#পবিত্র_বন্ধনে_আবদ্ধ
#পর্ব – ২৩
#Jannatul_ferdosi_rimi (লেখিকা)
ফারহাজ এক তাচ্ছিল্যের হাঁসি হেঁসে নীচে নেমে পড়ে। কেননা এই বাড়ির কারো আজকের দিনটা নিয়ে কোনো মাথাব্যাথা নেই। সবাই কেমন যেনো সময়ের সাথে সাথে পালটে গেলো।
ফারহাজকে নামতে দেখে ফারহাজ এর মা তড়িঘড়ি করে উঠে দাঁড়িয়ে বলে উঠে– ফারহাজ বাবা! আজকে থানায় না গেলে নয়?ফারহাজ কলারটা ঠিক করতে করতে বলে উঠে–কেন
মিসেস প্রিয়াঃ কেন আবার! কালকে তোর এন্গেজমেন্ট! একটা ইম্পোর্টেন্ট দিন!
ফারহাজঃ দেখো মা! এমনি একটি বিচ্ছিরি কেস নিয়ে ফেশে আছি! আমার কাছে প্রত্যেকটা দিন প্রত্যেকটা সময় গুরুত্বপূর্ণ ! একটা দিন এদিক ওদিক হলে যেকোনো কিছু হয়ে যেতে পারে।
মিঃ রাইহান ( ফারহাজ এর বাবা) খবরের কাগজে চোখ বুলিয়ে বলে উঠে–
ফারহাজ তোমার টিম কি করছে? প্রত্যেকদিন একটার পর একটা খুন হয়ে যাচ্ছে। তাও আবার বড় বড় বিসনেজম্যানদের।
এইভাবে চলতে থাকলে তো কবে আমাকে টার্গেট করবে তার কি নিশ্চয়তা!
ফারহাজ এর দাদি পানের বাটা টা রেখে বলে উঠে–
বালাই শাট! এইসব কি বলছিস খোকা। তোর কিচ্ছু হবেনা!
রাহাত ( ফারহাজ এর কাকা) ঃ ফারহাজ ও তাদের টিম সবাই তো সর্বচ্চ চেস্টা করে যাচ্ছে তো ভাই!
মিঃ রাইহান আবারো খবরের কাগজ টা হাতে নিয়ে বলে উঠে–
কি জানি! শহরের যা অবস্হা! আমার মনে হচ্ছে নাহ এই পুলিশ ফোর্স কিছু করতে পারবে।
আমি উপরের মহলের সাথে কথা বলবো!
ফারহাজ কিছুক্ষন চুপ থেকে বলে উঠে–
সময় বলে দিবে আমি কিংবা আমার টিম কি করছে।
(বাঁকা হেঁসে)
ফারহাজ এর এইরকম রহস্যময়ী কথাটিতে কেউ কিছু বুঝতে পারলো নাহ!
মিঃ রাইহানঃ মানে?
ফারহাজঃ অইযে বললাম সময়!
ফারহাজ সানগ্লাস টা চোখে পড়ে বেড়িয়ে গেলো।
ফারহাজ চলে যেতেই মিসেস প্রিয়া রাইহান এর দিকে তেড়ে এসে বলে উঠে–
আচ্ছা দেখছো! আমার ছেলেটা সারাক্ষন খাটছে
কালকে ছেলেটার এন্গেজমেন্ট কই একটু আনন্দ আলাদ্দ করবে আর তুমি ছেলেকে এইসব কথা শুনাচ্ছো!
রাইহানঃ তা তোমার ছেলেকে পুলিশে কে জয়েন হতে বলেছে? ব্যবসা সামলালেই তো পারে!তাহলে সারাদিন এতো চোর -খুনিদের পিছনে ছুটতে হতো নাহ!
ফারহাজ এর দাদি বলে উঠে–
অইযে একজন ছোটবেলায় তোর ছেলের মাথা খেয়েছে সেই ভুত তো তোর ছেলের মাথা থেকে এখনো নামেনি তাই তিনি পুলিশে জয়েন হয়েছেন।
রাহাতঃ আচ্ছা এইসব কথা এখন বাদ দাও!
কালকে যে এতো বড় অনুষ্ঠান কতদূর এগোলো?
বাবাকে তো দেখছি নাহ
রাইহানঃ পার্টি প্লেস এর লোক দের কাজ কতদুর এগোলো তা তদারকি করতে গিয়েছেন।
ফাইভ স্টার এর তিন তলায় সব আয়োজন করা হয়েছে।
মিসেস প্রিয়াঃ আমার তো সবাইকে ইনভাইটও করা শেষ
খাবারের লোকদের সাথেও কথা বলে নিয়েছি।
নিলয় ভিডিও গেম অফ করে বলে উঠে-কালকে ইরিপু আর ভাইয়ার এন্গেজমেন্ট আমি তো অনেক এক্সাইটেড। আমি গিয়ে আপুকে ডেকে আনি!
নিলয় ইশিকার ঘরে ছুটে যায়।
নিলয়ের মাঃ আরে মেয়েটা অনেক লেট করে ফিরেছে ফিরেছে ঘুমাতে দে নাহ! উফ চলে গেলো ছেলেটা। দিবে নাহ ইশিকা পিঠে।
ফারহাজ এর দাদি হেঁসে দেয়।
ফারহাজ এর দাদিঃ আহা ছোট বউমা যেতে দাও তো!
ফারহাজ এর দাদু গাড়িতে বসে নিজের ক্লাইন্টদের সাথে ফোনে কথা বলে যাচ্ছে। পার্টি সেন্টারে গিয়ে সব তদারকি করে এসেছেন সাথে।
আপতত এখন অফিস যেতে হবে।
তখনি হঠাৎ করে ড্রাইভার গাড়ি ব্রেক কষে।
দাদুঃ কি হয়েছে??
(লেখিকাঃ জান্নাতুল ফেরদৌসি রিমি)
ড্রাইভারঃ বড় সাহেব মনে হয় গাড়িটা নস্ট হয়ে গেছে। আমি দেখে আসি কি সমস্যা!
ড্রাইভাএ বেড়িয়ে যায়। মিঃ রাইজাদাও বেড়িয়ে পড়ে।
ড্রাইভার কিছুক্ষন গাড়ির ইঞ্জিন চেক করে বলে উঠে–
আমি মনে হয়না পারবো
আমি এখনি ম্যকানিক কে কল করতে হবে।
দাদুঃ এখন কী হবে? আমাকে ইমিডিয়েটলি অফিসে পৌছাতে হবে।
ফিহা পটকা, সিমি ও টিউপ মিলে স্কুল ড্রেস পড়ে একটার পর একটা আইসক্রিম খেয়ে যাচ্ছে তাও আবার তাদের ছোটুন কাকার ছোট্ট মিনি ট্রাকে বসে।
আজকে ফিহার জন্মদিনে চার বন্ধু ছোটুন কাকার ট্রাকে সারা শহর ঘুড়বে।
পটকাঃ ইসস আইসক্রিম গুলো কী মজা রে!
টিউপঃ আমার মতো সব খেয়ে ফেলতে ইচ্ছে করছে।
ফিহাঃ আরে মোটকুরা খা খা আমার জন্মদিন বলে কথা। যত পারিস খেয়ে নে।
সিমিঃ তুই আমাকে মটকু বললি?
ফিহাঃ আরে তোকে কেন বলবো? তুই তো চিক্নি
আমি তো এই পটকা আর টিউপ কে বলেছি।
আজকে সবাইকে শহরে ঘুড়াবো+ খাওয়াবো।
টিউপঃ আমাদের ফিহারানি নিজের থেকে আমাদের খাওয়াচ্ছে। প্রতিবছর আমাদের তো অনেক যুদ্ধ করে তোর থেকে ট্রিট নিতে হয়।
ফিহাঃ তেমন কিছু নাহ জানিস আজকে আমার মনটা খারাপ কারন ভালো বাবা বলেছিলো আজকে আমাদের সবাইকে ঘুড়তে নিয়ে যাবে কিন্তু ভালো বাবার হসপিটালে একটা জরুরী পেশেন্ট চলে এসেছে। আজকে আবার অনেক গুলো অপারেশন আছে .। তাই যেতে পারবে নাহ। আজকের প্লেন টা কেনসাল।
সিমিঃ আহারেএ
তখনি ফিহার নজর গেলো ফারহাজ এর দাদুর দিকে।
তাকে চিনতে একটুও অসুবিধা হলো নাহ ফিহার।
কেননা ফারহাজ এর বাড়িতে উনার ছবি ছিলো দেয়ালে টাজ্ঞানো।
ফিহা সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে–
দেখ লাটসাহেব এর দাদু!
সবাই ফিহার কথা শুনে সেদিকে তাঁকায়।
পটকাঃ কি হয়েছে?
ফিহাঃ লাটসাহেব এর দাদু! রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে কেন?? চল তো গিয়ে দেখি।
পটকা কিছু বলবে তার আগেই ফিহা ট্রাক থেকে নেমে পড়লো।
ফিহা ফারহাজ এর দাদুন এর কাছে গিয়ে বলে উঠে–
লাটসাহেব এর দাদু!
কোনো মেয়ের কন্ঠস্বর শুনে দাদুন পিছনে তাঁকায়।
ফিহাকে দেখে হঠাৎ করেই তার বুক টা ধুক করে উঠে।
একই চাহিনি একই চোখ কে এই মেয়ে।
দাদুন ঃ কেন তুমি?
ফিহাঃ আমি ফিহা 😊! ইরিপুর বোন হয় বলতে গেলে
দাদুনঃ ওহ আচ্ছা তুমি ইরিনা দিদিভাই এর বোন
ফিহাঃ হুম লাটসাহেব এর দাদুন আপনি তাইনা?
দাদুনঃ লাটসাহেব কে?
ফিহাঃ অইযে ইরিপুর হবু বর! আসলে কেমন যেনো লাটসাহেব এর মতো কথা বলে কেমন রাগি রাগি স্বভাব এর বাবা আমার আবার ভয় করে।
কিন্তু মনটা একটু একটু থুড়ি অনেকটাই ভালো!
ফিহার কথা শুনে দাদুন উচ্চস্বরে হেঁসে উঠে।
দাদুনঃ আমার নাতি বলে কথা!
ফিহাঃ আচ্ছা লাটসাহেব এর দাদু কোনো সমস্যা?
দাদুঃ আসলে আমার গাড়িটা নস্ট হয়ে গেছে। একটা জরুরী কাজ আছে অফিসে। আমাকে অফিসে যেতে হবে দিদিভাই।
ফিহাঃ আরে দাদু কোনো চাপ নিবেন নাহ।
আমাদের ট্রাক আছে
অইযে( ছোট্ট মিহি ট্রাক কে উদ্দেশ্য করে)
চলুন আপনাকে অফিসে পৌছে দিয়ে আসি।
ড্রাইভারঃ কিহহ। বড় সাহেব ট্রাকে যাবে?
ফিহাঃ ড্রাইভার কাকু তুমি চুপ থাকো।
আরেএএ দাদু চলুন নাহ । কোনো সমস্যা হবে নাহ।
মিঃ রাইজাদা কেনো যেনো ফিহার আবদার মাখা অনুরোধ ফেলতো পারলো নাহ। মেয়েটাকে বড্ড আপন লাগছে তার।
দাদুঃ ঠিক আছে দিদিভাই চলো।
এদিকে ফারহাজ ঢুকতেই রুপ একেবারে তড়িঘড়ি করে ফারহাজ এর কাছে এসে বলে উঠে–
স্যার বিরাট বড় একটা এক্সিডেন্ট হয়ে গেছে।
ফারহাজ ফাইল হাতে নিয়ে বলে উঠে–
খবর পেয়েছি আমি।
মর্গে কেউ আগুন ধরিয়ে দিয়েছে
যেখানে বডি গুলো ময়নাতদন্ত করা হয়েছিলো।
তো?
ফারহাজ এইরকম দায়ছাড়া কথায় থানার বাকিরা কিছুটা অবাক হয়।
রুপঃ এতো বড় একটা ঘটনা ঘটে গেলো এখন তো
আমরা কোনো রিপোর্টও পাবো নাহ।
যে কীভাবে খুন করা হয়েছে। ওসি স্যার কে কি জবাব দিবো.
ফারহাজ একটা ফাইল রুপের দিকে দেয়।
রুপ ফাইল টা চেক করে বলে উঠে–
স্যার!
এইটা তো সব বডিগুলোর ময়নাতদন্তের রিপোর্ট!
এইটা কী করে সম্ভব?
ফারহাজঃ মর্গে আগুন লেগেছে ঠিকই কিন্তু বডিগুলোর কিছুই হয়নি কেননা আমি জানতাম
এই বডিগুলোর ময়নাতদন্র হোক তা খুনি কিছুতেই চাইবে নাহ।
তাই কাউকে কিচ্ছু না বলে আমি রাতের দিকে
বডিগুলো অন্য মর্গে পাঠিয়ে দেই। আর তারপর রিপোর্ট বের করিয়ে ফেলি। রিপোর্টে স্পষ্ট বলে দেওয়া আছে বিষাক্ত কিছু খাওয়ার কারনে মৃত্যু গুলো হয়েছে।
রুপঃ ইউ আর গ্রেটে!
ফারহাজ মুখের হাঁসি চওরা করে বলে উঠে—
সিরিয়াল কিলার কে একটু বোকা বানালাম আর কি
এদিকে,,
অজানা ব্যক্তি দাবার গুটি সাজাতে সাজাতে বলে উঠে—
সত্যি ফারহাজ মির্জা তোমার বুদ্ধি আছে বলতে হবে!
আমাকে বোকা বানানোর ক্ষমতা রাখো তুমি।
এইবার গেম টা খেলতে মজা হবে।
।।।।।।। চলবে।
#পবিত্র_বন্ধনে_আবদ্ধ
#পর্ব -২৪
#Jannatul_ferdosi_rimi (লেখিকা)
অজানা ব্যক্তি বাঁকা হেঁসে দাবার গুটি গুলো থেকে মন্ত্রী বের করে ঘুড়াতে ঘুড়াতে বলে উঠে–আমার হাতে এমন একটা গুটি আছে যে হবে আমার মন্ত্রী এই মন্ত্রী দিয়েই আমি ফারহাজ মির্জার রাজাকে চেক মেট করবো। এই বলে অজানা ব্যক্তি নিজের মন্ত্রী দিয়ে অপরপাশের রাজাকে চেক মেট করে। তারপর নিজের ফোন বের করে কাউকে কল করে বলে উঠে–
হুম! সব ব্যবস্হা করে রাখ, আমি আসছি!
ফিহা দাদুনকে নিয়ে ট্রাকে উঠে পড়ে
ফিহা তাড়াতাড়ি বলে উঠে—
ছোটন কাকা তাড়াতাড়ি স্টার্ট দাও!
লাটসাহেব এর দাদুকে তাড়াতাড়ি অফিসে যেতে হবে।
ছোটন কাকা আচ্ছা বলে চালু করে।
দাদুনঃ কিন্তু ফিহা দিদিভাই! তুমি আমার নাতিকে কি ইরিনার সুত্রেই চিনো নাকি আগে থেকে চিনো?
কথাটি শুনে ফিহা একটা শুকনো হাঁসি দিয়ে বলে উঠে—
আগে থেকেই চিনি!
দাদুনঃ কীভাবে?
সিমি, পটকা, টিউপ আর ফিহা একে অপরের মুখের
মুখের দিকা তাঁকায়।
দাদুনঃ কোনো সমস্যা?
পটকাঃ সে এক বড় ইতিহাস!
দাদুন কিছুটা ভ্রু কুচকে বলে উঠে–
মানে?? আমি সত্যি কিচ্ছু বুঝতে পারছি নাহ
ফিহা সব কাহিনি শুরু থেকে বলে কীভাবে ফারহাজ এর সাথে তাদের প্রথম দেখা।
সব শুনে দাদুন হু হা করে হেঁসে উঠে।
দাদুনঃ আমি তো বিশ্বাস ই করতে পারছি নাহ।
আমার অই বদমেজাজী নাতি ফিহার কাছে হেরে গিয়েছিলো।
দাদুনের কথা শুনে ফিহাসহ বাকিরাও হেঁসে দেয়।
এইভাবে গল্প করতে করতে সবাই অফিসের সামনে চলে আসে।
ফিহাঃ দাদুন চলে এসেছি
ফিহার কথা শুনে দাদুন নেমে পড়ে।
দাদুন বলে উঠে—
সত্যি তোমাদের সাথে আলাপ হয়ে ভালো লাগলো।
আচ্ছা তোমরা কি সবাই একই স্কুলে পড়ো।
পটকাঃ হ্যা লাটসাহেব এর দাদু আমরা একই স্কুলে পড়ি
টিউপঃ আর আমরা সবাই বেস্ট ফ্রেন্ড !
সিমিঃ আর আজকে আমরা ভেবেছি
সারা শহর ঘুড়ে বেড়াবো!
আজকে আমাদের ফিহা রানির জন্মদিন বলে কথা!
এই কথাটা শুনে দাদুন কিছুটা অবাক হয়ে ফিহার
দিকে তাঁকায়।
কেমন যেনো সব কিছু মিলে যাচ্ছে কিন্তু কি আছে এর পিছনে দাদুন বুঝতে পারছে নাহ।
তাও দাদুন মুখে হাঁসি ফুটিয়ে বলে উঠে–
শুভ জন্মদিন ফিহা দিদিভাই!
ফিহাঃ৷ ধন্যবাদ লাটসাহেব এর দাদু!
সিমিঃ দাদুন এখন আমাদের যেতে হবে!
দাদুঃ সে কি? তোমরা আমার অফিসে যাবে নাহ।
আমার এতো বড় উপকার করলে। কিছু না খায়িয়ে কি করে যেতে দেই! তাছাড়া ফিহা দিদিভাই এর জন্মদিন বলে কথা!
ফিহা কিছু বলবে তার আগেই পটকা বলে উঠে—
পটকাঃ হু খাওয়া তো যাই!
ফিহাঃ কিন্তু!
দাদুনঃ আমাকে দাদু বলে যেহুতু ডেকেছো
দাদু ভালোবেসে খাওয়াচ্ছে এক প্রকার ট্রিট কিছু খেয়েই যেতে হবেই।
ফারহাজ আর ইরিনার দাদুন তার মানে তোমাদের ও আমি দাদু হই সম্পর্কে দাদুন হই বুঝেছো দিদিভাই!
ফিহা হেঁসে বলে উঠে—
ঠিক আছে দাদুন!
।।।।।
ফারহাজ বের হয়ে যায় থানা থেকে বেড়িয়ে যায়। আপতত অই বিষাক্ত খাবার গুলো টেস্টের জন্য পাঠাতে হবে।
অই কিলার ইচ্ছে করেই এতো প্ল্যান করেছে।
সিরিয়াল কিলারের প্ল্যান ছিলো বিষাক্ত কিছুর মাধ্যমে খুন গুলো করবে তাহলে কেন শুধু শুধু নিজের লোক পাঠিয়ে পুলিশের উপর আক্রমন করিয়েছে। নাহ নাহ শুধু শুধু নাহ। এর পিছনেও একটা কারন আছেম
আর অই লোড শেডিং ও একটা ফাঁদ। যাতে ফারহাজ এর ফোর্স রা ক্লাবের লোকদের বাঁচাতে
ভিতরে চলে যায়। আর কিলারের লোকেরা ফারহাজ
এর উপর আক্রমন করে যাচ্ছিলো। একটু হলেই ফারহাজকে শুট করতে যাচ্ছিলো। কিন্তু মাঝখান থেকে ফিহা এসে ফারহাজকে বাঁচিয়ে ফেলেছিলো।
তার মানে কিলারের টার্গেট পয়েন্ট শুধু অই বিসনেজম্যান নাহ ফারহাজ ও ছিলো।
ফারহাজের কাছে আপততসব কিছু জলের মতো পরিষ্কার।
ফারহাজ এইসব ভাবতেই ভাবতেই তাদের গাড়ি ফরেনসিক ল্যাবের কাছে চলে আসে। কিন্তু ফারহাজ্
বুঝতে পারছেনা অই কিলার কেনো তাকে টার্গেট করলো?
রুপঃ স্যার আমরা চলে এসেছি!
রুপের ডাকে ফারহাজ ভাবনা থেকে বেড়িয়ে আসে।
ফারহাজঃ ওহ হ্যা চলো চলো!
ফারহাজ আর দেরী না করে গাড়ি থেকে বেড়িয়ে পড়ে।
এদিকে,,,
মির্জা বাড়ি থেকে ইরিনার জন্য সব ড্রেস গয়না সব কিছু চলে এসেছে।
রিহা ইরিনাকে নিয়ে সব কিছু দেখে যাচ্ছে।
অনেক আত্বীয়ও বাড়িতে চলে এসেছে।
কালকে এতো বড় অনুষ্ঠান বলে কথা!
ইরিনার কাকি বলে উঠে–
সত্যি গয়না গুলো বেশ এক্সকুসিভ!
ইরিনার মামি বলে উঠে—
হুম ড্রেস গুলো বেশ দামি! আবার অনুষ্ঠান নাকি
ফাইভ স্টার হোটেলে আয়োজন করা হয়েছে।
আরেকজন প্রতিবেশি বলে উঠে-
ফাইম স্টারেই তো হবে। রাইজাদা মির্জার বড় নাতি ও হবু নাত বউয়ের আন্টি বদল বলে কথা!
আমাদের ইরিনার ভাগ্য আছে বলতে হবে।
ইরিনার কাকিঃ তা আমাদের মেয়েও কি কম নাকি?
বিদেশ থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেছে ।
রিহাঃ এতো কিছু জানিনা শুধু আমার মেয়েটা সুখি থাকলেই আমি খুশি!
ইরিনার এইসবে কোনো মন নেই। ইচ্ছে করছে নিজের ঘরে ছুটে চলে যেতে। তখনি ইরিনার ফোনে ফারহাজ এর ফোন আসে।
ইরিনাঃ মা আমি একটু আসছি।
ফারহাজ ফোন করেছে।
সবাই কথাটি শুনে মুচকি মুচকি হাঁসছে।
ইরিনার কাকিঃ আহা আমাদের জামাই বাবা
আমাদের ইরিমনিকে কত্ত মিস করে। ঘন্টায় ঘন্টায় তার ফোন আসে বুঝি।
ইরিনা কোনোরকম জোড় করে হেঁসে উঠে পড়ে।
রিহাঃ মেয়ে আমার লজ্জা পেয়েছে।
দূর থেকে সব কিছুই মিসেস ফাতেমা দেখে যাচ্ছেন।
কালকে ইরিনা আর ফারহাজ এর এন্গেজমেন্ট
ফারহাজ হয়ে যাবে অন্যকারো কিন্তু এইটা তো অন্যায়।
কিন্তু ফাতেমা ই বা কি করতে পারে। ফাতেমা মনেও কস্ট হচ্ছে। নিজের মেয়েটার সাথে যে অন্যায় হচ্ছে
তা তিনি খুব ভালো করেই জানেন। কিন্তু এতে ইরিনার বা ফারহাজের কোনো হাত নেই।
তারা একে অপরকে ভালোবাসে।
ইরিনা নিজের ঘরে গিয়ে ফোনটা রিসিভ করে বলে উঠে—
হ্যালো ফারহাজ!
ফারহাজ ঃ আমার প্রতি অভিমান হয়েছে বুঝি?
ইরিনাঃ অভিমান কেন হবে ফারহাজ?
ফারহাজঃ আমি জানি ইরি তোমাকে একটুও সময় দিতে পারছি নাহ। তার মধ্যে এই কেসে জঘন্য ভাবে ফেসে গিয়েছি!
( দীর্ঘশ্বাস ফেলে)
ইরিনাঃ তুমি এই কেসে এতো বেশি থেকো নাহ।
ফারহাজ দেখলেই তো অইদিন তোমার এক্টুর জন্য গুলি লেগে যেতো যদি ফিহা না থাকতো। তোমার কিছু হলে আমার কি হতো?
ফারহাজঃ এইসব কি বলছো? ইরিনা আমি একজন পুলিশ অফিসার আমি এইসব কারনের জন্য কিছুতেই সরে আসবো নাহ। এর শেষ আমি দেখে ছাড়বো।
ইরিনা বলতে গেলে ফারহাজ ইরিনাকে থামিয়ে বলে উঠে–
এখন বাদ দাও এইসব কেসের কথা! কালকের দিনের জন্য আমি অনেক্টাই এক্সাইটেড।
এতোদিনের ভালোবাসা আমাদের। কালকে তুমি হবে আমার বাগদত্যা। তোমার উপর শুধু আমার অধিকার থাকবে এই ফারহাজ মির্জার।
ইরিনা চুপ হয়ে আছে আর নিজের চোখের জল ফেলছে।
এদিকে,,
ফিহা ও তার বন্ধুরা ট্রাকে উঠে পুরো শহরে ঘুড়ছে।
দাদুন তাদের জোড় করিয়ে নিজের অফিসে নাস্তা করিয়েছে।
টিউপঃ যাই বলিস ফিহা দাদুন টা কিন্তু অনেক ভালো!
পটকাঃ তা যা বলেছিস। আমার কত কিছু খাওয়ালো।
ফিহাঃ হুম একেবারে লাটসাহেব এর মতো ভালো।
হঠাৎ করেই ফিহার নজর যায় নিজের হাতের উপর।
ফিহাঃ আমার ব্রেসলেট!
আমার ব্রেসলেট টা কোথায়??
সিমিঃ মানে কি ফিহা? শুনেছি অই ব্রেসলেট টা নাকি অনেক দামি! তুই কি হারিয়ে ফেলেছিস.?
ফিহা কিছুক্ষন ভেবে বলে উঠে–
আমি খাবার খাওয়ার সময় ভুলে বোধহয় দাদুর কেবিনেই ব্রেসলেট টা খুলে রেখে এসেছি।
এখন কী হবে? মা তো আমাকে খুব বকবে।
পটকাঃ আরে এতো চিন্তার কি আছে। কালকে তো পুলিশ সাহেব আর ইরিপুর এন্গেজমেন্টে দাদুন আসবেই তখন না হয় চেয়ে নিবি চিন্তা করিস নাহ।
ফিহাঃ হুম তাও ঠিক!
মিঃ রাইজাদা নিজের কেবিনে যায় কাজ করছিলো
তখনি তার একজন স্টাফ বলে উঠে–
স্যার একটু আছে যারা এসেছিলো যাদের মধ্যে একজন মেয়ে কি নাম যেনো ফিহা উনার এক ব্রেসলেট ফেলে গেছে দেখে মনে হচ্ছে বেশ দামি।
মিঃ রাইজাদাঃ তাই নাকি? ঠিক আছে তুমি আমার কাছে দাও। কালকে ফিহাকে ফিরত দিয়ে দিবো।
সটাফ টা মিঃ রাইজাদার কাছে ব্রেসলেট টা দেয়।
ব্রেসলেট টা দেখে এক প্রকার স্তব্ধ হয়ে যায় মিঃ রাইজাদা। নিজের চোখ কে বিশ্বাস করতে পারছে নাহ। এ কি করে সম্ভব।
।।।। চলবে।