নেশাক্ত ভালোবাসা পর্ব-৪২+৪৩

0
1257

#নেশাক্ত_ভালোবাসা
#লেখিকাঃ Tamanna Islam
#পর্বঃ ৪২

পরেরদিন সকালে আইরাতের ঘুম ভেঙে যায়। পাশে থাকা বড়ো থাই গ্লাস টা সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন তাতে ঝুলছে সাদা কিছু পর্দা। পর্দা গুলো ভেদ করেই ভেতরে সূর্যের আলো প্রখর ভাবে পরছে। আইরাত পিটপিট করে চোখ মেলে তাকায়। সব কেমন যেনো একটু ঘোলা ঘোলা লাগছে দেখতে। মাথার পাশে হাত দিয়ে চোখ মুখ খিচে বন্ধ করে উঠে বসে। মাথা টা বেশ ধরে এসেছে, ঝিমঝিম করছে। হাতের উলটো পাশ দিয়ে চোখ গুলো ডলতে ডলতে নিজের চারিপাশে খেয়াল করে। দেখে সে একটা তুলতুলে সাদা বিছানাতে বসে আছে। আইরাত সারা ঘরে চোখ বুলায়। এই এখন সে কোথায় আছে? এটা কার রুম? আইরাত কিছু বুঝতে না পেরে যেই না খানিক চিৎকার দিয়ে উঠতে যাবে তখনই তার নিজের দিকে খেয়াল হয়। কাল রাতের লাল লেহেঙ্গা টা এখনো সে পরেই রয়েছে। আর এখন আইরাতের মনে পরে যে ওহহহ হো কাল তো তার আব্রাহামের সাথে বিয়ে হয়ে গেছে,, আর এটা আব্রাহামের বাড়ি। আইরাত চুপ করে বিছানাতে বসে পরে। আব্রাহাম কে খুঁজছে। সে কোথায়, দেখতে পারছে না যে। আইরাত বসে বসে নিজের মাথা চুলকাতে লাগলো। তখনই হাতে একটা মিনি ফুড ট্রে নিয়ে আব্রাহাম রুমে ঢুকে।

আব্রাহাম;; Good morning my lovely wife ❤️🥀..

আইরাত;; Very good morning…

আব্রাহাম;; ঘুম ভাংলো তাহলে?

আইরাত;; হ্যাঁ

আব্রাহাম;; হুমমম।

আব্রাহাম এসে আইরাতের সামনে বসে। আইরাতের দিকে ঘোর লাগা নয়নে তাকিয়ে আছে। আইরাত হেসে মাথা নিচে নামিয়ে ফেলে।

আব্রাহাম;; যাক উঠেছো আমি তো ভেবেছিলাম আজ উঠবেই না।

আইরাত;; না উঠার কি আছে? আর কয়টা বাজে?

আব্রাহাম;; ৯ঃ৪৫।

আইরাত;; কিহহহহ? ৯ঃ৪৫ বেজে গেছে?

আব্রাহাম;; হ্যাঁ, তাতে এমন করছো কেনো, কি হয়েছে?

আইরাত;; আরে আমাদের বিয়ে হয়েছে আর আজ আমার এখানে প্রথম দিন বিয়ের পর৷ মানে আমি আজ নতুন বউ আর সকাল সকাল উঠে রান্না করবো তা না করে আমি কিনা পরে পরে ঘুমাচ্ছিলাম। আপনি আমাকে আগে ডাক দিন নি কেনো?

আব্রাহাম;; মানে এই কথা টা একটু বেশিই টিপিকাল হয়ে গেলো না 🤨 !!

আইরাত;; টিপিকালের কি আছে নতুন বউ এভাবে বেলা করে ঘুম থেকে উঠলে চলে?

আব্রাহাম;; হে রিলেক্স, ফার্স্ট অফ অল এখানে শুধু তোমার জামাই আছে আর তোমার দাদি আছে ওকে। এমন ভাবে বলছো যেনো এটা কোন যৌথ একটা পরিবার আর অনেক মানুষ। স্পেশালি কুটনামি করার জন্য ননদ-ফুপুশাশুড়ী, চাচি শাশুড়ী এরা আছে। এখানে কেউই নেই। আমাদের ছোট্ট একটা পরিবার। আর তুমি যা ইচ্ছে করতে পারো।

আইরাত;; তবুও! কেমন দেখায় না সব।

আব্রাহাম;; কিচ্ছু দেখায় না। আর হ্যাঁ দাদি নিজেই তোমার জন্য ব্রেকফাস্ট পাঠিয়ে দিয়েছে।

আইরাত;; ধুর যেখানে আমার এইসব করার কথা সেখানে দাদি করছে সব। বিয়ে করে লি লাভ।

আব্রাহাম;; কি বললা তুমি? কাজ করবে কেনো? খবরদার রান্নাঘরে পা রাখলে পা কেটে রেখে দেবো।

আইরাত;; আরেএএএ কি….

আব্রাহাম;; ঘুম থেকে ওঠেছো, গাল গুলো ফুলে রয়েছে।

আইরাত;; ধুর আপনি আবারও আমার গাল নিয়ে পরেছেন।

আব্রাহাম হেসে আইরাতের দুই গালে ধরে চুমু খায়।

আব্রাহাম;; বেবিগার্ল কাল রাতে যা হয়েছে না ইশশশশ।

আইরাত;; এই কি হয়েছে 🙄?

আব্রাহাম;; সব হয়েছে।

আইরাত;; আব… মা মমানে কখন কীভাবে?

আব্রাহাম;; কীভাবে আর যেভাবে হয় সেভাবেই।

আইরাত;; না মানে আসলে কই আমি তো কিছুই টের পেলাম না।

আব্রাহাম;; হুমমম।

আইরাত;; দেখুন আমার কেমন যেনো লাগছে প্লিজ আজগুবি কথা বলবেন না। কি হয়েছে কাল?

আব্রাহাম;; কাল আমাদের বাসর ছিলো জানপাখি। আর এই রাতে কি কি হয় তা অবশ্যই তোমাকে খুলে বলতে হবে না।

আইরাত;; 🙁🙁

আব্রাহাম;; আরে আচ্ছা হয়েছে মুখ লটকাতে হবে না। কিছুই হয় নি। তবুও তুমি অনেক কিছু করেছো।

আইরাত;; হ্যাঁ? আমি আবার কি করলাম?

আব্রাহাম;; কি করেছো? বলো যে কি করো নি!?

আইরাত;; আচ্ছা এমন কি হয়েছে বলুন না।

আব্রাহাম;; আসলে আমার একটু ভুল হয়েছে। কাল রাতের সবকিছু আমার রেকর্ড করে রাখা উচিত ছিলো যেনো তা তোমাকে দেখাতে পারি।

আইরাত;; আমার কিন্তু টেনশন লাগছে অনেক বলুন না কি হয়েছে। কাল আমি কি করেছি? আর আমার কিন্তু এখন কিছুই মনে পরছে না।

আব্রাহাম;; আগে তুমি এই লেবুর শরবত টা খেয়ে নাও।

আইরাত;; কেনো?

আব্রাহাম;; আগে খাও তারপর বলছি।

আইরাত লেবুর শরবর খাচ্ছে তখনই আব্রাহাম বলে ওঠে….

আব্রাহাম;; হ্যাংওভার ছাড়াতে এই লেমন জুস অনেক বেশি উপকারী। এমনকি যারা ড্রিং করে তাদের নিত্যদিনের সঙ্গী এই লেমন জুস।

আব্রাহামের কথায় আইরাতের কিছুটা কাশি উঠে গেলো। আব্রাহাম আইরাতের কাছে যায়।

আব্রাহাম;; আরে বাবা আস্তে ধীরে খাবে তো নাকি।

আইরাত;; আহাম, আহাম। আপনি কি বললেন?

আব্রাহাম;; কি?

আইরাত;; হ্যাংওভার ছাড়াতে মানে?

আব্রাহাম;; এক ফোটাও মনে নেই তোমার কি হয়েছে?

আইরাত;; না।

আব্রাহাম;; হাহাহা, হাহাহাহা 😆। কাল রাতে আমি যখন এই রুমে আসি তখন তুমি করিডরে ছিলে তাও ড্রাং অবস্থায়। হাতে এলকোহলের বোতল নিয়ে গান গাচ্ছিলে। তারপর শুরু হয় তোমার পাগলামি। কি কি যে বলেছো তুমি আমাকে। এমনকি ঘুমের মাঝেও বকবক করেছো আমার মিসেস. বকবক।

আইরাত;; এ্যাঁএএএএএএএএএএএএএ 😟😟??

আব্রাহাম;; হ্যাঁএএএএএএএ।

আইরাত;; কি বলেন?

আব্রাহাম;; সত্যি।

আইরাত;; আমি মদ খাবো কেনো?

আব্রাহাম;; আমি হ্যান্ডসাম, আমার মাসালস এতো ফুলো কেনো, আমি তোমার কুচুপুচু জামাই 😂। ওহহ গড।

আইরাত;; 🤦‍♀️

আব্রাহাম;; কি যে করেছো তুমি? আমি সারারাত এগুলো ভেবে ভেবে হেসেছি।

আইরাত;; আরো কি কিছু বাকি আছে?

আব্রাহাম;; হ্যাঁ আছে তো। তুমি বলেছো আমাকে তুমি অনেক অনেক বেশি ভালোবাসো। আর আমার গালে টাইটলি একটা পাপ্পি দিয়েছো।

আইরাত;; হায়রে।

আব্রাহাম;; আচ্ছা তুমি নাকি আমার কালেকশন গুলো থেকে ওই এলকোহলের বোতল নিয়েছো। কেনো নিয়েছো বলো তো আর তা তুমি চিনলে কীভাবে?

আইরাত;; আরে না আমি বলি শুনুন। আপনার তো আসতে অনেক দেরি হচ্ছিলো তাই আমি এখানেই বসে ছিলাম আসলে ফোনে গেমস খেলছিলাম কিন্তু তখন আমার খুদা লেগে যায়। তাই বাইরে বের হয়ে পরি। তখন একজন স্টাফের সাথে আমার দেখা হয়। সে আমাকে বলে যে আমার কিছু লাগবে নাকি? যদি আমার কিছু লাগে তাহলে যেনো আমি ওকে বলি আর সে এনে দিবে। তখন আমি কোল্ড ড্রিংকস এর কথা বলি। আর তখন সে আমায় বলে যে আপনার রুমের পাশেই নাকি সব আছে গেলেই পেয়ে যাবো। তখন আমি এসে পরি। ফ্রিজের মতো একটা কিছু দেখি। তা খুলে দাড়াই। কিন্তু তাতে সব বড়ো বড়ো কাচের বোতল ছিলো আর ভেতরে লাল পানি। তো সেখান থেকে একটা নিয়ে আমি এসে পরি 😒😒।

আব্রাহাম;; সেটা ওয়াইন ছিলো ( দুইহাত ভাজ করে)

আইরাত;; কি?

আব্রাহাম;; হ্যাঁ।

আইরাত;; কিন্তু আমি চিনতাম কি করে। বোতলে কোন লগো র‍্যাপার ছিলো না, কিছুই ছিলো না। আমি তো ভেবেছি কোকা কোলা।

আব্রাহাম;; Are you kidding with me Airat!! কোল্ড ড্রিংকস আর ওয়াইনের মাঝে রাত-দিন তফাত।

আইরাত;; আমি বুঝি নাই।

আব্রাহাম;; আচ্ছা বুঝলাম। এবার ছাড়ো ওইসব কথা উঠো উঠে ফ্রেশ হয়ে নাও। আজ ফাংশন আছে।

আইরাত;; ফাংশন মানে? কাল না বিয়ে করলাম আজ আবার ফাংশন কিসের?

আব্রাহাম;; বিয়ের পরেরদিন রেসিপশন হয়। আর আজ রেসিপশন।

আইরাত;; এমা আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম। আমি আর পারবো না আব্রাহাম প্লিজ। এই গত ২-৩ দিনে আমি খুব ক্লান্ত। অনেক দৌড় ঝাপ হয়েছে।

আব্রাহাম;; আরে রেসিপশন এতো বড়ো সড়ো করে হবে না। ঘরোয়া ভাবেই হবে। মানে শুধু বাড়ির লোকজন আর কি, আমরা আমরাই।

আইরাত;; ওহহ আচ্ছা।

আব্রাহাম;; শশুড়আব্বু-আম্মুও এখানে আসছে। রহিত-আরুশি, অয়ন-দিয়া, কৌশল-অবনি, রাশেদ, দাদি। তুমি & আমি শেষ এইতো। আর বাড়িতে স্টাফের অভাব নেই সব তারাই করবে। কোন ঝামেলা নেই।

আইরাত;; উফফফফ যাক বাবা বাচলাম।

আব্রাহাম;; এখন উঠো জলদি।

আইরাত;; আচ্ছা।

আইরাত উঠে ফ্রেশ হতে চলে যায়। আর আব্রাহাম বাইরে চলে যায়।

প্রায় বিশ মিনিট পর আইরাত ওয়াসরুম থেকে বের হয়ে পরে। আগে ওয়াসরুমের দরজা খুলে মাথা টা একটু বের করে রুমে ভালোভাবে তাকিয়ে দেখে নেয়। নাহ, কেউ নেই রুম ফাকা। আইরাত গুটি গুটি পায়ে রুমের ভেতরে আসে। আসলে শাড়ি পড়তে হবে।ওয়াসরুম থেকে কোন রকমে বের হয়ে নিজের মাথার চুল গুলো মুছছে। ভিজে থাকা চুল গুলো দিয়ে টপটপ করে পানি ঝড়ছে। আর তখনই আব্রাহাম ফোনে কথা বলতে বলতে রুমে আসে। কথা বলা শেষ হলে ফোন টা কেটে দিয়ে রুমের দরজা খুলে। দরজা খোলার শব্দ পেয়ে আইরাত ঘুড়ে পেছনে তাকায়। দেখে আব্রাহাম। আব্রাহাম যে এসেই আইরাতকে এমন একটা অবস্থায় দেখবে তা সে ভাবে নি। আব্রাহাম তো আইরাতকে দেখে থমকে যায়।
আর আইরাত টাওয়াল টা নিজের ওপরে রেখে দেয়। আর সাথে কিছুটা চিল্লিয়ে ওঠে…

আইরাত;; এই এইই আপনি কি করেন এখানে বের হন বের হন। একটু পরে আসেন। আব্রাহাম প্লিজ বাইরে যান।

আইরাত তো নিজের মতো করে বকবক করেই যাচ্ছে। কিন্তু আব্রাহাম বাকা হেসে আরো ভেতরে এসে দরজা লাগিয়ে দেয়। সোফার ওপর হাতে থাকা ফোনটা হালকা ঢিল দিয়ে রেখে দেয়। আইরাত যতোই তাকে বাইরে যেতে বলছে আব্রাহাম তার হাত গুলো প্যান্টের পকেটে রেখে ততই আইরাতের দিকে এগিয়ে আসছে। আসতে আসতে একসময় আব্রাহাম একদম আইরাতের কাছে এসে পরে। আব্রাহাম তার এক হাত দিয়ে আইরাতের খালি কোমড় জড়িয়ে ধরে। আইরাত কে নিজের আরো কাছে টেনে আনে। একদম নিজের সাথে মিশিয়ে ফেলে। তারপর আইরাতের ওপর থেকে টাওয়াল টা সরিয়ে ফেলে। আইরাতের মুখ দিয়ে যেনো কোন কথা বের হচ্ছে না। শুকনো কিছু ঢোক গিলে সে। আব্রাহাম আইরাতের গলাতে থাকা পানিবিন্দু গুলো ছুইয়ে দেয়। আইরাতের গলাতে একটা কালো তিল দেখে আব্রাহাম কেমন যেনো পাগল পাগল হয়ে গেলো। আব্রাহাম ফট করেই এক নিমিষেই আইরাতের গলাতে নিজের মুখ ডোবায়। আইরাতের শরীরের শিড়দাড়া গুলোতে যেনো শিহরণ বয়ে যায়। আব্রাহাম এক হাত আইরাতের কোমড়ে শক্ত ভাবে ধরে রেখেছে আরেক হাত আইরাতের ঘাড়ের পেছনে নিয়ে তার ভেজা ভেজা চুলগুলোর মাঝে দিয়ে রেখেছে। আর আব্রাহাম নিজে আইরাতে মগ্ন। আইরাত তার দুই হাত দিয়ে আব্রাহামের গায়ের শার্ট টা খামছে ধরে। এভাবে দুইজন এক হয়ে ঠিক কতোক্ষন দাঁড়িয়ে ছিলো তা মনে নেই। হঠাৎ আইরাত আব্রাহাম কে সরিয়ে দিয়ে এসে পরতে নেয় কিন্তু তখন আবার আব্রাহাম আইরাতের হাত ধরে টান দিয়ে তাকে নিজের কাছে আনে। এবার আইরাতের পিঠ টা ঠিক আব্রাহামের বুকের সাথে একদম লেগে আছে। আব্রাহাম আইরাত কে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে তার ভেজা তীব্র সুগন্ধি যুক্ত চুল গুলোতে নাক-মুখ সব ডুবিয়ে দেয়। আব্রাহাম আইরাতের ভেজা ঘাড়ে নিজের নাক টা ঘেষতে ঘেষতে নেশাক্ত কন্ঠে বলে ওঠে….

আব্রাহাম;; এতো নেশাক্ত কেনো তুমি। তোমার কাছে এলে আমার যে পরিমাণ নেশা ধরে তা আমার মদ্যপান করলেও হয় না। আমার সব নেশা যেনো তোমাতেই রয়েছে। আমার নেশা তুমি। যাকে ছাড়া আমি আমি মরেই যাবো।

আইরাত;; __________________

আব্রাহাম;; শাড়ি টা আমি পড়িয়ে দিচ্ছি।

আব্রাহামের কথায় আইরাত কিছুই বলে না। আব্রাহাম আইরাত কে ছেড়ে দিয়ে টাওয়াল এনে তার চুলগুলো মুছে দিতে থাকে। তারপর শাড়ি নিয়ে আইরাতের কাছে আসে। শাড়িটা আব্রাহামেরই চুজ করা। সাদা ধবধবে আর তার মাঝে গোলাপি রঙের থোকা থোকা গোলাপ ফুলের মতো ডিজাইন করা। শাড়িটা কিছুটা নেটের। অনেক বেশি সুন্দর। আব্রাহাম শাড়ি টা এনে দাঁড়িয়ে পরে। একহাত কোমড়ে দিয়ে আরেক হাত মুখে ঠেকিয়ে একবার আইরাতের দিকে আরেকবার শাড়ির দিকে তাকায় আব্রাহাম। আইরাত তো শুধু তাকিয়ে আছে তার মতো করে। তারপর আব্রাহাম কাজ শুরু করে। শাড়ির একটা সাইড আইরাতের কোমড়ে গুজে দেয়। তারপর আস্তে আস্তে কুচি দেয়, আশে পাশে ঠিক করে দেয়। আচল টা বেশ বড়ো রাখে শাড়ির। যেই শাড়ি পরতে আইরাতের সময় লাগে প্রায় এক ঘন্টা। মাঝে মাঝে তো রাগও উঠে যায় এই শাড়ি পরতে গিয়ে তাও শাড়ি ভালোভাবে পরাই হয় না। আর সেই শাড়ি এখন কিনা আব্রাহাম তাকে পড়িয়ে দিলো মাত্র ১৫ মিনিটে। শাড়ি পড়ানো শেষ হলে আব্রাহাম নিচে এক হাটু ভাজ করে বসে আইরাতের শাড়ির কুচি গুলো আরো একটু ঠিকঠাক করে দেয়। পুরোপুরি শাড়ি পরানো শেষ হলে আব্রাহাম কিছুটা দূরে গিয়ে দুই হাত কোমড়ে রেখে আইরাত কে আপাদমস্তক দেখতে থাকে।

আব্রাহাম;; Now It’s Perfect 🥀…

আইরাত আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে পুরো দেখে নেয়। আইরাতের মুখ হা। আইরাত চোখ বড়ো বড়ো করে আব্রাহামের দিকে তাকায়। আব্রাহাম হেসে দিয়ে আইরাতের কাছে আসে। তারপর তাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে আয়নাতে তাকায়।

আব্রাহাম;; অনেক সুন্দর লাগছে। বউ এতো কিউট হলে প্রব্লেম আছে। আমি সামাল দিবো কি করে।

আইরাত;; আগে আপনি বলুন যে আপনি এত্তো সুন্দর আর এতো ভালো করে শাড়ি পড়ানো কোথা থেকে শিখলেন??

আব্রাহাম;; বিয়ের আগে অনেক গুলো গার্লফ্রেন্ড ছিলো তো তাই তাদের শাড়ি পরিয়ে দিতে দিতে শিখে গেছি।

আইরাত;; কিইইইইইইই বললেন 😡😡🤬?

আব্রাহাম;; আরে বাবা মজা করছি। আমার কেউ ছিলো না। তুমিই ছিলে, আছো আর থাকবে।

আইরাত;; হাহ।

আইরাত মুখ ভেংচি কেটে চলে আসতে নিলে আব্রাহাম আবার তার হাত ধরে আয়নার সামনে বসিয়ে দেয়। তারপর হেয়ার ড্রাইয়ার দিয়ে আইরাতের চুল শুকিয়ে দিতে থাকে। শুকিয়ে গেলে খুব সুন্দর ভাবে চুল গুলো আচড়িয়ে দেয়। মানে আজ আইরাতকে সম্পূর্ণ ই আব্রাহাম রেডি করিয়ে দেয় নিজের হাতে।

আব্রাহামও রেডি হয়ে যায় আইরাতের সাথে কিছুটা ম্যাচ করে। তবে সে লাইট অলিভ কালারের পাঞ্জাবি পরেছে। পাঞ্জাবির হাতা গুলো ফোল্ড করা। And as always তাকে দেখেতে সেই পরিমানে সুদর্শন লাগছে। কিছুক্ষন পর একজন স্টাফ এসে আব্রাহাম-আইরাত কে নিচে যেতে বলে কেননা সবাই এসে পরেছে।

আব্রাহাম;; যাওয়া যাক! (নিজের বাহু টা আইরাতের কাছে এগিয়ে দিয়ে)

আইরাত;; অবশ্যই।

আইরাত আব্রাহামের বাহুর মাঝে নিজের হাত রেখে দেয় তারপর সিড়ি বেয়ে দুজনে নিচে নেমে পরে।

অয়ন;; ওইতো দি মোস্ট বিউটিফুল কাপল & দুই জামাই-বউ এসে পরেছে।

আব্রাহাম-আইরাত চলে যায় নিচে। সবাই অনেক আড্ডা দিচ্ছে। বাড়ি ভরা মানুষ। কি যে ভালো লাগছে। জমজমাট একটা পরিবেশ। আর এভাবেই সেইদিন হেসে-খেলেই সবার দিন টা কেটে যায়।





চলবে~

#নেশাক্ত_ভালোবাসা
#লেখিকাঃ Tamanna Islam
#পর্বঃ ৪৩ ❤️✨

— আজ দিন টা অন্যরকম। আকাশ টা আজ গাঢ় নীল আর সাদা রঙে বেশ রঙিন। পরিবেশে কেমন এক মুখরিত ভাব। সূর্যের রোদ আজ নেই বললেই চলে। পরিবেশ টা কেমন জানি স্নিগ্ধ-শীতলময়। আশে পাশে গাছ-গাছালি গুলো তীব্র বাতাসে খেলা করছে। গাছের পাতাতে বাতাস লেগে একটা যেনো আরেকটার সাথে খেলা করছে। আর সেগুলোর বাতাস এসে কান অব্দি পৌঁছাচ্ছে। হুট করেই আকাশ টা কেমন আবছা আবছা কালো মেঘে ঢেকে গেলো। বাতাস টা আরো জোরে বইতে লাগলো। আকাশে মেঘের গুড়গুড় আওয়াজ হলো। অর্থাৎ বৃষ্টি আসবে। এটা বৃষ্টি আসার আগ মূহুর্ত। বৃষ্টি আসার আগ মূহুর্তে যেই মন ভোলানো বাতাস বয় তার ভালো লাগাটা মুখে ব্যাক্ত করা যাবে না, যায় না আসলে।

আইরাত জানালার কাছে বসে ছিলো। আব্রাহামের একটা অনলাইনে মিটিং ছিলো তাই সে ফোনে কথা বলতে বলতে বাইরে গিয়েছে। আব্রাহামের আসতে দেরি হচ্ছে দেখে আইরাত তার মুখ টা লটকিয়ে জানালার কাছে বসে ছিলো। তখনই মেঘ ডেকে উঠে। আইরাত জানালা দিয়ে বাইরে তাকায়। দেখে চারিদিকে কেমন এক সাজ সাজ ভাব করেছে। এটা দেখেই আইরাতের মন বাক-বাকুম হয়ে গেলো। আইরাত আবার দরজার দিকে তাকায় দেখে যে এখনো আব্রাহাম আসছে না। আর ঠিক তখনই আকাশে আরেকবার বেশ জোরে সোরে মেঘ গর্জন দিয়ে ওঠে। এবার আর আইরাতকে পায় কে? আইরাত দ্রুত পায়ে বিছানা থেকে নেমে পরে।

তবে আজ আইরাতের মাঝে ফুটে ওঠেছে এক অন্যরকম আলাদা ধাচের সৌন্দর্য। আইরাত এখন সাদা ধবধবে একটা শাড়ি আর লাল টকটকে একটা ব্লাউজ পরে আছে। হাতে চিকন কিছু চুড়ি। তার হাতে গোল গোল করে মেহেদী লাগানো। ঠিক যেমনটা আগের মানুষরা লাগাতো তেমন। কিন্তু এতেও যেনো আইরাতের হাত গুলোকে অসম্ভব সুন্দর লাগছে। সাদা হাতে লাল মেহেদি কেমন জ্বলজ্বল করছে। আব্রাহামের মতে আইরাত কে নাকি শাড়িতে অপূর্ব সুন্দর লাগে। আর তার এই অপূর্বতা থেকে চোখ সরানো বারণ। আইরাত কে এই শাড়ি টা পরিয়ে দিয়েছে আব্রাহাম তার নিজ হাতেই। আইরাতের পায়ে এক জোড়া নূপুর রয়েছে। সেটাও আব্রাহাম তার নিজ হাতেই পরিয়ে দিয়েছে। আইরাত প্রথমে ছুটে করিডরে চলে যায়। কিন্তু করিডরের ওপরে অনেক বড়ো ছাউনি আছে যার ফলে আকাশ দেখা যায় না। আইরাত একটা ভেংচি কেটে আবার ছুটে ছাদে চলে যায়।

আইরাত যেইদিক দিয়ে ছুটে যাচ্ছে সেখানেই যেনো আইরাতের পায়ে থাকা নূপুর গুলোর আওয়াজ সব ছনছন করে বেজে চলেছে। বাজছে তার হাতে থাকা সেই চুড়ি গুলোর রিমিঝিমি আওয়াজ। আইরাত গিয়ে সোজা ছাদের একদম মাঝখানে গিয়ে দাঁড়ায়। এবার যেনো আইরাত আনন্দের একটা নতুন ধারা খুঁজে পেলো। পরিবেশ টা কেমন একটু মেঘাচ্ছন্ন হয়ে এসেছে। বাতাসের বেগ টা আরো একটু ভারি হয়ে গেলো। নাকে ভেসে আসতে লাগলো এক সুমধুর মিষ্টি গন্ধ। প্রকৃতি যেনো আজ তার আপন লীলা-লাস্যে মেতে ওঠেছে। দূর আকাশে সেই পাখি গুলো তাদের ডানা ঝাপটে তাদের নীড়ে পৌছাচ্ছে। পরিবেশ টা কেমন ভারি ভারি। আগে থেকে আরো মেঘলা একটা ভাব হয়ে এলো। বেশ বুঝা যাচ্ছে যে গগন কাপিয়ে বৃষ্টি নামবে।

আইরাত হাটতে হাটতে ছাদের আরো মাঝখানে এসে দাঁড়ায়। আসলে ছাদ টা আকারে বিশাল বড়ো। কেউ এটাকে দেখে বলবে না যে এটা ছাদ। ছাদের এক পাশে অনেক গুলো ফুল রয়েছে। এমন কোন ফুল নেই যে সেখানেই নেই। তবে সবচেয়ে বেশি রয়েছে গোলাপ ফুলের গাছ। আইরাতের গাঢ় লাল গোলাপ পছন্দ দেখে আব্রাহাম নিজ হাতে গোলাপ গাছ গুলো লাগিয়েছে। বলা যায় ছাদের ওপরেই একটা ছোট খাটো বাগান রয়েছে। এবার হঠাৎ একটা দমকা বাতাস এসে আইরাতের গায়ে লাগলো। বাতাসে চুল গুলো উড়ে চলেছে। শাড়ির আচল টাও ছন্নছাড়ার মতো করে ঢেউ খেলিয়ে উড়ছে।

মুখ টা আকাশ পানে তুলে আপন মনে সেই মেঘাচ্ছন্ন আকাশে তাকিয়ে ছিলো আইরাত। তখনই টুপ করে এক বিন্দু বৃষ্টি ফোটা তার মুখের ওপর পরে। সাই করে আরেক দফা বাতাস বয়ে যায়। আইরাত যেনো এখন নিজেকে এই প্রকৃতির মাঝে অনুভব করতে পারছে। সে তার দুই আখি বন্ধ করে দুই হাত দুইপাশে মেলে দাঁড়িয়ে থাকে। ঠিক তার কয়েক মূহুর্তের পর হুড়মুড় করে ঝিরিঝিরি শব্দ তুলে বৃষ্টি নেমে এলো। আইরাত চোখ দুটো মেলে তাকায়। মুখের কোণে ফুটে ওঠেছে দীর্ঘ হাসির রেখা। আইরাত সেই এক জায়গাতেই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভিজতে লাগলো। ছাদে থাকা ফুলের গাছ গুলোতে বৃষ্টির শীতল পানি পরে সেগুলোর সুগন্ধি যেনো আরো দ্বীগুণ করে তুলেছে। বৃষ্টির পানি গুলো বেশ ঠান্ডা। আইরাত ভিজে একদম চুপচুপে হয়ে গেলো। গায়ে থাকা শাড়িটা ভিজে একদম আষ্ঠেপৃষ্ঠে লেগে ধরেছে তার সাথে। খোলা কোমড় টাতে পানির বিন্দু লেগে আছে। ঘাড়ে-গলাতেও পানির বেশ ছিটেফোঁটা লেগে আছে। চুল গুলো ভিজে একদম টপ টপ করে পানি পরছে। গলা গালের সাথে চুল গুলো কিছু লেগে ধরেছে। আকাশে এবার বিদ্যুৎ চমক দিয়ে উঠে। আইরাত পায়ে থাকা নূপুর গুলো ভিজে ওঠেছে। সে খালি পায়ে ছাদের এদিকে ওদিকে ছুটে বেড়াতে লাগলো। ছাদের এদিকে ওদিকে পানি জমে রয়েছে কিছু। আইরাত সেগুলো তার পা দিয়ে হাল্কা ভাবে ছিটিয়ে দিচ্ছে। নিজের মন প্রাণ খুলে বৃষ্টির পানিতে ভিজে চলেছে। আইরাতের যেনো আর কোন দিকে খেয়াল নেই সে নিজের আপন মন মতো। শাড়ি টা একটু উঁচু করে ছাদের একদিক থেকে আরেকদিকে দৌড়ে চলেছে। তবে এভাবে থাকতে থাকতেই কেনো যানি আইরাতের মনে হলো যে কেউ তাকে খুব বেশি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে দেখছে। আইরাত ঘুড়ে তার পেছনের দিকে তাকায়। দেখে ছাদের দরজাতে আব্রাহাম তার দুই হাত ভাজ করে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আব্রাহাম আইরাতের দিকেই তাকিয়ে আছে। আইরাত তো নিজের মতো করে বৃষ্টি কে উপভোগ করে চলেছিলো কিন্তু আব্রাহাম কে তার দিকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে আইরাতের বুকের ভেতর টা কেমন ধক করে ওঠে। শ্বাস ঘন হয়ে আসে। আইরাত বৃষ্টির মাঝে দাঁড়িয়ে আছে। বৃষ্টির পানি গুলো আইরাতের সারা গায়ে গড়িয়ে গড়িয়ে পরছে। আব্রাহাম একদম সাদা প্যান্ট আর শার্ট পরে দাঁড়িয়ে আছে। চোখ গুলো আইরাতে স্থীর। বৃষ্টির বেগ আরো বেড়ে গেলে আব্রাহাম কে কেমন ঝাপসা ঝাপসা লাগছে দেখতে। তখন আরো একবার বিদুৎ চমক দিয়ে উঠে। আইরাত এবার চমকে গিয়ে চোখ-মুখ কিছুটা কুচকে ফেলে।

আব্রাহাম এবার আর দাঁড়িয়ে না থেকে সোজা নিজের সামনে হাটা দেয়। বৃষ্টির পানিতে আব্রাহামও নেমে পরে। মূহুর্তেই আব্রাহামও ভিজে যায়। বৃষ্টি ভেজা পানিতে আব্রাহামের শার্ট টা ভিজে একদম তার গায়ে সাথে লেগে ধরে। ভেতর থেকে তার বডি স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। আব্রাহাম এসে আইরাতের সামনে দাঁড়িয়ে পরে। আব্রাহামের সামনের চুল গুলো ভিজে তা থেকে টপ টপ করে পানি পরছে। আব্রাহাম একবার আপাদমস্তক আইরাতকে দেখে নিলো। আব্রাহাম তার হাত টা আইরাতের গালে রাখে। আব্রাহামের শীতল হাতের স্পর্শ পেয়ে আইরাত কেমন যেনো কিছুটা কেপে ওঠে। আব্রাহাম এক হাত দিয়ে আইরাতের কোমড়ে ধরে নিজের কাছে নিয়ে আসে। আইরাত তার একটা হাত আব্রাহামের বুকের ওপরে রেখে দেয়। আব্রাহাম তার মাথা আইরাতের মাথার সাথে ঠেকিয়ে রাখে। তার একটা হাত আইরাতের গালে স্লাইভ করতে করতে বলে ওঠে…..

আব্রাহাম;; তোমার ধারনাও নেই জানপাখি তোমাকে এই বৃষ্টিভেজা শাড়িতে কি পরিমাণ আবেদনময়ী লাগছে।

আইরাত;; ________________

আব্রাহাম;; এমন করে আমার সামনে প্লিজ এসো না । ঠিক থাকতে পারি না আমি। নিজের ওপর কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলি আমি। নিজেকে কেমন পাগল পাগল লাগে। নিঃশ্বাস ভারি হয়ে আসে আমার। তোমাকে কাছে পাবার প্রবল ইচ্ছে জাগে।

আইরাত;; ________________

আব্রাহাম তার হাত দিয়ে আইরাতের গোলাপি ঠোঁট গুলো ছুইয়ে দেয়। আইরাত মাথা টা কিছুটা ঝুকিয়ে রেখেছে। আব্রাহাম আইরাতের কোমড়ে স্লাইভ করতে লাগে। আইরাত তার হাত দিয়ে আব্রাহামের শার্ট টা খামছে ধরে। আব্রাহাম দেখে আইরাতের গলায় ঘাড়ে পানি গুলো শিশির বিন্দুর ন্যায় চিকচিক করছে। আব্রাহাম এগুলো দেখে যেনো নিজের ওপর একদম লাগামহীন হয়ে গেলো। আর এক মূহুর্ত দেরি না করে আব্রাহাম আইরাতের গলায় মুখ ডুবায়। আইরাত আবেশে চোখ গুলো বন্ধ করে ফেলে। আব্রাহাম চুমুতে চুমুতে ভরিয়ে দিতে লাগলো আইরাতের ঘাড়ে। আইরাতের ভেতরে এক আলাদা অনুভূতি হচ্ছে। এক অজানা অনুভূতি যার নাম সে জানে না। আইরাত বেশ লজ্জা পায়। সে আব্রাহাম কে ছাড়িয়ে সেখান থেকে এসে পরতে চাইলে আব্রাহাম তার হাত ধরে ফেলে। তারপর আবার তাকে নিজের কাছে আনে। এক হেচকা টান দিতেই আইরাত আবার আব্রাহামের কাছে এসে পরে। আইরাতের পিঠ টা আব্রাহামের বুকের কাছে। আব্রাহাম পেছন থেকেই আবার আইরাতকে জরিয়ে ধরে তার ঘাড়ে মুখ ডুবায়। আব্রাহামের হাত গুলো আইরাতের পেটে-কোমড়ে বিচরণ করে চলেছে।

আব্রাহাম;; নিজের করতে চাই আমি তোমায়। তোমার ইচ্ছাতে, তোমার মতে। কাছে পেতে চাই আমি তোমায়। এতো টাই কাছে যেখানে তুমি আমি নামক কোন দুই উক্তি থকবে না। তুমি & আমি মিলে এক হয়ে যাবো। এতো টা কাছে পেতে চাই আমি তোমায় যেখানে কোন দূরত্বই থাকবে না। একদম না। জানপাখি হবে কি আমার…….!?

তখনই আকাশ কাপিয়ে বিদ্যুৎ গর্জন করে ওঠে আর আইরাত সাথে সাথে ঘুড়ে আব্রাহাম কে জড়িয়ে ধরে। আব্রাহামও আইরাতকে জড়িয়ে ধরে একদম নিজের সাথে মিশিয়ে ধরে। আব্রাহাম তার দুই হাত দিয়ে আইরাতের গালে ধরে তারপর ফট করেই আইরাতের ঠোঁটে নিজের ঠোঁট গুলো মিশিয়ে ফেলে। তবে আইরাত এবার না করেনি, না ই আব্রাহাম কে কোন বাধা দিয়েছে। আব্রাহাম বুঝলো যে আইরাতের সম্মতি আছে। আব্রাহাম যেনো আইরাতকে আরো নিজের সাথে চেপে ধরে তার ঠোঁট জোড়া আকড়ে ধরে।

দুইজন ভালোবাসার মানুষ এই বৃষ্টিতে এক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। দুইজনেই ভিজে একাকার হয়ে গেছে। তবে বাইরে যেনো বৃষ্টি আরো ভয়ানক রুপ ধারণ করলো। আব্রাহাম আইরাত কে ছেড়ে দাঁড়ায়। হাত
দিয়ে তার সামনে আসা চুল গুলো পেছনের দিকে ঠেলে দেয়। কিন্তু এবার আব্রাহাম আইরাতকে সোজা তার কোলে তুলে নেয়। আইরাত তার দুই হাত আব্রাহামের গলাতে জড়িয়ে ধরে। আব্রাহাম আইরাতকে কোলে নিয়ে সোজা ঘরের ভেতরে দিকে হাটা দেয়। রুমের ভেতরে গিয়ে আইরাতকে বিছানায় শুইয়ে দেয়। তখনই ধপ করে সারাঘরে অন্ধকার ছেয়ে আসে। রুমটাতে আবছা আলো এসে পরেছে। বাইরে যে বিদুৎ চমক দিচ্ছে মাঝে মাঝে তার আলো এসে সারাঘর কে ক্ষনিকের জন্য আলোকিত করে তুলছে। এ যেনো আলো-আধাঁরের এক অসম্ভব সুন্দর মিশ্রণ।

আব্রাহাম আইরাতকে বিছানাতে শুইয়ে দিয়ে ক্রমশ আইরাতের দিকে এগোতে থাকে। এখন আইরাতের সাথে তার মাথা একদম ঠেকে আছে। আইরাতের মাথা বালিশে ঠেকে গেলে আব্রাহাম আইরাতের দুই পাশে হাত দিয়ে আইরাতের ওপর ঝুকে পরে। আইরাতের কপালে আব্রাহাম উষ্ণ চুমুর উত্তাপ দিয়ে দিয়ে। তারপরেই আবার আইরাতের ঠোঁট গুলো আকড়ে ধরে। আজ যেনো দুজনের মাঝে কোন বাধাই নেই। আব্রাহাম আইরাতের ওপর থেকে ভেজা শাড়ির আচল টা ফেলে দেয়। নিজের গা থেকে সাদা শার্ট টা ফেলে দিয়ে আবার আইরাতের কোমড়ে ধরে নিজের দেহের সাথে আইরাতের দেহ টা লাগিয়ে নেয়। তারপর ডুব দেয় আইরাতের মাঝে। আজ আব্রাহাম তার আইরাতে মগ্ন। সে আজ তার আইরাতকে নিজের করে পেয়েছে। আইরাতের চোখের কার্নিশ বেয়ে এক ফোটা পানি গড়িয়ে পরে। আব্রাহামের শূন্য পিঠ টা আইরাত খামছে ধরে। আব্রাহাম আজ তার প্রিয়তমা কে নিজের ভালোবাসার উষ্ণাতার চাদরর মুড়িয়ে নিয়েছে। আজকের এই বৃষ্টিভেজা দিনটা যেনো তাদের ভালোবাসাকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। আর এভাবেই একে-অপরের মাঝে পরিপূর্ণতা পেলো দুই ভালোবাসার মানুষ। আজ আইরাত সম্পূর্ণ রুপেই তার আব্রাহামের আর আব্রাহাম তার আইরাতের। আব্রাহাম-আইরাত মিলে এক, তাদের ভালোবাসার আজ এক নতুন অধ্যায় শুরু ❤️🥀।





চলবে~~