প্রীতিলতা আসবে বলে
লেখিকা :আফরিন ইসলাম
সিজন :২
পার্ট : ৯
দুই মাস পার হয়ে গেছে ৷আয়ান আর চারুর পরীক্ষাও শেষ ৷দ্বীপকে হোস্টেলে রেখে আসা হয়েছে দুইমাস আগে ৷তারপর আর সে আসে নি ৷আয়ান যেতে চেয়ে ছিল দ্বীপকে দেখতে ৷কিন্তু ওর বাবা যেতে দেয় নি ৷
রাত ঘড়ির কাটায় নয়টা বাজে ৷ চারু জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে ৷ আয়ান কিছুক্ষন আগে বাইরে থেকে এসেছে ৷আয়ান বিদেশ যাবে লেখাপড়া করতে ৷ আর চারু মেডিকেলের জন্য ভর্তি পরীক্ষা দেবে ৷আয়ান ঘরে এসে দেখলো চারু বাইরে তাকিয়ে আছে ৷আয়ান চারুর পাশে যেয়ে দাড়ালো ৷ চারুর কোনো দিকে মন নেই ৷সে বাইরের প্রকৃতি দেখতে ব্যস্ত ৷ তার পাশে যে আয়ান দাড়িয়ে আছে সেই খেয়াল নেই তার ৷আয়ান শান্ত গলায় বলল
চারুলতা আপনার কি মন খারাপ ৷
চারু আয়ানে দিকে শীতল দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো ৷আয়ান দেখলো চারুর চোখে পানি ৷আয়ান চারুর দুই গালে হাত রেখে বলল
কি হয়েছে চারু ৷আপনার চোখে পানি কেন ৷আমি কি কোনো ভুল করেছি ৷নাকি কেউ খারাপ ব্যবহার করেছে আপনার সাথে ৷
চারুর যেন এতটুকু ভরসা খুব দরকার ছিল ৷ চারু আয়ানকে শক্ত করে জরিয়ে ধরলো ৷তারপর হু হু করে কেদেঁ দিল ৷আয়ান অস্থির কন্ঠে বলল
কি হয়েছে বলুন না চারু ৷আপনি দয়া করে এভাবে কাদঁবেন না ৷আপনি কাদঁলে আমার অনেক কষ্ট হয় ৷বলুন না কি হয়েছে ৷
চারু কাদঁতে কাদঁতে বলল আমি এতটাই খারাপ আয়ান ৷দাদু আমার সাথে একবারও দেখা করতে আসে নি ৷আমি কি সত্যি অনেক বড় পাপ করেছি ৷দাদি একা আসে কেন ৷দাদু কেন আসে না ৷আমার বড্ড কষ্ট হয় আয়ান ৷
আয়ান চারুর মাথায় চুমু দিল ৷তারপর বলল ও তাহলে এই ব্যাপার ৷ঠিক আছে আমি সব ঠিক করে দেব ৷আমার চারু আমাকে বিশ্বাস করে তো ৷
চারু আয়ানের দিকে তাকিয়ে হ্যা বোঝালো ৷ আয়ান চারুর চোখের পানি মুছে দিল ৷তারপর হুট করেই চারুকে কোলে নিয়ে নিল ৷চারু ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল হঠাৎ কোলে নেওয়ায় ৷তারপর বলল
আমাকে কোলে কেন নিলেন আয়ান ৷আয়ান চারুর কথায় পাত্তা দিল না ৷সে চারুকে নিয়ে হাটতে লাগলো ৷আর চারু আয়ানকে বারবার নামাতে বলতে লাগলো ৷আয়ান চারুর কথায় পাত্তাই দিল না ৷ সে হেটেই চললো ৷আয়ান চারুকে বাড়ীর বাইরে নিয়ে এলো ৷আয়ানদের বাড়ীর পাশেই একটা বড় দীঘি ৷দিঘীর পাশে ঘাট বাধা ৷আয়ান চারুকে ঘাটের সিড়িতে বসিয়ে দিল ৷ আর চারু সে আয়ানকে দেখছে ৷আয়ানও চারুকে দেখছে ৷দখিনা হাওয়ায় চারুর খোলা চুল উড়ে যাচ্ছে ৷রুপালী চাদেঁর আলোয় চারুকে বড্ড সুন্দর লাগছে ৷আয়ান চারুর কাছ থেকে সরে গেল না ৷বরং চারুর কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে পড়লো ৷ চারুর একটা হাত আয়ান নিজের মাথায় রাখলো ৷তারপর বলল
মাথায় হাত বুলিয়ে দিন চারু ৷
চারু আয়ানের মাথায় হাত বুলাতে লাগলো ৷কোথায় একটু প্রেম ভালোবাসার কথা বলবে তা না ৷এই ছেলেকে দেখ চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে ৷চারু মনে মনে কথা গুলো বলল ৷
তখনই আয়ান বলল প্রেম ভালোবাসার কথা এখনই বলতে চাই না চারু ৷সময় হোক বলবো৷
আয়ানের দিকে চোখ বড় বড় করে চারু তাকিয়ে রইলো ৷বাজে লোক একটা মনের কথাও বুঝে ফেলে ৷
অপর দিকে ফ্লোরে পরে আছে দ্বীপ ৷ তার আশেপাশে কিছু লোক আছে ৷ দ্বীপের হাত পা বাধাঁ ৷সামনেই তার বাবা বসে আছে ৷তার হাতে একটা সিরিজ ৷ দ্বীপের বাবা একটা শয়তানি হাসি দিয়ে বলল
কি রে হেরোইন খেয়েই তোর এই অবস্থা ৷ আর এই সিরিজ যদি তোর দেহে দেই তাহলে কি হবে ৷
দ্বীপ কাদঁতে কাদঁতে বলল আমার শরীরে এইটা দিও না ৷ আমার খুব কষ্ট হয় বাবা ৷তোমার দুইটা পায়ে পড়ি আমাকে এখান থেকে নিয়ে যাও ৷এখানে আমি থাকবো না ৷
তোকে ছেড়ে দিলে আমার ড্রাগসের ব্যাবসা কে সামলাবে ৷ তোকে কি এমনি এমনি আমি নেশা দেই হ্যা ৷তুই এই নেশার জন্য পাগলা কুত্তা হয়ে যাবি ৷চাইলেই ছাড়তে পারবি না ৷আর তুই এখন কোথায় জানিস ৷ তুই এখন বেশ্যাদের কুঠিরে ৷বেশ্যা কি জানিস ৷যারা টাকার বিনিময়ে অনেক লোকের সাথে থাকে ৷ মেয়ে তুলে আনা হয় এখানে ৷আমার লোকেরা সহজ সরল মেয়েদের সাথে প্রেমের অভিনয় করে এখানে নিয়ে আসে ৷ আর ওরা সারা জীবনের জন্য এখনে রয়ে যায় ৷নারী পাচার করি আমি ৷ড্রাগসের ব্যবসা করি আমি ৷কত টুকু জানিস আমার ব্যাপারে ৷নিজের স্বার্থে শুধু তোকে নেশা দেওয়া না ৷আরো অনেক কিছু করতে পারি আমি ৷নিজের স্বার্থে মা বাবাকে খুন করেছি ৷এমনকি নিজের আপন ছোট ভাইকেও ৷তাহলে তোকে নেশা করাতে আমার হাত কেন কাপঁবে বল ৷আমার ড্রাগস তুই সামলাবি ৷আর এই পতিতা পল্লী সামলাবে মাহিন ৷আমার শুধু টাকা চাই টাকা ৷খুব দরদ না আয়ানের প্রতি ৷ওর বাপকে যেভাবে মেরেছি ৷ওকেও ঐ ভাবেই মারবো আমি ৷ আমার কথা না শুনলে তুইও মরবি ৷
দ্বীপের শরীরে সিরিজ দিয়ে অন্য নেশা দেওয়া হয় এখন ৷দ্বীপ চিৎকার করতে লাগলো ৷কিন্তু তার চিৎকার শোনার কেউ নেই এখানে ৷আজ দুইমাস এই বদ্ধ ঘরের বন্দি সে ৷তার দিন শুরু হয় নতুন নতুন নেশা দিয়ে এখন ৷আর রাত শেষ হয় নেশা দিয়ে ৷প্রতিদিন নিজের বাবাকে সে আবিষ্কার করে নতুন করে ৷তার কি দোষ সে জানে না ৷শুধু এতটুকু জানে সে কোনো খারাপ কাজ করবে না ৷দ্বীপ নিজের চোখ বন্ধ করলো ৷
ফ্লোরে পরে রইলো সে ৷আজ সকালে নিজের হাত নিজেই কেটেছে হেরোইন এর জন্য ৷নেশা যখন বেড়ে যায় ৷তখন দ্বীপ নিজের মাঝে থাকে না ৷একটা পাগলে পরিনত হয় ৷ আগের থেকে এখন অনেক কালো হয়ে গেছে সে ৷পাতলা লাল টকটকে ঠোট গুলো বর্নহীন হয়ে গেছে ৷ শরীরে খামচির দাগ ৷নিজের শরীর খামচে রাখে নি সে ৷ মাথার ঘন কালো চুল গুলো এখন এলোমেলো ৷নেশার জন্য মাথার অর্ধেক চুল টেনে ছিড়েই ফেলেছে ৷ রোজ ঘুম থেকে উঠে তার একটাই কাজ খাওয়া আর নেশা করা ৷গাজাঁ এখন তার অন্যতম সঙ্গী ৷রোজ একটু একটু করে তাকে নেশা দেওয়া হয় ৷কেননা তার সহ্য ক্ষমতা কম ৷
আজ একদিন দ্বীপ ঘুমিয়ে আছে ৷নেশার রেশ কাটে নি তার ৷কিন্তু কেউ একজন তাকেই ডেকেই চলেছে ৷দ্বীপ চেয়েও চোখ খুলতে পারছে না ৷মাথাটা কেমন যেন করছে তার ৷
চলবে
প্রীতিলতা আসবে বলে
লেখিকা:আফরিন ইসলাম
পার্ট : ১০
সিজন : ২
অনেক কষ্টে চোখ মেলে তাকালো দ্বীপ ৷সব কিছুই তার কাছে ঝাপসা লাগছে ৷ তার বাবার ম্যানেজার দাড়িয়ে আছে সামনে ৷দ্বীপকে অনেক কষ্টে দুইজন লোক ফ্রেশ করে দিল ৷তার বাবার ম্যানেজার দ্বীপকে খাইয়ে দিল ৷দ্বীপ ম্যানেজারের দিকে তাকিয়ে বলল
আংকেল আব্বুকে আসতে বলুন ৷তার সাথে আমার কথা আছে ৷তাড়াতাড়ি আসতে বলুন ৷
ম্যানেজার নিজের ফোন বের করে দ্বীপের বাবাকে কল করলেন ৷
আয়ান বসে আছে তুরাগ নদীর পাশে ৷ ১৯৮৪ সালের দিকে এই নদীর অনেক বড় ছিল ৷আয়ানের বাসা থেকে নদী বেশ কাছে ৷সে তার অতি কাছের চার বন্ধুর সাথে বসে আছে ৷চার বন্ধুর মধ্যে ওসমান তার অনেক কাছের ৷আয়ান ওসমানকে অন্ধের মতো বিশ্বাস করে ৷ ওসমান তার ছোট বেলার বন্ধু ৷ ওসমানও আয়ানকে অনেক ভালোবাসে ৷ ওসমান আর্মিতে জয়েন করবে ৷ আজ পাচঁ বন্ধু সারা দিন এক সাথে কাটাবে ৷কারন আয়ানকে ওর বাবা বিদেশ পাঠাবে লেখাপড়া করতে ৷
অপর দিকে দ্বীপ তার বাবার সামনে বসে আছে মাথা নিচু করে ৷কারো মুখে কথা নেই ৷নিরবতা ভেঙ্গে দ্বীপ বলল
বাবা আমি তোমার সব শর্তে রাজী ৷তুমি এটাই চাইছো যেন আমি তোমার মাদকের ব্যবসায় এখন থেকেই যোগ দেই ৷ঠিক আছে তাই হবে ৷আমি আমার বন্ধুদের মধ্যে মাদক ছড়িয়ে দেব ৷মাদক ছড়াতে যা যা করা লাগে করবো ৷কিন্তু দুইটা শর্তে ৷
কি শর্ত বলো ৷
তুমি মা ,ভাইয়া আর ভাবিমার কোনো ক্ষতি করবে না ৷আর মাদক ছাড়া এখন আমি থাকতেও পারবো না ৷তাই আমাকে মাদক দেবে যখন আমার চাই ৷যদি রাজী থাকো তাহলে আমিও রাজী ৷
দ্বীপের মাথায় ওর বাবা চুমু দিয়ে বললেন ৷এই তো আমার লক্ষী ছেলে ৷শুধু শুধু এতদিন কষ্ট করলি ৷তোর শর্তে আমি রাজী ৷তোর যত ইচ্ছে মাদক নে ৷আমার কোনো সমস্যা নেই ৷ তোর শুধু একটাই কাজ সাবধানে এই মাদক ছড়ানো ৷পারবি না এতটুকু করতে ৷
দ্বীপ মাথা নেড়ে হ্যা বোঝালো ৷এই হ্যা শব্দটাই হয়তো তার জীবনে কাল হয়ে আসবে ৷এই হ্যা শব্দের জন্যই হয়তো একদিন প্রিয়জনদের হারাবে সে ৷ যা এখন কল্পনাও করতে পারছে না সে ৷
দ্বীপের বাবা দ্বীপকে বাড়ী নিয়ে যাবে ৷এখানে আর রাখবে না ৷তাই দ্বীপের সব জিনিস গুছিয়ে নিল ৷
বিকেল চারটা বাজে ৷আয়ান নিজের ঘরে ঘুমিয়ে আছে ৷কিছুক্ষন আগে বাসায় এসেছে ৷ বাসায় এসে ফ্রেশ হয়েই শুয়ে পড়েছে ৷ তার শরীর নাকি ব্যাথা করছে ৷চারু আয়ানের পাশে বসে হালকা ধাক্কা দিয়ে বলল
শুনছেন ৷তাড়াতাড়ি উঠে পড়ুন ৷ খেয়ে নিন আপনি ৷নইলে কিন্তু শরীর খারাপ করবে ৷
আয়ান চোখ না খুলেই বলল আজ কাল বউ আমার একটু বেশি খেয়াল রাখছে ৷এত খেয়াল রাখলে বিদেশ তো যেতে পারবো না ৷
ঢং দেখলে মরে যাই বাপু ৷আপনার মতলোব আমি বুঝি না ভেবেছেন ৷বিদেশ যেয়ে ম্যাম পটাবেন ৷এর জন্যই তো এত লাফালাফি করছেন যাওয়ার জন্য ৷
আয়ান হাসলো চারুর কথায় ৷তারপর বলল
বুঝেই যখন গেছো ৷তাহলে আর লুকিয়ে লাভ কি ৷ বিদেশি ম্যাম গুলো না সেই দেখতে ৷একদম রক্ত জবার মতো ৷দেখলেই ছুয়ে দিতে ইচ্ছে করে ৷ওমন একটা সুন্দরী ঘরে থাকলে আর কি লাগে ৷আহ কি শান্তি ৷
চারু ঝাঝাঁলো গলায় বলল খেয়ে নিন তাড়াতাড়ি ৷আর ম্যাম বিয়ে করার কথা ভুলে যান ৷ঐ সাদা ভূত বিয়ে করলে একটা চুলও রাখবো না আপনার মাথার ৷চারু কথা গুলো বলেই চলে যেতে নিল ৷কিন্তু যেতে পারলো না ৷আয়ান চারুর হাত ধরে বলল
রাগ করে না সুন্দরী গো ৷
রাগলে তোমায় লাগে আরো ভালো ৷
চারুর রাগ কিছুটা কমে গেল ৷লোকটা বেশ ভালো মেয়ে পটাতে পারে ৷কিন্তু তার সহজ সরল মুখটা দেখে কেউ বুঝবেই না ৷চারু আর আয়ানের কথার মাঝেই মমতা বেগম এলেন ৷তারপর বললেন
চারু মা দ্বীপ এসেছে ৷তোমার বাবাই দ্বীপকে নিয়ে এসেছে ৷
চারু আয়ানের হাত ছেড়ে দৌড়ে বাইরে গেল ৷দ্বীপকে দেখার জন্য তার মনটা এমনিতেই ব্যাকুল হয়ে আছে ৷তাই আর অপেক্ষা করলো না ৷
চারু সিড়ি বেয়ে নিচে এলো ৷কিন্তু একি তার সামনে এটা কে দাড়িয়ে আছে ৷চারুর চোখে পানি চলে এসেছে ৷এটা সে কাকে দেখছে ৷চারু দ্বীপের পুরো মুখে হাত বুলালো ৷তার চেহারার সেই সহজ সরল ভাবটা হারিয়ে গেছে ৷চোখ ঘোলাটে হয়ে গেছে ৷মাথায় চুল নেই ৷মাথার সব চুল ফেলে দেওয়া হয়েছে ৷একদম শুকিয়ে গেছে ৷কিন্তু শরীরের আঘাত গুলো কাপড়ের নিচে চাপা পড়ে গেল ৷যা চারু কিংবা অন্য কেউ দেখতে পায় নি ৷ চারু দ্বীপকে জরিয়ে ধরে কাদঁতে লাগলো ৷দ্বীপও তার ভাবিমাকে ধরে কাদঁতে লাগলো ৷
তিনমাস পার হয়ে গেছে ৷কাল আয়ানের বিদেশে চলে যাওয়ার তারিখ ৷চারুর মেডিকেল পরীক্ষা শেষ ৷বেশ ভালো পরীক্ষা দিয়েছে সে ৷বোর্ডের রেজাল্টও বেশ ভালো হয়েছে তার ৷কিন্তু আয়ানের ওতটা ভালো হয় নি ৷সব আগের মতই স্বাভাবিক ভাবেই চলছে ৷চারুর দাদুও চারুকে মেনে নিয়েছে ৷যদিও আয়ানই তাদের মিলিয়ে দিয়েছে ৷তিন মাসে বেশ কয়েকবার চারু তার বাবার বাড়ীতে গেছে ৷
চারু বিছানায় শুয়ে ফুপিয়ে কাদঁছে ৷আজ এক সপ্তাহ ধরে সে কেদেঁই চলেছে ৷আয়ান এত এত প্রেমের কথা বলেছে ৷তাও বেচারীর মন গলেনি ৷তার ধারনা আয়ান বিদেশে যেয়ে বদলে যাবে ৷আয়ান ঘরে এসে দেখলো তার বউটা বিছানায় শুয়ে কাদঁছে ৷ আয়ান চারুর পাশে শুয়ে পড়লো ৷তারপর পেছন থেকে জরিয়ে ধরলো চারুকে ৷চারু কোনো কিছুই বলল না আয়ানকে ৷নিজের মতো কেদেঁই গেল ৷আয়ান চারুকে জরিয়ে ধরে বলল
কি হয়েছে চারু কাদঁছেন কেন ৷আপনি এভাবে কাদঁলে আমার ভালো লাগে না ৷এই ছোট কথাটা আর কত ভাবে বুঝাবো বলুন তো ৷আমি পড়ালেখা শেষ করেই চলে আসবো ৷ আপনিও মন দিয়ে লেখাপড়া করুন ৷আপনাকে সংসারের জালে বেধেঁ রাখতে আমি চাই না চারু ৷আমি চাই আপনার একটা পরিচয় হোক ৷যেটা আমি এখানে থাকলে হবে না ৷আমি ফিরে আসবো চারু ৷তারপর আমাদের সংসার হবে ৷আমি আসার পর এক সেকেন্ডের জন্য কোথাও যেতে পারবেন না ৷তাই আমি যাওয়ার পর জীবনটা উপভোগ করুন ৷আর আপনি যদি এভাবে কাদেঁন তাহলে আমি যাব না ৷আপনাকে আর পড়তেও দেব না বলে দিলাম ৷
চারু আয়ানের দিকে ফিরলো ৷আয়ানের দিকে তাকিয়ে এবার জোড়েই কেদেঁ দিল ৷তারপর কাদঁতে কাদঁতে বলল
ঐ দেশে যেয়ে আপনি আমায় ভুলে যাবেন আয়ান ৷বিদেশি ম্যাম দেখে আমায় ভুলেই যাবেন ৷আমি আর পড়বো না ৷তাও আপনি যাবেন না ৷আপনাকে ছাড়া থাকতে আমার বড্ড কষ্ট হবে আয়ান ৷আপনি আমায় ছেড়ে যাবেন না দয়া করে ৷
আপনি কি ভয় পাচ্ছেন চারু ৷ভয় পাবেন না আপনি ৷এই দুনিয়ায় আমি যত দিন আছি ৷ঠিক ততদিন কোনো ভয় পাবেন না ৷জীবন থাকতে আপনাকে ছাড়বো না আমি ৷আপনাকে ছাড়লে আমি নিজেই মরে যাব চারু ৷আয়ান চারুকে নিজের বুকে চেপে ধরলো ৷চারুর কান্নার বেগ কমে গেল ৷ভেজা চোখে সে আয়ানের দিকে তাকিয়ে বলল
আপনি কি মেয়েদের পেছনে ঘুড়বেন ৷আপনাকেই তো মেয়েরা পাত্তা দেবে না ৷এখনো দাড়ি হয় নি সে নাকি আবার বিয়ে করেছে ৷আমি চারু আপনাকে বিয়ে না করলে কেউ বিয়ে করতো না আপনাকে ৷ আমার মতো সহজ সরল মেয়েকে বিয়ে করতে পেরেছেন ৷বিদেশে গিয়ে মেয়েদের পেছনে ঘুড়লে গনধোলাই খাবেন আপনি ৷
শকুনের দোয়ার গরু মরে না বউ ৷
চারু আয়ানের দিকে তাকিয়ে বলল কি আমি শকুন ৷চারুর অভিমানী কান্না এবার রাগে পরিনত হলো ৷সে আয়ানের উপর উঠে বসলো ৷তারপর আয়ানের চুল ধরে টানতে লাগলো ৷
আয়ান হাসতে হাসতে বলল ওরে পেতনি ধরেছে আমায় ৷কেউ বাচাও আমাকে ৷আমার বুকের উপর একটা হাতি সাইজের পেতনি উঠেছে ৷মরে গেলাম বাবাগো ৷
চলবে