পরিণীতা পর্ব-১৮

0
3659

#পরিণীতা
#নাহিদা ইসলাম
#পর্ব ১৮

৩৫.
অনিতা চৌধুরী দুই বউকে নিয়ে বসেছেন।কার কী দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য।

–শুনো ইরা পরী তোমার বাবার বাড়ির সম্পর্কে কী হয় তা জানিনা, কিন্তু এখানে তোমার বড় জ্যা, সম্মান করে কথা বলবে। তুই শব্দটা যেনো তোমার মুখে না শুনি। কাজ কর্ম ও তো তেমন পাড়ো না সব শিখে নিবে।

ইরার রাগে ভেতরে ফেটে যাচ্ছে কিন্তু মুখে হাসি রেখে কথাগুলো শুনতেছে।

–ঠিক আছে মা।

–পরী তুমি ও ইরাকে আদর করবে, না বুঝলে বুঝিয়ে দিবে। আর ইরা কোনো ধরনের জামেলা করলে সাথে সাথে আমাকে ডাক দিবা ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দিবো। আমি চাই না আমার বাড়িতে দুই দুইটা বউ থাকতে বাড়ির ছেলেরা কাজের মেয়ের হাতের রান্না খাবে। সকালে আমি রান্না করবো দুপুরে ইরা রাতে পরী রান্না করবে। আর দুজনেট রান্না করার সময় দুজন ই কিচেনে থাকবে। শাড়ি ছাড়া অন্য কোনো পোশাক পড়বে না। বাড়ির বউ, বউ এর মতো ই থাকবে।

দুজনে ই সব কথা মাথা পেতে মেনে নিলো। কিন্তু ইরা তো তেমন কোনো রান্না ই পারে না বাবার বাসায় থাকতে তো সব পরীকে দিয়ে করিয়েছে।

পরী সুন্দর করে হাসতে হাসতে রুমে চলে গেলো, ইরা কী করবে ভেবে পাচ্ছে না৷ পরীকে বাসা থেকে তাড়াবে নাকি নিজে রান্না শিখবে। দুকাজ এক সাথে করতে গেলো তো কোনো টা ই ভালো হবে না। শেষে না ইরাকে ই এবাসা থেকে বের হতে হয়।।।।

এবাসায় পরী আসার পর একবার ও সামনে যায়নি কারণ এখন সবাই জানে পরীর আর আদির ব্যাপারটা। বেশ অবাক হয়েছিলো যখন জানতে পারলো পরীকে ভাবি ডাকতে হবে। কী করে সহ্য করতে পরীকে চোখের সামনে অন্য কারো সাথে, তাও নিজের ভাইয়ের সাথে। সব হয়েছে এই ইরার জন্য, আমাকে যেমন রোজ রোজ আগুনে পুড়াচ্ছে আমি ও শান্তিতে থাকতে দিবো না ইরাকে।
কথাগুলো বলে ই একটা দৈর্ঘ শ্বাস ফেলে আদি।।।


রাতের বেলা।
অর্ণব অফিস থেকে বাসায় ফিরে রুমে ডুকে দেখে পরী আলমারি জিনিস পত্র গুছিয়ে রাখছে৷ তাও শাড়ি পড়েছে। অর্ণব গিয়ে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে।

প্রথম পরী ভয় পেয়ে যায়, আদি নয়তো এটা। সামনে তাকাতে ই দেখে অর্ণব।

–ফ্রেশ হয়ে আসেন।

অর্ণব পরীর দিকে বিরক্তকর ভাবে তাকিয়ে ওয়াশরুম ডুকে যায়। পরী আবার আলমারি কাপড়চোপড় গুছাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।

কিছুক্ষন পর,

–পরী একটু শুনে যাও তো।

–কী হয়েছে। ওয়াশরুম গিয়ে ও আমাকে ডাকতে হয়।

পরী গিয়ে দরজায় ধাক্কা দিয়ে বলে কী লাগবে।অর্ণব দরজাটা একটু হাতটা টান দিয়ে পরীকল ভেতরে নিয়ে গিয়ে বলে।

–তোমাকে…

–ঠান্ডা লাগছে অনেক ছাড়ুন।

অনেক শক্ত করে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে
পরীর চুলগুলোতে মুখ ডুবিয়ে দেয়। আস্তে আস্তে গলায় কিস করতে থাকে। দুইহাত দিয়ে পেটে হাত দিয়ে সাইড করতে থাকে। আচলটা ফেলে দিয়ে অর্নব নিজের দিকে ফিরিয়ে নেয়। এক হাত দিয়ে চুলগুলো মুখ থেকে সরিয়ে কপালে গভীর ভাবে কিস করে।
পরি সরাতে চেষ্টা করলে ঠোঁট দুটো নিজের আয়েতে করে নেয় অর্ণব।
প্রতিটি স্পর্শে পরী কেপে উঠছে মুখ দিয়ে কোনো শব্দ করার মতো ও সুযোগ পাচ্ছে না।

হঠাৎ দরজা নক করার শব্দ পায় অর্ণব পরীর ঠোট ছেড়ে দিয়ে পরীর দিকে তাকায়। পরী ভালো করে ই বুঝতে পারলো ইরা ডাকতেছে।

অর্ণব ইরার ডাককে উপেক্ষা করে আবার নেশা ভারা চোখ নিয়ে পরীর ঠোটের দিকে এগিয়ে যেতে ই পরী ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়।

–আমি যাই ইরা ডাকতেছে।

–এই মেয়ে কী আর আসার টাইম পাইনি।

–জানিনা

বলে ই পরী যেতে নিলে অর্ণব আবার টান দিয়ে নিজের বুকের উপর ফেলে,

–এই ভেজা অবস্থা তুমি কোথাও যাবে না। তুমি শাড়ী চেঞ্জ করে নেও আমি দেখতেছি।

পরী নিজের দিকে তাকিয়ে দেখে সত্যি ই অনেকটা ভিজে গেছে।

–আমি এইখানে শাড়ি নিয়ে এসেছি নাকি।

–আমি এনে দিচ্ছি।।।।

অর্ণব ড্রেস পড়ে দরজা খুলে দেখে ইরা নাই। পরী শাড়ি পড়ে বের হয়ে ই অনিতা বেগমের রুমের দিকে পা বাড়ায়।।। কিছুক্ষন কথা বলে চলে আসে।।। ইরা কেনো ডেকেছিলো তা জানতে আগ্রহি না পরী। যদি সত্যি ই কোনো প্রয়োজন থাকে তাহলে আবার আসবে ই।।।

৩৬.

শরিরের উপর ভারি কিছু অনুভব হতে ই চোখ খুলে পরী।। আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছে অর্ণব।

পরী আস্তে আস্তে অর্ণব এর কানের কাছে যেয়ে ছাড়ুন বলে জোরে চিৎকার করে।
অর্ণব এমন চিৎকার শুনে উঠে বসে পড়ে।

–কী হয়েছে এতো জোরে কেউ চিৎকার করে নাকি।।।

—তাহলে আমাকে এভাবে জরিয়ে ধরেছেন কেনো।

—আমার বউকে আমি জড়িয়ে ধরেছি তোমার কী।

–আমার জামাই এর কানে কাছে চিৎকার করেছি আপনার কী।

–কী বলছো টিয়াপাখি।

মুখে দুষ্টু হাসি নিয়ে বললো তাহলে আমি ও এখন আমার বউকে আদর করবো তোমার ও কিছু না।
কথাটা বলে ই পরীকে টান দিয়ে অর্নব এর কাছে আনতে ই অনিতা চৌধুরী দরজায় নক করছে।

–কী হলো এভাবে চিৎকার করলা কেনো। কী হয়েছে।

সাথে আদি আর ইরা ও এসেছে।

আপনাদের কমেন্ট গুলো পড়ে অনেক কষ্ট পাই, আমার পরিবার,লেখাপড়া প্লাস আৃমার ব্যক্তিগত কিছু সমস্যা থাকতে পারে, সব কিছুর পরে ও প্রতিদিন গল্প লিখতে চেষ্টা করি, আমার ও ইচ্ছে করে বড় করে লিখি কিন্তু বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকতে পারি না মাথা ব্যাথা করে, আর বানান মানুষ ইচ্ছে করে ভুল করে না, আমি এতো অল্প সময় নিয়ে লিখে যে পরবর্তীতে পড়ার ও টাইম পাইনা। তাই বলছি সবগুলো পর্বতে যদি কোনো ভুল হয় ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবে।]

পরী কী হয়েছে তোমার।

আদির শব্দ পেয়ে ই অর্ণব এর চোখগুলো রক্তবর্ণ ধারন করে।

–মা কিছু হয়নি, এমনি পরী খারাপ স্বপ্ন দেখেছিলো।

–পরী তুমি ঠিক আছো তো।

আবার আদির শব্দ পেয়ে বেশ রেগে ই অর্ণব উওর দিলো
–কিছু হয়নি, মার থেকে মাসির দরদ বেশি দেখাতে আসবি না।।।

অর্ণব এর এমন রাগান্বিত কন্ঠ শুনে সবাই চলে যায়। কিন্তু আদির ভেতরে অনেক কষ্ট হচ্ছে কে দেখতে পারে এমন নিজের ভালোবাসার মানুষকে অন্য কারো সাথে। মন চাচ্ছে ইরাকে ইচ্ছে মতো থাপ্পড় দেওয়ার জন্য।

নাস্তা করার জন্য অর্ণব আর পরী টেবিলে যায়। অর্ণবকে বসতে বলে পরী খাবার আনার জন্য কিচেনে যেতে ই আদি হ্যাচকা টান দিয়ে আদির অনেকটা কাছে নিয়ে আসে।।।
একহাত দিয়ে মুখ চেপে ধরে।

বেশকিছুক্ষন পর ও যখন পরী না আসে তখন অর্ণব পরীকে ডাকতে ডাকতে কিচের দিকে যায়….

চলবে।