প্রীতিলতা আসবে বলে
লেখিকা :আফরিন ইসলাম
সিজন :২
পার্ট:১২
বারান্দায় শীতল পাটির উপর চারু আর আয়ান বসে আছে ৷ আয়ান চারুর কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে আছে ৷দুজনার মুখে কোনো কথা নেই ৷এক জন আরেক জনের দিকে তাকিয়ে আছে ৷কিছুক্ষন আগে আয়ান চারুকে খাইয়ে দিয়েছে নিজের হাতে ৷ চারুর ডান হাতটা আয়ানের পুরো মুখে বিচরন করছে ৷ কত দিন এই মুখটাকে সে দেখে নি ৷চারু আয়ানের কপালে চুমু দিল ৷আয়ান উঠে বসলো ৷তারপর চারুর পুরো মুখে নিজের ওষ্ঠ ছোয়াল ৷ চারুর কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বলল
এত সুন্দর হওয়ার জন্য কঠিন শাস্তি অপেক্ষা করছে আপনার জন্য ডাক্তারনী ৷ আমার জীবনে কাল বৈশাখী ঝড়ের মতো আসার জন্য আপনাকে শাস্তি পেতে হবে ৷আপনাকে আমার সাথে বৃদ্ধা হতে হবে ৷বুড়ো বয়সে আমার হাতের মুঠোয় শক্ত করে নিজের হাত রাখতে হবে ৷আমৃত্যু আমার সাথে থাকতে হবে ৷
এমন ছোট ছোট স্পর্শে কিছু ভালোবাসার প্রকাশ হোক ৷
অভিমানে যখন প্রেয়সী কাতর ৷তখন শ্যামপুরুষের আগমন হোক ৷
হাজার বছর বেচেঁ থাকুক শ্যামপুরুষ ৷তার প্রেয়সী নামক সত্তার জন্য ৷
আট বছর পার হয়ে গেছে ৷ চারু আর আয়ানের একটা ছেলে হয়েছে ৷তার নাম আবেশ ৷আবেশের বয়স সাত বছর ৷চারু আবারো প্রেগনেন্ট ৷চারুর আট মাস চলছে ৷দ্বীপ বিয়ে করছে ৷তার দেড় বছর আগে ছেলে হয়েছে ৷দ্বীপের ছেলের নাম মিহান রেখেছে ৷ভালোবেসে নাম রেখেছে দিহান ৷দ্বীপের আর নিজের নামের সাথে মিলিয়ে নাম রেখেছে সে ৷মিহান বিয়ে করে নি ৷কিন্তু সে কেন বিয়ে করে নি এটা কেউ জানে না ৷অপর দিকে আয়ানের বন্ধু জামিল ও বিয়ে করেছে ৷তার মেয়ের বয়স এই চার বছর ৷আবেশের সাথে তার বেশ ভাব ৷আয়ান আর জামিল ঠিক করেছে ওদের বিয়ে দিবে ৷চারুর দাদা দাদি মারা গেছে তিন বছর আগে ৷চারুর দাদি হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে মারা যায় ৷স্ত্রীর মৃত্যু সহ্য করতে পারে নি চারুর দাদা ৷স্ত্রী মারা যাওয়ার এক মাস পরে উনিও মারা যায় ৷
আয়ানের মায়ের শরীরটা দিন দিন খারাপ হচ্ছে ৷উনি আস্তে আস্তে দুর্বল হয়ে যাচ্ছেন ৷উল্টা পাল্টা কথাও বলে আজকাল ৷ একা একা কথাও বলে মাঝে মাঝে ৷ওনাকে ডাক্তারের কাছেও নেওয়া হয়েছে ৷কিন্তু ডাক্তার কোনো কারন খুজে পায় নি ৷
আয়ান তার বাবার জুয়েলারির ব্যবসা সামলাচ্ছে ৷যাতে বেশ লাভ হচ্ছে তার ৷অপর দিকে চারুও ডাক্তারী পেশায় বেশ এগিয়ে গেছে ৷চারিদিকে তার সুনামও বেশ ছড়িয়ে গেছে ৷
অন্যদিকে ঢাকাতে মাদকের প্রবনতা বেশ বেড়ে গেছে ৷কোথা থেকে এত মাদক আসছে তা কেউ জানে না ৷ছোট বড় অনেক ছেলে মেয়ে মাদকে আসক্ত হয়ে যাচ্ছে ৷ শহর থেকে মেয়েরা গায়েব হয়ে যাচ্ছে ৷মেয়েদের আর খুজে পাওয়া যায় না ৷পুলিশের কাছে যেয়েও লাভ হয় না ৷
দেখতে দেখতে দেড় মাস পাড় হয়ে গেছে ৷আজ চারুর সকালেই প্রসব বেদনা শুরু হয় ৷আয়ান দেরি না করে চারুকে হাসপাতালে নিয়ে যায় ৷প্রথম ছেলে আবেশ হওয়ার সময় চারুর অবস্থা ভালো ছিল না ৷চারুর প্রচুর রক্তক্ষরন হয় ৷ডাক্তার যখন বলে ছিল চারুর অবস্থা ভালো না ৷আয়ান পাগলের মতো হয়ে গিয়ে ছিল ৷আয়ানের সেই কি কান্না ঐ দিন ৷দ্বিতীয় বাচ্চাটা আয়ান নিতেই চায় নি ৷চারু জোড় করে নিয়েছে ৷এর জন্য আয়ান কম রাগ করে নি তার সাথে ৷আজকেও আয়ানের ভয়ে পুরো শরীর কাপঁছে ৷চারুর কিছু হলে সে বাচঁবে না কোনো মতেই ৷কিছুক্ষন পর ডাক্তার ওটি থেকে বের হয়ে আসলো ৷তারপর হাসিমুখে বলল মেয়ে হয়েছে আপনার মিঃ চৌধুরী ৷আয়ান নিজের চোখ মুছে বলল
আমার স্ত্রী কেমন আছে ডাক্তার ৷
ম্যাডাম একদম ভালো আছেন ৷আপনারা একটু পরেই দেখা করতে পারবেন ৷ডাক্তার চলে গেল ৷
এক ঘন্টা পর আয়ান গেল চারুর কাছে ৷চোখ বন্ধ করে সে শুয়ে আছে ৷আয়ান চারুর কপালে চুমু দিল ৷যার কারনে চারুর ঘুম ভেঙ্গে গেল ৷ চারু আয়ানকে দেখে মুচকি হাসলো ৷চারু কিছু বলবে তার আগেই চারুর কপালের সাথে নিজের কপাল ঠেকিয়ে আয়ান বলল
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ চারু ৷আমার জীবনে আপনিময় হয়ে আসার জন্য ৷
আপনাকে ধন্যবাদ এই জীবনটাকে সাজিয়ে দেওয়ার জন্য ৷
আপনাকে ধন্যবাদ আমার আমিতে বসবাস করার জন্য ৷
আপনাকে ধন্যবাদ আমায় পূর্ন করার জন্য ৷
আজ ছয় দিন চারুকে বাড়ীতে নিয়ে আসা হয়েছে ৷পুরো বাড়ীতে খুশির রোল পড়েছে ৷আয়ান মেয়ের নাম রেখেছে প্রীতিলতা ৷মেয়ে গোল গোল চোখে আয়ানের দিকে তাকিয়ে থাকে ৷আয়ান মেয়েকে কোলে নিয়ে হাজারো কথা বলে ৷ছোট মেয়েটা বাবার কথায় কিছু বলে না শুধু তাকিয়ে থাকে ৷কথা বলবে কিভাবে সে তো এখনো অনেক ছোট ৷ তবে নিজের ছোট হাত দিয়ে বাবার গাল ছুয়ে দেয় সে ৷বাবার আদুরে কথায় ঠোটঁ বাকিয়ে মুচকি হাসেঁ ৷ প্রীতির কাছে কাউকে আসতে দেয় না আবেশ ৷চারু বলেছে প্রীতির কাচাঁ নাড়ে হাত না দিতে ৷বোন নাড়ে ব্যাথা পেলে মরে যাবে ৷তাই আবেশ কাউকে আসতে দেয় না ৷যদি বোন মরে যায় ৷
চলবে
প্রীতিলতা আসবে বলে
লেখিকা :আফরিন ইসলাম
সিজন :২
পার্ট :১৩
সময় পেরিয়ে যাচ্ছে ৷ছোট প্রীতিলতার এখন তিনবছর ৷বেশ পাকাঁ কথা বলে সে ৷বাবার একমাত্র রাজকন্যা সে ৷বাবাকে ছাড়া তার দিন কাটতেই চায় না ৷আর আয়ানও মেয়ে বলতেই পাগল ৷মেয়ে একদিকে আর দুনিয়া অন্য দিকে ৷ কিছু দিন আগে দুষ্টুমী করার জন্য চারু প্রীতিকে বকে ছিল ৷তার জন্য আয়ান চারুকে বকা দিয়েছে ৷তার মেয়েকে কিছু বলা যাবে না ৷তার সব কিছুই তো এই মেয়ে ৷এর জন্য আবেশ প্রীতিকে একদম দেখতে পারে না ৷তার ধারনা মতে বাবা তাকে একদম ভালোবাসে না ৷এর জন্য প্রায় সময়ই সে মায়ের কাছে বিচার দেয় ৷
দেখতে দেখতে চার বছর পার হয়ে গেছে ৷প্রীতির এখন সাত বছর ৷স্কুলে পড়ে এখন সে ৷অন্যদিকে আয়ানের বন্ধু জামিলের মেয়ের সাথে আবেশের বিয়েও ঠিক হয়েছে ৷তারা এই বন্ধুত্ব কখনো শেষ করতে চায় না ৷কিন্তু যখনই জামিলের মেয়ে প্রীতিদের বাড়ীতে আসে ৷তখনই প্রীতি তাকে দুষ্টু ছেলের বউ বলে হাসে ৷এর জন্য আবেশ প্রীতির কানও মলে দিয়েছে বেশ কয়েকবার ৷ছোট প্রীতিলতা সবার নয়নের মনি ৷অন্যদিকে চারুর আবারো বাচ্চা হবে ৷তার চারমাস চলছে ৷
কয়েক দিন পরের কথা ৷হঠাৎ একদিন জামিল তার ছোট ভাইকে নিয়ে প্রীতিদের বাসায় আসে ৷জামিলের ভাইয়ের এক ছেলে আর এক মেয়ে ৷ ছেলের নাম নির্ঝর ৷আর মেয়ের নাম মিলা ৷এগারো বছরের নির্ঝরও বাবার সাথে প্রীতিদের বাসায় এসেছে ৷প্রাতিদের বাড়ীটা নির্ঝর ঘুড়ে ঘুড়ে দেখছিল ৷হঠাৎ করেই কারো সাথে ধাক্কা খেয়ে নির্ঝর নিচে পড়ে গেল ৷বেশ ব্যথাও পায় সে পড়ে যেয়ে ৷রেগে পেছনে তাকাতেই দেখতে পায় একটা মিনিস্কার্ট পরা মেয়েকে ৷বেশ ঢং করে কোমরে হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছে ৷পেছনে তার বোন মিলা দাড়ানো ৷ মিলার চোখে পানি ৷নির্ঝর রেগে গিয়ে মিনিস্কার্ট পরা মেয়েটাকে বলল
এই মেয়ে আমায় ধাক্কা দিলি কেন ৷
এই একদম তুই করে বলবে না ৷আমার বাবা জানলে একদম মেরে দেব ৷
একে তো ধাক্কা মেরেছিস ৷আবার আমাকেই ভয় দেখাস ৷ সরি বল তাড়াতাড়ি ৷
এই প্রীতিলতা কাউকে সরি বলে না ৷তোমার মতো একটা পচাঁ লোককে তো আরো বলবো না ৷
ও তাহলে তুমি সেই পাজী প্রীতিলতা ৷যার কথা আপু আমায় বলে ছিল ৷এই মিলা তুই ওর পেছনে কেন দৌড়াচ্ছিলি ৷
ভাইয়া এই মেয়েটা আমার চকলেট কেড়ে নিয়েছে ৷
যা বাবা এত দিন জানতাম এই মেয়ে একটা বদের হাড্ডি ৷এখন তো দেখছি চুন্নি ৷
এই পচাঁ ছেলে একদম বাজে কথা বলবে না৷
সেটা বললে তো হবে না মামুনি ৷আজ তোমার একদিন কি আমাদের একদিন ৷এই মিলা মালটাকে ধর ৷আজ একে একটা শিক্ষা দিয়েই ছাড়বো ৷
মিলা আর নির্ঝর মিলে ছোট প্রীতিলতাকে চেপেঁ ধরলো ৷তারপর ওর সারা শরীরে কাতুকুতু দিতে লাগলো ৷প্রীতিলতা হাসঁতে হাসঁতে লুটিয়ে পড়েছে ৷ আর ছুটার জন্য মোচড়াতে লাগলো ৷
পেরিয়ে গেছে সাত মাস ৷চারুর আবারো ছেলে হয়েছে ৷ছেলের নাম রাখা হয়েছে আদিত্য ৷অপর দিকে নির্ঝর আর প্রীতিরও বেশ বন্ধুত্ব হয়েছে ৷সবাই ঠিক করেছে বড় হলে প্রীতি আর নির্ঝরের বিয়ে দিবে ৷একজন আরেক জনের সাথে ওরা বড্ড খুশি থাকে ৷ নির্ঝরও এখন প্রীতিকে বেশ আদর করে ৷ প্রীতি বিয়ে কি খুব একটা বোঝে না ৷কিন্তু নির্ঝর বেশ ভালোই বোঝে ৷নির্ঝর ,আবেশ আর প্রীতি একই স্কুলে পড়ে এখন ৷নির্ঝর বেশ আগলিয়ে রাখে ছোট প্রীতিকে ৷
চারু বেশ কয়েকদিন যাবৎ খেয়াল করছে মিহান ,দ্বীপ আর ওর শ্বশুড়ের মধ্যে কিছু একটা নিয়ে বেশ কথা কাটাকাটি হয় ৷কিন্তু কি ব্যপারে তারা কথা বলে তা চারু জানে না ৷কাউকে দেখলেই তাদের কথা বলা বন্ধ হয়ে যায় ৷চারু খুব একটা পাত্তা দেয় না ৷ হয়তো ব্যবসায়ী কোনো ব্যাপার ৷তাই কিছুই মনে করে না ৷
দিন গুলো বেশ ভালোই কাটছিল সবার ৷কিন্তু সুখ বেশিদিন কারো কপালে টিকে না ৷চৌধুরী বাড়ীর সুখও টিকলো না ৷মিহানের মৃত্যুর সংবাদ সবার জীবন লন্ডভন্ড করে দিল ৷এক সপ্তাহ আগে মিহান আর দ্বীপ চট্টগ্রাম যায় একটা ডিল ফাইনাল করতে ৷কিন্তু মিহানকে হঠাৎ করেই তার বাবা ঢাকা আসতে বলে টেলিফোনে ৷ মিহান বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওনা দেয় ৷কিন্তু বাড়ী ফেরার পথে একটা ট্রাক মিহানের গাড়ীতে ধাক্কা মারে সজোরে ৷যার ফলে রাস্তার মধ্যেই মিহান মারা যায় ৷তার শরীরের একপাশ থেতলে যায় খারাপ ভাবে ৷মিহানের লাশ বাড়ীতে আসার পর কান্নার রোল পড়ে যায় ৷মিহানের বাবা ছেলের লাশের দিকে তাকিয়ে রইলেন ৷তার চোখ থেকে দুই ফোটাঁ পানি গড়িয়ে পড়লো ৷
মিহান মারা যাওয়ার দুই দিন পার হয়ে গেছে ৷মমতা বেগম হাসপাতালে ভর্তি ৷ডাক্তার বলেছে ছেলের মৃত্যু মেনে নিতে পারে নি ৷তাই মমতা বেগম মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন ৷তাকে এখন ঘুমের ইজ্ঞেকশন দিয়ে রাখা হয় ৷ছেলের জন্য এখন সে একটা পাগল ৷মিহান মারা যাওয়ার পর মমতা বেগম চিৎকার করে কেদেঁছেন লাশ ধরে ৷ছেলের থেতলে যাওয়া মুখটা ধরে হাউমাউ করে কেদেঁছেন ৷
অন্যদিকে মিহানের বাবা ছেলের মৃত্যুর পর কেমন যেন জড় পদার্থে পরিনত হলো ৷সবার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিলেন ৷স্ত্রীর ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে নিঃশব্দে কাদঁতেন ৷
মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে ৷মেঘলা আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে চারুর শ্বশুড় ৷তার চোখের পানি বৃষ্টির পানির সাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে যাচ্ছে ৷আকাশের দিকে তাকিয়ে তিনি বললেন
আমায় ক্ষমা করে দিও বাবা ৷আমি তোমায় জন্ম দিয়েছি ঠিকই কিন্তু বাবা হতে পারি নি ৷তোমায় জোড় করে পাপের জগতে এনে ছিলাম ৷তুমি ঠিকই বলে ছিলে টাকায় সুখ হয় না ৷তুমি ঠিকই বলে ছিলে আপনজনের মৃত্যু মেনে নেওয়া কঠিন ৷আমি তো তখন তোমার কথায় আনন্দ পেতাম বাবা ৷তাহলে আজ কেন তোমার চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছি না ৷তোমার থেতলে যাওয়া মুখটা ধরে কেন কাদঁতে পারি নি আমি ৷কিভাবে ছুয়ে দিতাম তোমায় শেষ বারের মতো ৷আমার এই হাত যে তোমায় ছোয়ার ক্ষমতা রাখে না বাপ ৷সেই ছোট বেলায় যদি ফেরত যেতে পারতাম ৷তাহলে জীবনটা আবারো নতুন করে শুরু করতাম ৷আমি তোমাকে মারতে চাই নি ৷বিশ্বাস করো বাচাঁতে চেয়ে ছিলাম ৷কিন্তু তোমার ভাই আমার কথাই শুনলো না ৷আমি আজ নিজের কাছে হেরে গেলাম বাবা ৷তোমার মৃত্যুর কাহিনী অজানা থাক বাবা ৷পারলে এই পাপী বাপটাকে মাফ করে দিও ৷
পেরিয়ে গেছে আরো পাচঁ মাস ৷মমতা বেগম এখন মেন্টাল হাসপাতালে ভর্তি ৷আয়ানের বাবা অনেক অসুস্থ ৷চারমাস আগে স্ট্রোক করে ছিলেন ৷বাড়ীতে কারো মাঝেই এখন আর হাসিখুশি নেই ৷সবার মাঝে পরিবর্তন এলেও দ্বীপ বেশ ভালো আছে ৷পরিবারের এত সমস্যা তাতে তার যেন কিছু যায় আসে না ৷সে নিজের মতো বেশ ভালো আছে ছেলে আর বউকে নিয়ে ৷ডায়নাকে যেন আগের থেকেও বেশি ভালোবাসে দ্বীপ ৷ছেলে দিহান তার নয়নের মনি ৷
অন্যদিকে কিছুদিন যাবৎ চারু একটা হাসপাতালের প্রধান অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছে ৷অন্যদিকে আয়ানের ব্যবসা দিন দিন উন্নতি হচ্ছে ৷আয়ান নিজের সম্পত্তি তিন ছেলে মেয়ের নামে লিখে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন ৷কারন দ্বীপের সাথে আজকাল তার সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না৷দ্বীপ কেমন যেন বদলে গেছে ৷
কিছুদিন পরের কথা হঠাৎ করেই একদিন চারুর বাসায় আসতে দেরি হয়ে যায় ৷বাড়ীতে এসে চারু অবাক হয়ে যায় ৷কারন পুরো বাড়ী অন্ধকার ৷চারু অনেক ভয় পেয়ে যায় ৷চারু সিড়ি বেয়ে কোনো রকম উপরে উঠে সবাইকে ডাকতে থাকে ৷কিন্তু কেউ সাড়া দেয় না ৷
চলবে…