নীরব সাক্ষী পর্ব-২৭

0
625

#নীরব_সাক্ষী
#ফারহানা_ছবি
#পর্ব-২৭
.
.
.
দুপুর বার টায় মুনের ঘুম ভাঙে ৷ সানজু ফারিহা মুন কে গোসলে পাঠিয়ে বিয়ের ড্রেস জুয়েলারি মেকয়াপ সব বিছানায় সাজিয়ে রাখে ৷ এক ঘন্টা পর মুন ওয়াশরুম থেকে বের হতে ফারিয়া হেয়ার ড্রাইয়ার দিয়ে মুনের চুল শুকিয়ে দিয়ে পার্লারের মেয়েদের কাছে সাজতে বসিয়ে দিয়ে নিজেরাও সাজতে বসে যায় অন্যদিকে আলিয়া বেগম আফজাল সাহেব আর আজমির লোক জন নিয়ে রওনা হয় ফারিহার বাড়ির উদ্দেশ্যে…..

দু-ঘন্টা পর সবার সাজ কম্পিলিট.. মুন কে লাল লেহেঙ্গা পরে অসম্ভব সুন্দর লাগছে ৷ ফারিহা সানজু তন্নি তিন জন-ই মুনের দিকে হ্যা করে তাকিয়ে আছে ৷ এমন ভাবে দেখছে যেন আকাশ থেকে কোন লাল পরী নেমে এসেছে তাদের সামনে ৷ মুন কে এতো ভারি সাজে কেউ দেখে নি কখনো আর না কখনো মুন সেজেছে ৷

“” মাশাআল্লাহ মুন তোকে পুরো পরীর মতো লাগছে ইচ্ছে করছে আবিদ জিজু নয় আমি তোকে বিয়ে করে ফেলি..”” (সানজু)

“” ওয়াট তুই কি লেসবিয়ান সানজু? মেয়ে হয়ে আর একটা মেয়ে কে বিয়ে করতে চাইছিস ছিঃ ছিঃ ছিঃ , আমাদের বান্ধবী সে কি না লেসবিয়ান ভাবতে কষ্ট হচ্ছে …””(ফারিহা)

ফারিহার কথা শুনে সানজু প্রচন্ড ক্ষেপে যায় ৷ পুরো রুম দৌড় করায় ফারিহাকে .. তখনি মামি এসে তার জাতীয় ধমক দেওয়া শুরু করে …

“” এই মেয়েরা কি হচ্ছে টা কি ? তোমরা দিন দিন বড় হচ্ছো না ছোট হুম? নিচে সবাই মুনের জন্য অপেক্ষা করছে আর তোমরা ওকে এখানে আটকে ঝগড়া করছো ..?”

“” স্যরি আন্টি আর হবে না..”” কাচুমাচু মুখ করে বললো সানজু ফারিহা…

“” হুমম হয়েছে তারা তারি মুন কে নিয়ে নিচে এসো কাজী সাহেব অনেকক্ষন ধরে তারা দিচ্ছে আর ফারিহা তোমার বাবা ও কোথাও একটা যাবে তাই বিয়েটা দ্রুত শেষ করতে বলছে…””

“” ওকে আন্টি আপনি নিচে গিয়ে বলুন আমরা মুন কে নিয়ে আসছি…”” (সানজু)

“” দেরি হয়না যেন ..””

মামি চলে যেতে সবাই হাফ ছেড়ে যেন বাচঁলো…

“” ইয়ার আর ঝগড়া না চল মুন কে নিয়ে নিচে..””

“” হুম চল…””

ফারিহা আর সানজু মুনে কে নিয়ে বেরিয়ে গেল ৷

ফারিহাদের বাড়িটা বেশ বড় হওয়ায় ড্রইং রুমে ছোট্ট স্টেইজ করা হয় ৷ আয়ান সাব্বির নিরব আবিদ কে নিয়ে স্টেজে নিয়ে আসে তখনি নূপুর আর চুড়ির আওয়াজ শুনে উপরে তাকিয়ে দেখে মুন কে..আবিদের দুচোখ যেন মুনেতে আটকে গেছে… লাল টকটকে লেহেঙ্গা মাথায় লাল ওরনা দুহাতে মুঠো ভরে কাচের চুড়ি , গলায় হার নাকে সাদা পাথরের নোজ পিন ঠোটে লাল লিপষ্টিক মুখে ভারি মেকয়াপ কপালে টিকলি, পায়ে নূপুর আবিদের মনে হচ্ছে উপর থেকে লাল পরী নেমে আসছে .. আবিদ বসা থেকে বুকে হাত দিয়ে উঠে দারায় … আয়ান নিরব আবিদের কান্ড দেখে হত বাক…

মুন এক ঝলক আবিদের দিকে তাকাতে মুনের হৃদ স্পন্দন যেন হাজার স্পিডে বিট করতে লাগলো ঠিক যেন প্রথম দিনের মতো… আবিদ ও লাল আর সোনালি সুতোর কাজ করা পান্জাবি আর মাথা পাগড়ি পরেছে দুজনের ম্যাচিং করা ড্রেস ৷ আবিদ এমনিতে হ্যান্ডসাম আর লাল পান্জাবিতে আরো সুন্দর লাগছে ৷ মুনের ইচ্ছে করছে কালো টিকা পরিয়ে দিতে যাতে কারোর নজর না লাগে৷

আয়ান আবিদ কে বসিয়ে দিয়ে মুনের বসার যায়গা করে দেয় কারন দুজন কে পাশাপাশি বসানো হবে ৷ ফারিহা মুন কে নিয়ে আবিদের পাশে বসিয়ে দিয়ে আবিদের কানে কানে বলে ওঠে “” জিজু এভাবে হ্যা করে তাকিয়ে থাকবেন না মুখের ভিতর মাছি ঢুকে যাবে ৷ আর একটু অপেক্ষা করুন তারপর সারা জীবন পরে থাকবে আপনার বউ কে হ্যা করে দেখার জন্য….””

ফারিহার কথায় বেশ লজ্জা পায় আবিদ..

আয়ান ফারিহা কে দেখছে .. গোলাপি লেহেঙ্গা পরে ফারিহা কে পুরো পুতুলের মতো লাগছে ৷ মনে হচ্ছে সামনে একটা কিউট পুতুল হাটা চলা করছে ৷ হঠাৎ করে আয়ানের মেজাজ টা বিগরে যায় ৷ ফারিহা কে ইশারায় উপরে ডাকে আয়ান কিন্তু ফারিহা সেটা দেখেও না দেখার ভান করে আবিদের সাথে দুষ্টুমি করে যাচ্ছে ৷

খুব সুন্দর ভাবে আবিদ আর মুনের বিয়েটা হয়ে যায় তিন বার কবুল বলার পর… আবার ও রেজেস্ট্রি পেপারের সাইন করে দুজনে … আবিদ মুনের বিয়ে টা শেষ হতে বাইরে শোরগোলের আওয়াজ শুনতে পায় সবাই , ফারিহা আয়ান সানজু নিরব তন্নি সাব্বির বেরিয়ে দেখতে নিলে তখনি বাড়ির ভিতর আফজাল সাহেব আলিয়া বেগম আজমির আর তাদের লোকজন নিয়ে প্রবেশ করে …

ফারিহা প্রচন্ড রেগে যায় এদের কে দেখে তবুও দাঁতে দাঁত চেপে ফারিহা বলতে লাগলো…..

“” ওয়াও আপনারা শেষ পর্যন্ত এসে পরেছেন নিজেদের ছেলে মেয়ের বিয়েতে কিন্তু আফসোস ওদের বিয়েটা হয়ে গেছে ..””

“” আমরা এই বিয়ে মানি না “” (আফজাল সাহেব)

“” আপনি মানুন আর নাই মানুন বিয়েটা ইসলাম মতে আমাদের সবার সামনে হয়েছে তাই এখন আপনার কথার উপর ওদের বিয়েটা নির্ভর করে না..”” আয়ান বলে উঠলো ….

আবিদ রাগে সারা শরীল কাপছে আর আলিয়া বেগম কে দেখে ভয়ে মুনের মুখটা শুকিয়ে গেছে ৷

” মুন ভয় পেয়েও না আব্বু তোমাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না..”” (আবির)

আবির আবিদ কে চোখের ইশারায় শান্ত থাকতে বলে সামনে এগিয়ে যায় ৷ আফজাল সাহেব তার মেজ ছেলে কে এখানে দেখে বেশ অবাক হয়ে যায়..

“” আবির তুই এখানে..?””

“” হুম ছোট ভাইয়ের বিয়েতে ভাই থাকবে না তা কি করে সম্ভব বলো আব্বু..?””

“” তার মানে তুই ও ওদের দলে তাইতো..?””

“” হুম””

আফজাল সাহেব আলিয়া বেগম কে কিছু একটা ইশারা করতে আলিয় বেগম তেরে যায় মুনের দিকে , মুনের হাত ধরতে যাবে তখনি ফারিহা আলিয়া বেগমের হাত চেপে ধরে…

“” এই মেয়ে তোমার সাহস কি করে হয় আমার হাত ধরার ..?”(আলিয়া বেগম)

“” ইউ নো ওয়াট আপনার হাত ধরার বিন্দু মাত্র ইচ্ছা আমার নেই কিন্তু যেখানে আমার বেস্টু মুনের বেপার সেখানে আমি অন্য কারোর হাত ভাঙতে পিছ পা হবো না..”” কথা টা বলে ফারিহা আলিয়া বেগমের হাত জোড়ে ঝাড়ি মেরে ফেলে দিলো…

“” এই তোরা দারিয়ে আছিস কেন ? আবিদ কে নিয়ে আয় যা..”” আফজাল সাহেবের হুমুক পেয়ে তার লোকজন আবিদের দিকে এগোতে আবিদ প্রত্যেককে ইচ্ছে মতো মারতে থাকে … আবিদ কে তারা আগে থেকে চিনে আবিদের রাগ সম্পর্কে অবগত , তারা আবিদ কে আঘাত করা দ্বিতীয় কোন স্কোপ পেলনা কয়েক মিনিটে আবিদ প্রত্যেক কে মেরে শুইয়ে দিলো ,,, আবিদের রাগ দেখে আফজাল সাহেব শুকনো ঢোক গিললো …

“” তোমাকে আমার নিজের বাবা বলতে আজ ঘৃনা লাগছে ৷ তুমি এতো জঘন্য যে নিজের লোক জন নিয়ে এসেছো আমাকে তুলে নিয়ে যাবে বলে হ্যা ..””

“” ফিরে চলো আবিদ এই ফকিন্নির মেয়েটাকে ভূলে যাও আর আমার সাথে চলো কথা দিচ্ছি এই তিনমাস দশ দিনের কথা আমি ভূলে যাবো..””

“” কিন্তু আমি ভূলবো না ৷””

“” এর পরিনাম কিন্তু আরো ভয়াবহ হবে আবিদ …”” হঠাৎ ফারিহা এসে আবিদের পাশে দারিয়ে বলে ওঠে

“” জিজু তুমি মুনকে নিয়ে উপরে যাও প্লিজ আর এনাকে আমি হেন্ডেল করছি… “”

আবিদ ফারিহার মুখে বাকা হাসি দেখে বুজতে পারলো এই লোকটার জন্য ফারিহা বিশেষ কিছু আয়োজন করেছে ৷ আবিদ মুনের কাছে এসে মুন কে সবার সামনে কোলে তুলে নিয়ে উপরে চলে যেতে লাগলো…

“” তো মিস্টার আফজাল সাহেব কি বলছিলেন যেন জিজু কে পরিনাম খারাপ হবে রাইট?””

“” এই মেয়ে কে তুই আর আমাদের বাপ ছেলের ভিতর কথা বলার সাহস কি করে পাশ ব…. বাকি টুকু আর বলতে পারলো না কারন আয়ানের হাতে ঘুশি খেয়ে ছিটকে মাটিতে পরে যায় আফজাল সাহেব ….

“” হাউ ডেয়ার ইউ, তোর সাহস কি করে হয় আমার জানপাখির সাথে এমন ভাবে কথা বলার হুম..” আয়ান আবার মারতে যাবে তখনি আবির নিরব আয়ানকে আটকে ফেলে…

“” আয়ান মাথা ঠান্ডা করো প্লিজ যাস্ট দু মিনিট অপেক্ষা করো তারপর এদের সব অহংকার ছাই হয়ে যাবে…”” (ফারিহা)

“” মানে কি বলছো তুমি “” (আয়ান)

“” ওয়েট আর দশ সেকেন্ড 10 ,9, 8, 7,6,5,4,3,2,1…. “”

ফারিহার কাউন্ট করা শেষ হতে আলিয়া বেগম আর আফজাল সাহেব দুজনের ফোন বেজে ওঠে .. দুজনে কল রিসিব করে কানে ধরতে দুজনের চোখ মুখের রঙ পাল্টে গেল৷

“” কিহ আগুন , আগুন কি করে লাগলো মিজান গোডাউনে আমার কোটি টাকার মাল পরে আছে ৷””

“” সব শেষ ভাই , সব পুরে ছাই হয়ে গেছে…””(মিজান)

আফজাল সাহেব ধপ করে আবার মাটিতে বসে পরলেন….

“” সব শেষ হয়ে গেল আমার , আমি যে এবার পথের ভিকারি হয়ে গেলাম আবির….””

এদিকে আলিয়া বেগম থম মেরে দারিয়ে আছে ৷ তার এতো গুলো বছরে একটু একটু কষ্টে গড়া দোকানটায় মুহূর্তে আগুন লেগে সব ছাই হয়ে গেছে শুনে আলিয়া বেগম যেন থম কে গেছে ৷

আবির ফারিহার হাত ধরে টেনে আড়ালে নিয়ে যায়..

“” হাউ ডেয়ার ইউ ফারিহা , তোমার সাহস কি করে হয় আমাদের গোডাউনে আগুন দেওয়ার..?? এর পরিনাম যে আমরা রাস্তায় এসে দারাবো এটা নিশ্চয় জানতে?””

“” একদম , এই ফারিহা কখনো হোম ওয়ার্ক ছাড়া কোন কাজ করে না ৷ আমি জানতাম আপনার বাবা বিয়ের দিন এমন কিছু একটা করবে তাই আগে থেকে সব প্লান আমি করে রেখেছিলাম বাই দ্য ওয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই আপনাদের গোডাউনের সব মাল সেইভ আছে ৷ আর ওগুলো আমার হেফাজতে আছে সময় হলে সব মাল পেয়ে যাবেন…””

আবির টোটালি শক্টড ফারিহার কথা শুনে ৷ মেয়েটা যে এতোটা ডেন্জারাস হতে পারে এটা আবিরের জানা ছিলো না ৷

আবির এগিয়ে গেল তার বাবার দিকে এদিকে আজমিরের মাথা খারাপ হওয়ার যোগার এতোটাকার মাল আগুনে পুরে ছাই হয়ে গেছে ৷ এখন পুরো পরিবার কে নিয়ে রাস্তায় দারাতে হবে ৷ এখন আর মুনদের সাথে তাদের কোন তফাৎ নেই৷

“” আব্বু দেখলে তো যে মেয়ের স্টান্ডার দেখে তুমি তোমার ছেলের বউ করতে নারাজ ছিলে আর আজ তার সেই স্টান্ডারে আমরা দারিয়ে আছি ৷ ওদের আর আমাদের মধ্যে কোন তফাৎ নেই…”(আবির)

আফজাল সাহেব কিছু বললেন না ৷ উঠে দারিয়ে বাইরের দিকে হেটে চলে গেলেন৷ আলিয়া বেগম আগেই বেরিয়ে গেছে ৷ ফারিহা গার্ডদের ডেকে আহত লোকদের কাছের একটা হসপিটালে ভর্তি করিয়ে দেয়৷
.
.
.
.
আবিদ মুন কে রুমে রেখে আড়ালে দারিয়ে সবটা শুনতে পায়৷ গোডাউনে আগুন লাগার বিষয় টাও জানতে পারে ৷ ফারিহা গেস্ট দের সামলে উপরে এসে দেখে আবিদ দারিয়ে আছে ৷ ফারিহা বুজতে পারলো আবিদ সবটা জানতে পেরে গেছে তাই পুরো সত্যিটা আবিদ কে বলা উচিত বলে ফারিহা মনে করে…..

“” জিজু কিছুক্ষন আগে যে কথা গুলো শুনলে তা সবটা সত্যি না…””

“” মানে ..””

“” মানেটা হলো গোডাউনে আগুন ঠিকি লেগেছে তবে কোন মাল পুরে যায়নি সব সেইভ আছে আমার কাছে ৷ শুধু মাত্র তোমার বাবা কে একটু টাইড দিতে এই ব্যবস্থা “”

কথাটা শুনে আবিদ সস্থির নিশ্বাস ফেললো….

“” জিজু এখন এইসব কথা চিন্তা করার থেকে তোমাদের ফার্স্ট নাইটের কথা ভাবো ,””

“” তাই নাকি জানপাখি তুমি দেখছি আবিদ আর শালিকার থেকে ওদের ফাস্ট নাইটের কথা তুমি ভাবছো কারন টা কি হুম?”” পিছুন থেকে কোমর জরিয়ে কথা গুলো বললো আয়ান…

“” আয়ান হচ্ছেটা কি জিজুর সামনে ছাড়ো বলছি ..””

“” উহু আজ ছাড়বো না আর আজ শুধু আবিদ আর মুনের বাসর হবে না আমাদের ও হবে ..””

“” ধ্যাত কি বলছো এই সব ..””

আবিদ শিষ বাজিয়ে বলে উঠলো “” দারুন হবে আয়ান তাহলে তুমিও দ্বিতীয় বার বাসর করে ফেলো ৷””

“” একদম…””

ফারিহা আয়ান কে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়…..

বিয়ের বাড়ির সব কাজ শেষ করতে করতে রাত প্রায় এগারোটা বেজে বিশ মিনিট , আয়ান নিরব সামির মিলে ফুল সজ্জার খাট সাজিয়েছে মুন সেই ফুলে সজ্জিত বিছানার মাঝে বসে আছে ৷ এদিকে আবিদ আয়ান সাব্বির নিরব তিন জন মিলে ফারিহা সানজু তন্নির সাথে কথা কাটাকাটি করে যাচ্ছে ,,,

“” দেখুন জিজু আমরা গেট ধরেনি কিন্তু বাসর ঘরে ঢুকতে হলে আপনাকে পঞ্চাশ হাজার টাকা দিতে হবে নাহলে রুমে ঢুকতে পারবেন না ..””(ফারিহা)

“” হ্যা ফারিহা একদম ঠিক বলেছে টাকা ছাড়ুন তারপর রুমে ঢুকতে পারবেন..””(সানজু)

“” এক মিনিট বাসর ঘর তো আমরা সাজিয়েছি তাহলে তোমরা টাকা চাও কোন হিসেবে?””(আয়ান)

“” তোমার বউ হিসেবে বুঝেছো আর একটা কথাও তুমি বলবে না “” রেগে বললো ফারিহা…

“” ওকে ফাইন টাকা দিচ্ছি কিন্তু সালি সাহেবাগন আমার কাছে ক্যাশ বিশ হাজার টাকা আছে পঞ্চাশ হাজার টাকা নেই তো…””

ফারিহা সানজু তন্নি কিছুক্ষন ফুসফুসিয়ে কিছু একটা বলে আবিদ কে বলে উঠলো..” ওকে ফাইন ছাড়ুন বিশ হাজার ..””

আবিদ টাকাটা বের করে ফারিহার হাতে দেয়৷ ফারিহা টাকাটা পেতে আয়ান ফারিহা কে কোলে তুলে নিয়ে নিজেদের রুমে চলে গেল ৷ তন্নি তার হাসবেন্ট সাব্বিরের সাথে রুমে চলে গেল কিন্তু সানজু আর নিরব দারিয়ে আছে ৷ নিরব সানজু কে চোখ মেরে বলে…”” বেবি তোমাকে কোলে নিয়ে রুমে যাই কি বলো?””

“” ধ্যাত আমরা কি হাসবেন্ট ওয়াইফ নাকি হুম..””

“” ওহ তাহলে এই বেপার ঠিক আছে চলো ..””

নিরবো সানজু কে নিয়ে বেরিয়ে যায় বাড়ি থেকে …

আবিদ দরজা লক করে চারিদিকে চোখ বুলিয়ে নেয়… পুরো রুম টা ফুলের ঘ্রানে মৌ মৌ করছে ৷ চারিদিকে ক্যান্ডেল জ্বলছে ৷ তার সাথে সাথে ফেয়ারি লাইট জ্বলতে ৷ এ যেন এক রোমান্চকর পরিবেশ ৷ পুরো রুমের মধ্যে খানে একহাত ঘোমটা দিয়ে বসে আছে তার প্রান প্রিয়সী…

আবিদ পান্জাবি খুলে একপা একপা করে মুনের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো ৷ মুন বিছানার চাদর খামচে ধরে আছে ৷ আবিদ যতো তার দিকে এগিয়ে আসছে মুনের হৃদ স্পন্দন ততোবেশি দ্রুত গতিতে চলছে ৷ মনে হচ্ছে এখুনি হৃদয়টা লাফিয়ে বেরিয়ে আসবে৷

আবিদ মুনের ঘোমটা তুলে মুনের লজ্জা ভয় মিশ্রিত মুখটার দিকে তাকিয়ে আছে ৷ এতো গুলো দিন এতো গুলো মাস এতো গুলো বছর পর তার প্রান প্রিয়শী কে নিজের করে পেতে চলেছে ৷

আবিদ মুনের গাল দুটো ধরে কপালে ঠোটের স্পর্শ ছুইয়ে দিয়ে বলে উঠলো “” মনপাখি যাও উজু করে আসো এক সাথে নামাজ পরবো তারপর আমরা নতুন জীবনে পা রাখবো….

মুন ওয়াশরুমে গিয়ে উজু করে আসে তারপর আবিদ উজু করে এসে নামাজ পরে নেয় ৷ নামাজ পড়া শেষ হলে আবিদ মুন কে কোলে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিইয়ে মুনের শরীল থেকে একটা একটা করে গহনা খুলতে থাকে৷ মুন লজ্জায় চোখ বন্ধ করে আছে৷ আবিদ মুনের কানের কাছে মুখ এনে ফিস ফিস করে বলে উঠলো “” ভালোবাসি মনপাখি, আজ তোমার ভালোবাসায় আমি ডুব দিতে চাই “”

আবিদের প্রত্যেকটা কথায় শিউরে উঠছে মুন ৷ মুনের চুপ থাকতে দেখে আবিদ মুচকি হেসে মুনের ঠোটে ঠোট বসিয়ে দেয়৷ পূর্নতা পায় মুন আবিদের নীরব ভালোবাসা৷
.
.
.
.
” ডাক্তার রিদ ভাইয়ার এমন করছে কেন কি হয়েছে ..?””(প্রিয়ন্তি)

ডাক্তার প্রিয়ন্তির কোন কথার জবাব না দিয়ে নার্স কে বললো রিদ কে ইনজেকশন দিতে ৷ এদিকে প্রিয়ন্তি রিয়ানা বেগম রায়হান আহাম্মেদ রিমা ভয়ে তাদের হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে রিদের কোন খবর পাচ্ছে না ভিতর থেকে ,,, প্রিয়ন্তির কেন যেন মনে হলো মুন কে সবটা জানানো উচিত হয়তো রিদ আর বাঁচবে না ৷ প্রিয়ন্তি রিদের বাবার কাছ থেকে প্রিয়ন্তির নাম্বার টা নিয়ে ফোন করে ,,,, এদিকে মুন……
.
.
.
#চলবে………………