প্রীতিলতা আসবে বলে পর্ব-১৩ প্রথম খন্ডের সমাপ্তি

0
1710

প্রীতিলতা আসবে বলে
লেখিকা :আফরিন ইসলাম
পার্ট :প্রথম খন্ডের সমাপ্তি

শাকিল ভয়ে কাপঁছে ৷হঠাৎ করেই সে আবারো সেই একই কান্নার আওয়াজ শুনতে পেল ৷আয়ান বার বার তার চারুলতাকে ছেড়ে দিতে বলছে ৷চিৎকার করে কাদঁছে ৷ চারুলতা কাদঁছে আর চিৎকার করছে ৷একটু পরে আবারো সব শান্ত হয়ে গেল ৷শাকিলের সামনে আরো একটা চেয়ার ৷শাকিলকে অবাক করে দিয়ে একটা মেয়ে তার সামনে বসলো ৷ মেয়েটা শাকিলের দিকে তাকিয়ে আছে ৷মেয়েটা বেশ কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে বাকাঁ হাসলো ৷ তারপর বলল

ভয় লাগছে বুঝি খুব ৷কিন্তু আমি তো তোর চিৎকার শুনতে চাই ৷যেভাবে আমার সামনে আমার মা বাবা চিৎকার করে ছিল ৷তার থেকেও বেশি চিৎকার আমি শুনতে চাই তোর থেকে ৷

শাকিল ছটফট করছে ৷শাকিলকে ছটফট করতে দেখে মেয়েটা আবারো বলল

এত তাড়া কিসের হ্যা ৷আমি আবার তাড়াতাড়ি কাজ করতে পছন্দ করি না ৷আস্তে আস্তে তিলে তিলে মারতে বড্ড ভালো লাগে আমার ৷গতকাল তোর চেম্বারে একটা বৃদ্ধ লোক গিয়ে ছিল মনে আছে ৷ঐ টা আমি ছিলাম ৷তোর থেকে চিকিৎসা নিতে যায় নি ৷তোর টেবিলের নিচে ছোট একটা ইলেকট্রনিক্স যন্ত্র লাগিয়ে দিতে গিয়ে ছিলাম ৷তার একটা কারনও আছে ৷আস্তে আস্তে বলছি তোকে সব ৷তোকে মারলে অনেক আগেই মেরে ফেলতে পারতাম ৷কিন্তু ঐ ভাবে মারলে আমি তো মজা পেতাম না ৷আমি তো পৈশাচিক আনন্দ পেতাম না ৷তাই আমাকে কত কষ্ট করতে হয়েছে জানিস ৷ঐ যন্ত্রটা লাগাতেই সময় লাগছিল ৷তাই চেম্বারে বসে শুধু কথা বলছিলাম ৷তারপর বের হয়ে পিয়নকে দিয়ে চিঠি পাঠালাম ৷আর নিচে আমার বাবার নাম আয়ান চৌধুরী লিখে দিলাম ৷ওহ তুই তো আবার জানিস না আমি কে ৷আস্তে আস্তে বলি কেমন ৷আর তুই ভাবলি আমার মরা বাপ ফিরে এসেছে হয়তো ৷কথাটা বলেই মেয়েটা পাগলের মতো হাসতে লাগলো ৷

হাসতে হাসতে হঠাৎ শাকিলের গলা চেপে ধরলো ৷তারপর বলল

আমার বাবাকে তোরা মেরেই ফেলেছিস সেই কত বছর আগে ৷আমার বাবার মাথায় একের পর এক আঘাত করে ৷ তারপর তার লাশটাকে আগুনে পুড়ে ফেলেছিস ৷ওহ সরি পুড়িস নি ৷ বাবার ঝলসে যাওয়া শরীরটা মাটি দিয়ে পুতে দিয়েছিস ৷যেন কোনো প্রমান না থাকে ৷আর সবাই ভাবে আমার বাবা মা আগুনে ছাই হয়ে গেছে ৷ যাকে নির্মম ভাবে খুন করেছিস সে কি করে ফিরে আসবে হ্যা ৷তোকে ভয় দেখাতে আমি আমার মরা বাবার নাম ব্যবহার করেছি ৷আর তুই ভয় পেয়ে অনেক জোড়ে গাড়ি চালিয়ে বাড়ি চলে গেলি ৷আজ আবারো তোর ছেলের মৃত্যু নিয়ে ভয় দেখালাম ৷আর তুই আজও জোড়ে গাড়ি চালিয়ে তার কলেজ চলে গেলি ৷তারপর হাসপাতালে গেলি ৷চেম্বারে বসার কিছুক্ষন পরেই তুই আমার মা বাবার কান্নার আওয়াজ শুনলি ৷আর ভয় পেয়ে আবারো জোড়ে গাড়ি চালাতে লাগলি ৷যেটা তুই সব থেকে বড় ভুল করেছিস ৷তোর গাড়ীর ব্রেক আমি কালকেই আলগা করে রেখে ছিলাম ৷আর জোড়ে গাড়ী চালানোর জন্য ওটা আরো আলগা হয়ে গেল ৷তুই গাড়ীর কন্ট্রোল হারিয়ে ছোট একটা এক্সিডেন্ট করলি ৷ আর আমি তোকে নিয়ে এলাম ৷ জানিস আমার মা বাবার ঐ কান্নার আওয়াজ কোথা থেকে এসেছে ৷ঐ ছোট যন্ত্রটা থেকে ৷আমি সাউন্ড পাঠিয়েছি তোকে ভয় দেখাতে ৷কি ভাবছিস আমি কে তাইতো ৷তাহলে শোন আমি প্রীতিলতা ৷যে এখন তোর যম হয়ে এসেছে ৷শাকিল অবাক চোখে তাকিয়ে আছে প্রীতির দিকে ৷

প্রীতি শাকিলের দিকে তাকিয়ে বলল কি ভাবছিস ৷যাকে গাড়ী চাপা দিয়ে মেরে ফেলেছিস ৷সে কি করে ফিরে এলো ৷নসিব রে সবই নসিব ৷তা না হলে আমি কেন বেচেঁ থাকবো ৷আর ওসমান ,তুই এবং বাকিরা কেন আমার হাতে মরবি ৷

শাকিলের শরীরের কাপুনি দেখে প্রীতি বলল কি রে এখনই এই অবস্থা ৷জানিস ওসমানকে মেরে সেই মজা পেয়েছি ৷একদম মনের মতো ৷আর আজ তোকে মারবো ৷জানিস ওসমানের লাশটা আমি টুকরো টুকরো করে কেটেছি ৷ওর লাশটা আমি একশ টুকরো করেছি ৷তারপর কেমিক্যাল দিয়ে দুই দিন রেখে দিয়েছি ৷ব্যাস একদম গলে গেছে ৷কোনো প্রমান নেই ৷এবার তোকে মারবো ৷তোকে মারার জন্য আমার জান দুটোকে আজ ভাইয়ের কাছে দিয়ে এসেছি ৷ওরা থাকলে আমি ধরা পরে যাবো তো ৷ওরা ভয় পাবে ৷যেই ভয়টা আমি পেয়েছিলাম ৷আর যার জন্য আমাকে সাইকো হতে হলো ৷ঐ ভয় আমি ওদের দিতে চাই না ৷

প্রীতি পাশে থাকা একটা চাপাটি আবারো তুলে নিল হাতে ৷ তারপর ওসমানের মুখের কাপড়টা খুলে দিল ৷চাপাটি টার দিকে অদ্ভুত ভাবে প্রীতি তাকিয়ে আছে ৷তারপর শাকিলের ডান হাতটা স্পর্শ করে বলল

এই হাত দিয়ে আমার মায়ের শরীরে তুই হাত দিয়েছিস ৷এই হাত দিয়ে তুই আমার নিরপরাধ মাকে দুই দুই বার ধর্ষন করেছিস ৷তাও আমার চোখের সামনে ৷আমি ছোট প্রীতিলতা সেদিন কিছু করতে পারি নি ৷মা বাবার বিপদে নিরব দর্শকের মতো দেখে গিয়েছি আলমারির মধ্যে ৷যে হাত দিয়ে আমার বাবাকে মেরেছিস ৷যেই হাত দিয়ে আমার ভাইকে খুন করেছিস ৷যেই হাত দিয়ে একটা চেয়ার জন্য পর পর দুই বার আমার মাকে ধর্ষন করেছিস ৷ঐ হাত আমি রাখবো না ৷প্রীতিলতা সেই হাত রাখবে না ৷প্রীতিলতার চেহারা এখন কোনো এক দানবী হয়তো ভর করেছে ৷চেহারা ভয়ংকর রূপ ধারন করেছে ৷চেহারা আগুনের মতো লাল হয়ে গেছে ৷চিৎকার করে কথা বলতে বলতে শাকিলের হাতে একটা কোপ দিয়ে দিল ৷

কোপ পরার সাথে সাথে শাকিল চিৎকার করে উঠলো ৷শাকিলের ডান হাতের আঙ্গুল গুলো পরে গেছে ৷প্রীতি শান্ত হলো না ৷একের পর এক কোপ দিতেই লাগলো ৷শাকিলের হাত দুটো কনুই পর্যন্ত ছিন্ন ভিন্ন হয়ে গেছে ৷

শাকিল ক্ষমা চাচ্ছে বার বার ৷কিন্তু প্রীতি শান্ত হলো না ৷শাকিলের দিকে তাকিয়ে বলল

আজ আমি তোর চিৎকার শুনতে চাই ৷তোর চিৎকারে আমি আমার বুকের আগুন নেভাবো ৷প্রীতি পাশের একটা বক্স খুললো ৷যেটার ভেতরে রাশি রাশি মদ ৷পাশের একটা বক্স খুললো যেটার মধ্যে কেরোসিন আর পেট্রোল ৷আর শাকিল হাতের যন্ত্রনায় চিৎকার করতে লাগলো ৷

প্রীতি মদ আর কেরোসিনের ছিপি গুলো খুললো ৷তারপর একটা করে বোতল শাকিলের শরীরে ঢালতে লাগলো ৷আর শাকিল বারবার ক্ষমা চাইছে ৷নিজের প্রান ভিক্ষা চাইছে আধমরা শরীরে ৷প্রীতির মদ আর কেরোসিন ঢালা শেষ হতেই শাকিল কোনো মতে বলল

আমাকে ছেড়ে দাও ৷আমি আর ডাক্তারি করবো না ৷আমাকে মাফ করো ৷

প্রীতি পাশে থাকা ম্যাচটা হাতে নিয়ে বলল তুই তো আমাদের বাড়িতে আগুন দেওয়ার বুদ্ধি করে ছিলি তাই না ৷যা তোকেও ছেড়ে দিলাম ৷প্রীতি কথাটা বলেই ম্যাচের কাঠিতে জলন্ত আগুন শাকিলের দিকে ছুড়ে দিল ৷

শাকিল চিৎকার করছে বাচাঁর জন্য ৷আর প্রীতি সে এক বোতল মদ আয়েশ করে খেতে লাগলো চেয়ারে বসে ৷আর হাসতে লাগলো ৷ একটু পর শাকিলের আওয়াজ থেমে গেল ৷কিন্তু প্রীতির জালানো ভয়ানক আগুন নিভলো না ৷খোলা আকাশের দিকে তাকিয়ে প্রীতিলতা হাসলো ৷তার হাসির মাঝেই এক ফোটাঁ পানি গড়িয়ে পড়লো ৷

(নিচে কিছু কথা লেখা আছে ৷ঐ গুলো সবাই পড়বেন ৷না পড়ে যদি পরে গল্প না পান তাহলে আমি কিছু জানি না ৷)

সকালের সোনালী আলো চোখে পড়তেই প্রীতির ঘুম ভাঙ্গলো ৷ঘড়িতে তাকিয়ে দেখলো আট টা বাজে ৷সকাল পাচঁটার দিকে ঘুমিয়েছে সে ৷প্রীতি উঠে ফ্রেশ হয়ে ভার্সিটির দিকে রওনা দিল ৷

ঠিক সময় মতো পৌছেও গেল ৷আজ আর কেউ তাকে জ্বালায় নি ৷তবে প্রীতি আন্দাজ করতে পারছে আজও কিছু হবে তার সাথে ৷প্রীতি ক্লাস শেষ করে ক্যান্টিনের দিকে যাচ্ছিল ৷কিন্তু সবাই প্রীতির দিকে তাকিয়ে হাসছে ৷কিন্তু তাকে নিয়ে হাসার মানেটা বুঝতে না পেরে সে ক্যান্টিনে ঢুকবে ৷এমন সময় একটা পোস্টারের দিকে তার নজর গেল ৷যেটা দেখে তার রাগ তরতর করে বেড়ে গেল ৷কেউ তার কার্টুন ছবি বানিয়েছে ৷আর সেটাকে খুবই বাজে জামা পড়ানো হয়েছে ৷রাগে ওর হাত মুষ্টিবদ্ধ হয়ে এলো ৷পেছন থেকে অট্ট হাসির শব্দে ও ঐ দিকে তাকালো ৷পেছনেই নির্ঝর আর মিলা দাড়িয়ে আছে ৷তাদের ঘিড়ে দাড়িয়ে আছে প্রায় আরো একশ ছেলেমেয়ে ৷

নির্ঝর প্রীতির কাছে এসে বলল তোমার জন্য আজকের এই আয়োজন ৷পছন্দ হয়েছে ৷ আর যাই হোক তুমি তো আমাকে ভালোবাসো ৷আর আমি তোমার জন্য এই টুকু করতে পারবো না ৷

প্রীতি নিজের রাগ সামলাতে না পেরে থাপ্পর মারার জন্য হাত উঠিয়ে ফেলল ৷কিন্তু আবারো নিজের রাগ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করলো ৷নিজেকে কিছুটা শান্ত করে বলল

আজকের পর আর কখনো আমাকে এখানে দেখবে না ৷আর হ্যা আমার এই চলে যাওয়াই তোমাদের কাল হয়ে দাড়াবে মনে রেখ ৷ তোমার আমাকে চেনা উঠিত ছিল নির্ঝর শাহরিয়া ৷ কিন্তু আমি ভুল ৷প্রীতির চোখে পানি চলে এসেছে ৷ সে আর কথা বলতে পারছে না ৷দৌড়ে বেড়িয়ে গেল ৷ এদিকে নির্ঝর সহ সবাই অবাক চোখে তাকিয়ে আছে ৷ওরা শুধু একটু মজা করতে চেয়ে ছিল ৷তাহলে ওরা কি বেশি করে ফেলেছে ৷

প্রায় সন্ধ্যা ‌হয়ে গেছে ৷মিলা নিজের ঘরে বসে ছিল ৷হঠাৎ করেই ওর বয়ফ্রেন্ড সামির ওকে কল করলো ৷মিলাও ফোনটা রিসিভ করলো ৷মিলা ফোন রিসিভ করতেই সামির বলল

জান অনেক দিন দেখা হয় না ৷আজকে একটা রেসটুরেন্ট বুক করেছি ৷তোমার জন্য সারপ্রাইজ আছে ৷তুমি একটু চলে আসো না প্লিজ ৷

তুমি ঠিকানা দাও ৷আমি আসছি ৷তবে বেশিক্ষন থাকতে পারবো না ৷ ভাইয়া তাহলে বুঝে যাবে ৷

ওকে আমি পাঠাচ্ছি ৷

রাত আটটার দিকে মিলা সুন্দর করে সেজে রেসটুরেন্টে গেল ৷সামির সত্যি অনেক সুন্দর করেই সাজিয়েছে ৷মিলাও বেশ খুশি ৷সামির মিলার জন্য কিছু গিফ্ট এনেছে ৷সামির মিলার দিকে তাকিয়ে বলল

তোমার পছন্দ হয়েছে মিলা ৷

খুব খুব পছন্দ হয়েছে ৷

তাহলে আমারো যে এখন একটা জিনিস চাই ৷

কি বলো ৷

আজ রাতে তোমাকে আমার চাই প্লিজ ৷

এসব কি বলছো সামির ৷আমাদের বিয়ে হয় নি ৷

তো কি হয়েছে ৷আজ কাল এটা কোনো ম্যাটার না ৷

তোমার কাছে ম্যাটার না হলেও আমার কাছে ম্যাটার ৷আমি বাড়ী যাবো ৷কিছুটা রাগ নিয়ে মিলা বলল ৷তারপর চলে যেতে নিল ৷

কিন্তু যেতে পারলো না তার আগেই সামির ওর হাত ধরে ফেললো ৷আর বলল

আজ তোকে ছাড়ছি না ৷আজ এক বছর ধরে তোর পেছনে পরে আছি ৷তোকে যতটা সময় দিয়েছি বিছানায় উঠাতে ৷তা অন্য কোনো মেয়েকে দেই নি ৷আজ তোকে ব্যবহার করেই ছাড়বো ৷

সামির কথাটা বলেই মিলাকে পাশে থাকা সোফায় ফেলে দিল ৷আর ওর সাথে জোর করতে লাগলো ৷মিলা কোনো ঈপায় না পেয়ে পাশে থাকা ভারী ফুলদানী দিয়ে সামিরের মাথায় আঘাত করলো ৷সামিরকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিল সে ৷তারপর নিজের ব্যাগ নিয়ে ছুটতে লাগলো ৷সামির নিজের মাথায় হাত দিয়ে বাইরে এলো ৷এদিকে মিলা বাইরে বেড়িয়ে এলো ৷দৌড়াতে দৌড়াতে সে নির্ঝরকে কল করলো ৷এদিকে সামির তার গার্ডদের নিয়ে মিলার পিছূ করছে ৷মিলা নির্ঝরকে সব বলে তারপর ঠিকানা পাঠিয়ে দিল ৷

মিলা দৌড়াতে দৌড়াতে হঠাৎ কারো সাথে ধাক্কা খেয়ে পরে গেল ৷সে পরে যেতেই সামিরের লোকেরা ওর কাছে চলে আসলো ৷আর যার সাথে ধাক্কা খেয়েছে তার দিকে তাকিয়ে সামির বলল

ধন্যবাদ ডার্লিং ৷তোমার জন্য আজ মিলা পাখিকে ধরতে পারলাম ৷নইলে পালিয়ে যাচ্ছিল আজ ৷

মিলা পানি ভরা চোখে পাশে তাকালো ৷মিলা অবাক চোখে দেখলো প্রীতি দাড়িয়ে আছে ৷প্রীতিকে দেখে মিলা বলল

আমাকে বাচাঁও প্লিজ ৷ও আমাকে ধর্ষন করবে ৷প্লিজ প্রীতি ৷

প্রীতি কোনো কথা বলল না ৷সামির এসে মিলাকে হেচঁকা টান দিয়ে উঠিয়ে ফলল ৷তারপর নিজের সাথে নিয়ে যেতে নিল ৷কিন্তু নিতে পারলো ৷তার আগেই সে টান অনুভব করলো ৷পেছনে তাকিয়ে দেখলো প্রীতি মিলার অন্য হাত ধরে আছে ৷সামির মিলাকে সামনে নিতে পারছে না ৷মিলা অবাক চোখে প্রীতিকে দেখছে ৷এই মেয়েটার শক্তির কাছে সামির পারছে না ৷আর মিলার হাতটা মনে হয় প্রীতি ছিড়েই নেবে এমন ভাবে ধরেছে ৷

সামির কিছু বলবে তার আগেই প্রীতি ওর বুক বরাবর লাথি দিল ৷মিলাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিল ৷তারপর সামিরকে মারতে লাগলো ৷সামিরের গার্ডরা প্রীতির সাথে পারছে না ৷ দশ মিনিটের মধ্যে সবাইকে প্রীতি আধমরা করে দিয়েছে ৷আর মিলা অবাক চোখে দেখছে ৷আর মিলার পেছনে দাড়িয়ে নির্ঝর অবাক চোখে দেখছে ৷মাত্রই সে এসেছে ৷তারা নিজেদের চোখ বিশ্বাস করাতে পারছে না এটাই কি তাদের ভার্সিটির শান্তশিষ্ট প্রীতিলতা ৷প্রীতি ওদের মেরে রাস্তা থেকে নিজের ঘড়ি, চশমা,আর ব্যাগ তুলে নিল ৷তারপর সামনের দিকে হাটাঁ দিল ৷কিছু দুর যেয়ে ও থেমে গেল ৷পেছনে না তাকিয়ে বলল

মানুষের চামড়া গায়ে থাকলেই মানুষ হয় না ৷মানুষ হতে মনুষত্ব লাগে ৷তাই আগে মনুষত্ব দেখে মানুষ বিচার করুন ৷চামড়া দেখে নয় ৷আর এখন থেকে কাপড়ের সাইজটা বড় করুন ৷আজ না হয় শারীরিক ধর্ষন থেকে বেচেঁছেন ৷কিন্তু এত দিন যারা চোখ দিয়ে ধর্ষন করেছে ৷তাদের কি করবেন ৷

প্রীতি আর দাড়ালো না ৷নিজের রাস্তায় হাটাঁ দিল আবার ৷

অপর দিকে মিলা নিজের ভাইকে ধরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লো ৷আর নির্ঝরের দৃষ্টি অন্ধকারে মিলিয়ে যাওয়া সেই বহুরূপী কন্যার দিকে ৷

রাত গভীর প্রীতি তাকিয়ে আছে আকাশে ৷আজো ঘুম নেই চোখে ৷তার হাতে একটা ডায়রী ৷প্রীতি ডায়রীটা খুলে পড়তে শুরু করলো ঝাপসা বাতির আলোয় ৷কত বার যে পড়েছে তার শেষ নেই ৷তবুও আবারো ডায়রীর পাতায় লেখা অস্পষ্ট লেখা গুলো পড়তে ইচ্ছে করে ৷প্রীতি পড়তে আরম্ভ করলো তার মা বাবার ভালোবাসার গল্প ৷

চলবে