#পবিত্র_বন্ধনে_আবদ্ধ
#পর্ব -১৫
#Jannatul_ferdosi_rimi (লেখিকা)
ফারহাজ কিছুক্ষন থম মেরে বসে। ফিহার দিকে তাঁকিয়ে বলে উঠে–এই রান্না এই রান্না তুমি কার কাছ থেকে শিখেছো? ফিহা বলে উঠে–আমার মায়ের থেকে। ফিহার জবাবে যেনো ফারহাজ কিছুটা আশাহত হলো! কিন্তু ফারহাজ মনে একটা খটকা থেকেই যায়। একই স্বাদ এতো বছর পর। ফারহাজ এর চোখ থেকে এক ফোটা জল গড়িয়ে পড়ে। ফিহা বলে উঠল- লাটসাহেব ভালো হয়নি খেতে?? ফারহাজ নিজেকে স্বাভাবিক হয়ে বলে উঠলো— হ্যা হ্যা অনেক ভালো হয়েছে।
ফিহা কিছু বলবে তার আগেই ফারহাজ উঠে গিয়ে বলে উঠে— ফিহা তুমি আপতত আসতে পারো৷!
ফিহা কিছু বলতে গিয়েও যেনো বলতে পারলো নাহ চুপ হয়ে রইলো কেননা ফারহাজ স্পষ্ট দেখতে পারছে ফারহাজ এর সেই ব্রাউন মনিওয়ালা যুক্ত সেই চোখে স্পষ্ঠ জল! ফিহা কিছু না বলে চুপচাপ নিজের স্কুল ব্যাগ নিয়ে চলে যেতে গিয়েও থেমে গিয়ে আবারও ফারহাজ এর কাছে এসে বলে উঠে–
আমি জানি হালুয়া টা ভালো হয়নি তাইনা? বিচ্ছিরি হয়েছে এতোটা বিচ্ছিরি হালুয়া খেয়ে আমি কাঁদছেন তাইনা লাটসাহেব! ফিহার এইরকম বোঁকা কথা শুনে ফারহাজ না হেঁসে পারলো নাহ।
ফারহাজ দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে উঠলো–
একেবারেই নয়। যথেষ্ট ভালো হয়েছে।
তোমার এই হালুয়া খেয়ে আমার জীবনের কিছু স্পেশাল মানুষের কথা মনে পড়লো। তারা কীভাবে যেনো জীবন থেকে হারিয়ে গেলো। আল্লাহ যেনো তাদের সবসময় ভালো রাখে।
ফিহা বলে উঠলো—
কারা?
ফারহাজঃ সেইটা আপতত বলতে পারবো নাহ।
ফারহাজ বেখেয়ালিভাবে একটি ভাজ্ঞা কাঁচে হাত রাখে সাথে সাথেই তার হাত কেটে কিছুটা ফিনকি রক্ত গড়িয়ে পড়ে।
ফিহা ফারহাজ এর কাছে গিয়ে উত্তেজি হয়ে বলে উঠলো—
এইটা কি করে হলো?
ওমা অনেক রক্ত গড়িয়ে পড়ছে।
ফিহা নিজের বেগ ছোট একটা ড্রসিং কিট বের করে।
ফিহার ব্যাগে সবসময়ই ছোট খাটো ওষুধ পত্রের বক্স থাকে।
ফিহাঃ হাত দিন আমি ব্যান্ডিজ করে দেই।
ফারহাজঃ আমি ঠিক আছি। তাছাড়া আমি একজন পুলিশ অফিসার এইটুকুতে আমার কিচ্ছু হবেনা পুচকি!
ফিহা কিছুটা কড়া কন্ঠে বলে উঠলো–
হাত থেকে রক্ত পড়ছে। ক্ষত স্হানে ইনফেকশন হবে জানেন না???
ফারহাজ কিছুটা মজা করে বলে উঠলো–
কই আমি তো জানতাম নাহ
পুচকি দেখি আমার থেকে অনেক কিছুই জানে।
ফিহা বসে ফারহাজ হাত নিয়ে ড্রেশিং করতে যাবে তার আগেই সেখানে ইরিনা চলে আসে।
ইরিনা বলে উঠলো–
ফিহা তুই এখানে???
আর ফারহাজ তোমার হাতে তো রক্ত।
ফারহাজঃ বেখেয়ালি ভাবে কেটে গেছে।
ইরিনাকে দেখে ফিহা ফারহাজ এর হাত ছেড়ে দেয়।
ইরিনা ফিহাদের কাছে এসে বলে উঠে–
ইসস কতখানি কেটে গেছে।
ফিহা তুই একটু সরে যাহ আমি ফারহাজ এর হাতে ড্রেশিং করে দিচ্ছি।
ফিহা সরে যায়।
ইরিনা ফারহাজ এর হাতে পরম যত্নে মেডেসিন লাগিয়ে দিচ্ছে।
ইরিনাঃ সত্যি ফারহাজ তোমাকেও নিয়েও আমি পারিনা!
এতো বেখেয়ালি মানুষ কীভাবে হয় বলো তো??
ফারহাজঃ আমি বেখায়ালি হতে যাবো কেন?
তুমি আছো তো! আর কয়েকদিন পরেই তো তুমি আমার ঘরে আমার বউ হয়ে আসবে।
(মুচকি হেঁসে)
ইরিনা কেন যেনো খুশি হতে গিয়েও খুশি হতে পারছেনা। তার মনে একটা ভয় ঢুকে গিয়েছে। যাকে বলে ভয়ংকর ভয়। কিন্তু নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেস্টা করছে।
ফিহা কেনো যেনো ফারহাজ এর কথা শুনতে ভালো লাগছেনা। কেন লাগছেনা সে জানেনা কিন্তু একটুও ভালো লাগছেনা।
ফিহা কাশি দিয়ে বলে উঠে—
তাহলে আমি আসছি!
এই বলে ফিহা চলে যেতে নিলে ফারহাজ বলে উঠে–
তুমি নাকি আমার জন্য হালুয়াটা নিয়ে এসেছো তাহলে বাটি টা নিয়ে যাচ্ছো কেন??
ফিহা আবার ঘুড়ে বাটিটা ফারহাজ এর হাতে দিয়ে বলে উঠে—
এইযে!
ইরিনাঃ তুই ফারহাজ এর জন্য হালুয়া নিয়ে এসেছিস?
কই আমাকে তো দিলিনা। এখন জিজুই সব হয়ে গেলো আর বোন কিচ্ছু নাহ
( অভিমানি কন্ঠে)
ফারহাজ হেঁসে দেয়।
ইরিনাঃ তুমি বিশ্বাস করবেনা ফারহাজ! আমাদের ফিহারানি কত্তকিছু রান্না করতে পারে। ওর রান্নার সবাই প্রশংসা করে। ওর মতো এতো ভালো রান্না তো আমার মা কিংবা আন্টি ও ( ফিহার মা) পারেনা।
ফারহাজ ফিহার দিকে তাঁকায়। ফিহার মতো শুধুমাত্র একজন ই ছিলো।
ফিহা বলে উঠলো—
আমি মামনির কাছে তোমার জন্য রেখে এসেছি,
আমি এখন বরং যাই বেশি দেরী হলে মা রাগ করবে!
এই বলে ফিহা যেতে নিলে হবে হঠাৎ ফিহার চোখ ফারহাজ এর হাতের একটি ছোট্ট ব্রেসলেটের দিকে
চোখ যায়। আগে সে বোধহয় কখনো খেয়াল করেনি। কিন্তু এই ব্রেসলেট তার কাছে খুব চিনা চিনা লাগছে।
ফিহা কিছু ভেবে দৌড়ো চলে যায়।
ফিহাকে এইভাবে দৌড়ে চলে যেতে দেখে ফারহাজ ও ইরিনা কিছুটা অবাক হয়।
ফারহাজঃ ফিহার আবার কি হলো???
ইরিনাঃ ও একটু দুস্টু টাইপের তাই দৌড়ে চলে গিয়েছে।
আচ্ছা ফারহাজ আজকে আমাকে একটু সময় দিতে পারবে???
ফারহাজঃ কিন্তু আজকে তো আমার কিছু কাজ ছিলো!
ইরিনা অনুরোধ কন্ঠে বলে উঠে–
প্লিয ফারহাজ!
আজকে কিছুটা সময় আমাকে দাও।
আমি তোমার সাথে আজকে কিছুটা সময় কাটাতে চাই প্লিয!
।
।।।।
ফিহা দৌড়ে নিজের ঘরে এসে নিজের স্কুল ব্যাগ টা বিছানায় রেখে নিজের আলমারিতে খুলে বিভিন্ন জিনিস ঘাটতে লাগলো।
ফিহা সবকিছু এলোমেলো করে খুঁজে যাচ্ছে।
কিন্তু তার সেই কান্খিত জিনিস টা পাচ্ছেনা।
ফিহার মাথার উপরে একটা তাক আছে।
ফিহা তাকের কাছে গিয়ে কিছু জিনিস-পত্র খুজা শুরু করে।
অবশেষে একটা বক্স পাই সে।
ফিহা তাড়াতাড়ি বক্স টা খুলে তার সেই আশাশরুপ
জিনিস টা পেয়ে যায়।
সোনাও ডায়মন্ড রুবি মিক্সড করা একটা ব্রেসলেট
এই একই ব্রেসলেট ফারহাজ এর হাতেও ছিলো।
কিন্তু কি করে তা সম্ভব ।
এদিকে৷,
ফারহাজ ও ইরিনা একটা কফি শপে বসে আছে।
ফারহাজ হালুয়াটা খেয়ে যাচ্ছে।
এতো বছর পর সেই স্বাদ! কিন্তু ফারহাজ কিছুতেই নিজের হিসেব মিলাতে পারছেনা।
ইরিনাঃ ফারহাজ তুমি হালুয়া খেয়ে যাচ্ছো?
ফারহাজঃ কি হয়েছে ইরি? আজ তোমাকে কিছুটা ডেসপারেট লাগছে।
ইরিনা ঃ তেমন কিছুনা!
আসলে ফারহাজ আমার কেনো যেনো খুব ভয় করছে মনে হচ্ছে আমরা আলাদা হয়ে যাবো.
ইরিনা তাঁকিয়ে দেখে ফারহাজ অন্য একটা কর্নারে গিয়ে ফোনে কথা বলছে।
কেফের মেয়েরা ঘুড়ে ঘুড়ে ফারহাজকে দেখার প্রচেস্টা করে যাচ্ছে।
কেননা ফারহাজের প্রতিটা স্টাইল ই নজর কাড়া।
ইরিনাঃ ফারহাজ??? (কিছুটা আস্তে ডেকে)
ফারহাজ ইরিনাকে ইশারা করে বলল জাস্ট ৫ মিনিট ওসি সাহেব ফোন করেছে।
ইরিনা ঃ ফারহাজ কেন আমার কথা শুনতে চায়না
ফিহার ফিহার ঘরে এসে অবাক হয়ে যায় ফিহার হাতে সেই বক্স টা ।
সে তাড়াতাড়ি ফিহার কাছ থেকে বক্স টা কেড়ে নিয়ে কড়া কন্ঠে বলে উঠে–
কি হচ্ছে কি ফিহা তোমাকে আমি কতবার বলেছি এই বক্স ধরবে নাহ।
তাও তুমি আমার কথা অমান্য করেছো??
ফিহা বলে উঠে—
কিন্তু মা! এই একই ব্রেসলেট আমি লাটসাহেব এর হাতেও দেখেছি। তুমি তো বলেছিলে এই ব্রেসলেট অনেক স্পেশাল। খুব কমই এই ব্রেসলেট পাওয়া যায়। তাহলে লাটসাহেব এর হাত ব্রেসলেট টা আর এই ব্রেসলেট টা এক হলো কীভাবে?
ফিহার মা কি বলবে কিছু বুঝতে পারছেন নাহ।
কেননা এর উত্তর তার কাছে থাকলেও সে ফিহাকে দিতে পারবেনা।
ফিহার মা আচঁলে মুখ টা গুজে কাঁদতে কাঁদতে চলে গেলো।
ফিহা বুঝতে পারলো নাহ তা মা হঠাৎ কাঁদছে কেন?
সে কি কোনোভাবে তার মা কে হার্ট করে কথা বলেছে।।
।
চলবে!
#পবিত্র_বন্ধনে_আবদ্ধ
#পর্ব -১৬
#Jannatul_ferdosi_rimi (লেখিকা)
ফারহাজ নিজের পুলিশ ফোর্সদের দিয়ে শহরেরে সব মালাবাহি ট্রাক চেক করাচ্ছি যদি কোনো ক্লু পায়নি। কিন্তু ফলাফল শুন্য। কোনো ট্রাকেই অস্ত্র সস্ত্র পাওয়া যাইনি। এদিকে আজকে আবারোও আরেকটা খুন হয়েছে। ফারহাজ দেয়ালে একটা ঘুসি মারে। সে কি করে অই সিরিয়াল ক্রিলার কে ধরবে।
ফারহাজ রাগান্বিত হয়ে নিজের কেবিনে ছুটে আসে। তখনি একটি চিরকুট উড়ে এসে ফারহাজ এর মুখে আটকে যায়। ফারহাজ চিরকুট টা খুলে দেখে পড়ে— হুম্মম্ম দ্যা গ্রেট পুলিশ অফিসার আমাকে খুজে বের করতে পারছেনা নাহ পারছে একটা ক্লু বের করতে হাও ফানি ইয়ার! আমাকে খুঁজে লাভ নেই অফিসার ফারহাজ মির্জা তুমি কখনোই আমাকে ধরতে পারবেনাহ। ফারহাজের আর বুঝতে বাকি রইলো নাহ। এইটা সেই ক্রিমিনাল এর কাজ। ফারহাজ রাগে চিরকুট টা ছুড়ে ফেলে।
ফারহাজের চোখও লাল হয়ে গেছে। ফারহাজ মির্জাকে নিয়ে মজা করছে। কেবিন থেকে কিছু পড়ার শব্দে রুপ বুঝতে পারলো কোনো একটা কারনে ফারহাজ রেগে আছে।
ফারহাজ কেবিন থেকে বেড়িয়ে গিয়ে গাড়িতে বসে পড়ে। এই মুহুর্তে রেগে গেলে চলবে নাহ। ক্রিমিনালকে ধরতে হলে তার সাথে অন্যরকম গেম খেলতে হবে ফারহাজকে। আপতত বাড়িতে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে ঠান্ডা মাথায় প্ল্যান করতে হবে।
ফিহা দৌড়ে ছুটে যায় রান্নঘরের দিকে। গিয়ে দেখে তার মা কি যেনো বিড়বিড় করে যাচ্ছে আর আচলে মুখ ঢেকে কেঁদে যাচ্ছে। ফিহা তার মায়ের পাশে বসে বলে উঠে– মা কি হয়েছে তোমার? আমার কথায় যদি তুমি কস্ট পেয়ে থাকো তাহলে আমি এত্তোগুলো সরি কিন্তু তুমি কেঁদো নাহ। ফিহা তার মায়ের কান্না সহ্য করতে পারেনা। ফিহার মা ফিহাকে নিজের বুকে জড়িয়ে নেয়। ফিহাও তার মায়ের বুকে চুপটি করে থাকে। ফিহার মা ফিহার গালে চুমু খেয়ে বলে উঠে– নাহ রে ফিহা তুই তো আমার লক্ষী মা তোর কথায় কি? আমি কস্ট পেতে পারি?, কিন্তু মা তুমি কখনো আমাকে আর এই ব্রেসলেট এর কথা জিজ্ঞাসা করো নাহ। আমি তোমাকে বলতে পারবো নাহ। ফিহা তার মাকে জড়িয়ে বলে উঠে–
ঠিক আছে মা ফিহার মা কস্ট পায় এমন কোনো কথা ফিহা জিজ্ঞাসা করবে নাহ।
ফিহার মা ফিহাকে ভালো করে জড়িয়ে নেয়।
সত্যি মেয়েটা একেবারে লক্ষি! আল্লাহ ফিহাকে সুখি রাখুক!
রিক খবরের কাগজ পড়ছে। রিহা শাড়ির আঁচল কোমরে গুজে বলে উঠে–
কি গো বাড়িতে এতো কাজ।
কয়দিন পরে তোমার মেয়ের এন্গেজমেন্ট আর তুমি এখানে বসে বসে খবরের কাগজ পড়ছো?
কোনো কান্ড-জ্ঞান আছে তোমার?
রিক খবরের কাগজ টা ভাজ করে বলে উঠে–
আমি নিজের কাজ যথযথভাবে পালন করছি।সবাইকে ইনভাইট + কেয়াটেকার লোকেদের সাথেও সবকিছু ফিক্সড করে এসেছি। আমার একমাত্র মেয়ে বলে কথা সবকিছু কোনো কমতি রাখবো নাহ।
রিহা হেঁসে দেয়।
রিক আবারোও বলে উঠে-
আচ্ছা আমার আরেকটা মেয়ে কোথায়?
তখনি ফিহা লাফাতে লাফাতে এসে বলে উঠে-
এইতো ভালো বাবা আমি এইখানে!
রিকঃ আয় মা আমার পাশ বসে।
ফিহা গিয়ে রিকের পাশে বসে!
রিহাঃ বল ফিহা কি খাবি??
ফিহাঃ এখন কিছু খাবো নাহ মামনি! মাত্র স্কুল থেকে আসলাম!
তুমি নাকি আমাকে ডেকেছিলে!
রিহাঃ হুম শুন তুই ইরিনার সাথে একটু ফারহাজ দের বাড়ি যাবি ঠিক আছে?? ফারহাজ এর দাদি ইরিনার সাথে নাকি দেখা করতে চায়।
ফারহাজ দের বাড়ির কথা শুনে ফিহার মুখ টা কালো হয়ে গেলো কেননা সে জানে ফারহাজ এর মা কিংবা দাদি কেউ তাকে পছন্দ করেনা। কিন্তু কেন করেন নাহ তা ফিহার ছোট্ট মাথায় ঢুকছেই নাহ।
ফিহাঃ কিন্তু মামানি আমি কেন?? অন্য কেউ গেলে হয়না!
ফিহার কথা মাঝেই ইরিনা নামতে নামতে বলে উঠে—
নাহ তোকেও যেতে হবে! আমি কি একা যাবো নাকি।
চল নাহ ফিহু!
রিক ও ইরিনার কথা সায় দিয়ে বলে উঠে–
হ্যা ফিহা মা যাহ তুই!।
ফিহা আর কি করবে এক প্রকার বাধ্য হয়েই যেতে হলো তাকে ইরিনার সাথে!
ফারহাজ সবে মাত্র ফিরেছে বাড়িতে। সারাদিন এতো কাজের চাপ!
সে উপরে উঠতে যাবে তখনি তার দাদি ফারহাজ কে ডেকে বলে উঠে—
আচ্ছা দাদুভাই তোমার মুখ টা এতো শুকনো লাগছে কেন??
ফারহাজ বলে উঠে–
আসলে আজকে আমি কিছুটা ক্লান্ত দাদি তেমন কিছুনা!
ফারহাজ এর দাদি—-
শুনো দাদুভাই তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নাও এবং নীচে চলে এসো!
ফারহাজঃ কেন দাদি? ( ভ্রু কুচকে)
দাদিঃ আজকে আমি বাড়িতে ইরিনা দিদিভাই কে ডেকেছে।
ইরিনা আসবে শুনে ফারহাজ এর মুখে হাঁসি ফুটে উঠে।
ফারহাজ হাঁসিমুখে বলে উঠে–
ঠিক আছে দাদি!
এই বলে সে চলে যায়।
ফারহাজকে হাঁসিমুখে দেখে ফারহাজের দাঁদিও হেঁসে দেয়।
মিসেস প্রিয়া ফারহাজ এর দাদির কাছে এসে বলে উঠে–
মা হঠাৎ করে ইরিনা কে আজ ডাকলেন!
মিসেস ইরাঃ আসলে আমি ভাবছিলাম!
ইরিনা এই বাড়ির হবু বউ! আমাদের মির্জা বাড়ির বউ হতে চলেছে তাই আজকে ওকে আমার সেই সোনার বালা জোড়া টা পড়াবো। আমি ভেবেছি বিয়ের পরের দিন ই দিবো কিন্তু আগে দেখতে হবেতো। ওর হাতের সাইজ অনুযায়ী বালা জোড়াটা কি ঠিক মতো লাগবে কিনা! যদি ছোট হয় কিংবা বড় হয় তাহলে নাহয় আমরা বালা জোড়া ভেজ্ঞে গড়িয়ে নেবো!
তখন তানহা ( ফারহাজ এর কাকি) এসে বলে উঠে–
কিন্তু এই বালা জোড়া তো আপনার শ্বাশুড়ি আপনাকে দিয়েছিলো!
ইরাঃ হুম ছোট বউমা!
অনেক পুরনো বালা জোড়া। কিন্তু এখনকার বাজারে এর দাম বেশ!
তানহাঃ সব যদি ফারহাজ এর বউ ই পায়। তাহলে আমার নিলয়ের বউকে কি দিবেন মা?
ইরাঃ এইসব কি কথা বউমা?
আমাদের কি টাকা-পয়সা কম আছে নাকি?
আমার ছোট নাত বউয়ের জন্য আমি বানিয়ে রাখবো!
তানহাঃ আমি যতটুকু জানি এই বালাজোড়া দুটো।
অনেক পুরনো! আমাদের বাড়ির অতিহ্য বহন করে।
তাহলে এই বালাজোড়া আমার ছেলের বউ পেলে কি হবে?
মিসেয়া প্রিয়া এইবার এগিয়ে বলে উঠে–
সব থেকে বড় কথা ফারহাজ এই বাড়ির বড় ছেলে। তাই তার বউয়ের এই বালাজোড়া পাওয়া অধিকার আছে।
আর দ্বিতীয় কথা নিলয়ের বিয়ে এখন অনেক দেরী। তাই এখন এইসব কথা বলা একেবারে অযৈতিক।
তুই এখন এইসব বিষয়ে নাক না গলিয়ে যাহ।
ইরিনা আসবে সার্ভেন্ট দের বল চা নাস্তার ব্যবস্হা করতে।
তানহা মুখটা বেকিয়ে রান্নাঘরের উদ্দেশ্যে চলে গেলো।
ফিহা ও ইরিনা গাড়িতে বসে আছে।
উদ্দেশ্য ফারহাজ এর বাড়ি!
ইরিনার মুখটা কেমন চুপশে আছে। গভীর চিন্তায় সে
ফিহা বলে উঠে–
কি হয়েছে ইরিপু?
ইরিঃ কিছু নাহ। ফিহু
কথা বলতে বলতে ইরিনা ও ফিহাদের গাড়ি মির্জা বাড়িতে চলে আসে।
ইরিনা গাড়ি থেকে নেমে পড়ে।
ফিহা গাড়ি থেকে নামতে যাবে তখনি সে খেয়াল করে তা ওড়না গাড়ির জানালায় বেজে গেছে।
ইরিনাঃ কিরে ফিহা নাম!
ফিহা ঃ ইরিপু তুমি বরং যাও আমি আসছি।
ইরিনাঃ ঠিক আছে তুই আয়।
ফিহা ওড়না টা ছাড়াতে ব্যাস্ত হয়ে পড়ে্
ইরিনা বাড়িতে ঢুকার সাথে সাথেই
ফারহাজের দাদি ও মার মুখে হাঁসি ফুটে উঠে।
ইরিনা গিয়ে তাদের সালাম দেয়।
ফারহাজ এর দাদিঃ সুখি হও দিদিভাই।
( ইরিনার থুত্নি উচু করে)
প্রিয়াঃ ইরিনা তুমি এসেছো আমরা খুব খুশি হয়েছি।
দাদিঃ আচ্ছা দিদিভাই এখন চলো তো আমাদের সাথে আমার ঘরে তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে।
ইরিনাঃ কিন্তু!
প্রিয়াঃ কোন কিন্তু নয়!
ইরিনাকে কিছু বলতে না দিয়ে ফারহাজ এর দাদি তাকে তার ঘরে নিয়ে যায়।
এদিকে ফিহা বাড়িতে ঢুকে অবাক হয়ে যায়। কেননা
বাড়িটা যেনো এক রাজপ্রাসাদতুল্য
ফিহা ঃ লাটসাহেব এর বাড়িটা কত্ত বড়।
কিন্তু ইরিপু কই।
ফিহা ইরিনাকে কিংবা কাউকেই ড্রইং রুমে দেখতে পারছেনা ফিহা। সবাই গেলো কোথায়?
ফিহা কিছু না ভেবে উপরের দিকে যায়।
একটা রুমের কাছে এসে ফিহা একটা আওয়াজ পায়।
ফিহা কৌতহল বশত রুমে ঢুকে দেয় চিৎকার।
ফারহাজ মাত্র শাওয়ার নিয়ে একটা তোয়ালে পড়ে বেড়িয়েছে ফিহাকে এইসময় দেখে সে একেবারে অবাক।
ফারহাজ তাড়াতাড়ি ফিহার মুখ চেপে ধরে।
ফারহাজঃ পুচকি তুমি এইসময়!
ফিহা একেবারে দেয়ালের সাথে মিশে আছে।
ফিহার কেনো যেনো ফারহাজকে এই অবস্হায় দেখে কেমন যেনো লাগছে। কেননা ফারহাজ একেবারে খালি গায়ে। এইরকম অনুভুতিকে কি বলে৷? লজ্জা নাকি অন্যকিছু জানেনা ফিহা।
ফারহাজ ফিহার একেবারব কাছে।
ফিহা মুখ দিয়ে উম উম করে যাচ্ছে। কেননা ফারহাজ এর হাত এখনো ফিহার মুখে
।
।চলবে!