প্রণয়াসিক্ত চিরকুট পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব

0
426

#প্রণয়াসিক্ত_চিরকুট
#পর্বঃ৬ (শেষাংশ)
#Rifat_Amin

প্রণয়কে নিয়ে যখন আমাদের বাড়ি আসলাম। তখন রাত দশটা প্রায়। চাঁদের আলোয় চারদিকে মুখরিত। এত রাতে এখানে আসার মোটেও ইচ্ছে ছিলো না আমার। কিন্তু হঠাৎ উনি ঝামেলা করে বসায় এত লেট হয়ে গেলো। তাছাড়া বাবা-মা অনেক খাবার-দাবারের আয়োজন করেছে। সেগুলোও নষ্ট হয়ে যাবে। তাই অগত্যা প্রণয়ের আব্বুর জোড়াজুড়িতে আসতে হলো।
প্রণয় এসেই ঐযে রুমে ঢুকেছে৷ আর বের হওয়ার নাম নেই। সবার সাথে যে একটু কথাবার্তা বলবে, তাও বলছে না। যদিও বাড়িতে ঢোকার সময় আব্বু-আম্মুর সাথে সৌজন্যমূলক কথাবার্তা বলেছেন। আমি আব্বু-আম্মুর সাথে কিছুক্ষণ কথাবার্তা বলে রুমে ঢুকে দেখলাম উনি ফোনে গেমস খেলছেন। আমাকে দেখে উঠে বসে বললেন,

‘ কখন ফিরবো আমি? ‘

‘ফিরছেন না’

‘মানে?’

‘মানেটা খুব সহজ। আপনি আজ ফিরতে পারবেন না। আপনার কি মনে হয়, এতরাতে শশুরবাড়িতে এসেছেন। আর আজ রাতেই যেতে দিবে? ‘

প্রণয় কথাটা শুনেই ঘাবড়ে গেলো। কপাল কুঁচকে বললো,

‘ আমি সত্যিই কি তাহলে ফিরছি না! দেখুন, আমি কিন্তু পালিয়ে যাবো’

‘ পালিয়ে গেলে আপনার মানসম্মান প্লাস্টিক হবে। আমার কিছুই হবে না। সো এখন কি করবেন সেটা আপনার উপর ডিপেন্ড করছে। ‘

‘ আপনি কিন্তু মীর জাফরী করছেন মিস. ফাহমিদা। তখন বললেন, আজকেই আসতে দিবে। এখন আবার উল্টাপাল্টা বকছেন!’

আমি কথাটা শুনেও প্রতিত্তোর করলাম না। শুধু মুচকি হেসে রুম থেকে বিদায় নিলাম। আচ্ছা জব্দ করা গেছে। এখন উনি আগামী দুইদিনেও এই বাড়ি থেকে বের হতে পারবে কি না সন্দেহ।
সন্ধ্যায় যখন উনি মা-রামারি করে বাসায় ফিরে শাওয়ার নিচ্ছিলেন। তখন উনার হাতে একটা ফ্রেম দেখতে পেয়েছিলাম। পরে অবশ্য জানতে পারলাম ওটা প্রণয়ের বোন প্রেয়সীর। যে কি না কয়েকবছর আগে সুই-সাই’ড করেছে। আর তাঁর কারণটাও উনার ডাইরি হাতরে বের করে ফেলেছি আমি।
তার মানে, অর্ক চৌধুরী মেসেজে আমায় যা বলেছে, সবটাই সত্য! প্রণয় উনার ডাইরিতে সব ঘটনা স্পষ্ট লিখে রেখেছেন। তিনি এইসব কথা কারো সাথে শেয়ার করতেও পারতেন না!

রাতের খাবারটা সেড়ে, উনাকে নিয়ে যখন আমার রুম আসলাম। তখন আরেকটা বিপদ এসে হাজির হলো। আচ্ছা আমরা এখন থাকবো কোথায়? প্রণয়ের রুমে নাহয় বড় যায়গা ছিলো। কিন্তু আমার রুমটা তো অত্যাধিক ছোট। তার উপর কত কি করেছি আমি! শুধু বড়সড় একটা বিছানা আছে যা। উনি আমার দিকে চোখ বড়বড় করে তাকিয়ে বললেন,

‘ আমি কোথায় থাকবো?’

‘ আমার মাথায় থাকুন। ‘

‘ সিরিয়াসলি বলছি, আপনার সাথে থাকা ইম্পসিবল। দেখা গেলো, মাঝরাতে খু-ন টুন করে বসে আছেন। এমনিতেই আপনি আমার শত্রু ‘

উনার কথায় মাথাটা গরম হয়ে গেলো। কি আজেবাজে কথা বলছেন! পাগল হয়ে গেলেন নাকি? আমি দরজাটা অফ করে বিছানায় শরীর এলিয়ে দিয়ে বললাম,

‘ আপনার যা ইচ্ছে করুন। এখন আমি ঘুমাবো, ঘুমাতে দিন। ‘

উনি আমার কথা শুনেও শুনলেন না। অতঃপর লক করা দরজার দিকে হা করে তাকিয়ে নিজের ব্যাগ দেখতে লাগলেন। সব জিনিসপত্র ঠিক আছে কি না। কিন্তু উনার কপালে হাত দেখা গেলো। আমি শুয়ে শুয়ে বললাম,

‘ কিহহহ! ডায়েরী হারিয়ে গেছে?’

উনি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বললেন,

‘ এসব মজা ভালো লাগে না মিস. ফাহমিদা। আমি কিন্তু ভালো মানুষ না। আর কারো ডায়েরী অনুমতি ব্যাতিত ছোঁয়া নিষেধ। ‘

‘ এ্যাহহ। আমি তো পড়ে ফেলেছি সব। যাই হোক, আমি তো আপনার বউ। তাহলে পাপ হবে না। ‘

উনি আশ্চর্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললেন,

‘ বউ! কিসের বউ? আর ডায়েরীটা পড়ে খুব একটা ভালো কাজ করেননি। দিন বলছি। ‘

‘ আচ্ছা আমি দিবো। আপনি কোথায় শুবেন সেটা বলুন। আমি এখন ঘুমাবো’

উনি কপাল কুঁচকে বললেন,

‘ আপনার যে ছোট রুম। তাতে মেঝেতে শুলেও আমার ঘুম হবে না। বরং আপনি একটা কাজ করুন। অন্য একটা রুমে গিয়ে শুয়ে পড়ুন। আমি এখানে ঘুমাচ্ছি। ‘

‘ হুম। আর আম্মু এসে কয়টা বা’রি দিক। আপনি এখন আমার পাশে ঘুমাবেন। আমি না আপনার সিনিয়র। সিনিয়রদের কথা শুনতে হয় ‘

আমার কথা শুনে উনি ঠাই দাঁড়িয়ে ফোন টিপতে লাগলেন। অতঃপর একটা চেয়ার টেনো সেখানে বসে বললেন,

‘ আমি দরকার পড়লে সারারাত এখানে বসেই কাটিয়ে দিবো। তবুও আপনার মতো শাঁ’কচুন্নির সাথে ঘুমাবো না’

‘ আচ্ছা। যা ইচ্ছে করুন। আমিও ডায়েরীটা নাদিয়াকে দিয়েছি। ও বই আকারে প্রকাশ করবে না’হয়। ‘,

প্রণয় আমার কথা বিশ্বাস না করলেও আস্তে আস্তে বিছানায় শুয়ে পড়লেন। তাও আমার থেকে একহাত দূরে। অর্ক চৌধুরীর মা বলেছিলেন, প্রণয় মেয়েদের সঙ্গ একদম পছন্দ করেন না। উনি আসলেই পছন্দ করেন না। কিন্তু আমার কাছে থাকলে চাইলেও সড়ে যেতে পারেন না। আমি আলতো করে উনার সিল্কি চুলগুলোয় হাত বুলাতে ধরলেই উনি ছিটকে সড়ে গিয়ে রাগন্বিত স্বরে বললেন,

‘ হাউ ডেয়ার ইউ। ডন্ট টাচ মি!!! প্লিজ। ‘

আমিও নাছোড়বান্দা হয়ে উনাকে সর্বোশক্তি দিয়ে টেনে বিছানায় বসিয়ে বললাম,

‘ আস্তে চিৎকার করুন। আব্বু-আম্মু কিনা কি ভাববে! আচ্ছা, আপনাকে টাচ করলে কি আপনার স্বর্ণের শরীর নষ্ট হয়ে যাবে? ‘

‘ আমি মেয়েদের সঙ্গ পছন্দ করি না। আর স্পর্শ তো দূরের কথা ‘

‘ কিন্তু আমি তো আপনার স্ত্রী। আপনি ডায়েরীতে যা লিখেছেন তার কোনো যৌক্তিকতা আছে কি মি. প্রণয়। হুদাই বাচ্চামো ছাড়া কিছুই নয়’

——

প্রণয় ঠিক করেছে আজ রাতে কোনো ঘুম টুম হবে না। ছাদে গিয়ে পুরো রাত কাটিয়ে দিবে। তবুও একসাথে থাকা ইম্পসিবল। আমি আর প্রণয় ছাদে দাঁড়িয়ে পূর্ণিমাকাশ দেখছিলাম। উনি ছাদের মেঝেতে বসে বললেন,

‘ আমার বড় বোনের নাম প্রেয়সী। যার সাথে আমার অনেক ভালো বন্ধুত্ব ছিলো। একটা সাধারণ ভাই-বোনের সম্পর্কের মাঝে যেমন ঝগড়া হয়, আমাদের মাঝে এমনটা হতো না। আপু আমাকে অনেক ভালোবাসতো। বলা যায় নিজের থেকেও বেশী। সেই কি না আমাকে ছেড়ে চলে গেছে! ‘

কথাটা বলতেই উনার কন্ঠ ভেঙে আসলো। মনে হলো উনি বোধহয় কাঁদতে চাইছেন। আমি উনার পাশে বসলাম। আমি পাশে বসলেও উনি কোনো ভাবাবেগ করলেন না। চারদিকে তখন লোডসেডিংয়ের অন্ধকার! উনি আবারো বলতে শুরু করলেন,

‘ আজ থেকে দুবছর আগের কথা। তখন আমি সবে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়ে ভার্সিটির জন্য কোচিং করছিলাম। তেমনিই একদিন কোচিং থেকে ফিরে শুনি আপুকে কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না। আপু নিখোঁজ। আমাদের সবার তখন টালমাটাল অবস্থা। সেবছর আমাদের বিজনেসটা অনেক প্রোফিট করে সামনে এগোচ্ছিলো। যার কারণে হয়তো শত্রুও বেশী ছিলো। আমি খবরটা শুনেই স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। তবুও নিজেকে যথেষ্ট সামলে নিয়ে অর্ক ভাইয়া আর আমি আপুকে খুঁজতে বের হলাম। কিন্তু কোথাও পাওয়া গেলো। পুলিশে খবর দেয়া হলো। কাজ হলো না! তবে তিনদিন পর আপুকে বন্দি পাওয়া গেলো এক পরিত্যক্ত গোডাউনে। যেখানে এলাকার কয়েকটা ছেলে আপুকে ধর্ষণ করে! তারপর অনেক কিছুই হলো। মামলা হলো! মিডিয়াতে জানাজানি হলো। ফেসবুকে ব্লাক ব্যাজের প্রোফাইল পিক হলো। ছেলেরা অনেক অনেক হ্যাশট্যাগ দিলো। কিন্তু তবুও কিছু হলো। অতঃপর আমাদের এত টাকা থাকার পরেও কোনো সমাধান আসলো না। দিব্বি আসমিরা ছাড়া পেয়ে গেলো। বস্তুত এই দেশে কোনো সুষ্ঠু বিচারের আশা করা যায় না। তবুও আমার কিছু মনে হলো না। কেননা আমার বোন ফিরে এসেছে, এতেই আমি খুশি। এর থেকে বেশী কিছু চাইনা। তবে আমার চাওয়া খুব একটা পূরণ হয়নি। আমি আমার কোচিং ছেড়ে আপুকে সময় দিতে চেষ্টা করলাম। আপু তখন নিজেকে সবসময় আড়াল করতে ব্যস্ত। মনে হয়, অপরাধটা নিজেই করেছে। আগে যেমন দৌড়াদৌড়ি করতাম, তারপর আর দৌড়াদৌড়ি খেলা হলো না। শুধু বসে বসে একাই বকবক করতাম। আপু শুধু আকাশের দিকে তাকিয়ে কি যেনো ভাবতো। ওহহ! আমার তো বলাই হয়নি আপুর একটা বয়ফ্রেন্ড আছে। যাকে আপু অনেকটা ভালোবাসতো। ছেলেটাও হয়তো বাসতো! মাঝে মাঝে আপু বলতো ঐ ভাইয়াটার কাছে গিয়ে এটা দিবি, ওটা দিবি। এটা ছোট থেকেই হতো। তাই আমার কাছে এগুলা খুব মজার কাজ ছিলো। কেননা এসবের পর আমার ব্যাগে চকলেটের বাজার থাকতো। যখন বড় হলাম, তখন চকলেট না থাকলেও মাঝে মাঝে বড় বড় সারপ্রাইজ দিয়ে বসতো আপু৷ আমি কত যে খুশি হতাম। এই সারপ্রাইজের আশায় আপুকে খুশি করতে ব্যস্ত হয়ে থাকতাম। যেটা বলতো মন দিয়ে শুনতাম, আমি নাকি ছিলাম পৃথিবীর সব থেকে সুন্দর আর ভদ্র ছোটভাই। এমন ছেলে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। তো একদিন হঠাৎ রাস্তায় সকাল ভাইকে দেখতে পেয়ে ডাক দিয়ে বললাম,

‘ কেমন আছো ভাইয়া? আপুকে কিছু দিতে হবে? ‘

ভাইয়া যেনো আমায় চিনতেই পারলো না। সকাল ভাইয়া ছিলো আপুর বয়ফ্রেন্ড। পরে অবশ্য জানতে পেরেছিলাম, কোনো ধর্ষিত মেয়েকে সকাল ভাইয়া বিয়ে করতে রাজি নন। তার পর থেকে আপুর খাওয়া-দাওয়া কথাবার্তা উবে গেলো। আমিও মেডিকেলে পড়ার আশা বাদ দিলাম। কেননা আপুকে সময় দিতে পড়াশোনার পনেরোটা বাজিয়ে ফেলেছিলাম!
‘ -প্রণয়

আমি স্তব্ধ হয়ে প্রণয়ের কথাগুলো শুনছিলাম। মনে হচ্ছিল, আমি যেনো নিজ চোখে প্রেয়সী আপুর কষ্ট গুলো দেখতে পারছি। তিনি কাঁদছেন! অঝোর ধারায় কাঁদছেন। কিন্তু কেউ দেখতে পারছে না। উনি ক্ষণিকের কথা থামালেও আবার বললেন,

‘ তারপর হঠাৎ একদিন আমার গিফট করা ফ্যানে ঝুলতে দেখা গেলো আপুকে। আমি সেদিন কাঁদতে পারলাম না। শুধু একদৃষ্টিতে আপুকে দেখছিলাম। মনে হলো, আপু আমার সাথে প্রাঙ্ক করছে। আর যাই হোক, আপু এই কাজটা কখনো করতে পারেনা। কেননা কিছুদিন আগেই আমি আপুকে মন খারাপের গল্প শুনালে আপু আমাকে মন খারাপ থেকে কিভাবে কাটিয়ে উঠতে হয় তা শিখাচ্ছিলো। সাথে বলছিলো, সুই ‘সাইড কোনো সমাধান নয়৷ কখনো এসব মুখেও আনবি না’।
তবে বাস্তবে সেই ভুলটাই করে বসলেন না আপু।
সেদিন আপুর দিকে তাকিয়ে বুঝছিলাম, কতটা দুঃখ নিয়ে আপু চলে গিয়েছিলেন। তুমি বিশ্বাস করো, এর আগে কখনো আমি আপুকে মন খারাপ করতে দেখিনি। মন খারাপ করলেও সেটা আমার কাছে ঢং মনে হতো। আমি একটু কাতুকুতু দিলেই আপু হাসতে হাসতে লুটিয়ে পরতো। আমাকে মা-রতে শুরু করতো। সাথে আমিও হাসতাম। তবে শেষ মন খারাপ থেকে আপুকে কখনো হাসাতে পারি নি। আমার ব্যর্থতা এটাই।
সুই-সাইডের আগে আপু অবশ্য নোটে লিখেছে, ‘ আমার মৃ-ত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। আমি নিজেই দায়ী!’
তবে আমি ঠিকই বুঝেছিলাম কে দায়ী আর কে দায়ী নয়! অতঃপর আমিও আমার এক বন্ধুকে হারালাম।
সারা বাড়ি যার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হতো। তাকে ছাড়া পুরো বাড়িটা মরুভূমি মনে হলো। তখনো আমি চারদিকে আপুকে দেখতাম। কিন্তু ছুঁতে পারতাম না, গল্প করতে পারতাম না! শেষ পর্যন্ত আপুর মতো আমিও কথা বলা অফ করে দিলাম। তাকে ছাড়া চারপাশটা আমার কাছে অন্ধকার মনে হতো। সেই ছোটবেলা থেকে আপু-ই ছিলো আমার আলোকদূত। আমার গন্তব্যের সঠিক রাস্তা। ”

‘ আর এই কারণেই এতগুলো খু-ন করে বসলেন? ‘ -আমি

প্রণয় আঁতকে উঠলো। তবে নিজেকে সামলে নিয়ে বললো,

‘ হ্যাঁ। সবাইকে খু ন করেছি আমি। সব্বাইকে। যে আমার বোনের ক্ষতি করেছে, তাকেও। আর যে সহযোগিতা করেছে তাকেও। সেই ডক্টরকেও খু ন করেছি। যে আমার আপুট রিপোর্ট ভুল দেখিয়েছিলো। ওখান আমার খু ন করার পর্যায় শেষ। এখন শুধু আমি মুক্তি চাই এই জগৎ থেকে। আর কিছু না’ -প্রণয়

আমি উনার কাঁধে মাথা রেখে বললাম,

‘ অর্ক ভাইয়া যদি ধরে ফেলে আপনাকে? তখন কি হবে জানেন? এতবড় অপরাধ করে কেউ পালিয়ে বাঁচতে পারে না। ‘ -আমি

‘ আমি ভয় করি না। আর যদি ধরে ফেলে তো ধরবে। আমার বেঁচে থাকার কোনো ইচ্ছা নেই! ‘ -প্রণয়

‘ আচ্ছা সন্ধ্যায় হঠাৎ ঐ ছেলেটাকে এভাবে মা-রলেন কোনো? এতটা ঠিক না’ -আমি

‘ আমি বাজে ছেলেদের একদম সহ্য করতে পারি না। রাস্তায় যখন মেয়েদের টিচ করতে দেখি, ইচ্ছে করে সব কটাকে খু ন করে ফেলি। কারণ ওরা আছে বলেই আমার বোন আমাকে ছেড়ে চলে গেছে! ‘ -প্রণয়

‘আপনি পাগল হয়ে গেছেন প্রণয়। সমস্যা নেই। আপনাকে সুস্থ করে তোলার দায়িত্ব আমার! যে দায়িত্ব আপনার ভাই, আপনার বাবা আমাকে দিয়েছে। আপনি কি সুস্থ হতে চান? আমাকে ভালোবাসবেন? ‘ -আমি

প্রণয় আমার থেকে দূরে সড়ে গিয়ে বললো,

‘ না। আমি সুস্থ আছি। আর আমি আপনার সঙ্গ পছন্দ করি না। ‘- প্রণয়

আমিও উঠে দাঁড়ালাম। কারেন্ট এসেছে, চারদিকে রঙবেরঙের আলোর ছিটা। আমাদের ছাদবাগানটাও ঝলমল করছে। আমি সব দ্বিধা পার করে সিদ্ধান্ত নিলাম এই মানুষটাকে সুস্থ করে তোলার দায়িত্ব একমাত্র আমিই নিতে পারবো, আমাকে নিতে হবে। আস্তে আস্তে উনার পাশে গিয়ে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বললাম,

‘ আপনি আমার সঙ্গ পছন্দ করবেন। আপনি সুস্থ হবেন। ভালোবাসবেন। আপনি ভালোবাসতেই হবে ‘ -আমি

সমাপ্ত