পূর্ণতা পর্ব-৩০

0
459

#পূর্ণতা❤️
#Writer_তানজিলা_তাবাচ্ছুম❤️

৩০.

আঁখিযুগলে নোনা পানি এসেছে। প্রচণ্ড কান্না পাচ্ছে তারার। সে কখনোই ভাবে নি এইসব কিছু হবে। আলোক যে এইরকম একজন মানুষ তা আজ জানতে পারলো। নিরব চোখের কর্নিশের পানি টুকু মুছে বললো,

‘ কি থেকে কি হয়ে গেল!’

তারা কাঁদো কাঁদো স্বরে বলল,

‘ তারপর!’

নিরব তপ্তশ্বাস ফেলে বলল,

‘ তারপর____

___________________

আলোকের আর্তনাদে পুরো বাড়ি কেঁপে উঠে। আলোকের এই মুহূর্তে নিজেকে নিকৃষ্ট মানুষ হিসেবে মনে হচ্ছে। নিজের করা কর্মে সে প্রচন্ড অনুতপ্ত হচ্ছে। কেন চাঁদের সাথে সে রাগ করেছিল? রাগ করা তো শয়তানের কাজ। কেন সে এতটা অভিমান করল চাঁদের উপর? যার ফলস্বরূপ আজ চাঁদ নেই। যদি আলোক অভিমান না করে সেইদিন চাঁদের সাথে থাকতো তাহলে হয়ত চাঁদ বেঁচে থাকতো। কিন্তু এখন আফসোস করে কি হবে? আশা উপরে আসলো দেখলো আলোক হাঁটু ভেঙ্গে বসে মাথা নিচু করে জোরে কাঁদছে। আশা আসতেই তাসলিমা ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। আলোককে এভাবে দেখতেই আশা তার কাছে গিয়ে আলোকের দু’গালে হাত রেখে অসহায় ভাবে বলল,

‘ কি হয়েছে বাবা? কাঁদছিস কেনো? নাহিদ! নাহিদ ওভাবে দৌড়ে গেল কেনো?’

আলোক এই মুহূর্তে কথা বলার মত শক্তি টুকু পাচ্ছে না। সে অনাবৃত কাঁদছে। তার মায়ের দিকে তাকাতেই আশা ছেলেকে দু’হাতে বুকে চেপে ধরে। আর ইতস্তত কন্ঠে বলে,

‘ বাবা কাঁদছিস কেনো? তুই জানিস না তুই কাঁদলে যে তোর মায়ের খুব কষ্ট হয় বাবা।’

আলোক সজোরে তার মায়ের গলা জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো‌ আর কাঁদো কাঁদো স্বরে বলল,

‘ ম্_মা্_ মা না_ নাহিদ অনেক কষ্ট দি_দিয়ে মেরেছে মা_ অনেক কষ্ট দি_দিয়ে মের_মেরেছে।’

তারপর আশা আলোকের মাথায় হাত বুলাতে শুরু করে। আস্তে আস্তে আলোক সব কিছু বলে আশা কে। আশা সব শোনার পর আলোককে নিজের থেকে ছাড়ালো। তারপর আলোকের দু’গাল ধরে শক্ত ভাবে বলল,

‘ আলোক আমার দিকে দেখ। আলোক।’

অনেকক্ষন পরে আলোক তাকলো। আশা আলোকের চোখের পানি মুছে দিল তারপর জোর কন্ঠে বলল,

‘ দেখ বাবা যারা এইসব করে তাদের উদ্দেশ্য থাকে আমাদের কাঁদানো , আমাদের কষ্ট দেওয়া। আর যদি আমরা সেটাই করি তাহলে সে তার উদ্দেশ্যে সফল হয়ে যাবে। তার জয় হয় আর আমাদের পরাজয়। কিন্তু আমরা যদি তাকে দেখিয়ে দেই আমরা অনেক স্ট্রং, সহজেই ভেঙ্গে পরি না তাহলে সে তার কাজে ব্যর্থ হয়ে যাবে। নাহিদ ও এই উদ্দেশ্যে এইসব করেছে! যাতে তুই ভেঙ্গে পরিস, কাদিস, কষ্ট পাস।’

বলে থামলো আশা। তপ্ত নিঃশ্বাস ফেলে বললো,

‘ তুই এখন দেখ তুই সেটাই করছিস। তাহলে নাহিদ নিজের উদ্দেশ্য সফল হয়ে গেল। তুই কি চাস ও সফল হোক?’

আলোক মাথা নাড়িয়ে ‘না’ বলল।

‘ তাহলে কাঁদছিস কেন?’

আলোকের চোখের কার্নিশ হতে আঙ্গুলে এক ফোঁটা জল নিয়ে বলল,

‘ জানিস এই পানির মূল্য কি? যেটাকে তুই অপচয় করছিস। রাতে তাহাজ্জুদ নামাজে এটা ফেলবি তাহলেই এর মূল্য বুঝবি। বুঝেছিস?’

আলোক মাথা নাড়িয়ে আশাকে জরিয়ে ধরল।আশা আর কিছু বলল না।

________________

তারা ভাবতেও পারছে না তার শাশুড়ি আশা এতটা ভালো। যেখানে তার নিজের মা তাকে এতটাও ভালোবাসে না সেখানে আশা আলোকের সৎ মা হওয়ার পরেও তাকে কতটা আদর, ভালোবাসা দিয়ে আগলে রাখেছে। তারার খুব আফসোস হচ্ছে যদি তার মা-ও এইরকম হতো।

‘ তারপর রাতে আলোক নিজের ঘরের মেঝেতে বসে ছিল। এমন সময় হঠাৎ বাহির অনেক শব্দ শুনতে পাওয়া যায়। আলোক তা দেখতে বের হল দেখলো বাড়িতে পুলিশ এসেছে আর তার সমানে আশা দাঁড়িয়ে জোড় কন্ঠে কিছু বলছে। আলোক কে দেখতেই পুলিশ অ্যারেস্ট করে নেয়।’

তারা অত্যন্ত আকাঙ্ক্ষা নিয়ে বললো,

‘ কিন্তু কেনো?’

নিরব মুখে প্লাস্টিক হাসি হেসে বললো,

‘ কারণ নাহিদ পালিয়ে গেছিল। সেইদিন ওখানকার রাস্তায় কাজ চলছিল। নাহিদ তাড়াহুড়ায় পালাতে গিয়ে গাড়ির নিচে চাপা পড়ে, তাতে নাহিদের অনেক ব্লাডিং হয়। তখন কার সময়ে হসপিটাল ছিল আরো দূরে তাই যেতে অনেক দেরি হয়ে যায়। অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণে নাহিদ মারা যায়। আর একমাএ ছেলেকে হারিয়ে তাসলিমা অ্যান্টি থানায় আলোকের বিরুদ্ধে কেস করে।’

তারা ধীর কন্ঠে বললো,

‘ তাহলে কি এইজন্য আলোক জেলে ছিল?’

নিরব শব্দ করে হাসলো। আর নীরবের হাসিতেই বোঝা যাচ্ছে সে সম্মতি জানাচ্ছে এতে। তারা কিছুক্ষন চুপ থেকে অস্থিরতা নিয়ে বলে উঠলো,

‘ কিন্তু ওটা তো রোড অ্যাকসিডেন্ট ছিল। তাহলে আলোক জেলে গেলো কেনো?’

‘ কারন তাসলিমা অ্যান্টি অনেক জটিল কেস সাজিয়েছিল। উনি চাঁদের হত্যার খুনিও আলোক কে বানিয়েছেন। উনি বলেছিলেন চাঁদের সাথে নাহিদের একটা সম্পর্ক ছিল। আলোক জানার পর নাহিদকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। তারপর চাঁদের উপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালায়। কিন্তু মাস কয়েকখানিক পর নাহিদ চাঁদের সাথে দেখা করতে এলে ওরা দুজন আলোকের হাতে ধরা পড়ে। আর এইজন্য আলোক চাঁদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে প্রথমে ঝগড়া করে তারপর তাকে শ্বাসরুদ্ধ করে মেরে ফেলার প্রয়াস চালায়। আর এই খবর যাতে কে জানতে না পারে সেই জন্য ওই দিন রাতেই চাঁদ কে দাফন করে। তারপর কিছুদিন যেতে যখন নাহিদ আলোক কে হুমকি দেয় যে, সে পুলিশ কে সব বলে দিবে তখন নাহিদ আর আলোকের মধ্যে একটা হাতাহাতি হয়। আর আলোক নাহিদ কে অনেক মারে যার ফলে নাহিদের রক্ত ক্ষরণ হয় আর হসপিটাল যাওয়ার পথে আলোক নাহিদ কে গাড়ি চাপা দিয়ে হত্যা করে আর সেটাকে রোড অ্যাকসিডেন্ট নামে সবার কাছে দেখায়। অর্থাৎ আলোক চাঁদ ও নাহিদ কে ‘এটেম্পট টু মার্ডার’ করেছে।’

সব শুনে তারা হতবাক! মানুষ এতটা নীচ কিভাবে হতে পারে? এতটা নিকৃষ্ট!

‘ এইরকম একটা কেস সাজান তাসলিমা অ্যান্টি। আর তার সাথে সঙ্গ দেন রাহেলা নামে ওই মহিলাটা।’

তারা রুষ্ঠ কন্ঠে বলল,

‘ কিন্তু আলোক ,আশা মা, বাবা কেউ কিছু বলে নি?’

নিরব তপ্ত নিশ্বাস ফেলে বললো,

‘ আলোক আর কি বলত? সে তো এমনিতেই চাঁদের মৃত্যুর জন্য নিজেকে দায়ী করেছে। আর আদালতে আলোক কে যখন জিজ্ঞেস করা হয়েছিল
, ‘ চাঁদের মৃত্যুর আগে চাঁদের সাথে আলোকের রাগারাগি, ঝগড়া হয়েছিল কিনা?’ প্রতত্তরে আলোক ‘হ্যাঁ’ বলেছিল। কারণ সত্যি তাদের মাঝে তা হয়েছিল। তারপর নাহিদের সময়ের মৃত্যুর আগে হয়েছিল কিনা সেটাও জিজ্ঞেস করে আর এটার উত্তর ও আলোক ‘হ্যাঁ’ দেয়।’

‘ কিন্তু! কিন্তু চাঁদ কে তো আলোক মারে নি সেটা কেনো বলে নি আলোক?’

নিরব হাতের তালু দ্বারা কপাল মুছে বললো,

‘ কারণ তাতে তাকে প্রশ্ন উঠেছিল, যদি চাঁদের মৃত্যু একটা অ্যাকসিডেন্ট ই হয়। তাহলে আলোক ও তার পরিবার কেনো এতো কম সময়ে, এতটা তাড়াহুড়া করে চাঁদ কে দাফন করলো। আরো নানান সব প্রশ্ন উঠেছিল। আলোক আর কিছু বলে নি। কিন্তু আলোক চাইলে তাদের টাকা, ক্ষমতা দিতে জামিন পেতে পারত কিন্তু সে রায়হান আঙ্কেল আর আশা অ্যান্টিকে আলোক কড়া ভাবে বারণ করে দেয়। কারণ আলোক সত্যি চাঁদের মৃত্যুর জন্য নিজেকে অপরাধী ভাবত। আর এভাবেই ‘এটেম্পট টু মার্ডার’’ দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ৩০৭ ধারায়, যদি কোন লোক এমন অভিপ্রায় বা অবগতি সহকারে বা এমন আশংকা জানার পরও এমন অবস্থায় এমন কার্য করে, যার ফলে মৃত্যু ঘটলে সে খুনের অপরাধে অপরাধী হবে, তাহলে সে লোক যেকোনো বর্ণনার কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবে যার মেয়াদ দশ বছর পর্যন্ত হতে পারে ও জরিমানা-দণ্ডেও দণ্ডিত হবে। সাথে নারী নির্যাতনের কেস টাও দেওয়া হয় কিন্তু পরে তা মিথ্যা সাব্যস্ত হয়। ‘

তারার পুরো শরীর থরথর করে কাঁপছে। সে ভাবতে পারে নি আলোকের অতীত এমন হবে। বিনা দোষে আলোক শাস্তি পেয়েছে আর এর জন্য তারা তাকে কতো বাজে বাজে কথা না শুনিয়েছে।তারার চোখ বয়ে অশ্রুজল পড়ছে।

‘ আর এভাবেই বিনা দোষে আলোক দশ বছর জেলে কাটালো। আলোক জেলে থাকায় প্রতিটা সময় নিজে খুব অনুতপ্ত হয়েছে। আল্লাহ কাছে ক্ষমা,তওবা করছে। নিজের সেই সামান্য অভিমান, রাগটুকুকেই আলোক এইসব কিছু জন্য দায়ী করছে। যার জন্য সে প্রচন্ড অনুতপ্ত। আলোক চাঁদকে অনেক ভালোবাসত। অনেক___! এতটাই যে ওইদিন চাঁদকে আর আশা আন্টি মিথ্যা আশ্বাস দেয় যে, সে অনাথ বাচ্চা নেবে। কারন আলোক জানতো সন্তান দত্তক নেওয়া নিয়ে অনেক মতাভেদ আছে। কেউ জায়েজ আর কেউ বা নাজায়েজ বলে আর আলোক এইসব মতাভেদ বিষয় এড়িয়ে চলে। আলোক যদি মেয়ে সন্তান দত্তক নেয় তাহলে মেয়েটা সাবালিকা হলেই আলোকের সামনে‌‌ সে একজন পর নারী হয়ে যাবে আর এর মত চলতে হবে ।আর আলোক ও তাকে নিজের সন্তানের মত আদর, মানুষ করতে পারবে না। আলোক এইসব ভালো করেই জানতো কিন্তু সেইদিন চাঁদ আর আশা আন্টিকে মিথ্যা আশ্বাস দেয়।’

তারা কাঁদতে কাঁদতে বলে উঠে,

‘ তা_ তাহলে রুমানা নামের ওই মেয়েটার বাবা আর ওই মেয়েটা কে কে মারলো? আম_ আমি শুনেছিলাম যেদিন রাতে রুমানার বাবা কে হত্যা করা হয় সেদিন আমি আলোককে মাঝ রাতে রক্ত মাখা গাঁয়ে আর হাতে ছুড়ি নিয়ে দেখেছিলাম। তারপর যে_যেদিন রুমানাকে ধর্ষন সাথে হত্যা করা হয় তার পরেরদিন সকালে আলোক ফোনে কাউকে বলছিল ‘ কাজ হয়ে গেছে।’

নিরব একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,

‘ আপনি একটু অতিরিক্ত বুঝেন তারা। আর ‘অতিরিক্ত’ কোনো কিছুই কিন্তু ভালো নয়। এইসব শোনার পর আপনার কি মনে হয় আলোক ওইরকম ছেলে? আর এইরকম কোনো কাজ সে করবে? আর ওই লোক টা আর তার মেয়ে রুমানাকে কে মেরেছে আমি জানি না। কিন্তু ১০০% সিউরিটি দিয়ে বলতে পারবো আমার ভাই, আমার আলোক কখনো এইসব করবে না। আর আপনি যে বললেন ‘কাজ হয়েছে’ বলে শুনেছিলেন! আপনার মনে আছে আপনার পায়ে যে ক্ষত হয়েছিল তার জন্য ইরা আলোককে অন্টিবায়োটিক দিয়েছিল আপনাকে দেওয়ার জন্য আর সেটা জানতেই আমি আলোককে একদিন সকালে কল করেছিলাম তখন আলোক বলেছিল ‘কাজ হয়েছে’! হয়তো আপনি সেটাই শুনেছেন।’

বলে থামলো। তারপর আবার বলতে লাগলো,

‘আর আপনার সাথে আলোকের দেখা হয় কয়েক মাস আগে। কোথায় কিভাবে জানি না! কিন্তু আপনার সাথে আলোকের দেখা হয়। আপনার চোখযুগল একদম চাঁদের মত লাগে আলোকের কাছে। সেই ডগর ডগর বড় চোখ, আর চোখের কোনিরে সেই তিল! একদম চাঁদের মত। আলোক আপনাকে দেখে এক মূহুর্তের ‌জন্য থমকে গেছিল। আশা আন্টি আলোকের সাথে থাকায় এটা নোটিস করে। আলোক আশা আন্টি কে কিছু বলে না। সেইদিনের পর থেকে আশা আন্টি আপনাকে খোঁজা শুরু করে আর পেয়েও যায় আর সাথে সাথে বিয়ের প্রস্তাব ও দেয়। আলোকরা বড়লোক হওয়ায় হয়তো আপনার ফ্যামিলি প্রস্তাবে ‘হ্যা’ বলে। তারপর আশা আন্টি অনেকটা অসহায়ের মত আলোককে বলে আপনার সাথে আলোকের বিয়ে দিতে চায়। আলোক তার মায়ের দিকে তাকিয়ে ‘না’ বলতে পারে নি কারন সে জানতো আশা আন্টি আলোককে নিয়ে কতটা সেনসিটিভ। কিন্তু আলোক বলে, যাতে আপনাকে বিয়ের আগেই সব জানানো ‌হয়। আলোকের আগের বিয়ে, জেলে থাকা সব। আর আশা আন্টি সেটাই করে। আপনার ফ্যামিলি কে সব জানায়। আর আপনার বাবা বলে আপনি তবুও রাজি। তারপর বিয়ের সময়ই আপনার মোহরানা দিয়ে দেয়।

তারা অনেকটা হতবাক হয়ে গেলো।কারণ সে কোনো মোহরানা পায়নি। তারমানে তারার বাবা তার মোহরানার সব টাকা নিয়েছে আর তাকে কিছুই বলে নি।

‘ কিন্তু বিয়ের প্রথম রাতে আলোক বুঝতে পারে আপনাকে কিছুই জানানো হয়নি। আর আশা আন্টিকে আলোক বলে। কিন্তু পরে আশা অ্যান্টি আপনাকে কিছু জানাতে চায় না কারণ উনি নিজের ছেলে কে খুশির জীবনে থাকতে দেখতে চাইতেন। মা মানুষ তো! তাই একটু সার্থপর হয়ে গেছিল আশা অ্যান্টি। আর আলোক ও সাহস পায়নি আপনাকে কিছু বলার। কারণ আলোকের সম্মন্ধে এমনিতেই আপনার মনে অনেক কু ধারণা ছিল । যদি বলতো তাহলে হয়তো আপনি তাকে আরো____

থেমে গেলো নিরব। নিরবে চোখের জল ফেলল। তারপর মুছে বললো,

‘ তাই আর সাহস পায়নি আলোক এইসব বলার।’

তারা মাথা নিচু করে কাঁদতে লাগলো। এই মুহূর্তে তারার নিজেকে দুনিয়ার সবচেয়ে নিকৃষ্ট মানুষ বলে মনে হচ্ছে।ছিহ্! আলোকের সম্পর্কে এত নিচু ধারনা কিভাবে পেষন করল সে?

‘ তারা আপনি আলোকের সাথে থাকতে চান না। তাই তো? আমি আপনাকে কথা দিচ্ছি আমি আপনাকে ওর থেকে ডিভোর্স পাইয়ে দিবো তবুও ওকে কষ্ট দিবেন না। আমি আর পারছি না আমার ভাইটাকে এতটা কষ্টে দেখতে। বিনা দোষে ও শুধু কষ্ট পেয়ে যাচ্ছে। আলোক হয়তো সামনে শক্ত হয়ে আছে, কিন্তু আমি জানি ও ভিতরে কতোটা আঘাত, কষ্ট পেয়েছে।

বলে নিরব উঠলো। তারপর বললো,

‘ আজ আসি। অনেক কথা হয়েছে। আর হ্যাঁ তখন রাগের মাথায় আপনাকে অনেক কিছুই বলে ফেলেছি। এর জন্য আমাকে মাফ করবেন।চলি।’

বলে আর দাড়ালো না নিরব । আলোকের কাছে গিয়ে তার মাথায় হাত বুলিয়ে চলে আসলো। নিরব যেতেই তারা পর্দা টা সরিয়ে ঘরে ঢুকে দরজা লাগিয়ে আবার কাঁপতে কাঁপতে ভিতরে ঘরে আসলো। এখন বুঝতে পারছে আলোক তার সাথে কথা বলার সময় সবসময় তার চোখের দিকে কেনো তাকিয়ে থাকতো। তারার নিজের উপর খুব ঘৃনা লাগছে! প্রচণ্ড রাগ লাগছে নিজের উপর।

#চলবে…..
#Tanju