#না_চাইলেও_তুমি_আমার
পর্বঃ ১৮
জাহান আরা
২ মাস হয়ে গেছে চন্দ্র হোস্টেলে,নিষাদ প্রথম ১ মাস ক্রমাগত কল দিয়েছে,অনেকভাবে যোগাযোগ করতে চেয়েছে চন্দ্র এড়িয়ে গেছে।
ভার্সিটি,হোস্টেল সব জায়গায় নিষাদ হানা দিয়েছে কিন্তু চন্দ্রকে কিছুই বুঝাতে পারে নি,সেই সুযোগ দেয় নি চন্দ্র।
পালিয়ে বেড়িয়েছে সবসময়।
ফজরের নামাজের পর নিষাদ রকিং চেয়ারে বসে ভাবছে আর দোল খাচ্ছে।দোল খেতে খেতে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে কি করবে,আজকে একটা বিশেষ দিন,আজকের দিনেই সব করবে।মারিয়া কে কল দেয় নিষাদ।
মারিয়া নিষাদের কল পেয়ে অবাক হয়ে গেলো,খুশিমনে কল ধরে জিজ্ঞেস করে,”এতোদিন পরে মনে পড়লো আমাকে?”
“তোমাকে আমার সবসময়ই মনে পড়ে মারিয়া,এতো বেশী-ই মনে পড়ে যে মাঝেমাঝে নিঃশ্বাস নিতেই ভুলে যায় কিন্তু তোমাকে না।”
নিষাদের কথা কেমন ব্যঙ্গাত্মক লাগছিলো,তবুও মারিয়া কিছু মনে করে না।নিষাদ কল দিয়েছে এটাই অনেক বেশি।
“তো কি মনে করে কল দিয়েছো?”
“আমি তোমাকে এতোদিন ভুল বুঝেছি মারিয়া,আসলে তোমার ভালোবাসা আমি বুঝি নি,আমি তোমার কাছে ফিরতে চাই আবার।”
মুহূর্তের জন্য মারিয়া হতভম্ব হয়ে গেলো,তারপর আনন্দের আতিশয্যে কেঁদে দিলো,এতো আনন্দ যেনো আর কখনো পায় নি জীবনে।
কান্নাভেজা কন্ঠে বলে,”তুমি কোথায়,আমি এখনই আসছি দেখা করতে তোমার সাথে,শাহেদ আমাকে ডিভোর্স দিয়ে দিয়েছে,আমার কোনো বাঁধা নেই এখন আর।”
“দুপুর ২টায় ধানসিঁড়ি রেস্তোরাঁয় চলে এসো,অবশ্যই তোমার বান্ধবী সবাই কে নিয়ে আসবে,আমার বন্ধুরা সবাই আসবে,আজকের দিনটি আমারা বিশেষ ভাবে সেলিব্রেট করবো।আর হ্যাঁ,চন্দ্রকে আনতে ভুলো না।”
চন্দ্রর কথা শুনে মারিয়ার ভ্রু কুঞ্চিত হয়ে যায়,তারপর সন্দিহান গলায় জিজ্ঞেস করে,”চন্দ্র কে কেনো?”
“তোমার বান্ধবীর ভাব বেশী,সে ভেবেছিলো তার প্রেমে আমি দিওয়ানা হয়ে আছি।তাকে একটা উপযুক্ত লজ্জা দিবো তাই,ওকে না আনলে কিন্তু আমি খুব রাগ করবো। ”
নিষাদের কথা শুনে মারিয়া খুশি হয়ে যায়,নিষাদ কে কথা দেয় চন্দ্র কে যেভাবেই হোক আনবেই।
ফোন রেখে নিষাদ আলমারি খোলে,লাগেজে কিছু শার্ট-প্যান্ট,টুকটাক আরো কিছু জিনিস নিয়ে লাগেজ বন্ধ করে,নিশান অফিসে যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছে,রাত্রি নাশতা বানাচ্ছে কিচেনে।
নিশান কে গিয়ে কানে ফিসফিসিয়ে কিছু বলে,শুনে নিশানের মুখে হাসি ফুটে উঠে।২ভাই কোলাকুলি করে।
হাসনাত সাহেব আর মনোয়ারা বেগম বাগানে বসে চা খাচ্ছেন,বাহিরে কুয়াশা পড়ছে,দুজন মিলে কুয়াশা বিলাস করছেন।মনোয়ারা বেগমের মোটেও ইচ্ছে হচ্ছিলো না এই কুয়াশাচ্ছন্ন সকালে বাহিরে বের হওয়ার।কিন্তু হাসনাত সাহেবের জন্য পারলেন না,তার এক কথা চাঁদনি রাতে যদি বনে গিয়ে জোছনা বিলাস করা যায়,বৃষ্টির দিনে যদি ভিজে বৃষ্টি বিলাস করা যায় তবে অবশ্যই শীতের দিনে কুয়াশায় বসে কুয়াশা বিলাস করতে হবে।অনিচ্ছায় মনোয়ারা বেগম বের হয় বারান্দায়।
নিষাদ বাবা মা’কে সালাম করে বলে,”কয়েকদিনের জন্য অফিসের কাজে ঢাকার বাহিরে যাবো বাবা,প্রকল্প বাস্তবায়ন করা পর্যন্ত আমাকে সেখানেই থাকতে হবে,দোয়া করো যেনো সফল হয়ে ফিরতে পারি।”
মনোয়ারা বেগম ফি আমানিল্লাহ বলে নিষাদের কপালে চুমু খেলেন,নিষাদ কিচেনে গিয়ে রাত্রি কে বলে এলো,”ভাবী জীবনের সবচেয়ে বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছি,দোয়া করো।”
রাত্রি জানে নিষাদ অনেক বড় পদে চাকরি করে তাই কোনো কিছু না ভেবেই বলে,”ইনশাআল্লাহ আমার দেবর সফল হয়েই ফিরবে।”
নিষাদ হেসে বের হয়ে যায়,ড্রাইভ করতে করতে বন্ধুদের সবাইকে কল দেয়,একে একে সবাই কে সব বলে।
নিষাদ অফিসে চলে যায় তারপর।
চন্দ্র ক্লাসে যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছে,চোখে কাজল লাগাচ্ছে ঠিক সেসময় মারিয়া হোস্টেলে আসে,এসেই চন্দ্রকে জড়িয়ে ধরে ঘুরতে থাকে।
কি করছিস,ছাড়,পড়ে যাবো বলে চন্দ্র চিৎকার করতে থাকে।পাশের রুম থেকে লিপি,সিমি ও বের হয়ে আসে চন্দ্রর চিৎকার শুনে।বিয়ের পর মারিয়া পড়ালেখা বাদ দিয়ে দিয়েছে,এখন চন্দ্রর সাথে ইতু থাকে,লিপি,সিমি এক রুমে থাকে।মারিয়াকে এতো খুশি দেখে সিমি কটাক্ষ করে বলে,”কিরে,এতো খুশি ক্যান,নতুন মাল পটাইছস না-কি আবার?”
মারিয়ার মুখের হাসি আরো বিস্তৃত হয় সিমির কথা শুনে।তারপর বলে,”না রে কোনো নতুন মাল না,আজকে এমনিতেই ভীষণ ভালো লাগছে,ভাবলাম তোদের সাথে কিছুটা সময় কাটিয়ে যাই আর সেই সাথে তোদের ট্রিট ও দিবো।”
“কিসের ট্রিট হঠাৎ?”চন্দ্র সন্দেহ নিয়ে জিজ্ঞেস করে।
চন্দ্রর মুখে সন্দেহের চাপ দেখে মারিয়া হেসে উঠে বলে,” আরে ভয় পাস না,চল আমার সাথে,তারপর দেখবি।”
“না আমি যাবো না,আমার ক্লাস আছে।”
চন্দ্র নিষেধ করে দেয়,মারিয়া কে দেখার পর থেকেই চন্দ্রর বুক কেমন করছে,বারবার নিষাদের কথা মনে পড়ছে আজ।তাই মারিয়ার কাছ থেকে পালিয়ে বেড়াতে চাচ্ছে।মারিয়া নাছোড়বান্দার মতো বলে,”আজকে আমার জীবনে ভীষণ আনন্দের দিন,আর সেই আনন্দে যদি তোরা সামিল না থাকিস তবে কেমনে হয় বল?”
“আগে বল কোথায় ট্রিট দিবি,তারপর ভেবে দেখবো যাবো কি-না!”
সিমির কথা শুনে মারিয়া হেসে দেয়,তারপর বলে,”ধানসিঁড়ি তে যাবো চল।”
সিমি লাফিয়ে উঠে বলে,”আমি এক্ষনি রেডি হয়ে আসছি,আমি রাজি”
“তোরা যা,আমি যাবো না,আমার ইম্পর্ট্যান্ট ক্লাস আছে”
“কিসের ইম্পর্ট্যান্ট ক্লাস রে চন্দ্র,ক্লাস কি তোর একা-র না-কি,আজকে মোটেও ক্লাস হবে না,চল না আজ সবাই মিলে একটু বের হই,তুই ইদানিং হোস্টেলে আসার পর থেকে একবারে বদলে গেছিস চন্দ্র।”
চন্দ্র ইতুর দিকে তাকায়।তারপর চোখ নামিয়ে নেয়,আসলেই সে অনেক বদলে গেছে,যেদিন ক্লাস না থাকে সেদিন সারাদিন বিছানায় শুয়ে কাটায়,ক্যাম্পাসে গেলে লাইব্রেরীতে বসে থাকে ক্লাস মিস গেলে,সবাই কে এড়িয়ে চলে।নিজের পৃথিবী কে আত্মকেন্দ্রিক করে নিয়েছে।
মাঝেমাঝে ভীষণ কষ্ট হয়,কষ্ট হলেই মায়ের ছবি বুকে নিয়ে শুয়ে থাকে,কান্না আসতে দেয় না।
চন্দ্র থ মেরে বসে থাকে,সিমি,ইতু,লিপি রেডি হয়ে যায়।তারপর চারজন মিলে টেনে চন্দ্রকে বসা থেকে দাঁড় করায়।সিমি আলমারি থেকে চন্দ্রর একটা ড্রেস বের করে বলে,”তুই কি ওয়াশরুমে গিয়ে পরবি নাকি আমরাই তোর সব খুলে পরিয়ে দিবো?”
সিমির কথা শুনে সবাই হেসে উঠে,চন্দ্র দীর্ঘশ্বাস ফেলে ওয়াশরুমে যায়।
কিছুক্ষণ পর বের হয়ে আসে।সবাই বের হয়ে যায় হোস্টেল থেকে।পথে দাঁড়িয়ে ফুসকা খায়,ঝালমুড়ি খায়,কিছুক্ষণ ধানমন্ডি লেকে সময় কাটায়।চারপাশে অনেক মানুষ,একজোড়া প্রেমিক প্রেমিকা দেখে চন্দ্রর কেমন কান্না পেয়ে যায়,ছেলেটার হাতটা জড়িয়ে ধরে মেয়েটা হাটছে কেমন নিশ্চিন্তে।চন্দ্রর ভীষণ কষ্ট হয় দেখে,তার ও তো ছিলো এরকম একজন,কোথায় সে আজ!
খুব দ্রুত সময় কেটে যায় হাসি আনন্দ দুষ্টুমি তে যেনো,সবাই হাসোজ্জল শুধু চন্দ্র ছাড়া।চন্দ্র সবার দিকে তাকায়,এদের কারো কোনো দুঃখ নেই,কষ্ট নেই,অথচ তার কেনো এতো দুঃখ?
হিংসা হয় না বরং নিজের প্রতি করুণা হয় চন্দ্রর।দেড়টা বাজতেই সবাই উঠে,রেস্টুরেন্টের দিকে পা বাড়ায়।
রেস্টুরেন্টে ঢুকতেই একটা বড় রকমের ধাক্কা খায় সবাই,পুরো রেষ্টুরেন্ট খালি কোনো মানুষ নেই,ফুল,মোমবাতি দিয়ে সাজানো।মেঝেতে ফুলের গালিচা বিছানো,ফুলের মাতাল করা ঘ্রাণে চন্দ্রর কেমন যেনো আনন্দ আনন্দ লাগে,হঠাৎ করেই চন্দ্রর খেয়াল হয় গোলাপের সাথে জারবেরা ফুল ও আছে।উৎকন্ঠায় কেঁপে উঠে চন্দ্র,কে সাজিয়েছে এসব?
সামনে একটা টেবিলে বিশাল একটা কেক,চন্দ্রর আর পা চলে না।চন্দ্র যা বুঝার বুঝে গেছে।ধপ করে বসে পড়ে একটা চেয়ারে,কোথা থেকে যেনো একদল বাচ্চা ছুটে আসে,সবাই চন্দ্রর গালে একটা করে চুমু খায় আর বলে,”হ্যাপি বার্থডে আন্টি”
চন্দ্রর হঠাৎ করে মনে পড়ে আজকে তার জন্মদিন।
কেকের উপর বড় করে লিখা,”শুভ জন্মদিন চন্দ্রাবতী”
মারিয়ার মনের সব আনন্দ হঠাৎ করেই কর্পূরের মতো উবে যায়।আজ তো চন্দ্রর জন্মদিন!
তারমানে নিষাদ কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলেছে!
নিষাদ,পলাশ,শুভ,লিমন,ময়ুখ একে একে ভিতরে প্রবেশ করে ফুলের তোড়া হাতে নিয়ে,নিষাদকে দেখে চন্দ্র বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে যায়।সবাই চন্দ্রকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানায় একে একে,নিষাদ আসে সবার শেষে।কোনোকিছু না বলে সবার সামনেই চন্দ্রকে জড়িয়ে ধরে,তারপর চুমু খায়।
মারিয়া,লিপি,সিমি,ইতু হা করে আছে এসব দেখে,কিছুই বুঝতে পারছে না কেউ।
চন্দ্র নিষাদের এরকম হঠাৎ করে চুমু খাওয়াতে হতবাক হয়ে যায়,নিষাদ চন্দ্রকে টেবিলের কাছে নিয়ে যায়।চন্দ্রর নিজেকে রোবটের মতো লাগছে,যেনো আবেগ অনুভূতিহীন সে।
টেবিলের সামনে নিয়ে নিষাদ চন্দ্রর কোমর জড়িয়ে ধরে,ময়ুখ মোমবাতি জ্বালিয়ে দেয়।কিছু না বলে চন্দ্র কেক কাটে,মুহূর্তেই চারদিক থেকে অসংখ্য মানুষের হাততালি আর শুভ জন্মদিন বলে শুভেচ্ছা শোনা যায়।
চন্দ্র চমকে উঠে,রেষ্টুরেন্টের চারপাশে পর্দার নিচে দাঁড়িয়ে থাকা সবাই এতোক্ষণে বের হয়ে এসেছে।
আনন্দে চন্দ্রর কান্না এসে যায়।নিষাদ না মনে করালে চন্দ্র জানতোও না আজকে তার জন্মদিন।প্রতিবছর রাত্রি একটা মেসেজ দিয়ে উইশ করে এবার রাত্রির ও হয়তো মনে নেই সে কথা।
একপাশে মারিয়া দাঁড়িয়ে আছে বোকার মতো,নিষাদের বুদ্ধি সবসময়ই বেশি মারিয়া জানতো কিন্তু তাই বলে তাকে এভাবে বোকা বানিয়ে নিজের স্বার্থসিদ্ধি করে নিবে নিষাদ মারিয়ার ভাবনাতেও ছিলো না।
সবাই মিলে কেক খায়,তারপর খেতে বসে।নিশান ও আসে সেসময়,হাতে র্যাপিং পেপারে মোড়ানো একটা বক্স,এসেই চন্দ্রকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্স হাতে দিয়ে নিষাদ কে বলে,”চন্দ্রর হোস্টেল থেকে সব হিসেবনিকেশ শেষ করে এসেছি,চন্দ্রর জিনিসপত্র ফ্ল্যাটে পাঠিয়ে দিয়েছি,তোরা যেতে যেতে ফ্ল্যাট গুছানো হয়ে যাবে।আমি যাচ্ছি,ডিউটি ফেলে এসেছি।”
চন্দ্র চমকে তাকায় নিষাদের দিকে,নিষাদ মারিয়ার দিকে তাকায়।
তারপর মুচকি হেসে বলে,”মারিয়া,থুতু হচ্ছে এমন একটা জিনিস যেটা একবার মুখ থেকে মাটিতে ফেলার পর রিটার্ন নেওয়া যায় না মুখে।তুমি হচ্ছো আমার কাছে সেই জিনিস।তুমি আমেরিকার পাত্র পেয়ে আমাকে ছেড়ে দিয়েছো,তারপর সে যখন দুই লাথি মেরে ছেড়ে দিয়েছে তখন আবার আমার কাছে ফিরার জন্য ল্যাজ নাড়াচ্ছো,তুমি তো দুদিন পরে আমার চাইতে ভালো কাউকে পেলে তার কাছে চলে যাবে।
খাল কেটে কুমির আনা বুঝো?তোমাকে কাছে ফিরিয়ে নেওয়া মানে খাল কেটে কুমির আনা,আমার বউ তো মাথামোটা প্রাণী,তোমার ইমোশনাল ডায়ালগে কাত হয়ে মহান হতে চেয়েছিলো আমাকে ছেড়ে গিয়ে,অথচ ও বুঝলো না,তুমি আমার স্বার্থপর প্রেমিকা ছিলে,তাও সেটা অতীত আমার,যেই অতীত আমি ভুলি নি,ভুলবো না কখনো,আজীবন সেই অতীত থেকে শিক্ষা নিবো। ও আমার স্ত্রী।আমি প্রমিকার জন্য আমার স্ত্রী কে ছেড়ে যাবো?
আমাকে কি তোমার গাঁধা বলে মনে হয় যে যখন যেভাবে ইচ্ছে সেভাবে চালাবে?না-কি ভেবেছো আমি পুতুল,ইচ্ছে মতো নাচাবে?
চন্দ্র কে-ই আমি বিয়ে করেছি,যে হাত একবার ধরেছি,সেই হাত মৃত্যু ছাড়া কেউ
ছাড়াতে পারবে না।আশা করছি বুঝতে পেরেছো আমার কাছে তোমার জায়গা কতো নিচে?
তোমার জন্যই চন্দ্র আমার থেকে দূরে সরে গিয়েছে,তাই তোমাকে দিয়েই আমি আবার চন্দ্র কে ফিরিয়ে এনেছি।আমি আমার বউকে নিয়ে ভালো আছি”
তারপর চন্দ্রর দিকে তাকিয়ে বলে,”আজ থেকে আর তুমি হোস্টেলে থাকবে না,অফিস থেকে দেওয়া ফ্ল্যাট আছে আমার,সেখানে থাকবো আমরা।তোমার সবকিছু ফ্ল্যাটে নিয়ে যাওয়া হয়েছে,তোমার সাথে বাকী হিসেব আমার রাতে হবে,জাস্ট ওয়েট এন্ড সি।”
নিষাদের সবগুলো কথা তীরের মতো ঢুকে মারিয়ার কলিজা এফোড় ওফোড় করে দিলো।সবার সামনে নিষাদ তাকে এভাবে অপমান করবে মারিয়ার ভাবনাতেও ছিলো না কখনো।
চন্দ্রর এতোদিনের শুকনো মরুভূমি হৃদয়ে যেনো বৃষ্টি এলো,নিষাদ শুধু তারই,এটা ভেবেই চন্দ্র আনন্দে আত্মহারা।
খুশিতে খাবার খেতে পারছে না চন্দ্র,নিষাদ নিজের প্লেট হাতে নিয়ে এগিয়ে এলো,তারপর চন্দ্রর মুখে খাবার তুলে খাইয়ে দিতে লাগলো।
চন্দ্র কাঁদছে,নিষাদ চোখ মুছে দিচ্ছে বাম হাতে,চন্দ্রর ভিতরে জমিয়ে রাখা সব কষ্ট,সব জ্বালা কান্না হয়ে বের হয়ে যাওয়ার সুযোগ দিচ্ছে।চোখের কাজল লেপ্টে গিয়ে একাকার হয়ে গেছে,খুব যত্ন করে নিষাদ চোখে লেপ্টে যাওয়া কাজল মুছে দেয় চন্দ্রর।
এই যে গভীর মমতা নিয়ে চোখের লেপ্টে যাওয়া কাজল মুছে দেওয়া,ভালোবেসে এটুকুই ক’জনার ভাগ্যে জুটে!
চলবে…..???