গভীর থেকে গভীর হতে শুরু করে। ওই অবস্থায় বেলাকে কোলে তুলে নিয়ে রুমের মধ্যে ঢুকে যায় সাঁঝ।

রাতের আঁধারে মিশে যেতে থেকে একে অপরের মাঝে সমস্ত রাগ অভিমান ভেঙে আবারো এক হয়ে ওঠে আজ তারা মেতে উঠেছে তাদের ভালোবাসার পরিণতির পথে পরিপূর্ণ ভাবে মিশে যায় একে অপরের মাঝে এক হয়ে যায় এতদিন অপেক্ষার পর।

কিন্তু এরপরে কি হতে চলেছে রওশন বাড়ি যে ইতি মধ্যেই ঘিরে গেছে কালো নিকশ অন্ধকারে ষড়যন্ত্রের মায়া জালে তাদের এই ভালোবাসার পরিণতি কি হতে চলেছে সব কিছুই ঠিক থাকবে নাকি আবারো ওঠা এই ঝড়ের মাঝে হারিয়ে যাবে সব কিছু?

চলবে…?

ভুল ত্রুটি মার্জনা করবেন..। নিজেদের মতামত জানাবেন ।