তোর প্রেমেতে অন্ধ হলাম পর্ব-২০

0
634

#তোর_প্রেমেতে_অন্ধ_হলাম
#লেখিকাঃ Tamanna Islam
#পর্বঃ ২০

ফ্ল্যাশবেক~

বিয়ের দিন~

রুমি;; এই তোরা সবাই কাজে লেগে যা দ্রুত। সবাই এদিকে আয় দেখি। আফসানা(সায়নের বোন) এদিকে আয়। এগুলো দেখ। আর সায়ন উঠেছে কিনা দেখ তো।

শামীম (সায়নের বাবা);; এই তুমি একটু আদিবার কাছে ফোন দিয়ে শোন না।

রুমি;; সব করছি। আফসানা এই এত্তো গুলো ডালা এখানে কি করে আরে এদের নিয়ে যা। জাবেদ…

জাবেদ;; এইতো এসে গেছি।

রুমি;; দেখ তো বাইরে সব কতদূর এগোল। আর স্টাফদের এদিকে আসতে বল।

সবাই কাজে প্রচুর ব্যাস্ত ছিলো তখনই সায়ন আসে। সে কিছুক্ষন আগে সবকিছু চোখ ঘুড়িয়ে ঘুড়িয়ে দেখে। কি করে সবাই কে বিয়ে ভাঙার কথা বলবে তাই ভাবছে। কেননা সায়ন কাল রাতের ব্যাপারে এখনো কাউকেই কিছুই বলে নি। জাবেদ কেও না। তবে এখন বুঝতে পারছে যে সায়নের আসলে গতকাল রাতেই সবাইকে বলে দেওয়া উচিত ছিলো কথা টা। সায়ন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এগুলোই ভাবছিলো তখন সে রুমির নজরে পরে৷ রুমি সায়নের দিকে এগিয়ে যায়।

রুমি;; কিরে উঠে পরেছিস। যাক ভালোই হলো। এবার যা ফ্রেশ হয়ে নে, বিয়ে বলে কথা। দ্রুত যা।

সায়ন;; মা, এই বিয়ে হবে না।

রুমি সায়ন কে বলে সেখান থেকে চলে যেতে ধরছিলো কিন্তু আবার সায়নের এমন উদ্ভট কথায় থমকে দাঁড়ায়। কপাল কুচকে রুমি সায়নের দিকে তাকায়।

রুমি;; কি বললি?

সায়ন;; হ্যাঁ মা, এই বিয়ে হবে না। প্লিজ এইসব আয়োজন বন্ধ করো।

রুমি;; সায়ন কি বলছিস তুই মাথা ঠিক আছে তোর! সব রেডি, সবাইকে জানানো শেষ। কিছুক্ষন পর বিয়ের সময় আর এখন, এখন কিনা তুই বলছিস যে কোন বিয়ে হবে না। তুই কি সব বলে যাচ্ছিস আদৌও কোন খেয়াল আছে তোর।

সায়ন;; আছে মা। হিতাহিত জ্ঞান শূন্য হই নি আমি। তবে হ্যাঁ এই বিয়ে আমি করবো না।

সায়নের বাবা দ্রুত এগিয়ে আসেন।

শামীম;; বাবা তোর কি কিছু হয়েছে? কোন সমস্যা? বা তোর আর সিয়ার মাঝে ঝগড়া হয়েছে কি। রাগের মাথায় এইসব বলছিস তুই? এভাবে হুট করেই বিয়ে ভেঙে দেওয়া যায় না বাবা। বিয়ে এটা। বিয়ে শুধু দুজন মানুষের মধ্যে না দু-দুটো পরিবারের মধ্যে হয়। বিয়ে কোন ছেলেখেলা না।

সায়ন;; বাবা আমি বুঝি সব। কোন ছোট বাচ্চা তো নই আমি। বাবা প্লিজ, তুমি তো একটু বুঝো আমার পক্ষে সম্ভব না এই বিয়ে করা। (তার বাবার দুহাত ধরে)

রুমি;; ওও জাবেদের বাবা দেখো ছেলে কি বলে। মাথা গেছে। মান-সম্মান ডুবাবি নাকি তুই। আমি সিয়ার মায়ের কাছে কি মুখ দেখাবো। আর আদিবার বোন হয় সিয়া। যদি এমন হতো যে অন্য একটা মেয়ে পছন্দ হয়েছে বিয়ে ঠিক পরে ভেঙে দিলাম শেষ কথা। সেখানেই ছাড়কাট হয়ে গেছে। কিন্তু সেই পরিবারের সাথে আমাদের আরো সম্পর্ক জুড়ে আছে। তোর বড়ো ভাইয়ের বউ এর বোন হয়। আদিবা কে আমি কি বলবো। সিয়ার মাঝে কোন কমতিই নেই তাহলে মেয়ে টাকে কেনো ঘরের বউ বানালাম না!

সায়ন;; দেখো সবই বুঝি আমি। সবার দিক টাই খেয়াল করেছি আমি। কিন্তু যাই বলো না কেনো আজ আমি এই বিয়ে কোন ভাবেই করতে পারবো না।

আফসানা;; ভাই, তোর কি হলো বল তো। কাল পর্যন্ত তো সবই ঠিক ছিলো।

সায়ন;; আমি বিয়ে করবো না।

শামীম;; আরে প্রব্লেম টা কি?

সায়ন;; আব… প্রব্লেম! আসলে মানে আ আসলে

রুমি;; এখন কি কথা বলবি নাকি ঝাটার বারি খাবি? (রেগে)

সায়ন;; আমার সময় দরকার।

শামীম;; কি?

সায়ন;; হ্যাঁ মানে আমি তো দেশে আসলাম ২-৩ মাস হবে মাত্র তাই না। হস্পিটালে ঢুকেছিও ২-৩ মাস। তো জব পাওয়ার সাথে সাথেই কি কেউ বিয়ে করে নাকি। আগে আমি একটু নিজেকে গুছিয়ে নেই। একটু স্যাটেল্ট হয়ে নিই আমি। তারপর বিয়ে-শাদি করা যাবে নাকি। আমি তো আর বুড়ো হয়ে যাচ্ছি না বলো।

রুমি;; জাবেদ রে আমাকে ধর। আমার মাথা ঘোড়ায়।

জাবেদ;; মা মা আস্তে মা।

রুমির সত্যি সত্যি মাথা টা ঘুড়িয়ে পরে যেতে ধরলে জাবেদ ছুটে এসে রুমিকে ধরে চেয়ারে বসিয়ে দেয়। পানি খাইয়ে দেয় কিছুটা।

শামীম;; আরে হারামি তোর সময় দরকার এই কথা টা আগে বলতি। তাহলে কি আর কথা এতো দূর গড়াতো। এতো আয়োজন এতো মানুষ কে বলা এগুলো হতো। এখন সবাই কে কি বলে বেড়াবো যে ছেলের মুড চেঞ্জ হয়ে গেছে তাই বিয়ে করবে না বলছে। আরে সিয়ার মা দোলা ভাবি কে আমি কি বলবো। সিয়া, মেয়ে টা এত্তো ভালো। বাবা মরা মেয়েটা, যখন শুনবে নিজের বিয়ে ভেঙে গেছে তখন কি হাল হবে তার ভাবতে পারছিস তুই?

সায়ন;; আরে কচুর মাথা ওর সুবিধের জন্যই তো বিয়ে ভাঙা। (ফিসফিস করে)

শামীম;; কিহ?

সায়ন;; না না কিছু না।

জাবেদ;; সায়ন, তুই কি সিরিয়াস! বিয়ে করবি না?

সায়ন;; না ভাই।

রুমি;; জাবেদ বাবা, বোঝা এই গাধার বাচ্চা কে। সব শেষ। এতোক্ষনে, এতোক্ষনে বিয়ের আগে এসে বলে নাকি বিয়ে করবে না। হায়রে খোদা আমাকে এই দিন টা দেখানোর আগে তুলে নিলে না কেনো?

শামীম;; আহা রুমি, থামো তো। তুমি এখন শুরু করে দিও না।

রুমি;; এই কি বললা! আমি শুরু করছি তাই না। মায়ের চিন্তা, মায়ের চিন্তা কেউ বুঝে না। কিছু বললেই বলে আমি নাকি শুরু করে দিছি। আরেএএএ কেউ আমারে ধর।

শামীম;; বেশি কথা বলো তুমি।

জাবেদ;; বাবা মা থামবে তোমরা। এখন আবার তোমরা শুরু হয়ে গেলে কেনো?!

আফসানা;; আমি পাবনা গেলাম। এতো জ্বালা আর ভালা লাগে না ছাতা।

এই বলেই রেগে মেগে আফসানা তার রুমে চলে গেলো। সায়নের বাবাও গম্ভীর মুখ করে সেই জায়গা ত্যাগ করে। জাবেদ তার মা কে নিয়ে রুমে চলে যায়। আর সায়ন সবার অবস্থা দেখে নিজেও সেখান থেকে গুটিগুটি পায়ে কেটে পরে। ভাগ্য ভালো তার মা সত্যিই তাকে ঝাটা নিয়ে দৌড়ানি দেয় নি।

এখন সায়নের পরিবারে সবাই বেশ চিন্তায় আছে বিয়ের ব্যাপারে। সব তো ভালোয় ভালোয় চলছিলো সায়নের এভাবে বিয়ে ভেঙে দেওয়ার ব্যাপারে কেউ কিছুই বুঝে উঠতে পারে না। তবে জাবেদ, জাবেদের কাছে ব্যাপার পুরো ক্লিয়ার। অর্নীলের তাকে ফোনে “বিয়ে হবে না” বলা আর এখন সায়নের বিয়ে ভেঙে দেওয়া। সবই বুঝতে পারে জাবেদ। অর্নীল-সিয়া-সায়ন তিনজনের মাঝেই কোন না কোন কানেকশন তো অবশ্যই আছে।

সবকিছু বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যে বাড়ি এতোক্ষন খুশিতে হাসছিলো তা এখন চুপ মেরে গিয়েছে। শামীম, জাবেদ সবাই সবকিছু ফিরিয়ে দিচ্ছে। সব আগের মতো করে দিচ্ছে। মন টা সবার বেশ খারাপ। আর সবাই রেগেও আছে বটে। জাবেদ আর তার বাবা নিচে কাজ করছিলো হঠাৎ জাবেদের চোখ পরে ওপরে সায়নের রুমের দিকে। জাবেদ সেখান থেকে এসে সায়নের রুমে যায়। দরজা টা আলতো করে খুলে দেখে সায়ন সাদা ফ্লোরে বসে বসে চিপস খাচ্ছে আর ল্যাপটপে কাজ করছে। জাবেদ ভেতরে এসে বসে।

সায়ন;; আরে ভাই এসো ভেতরে এসো।

জাবেদ;; কি করস?

সায়ন;; খাবা? (চিপসের পেকেট টা জাবেদের দিকে এগিয়ে দিয়ে)

জাবেদ;; মজার মুডে আছোস তুই এখন? বিয়ে ভেঙে গেছে তোর ভাই।

সায়ন;; আহা, বিয়ে ভেঙে যায় নি। আমি ভেঙেছি।

জাবেদ;; কেনো?

সায়ন;; যার মনে অন্য জনের জন্য ভালোবাসা আছে সেখানে নিজের যাওয়া বা নিজের জন্য ভালোবাসা আশা করা নেহাত বোকামি ছাড়া আর কিচ্ছু না।

জাবেদ;; সিয়া!

সায়ন;; অর্নীল & সিয়া একে এপর কে ভালোবাসে। আর কিছু পারিবারিক সমস্যার কারণে তাদের আলাদা হতে হয়েছে। তাও ক্ষণিকের জন্য। কিন্তু দুজন বলতে গেলে দুজনের জন্য পাগল। আমি এভাবে থাকতে পারবো না। যদি সিয়াকে বিয়ে করে সাথে নিয়ে সংসারও করতাম তাহলে আজীবন আমার নিজের কাছে নিজেকেই তৃতীয় ব্যাক্তি মনে হতো। লাইক কাবাব ম্যা হাড্ডি। আর আমার বিন্দুমাত্র রুচি নেই নিজেকে এমন মনে করার।

জাবেদ;; সিয়া আগে বলে নি কেনো এইসব?

সায়ন;; ওইযে বললাম ফ্যামিলি প্রব্লেম। শোন ভাই আসলে কোন মেয়ে যদি ফ্যামিলি প্রব্লেমে পরে আমরা ছেলেরা যতটা সহজে তা নেই বা হ্যান্ডেল করি আসলে একটা মেয়ে তেমন পারে না। ফ্যামিলি প্রব্লেমে সবাই পরে তা মেয়ে হোক বা ছেলে। ছেলেরা কোন না কোন উপায় তো বের করেই নেয়। কিন্তু একটা মেয়ে এমন অবস্থায় সবার সামনে হাসবে বুঝতেও দিবে না যে আসলেই কিছু হয়েছে কিন্তু ভেতরে ভেতরে সে মরে যায়। না পারে বাবা-মায়ের অবাধ্য হতে আর না পারে অন্য কোন রাস্তা অবলম্বন করতে। তা না হলে লোকে বলবে যে “আরে মেয়ের এতো কিসের কথা দুদিন পরে হয়ে যাবে বিয়ে, জামাই এর ঘর করবে তার আবার এতো কিসের চিন্তা”। কিন্তু সবাই তো আর এই জামাই এর ঘরে যাওয়ার আশায় থাকে না তাই না। সিয়া চেয়েছিলো পড়বে দ্যান বিয়ে। কিন্তু এমন এক ঝামেলা তে পরেছে যে আমাকে বাধ্য হয়ে বিয়ে করতে হচ্ছিলো তার। না যদি অর্নীলের সাথেও সিয়ার বিয়ে হয় তাহলেও বলবে যে “পড়াশোনা শেষ না করেই বিয়ে তো হলোই”। কিন্তু এক্ষেত্রে একটা কথা থাকবে তা হলো “নিজের ভালোবাসা কে বিয়ে তো করতে পেরেছে”। আর হ্যাঁ আমি জানি যে অর্নীল সিয়ার জন্য সঠিক।

সায়ন এই কথা গুলো ল্যাপটপে তাকিয়ে তাকিয়ে বলছিলো। বলা শেষ হলে সে জাবেদের দিকে তাকায়। দেখে জাবেদ তার দুহাত ভাজ করে তাকিয়ে আছে। জাবেদ ফিক করে হালকা ভাবে হেসে দেয়। সায়নের মাথার চুল গুলো সে হাত দিয়ে কিছুটা এলোমেলো করে দেয়।

জাবেদ;; তুই কবে এত্তো বুঝমান হয়ে গেলি বুঝতেই পারলাম না। যে কিনা একটা চকোলেটের জন্য মারামারি লাগিয়ে দিতো সে এখন এতো বড়ো বড়ো কথা।

সায়ন;; আমাকে চেতিয়ো না বলে দিলাম নয়তো এখনই আবার মারামারি শুরু করে দিবো কিন্তু।

জাবেদ;; বান্দর।

সায়ন;; আচ্ছা ভাই শুনো। বাবা-মা যেনো এই ব্যাপারে ভুল করেও টের না পায় ওকে।

জাবেদ;; একদম না। বাই দি ওয়ে আদিবা…..

সায়ন;; ভাবি সব জানে।

জাবেদ;; হুমমম বুঝলাম।

সায়ন;; এখন তুমি নিচে যাও। বাবা-মাকে সামলাও। আমি জানি অজান্তেই আমি তাদের আজ অনেক বেশি হার্ট করে ফেলেছি। স্পেশালি আম্মুকে। কি আর করবো বলো আর কোন রাস্তা ছিলো না আমার কাছে। সব জেনে বুঝে আমি এটা করতে পারতাম না।

জাবেদ;; আরে ব্যাটা প্যারা নিস না। আমি আছি তো। তুই কাজ কর, আমি যাই।

সায়ন;; হুমমম।

জাবেদ চলে গেলো নিচে। নিচে যেতেই দেখে শামীম অর্থাৎ তার বাবা ফোনে কথা বলছে। মুখে কেমন একটা আক্ষেপ, কেমন একটা অস্বস্তি কর ভাব। নিচে গিয়ে জাবেদ তার বাবার কিছু কথা শুনতে পেলো। আর তাতে যা বুঝলো তার বাবা সিয়ার মায়ের সাথে কথা বলছে। হয়তো অনেক কিছু বলে বুঝাচ্ছে। জাবেদ নিজেও তার রুমে চলে যায়। এইতো এভাবেই বিয়ে টা ভেঙে যায়।



বর্তমান~

সিয়া ছুটে নিজের রুমে চলে এসেছে। কি করবে ভাবছে। আচ্ছা তার কি এখন কান্নাকাটি করা উচিত, আশ্চর্য হয়ে বসে থাকা উচিত। নাকি নরমাললি বিহেভ করা উচিত!! কোনটা? সায়নের এভাবে বিয়ে ভেঙে দেওয়ার কথায় দোলার আবার সন্দেহ হয়ে গেলো না তো তার ওপর! এই বিয়ে তো ভেঙেই গেলো এখন তবুও যদি দোলা আরেক পাত্র খুঁজে তাহলে, তাহলে কি হবে। হাজার টা ভাবনা এসে মাথায় ভর করেছে। তখনই দরজাতে কড়া নাড়ে। সিয়া কিছুটা চমকে গিয়ে তাকায়। ভেবেছে দোলা এসেছে। তার জন্য সিয়া চোখে সত্যি সত্যি দ্রুত কিছুটা গ্লিসারিন দিয়ে মুখ টা মলিন করে দরজার কাছে গিয়ে দরজা টা আস্তে করে মেলে দাঁড়ায়। সে ভেবেছে দোলাই দাঁড়িয়ে আছে। এর জন্য সিয়া আরো একটু ভেটকি দেয় মানে কেদে দেয় আর কি। ধীরে ধীরে মাথা তুলে তাকিয়ে দেখে আদিবা ৩২ টা দাঁত বের করে দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

আদিবা;; কিরে ছেরি!

সিয়া;; ধুরু যা কুত্তা।

এই বলেই সিয়া এসে দ্রুত ওয়াসরুমে চলে যায় চোখে ইচ্ছে মতো পানি দিতে থাকে। কেননা চোখ জ্বালা পোড়া করছে তার। আর আদিবা পেটে হাত দিয়ে হাসতে হাসতে ভেতরে এসে রুমের দরজা লাগিয়ে দেয়। সিয়া ওয়াসরুমের দরজা খুলেই চোখে পানির ছিটা দিচ্ছে। আদিবা হাসতে হাসতে দেওয়াল চেপে ধরে। সিয়া ওয়াসরুম থেকে বের হয়ে টাওয়াল দিয়ে মুখ মুছছে। আদিবা কে এভাবে জঙ্গলির মতো করে হাসতে দেখে সিয়া গিয়ে তার মাথার ওপরে গাট্টা মারে৷

সিয়া;; চোখ জ্বলতাছে আমার, হারামি আমি ভাবছি আম্মু। বলবি না যে তুই, হুদ্দাই আরো কান্নার ভং ধরলাম।

আদিবা;; ভং ধরার কি আছে জেঠি তো সবই জানে।

সিয়া;; কি সবই জানে মানে? অর্নীল যে সায়ন কে বলে বিয়ে ভেঙে দিয়েছে তা জানে?

আদিবা;; আরে তা না জানলেও সন্দেহ আছে তোর ওপরেই।

সিয়া;; আয় হায় কি বলস।

আদিবা;; সিওর না আমি।

দোলা;; সিয়া!

সিয়া;; আরে আম্মা।

দোলা;; সিয়া!

সিয়া দ্রুত সব ঠিক ঠাক করে নেয়। টাওয়াল টা আদিবার মুখের ওপর ছুড়ে মারে৷ আর আবার মলিন মার্কা মুখ বানিয়ে দোলার কাছে যায়।

দোলা;; কি করিস তোরা??

সিয়া;; কিছুই না।

দোলা;; সায়ন তোকে ফোন করেছিলো?

সিয়া;; না।

দোলা;; বিয়ে তো হবে না।

সিয়া;; তো কি মা। না হলো।

দোলা;; আমার না খুব খারাপ লাগছে রে (কাদো কাদো ভাব)

সিয়া;; আরে না, আহহা। এমন করলে হয়। কাদছো কেনো?

দোলা;; মেয়ের বিয়ে ভেঙে গেলো কাদবো না।

দোলা এবার সত্যি কেদে দিলো। সিয়া দোলা কে জড়িয়ে ধরে৷ দোলা এদিকে কাদছে আর সিয়া মুখ টিপে হাসছে।

সিয়া;; মা দেখি তো, আরে দেখি না৷

সিয়া দোলা কে তুলে তার চোখের পানি মুছে দেয়।

সিয়া;; নানু কোথায়?

দোলা;; নিচে।

সিয়া;; দেখে আসি বুড়ি কে।

সিয়া নিচে গিয়ে দেখে শিউলি বেগম তার মাথার দুপাশে দুই আইসব্যাগ রেখে চোখ বন্ধ করে সোফাতে বসে আছে। সিয়া ফিক করে হেসে দেয়। পেছনে তাকিয়ে দেখে আদিবা। সিয়া দ্রুত গিয়ে আদিবার মুখে হাত দিয়ে চেপে ধরে। কারণ এই মেয়ে প্রচুর বজ্জাত। খালি হাসে তাও জোরে জোরে। সিয়া মুখ চেপে ধরে আস্তে হাসতে বলে৷
কিন্তু সিয়া এবার যেনো নিজেও হাসি আটকাতে পারছে না। সিয়া নিচে নেমে আসে৷

সিয়া;; নানু!

শিউলি;; হ্যাঁ, আসছোস তুই? কান্দিস না বইন বিয়ে নয় এইটা গেলো আবার আসবো।

সিয়া;; হ্যাঁ? কান্না তাও আমি ধুরু।

শিউলি;; তোর মারে ডাক দে।

আদিবা আর দোলা নিচে নেমে আসে।

দোলা;; আসলে সায়নের বাবা ফোন দিয়েছিলো তখন আমায়। লোকটা খুব বীনিত হয়ে কথা বলছিলো যেনো অনুশোচনা স্পষ্ট। কিন্তু কাউকে তো আর জোর করতে পারি না আমি। তাই যা চায় তাই হবে। আমি জানি সায়ন ছেলে ভালো হয়তো কোন সমস্যা হয়েছে তাই।

আদিবা;; আমার আর সিয়াকে নিজের দেবরের বউ হিসেবে দেখা হলো না গো।

সিয়া;; এহহহহহহহহহহহহহহ ঢং।

দোলা হেসে দেয়। যা হয়েছে হয়েছেই। সায়নের বাবা মা অনেক ভালো। আর বিয়েটা ভেঙে গেছে তাই কি বাকি সম্পর্ক গুলো তে তো আর ফাটল ধরে নি। এখনো একদিক দিয়ে সায়নের পরিবারের সাথে সম্পর্ক অনেক ভালো তাদের আর সবসময় থাকবেই। দিন টা এভাবেই চলে যায়। আদিবা সেইদিনও সিয়ার সাথে থাকে৷ ভেবেছে আগামীকাল সকালেই উঠে চলে যাবে। আর যেতেই হবে উপায় নেই।


রাকিব;; অর্নীল ভাই থাম আর কতো খাবি।

বারে বসে একের পর এক পেগ মেরেই যাচ্ছে অর্নীল। ইতোমধ্যে তার এক সেট পেগের ট্রে খাওয়া শেষ। আর রাকিব মানে অর্নীলের ফ্রেন্ড তার পাশে বসে গালে হাত দিয়ে রেখেছে। অর্নীল কে থামতে বললেও থামছে না।

অর্নীল;; এই তোর কয়টা গার্লফ্রেন্ড রে?

রাকিব;; আপাতত একটাও নাই। এর আগে একসাথে চারটা ছিলো সবগুলো রেখে চলে গেছে।

অর্নীল;; আরে শালা কেমনে পারোস সামলাতে। আমার একটা তেই জীবন শেষ। তাও কথা বলে না কত্তো দিন। জানিস এখন আমার আর আলো লাগছে না। বিয়ে হওয়ার কথা ছিলো ওর তা ভেঙে দিয়েছি। ভেবেছি আজ দেখা করবোই করবো কিন্তু হলো না। অনেক গুলো কথা জমে আছে আমার সিয়ার সাথে, এত্তো গুলো। কিন্তু কীভাবে বলবো।

রাকিব;; আগে তুই এগুলো খাওয়া ছাড়।

অর্নীল;; আরে ধুর এগুলো হাজার টা খেলেও আমার নেশা হবে না। সিয়া কে লাগবে আমার৷

রাকিব;; তো যা দেখা কর।

অর্নীল;; হুমমম।

রাকিব;; এখন কি বের হবি?

অর্নীল;; হ্যাঁ।

রাকিব আর অর্নীল বের হয়ে পরে৷ রাকিব তার বাইক নিয়ে চলে যায় আর অর্নীল তার গাড়ি নিয়ে। গাড়িতেও হুইস্কির বোতল রাখা ছিলো অর্নীলের সেগুলো আবার খাচ্ছে। নিজের ফোন টা অন করতেই সিয়ার হাসি মাখা মুখ টা ফোনের ওয়ালপেপারে ভেসে ওঠে। ব্যাস, গেলো অর্নীলের মাথা ঘুড়ে। এখন তো দেখা করতেই হবে৷ অর্নীল তার গাড়ি ইউ টার্ন নিয়ে সিয়ার বাসার দিকে নিয়ে যায়। প্রায় আধা ঘন্টা পর সিয়ার বাসার নিচে গিয়েছে অর্নীল। তাও বাড়ির পেছনের দিক টায়। অর্নীল গাড়ি থেকে নেমে পরে ঢুলুঢুলু পায়ে। কিছুটা নেশা চড়ে বসেছে মাথায় এখন তার। অর্নীলের হাতে এখনো হুইস্কির বোতল টা রয়েছেই। সেটা আবার মুখে পুড়ে নিয়ে কয়েক ঢোক খেয়ে নিলো। তারপর জোরে একটা আছাড় মারে। কাচের মোটা বোতল টা নিচে পরে ভেঙে খানখান হয়ে গেলো। আর এবার অর্নীল এক্কেবারে ছাড়া গলায় চিল্লাতে লাগলো।

অর্নীল;; সিয়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়া, সিয়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়া। ওওওওও আমার সিয়াজান। কত্তোদিন ধরে এই ডাকটা ডাকি না তোমায়।সিয়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়া। সিয়া প্লিজ নিচে নেমে এসো। প্লিজ। আমি কখনো ভাবি নি যে এমনও একদিন আসবে যেখানে একদম এক বখাটে ছেলের মতো একটা মেয়ের বাসার নিচে এসে আমাকে এভাবে গলা ফাটিয়ে চিল্লাতে হবে তাও তার নাম ধরে। কিন্তু আজ এটা করতে হচ্ছে আমার।সিয়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়া।

অর্নীল তার গাড়ি থেকে আরো কাচের বোতল বের করে ভাঙতে শুরু করে দেয়।

অর্নীল;; সিয়ায়ায়ায়ায়ায়ায়াজান, সিয়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়া।

কানের পর্দা ফাটানোর মতো আওয়াজ আসছে বাইরে থেকে। তা কানে অব্দি পৌঁছাতেই সিয়া ঘুম থেকে ধরফরিয়ে ওঠে পরে৷

অর্নীল;; সিয়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়া।

সিয়া এবার প্রায় তার খাটের ওপর থেকে পরতে পরতে বেঁচে গিয়েছে। হুড়মুড় করে নেমে জানালা খুলে বাইরে নিচের দিকে তাকায়। তাতেই সিয়ার চোখ যেনো চড়কগাছ। অর্নীল বাইরে পাগলামি শুরু করে দিয়েছে। সিয়া পেছন ঘুড়ে তাকিয়ে দেখে আদিবাও ঘুম থেকে উঠে গিয়েছে অর্নীলের চিল্লাচিল্লা তে। সিয়া একবার অর্নীলের দিকে তাকায় আরেকবার আদিবার দিকে।

আদিবা;; অর্নীল এসেছে?

সিয়া;; হ্যাঁ

আদিবা;; দেখা করতে যাবি?

সিয়া;; বুঝতে পারছি না। যে ষাড়ের মতো চেচাচ্ছে মা একবার জেগে গেলে শেষ।

আদিবা;; চল, আমি হেল্প করছি। নিচে যা।

সিয়া;; সত্যি?

আদিবা;; এই সময়ে আমি মিথ্যা বলার মুডে নেই গাধি। চল।

আদিবা আর সিয়া খুব সাবধানে নিচে নেমে পরে। সিয়া ড্রয়ার থেকে চাবি নিয়ে নেয়। তারপর আস্তে করে দরজা খুলে বাইরে বের হয়ে পরে। আদিবা চাবি টা নিজের কাছে রেখে দিয়ে ওপরে রুমে চলে যায়। আর সিয়ার কাছে ফোন রয়েছে। দেখা বা কথা বলা শেষ হলে সিয়া আদিবা কে ফোন দিবে আর আদিবা গিয়ে দরজা খুলে দিবে।

সিয়া বাইরে চলে যায়। বাড়ির মেইন দরজা দিয়ে বের হয়ে এক দৌড়ে বাড়ির পেছনে চলে যায়। যেতেই দেখে অর্নীল দাঁড়িয়ে আছে। অর্নীল সিয়াকে দেখে, সিয়ার কেনো যেনো বুকের ধুকপুকানি ক্রমশ বেড়ে যায়। শুকনো কিছু ঢোক গিলে নেয়। অর্নীল এক মনে সিয়ার দিকে কিচ্ছুক্ষন তাকিয়ে থাকে। সিয়া ভেবেছে যে এখন নির্ঘাত তার কপালে শনি, রবি, সোম, মঙ্গল সবই আছে। সিয়া বেশ দূরত্ব বজায় রেখেই দাঁড়িয়ে থাকে। আর অর্নীল তেড়ে সিয়ার দিয়ে যেতে লাগে৷ সিয়া চোখ খিচে বন্ধ করে নেয় এই হয়তো সিয়ার গালে কষে এক চড় পরলো কিন্তু না সিয়ার ভাবনা কে ভূল প্রমাণ করে দিয়ে অর্নীল এলে সিয়াকে একদম আষ্ঠেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে৷ যেনো নিজের ভেতরে এক্কেবারে ঢুকিয়ে নিচ্ছে এমন অবস্থা। সিয়া চোখ মেলে তাকায়। অর্নীল সিয়াকে কে যে জড়িয়ে ধরেছে আর ছাড়ার নাম নেই। কিছুক্ষন বাদে সিয়া অনুভব করলো যে তার কাধ হালকা ভেজা। সিয়া মাথা তুলে তাকাতে চাইলে অর্নীল যেনো তাকে নিজের সাথে আরো জোরে চেপে ধরে। সিয়া বুঝলো অর্নীলের চোখ দিয়ে হয়তো কয়েক বিন্দু নোনাজল গড়িয়ে পরেছে এতোদিন পর তাকে দেখে।

সিয়া;; অর্নীল!

অর্নীল;; হুমম।

সিয়া;; আপনি……..

সিয়া কিছু বলতে যাবে কিন্তু তার আগেই আচমকা অর্নীল সিয়ার ঠোঁট দুটো আকরে ধরে। সিয়ার চোখ গুলো বড়ো বড়ো হয়ে যায়। প্রথমে নিজের কাছ থেকে অর্নীল কে ছাড়াতে চাইলে অর্নীল তার এক হাত দিয়ে সিয়ার কোমড়ে আরেক হাত সিয়ার চুলের ভাজে এলিয়ে দেয়। অর্নীল যেনো সিয়াকে এতোদিন না দেখতে পেরে, না কথা বলে পাগল ছিলো। আর আজ যেহেতু এতোদিন পর দেখা তাই সে নিজেকে আর ঠিক রাখতে পারে নি। বেশ কয়েক মূহুর্ত পর অর্নীল সিয়াকে ছেড়ে দিয়ে কপালে চুমু একে দেয়। সিয়া এবার ভালো করে অর্নীল কে দেখে। অর্নীলের চোখ জোড়া এত্তো সুন্দর লাগছে দেখতে। লাল বর্ণ কিছুটা, এক অদ্ভুত নেশার মতো লাগছে।

অর্নীল;; কেন বুঝোস না তুই। তোকে যে এত্তো ভালোবাসি কেন বুঝোস না। আর কি করলে কীভাবে কি করলে তুই হবি আমার বল। আর কি করবো আমি। আমি জানি না। কে কাকে খুন করেছে, কি করেছে আমার জানার প্রয়োজনও নেই। আমি শুধু এইটুকু জানি যে তুই আমার হবি ব্যাস। সায়ন তোদের ফ্যামিলির একজন হতো তাই তাকে কিছু করি নি। এর পর থেকে যদি কোন ছেলে তোর আশে পাশেও এসেছে তাহলে প্রথমে এই ছেলেকে জ্যান্ত মারবো আর পরে দেখিস আমি তোর কি হাল করি।

সিয়া;; আচ্ছা আপনি চিল্লাচ্ছেন কেনো। কুল কুল।

অর্নীল;; কুল? কুল থাকতে দিয়েছিস তুই আমাকে।

সিয়া;; আচ্ছা বিয়ে তো হয় নি৷

অর্নীল;; অলমোস্ট হয়েই গিয়েছিলো।

সিয়া;; আপিনি ড্রাং করেছেন। বাসায় যান। আমরা কাল কথা বলবো।

অর্নীল সিয়ার হাত ধরে টান দিয়ে আবার জড়িয়ে ধরে।

অর্নীল;; আমি তোমাকে বিয়ে করে নিয়ে চলে যাবো।

সিয়া;; ছেলেমানুষী কেনো করছেন! আপনি এখন বাসায় যান অর্নীল।

অর্নীল;; তোমাকে নিয়ে যাই আমার সাথে করে!

সিয়া এবার হেসেই দেয়। কেননা অর্নীল এই কথা টা আরো একদিন বলেছে। কিছু হলেই বলবে তোমাকেও নিজে যাই, তোমাকেও নিয়ে যাই। সিয়া হেসে দেয়। অর্নীলের সাথে এভাবেই বেশ সময় থেকে সিয়া এসে পরে। আর অর্নীল চলে যায়। আসলে চলে যায় বলতে সিয়া অর্নীল কে জোর করে ঠেলে ধাক্কিয়েই বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছে। সিয়া আদিবা কে ফোন করে আর আদিবা এসে চাবি টা দিয়ে আস্তে করে দরজা খুলে দেয়। সিয়া ভেতরে এসে পরে। তারপর আবার দুইজন একসাথে গিয়ে ঘুমিয়ে পরে।


পরেরদিন সকালে ফোনের শব্দে সিয়ার ঘুম ভেঙে যায়। পাশে তাকিয়ে দেখে আদিবা নেই। ওয়াসরুম থেকে আওয়াজ আসছে তাহলে হয়তো ফ্রেশ হতে গিয়েছে। আদিবা কেও আজ চলে যেতে হবে। সিয়া ঘড়ির দিকে তাকায় দেখে এগারো টা বাজছে। তা দেখে সিয়া প্রচুর অবাক। কেননা তার কলেজ টাইম পার হয়ে গিয়ে আরো এক ঘন্টা চলে গিয়েছে। আর এত্তো সকাল অব্দি সে আসলে ঘুমায় না। তাহলে আজ কেনো ঘুমালো। কাল রাতে কি খেয়েছিলো? যাই হোক ফোন প্রথমে বেজে কেটে যায় পরে আবার বাজতে শুরু করলে সিয়া ফোন ধরে। আর ওপর পাশ থেকে যে খবর শুনে তাতে সিয়ার বুক টা কেমন ধক করে ওঠে। এটা কি করে সম্ভব! সিয়ার মুখ দিয়ে টু শব্দও বের হচ্ছে না। কপাল কুচকে তাকিয়ে আছে। তখন আদিবা ওয়াসরুম থেকে বের হয়। সিয়া কে এভাবে বিছানার ওপর বসে থাকতে দেখে তাকে ইশারা করে জিজ্ঞেস করে যে কি হয়েছে? কিন্তু সিয়া কিছু না বলেই কোন রকমে তার ওরনা টা হাতে নিয়ে পরতে পরতে এক দৌড়ে সিড়ি বেয়ে নিচে নেমে পরে। কি এমন হলো? এটা ভেবে আদিবাও সিয়ার পেছনে যায় দ্রুত।





চলবে~~