নীরব সাক্ষী পর্ব-১৯+২০

0
525

#নীরব_সাক্ষী
#ফারহানা_ছবি
#পর্ব-১৯
.
.
.
অন্যদিকে প্রিয়ন্তি ফ্লোরে জ্ঞান হারিয়ে পরে আছে ৷ কিছু আগে রিদ জানোয়ারের মতো মেরেছে প্রিয়ন্তিকে ৷ প্রিয়ন্তির অবচেন মুখটার দিকে একরাশ ঘৃনা নিয়ে তাকিয়ে আছে রিদ ৷ এই মুখটাকে এক সময় ভিষন ভালোবাসতো রিদ আর আজ এই মুখটাকে দেখলে রিদের ঘৃনা লাগছে ৷ আজ বুজতে পারছে মুন কে কষ্ট দিয়ে কতোটা ভূল করেছে রিদ ৷ রাগে ঘৃনায় পানির জগ নিয়ে পুরো পানিটা প্রিয়ন্তির মুখে ছুড়ে মারে প্রিয়ন্তি চোখ মেলে টিপ টিপ করে তাকিয়ে রিদ কে দেখছে ৷ অসম্ভব রেগে আছে রিদ চোখ দুটো রক্তজবার মতো লাল হয়ে আছে ৷ প্রিয়ন্তি উঠে বসতে রিদ প্রিয়ন্তির চুলের মুঠি ধরে দার করিয়ে বলে উঠলো “” শুধু মাত্র তোর জন্য আমি সব হারালাম এখন অন্য ছেলেদের সাথে নষ্টামি করিস চরিত্রহীনা মেয়ে…””

রিদের মুখে চরিত্র নিয়ে কথা বলতে প্রিয়ন্তি যেন তৈলে বেগুনে জ্বলে উঠলো শরীলের সব শক্তি দিয়ে রিদ কে ধাক্কা মারে প্রিয়ন্তি ৷ রিদ আচমকা ধাক্কার জন্য মটেও প্রস্তত ছিলো না ৷ কয়েক পা পিছিয়ে যায় রিদ তখনি প্রিয়ন্তি দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠলো “” তোমার সাহস কি করে হয় আমাকে চরিত্রহীনা বলার হ্যা , আমাকে চরিত্রহীনা কে বানিয়েছে রিদ হ্যা কে বানিয়েছে তুমি , তুমি বানিয়েছো আমাকে চরিত্রহীনা ৷ আর তুমি কি চরিত্রবান হুম আমি যদি চরিত্রহীনা হই তাহলে তুমিও চরিত্রহীনা ৷ বউ থাকতে কাজিনের সাথে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে কে তুলে ছিলো আগে আমি না তুমি ? তুমি আমাকে বাধ্য করেছো তোমার সাথে সম্পর্কে জরাতে আমি চাই নি ৷ আর কি বললে আমার জন্য আমার জন্য তুমি সব হারিয়েছো হ্যা ভুল বললে তোমার জন্য আমি সব হারিয়েছি আমার মাতৃত্ব কে নিজের হাতে খুন করেছি ৷ এবোর্ট করতে বাধ্য করেছো তুমি আর এখন কি বলছো আমার জন্য তোমার সব শেষ হয়ে গেছে ৷””

রিদ প্রিয়ন্তির কথা শুনে চুপ হয়ে যায় কারন প্রিয়ন্তির প্রত্যেকটা কথা সত্যি ৷ রিদ চেয়ারে একটা লাথি মেরে রুম থেকে বেরিয়ে যায় ৷ রিদ চলে যেতে কান্নায় ভেঙে পরে প্রিয়ন্তি ৷ শরীলের ব্যাথায় প্রিয়ন্তি হাটতে ও পারছে না ৷ কোন ভাবে প্রিয়ন্তি বিছানায় বসে সাইড টেবিল থেকে পেইন কিলার বের করে খেয়ে নিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ে ৷

রিদ ড্রইংরুম থেকে রান্না ঘরে যায় পানি খাওয়ার জন্য , রিদ পানির গ্লাস হাতে নিতে হঠাৎ রিদের হাত থেকে গ্লাস টা ফ্লোরে পরে টুকরো টুকরো হয়ে যায় ৷ রিদ পাশে তাকিয়ে দেখে রায়হান আহাম্মেদ দারিয়ে আছে রক্ত চক্ষু নিয়ে …….

“” মেয়েটাকে জানোয়ারের মতো মেরে এখানে এসেছো পানি খেতে হ্যা…??”” চিৎকার করে বলতে লাগলো রিদের বাবা..

রিদ তার বাবাকে ভয় পায় বিধায় কোন শব্দ করে করে না চুপ করে থাকে ৷ রিদের স্তব্ধতা রায়হান আহাম্মেদ এর যেন সহ্য হচ্ছে না ৷ তার এই ছেলের জন্য মুনের মতো লক্ষি মেয়ে কে এ বাড়ি থেকে চলে যেতে হয়েছে ৷ আর এখন প্রিয়ন্তি , প্রিয়ন্তি কে রায়হান আহাম্মেদ সহ্য করতে না পারলেও মেয়েটাকে ছোট বেলা থেকে দেখে আসছে ৷ প্রিয়ন্তি কে মেয়ের মতো-ই দেখে কিন্তু যখন থেকে নিজের ছেলে মেয়েটার সাথে নোংরামি শুরু করে তখন তিনি থামাতে চেয়েও পারেনি শুধু মাত্র রিদের মা রিয়ানা বেগমের জন্য ছেলেটাকে লাই দিয়ে নষ্ট করে ফেলেছে ৷

“” রিদ তোমাকে ফাস্ট এন্ড লাস্ট ওয়ার্নিং দিচ্ছি র পর থেকে প্রিয়ন্তির গায় তুমি হাত দিবে না আর না র রুমে যাবে ওর সাথে বলবে ৷ কথাটা যেন মনে থাকে “”

কথা টা বলে বেরিয়ে গেল বাড়ি থেকে ৷ রিদ পানি না খেয়ে নিজের রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলো৷
.
.
.
.
_______ দু দিন পর সামসু হকের বাড়ি মুনের নামে চিঠি এসেছে ৷ চিঠি পড়ে মুনের চোখে মুখে খুশির ঝিলিক ফুটে উঠলো ৷ আবিদ কে দেখাতে আবিদ বুজতে পারলো এটা কার কাজ …

“” Congratulations মনপাখি তুমি চাকরি পেয়ে গেছো …দারাও সবাই কে খুশির খবর টা দি””(আবিদ)

আবিদ মামা মামি সামির নিরব কে চাকরির খবর টা দিতে সবাই খুব খুশি হয় ৷ মুক্তা বেগম দ্রুত রান্না ঘরে গিয়ে ফ্রিজ থেকে মিষ্টি নিয়ে এসে সবাই কে মিষ্টি মুখ করায় ৷

“” দেখেছো মুন মা আল্লাহ তোমার মনের আশা পূর্ন করেছে ৷ “”(মুক্তা)

“” হ্যা এই খুশিতে আজ ভালো মন্দ খাওয়া যাক কি বলো মুক্তা?””(সামসু)

“” এই শুরু হয়ে গেল তোমার খাওয়ার বায়না তাই না””

“” চল মুন মা রান্না ঘরে যাই ৷ আজ তোর চাকড়ি পাওয়ার খুশিতে বিরয়ানি রান্না করবো ৷””(মুক্তা)

মুক্তা বেগম আর মুন রান্না ঘরের দিকে যেতে নিলে কারোর গলার আওয়াজ শুনে দারিয়ে যায় ৷ পিছুনে তাকিয়ে দেখে আলিয়া বেগম রক্ত চক্ষু দিয়ে তাকিয়ে আছে মুনের দিকে..

আলিয়া বেগম কে দেখে মুনের ভয়ে হাত পা কাপঁতে লাগলো ৷ কিন্তু পরক্ষনে ফারিহার কথা গুলো মনে পরতে মুনের চোখ মুখ স্বাভাবিক হয়ে গেল৷ আলিয়া বেগম মুনের দিকে তেরে আসতে নিলে মুনে বলে ওঠে ..”” ওখানে দারিয়ে পরুন আলিয়া বেগম ৷ আর এক পা ও আমার দিকে এগোনোর সাহস করবেন না ৷””

মুনের কথা শুনে ওখানে দারিয়ে পরে আলিয়া বেগম ৷ তিক্ষ্ম দৃষ্টি দিয়ে তাকিয়ে আছে মুনের দিকে …

“” কি চান আপনি?” (মুন)

“” বাহ এই কয়দিনে দেখছি তোর মুখে খুব বুলি ফুটেছে খা* মা* “”

“” মুখ সংযত করে কথা বলুন খালা””(রেগে বললো আবিদ)

“” আবিদ প্লিজ আজ তুমি আমার আর ওই মহিলার মধ্যে কোন কথা বলবে না যা বলার আমি বলবো””

মুনের কথা শুনে আবিদ সম্মতি জানিয়ে চুপ করে রইল৷

“” এবার আপনি বলুন ? আপনি কেন এখানে এসেছেন?””

“” তোকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যেতে ৷ আর আমি সবটা জেনেছি তোর আর জামাইয়ের ডিভোর্স এর কথা ৷ “”

“” আপনাকে এখানে দেখে-ই বুজতে পারছি আপনি সবটা জেনে গেছেন ৷ বাট তাতে কিছু আমার যায় আসে না ৷ কারন আমি এখন বিবাহিত এই যে আমার স্বামী আবিদ”””

মুন কে নির্দিধায় কথা বলতে দেখে আলিয়া বেগম ভিতরে ভিতরে ফুসতে লাগলো ৷ আলিয়া বেগমের ইচ্ছে করছে এখুনি মুনে চুলের মুঠি ধরে কয়েক ঘা দিতে কিন্তু আফজাল সাহেব এর কথা মতো কাজ করতে হলে মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে তাকে ৷

“” মুন মা আবিদ এর তোদের সম্পর্ক মেনে নিবে না কখনো ৷ এখনো সময় আছে ফিরে আয় আমার কাছে ৷””

“” কোন দিন না ৷ আমি আমার স্বামী কে ছেড়ে কোথাও যাবো না এর পর ও যদি আপনি আমাকে জোর করেন তাহলে আমি আপনার নামে থানায় অভিযোগ করতে বাধ্য হবো “”

মুনের কথা শুনে আলিয়া বেগম আর রাগ চেপে রাখতে পারলেন না নিজের আসল চরিত্রে ফিরে এলেন….”” বেশ্যা তোরে আজ আমি মাইরা ফেলমু তোর সাহস কি করে হয় আমার মুখের উপর কথা বলার হ্যা , আমি তোর মা ভুলে গেছিস৷ তোর মনে হয় আগের মাইরের কথা গুলা মনে নাই তাই না ৷ আর তোর বাপের মতো-ই দেখছি হইছোস ৷ তোর বাপে যেমন বাইরে আর একটা বিয়া করছে ঠিক তেমনি তুই ও করছিস ৷ অলক্ষী মাইয়া তোর জন্য আমার কতো টাকা লস হয়ছে জানিস আজ তুই আমার সাথে ফিরে যাবি নয়লে তোরে আজ আমি এখানে মেরে পুতে রাখমু….””

“” সে সাহস দ্বিতীয় বার করতে যাবেন না আলিয়া বেগম ৷ আর কে মা আপনি উহু আপনি আমার কেউ হন না ৷ আমার আমার কাছে অনেক আগেই মারা গেছে ৷ আর কি বললেন আমার বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেছে তাই তো? আমি বলবো বেশ করেছে ৷ আপনার মতো স্ত্রী যার আছে সে কখনো সুখি হতে পারে না ৷ আমার বাবাও পারে নি ৷ তাই সে দ্বিতীয় বিয়ে করেছে ৷ “”

“” কিহ এতো বড় কথা , আজ তোর একদিন কি আমার একদিন ..”” বলতে বলতে আলিয়া বেগম মুনের দিকে তেরে যেতে নিরব সামির আর আবিদ সামনে দারিয়ে পরে ৷ আর অন্য দিকে সামসু হক আর তার স্ত্রী মুক্তা বেগম হা করে তাকিয়ে মা মেয়ের কথোপকথন শুনছে ৷

“” এই সর আমার সামনে থেকে আর ওই খান* মা* রে আমি মাইরা ফেলমু আমার মুখের উপর কথা কয় তর্ক করে এতো সাহস হয়ে গেছে ওর “” বিশ্রি বিশ্রি গালি গালাজ করতে লাগলো মুন কে মুন আবিদ নিরব সামির কে সামনে থেকে সরিয়ে দিয়ে আলিয়া বেগমের মুখো মুখি দারায়…

“” কি করবেন আপনি মারবেন গায় হাত দিয়ে দেখুন আমার স্বামী দেবর আপনাকে জ্যান্ত এখান থেকে ফিরে যেতে দিবে না ৷ “”

মুনের কথা শুনে আবিদ নিরব সামিরের মুখের দিকে তাকিয়ে শুকনো ঢোক গিললো আলিয়া বেগম ৷ এরা তিন জন এমন অগ্নি দৃষ্টি দিয়ে তাকিয়ে আছে যেন পারলে এখুনি ওকে শেষ করে দিবে ৷ আলিয়া বেগম একটু ভয় পেয়ে দু পা পিছিয়ে যায় ৷

“” কাজ টা ভালো করলি না মুন ৷ এর শাস্তি তোকে পেতে হবে ৷ “”

কথা টা বলে আর না দারিয়ে দ্রুত চলে গেল আলিয়া বেগম.. এদিকে নিরব আবিদ দুজনে এখনো মুনের দিকে তাকিয়ে আছে ৷ এই প্রথম নিজের জন্য লড়তে দেখলো মুন কে ৷ দুজন কে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে মুন ব্রু কুচকে বলে উঠলো

” কি বেপার এভাবে তাকিয়ে আছো কেন তোমরা দুজন হুম”

“” একটা কথা বলো মনপাখি তোমার ভিতর এতো সাহস কে সাপ্লাই করলো ?””

মুন মুচকি হেসে বললো “” ফারিহা””

“” বাহ তাহলে তো সালী সাহেবা কে একটা থ্যাংক্স জানাতে হয় ৷ আমার মেনি বিড়াল বউ কে বাঘিনী বানিয়ে দেওয়ার জন্য..”” (আবিদ)

“” ধুর , আমি রান্না ঘরে গেলাম , মামি চলুন আমরা রান্না ঘরে যাই “”

“” হুম চল””

মুন যেতেই নিরব বলে উঠলো “” দেখলি আবিদ বনু আগের থেকে কতোটা সাহসী হয়ে গেছে ৷ ”

“” হুম সব ক্রেডিট ফারিহার””

“” কে রে ফারিহা ? আচ্ছা মেয়েটা কি সিঙ্গেল আছে? থাকলে ফোন নাম্বার টা দে আমাকে””

“” সানজু জানে তুই অন্য মেয়ের নাম্বার চাইছিস আমার কাছে ?””

“” এই না না প্লিজ ওকে বলিস না তাহলে আমাকে জানে মেরে ফেলবে ৷ “”

“” আর একটা কথা ফারিহা সিঙ্গেল নয় মিঙ্গেল ওর হাসবেন্ট এর নাম আয়ান””

“” হ্যায় দিল টুট গেয়া “” বুকে হাত দিয়ে বেচারা টাইপ মুখ করে বললো নিরব…….
.
.
.
________ সকাল থেকে ফারিহা রিদ কে খাটিয়ে যাচ্ছে ৷ রিদ দাঁতে দাঁত চেপে সব কাজ করে যাচ্ছে ৷ দুপুরে লান্চ করার টাইম পর্যন্ত দেয়নি ৷ সবাই লান্চ করে কাজ শুরু করে দেয় ৷ ফারিহা নিজের কেবিনে আয়ান কে নিয়ে লান্চ করে গল্প করছে ৷ আর ল্যাপটপে রিদের উপর নজর রাখতে ৷ রিদ ঠিক মতো কাজ করছে কিনা ৷ যখনি রিদ কোন ভূল করছে তখনি ফারিয়া রিদ কে কেবিনে ডেকে ইচ্ছে মতো ঝেরে দিচ্ছে ৷ বাইরের লোকের সামনে বার বার অপমানিত হয়ে রাগে দুঃখে চোখ থেকে পানি বেরিয়ে গেল ৷ ঘরে বাইরে সব জায়গায় অশান্তি ৷ রিদের ইচ্ছে করছে সব কিছু ধ্বংস করে দিতে ৷ অফিস শেষ করে বাড়িতে ফিরে দেখে বাড়িতে অচেনা লোকজন ৷ রিদ ভিতরে ঢুকতে রায়হান আহাম্মেদ সবাই কে বলে উঠলো “” এইযে আমার ছেলে রিদ আর প্রিয়ন্তির বড় ভাই “”

“” রিদ এনারা প্রিয়ন্তি কে দেখতে এসেছে ৷ পছন্দ হলে আজ-ই এঙ্গেজমেন্ট করে রাখবে””

প্রিয়ন্তির বিয়ের কথা শুনে রিদের মাথা যেন ধুপ করে জ্বলে উঠলো ৷

“” প্রিয়ন্তি কি বিয়ের জন্য রাজি বাবা?”” গম্ভির গলার বললো রিদ..

“” হুম প্রিয়ন্তির অনুমতি নিয়ে ওদের আসতে বলেছি ৷ আর প্রিয়ন্তির পছন্দের ছেলের সাথে বিয়ে টা ঠিক করছি রিদ””

রিদ আর কিছু শোনার প্রয়োজন বোধ করলো না দ্রুত পায়ে হেটে গেল প্রিয়ন্তির রুমে , রুমে ঢুকে রিদ ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেয় ……..
.
.
.
#চলবে…………

#নীরব_সাক্ষী
#ফারহানা_ছবি
#পর্ব-২০
.
.
.
“” প্রিয়ন্তি কি বিয়ের জন্য রাজি বাবা?”” গম্ভির গলার বললো রিদ..

“” হুম প্রিয়ন্তির অনুমতি নিয়ে ওদের আসতে বলেছি ৷ আর প্রিয়ন্তির পছন্দের ছেলের সাথে বিয়ে টা ঠিক করছি রিদ””

রিদ আর কিছু শোনার প্রয়োজন বোধ করলো না দ্রুত পায়ে হেটে গেল প্রিয়ন্তির রুমে , রুমে ঢুকে রিদ ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেয় ৷ দরজা লাগানোর শব্দ পেয়ে প্রিয়ন্তি তাকিয়ে রিদ কে দেখে পেয়ে প্রচন্ড ভয় পেয়ে যায় ৷ অন্যদিকে রিদ কে এভাবে প্রিয়ন্তির রুমে ঢুকতে দেখে দেখতে আসা লোক জনের মধ্যে কানা কানি শুরু হয়ে গেছে ৷ রায়হান আহাম্মেদ তার ছেলের কান্ডে লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেলে ৷ ওই দিকে রিদ প্রিয়ন্তির দিকে এগোতে এগোতে কোমরের বেল খুলতে খুলতে রিদ বলতে লাগলো “” খুব শখ না তোর বিয়ে করার তাই না? আজ আমি তোর বিয়ের শখ মিটিয়ে দিবো ৷ “”

রিদ বেল খুলে প্রিয়ন্তি কে মারতে লাগলো প্রিয়ন্তি রিদ কে কিছু বলতে না মার খেয়ে কেদে যাচ্ছে ৷ ফর্সা শরীলে বেল্টের দাগ স্পষ্ট ফুটে আছে ৷ রিদের মাথায় কাজ করছে না ৷ অফিসের বসের যন্ত্রণা ৷ অন্যদিকে মুনের স্মৃতি রিদ কে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে ৷ আর এখন প্রিয়ন্তি … সব মিলিয়ে রিদের নিজেকে পাগল পাগল মনে হচ্ছে ৷

দরজায় বার বার কড়া আঘাত আর রায়হান আহাম্মেদ এর গলা পেয়ে প্রিয়ন্তি দৌড়ে দরজা খুলে দেয় ৷ হরমুর করে রায়হান আহাম্মেদ আর রিয়ানা বেগম রুমের ভিতর ঢুকে পরে ৷ দুজনে প্রিয়ন্তির এই করুন অবস্তা দেখে রায়হান আহাম্মেদ এর প্রচন্ড খারাপ লাগছে ৷ আর রিয়ানা বেগম প্রিয়ন্তিকে জরিয়ে ধরে আছে ৷ আজ রিয়ানা বেগমের মুনের কথা বড্ড মনে পরছে ৷ আজ প্রিয়ন্তিকে যে ভাবে মেরেছে ঠিক একই ভাবে মুন কেও সে আর ছেলে এভাবে মারতো ৷

“” রিদ তোমার সাহস কি করে হয় প্রিয়ন্তির গায় হাত তোলার ?””(রায়হান আহাম্মেদ )

“” তার আগে প্রিয়ন্তির কাছে জানতে চাও ওর সাহস কি করে হয় বিয়ের জন্য রাজি হয়ে যায় ৷””(রিদ)

“” কেন এতে সাহস এর কি আছে ৷ বিয়ের বয়স হয়েছে তাই বিয়ে করবে এতে তোর সমস্যা কোথায় রিদ?””(রায়হান আহাম্মেদ )

“” সব সমস্যাই আমার বুজতে পেরেছো বাবা কারন টা হলো এই মেয়েটার জন্য আমি আমার সাজানো সংসার ভেঙে চুরে শেষ করেছি ৷ মুন কে হারিয়ে ফেলেছি ৷ আর এখন ও বিয়ে করে সুখি হবে আর আমি ঘুমরে ঘুমরে মরবো তা কখনো হবে না ওকে ও ঘুমরে মরতে হবে জ্বলতে হবে আমার-ই মতো বুজতে পেরেছো তোমরা “” চিৎকার করে বলতে লাগলো রিদ…

“” না বাবু তুই যা করছিস ভূল করছিস সব দোষ আমার সব ভূল আমার বাবু দয়াকরে মেয়ে টাকে আর কষ্ট দিস না “”

“” ঠিক বলেছো সব দোষ তোমার মা , তোমার জন্য আমি সব হারিয়েছি””

প্রিয়ন্তি আর সহ্য করতে না পেরে চিৎকার করে উঠলো”” চুপ করো তোমরা সবাই ৷ কি ভেবেছো আমি তোমাদের হাতের পুতুল যে যেভাবে পারছো আমাকে আঙ্গুলে নাচিয়ে যাচ্ছো ৷ হ্যা আমি কি মানুষ না সেই ছোট বেলা থেকে তোমরা দুজনে আমাকে ব্যাবহার করে এসেছো ৷ শেষ পর্যন্ত আমার দুটো সন্তান কে খুন করতে পর্যন্ত বাধ্য করেছে তোমাদের ছেলে ৷ আর আজ যখন আমি এই নরক থেকে বের হতে চাচ্ছি বাচঁতে চাইছি তখন আবার তোমার সমস্যা হচ্ছে রিদ ৷ আমিও মানুষ রিদ কোন জড় বস্তু না যে যে ভাবে পারবে আমাকে ব্যবহার করে যাবে ৷ আমার ও ইচ্ছে হয় সংসার করার মা ডাক শোনার কিন্তু তুমি তা হতে দিচ্ছো না কেন রিদ কেন”” কাদতে কাদতে কথা গুলো বলতে বলতে প্রিয়ন্তি জ্ঞান হারিয়ে ফেলে ৷ আর আজ প্রিয়ন্তির কথা শুনে রায়হান আহাম্মেদ যেন তার ভাষা হারিয়ে ফেলেছে ৷ তার ছেলে এতো জঘন্য এটা তার জানা ছিলো না ৷ তিনি চুপচাপ প্রিয়ন্তি কে কোন রকম ধরে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে ডাক্তার কে কল করে আসতে বলে ৷

“” রায়হান ভাই প্রিয়ন্তি মায়ের এই অবস্তা হলো কি করে?”(ডাক্তার)

“” এক জানোয়ারের জন্য ভাই ৷ তুমি দ্রুত মেয়েটাকে সুস্থ করে তোলার ব্যাবস্তা করো”” (রায়হান আহাম্মেদ )

“” আমি একটা ইনজেকশন পুশ করে দিচ্ছি প্রিয়ন্তি মা কিছুক্ষন ঘুমাবে ৷ আর প্রেসক্রিপ্‌শন দিলাম ঔষধ গুলো আনিয়ে নিবেন আর নিয়ম লিখে দিয়েছি ৷ নিয়ম অনুযায়ি খাইয়ে দিবেন ৷””

প্রেসক্রিপশন টা রায়হান আহাম্মেদ এর হাতে দিয়ে ডাক্তার চলে যেতে তিনি ঔষধ আনতে বেরিয়ে গেল৷ তখনি রিদ প্রিয়ন্তির রুমে চুপি সারে রুমে ঢুকলো…. নিঃশব্দে প্রিয়ন্তির মাথার কাছে দারিয়ে প্রিয়ন্তি কে দেখছে ৷ খুব গিল্টি ফিল করছে রিদ ৷ এভাবে প্রিয়ন্তিকে মারা যে তার উচিত হয়নি এটা বেশ বুজতে পারচ্ছে ৷ আজ প্রিয়ন্তির প্রত্যেকটা কথা খুব মন দিয়ে শুনেছে রিদ এর আগে শুনেছিলো কিন্তু গায় মাখে নি কিন্তু আজ বুজতে পারছে কতো বড় অন্যায় করেছে সে প্রিয়ন্তির উপর নাহ শুধু প্রিয়ন্তির উপর নয় মুনের উপর ও ৷ একি সাথে দুটো মেয়ে জীবন নিয়ে খেলেছে সে ৷ প্রিয়ন্তিকে স্পর্শ করার সাহস রিদ করতে পারলো না ৷ দু ফোটা চোখের পানি ফেলে বেরিয়ে গেল রুম থেকে ৷ দেখতে দেখতে এক সপ্তাহ কেটে গেল প্রিয়ন্তি এখন পুরো সুস্থ ৷ রায়হান আহাম্মেদ প্রিয়ন্তির অনুমতি নিয়ে আবার ও প্রিয়ন্তির জন্য ছেলে দেখতে লাগলো ৷ কিন্তু এবার আর রিদ কোন শব্দ করেনি না কোন অসান্তি করেছে ৷ আজ প্রিয়ন্তিকে ছেলে পক্ষ দেখতে এসে প্রিয়ন্তিকে রিং পরিয়ে দিয়ে গেছে ৷ ছেলে পক্ষ চলে যেতে রায়হান আহাম্মেদ রিয়ানা বেগম কে ডেকে কিছু পেপারস এগিয়ে দিলো….

“” এগুলো কিসের কাগজ রিদের বাপ?””

“” ডিভোর্স পেপার রিয়ানা ৷ কথা না বারিয়ে ঝটপট সাইন করে দেও বাইরে আমার উকিল দারিয়ে আছে ৷””

রিয়ানা বেগম ধুপ করে সোফায় বসে পড়লেন ৷ রিয়ানা বেগমের মাথায় যেন পুরো পৃথিবী ঘুরছে ৷ রিয়ানা বেগমের মনে হচ্ছে তিনি এখুনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলবেন৷ এদিকে রিদ এখনো তার বাবার দিকে তাকিয়ে আছে , রিদ বিশ্বাস করতে পারছে না তার বাবা এমন কিছু করবে ৷ রিদ কিছু বলতে যাবে তখনি রায়হান আহাম্মেদ ইশারায় থামিয়ে দিলেন৷
.
.
.
.
.
___________ মুন অফিস থেকে ফিরে রুমে এসে দেখে আবিদ ওর বিছানায় শুয়ে আছে ৷ মুন মুচকি হেসে ব্যাগ ফাইল গুলো ড্রয়ারে রেখে ওয়াশরুমে ঢুকে গেল ৷ ফ্রেস হয়ে বেরিয়ে দেখে আবিদ রুমের কোথাও নেই৷ তার দু মিনিট পর দেখে আবিদ দু-কাঁপ চা আর স্নাক্স নিয়ে হাজির ৷

“” মনপাখি ঝটপট চা আর স্নাক্স খেয়ে নেও ৷ তারপর তোমার অফিসের গল্প শুনবো৷””(আবিদ )

“” হুম তা না হয় গল্প তোমায় শুনাবো তার আগে তুমি বলো আজ সারা দিনে মাত্র দুবার কেন কল দিলে আমাকে? “” মুখ ভার করে বললো মুন…

আবিদ মুনকে কোলে বসিয়ে গলায় ঠোটের স্পর্শ দিয়ে বললে উঠলো”” ক্ষমা করো মনপাখি ৷ আজ দোকানে প্রচুর ভির ছিলো তার উপর আ,,, বলতে গিয়ে থেকে যায় আবিদ..

“” কি হলো কথাটা শেষ করো আ মানে কি ? ” কথাটা বলার পর মুনের টনক নরে উঠলো সাথে সাথে আবিদের দিকে ঘুড়ে তাকায় মুন”” সত্যি করে বলো আবিদ আজ কি হয়েছে ? তোমার বাবা এসেছিলো ?””

“” হুম আব্বু আজ দোকানে এসে মামা আর আমাকে বেশ শাশিয়ে গেছে ৷ যাতে আমাকে ওবাড়িতে ফিরে যাই”” মন খারাপ করে বললো আবিদ…

“” তুমি কি চাও আবিদ ? ফিরে যেতে চাও তোমার পরিবারের কাছে তাহলে আমি বাধা হবো না তোমার , তুমি নিশ্চিন্তে ফিরে যেতে পারো তোমার পরিবারের কাছে ৷””

মুনের কথা শুনে মুহূর্তে আবিদের চোখ মুখের রং পাল্টে গেল৷ আবিদের মুখের দিকে তাকাতে মুনের চোখ মুখ ভয়ে যেন শুকিয়ে গেছে কয়েক মুহূর্তে ৷ আবিদ মুন কে বুকের সাথে শক্ত করে চেপে ধরে বলে””” ভূলেও নিজের থেকে আমাকে দুরে সরানোর চিন্তা মাথায় এনো না মনপাখি ৷ তাহলে আমি এবার আর চুপ থাকবো না সব জ্বালিয়ে পুরিয়ে সব শেষ করে দিবো ৷ আর কান খুলে শুনে রাখো আমি না তোমাকে ছেড়ে দিবো আর না তোমাকে ছেড়ে যেতে দিবো কারন এখন তোমার উপর বৈধ অধিকার আছে আমার তাই আর কখনো এই কথা গুলো বলার সাহস করবে না মনপাখি “”

মুন শুকনো ঢোক গিলে মাথা নারালো…

মুন আর কিছু বলার সাহস পেল না ৷ চুপ চাপ খেয়ে নিলো ৷ তখনি দরজায় কেউ নক করতে মুন আবিদের কোল থেকে উঠে দারিয়ে পরে ৷

“” মুন মা ভিতরে আসবো”” সামসু হক

“” কি বলছেন মামা ৷ আসুন ভিতরে আসুন প্লিজ””

সামসু হক ভিতরে ঢুকে ৷ মুন চেয়ার টা এগিয়ে দেয় বসার জন্য ..

“” মামা বসে কথা বলুন “”

“” মুন মা আর আবিদ তোমাদের এক টা কথা বলার জন্য এসেছি””

“” বলুন মামা কি বলবেন?””

“” আবিদ আর মুন মা আমাকে তোমরা ভূল বুঝো না কিন্তু কথাটা তোমাদের বলতে হচ্ছে “” সামিু হকের কথা শুনে মুনের ভয় হচ্ছে এটা ভেবে যে এবাড়ি থেকে চলে যেতে না বলে ৷

“” বলুন মামা কি বলবেন””(আবিদ)

“” বলছিলাম যে তোমরা কিছুদিনের জন্য কোথাও থেকে ঘুড়ে এসো কারন তোমার বাবা তোমাদের উপর নজর রাখার জন্য লোক লাগিয়েছে “”

সামসু হকের কথা শুনে আবিদের চোখ মুখ শক্ত হয়ে এলো ৷ নিজের বাবার প্রতি ঘৃনাটা যেন দিন কে দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে ৷ এর আগে মুনের মা আলিয়া বেগমের সাথে প্লান করে কয়েকবার যে মুন কে ওর থেকে সরাতে চেয়েছিলো এটা আবিদ জেনে যাওয়ার পর নিজের বাবার প্রতি ঘৃনা জন্মালো আর আজ মামার কথা শুনে ঘৃনা যেন আরো বেশি হলো৷

মুন এবার বলে উঠলো.. “” মামা আপনি চিন্তা করবেন না আমি কিছু একটা করছি ”

“” মুন মা তোমরা আমাকে ভূল বোঝনি তো?””(সামসু হক)

“” না মামা আপনাকে ভূল বোঝার প্রশ্ন-ই আসে না ৷ আপনি নিশ্চিন্তে থাকুন আমি আর আবিদ সব টা সামলে নিবো””

“” আচ্ছা মা তাহলে তোমরা গল্প করো আমি সামিরা কে সামলাই মেয়েটা তোমার কাছে আসার জন্য পাগল হয়ে গেছে””

“” মামা আপনি সামিরাকে আমার কাছে পাঠিয়েদিন দয়া করে ৷ ওকে সারাদিন না দেখতে পেয়ে আমার মনটাও আনচান করছে ৷””

“” আচ্ছা মা আমি ওকে পাঠিয়ে দিচ্ছি “”

সামসু হক চলে যেতে মুন ফোন বের করে ফারিহার নাম্বারে ডায়েল করে ৷ একবার বাজতে ফারিহা কল রিসিব করে ৷ মুন সবটা ফারিহা কে জানায় ৷ ফারিহা কিছুক্ষণ চুপ থেকে মুন কে বরিশাল আসতে বলে ৷ মুন রাজি হয়ে যায়৷ ফারিহার সাথে কিছুক্ষন কথা বলে কল কেটে দেয় মুন৷

“” কি বললো সালিকা?””(আবিদ)

“” রুমে গিয়ে জমা কাপড় প্যাক করে নেও কাল সকাল সকাল আমরা বরিশালের উদ্দ্যশ্যে বের হবো “”

“” কিন্তু টিকিট তো কাটা হয়নি যাবো কি করে?””

“” অফিস থেকে গাড়ি পাঠিয়ে দিবে ফারিহা ৷ আমরা সেই গাড়িতে যাবো বুজলে৷ এখন কথা না বারিয়ে রুমে যাও আর আমি মামা মামি কে কাল যাওয়ার কথা জানিয়ে দিয়ে আসি “”

“” ওকে মহারানি আপনি যা বলবেন তাই হবে”” আবিদ মুনের গালে টুপ করে একটা চুমু দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায় …

মুন রাতে খাওয়ার টেবিলে মামা মামি কে সব টা বলে তারা রাজি হয়ে যায় ৷ তবে শর্ত একটা ঝামেলা মিটে গেলে আবার এই বাড়িতে ফিরে আসতে হবে ৷ মুন আবিদ দুজনে রাজি হয়ে যায় ৷ রাতে খেয়ে দুজনে দু রুমে ঘুমিয়ে পড়ে ৷ আর মুন সামিরাকে মন ভরে আদর করে নেয় ৷

পরেরদিন ভোর বেলায় ঘুম থেকে উঠে মুন আবিদ রেডি হয়ে নাস্তা করে সবাই কে বিদায় নিয়ে ফারিহার পাঠানো গাড়িতে উঠে বসে ৷ দুঘন্টায় মুন আবিদ বরিশাল পৌছে যায় ৷ ফারিহার ইন্সট্রাকশন অনুযায়ী ড্রাইবার মুন আবিদ কে ফারিহার বাড়িতে নিয়ে আসে ৷ ফারিহা আর আয়ান দুজনে মুন আর আবিদ কে অয়েলকাম করার জন্য গেটের কাছে দারিয়ে ছিলো মুন আবিদ কে আসতে দেখে ফারিহা দৌরে মুন কে জরিয়ে ধরে ৷ আর আয়ান আবিদ দুজনে হ্যান্ডশেক করে ৷

“”কেমন আছিস তোরা? জিজু কেমন আছেন?”” (ফারিহা)

“” এই তো ভালো সালিকা , তুমি কেমন আছো ? আর আপনি কেমন আছেন মিস্টার আয়ান?””(আবিদ)

“” এইতো আপনার সালিকা যেমন রেখেছে তেমন আছি মিস্টার আবিদ”” আড়চোখে ফারিহার দিকে তাকিয়ে বললো আয়ান…

“” তাই না জিজু মুন ভিতরে চল জার্নি করে এসেছিস এখন নিশ্চয় ট্যায়ার্ড আছিস ফ্রেস হয়ে নাস্তা করে রেস্ট নিবে চলো ভিতরে””(ফারিহা)

আয়ান আর কিছু বলার সাহস করলো না কারন ফারিহার রাগ সম্পর্কে আয়ান খুব ভালো করেই জানে ৷

ফারিহা মুন আবিদ কে রুম দেখিয়ে দেয় ৷ মুন আবিদ ফ্রেস হয়ে নিচে নেমে এসে দেখে বিশাল আয়োজন করা হয়েছে ৷ ফারিহা আবিদ কে ঠেসে ঠুসে খাইয়ে ছেড়েছে আর অন্যদিকে মুন আবিদের অবস্তা দেখে মুখ টিপে টিপে হাসছে ৷ অন্যদিকে আয়ান ভিতরে ভিতরে ফুসছে ৷ ফারিহা আয়ানের মুখ দেখে বেশ মজা পাচ্ছে ৷ আয়ান কে আরো জ্বালানোর জন্য ফারিহা আবিদ কে নিজ হাতে খাওয়াতে লাগলো ৷ মুন বেশ বুজতে পারছে ফারিহা আয়ানকে জ্বলানোর জন্য ফারিহা এমনটা করছে ৷ মুন আয়ানের পাশে বসে আস্তে করে বলে উঠলো “” জিজু ফারিহা আপনাকে জ্বালানোর জন্য এমন টা করছে তাই প্লিজ এখন শান্ত থাকুন৷””

“” মানে তুমি সবটা জানো?”” অবাক হয়ে বললো আয়ান

“” ওহ জিজু আপনি এখনো ফারিহা কে চিনতে পারলেন না ? কিছুক্ষন আগে যে ওকে টিস করে কথা বলেছিলেন ভুলে গেছেন? ও তার প্রতিশোধ নিচ্ছে “”

আয়ান এবার বুজতে পারলো ফারিহা কেন এমনটা করছে ৷

“” সালি সাহেবা আপনার বান্ধবী তো পুরাই একটা বোম “”

“” হু এখন বুজতে পারলেন ৷ “”

আবিদ মুন ফারিহা আয়ান এর খাওয়া শেষ হওয়ার পর ওদের গেস্ট রুমে পাঠিয়ে দেয় রেস্ট নিতে ৷

দুপুরে লান্চ করার সময় ফারিহা তার বাবা ফারুক খানের সাথে আবিদের পরিচয় করিয়ে দেয়৷ আবিদের ব্যবহার শিক্ষাগত যোগ্যতা দেখে ফারিহার বাবার বেশ ভালো লাগে তিনি আবিদ কে তার অফিসে চাকরির অফার করে ৷ আবিদ প্রথমে না করতে চেয়েও করলো না কারন ফারিহার বাবা আবিদ কে রিকুয়েস্ট করে ৷ আবিদ রাজি হয়ে যায় ৷

“” মুন আর জিজু আগামিকাল রেডি থেকো , কাল থেকে তোমরা দুজনে আমার সাথে অফিসে যাবে ৷ “”

“” কিন্তু….””(মুন)

“” কোন কিন্তু নয় মুন আর শোন কাল একজনের মুখো মুখি হবি সো গেট রেডি ফর টুমোরো কারন কাল ধামাকা হবে কারো কারো হুস উরে যাবে তোদের দেখে…..”” কথাটা বলে রহস্যময় হাসি দিলো ফারিহা…..
.
.
.
#চলবে…..
[ প্রিয় রিডার্স ভূল ট্রুটি হলে তা ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন আর হ্যা সবাই কে জানাই❣️ Happy New Year ❣️]