দুই দুয়ারী পর্ব-০৮

0
116

দুই দুয়ারী

পর্ব ৮

রাতে ঘুমাইনি, ভেবেছিলাম চায়ের দোকানে চা বিস্কুট খেয়ে নিয়ে সারাটা দুপুর ঘুমিয়ে কাটাবো। কিংবা স্বপ্ন দেখে। আজকে মনটা বিশেষ রকম ভালো, এই ভালো লাগার অভিজ্ঞতা জীবনে এই প্রথম। আমার একটু লজ্জা লজ্জাও করছে, মনে হচ্ছে সবাই তাকিয়ে আছে আমার দিকেই। ওরা বলছে, কে তুমি আগন্তুক, কোথা থেকে এসে আমাদের গাঁয়ের সবচাইতে মূল্যবান রত্নটি চুরি করে নিয়ে যাচ্ছ, প্রতিদিন একটু একটু করে?

কিন্তু চায়ে প্রথম চুমুক দিয়েই সাহিত্য প্রতিভা উবে গেলো, নজরুলকে দেখলাম তিনজন সঙ্গী নিয়ে এগিয়ে আসতে। মন খারাপ করা আমার উচিৎ না, ওর বাড়ি ওর ঘরে ওর অনুপস্থিতিতে আমিই বেশ জাঁকিয়ে বসেছি, পরগাছার মত। তবু মন আর মেজাজ দুটোই খারাপ হয়ে গেল। কি দরকার ছিল এর ফিরে আসার?

সে আমার উপস্থিতি সম্পূর্ণভাবে অগ্রাহ্য করলো, যেন আমাকে দেখেনি। দোকানের বিস্কুটের বোয়ম অনায়াসে তুলে নিয়ে খাচ্ছে এখন। বেঞ্চিতে এতগুলো লোকের জায়গা হবেনা, আমি নিজের অজান্তেই উঠে দাঁড়ালাম। উঠে নিজের ওপর একটু রাগই হলো, ওকে এই সম্মান না দেখালেও চলতো আমার। কিন্তু সেই ছোটবেলার অভ্যাস, একে একবার ভুলে সালাম দেইনি বলে বাবার সে কি রাগ!

অবশ্য সে যে আমাকে দেখেছে ভালোমতোই, সেটা প্রকাশ পেলো তার কথায়, ” বাজারে আগুন লাইগা গেছে। ঢাকা শহরের মানুষ মরতাসে না খাইয়া। বুঝলা” দোকানির দিকে তাকিয়ে বললো, ” আমার বাপে ভালো মানুষ, তারে ভজাইয়া গ্রামের মানুষ তো খায়ই এখন শহরের মানুষ ও জুটছে। কাজ নাই কাম নাই রাত বিরাতে খারাপ মেয়েদের কাছে যায়, দিনের বেলায় আমার ব্যাপারটা খায়। এগুলি আর চলবেনা “।

কাজকর্ম না করে একজনের উপরে বসে খাওয়ার ব্যাপারটা সত্যি, আমার প্রতিবাদের ভাষা নেই। কিন্তু খারাপ মেয়ে মানুষ? আমি চায়ের কাপ রেখে একটু সামনে এগোলাম, ” খারাপ মেয়ে মানুষ? কি বললেন আবার বলেন তো? ”

তারা সবাই হাসতে শুরু করলো, ভারী নিষ্ঠুর সেই হাসি, ” মারবেন নাকি? ”

দোকানি লোকটা উঠে এসেছে ততখনে, আমার পিঠে হাত রেখেছে, আমার মাথা ঝিমঝিম করছে প্রচন্ড রাগে, আমি বললাম, ” হ্যাঁ। “। আর কোন কথা এলোনা মুখে, বেশি রাগ হলে আমি কথা বলতে পারিনা।

” আমরা হাতে মারিনা ভাইজান ” সঙ্গীদের একজন বললো, তার চাদরে শরীর ঢেকে রাখার রহস্য পরিষ্কার হলো, যখন একটু সরিয়ে ভিতরে লুকিয়ে থাকা আগ্নেয়াস্ত্রর একাংশ দেখালো আমাকে।

আমি হয়তো কাপুরুষ, বড়সড় ধরণের কাপুরুষ। অস্ত্রের বিরুদ্ধে আমার কিছু করার নেই, বুঝে গেলাম সহসা। রাগ সরে গিয়ে আমার মস্তিস্ক দখল করলো অক্ষমতার আফসোস। আমার চোখ ফেটে পানি বের হয়ে গেলো।

আমি পিছনে ঘুরে হাঁটতে শুরু করলাম। বেশ শুনতে পাচ্ছি, লোকগুলি হাসছে। হঠাৎ বুঝতে পারলাম, আমার যাবার কোন জায়গা নেই আর। এখন কোথায় যাচ্ছি তাও জানিনা।

***

” ইমাম সাহেব” ভীষণ ক্লান্তস্বরে বললাম, ” আপনি বাসায় যাবেন কখন?”

ছোট একটা মসজিদ, কে দয়া করে কবে মিনারটা গড়ে দিয়েছিলো কে জানে। লোকটা একাই বসে তসবিহ ঘোরাচ্ছিলেন, আমাকে দেখে হাসলেন, ” কেন? ”

” আমি… ” বলতে খুব অসস্তি বোধ করি, ” আমি একটু আপনার বাসায় গিয়ে বসতে পারি?”

” ভাবলাম ছোট ভাই নামাজ পড়তে আসছে বুঝি ” উঠে দাঁড়ালেন, ” নজরুলের সঙ্গে ঝামেলা বাঁধাইছো নাকি? ”

আমার ইচ্ছে করলো, ওনাকে বলি, জানেন নজরুল কি বলেছে? মিলিকে খারাপ বলেছে ও, আমাদের মিলি। জানেন আমি কিছুই বলতে পারিনি, আপনি কিছু বলবেন না?

” চলো যাই। নিরাশ্রয়কে আশ্রয় দিয়া একটু সওয়াব কামাই”। হাসলেন।

আমি ওর পিছে পিছে হাঁটতে থাকলাম বাধ্য ছেলের মত। ঢাকা শহরের মানুষ খেতে পায়না, এই ব্যাপারটা নিয়েও ভাবছি এখন। এরকম একটা ব্যাপার বইতে পড়েছি, যে সময় জয়নুল আবেদীন তার বিখ্যাত ছবিটা এঁকেছিলেন। ডাস্টবিনের পাশে কঙ্কালসার বাচ্চার ছবি, নাকি কাকের ছবি?

” আপনি খবরের কাগজ পান কোথেকে? ” জানতে চাইলাম।

উনি একটু চমকালেন, পরে হাল ছেড়ে দেয়ার ভঙ্গিতে বললেন, ” মিলি বলছে তাই না? ওই মফস্বলে গেলে মাঝে মাঝে নিয়া আসি পুরানো অনেকগুলা একসাথে। মেয়েটার পড়ার শখ”।

আবার সেই দুর্বোধ্য মায়ার ছোঁয়া ওর কণ্ঠে, কি আশ্চর্য! মিলির বাবা পাঁচ গ্রাম ছাড়িয়ে বয়স্ক পাত্র জোগাড়ে ব্যাস্ত, ঘরের কাছে ভালোবাসার বিশাল এই সমুদ্র তার চোখে পড়েনা?

” তোমার ওর উপর খুব টান হইসে তাই না? ” উনি অন্যদিকে তাকিয়ে বললেন। উত্তর দেয়ার মত কোন কথা না, আমি চুপ করে রইলাম।

” ভালো। ওরেও অনেক খুশি খুশি দেখি আজকাল। কিন্তু ভাই…. হঠাৎ হাঁটা থামিয়ে দিয়ে আমার দিকে ঘুরে দাঁড়ালেন, ” যেমনে আসছো তেমনে হুট্ কইরা চইলা যাবা না তো? কষ্ট পাইবো মেয়েটা। এমনিই ওর অনেক কষ্ট ”

ওনার দৃষ্টির সামনে আমি সংকুচিত হয়ে গেলাম, সত্যিই তো! আমিতো এখানে নিজের ইচ্ছায় আসিনি! অলৌকিকভাবে যদি হঠাৎ একদিন…. আমি আর ভাবতে চাইলাম না, বললাম, ” আমি ওকে বিয়ে করতে চাই। শুধু যদি একটা কাজ পেতাম…

” আলহামদুলিল্লাহ ” উনি কথার মাঝখানে বলে উঠলেন, ” কাজের জন্য কিছু পিছাবেনা। আল্লাহ জুটায় দিবেন “।

আমি দেখলাম উনি চোখ মুছছেন, তবে সেটা কি আনন্দের না বেদনার অশ্রু আমি ঠিক নিশ্চিত নই।

” জালালের মা যখন খুব ভুগতেসিলো রোগে” উনি নিজের মনেই বলছেন, হাঁটতে হাঁটতে, তার ভেতরের অস্থিরতা প্রকাশ পাচ্ছে তার তসবীহর দ্রুত ঘোরায়,
” মিলি রাতদিন আমার ঘরে বসা । সে তারে খাওয়ায়, গোসল করায়, ডাইকা ডাইকা জালালরে আমারেও খাওয়ায়। আর আমি পাপী… খালি তাকায় তাকায় মিলিরেই দেখি.….

উনি ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলেন এবার। আমার ভেতরে পরস্পর বিপরীতমুখী চিন্তা উঁকি দিয়ে গেল তখন । আমি আগন্তুক, আমার আসা যাওয়ার ঠিক ঠিকানা নেই, কেন না আমিই চলে যাই অন্য কোথাও? ওরা সুখে থাকুক?

” শুইয়া থাকো। জালাল আছে আশেপাশেই। ডাক দিলে পাইবা। ”

” আপনি কোথায় যাচ্ছেন? ”

” আসরের নামাজ পইড়া নিজামুদ্দিন সাহেবের ওইখানে যাবো। শুনছো নাকি, নুরু মিয়ার গরু খুইলা নিয়া গেসে নজরুল কালকে রাত্রে। খুব খেপসে। ”

আমি দীর্ঘশ্বাস ফেললাম শুধু।

***

ঘুমিয়ে পরেছিলাম, হাসির শব্দে ঘুম ভাঙলো। চোখ অর্ধেক খুলে দেখতে পেলাম, জালাল হাত নেড়ে নেড়ে কথা বলছে আর মিলি খুব হাসছে। মন ভালো হয়ে গেল, চোখ ডলে উঠে বসলাম। মিলির হাত ভরা চুড়ি। রঙধনুর সাত রঙের চুড়ি।

আমাকে উঠে বসতে দেখে হাসি থামিয়ে গম্ভীর হবার ভান করে বলল, ” নজরুলে খেদায় দিলো তাইলে? ”

জালাল অপ্রাসঙ্গিকভাবে বলে উঠলো তখন, ” সাতের নামতা শিখছি আজকে। শুনবেন? ”

আমি ভালোভাবে তাকিয়ে বুঝতে পারলাম, ছেলেটা বেশ ভালো দেখতে, অনেকটা ইমাম সাহেবের মত। তিনি যে বেশ সুপুরুষ, এতে সন্দেহের অবকাশ নেই। বয়স হয়তো ত্রিশের কোঠায়, মিলির সাথে তবু দেখতে খারাপ দেখাবে না।

ভাবনাটা বিদায় করার জন্য দাঁড়িয়ে পরলাম। এখানে প্রাকৃতিক কাজ সারা আসলেই বিড়ম্বনা, এখনো অভ্যাস করে উঠতে পারিনি।

” বাইরে পানি আইনা রাখসি, যান হাত মুখ ধুইয়া আসেন ” মিলি বলল।

হাত মুখ ধুতে বাইরে যেতে হয়না, দরজা খুলে কুলকুচি করলেই হয়ে যায়। তবু সে বাইরে যেতে বললো, আমি আরেকবার চমকৃত হলাম। সবদিকে খেয়াল আছে ওর। কি অদ্ভুত একটা মেয়ে!

ফিরে দেখি খাবার প্রস্তুত, জালালও সব ভুলে গোগ্রাসে গিলছে। মিলি আমার দিকে তাকালো অদ্ভূত দৃষ্টিতে, ” আপনার এখানে খুব কষ্ট হয়, তাই না? ” আমি খেয়াল করলাম ওর চোখে পানি এসে গেছে। আসলেই পাগল একটা মেয়ে, দুনিয়ার সব বাদ দিয়ে শৌচাগারের দুঃখে কাঁদছে। আমি শব্দ করে হেসে ফেললাম।

শুকনো মরিচ পুড়িয়ে ভর্তা করেছে মিলি, সাথে ডালের চচ্চড়ি। আরেকটা পাত্রে সামান্য একটু করল্লা ভাজি। করল্লা তিতা বলে আমি আগে খেতাম না, কিন্তু তিতার যে আলাদা স্বাদ থাকতে পারে, আজকে টের পেলাম।

জালালের দিকে তাকিয়ে আমার একটু দ্বিধা হচ্ছিলো, কিন্তু ভেবে নিলাম, সে বাচ্চা মানুষ, বুঝতে পারবেনা, বললাম, ” কি কাজ করবো বুঝতে পারছিনা। এই গ্রামে কারো কোন কাজ নেই। কিছুই মাথায় আসছেনা মিলি “।

স্বভাবের বিরুদ্ধে মিলি আজকে গম্ভীর হলো, ” মানুষ তো শহরে যায় কাজ করতে। যদি চান….

” তাহলে তোমাকে যেতে হবে ” বলে উঠলাম, ” তোমাকে রেখে যেতে পারবোনা “।

” চুপ করেন ” মিলি বলে উঠলো, ” কিসব কন বাচ্চা মানুষের সামনে ”

” বিয়ার কথা ” জালাল হাত চাটতে চাটতে বলল, ” আমি জানি “।

আমি হাপ ছেড়ে বাঁচলাম, এখন এত দ্বিধা করে কথা বলতে একদম ইচ্ছে করছেনা, ” আমরা একটা হোটেল দেই চলো। তোমার যেমন রান্না, মানুষ দল বেঁধে খেতে আসবে দেখো!”

মিলি ফিরে গেল তার স্বভাবসুলভ আচরণে, হাসতে হাসতে ভেঙে পরছে সে, ” কি খুলবেন? আর মানুষ টাকা দিয়া কিনা খাবে? আপনাদের ঢাকায় ওগুলা হয়। এইখানে কারো ঠেকা নাই কিনা খাইবো। ”

” আমি কিনা খাবো ” জালাল ঘোষণা করলো।

আমি ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিলাম, ” তোমার কিনে খেতে হবেনা। তুমি ওটার মালিক হবে। জালাল মিয়ার ভাতের হোটেল। ”

মিলি আবারো হাসতে শুরু করেছে,” জালাল মিয়ার…. হিহিহিহি… জালাল আবার মিয়া…. হিহিহিহি….

অনেকদিন পরে রাতটা ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিলাম। খুব ইচ্ছে করছিলো উঠে পুকুর পাড়ে যাই, কেন যেন ইমাম সাহেবকে সামনে রেখে যেতে খুব দ্বিধা হলো। উনি নিজেও হয়তো আমাদের মতোই রাত জাগা মানুষ, দীর্ঘ সময় শুয়ে শুয়ে দুয়া পড়তে থাকলেন। সেগুলো শুনতে শুনতেই আমি ঘুমিয়ে গেলাম।

***

” আমরা সপ্তাহে দুইদিন ঝিনাইদহ শহরে যাই ” আমার বন্ধু কাওসার বললো, ” বিল্ডিং হইতেসে, কাজ করি। তুমি চাইলে যাইতে পারো আমাদের সাথে “।

বিল্ডিং হচ্ছে? তাহলে কি মাটি কাটার কাজ? চট করে মার চেহারা ভেসে উঠলো চোখের সামনে। একদিন স্কুলের মাঠে খুব খেলাধুলা করে বাড়ি ফিরেছি, আমার নানী তখন আমাদের বাসায় বেড়াতে এসেছেন। তিনি হেসে বললেন, ” কিরে, মাটি খুঁড়ে এলি নাকি? কি অবস্থা জামা কাপড়ের? ” তাতেই মা পারলে কেঁদে ফেলেছিলেন। আরেকদিন লিফট নস্ট ছিল, পাঁচ তলা বেয়ে উঠে আমি হাপাচ্ছি। মা কেয়ার টেকার কে ফোন করে কি বকাটাই না বকলেন!

তবু আমি রাজি হয়ে গেলাম। চারটা মাস আমার কাছে কোন টাকা নেই, আমার অস্থির লাগছে খুব। ভালোমতো বুঝতে পারছি মানুষ কখন একটা চাকরির জন্য পাগল হয়ে যায়। আমার জন্য এই বুঝতে পারাটার দরকার ছিল খুব।

কিন্তু আরেকটা কথা মনে পড়তেই হাসি পেয়ে গেলো। কি একটা সিনেমা দেখেছিলাম এরকম, নাম মনে নেই। আমেরিকা থেকে নায়ক পড়াশোনা করে এসেছে, অথচ প্রেমের টানে গ্রামে গিয়ে মাটি খুঁড়ছে, তারপর প্রেমিকার বাসার সামনে দাঁড়িয়ে গানটা গাইছে। সিনেমা যে শুধুই কাল্পনিক তা নয় তাহলে, কিছু সত্য অনুভব ও আছে ওগুলিতে!

সেদিন বিকেলেই ওদের সাথে চললাম আমি। মিলি আবার কষ্ট করে নারকেলের নাড়ু বানিয়েছে আমাদের তিনজনের জন্যই। ভ্যানের পিছে যখন চড়ে বসছি, তখন ও সে গাছের আড়াল থেকে উঁকি দিচ্ছিলো। সামনে আসেনি, আমার সাথের ছেলেদুটো ওকে ভালো চোখে দেখেনা, সে আমিও জানি।

***

অনেকদিন পরে রাতে আলো জ্বলতে দেখে আমার এত আনন্দ হলো বলার নয়। দালানটি তৈরির কাজ মাঝপথে, অর্ধনির্মিত একতলায় টিমটিম করে হলুদাভ আলো ছড়িয়ে একটা ছোট বাল্ব ঝুলছে। ঠিক তখন, আমি উপলব্ধি করলাম, আমার শহুরে পঞ্চাশ বছর পরের জীবনটাকে আমি কি ভীষণভাবেই না মিস করি। শুধু মিলি আছে বলে তার আকর্ষণে আটকে আছি, নতুবা কবেই পাগল হয়ে যেতাম।

জানা গেল আমাদের ঘুমানোর বিশেষ কোন জায়গায় নেই, এখানে সেখানে পরে থাকা ছালা আর প্লাস্টিকের ব্যাগ গুলিই আমাদের বিছানা। আমি খেয়াল করলাম, নরম গদিতে এসির নিচে শোয়ায় অভ্যস্ত বাইশ বছরের যুবকটি আমার মধ্যে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চাইছে। এবং এতো তীব্রভাবে যে আমার রীতিমতো কান্না পাচ্ছে।

“সকালে আলো ফুটলেই কাজ শুরু হয় ” কাওসার বললো, ” তখন ছারে আসলে তোমার কথা বলবো। চিন্তা কইরোনা। এদের সবসময় লোক লাগে “।

ছারে বলতে সে স্যার এর কথা বুঝাচ্ছে, বুঝতে একটু সময় লাগলো আমার। আমার হাসি পেলোনা বরং শক্ত চটের উপর শুয়ে আমিও ছারের অপেক্ষা করতে লাগলাম যতক্ষন না চোখ বন্ধ হয়ে আসে।

চলবে।