পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ পর্ব-১৯+২০

0
2058

#পবিত্র_বন্ধনে_আবদ্ধ
#পর্ব -১৯
#Jannatul_ferdosi_rimi (লেখিকা)
ফিহা সিমির হাত ধরে রাস্তার উপারে চলে যায়। যেখানে ফারহাজ রয়েছে।
ফারহাজ নিজের স্পিকার দিয়ে তার ফোর্স এর দের সাথে কথা বলছে। ফিহা ফারহাজ এর দিকে এগিয়ে যেতে নিলে সিমি বলে উঠে–ফিহু কি করছিস দেখতে পারছিস না? পুলিশ সাহেব কাজ করছে। মনে হয় কোনো কেস নিয়ে। আর তাছাড়া আমাকে এখন আমার কাজিন এর বাসায় দেখা করতে যেতে হবে।
।ফিহা বলে উঠে–কিন্তু একবার চল নাহ দেখা করে আসি লাটসাহেব এর সাথে। সিমি বলে উঠে–আমি যেতে পারবো নাহ। ফিহা মুখটা বেকিয়ে বলে উঠে–
ঠিক আছে তুই থাক। আমি যাই
সিমিকে আর কিছু বলতে না দিয়ে ফিহা সিমির হাত ছেড়ে দিয়ে ফারহাজ এর কাছে চলে যায়। সিমি আর কি করবে সে রিক্সায় উঠে পড়ে চলে যায়।

এদিকে,,

অজানা ব্যক্তি নিজের লোকেদের ফোন করে বলে উঠে–

কি খবর?

—বস! ফারহাজ মির্জা সব জায়গা দিয়ে কড়া পাহাড়া বসিয়েছে। এমনকি আজকে সব বিসনেজ ম্যানদের ও অই ক্লাব থেকে সরিয়ে ফেলার চেস্টা করছে।

অজানা ব্যক্তি মুখের হাঁসিটা কিছুটা বাঁকা করে বলে উঠে–
গুড ভেইরি গুড!
বাট ওরা কিছুতেই সরাতে পারবে নাহ। যারা আমার টার্গেট তাদের আজ কেউ বাঁচাতে পারবে নাহ।
আজকে খুন তো হবেই তার সাথে আজকে ফারহাজ মির্জারও শেষ দিন হবে।
সোজা ফারহাজ মির্জাকে শুট করে দিবে। কি ভেবেছে ফারহাজ মির্জা? আমাকে আটকাতে পারবে এইসব করে। ফারহাজ মির্জার আমার সাথে টক্কর নিতে এসেছে হুহ?

—— ওকে বস! আমাদের লোকেরাও সব রেডি।
আপনি কোনো চিন্তা করবেন নাহ।
।।।।।।

।।।।।

অজানা ব্যক্তিটি ফোনটা কেটে দেয়।

ফিহা একেবারে ফারহাজ এর গিয়ে বলে উঠে– লাটসাহেব ! কারো কন্ঠস্বর শুনে ফারহাজ পিছনে তাঁকিয়ে দেখে ফিহা।
ফারহাজ কিছুটা অবাকের সুরে বলে উঠে–
তুমি এইখানে কি করছো পুচকি?
ফিহা একটা মিস্টি হাঁসি দিয়ে বলে – আমি আর আমার পামকিন এখানে এসেছি হাওয়াই মিঠাই খেতে।
রাস্তায় আপনাকে দেখলাম তাই আর কি চলে এলাম। খোজ- খবর নিতে।যতই হোক আমার ইরিপুর হবু বর বলে কথা!

ফারহাজ বলে উঠে– খোজ- খবর নেওয়া
হয়েছে? এইবার এখান থেকে যাও।

এই বলে ফারহাজ তার ফোর্স এর দের কাছে গিয়ে বলে উঠে–
তোমরা সবাই রেডি হয়ে নাও যেকোনো সময় আমাদের উপর অ্যাটাক হতে পারে।

ফিহা মুখটা খানিকটা ফুলিয়ে ফেলে। পামকিন এর দিকে তাঁকিয়ে বলে উঠে–
এই লাটসাহেব টাও নাহ কিরকম করে।
দেখছিস পামকিন কেমন দূর দূর করে তাঁড়িয়ে দিচ্ছে এই লাটসাহেব টা। আমি বাড়িতে গিয়ে ইরিপুকে সব বলে দিবো। কিন্তু আমাকে আগে হাওয়াই মিঠাই খেতে হবে। চল পামকিন আমরা বরং হাওয়াই মিঠাই ওয়ালাদের কাছে যাই।

ফিহা পামকিনকে নিজের কাঁধে করে নিয়ে চলে যেতে নিলে ফারহাজ বলে উঠে–

ফিহা দাঁড়াও!

ফিহা ফারহাজ এর ডাক শুনে পিছনে তাঁকিয়।

ফারহাজ বলে উঠে–
এখুনি একটা রিক্সা করে বাড়িতে চলে যাও।
এক মুহুর্তেও এখানে থেকে চলে যাও।
এখন এই জায়গাটা রিস্কি

ফিহা আবারোও মুখটা ফুলিয়ে বলে উঠে-
কেন কেন হুহ??
আমি এইখানে হাওয়াই মিঠাই খেতে এসেছি আমি
কোথাও যাবো নাহ।

ফারহাজ রাগান্বিত কন্ঠে বলে উঠে—
ফিহা আমাকে রাগিও নাহ। এম্নিতেও আমরা একটা মিশনে আছি।

এখানে এই মুহুর্তে থাকা তোমার জন্য বিপদজনক।

ফিহা কোমরে হাত রেখে বলে উঠে–
আমি কোথাও যাবো নাহ।
হুহ আগে আমি হাওয়াই মিঠাই খাবো হুহ।

ফারহাজ বুঝেছে এই মেয়েকে বলে কিচ্ছু হবে।

তাই ফারহাজ ফিহার দিকে কিছুটা ঝুকে বলে উঠে–

দেখো ফিহা তুমি প্লিয এখন যাও! আমি কথা দিচ্ছি।
আমি তোমাকে এতোগুলা হাওয়াই মিঠাই কিনে দিবো।

ফিহা খুশি হয়ে তার হাত ফারহাজ এর দিকে এগিয়ে বলে উঠে–

প্রমিজ!

ফারহাজ ও তার হাত ফিহার হাতে রেখে বলে উঠে–।পাক্কা প্রমিজ।

ফিহা হেঁসে দেয়।

ফিহা পামকিন কে নিজের কাঁধ থেকে পামকিন কে নামিয়ে বলে উঠে–
ঠিক আছে আমি যাচ্ছি!

তখনি হঠাৎ করেই গুলাগুলি শুরু হয়ে যায়।

ক্লাব এর সব লাইট অটোমেটিক অফ হয়ে যায়।

ফারহাজ ফিহার হাত ধরে তাড়াতাড়ি কোনোরকম আড়ালে নিয়ে গিয়ে বলে উঠে-

ফিহা আমার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনো একদম এখান থেকে তুমি বের হবেনাহ।

ফিহা মাথা নাড়ায়।

ফারহাজ দৌড়ে সব ফোর্স দের কাছে যায়।

ফারহাজ সবাইক সতর্ক করে বলে —
রুপ তোমরা সবাইও ফাইয়ার শুরু করে দাও!

এন্ড বাকিরা তারাতাড়ি ক্লাবে ঢুকে যাও!

আজকে যেকরেই হোক অই সিরিয়াল কিলার কে আটকাতে হবে!

রুপঃ ওকে স্যার!!

ফারহাজ নিজের বন্ধুক বের করে শুট করতে থাকে।

এদিকে অজানা ব্যাক্তির অর্ধেক লোকেরা পুলিশের লোকেদের চোখে ফাঁকি দিয়ে ক্লাবে ঢুকে যায়।

আর বাকিরা ফারহাজ দের উপর গুলি ছুড়তে শুরু করে।

এইরকম আক্রমনে সাধারন মানুষ কোনোরকম পালিয়ে নিজেদের প্রান বাঁচানোর চেস্টা করছে।

ফিহা ভয়ে কুকড়ে আছে। চারদিক দিয়ে গুলির আওয়াজ ভেসে আসছে।

সে পামকিনকে নিয়ে নিজের সাথে জড়িয়ে নেয়।

ফারহাজের দিকে বার বার শুট করা হচ্ছে।

রুপ ফারহাজ এর কাছে গিয়ে বলে উঠে–

স্যার আপনি সরে যান! ওরা আপ্নাকেই শুধু শুট করে যাচ্ছে।

ফারহাজঃ কি বলছো এইসব তুমি রুপ?
আমি কিছুতেই সরবো নাহ। আজকে আমি কিছুতেও হারবো নাহ।
আগে আমাদের বের করতে হবে ওরা ঠিক কোন জায়গা থেকে আমাদের উপর আক্রমন করছে।

ফিহা হঠাৎ খেয়াল করে দূর থেকে ফারহাজ এর দিকে বন্ধুক তাক করেছে।

ফিহাঃ এই লোক তো লাটসাহেব কে মেরে ফেলবে নাহ আমাকে কিছু একটা করতে হবে

ফিহা আর কিছু না ভেবে পামকিন কে রেখে

ফারহাজ কে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়।

ফারহাজ মাটিতে পড়ে যায়। ফিহাও মাটিতে পড়ে যায়।

ফারহাজ তেমন আঘাত না পেলেও ফিহা মাথায় আঘাত পায়। সে জোড়ে চিৎকার করে উঠে।

ফিহার চিৎকার শুনে অজানা ব্যক্তির লোকেরা গুলাগুলি করা থামিয়ে দেয়।

সবকিছু যেনো মুহুর্তের মধ্যেই শান্ত হয়ে যায়।

ফারহাজ তাড়াতাড়ি উঠে ফিহার কাছে যায়।

ফারহাজঃ ফিহা তুমি ঠিক আছে তো?
কে কোথায় আছো। তাড়াতাড়ি ফাস্টেড বক্স এর ব্যবস্হা করো। ( উত্তেজিত হয়ে)

রুপ ব্যন্ডিজ নিয়ে আসে।

রুপঃ স্যার আপনার কপাল থেকেও তো রক্ত গড়িয়ে পড়ছে।

ফারহাজ ঃ তুমি আমার কথা বাদ দাও রুপ।
দেখছো নাহ ফিহা কান্না করছে( রাগান্বিত কন্ঠে)

ফিহা কেঁদেই যাচ্ছে। দেখেই বুঝা যাচ্ছে সে প্রচন্ড আঘাত পেয়েছে। রুপ এসে ফিহার মাথায় ব্যান্ডিজ করে দিতে নিলে। ফারহাজ রুপের হাত থেকে কেড়ে নিয়ে ফিহার মাথায় ব্যন্ডিজ করে দেয়।

ফারহাজ ফিহার মাথায় হাত বুলিয়ে বলে উঠে–

ফিহা কেঁদো নাহ

তোমাকে আমি কতবার মানা করেছি তুমি বের হবেনা। তাও কেন বের হয়েছো তুমি?

ফিহা কাঁদতে কাঁদতে বলে উঠে-
আমি দেখেছি কেউ আপনাকে দূর থেকে গুলি করতে চেয়েছিলো। আমি যদি ধাক্কা না দিতাম তাহলে আপনাকে গুলি করে দিতো লাটসাহেব।
কেন যেনো এই দৃশ্য দেখে আমি নিজেকে সামলাতে পারছিলাম নাহ। আপনার যদি কিছু হয়ে যেতো তখন কি হতো??

ফারহাজ ফিহার কথা শুনে অবাক হয়ে যায়।

ফারহাজ নিজের হাত অজান্তেই ফিহার কাঁধে চলে যায়। ফারহাজ ফিহাকে নিজের এক হাতে জড়িয়ে নিয়ে বলে উঠে–

পুচকি তুমি শান্ত হোও! এইযে আমি ঠিক আছি দেখো। ভয় পেয়ো নাহ তোমার লাটসাহেব আছে তো। ( শান্ত কন্ঠে)

অজান্তেই ফিহার কান্না থেমে যায়। ফারহাজ কন্ঠে এক প্রকার দরদ ছিলো যা হয়তো সবাই বুঝতে পারেনাহ। এক প্রকার ভরসা ছিলো

তখনি কিছু কন্সটেবল এসে বলে উঠে–

স্যার আমরা কয়েকজন কে রেস্কিউ( উদ্দ্বার) করতে পারলেও কয়েকজনকে বাঁচাতে পারেনি তাদের অলরেডি গুলি করে মেরে ফেলা হয়েছে।

ফারহাজঃ ওয়াট?????( চিল্লিয়ে)
।।চলবে।

#পবিত্র_বন্ধনে_আবদ্ধ
#পর্ব – ২০
#Jannatul_ferdosi_rimi (লেখিকা)
ফারহাজ কি করবে কিচ্ছু বুঝতে পারছেনা।এদিকে ফিহা ভয়ে কুকড়ে আছে। এইবারের খুনটাও সে আটকাতে পারলো নাহ। ফারহাজ দেয়ালে একটা জোড়ে ঘুসি মারলো। ফারহাজ একবার ফিহার দিকে তাঁকালো। বাচ্ছা মেয়েটা বড্ড ভয় পেয়েছে।
ফারহাজ কন্সটেবলকে ডেকে একটি চেয়ার আনিয়ে নেয় ফিহার জন্য। ফারহাজ ফিহাকে কোনোরকম বসিয়ে দেয়। ফিহা কান্না থামিয়ে দিলেও এখনো ফুপাচ্ছে। ফারহাজ একটি পানির বোতল এগিয়ে দেয় ফিহার দিকে। ফিহা ফারহাজ এর দিকে তাঁকায়। ফারহাজ বোতলের মুখটা খুলে দিয়ে বলে উঠে– টেক ইট,পানিটা খেয়ে নাও কিছুটা ভালো লাগবে। ফিহা বোতল টা নিয়ে ঢক ঢক করে পানিটা খেয়ে নিলো। গলাটা খানিক্টা ভিজিয়ে নেয় ফিহা।
ফারহাজ রুপ আর বাকি কন্সটেবলদের দিকে তাঁকিয়ে বলে উঠে– বডিগুলো ময়নাতদন্তে পেরন করো। আর ক্লাবের সব সিসিটিভি ক্যামেরা গুলো চেক করো।

রুপঃ স্যার আমি অলরেডি সব সিসিটিভি ফুটেজ চেক করতে পাঠিয়ে দিয়েছি কন্সটেবলদের.।
আর আমার মনে হয় উনি কিছুটা ভয় পেয়েছেন
(ফিহাকে উদ্দেশ্য করে)

🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸

ফারহাজ ফিহার দিকে এক পলক তাঁকিয়ে বলে উঠলো–
ঠিক আছে! আম এখুনি ইরিনাকে ফোন করছি!

পামকিন দৌড়েতো দৌড়োতে ফিহার কাছে ছুটে আসে।

ফিহা পামকিন কে দেখে তাড়াতাড়ি নিজের সাথে জড়িয়ে নেয়।

ফারহাজ অন্য সাইডে গিয়ে তাড়াতাড়ি ইরিনাকে ফোন করে সব বলতে থাকে।

🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸

এদিকে,

অজানা ব্যক্তিটা চিৎকার করতে করতে নামছে সিড়ি থেকে।

তার চিৎকার তার সব লোকেরা জোড়ো হয়ে যায়।
দেখেই বুঝা যাচ্ছে সে ভয়ংকর রেগে আছে।
তার চোখজোড়াও লাল হয়ে গেছে।

সে নিজের ফোনটা বের করে তার লোকেদের ফোন করে যারা বাংলাদেশে ফারহাজদের উপর আক্রমন
করেছে।

তাদের একজন লিডার ফোনটা ধরে বলে উঠে–

হ্যালো বস!

অজানা ব্যক্তিটি চিৎকার করে বলে উঠে—

তোদের সাহস কি করে হয়? ফিহার দিকে গুলি ছুড়ার? তোদের প্রত্যেক কে আজ আমি জেন্ত কবর দিয়ে দিবো বলে দিলাম। তোরা জানিস ফিহা ব্যাথায় কান্না করে দিয়েছে। ওর প্রত্যেকটা চিৎকার এখনো আমার কানে ভাসছে। আর সব হয়েছে তোদের জন্য। আমার কলিজাকে আঘাত করার সাহস হয় কী করে তোদের?

—+বস বস প্লিয আপনি একটু শান্ত হোন।
আমরা ইচ্ছে করে ফিহা মেম কে আঘাত করতে চাইনি। আমরা তো অই অফিসার কেই শেষ করে দিতে চেয়েছিলাম কিন্তু মাঝখান থেকে ফিহা মেম চলে এসেছিলেন তাই আর কি।

অজানা ব্যক্তিঃ আমি কিচ্ছু শুনতে চাইনা বুঝেছিস
আমার কলিজার কপাল থেকে রক্ত ঝড়িয়েছিস তোরা. তোদের সব কয়টাকে আজ শেষ করবো আমি।

এই বলে অজানা ব্যক্তিটি কট করে ফোন টা কেটে দেয়।

🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸

ফারহাজ ফিহার কাছে এসে বলে উঠে–

ফিহা তুমি চিন্তা করো নাহ! আমি ইরিনাকে ফোন করে দিয়েছি।

ফিহার চোখ হঠাৎ ফারহাজ এর কপালের দিকে যায়। রক্ত গড়িয়ে একেবারে শুকিয়ে গেছে।

ফিহা উত্তেজিত হয়ে বলে উঠে-

আপনার কপালও তো কেটে গেছে লাটসাহেব!
ওষুধ লাগাতে হবে।

ফারহাজ বলে উঠে–
আমার তেমন কিচ্ছু হয়নি তুমি বরং এখানে থাকো।
আমি অইদিক টা দেখে আসছি।

এই বলে ফারহাজ উঠতে নিলে ফিহা খপ করে ফারহাজ এর হাত ধরে ফেলে।

(লেখিকাঃ জান্নাতুল ফেরদৌসি রিমি)

ফিহাঃ আমি বললাম নাহ ওষুধ লাগাতে হবে তার মানে হবেই।

ফারহাজ ফিহার দিকে অবাক হয়ে তাঁকায়।

ফিহা রুপ কে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে—

এইযে এসিস্ট্যান্ট আংকেল! ওষুধের বক্স টা দিন তো!

রুপ যেনো বিরাট একটা ঝটকা খেলো।

আংকেল তাও আবার তাকে। এখনো তার বিয়েও হয়নি পর্য়ন্ত আর তাকেই কিনা আংকেল বানানো হলো।

রুপ ঃ এইসব কি বলছো ফিহা? আমি আংকেল?
এখনো মেয়েরা আমার পিছনে ঘুড়ে।
আমি যথেস্ট হ্যান্ডসাম। আর সব থেকে বড় কথা আমার এখনো বিয়েটাও হলো নাহ। একটা বাচ্ছা ও নেই।

ফারহাজ এইসব শুনে অজান্তেই হেঁসে দেয়।

ফিহা চোখটা ছোট ছোট করে বলে উঠে–

বেশ করেছি আংকেল বলেছি হুহ!
আপনাকে আমার কাছে আংকেল লেগেছে তাই বলেছি। এখন চুপচাপ ওষুধের বক্স টা দিন।

রুপ মুখটা কালো করে বক্সটা ফিহার দিকে এগিয়ে দিলো।

ফিহা পামকিন কে রুপের কাছে দিয়ে বলে উঠে–
আমার পামকিন কে ধরুন। আমি লাটসাহেব কে ওষুধ লাগিয়ে দেই।

রুপঃ আমি কেন?

ফিহাঃ বেশি কথা বলেন কেন নিন বলছি।

রুপ কাঁপাকাঁপা হাতে পামকিন কে নিয়ে নিলো। কেননা ছোটবেলা থেকেই খরগোশ কে সে একটু ভয় পায়। শেষমেষ পুলিশ হয়ে খরগোশ সামলাতে হচ্ছে ভাবতেই কান্না পাচ্ছে রুপের। বসের হবু শালিকা বলে কথা কিছু বলতেও পারছে নাহ।

এইরকম কাঁপাকাঁপিতে পামকিন মনো হয়ে পড়েই যাবে।

তাই পামকিন নিজের চোখজোড়া লাল করে রুপের দিকে তাঁকায়।
পামকিনকে কেনো যেনো প্রচন্ড ভয়ংকর লাগছে রুপের কাছে। মনে হচ্ছে এখুনি কামড়ে দিবে।

ফিহা ফারহাজ এর দিকে তাঁকিয়ে বলে উঠে–

লাটসাহেব একটু ঝুকুন তো। ওষুধ টা লাগিয়ে দেই।

ফারহাজ বিনা বাক্যে ঝুকে পড়ে। ফিহা নিজের হাত দিয়ে ফারহাজ এর মাথায় ওষুধ লাগিয়ে দেয়।

ফারহাজঃ এখন ঠিক আছি?

ফিহাঃ হুম পার্ফেক্ট ( হেঁসে)

তখনি কিছু কন্সটেবলরা এসে বলে উঠে–
স্যার সিসিটিভি ক্যামারার ক্লিপ আমাদের হাতে চলে এসেছি আপনি প্লিয দেখে নিন।

ফারহাজ উঠে দাঁড়িয়ে তাদের কাছে গিয়ে বলে উঠে–

হুম আমি থানায় গিয়ে সব চেক করবো।

তখনি গাড়ি করে ইরিনা আর মিঃ রিক চলে আসে।

তারা দ্রুত গাড়ি থেমে নেমে যায়।

ইরিনা সোজা গিয়ে ফিহাকে ঝাপটে ধরে।

ফিহাও তার ইরিপুকে জড়িয়ে ধরে।

ফারহাজঃ Thanks god! আপনারা চলে এসেছেন তাড়াতাড়ি ! ফিহাকে এখন তাড়াতাড়ি বাসায় নিয়ে যেতে হবে। ও কিছুটা আঘাত পেয়েছে।

মিঃ রিক ফারহাজ এর কাছে গিয়ে বলে উঠে–

তোমাকে কি বলে যে ধন্যবাদ দিবো।
আজ তুমি না থাকলে আমাদের ফিহা যদি কিছু হয়ে যেতো।

ফারহাজ বলে উঠে–
তেমন কিছুনা আংকেল বরং ফিহাই আজকে আমাকে বাঁচিয়ে দিয়েছে। ফিহা যদি সঠিক সময়ে না এসে আমাকে ধাক্কা না দিতো তাহলে আমার গুলি
লেগে যেতো।

রুপঃ হুম! অই সন্ত্রাসীরা বার বার শুধু ফারহাজ স্যারকেই শুট করে যাচ্ছিলো।

কথাটি শুনে ইরির মনে এক আলাদা ভয় ঢুকে যায়।

সে ফিহাকে ছেড়ে তাড়াতাড়ি ফারহাজ এর কাছে যায়।

ইরিনাঃ কারা ছিলো তারা? আর ফারহাজ ওরা তোমার কোনো ক্ষতি করতে পারেনি তো??
সাবধানে থাকবে তো। আজ যদি তোমার কিছু হয়ে যেতো তখন আমার কি হতো?

এই বলে ইরিনা কান্নায় ভেজ্ঞে পড়ে।

ফারহাজ ইরিনার হাত দুটো ধরে বলে উঠে–
তোমার ফারহাজ এর কি কিছু হতে পারে? ইরি
কেউ আমার কিচ্ছু করতে পারবে নাহ।

রিকঃ হ্যা ইরি ফিহা তো আমাদের ফারহাজ বাবাকে সময়মতো ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়েছে। চিন্তা করো নাহ। ( ফিহার মাথায় হাত বুলিয়ে)

ইরিনা তাও যেনো চিন্তামুক্ত হতে পারছে নাহ।
কেননা সে কিছুটা হলেও আন্দাজ করতে পারছে এই কাজটি কার।

🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸

এদিকে৷

অজানা ব্যক্তিটি নিজের ঘরে গিয়ে সব ফাইল এন্ড কিছু মেশিং গান গুলো নিয়ে নেয়।
আজকে তার বাংলাদেশের ফ্লাইট রয়েছে। হাতে এখন আধা ঘন্টা সময় রয়েছে।
একবার মাকে দেখে যেতে হবে।

ভাবতে ভাবতেই সে তার মায়ের ঘরে একবার উকি দেয়। তা মা ঘুমাচ্ছে।
তিনজন নার্সরা সব কিছু পর্যবেক্ষন করছেন।

অজানা ব্যক্তি এক পলক তার মা কে দেখে
নীচে চলে যায়।। সব গার্ডরা নীচে দাঁড়িয়ে আছে।

।।।।চলবে।।।।
(কেমন হয়েছে জানাবেন কিন্তু 💙)
(যেকোনো সময় গল্পের মোড় ঘুড়ে যাবে 🙂)