নাম না জানা পাখি পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব

0
922

#নাম_না_জানা_পাখি
#নূর_নাফিসা_খুশি
#পর্ব_১৭ (এবং শেষ পর্ব)

মাহির খুশির বিয়ের আজ চার দিন চলে, খুশির পরিচিত সবাই বিয়ের কথা জানলেও মাহিরের পরিবার ছাড়া আর কেউ জানে না। সোসাল মিডিয়ার লোক ও এখনো খবর পায়নি, জানলে কতো মেয়ের দিল টুট কার বিখার বিখার হয়ে যাবে কে জানে। তবে মাহির চাইছে খুব জলদি সবাই কে জানাবে। বিয়ে তো আবার করতে পারবে না অলরেডি দুই বার করেছে,, তাই মাহির বড়ো করে রিসেপশন করবে। সব আত্মীয়দের ইনভাইট করবে।

বিয়ের আজ চার দিন এই চার দিনে মাহির খুশিকে অনেক জ্বালিয়েছে। খুশি তো মাহিরের ওপর রেগেই থাকে মাহিরের বাচ্চাদের মতো দুষ্টুমি দেখে। তবে খুশি অনেক খুশি তার কপালে এতো সুখ ছিলো ভাবতেও পারেনি। খুশি বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিলো তখন মাহির এসে খুশিকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে। খুশি বলে,,

“আবার এসেছো তুমি? তুমি না অনেক বড়ো সিঙ্গার তুমি যাও না কেনো কোনো এভেন্টে?”

” দূর বোকা মেয়ে কখনো শুনেছো নতুন বিয়ে করে কেউ কাজে যায়?” (মাহির আরও শক্ত করে জরিয়ে ধরে বলে)

খুশি মাহিরের দিকে ঘুরে মাহির কে শক্ত করে জরিয়ে ধরে বলে।

“আমাকে ছেরে যাবে না প্লিজ কখনো।”

“কথায় যাবো? তোমাকে ছেরে আমি নিজেই থাকতে পারবো না। ”

“ভালোবাসি।”

“আমিও ভালোবাসি পাগলী টা।”

দুই জনে চুপ করে আছে , মাহির বলে,

“আম্মুর কথা মনে পরে? যাবে আজ দেখতে?”

খুশি, খুশি হয়ে বলে।

“সত্যি তুমি নিয়ে যাবে আমাকে?”

“হুম বিকেলে রেডি থেকো। ”

“আচ্ছা।” (মাহিরের কপালে চুমু দিয়ে)

বিকেলে রেডি হয়ে খুশি মাহির বেরিয়ে পরে খুশির বাড়ির রাস্তায়। বিয়ে করে এসেছে তার পরে আর যাওয়া হয়নি ফোনে কথা বলেছে শুধু। খুশির খুব ইচ্ছে করছিলো আম্মুকে দেখতে যেতে কিন্তু বলতে পারেনি মাহিরকে। মাহির সেটা বুঝতে পেরে নিজেই বলে যাওয়ার কথা।

অনেক্ক্ষণ যাওয়ার পর দেখলো মাহির খুশির বাসার রাস্তার দিকে না গিয়ে মাহির আগে যেই ফ্লাটে থাকতো সেই ফ্লাটের রাস্তায় যাচ্ছে। খুশি অবাক হয়ে বলে,,

“এই দিকে কথায় যাচ্ছো এটা তো তোমার ফ্লাটের রাস্তা আমার বাসার না তো।”

“চুপ করে বসে থাকো।”

খুশি কিছু বলতে নেই তার আগে মাহির বলে,,

“বিশ্বাস আছে তো আমার ওপর?”

খুশি মাথা নারাই যার অর্থ হ্যাঁ। মাহির মুচকি হেসে বলে,

“তাহলে চুপ করে থাকো।”

খুশি আর কিছু বলে না চুপ করে থাকে। মাহির ফ্লাটের সামনে গাড়ি থাকিয়ে খুশিকে নিয়ে যায়। খুশি কিছুই বলছে না চুপ করে দেখছে মাহির কি করছে তা। মাহির দরজার কাছে এসে বেল চাপে, দুই তিন বার বেল বাজার পর একটা খুশির আম্মুর বয়সী মহিলা দরজা খুলে দেয়। খুশি মহিলাটার দিকে অবাক হয়ে তাকায় কে এই মহিলা খুশি চিনে না। আর এখানেই বা কি করছে এই মহিলা,, মহিলাটি খুশি মাহিরকে দেখে হেসে বলে উঠে।

“মাহির বাবা আর খুশি আসো আসো ভিতরে আসো। আফা ও আফা দেখে যাও কে এসেছে।”

খুশি অবাক হয়েই ভিতরে ঢুকে, খুশি বুঝলো না এই মহিলা তাকে চিনে কি করে আর কাকেই বা চিৎকার করে আফা আফা বলে ডাকে। তখনি একটা রুম থেকে খুশির আম্মু বের হয়ে আসে খুশি সেটা দেখে অবাকের শেষ সীমানাই চলে গেছে। দৌড়ে আম্মুর কাছে গিয়ে জরিয়ে ধরে কেদে দেয় খুশি। আম্মু মাথায় হাত বুলিয়ে বলে।

“পাগল মেয়ে কান্না করিস কেনো?”

“আম্মু তোমাকে অনেক মিস করেছি এই কইদিন।”

“জানি তো আমিও মিস করেছি অনেক এখন চুপ কর জামাইবাবা এসেছে নাস্তা পানির ব্যাবস্থা করতে হবে তো নাকি?”

খুশি কান্না থামিয়ে বলে।

“কিন্তু তুমি এখানে কি করে এটা তো মাহিরের ফ্লাট আর ইনি কে?”

“আমি নিয়ে এসেছি আম্মুকে এখানে।” (মাহির বলে)

“তুমি?”

“হ্যাঁ আমি! আম্মু ওতো দূরে একা কেনো থাকবে? তাই আমি এখানে নিয়ে এসেছি আমাদের বাসা থেকে বেশি দূরে না। আর এই হচ্ছে হেনা আন্টি আম্মু একা একা বোরিং ফিল যাতে না করে তাই তার সঙ্গী বলতে পারো।”

“তুমি এসব কখন করলে আমাকে জানাও নি তো।”

“সারপ্রাইজ!” (মাহির হেসে বলে)

“অনেক কথা হয়েছে এবার আসো নাস্তা করো সব।” (হেনা আন্টি বলে)

মাহির খুশি নাস্তা করে নেয়। মাহির তার নিজের রুমে যায় যে রুম টাই থাকতো আগে। খুশি তার আম্মু আর হেনা আন্টির সঙ্গে গল্প করছে ডিনার করে বাসায় যাবে তারা আজ। অনেক গল্প করার পর আম্মু আন্টি রান্না করতে চলে যায় খুশি এই ফাকে মাহিরের কাছে। মাহির বারান্দায় দাঁড়িয়ে ফোনে কথা বলছে। খুশি গিয়ে মাহিরকে জড়িয়ে ধরে শক্ত করে।

“আপনাকে পরে ফোন করছি আমি।”

মাহির এটা বলে খুশির দিকে ফিরে বলে।

“বাহ আজ পাখি দেখি নিজেই ধরা দিয়েছে আমার কাছে।”

“তুমি এতো ভালো কেনো আমার আম্মুর কথা ভেবে তুমি নিজের ফ্লাটে নিয়ে এলে। ”

“ওটা আমার আম্মু না বুঝি?”

“কে বললো আম্মু না, এখনকার ছেলে নিজের আম্মুর জন্য এতো করে না তুমি যা করেছো জামাই হয়ে।”

“আমার দুই আম্মু বুঝেছো, দুই আম্মুই আমার কাছে অনেক দামি।”

মাহির খুশি দুইজন দুইজনকে জড়িয়ে ধরে আছে তখন কেউ বলে।

“ম্যাম তুমি মাহির আঙ্কেল কে জড়িয়ে ধরে আছো কেনো আর আমাকে আর পড়াতে আসো না কেনো?”

রাহুলের কথায় খুশি মাহির দুইজন দুইজনকে ছেরে দেয় খুশি হেসে বলে।

“আমার বিয়ে হয়ে গেছে তোমার মাহির আঙ্কেলের সঙ্গে। তাই আর পড়াতে আসতে পারবো না সেটা তো তোমার আম্মু কে বলেছি। আর তুমি কেমন আছো এখন? তোমার জ্বর ছিলো তাই আমার বিয়ে তে আসতে পারোনি। ”

“ভালো আছি এখন। এই ফ্লাটে এখন একটা আন্টি আছে মুন আন্টি ওই আন্টি অনেক ভালো আমাকে চকলেট দেয়।”

“ওটা আমার আম্মু।” (খুশি হেসে বলে)

তিন জনে গল্প করে তার পরে খাওয়া দাওয়া করে নেয় সবাই খুশি মাহিরের যাওয়ার সময় হয়ে গেছে এবার। মাহির খুশির আম্মু কাছে এসে বলে।

” ডিসেম্বর ৩১ তারিখ আমাদের বাসায় আসবেন আপনারা আমি গাড়ি পাঠিয়ে দিবো। খুশির আমার রিসেপশন।”

খুশি আরেক দফা অবাক হয় এটা খুশি জানতোই না। খুশি মাহির বিদায় দিয়ে বেরিয়ে যায়। খুশি মাহিরকে বলে,,

“আজ কি সারপ্রাইজ ডে নাকি?”

“কেনো” (হেসে বলে)

“আমি আজ সারপ্রাইজ পেয়েই যাচ্ছি। ”

মাহির হেসে দেয় জোরে।

।।

দেখতে দেখতে আরও কইদিন কেটে যায়,, রিসেপশনের দিন চলে আসে। এর মধ্যে সবাইকে ইনভাইট দেওয়া হয়ে গেছে সবাই জেনে গেছে নুরে শাহরিয়ার মাহির বিয়ে করেছে ৩১ডিসেম্বর রিসেপশন তার। জারা এটা শুনে পাগল প্রায় কিন্তু কিছুই করতে পারেনি। ইনভাইট পেয়ে জারাও এসেছে রিসেপশনে। সব মেহেমান মিডিয়ায় লোক চলে এসেছে,, সবাই মাহিরের বউ দেখার জন্য ব্যাকুল হয়ে আছে। কোন মেয়ে সেলেব্রিটি মাহিরের মন কাড়লো সেটা দেখার জন্য।

খুশি রেডি হয়ে রুমে বসে আছে তখনি কেউ অনেক জরে দরজা খুলে রুমে প্রবেশ করে। খুশি চমকে সেদিকে তাকায় দেখে জারা দাঁড়িয়ে খুব রেগে। জারা এসে খুশিকে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দেয়। আর বলে,,

“আমি জানতাম তুই আমার কাছ থেকে মাহিরকে কেরে নিবিই নিবি। কেনো রে ছোট লোকের মেয়ে হয়ে লাখ টাকার এতো সপ্ন কেনো তোর? তুই জানতিস না আমি মাহির কে ভালোবাসি তুই তাও মাহিরকে বিয়ে করলি? ছোট বেলায় মরলি না কেনো তুই নদীতে ঢুবে সেদিন মরে গেলেই সব শেষ হয়ে যেতো। ”

খুশি অবাক হয়ে বলে।

“তুমি কি করে জানলে আমি ছোট বেলায় নদীতে পরেছিলাম?”

জারা জোরে হেসে উঠে বলে।

“এখনো চিনতে পারলি না আমাকে? আমি তো দেখেই তোকে চিনে ফেলেছিলাম প্রথম দিন। আর তুই পারলি না আমাকে চিনতে। ”

“কে তুমি?” (খুশি উঠে দাঁড়িয়ে জারার সামনে এসে)

“আমি জান্নাত, জান্নাত আমি ছোট বেলা থেকেই তোর সঙ্গে থেকেছি ঘুরেছি সেই জান্নাত।”

মাহির অবাক হয়ে বলে।

“জান্নাত তুই?”

“হ্যাঁ আমি, যেদিন মাহিরকে প্রথম দেখি সেদিনই আমার ভালো লাগে ওকে কিন্তু, মাহির আমাকে পাত্তাই দেয়নি তোর সঙ্গে কথা বলেছিল বেশি। যতদিন গ্রামে ছিলো তোর সঙ্গে ঘুরে বেরিয়েছে আমি কতো মাহিরের দাদুর বাড়ি গেছি আসে পাসে থেকেছি তবুও মাহির তাকিয়ে দেখেনি আমাকে। রাগে তোকে মেরে ফেলতে ইচ্ছে করছিলো আমার। সেদিন নদীর ধারে তুই মাহিরের জন্য ওয়েট করছিলি আমি সেদিন তোকে নদীতে ধাক্কা দিয়েছিলাম। নদীতে জোয়ার ছিলো ভেবেছিলাম মরে যাবি তুই কিন্তু না তোর কোই মাছের জান মরলি না তুই। মাহির এসে নদী থেকে তুল্লো তোকে,, যখন দেখলাম মাহির তোকে শ্বাস দিচ্ছে তখনি গ্রামের কিছু লোক ডেকে মাহিরের ওপর অপবাদ দিয়ে দিলাম যে মাহির তোকে ধর্ষণ করার চেষ্টা করেছিলো বোকা গ্রামবাসি মেনেও নিলো। মাহিরকে অপমান করে গ্রাম থেকে তারিয়ে দিলো কিছুদিন পরে আমরাও চলে আসি শহরে মাহিরের সঙ্গে জগাজগ করার চেষ্টা করি। ভাগ্যবশত মাহিরের আব্বু আর আমার আব্বু দুই ফ্রেন্ড তাই মাহিরের ক্লোজ হতে সময় লাগে নি জান্নাত থেকে জারা হয়ে উঠি। কিন্তু মাহির কখনো আমাকে অন্য চোখে দেখতোই না। শেষ মেশ তোকে বিয়ে করেই নিলো মাহির।”

এক নাগারে সব কথা বলে থামে জারা। খুশি বলে।

“তোর কপালে মাহির নেই তাই পাসনি।”

“আমার কপালে যদি মাহির না থাকে তো আমি মাহিরের কপালেও তোকে থাকতে দিবো না। ”

খুশি কিছু বলবে তার আগেই জারা একটা চাকু বের করে খুশি সেটা দেখে ঘাবড়ে যায়।

“জান্নাত এমন করিস না আমার কিছু হলে মাহির তোকে ছেরে দিবে না।”

জান্নাত কিছু না বলে খুশির পেটে ছুড়ি দিতে যাবে তখনি পিছন থেকে কেউ একজন ধরে ফেলে জারাকে। থাপ্পর দিয়ে দূরে সরিয়ে দেয়। খুশি তাকিয়ে দেখে মাহির দাঁড়িয়ে মাহির কে দেখে খুশি জরিয়ে ধরে। মাহির খুশির কপালে চুমু দিয়ে জারার কাছে যায় জারা কে টেনে তুলে আরও একটা থাপ্পর দেয়। আর বলে,,

“আমি আগেই তোকে সন্দেহ করেছিলাম। পরে তোর পুরো পরিচয় বের করি তখন জানতে পারি তুই সেই জান্নাত কিন্তু এতো কিছু তুই করেছিস এটা ভাবিনি। আজ তোকে রেগে আমার রুমের দিকে আসতে দেখেই বুঝেছি কিছু একটা করবি তুই। এখন জেলের ভাত খাওয়া থেকে কেউ আটকাতে পারবে না তোকে। ”

“মাহির আমি তোমাকে ভালবাসি মাহির।” (জারা)

“আপনারা ভিতরে আসুন।”

মাহিরের কথায় দুটো মহিলা আর দুটো লোক ভিতরে আসে। তারা পুলিশ তবে পুলিশের ড্রেস পরে আসেনি মাহির নরম্যান ড্রেসেই আসতে বলেছে। বাকি মেহেমানরা জানতে যাতে না পারে তাই।

“নিয়ে যান একে। ও ওর ভুল নিজে মুখে শিকার করেছে সেটা আপনারাও শুনেছেন। বাকি প্রুভ আমি পরে পাঠিয়ে দিবো। পিছনের দরজা দিয়ে যাবেন কেউ যাতে জানতে না পারে।” (মাহির)

পুলিশ গুলো জারা কে নিয়ে চলে যায়, জারা অনেক বার মাহিরকে ডেকেছে কিন্তু মাহির শুনেই নি। খুশি মাহিরের কাছে আসে,,

“সব ঠিক এখন, নতুন বছরের সঙ্গে নতুন জীবন শুরু হবে আমাদের। ”

মাহির খুশি সিড়ি দিয়ে হাত ধরে নেমে নিচে যায়, সবাই হা করে তাদের দিকে তাকিয়ে আছে দুই জনকে এতো বেশি সুন্দর লাগছে কেউ চোখ সরাতেই পারছে না। রোদ অধরার পরিবার ও এসেছে, অধরা রোদের কথা বলে দিয়েছে বাসায় রাজি ও হয়ে গেছে দুই পরিবার কিছু দিনের মধ্যে তাদের ও বিয়ে হয়ে যাবে।

খুশি ব্লাক শাড়ি পরেছে মাহির ব্লাক পাঞ্জাবি দুই জনকে অসাধারণ লাগছে। মাহির খুশিকে নিয়ে মিডিয়া জার্নালিস্ট দের কাছে নিয়ে যায়। একটা মেয়ে প্রশ্ন করে।

“স্যার আপনাদের পরিচয় কি করে হয়েছে? আর কাউকে না জানিয়ে বিয়ে করে নিলেন যে? আপনারা কি একে অপরের আগে থেকে লাভ করতেন? দেখা হলো কি করে আপনাদের?

এতো প্রশ্ন এক সঙ্গে শুনে খুশির মাথা ঘুরায় কিন্তু মাহিরের এসবে অভ্যেস আছে, তাই মাহির উত্তর দেয়।

” ছোট বেলা থেকেই আমরা একে অপরের চিনি অনেক ভালো ফ্রেন্ড ছিলাম এক সময় ফ্রেন্ড এর রুপ ভালবাসায় পরিনিত হয়। আর বিয়ে আমরা পারিবারিক ভাবেই করেছি, তাই রিসেপশন বড়ো করে করলাম।”

“স্যার ম্যামের নাম কি? ম্যাম কি করেন?”

“হৃিদিতা খুশি এখন মিসেস মাহির। আর ও এখনো পড়াশোনা করছে। ওকে পার্টি এনজয় করুন। ”

এই বলে খুশিকে নিয়ে চলে যায় মাহির। সবার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয় খুশিকে মাহির। রাত ১১ টা ৫৫ তে সবাই ছাদে চলে আসে। আজ খুশি মাহির রিসেপশন আবার নতুন বছরের আগমন। নতুন বছর আসার কয়েক সেকেন্ড আগে সবাই এক সঙ্গে বলে।

১০,৯,৮,৭,৬,৫,৪,৩,২,১ হ্যাপি নিউ ইয়ার!!!!!!!!!

সবাই অনেক খুশি,, নাচ গান দিয়ে ভরে উঠে রিসেপশন অনুষ্ঠান। খুশি মাহির, রোদ অধরা একটা সঙ্গে কাপল ডান্স করে। অনেক মজা করে শেষ হয় অনুষ্ঠান। খাওয়া দাওয়া করে সবাই চলে যায়। থেকে যায় খুশির আম্মু, রোদ অধরা। খুশিকে আজ আবার বউ সাজিয়েছে অধরা রুমে বসে আছে খুশি।

রোদ অধরা কে আবার ছাদে নিয়ে আসে। রোদ অধরাকে জড়িয়ে ধরে বলে।

“হ্যাপি নিউ ইয়ার অ্যান্ড আই লাভ ইউ। ”

” আই লাভ ইউ টু। ”

“ধন্যবাদ আমার জীবনে আশার জন্য অধু।”

“ঝগড়া দিয়ে শুরু হয়ে কি করে এই ঝগড়ুটে কে ভালবেসে ফেলেছি নিজেই বুঝিনি।” (অধরা)

“কি আমি ঝগড়ুটে তাহলে তুমি ঝগড়ুটি মাক্স প্রো।”

“দেখো আবার শুরু করলে।”

অধরা রোদ দুই জনে হেসে দেয় নিজেদের কান্ড দেখে।

মাহির এসে দেখে খুশি বেডে বউ সেজে বসে আছে ঘোমটা দিয়ে। মাহির খুশির কাছে এসে ঘোমটা তুলতে যাবে তার আগেই খুশি ঘোমটা সরিয়ে দেয়,, মাহির খুশিকে দেখে টাস্কি খায় পুরাই। ওপর থেকে খুশিকে বউ মনে হলেও ভিতরে যে খুশি জিন্স পান্ট আর টিশার্ট পরে আছে ভাবতেও পারেনি মাহির। মাহির বলে।।

“আল্লাহ গো কি রুপ এটা আমি ভুল করে অন্য রুমে চলে এলাম নাকি। ”

“ওই বেটা তুই নিজের রুমেই এসছিস আমি তোর বউ।” (মাহিরের কলার ধরে বলে খুশি)

“আম্মু লক্ষি বউ দেখি ডাইনি হয়ে গেছে বাচাও।”

“নিচে অধুকে কি বলছিলে? আমি আনরমান্টিক? আদর করতে জানি না? দেখবে রোমান্টিক কাকে বলে কই প্রকার ও কি কি? দেখবে বলো?”

নিচে মাহির খুশিকে রাগানোর জন্য বলেছি খুশি যে সেটা সিয়াসলি নিবে ভাবেওনি। মাহির কিছু বলতে নিবে তার আগেই খুশি মাহিরকে কিস করে দেয়।( ঘুমাও বাচ্চারা বড়োদের এসব জানতে হয় না।🙈টাটা)

——————-সমপ্ত——————–