প্রেমময় বিষ পর্ব-০২

0
334

#প্রেমময়_বিষ
#মাহিমা_রেহমান
#পর্ব_২

– গালে হাত দিয়ে সেই কখন থেকে বসে আছি কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে কেউ আমাকে তেমন পাত্তাই দিচ্ছে না।
তাই আর সইতে না পেরে মাকে এবার ডেকেই উঠলাম,

— মা ও মা,, কে আসবে গো? তোমরা এই ভোর বেলা এতো তড়িঘড়ি শুরু করে দিয়েছো কেন?

আমার ডাক শুনে মা জবাব দিল,

— তোকে বলে কোন লাভ আছে?তুই কি এসে আমাদের কাজগুলো করে দিবি?তাই চুপচাপ যেখানে আছিস সেখানেই বসে থাক।

মায়ের কথা শুনে আমার মনটা বড্ড খারাপ হয়ে গেল। মা সবসময় খালি আমাকে বকতে থাকে।তখনই বড়মা আমার কাছে এসে বলতে লাগলেন,

— তোর ফুপা ফুপি আসছে,সাথে তোর কিয়ার আপু আর আদিব ভাইয়া।

কথাটা শুনে খুশিতে এক লাফ দিয়ে উঠে দাঁড়ালাম আর বলতে লাগলাম,

— তুমি সত্যি বলছো বড়মা! কতদিন পর সবাই আসছে।সেই কবে যে তারা আমাদের বাড়িতে এসেছিল সেটা আমি ভুলেই গেছি এতো দিনে!এবার আসলে আর সহজে যেতে দেব না কাউকে।

কথাটা বলেই আমি নাচতে নাচতে উপরে নিজের রুমে চলে গেলাম।রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে খাটে বসে ভাবতে লাগলাম,,

“ফুপি ফুপা কিয়ারা আপু প্রায়ই আমাদের বাড়িয়ে আসত কিন্তু আদিব ভাইয়া কে বেশি আসতে দেখি নি।ছোটবেলা হয়তো কয়েকবার আসতে দেখেছিলাম কিন্তু বড় হওয়ার পর ভাইয়াকে অতটা আসতে দেখি নি। তাই ওনার চেহারা আমার ঠিক মনে নেই। সর্বদা কাজ আর লেখাপড়া নিয়েই নাকি ব্যস্ত থাকতো উনি,কিন্তু এবার আসবে শুনে খুশি লাগছে। সেই ছোটবেলায় দেখেছি ভাইয়াকে এরপর আর দেখা হয়নি। এবার আসলে দেখা যাবে”

কথাগুলো ভাবতে ভাবতে নিচে চলে গেলেন কারণ নাস্তার সময় হয়ে গেছে।এখনই সবাই নিচে নামবে নাস্তার জন্য সাথে রায়ায ভাইয়া ও এই ফাঁকে ভাইয়াকে একটু দেখা হয়ে যাবে।উনকে আমার খালি দেখতে ইচ্ছে করে, কী সুন্দর উনি! কিন্তু আগে তো তাও এটা সেটায় বাহানা দিয়ে উনার রুমে যেতাম,ওনার আশপাশে ঘুরঘুর করতাম ওনাকে একবার দেখবো বলে কিন্তু এখন তো তাও করতে পারবো না। এখন কেবল খাবার টেবিলেই ওনার দেখা মিলবে। কথাটা ভাবতেই মনটা খারাপ হয়ে গেল।

নিচে গিয়ে দেখি সবাই এসে গেছে এমনকি ভাইয়াও এসে গেছে,, ভাইয়াকে দেখে যেই না আমি ভাইয়ার পাশে বসতে যাবো, তখই ভাইয়া আমার দিকে রক্তচক্ষু নিয়ে তাকায়।ভাইয়ার এমন চাহনি দেখে এতটাই ভয় পাই যে আর তার পাশে বসার সাহস পায়নি তাই চুপচাপ টায়রার পাশে গিয়ে বসে পড়ি, আর আড় চোখে বারবার ভাইয়াকে দেখতে থাকি। হঠাৎ করে ভাইয়া রাগী চোখে আমার দিকে তাকালেই আমি খাওয়ায় মনোযোগ দেই।পরবর্তীতে ভুলেও আর তাকাই নি এই ভেবে না,,আবার যদি তাকাই না জানি আমাকে কী করে?

নাস্তা শেষে আমি আর টায়রা দুজন রেডি হয়ে নেই স্কুলের যাওয়ার জন্য।আমি আর টায়রা সবে ক্লাস নাইনে পড়ছি।রায়ায ভাইয়া প্রতিদিন আমাকে আর টায়রাকে উনার গাড়ি দিয়ে স্কুলে নামিয়ে দিয়ে নিজে ভার্সিটিতে চলে যায়।

রয়ায ভাই অনেক আগেই গাড়িতে গিয়ে বসে আছে। আমি আর টায়রা রেডি হয়ে সোজা গাড়ির সামনে এসে হাজির হলাম।টায়রা আমাকে রেখে টুপ করে আগেই গাড়িতে গিয়ে বসে পড়ে।যেই আমি গাড়ির দরজা খুলতে যাবো অমনি ভাইয়া গাড়ি স্টার্ট দেয় আর আমাকে রেখেই চলে যায়।

ভাইয়ার এমন কাজে আমি অনেকটা কষ্ট পাই তাই কাঁদতে কাঁদতে বাড়ির ভিতর ঢুকে যাই।আমাকে এমন কাঁদতে দেখে বড়মা দৌড়ে আমার কাছে এসে বাবার জিজ্ঞেস করতে থাকে,

–কী হয়েছে বেলা তুই এবাবে কাঁদছিস কেনো?

আমি কাঁদতে কাঁদতে বড়মার কাছে বিচার দিতে লাগলাম,

— তোমার ছেলে আমাকে রেখেই টায়রাকে নিয়ে চলে গেছে।

বড়মা আমার কথা শুনে অনেকটা অবাক হয় আর বলতে লাগে,

— সে কী কথা? ও তো তোকে আর টায়রাকে প্রতিদিন একসাথে স্কুলে নিয়ে যায় তাহলে আজকে এমন কী হলো যে তোকে ফেলে শুধু টায়রাকে নিয়ে গেল।

বড়মার কথা শুনে আমি অনেকটা ঘাবড়ে যায়, কারন ভাইয়া যে কেনো আমাকে ফেলে গেছে তা আমি বেশ ভালো ভাবে বুঝতে পেরেছি।তাই কথা ঘুরিয়ে বললাম,

— হয়তো ভুল করে রেখে গেছে।যাক ভালোই হলো আমাকে আর স্কুলে যেতে হবে না আজকে।

কথাটা বলেই আমি নিজের রুমে চলে এলাম।ভাইয়ার এহেম কাজে আমি খুব কষ্ট পেয়েছি রায় মন খারাপ করে বসে রইলাম।কিছুসময় যেতে না যেতেই আমার মা জননী এসে হাজির আর এসেই বলতে লাগলেন,

— কীরে বেলা তোকে নাকি রায়ায না নিয়েই চলে গেছে?তা কী এমন মহাকার্য যে ও এভাবে তোকে না নিয়ে চলে গেল? নিশ্চয়ই তুই কিছু করেছিস! বল কী এমন করেছিস যে আমার সোনা বাবাটা তোর উপর এভাবে রেগে আছে?

মায়ের কথাগুলো শুনে আমি অনেকটা ঘাবড়ে গেলাম। মা যদি আমার এসব কাজের কথা জানে আমাকে জানেই মেরে ফেলবে নিশ্চয়ই।তাই ভয়ে আমতা আমতা করতে লাগলাম।ঠিক সেই সময় দাদি এসে মাকে থামতে বললেন,আর সবাইকে বলতে লাগলেন,

— এখন এসব পড়ে হইবো,আগে এই ছেমড়িরে স্কুলে পাঠাও।স্কুলের সময় তো চইলা যাইতাসে।

দাদির কথা শুনে মা আমাকে তাড়া দিতে লাগলেন আর ড্রাইভার দিয়ে অন্য গাড়ি দিয়ে আমাকে স্কুলে পাঠিয়ে দিলেন। একদিনই স্কুল যাওয়া থেকে নিস্তার নেই।স্কুলে না গেলে বাড়ির সকলের মাথা ও পেট দুটোই ব্যথা শুরু হয়ে যায়।তাই এতো কাহিনীর পরেও স্কুলে পাঠিয়ে ছাড়লো।তবে আমার খুব ভয় হচ্ছে স্কুল থেকে ফিরে আমার না জানি কী কী সম্মুখীন করতে হয়।
বাবা আর চাচ্চুরা কিছুক্ষন আগেই অফিসে চলে গিয়েছে যার যার গাড়িতে নিয়ে ।আমাদের বাড়ির মহিলা সদস্যদের জন্য আলাদা একটা গাড়ি রয়েছে,,যেটাতে সকলে যার যার প্রয়োজনে কোথাও যাওয়ার হয়ে যায় অগ্যতা আমিও আজকে এই গাড়ি করেই স্কুলে পৌঁছালাম।

____

স্কুল থেকে বাড়ি ফিরেছি সেই কখন।কিন্তু এখনও ফুপিদের কোন দেখা নেই।আসার সময় আমরা বাড়ির বাড়ি দিয়েই ফিরে আসি প্রতিদিন। তাই রায়ায নামক ঝামেলাতে আমাকে আর পড়তে হয়নি। নয়তো আসার সময়ও নিশ্চয়ই একটা কেলেঙ্কারি বাঁধত।যাক বাঁচা গেল।মা, চাচী, বড়মা সকলে কাজে ব্যস্ত নয়তো সকলের সেই ঘটনার জন্য নিশ্চয়ই স্কুল থেকে আসার পরেই আমাকে চেপে ধরতো।ভেবেই স্বস্থির নিশ্বাস নিলাম।

হঠাৎ করে শোরগোলের শব্দ শুনে দৌড়ে নীচে গুলাম,আর গিয়েই দেখি ফুপি ফুপা আর কিয়ারা আপু এসে হাজির।কীয়ারা আপুকে দেখেই দৌড়ে গিয়ে জাপটে ধরলাম।

ফুপি আমাকে জিজ্ঞেস করলো,

— কেমন আছে আমাদের বেলা রাণী?

কথাটা শেষ হওয়ার আগেই আমি ফুপিকেও গিয়ে জড়িয়ে ধরলাম।আর বলতে লাগলাম,

— তুমি কেমন আছো ফুপি?

ফুপি আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললেন,

— ভালো আছি মা, এরপর টিনা মিনা আর টায়রা ও এসে জড়িয়ে ধরলো ফুপিকে।

এরপর কিছুক্ষন সকলের কুশল বিনিময় পালা শেষ হলে যেই না ভিতরে ঢুকতে যাবো অমনি একজন সুদর্শন পুরুষ এসে বাড়ির ভিতর ঢুকল আমরা সাথে সাথে সকলে ঐদিকেই তাকালাম।ছেলেটা এসে মা, চাচী আর বড়মার সাথে কুশল বিনিময় করলো।এতে যা বুঝলাম, এটাই হচ্ছে আদিব ভাইয়া।
বাহ! আদিব ভাইয়া দেখতে বেশ হ্যান্ডসাম।শুনেছি রায়ায ভাই আর আদিব ভাই নাকি সমবয়সী।উনাকে দেখে আমার ওনার সাথে খুব কথা বলতে ইচ্ছা করছে আর খুব জানতে ইচ্ছা করছে উনি আমাকে চেনে কিনা?কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো ওনি আমাদের দিকে ফিরেও তাকাচ্ছে না।তাই আমিও আর কথা বাড়ালাম না।

বড়মা সকলকে বাড়ির ভিতর নিয়ে গেল আর বলতে লাগলো,

— রিহা, কিয়ারা, আদিব আর ভাইয়া আপনারা গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিচে নেমে আসুন সকলে মিলে দুপুরের খাবারটা সেরে নেই। একটু পর সবাই দুপুরের খাবারের জন্য বাসায় চলে আসবে।সবাই একসাথে বসে খাওয়া যাবে।

বরমায়ের কথা শেষ হতে না হতে রায়ায ভাইয়া কোথা থেকে এসেই আদিব ভাইযতাকে জাপটে ধরলো আর বলতে লাগলো,

— কিরে ব্যাটা এতদিন পর আমাদের কথা মনে পড়লো।তোকে তো দেখাই যায় না।তা আজকে কী মনে করে চলে এলি? নিশ্চয়ই কোন মতলব আছে।

রায়ায ভাইয়ার কথা শুনে আদিব ভাইয়া হেসে দিলেন আর বলতে লাগলেন,

— এবার তোকে বিয়ে করানোর মতলবে এসেছি। বয়সতো আর কোন হলো না।এবার তোকে বিয়ে করিয়ে তারপর যাবো।

আদিব ভাইয়ার কথা শুনে রায়ায ভাইয়া বলতে লাগলেন,

— শুধু আমার বয়সটা নয় নিজের বয়সটা ও দেখ এবার ব্যাটা।তাই বিয়ে করলে দুজন একসাথেই করছি।

বলেই দুজন হাই ফাইভ করতে লাগলেন।তখনই আব্বু আর চাচ্চুরা এসে হাজির হলেন।অতঃপর সকলে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে এসে খেতে বসলেন। ভাইয়া আর আদিব ভাইয়া এসকসাথে বসেছে।আমি টায়রা আর কিযারা আপু একসাথে বসেছি।আর পাশেই টিনা মিনা।আর মা চাচী এর ফুপি সকলকে খাবার বেড়ে দিচ্ছেন।কিন্তু বড়মা ফুপিকে সকলের সাথে বসিয়ে দিলেন আর বলতে লাগলেন,

— রিহা তুমি অনেকটা পথ জার্নি করে এসেছো তুমি সকলের সাথে খেতে বসো।আমরা সকলকে খাবার বেড়ে দিচ্ছি।

বড়মার কথা শুনে ফুপি বললেন,

— আমি তোমাদের সাথে খেতে চাচ্চি ভাবী। তাই আর জোর করো না।অগ্যতা বড়মা আর কিছু বললেন না।

হঠাৎ করে টায়রা আমাকে খোঁচা মেরে বলতে লাগলেন,

— দেখ দেখ আদিব ভাইয়া কত সুন্দর! তাই না,? উনাকে দেখে আমার কেমন জানি লাগছে রে বেলা।

ওর কথা শুনে আমি ওকে বলতে লাগলাম,

— তুই বুঝি আদিব ভাইয়ার প্রেমে পড়ে গেলি?

আমার কথা শুনে টায়রা বলতে লাগলো,

— প্রেম কিনা জানি না তবে ওনাকে দেখার পর থেকে বুকের ভিতর কেমন টিপ টিপ করছে আর পেটের ভিতর কেমন গুড়গুড় করছে।

ওর কথা শুনে আমি খুব জোরেই হেসে দিলাম আর সামনে তাকিয়ে দেখলাম সবাই কেমন করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।তাই সাথে সাথে হাসি থামিয়ে মাথা নিচু করে নিয়ে খেতে লাগলাম। কিয়ারা আপু আমাকে একটা খোঁচা মেরে বলতে লাগলো,

— কিরে বেলা তোর কী কোন কান্ড জ্ঞান নেই?

আপুর কথা শুনে আমি আপুকে বলতে লাগলাম,

— আরে আপু টায়রা এমন একটা কথা বলেছিল না তুমি শুনলে তুমিও হাসবে।

আপু আমার কথা শুনে আমাকে আস্তে করে ধমক দিয়ে বলতে লাগলেন,

— মুখ বন্ধ রেখে,এখন চুপচাপ খেতে থাক।জানিস না খাবার সময় কেউ কথা বলা পছন্দ করে না।

তাই আমিও আর কথা বাড়ালাম না চুপচাপ খেতে আরম্ভ করলাম।খাওয়া দাওয়া শেষে যেই আমরা সবাই কিয়ারা আপুর রুমে যেতে নিলাম আড্ডা দেওয়ার জন্য ঠিক তখনই বড়মা আমাদের থামিয়ে দিয়ে বলতে লাগলেন,

— তোরা এখন চুপচাপ যার যার রুমে গিয়ে বসে থাক। কিয়ারা অনেকটা ক্লান্ত তাই ওকে বিশ্রাম নিতে দে।পরে তোরা গল্প গুজব করিস।

— সমস্যা নেই মামি।

— সমস্যা আছে,তুমি ক্লান্ত এখন গিয়ে বিশ্রাম নাও আর তোরা যা।

বড়মার কথা শুনে আমাদের সকলের মন খারাপ হয়ে গেল।তাই মন খারাপ করে যে যার রুমে চলে এলাম আর কিয়ারা আপু নিজের রুমে চলে গেল। বাড়িটা অনেক বড় হওয়ায় সবার জন্য একটা করে রুম বরাদ্দ আছে।
রুমে এসে ভাবতে লাগলাম কী করে রায়ায ভাইয়ার মন জয় করে নিজের জন্য ওনার মনে জায়গা করে নিব।তাই পা টিপে টিপে ওনার রুমের দিকে পা বাড়ালাম।সবাই এখনভাত ঘুম দিবে। তাই আমি খুব সাবধানতার সাথে ভাইয়ার রুমের বাইরে এসে দাঁড়ালাম।দরজা হালকা করে ভিড়ানো।যেই আমি রুমের ভিতর উঁকি দিতে যাবো ওমনি কেউ একজন রুম থেকে বের হয়ে আসলো আর আমি তার শরীরের সাথে ধাক্কা খেয়ে পড়ে যেতে নিলে অমনি ওনি আমার কোমর জড়িয়ে ধরে আমাকে বাঁচিয়ে নিলেন।চোখ বড় বড় করে উনার দিকে তাকিয়ে আছি আমি।আর আমার এমন ফেস দেখে আদিব ভাইয়া হেসে দিলেন আর বলতে লাগলেন,

— তুমি বেলা, এম আই রাইট?কিন্তু তুমি এখানে কি করছো?-উনি কিছুটা ভ্রু কুঁচকে কথাটা বলে উঠলেন।

যেই আমি কিছু বলতে যাবো অমনি রায়ায ভাইয়ার কণ্ঠস্বর শুনতে পেলাম।উনি খুব রাগান্বিত কণ্ঠে বলতে লাগলেন,

— কী হচ্ছে কী এখানে?

কথাটা বলার সাথে সাথে আদিব ভাইয়া আমাকে সোজা করে দাঁড় করিয়ে দিলেন আর আমি কাচুমাচু করতে লাগলাম।রায়ায ভাই আবার আমার দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলেন,

– আর তুই এখানে কী করছিস? তোকে না কালকেই আমি বলেছিলাম যে একদম আমার রুমের আশেপাশে ঘেঁষবি না – কথাটা উনি অনেক রেগেই বললেন।

উনার এমন রাগ দেখে আমি সাথে সাথে দিলাম এক দৌড় আর এক দৌড়ে নিজের রুমে এসে হাঁপাতে লাগলাম।

একা একা কিছুই ভালো লাগছে না তাই টায়রার রুমে গেলাম।আর গিয়ে বসতে না বসতেই ও বলতে লাগলো,

— কিরে বেলা তুই তখন কী কেলেঙ্কারিটাই না লাগিয়ে দিতি।

আমি ওর কথা শুনে অনেকটা অবাক হয়ে বলতে লাগলাম,

— আমি আবার কখন কী করলাম?

আমার কথা শুনে ও একটা মুখ ভেংচি কেটে বলতে লাগলো,

— আদিব ভাইয়াকে দেখে আমার কেমন কেমন লাগছিল তা তুই একটুর জন্য তো কিয়ারা আপুকে বলেই দিচ্ছিলি।

টায়ার কথা শুনে আমি জিভ কাটলাম।আর বলতে লাগলাম,

— বেশি উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলাম রে, তাই মুখ ফসকে বেরিয়ে গেছিল।কিন্তু তুই তো আর আদিব ভাইয়ার প্রেমে পড়ে যাসনি তাহলে বললেই বা কি হতো?

আমার কথা শুনে টায়রা একটু লজ্জা লজ্জা ভাব নিয়ে মাথা নিচু করে বলতে লাগলো,

— তারপরও আপু যদি অন্যকিছু ভাবতো? আর ওনাকে দেখলে সত্যি আমার মন কেমন কেমন করে রে বেলা।

চলবে ইনশাল্লাহ।