#প্রেয়সী 🖤🥀
#moumita_mehra
#পর্বঃ৩৮
৭৪.
রাহিয়ানদের বেশ বড় বিজনেস। খালুর নিজ হাতে তিলতিল করে গড়ে তোলা এই সম্পদ। বড় খালুর ইচ্ছে রাহিয়ানের পড়াশোনা শেষ হলে সেখানেই জয়েন করবে। হিমাদ্র ভাই আর খালুই পুরো বিজনেসটা দেখাশোনা করে। রাহিয়ানের পড়াশোনার শেষ ধাপটাও অতিবাহিত হলো গত রোববার। আজ বুধবার! খালুর আজ অফিস থাকলেও রাহিয়ানের অফিস জয়েন করার ব্যাপারে গোল মিটিং করছেন ড্রয়িং রুমে। বেশ কিছুদিন যাবৎ ব্যবসা সংক্রান্ত কিছু ঝামেলায় পড়েছে খালু আর হিমাদ্র ভাই। তাদের টক্কর দিতেই হাত ধুয়ে তাদের পেছনে পড়েছে কিছু বিদেশি বিজনেসম্যানরা। খালু বেশ চিন্তিত! কারন যারা তাদের সাথে টক্কর দিতে নেমেছে তাদের আসল মালিক হলো এক পুঁচকে ছেলে। রাহিয়ানের সমবয়সী। যদিও সে এখনও অব্দি সামনে আসেনি যা করার পেছনে থেকেই করছে। খবর নিয়ে যতদূর জানা গেলো সে নিজেকে হাইড রাখতেই বেশি পছন্দ করে। খালু আর হিমাদ্র ভাইয়ের থেকে সবটা ডিটেইলসে জেনে বাঁকা হাসি হাসলেন রাহিয়ান। তার অদ্ভুতরকমের হাসিটা কারোর চোখে না পড়লেও আমার চোখ এড়ালো না। মনের মধ্যে অজানা ভয় কাজ করল! উনার এমন হাসির মানে কি?
ভার্সিটির গেটে নামিয়ে দিয়ে নিজেও ছুটলেন অফিসে। খালুর আদেশ ঠিক ১১ টার মধ্যে মিটিং রুমে রাহিয়ানকে প্রেজেন্ট থাকতে হবে। যদিও হাতে সময় আছে কিন্তু ঢাকা শহরে ভোরের আবহাওয়া দেখে সারাদিনের আবহাওয়া বিবেচনা করা কষ্টসাধ্য! মূলত জ্যামে আটকালে ঘন্টা দুই এমনেই গায়েব হয়ে যায়। উনার কঠোর আদেশে বাড়ির বাইরে শাড়ি পড়ে বের হইনা! যদিও আদেশ টা নিজের রুম পর্যন্তই বরাদ্দ ছিলো। কিন্তু খালামনির আদেশ উনার আদেশকে ডিঙিয়ে গেলো। সুতরাং, নিজের বাড়িতে শাড়ি পড়ে ঘোরা যাবে। সেটা খালমনির কঠোর আদেশ হয়ে উঠলো রাহিয়ানের বিরুদ্ধে। বাড়ির বউ শাড়ি না পড়লে ভালো লাগে নাকি? যখন বাইরে বের হবে তখন দেখা যাবে। কিন্তু নিজের বাড়িতে যদি যেমন খুশি তেমন ড্রেস পড়া না যায় তাহলে শান্তি থাকে? খালামনির মতে শান্তি থাকেনা। আমার মতেও শান্তি থাকেনা। কিন্তু সাহস দেখিয়ে উনার বিরুদ্ধে কিছু বলতে পারিনা। স্বামীর আদেশ শিরোধার্য।
এক এক করে রাহিয়ানের সব ফ্রেন্ডরাই বেরিয়ে গেলেন ভার্সিটি থেকে। এখন উনাদের পরিবর্তে ভার্সিটির সিনিয়র হলেন তাদের জুনিয়র ব্যাচ। বড়ভাইদের রেকর্ড ধরে রাখতে তারাও এখন ফার্স্ট ইয়ারের এডমিশন নেওয়া স্টুডেন্টদের সাথে রেগিং করে!
আরফান ভাই ভালো একটা জব হায়ার করেছেন। আরফান ভাইয়ের পরিবার বলতে উনি একাই। বাবা-মা নেই! রাইকে নিয়ে সে নিজেদের ছোট্ট রাজপ্রাসাদটাতে একাই থাকে। যদিও আরফান ভাইয়ের পড়াশোনার খরচ নিজের জোগাড় করতে হতো না। তার বড় ভাই আবরাহাম দিতেন। তিনি এদেশে থাকেননা। ফ্যামিলি নিয়ে বিদেশে থাকেন। বিয়ের পর বউয়ের খরচ ভাইয়ের থেকে নিবেনা বলেই নিজের যোগ্যতায় ভালো জব অ্যারেঞ্জ করেছেন।
রাহিয়ানদের মাস্টার্সের ফাইনাল হতে হতে আমাদেরও ফার্স্ট ইয়ারের ফাইনাল কমপ্লিট হয়ে গেলো। আজ আমাদের সেকেন্ড ইয়ারের প্রথম ক্লাস। রাই আর আমি একসাথেই ক্লাসে ঢুকলাম। আরফান ভাই কিছুক্ষণ হলো ওকে দিয়ে সেও ছুটলো জবে। আমরা দুই সখি মনের আনন্দে নাচতে নাচতে ক্লাসে এসে বসলাম। সেকেন্ড ইয়ারের ক্লাসে যদিও বিশেষ পরিবর্তন নেই তবুও বাচ্চাদের মতো ঐ যে আনন্দ। আগে ছিলাম ক্লাস ওয়ানে আর এখন প্রমোশন হলো ক্লাস টু-য়ে। এর আনন্দই আলাদা।
—-” মিসেস রাহিয়ান রাফিদ যে। দু’হাত ভর্তি অভিনন্দন। কেমন আছেন?”
পাশাপাশি আমি আর রাই বেশ মজা করছিলাম নিজেদের মাঝে। আচমকা টিচারের আগমনে দু’জনেই ভড়কে গেলাম। কোনো রকম শব্দ বিহীন তার আগমন! আমরা দু’জনেই সটান হয়ে দাঁড়িয়ে পড়লাম। স্যারের কন্ঠে স্বাভাবিকতার বিপরীতে যেন তাচ্ছিল্যের টান বেশি এলো। আমি ঠোঁটের কোনে হাসির রেখা টানলাম। নিতান্তই জোরপূর্বক। স্যার আমাকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে লাগলেন। পূনরায় একই কন্ঠে বলে উঠলেন,
—-” বিয়ে হতে না হতে ভালোই সুন্দরী হয়ে গিয়েছো দেখছি।”
স্যার চোখা দৃষ্টিতে তাকালো। আমার মুখটা মলিন হয়ে গেলো। রাই পাশ থেকে ক্ষুব্ধস্বরে বলল,
—-” আপনি এসব কি বলছেন?”
রাইয়ের আওয়াজে স্যার ঘোর কাটাতে পারলেননা! আমার থেকে চোখ তুলতে উনার বেশ বেগ পেতে হলো। রাইয়ের দিকে তাকিয়ে বিকৃত হেসে বললেন,
—-” হ্যাঁ? কিছু বলছো?”
রাই ফুঁসে উঠলো মুহুর্তেই! ওর মেজাজ ঘেটে ঘ হয়ে গিয়েছে সেটা বুঝতেই মুখ খুললাম আমি। ভদ্রতা দেখিয়ে বেশ জোরালো কন্ঠে বললাম ,
—-” আসসলামু আলাইকুম স্যার। আমি ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন? বাড়িতে ম্যাম কেমন আছেন?”
আমার উচ্চস্বরে স্যার চমকে উঠলেন। উনার ঘোরও কাটলো বুঝি। আমার দিকে তাকিয়ে আমতাআমতা করে বললেন,
—-” ওয়ালাইকুম আসসালাম! ভ,,ভালো আছে তোমাদের ম্যাম। তোমরা কথা বলছিলে কেন দু’জনে? খেয়াল করো না টিচার কখন ক্লাসে ঢুকে? আর কথা বলবেনা না, বসো বসো।”
স্যারের পারমিশন পেয়েও একই ভাবে দাঁড়িয়ে রইলাম আমরা দু’জনেই! রাই বাঁকা হেসে জোরেশোরে বলে উঠলো,
—-” স্যার আমাদের দু’জনের কিন্তু একসাথেই বিয়ে হয়েছে। বিয়ের পর কিন্তু নিধি একাই সুন্দরী হয়নি আমিও কিন্তু হয়েছি। কমপ্লিমেন্ট দিলে আমাদের দু’জনকেই দিন, একজনকে কেন দিচ্ছেন?”
রাইয়ের কথায় পুরো ক্লাস ঘুরে তাকালো স্যারের দিকে৷ স্যার পড়ল বিপাকে। বোকার মতো দাঁত কেলানো হাসি হেসেও কারোর তীক্ষ্ণ চাহনি থেকে নিজেকে বাঁচাতে পারছেনা! স্টুডেন্টদের মাঝে চাপা গুঞ্জন শুরু হয়েছে। রাই মুচকি হেসে আমার কাঁধে হাত রাখল। স্যার কাশতে লাগলেন অপরাধ বোধের হাত থেকে বের হতে। বারবার গলা খাঁকারি দিতে দিতে এগিয়ে গেলেন বোর্ডের সামনে। বইটা হাতে নিয়ে শঙ্কিত মনে পড়াতে শুরু করলেন! আমরাও আর কিছু বললাম না। চুপচাপ পড়ায় মনোযোগী হলাম।
ব্রেক টাইমে আরফান ভাই এলেন রাইকে নিয়ে যেতে। তাদের আজ কোথাও একটা যাওয়ার প্ল্যানিং ছিলো হয়তো। রাই আমার থেকে কোনো মতে বিদায় নিয়েই চলে গেলো আরফান ভাইয়ের সাথে। ওদের ছোট্ট সংসারটার আমি নাম দিয়েছি টোনাটুনির সংসার। দু’জনকে পাশাপাশি বেশ বানায়। খুব সম্ভবত তারা দু’জন দু’জনকে কাছে টেনে নিয়েছে। রাখেনি আর কোনো পিছুটান। আমি এটুকুনি শুনেই বেশ খুশি হয়েছি। রাই ভালো থাকলে আমিও ভালো থাকতে পারব। রাই বলছিলো, ওর মা মাঝেমধ্যে ফোন করে। ওর ভালোমন্দের খবর নেয়। কি রান্নাবান্না হয়,কি খায় না খায় সব কিছুই সে জানতে চায়। বুঝলাম আন্টিও মেয়ের শূন্যতা অনুভব করে কষ্ট পাচ্ছে। রাইয়ের ভাই প্রায়ই বোনের খোঁজ নিতে একদম বাড়িতে এসে হাজির হয়। আর আসলেই গাড়ি ভর্তি করে ফল-পাকুড় নিয়ে আসে। সবটা জেনে আমি নিজেও খুব আনন্দিত।
৭৫.
ক্যান্টিনে বসে রাহিয়ানের অপেক্ষা করছি। কল করে বললেন, আড়াইটা নাগাদ উনি আসবেন ভার্সিটিতে। ভেবে খুশি হয়েছিলাম উনি হয়তো আমাকে নিতে আসছেন। কিন্তু উনি নাকি কোনো এক কাজেই আসছেন এখানে। আর তারপর একসাথে বাসায় ফিরবেন। তাই অপেক্ষা করছি। দু’দিন ধরে বেশ গা গোলাচ্ছে আমার। খাবার দেখলেই উল্টি প্রসেস অন হয়ে যেতে চায়। সমস্যাটা অবশ্য এর আগে কখনও হয়নি! তবুও বাসায় কাউকে কিছু জানাইনি। জানি কোনো বড় সমস্যা নয়! গ্যাস জনিত সমস্যা হচ্ছে হয়তো। কয়েকদিনের মাঝেই ঠিক হয়ে যাবে। জানায়নি বললে হয়তো ভুল হবে, জানাতে গিয়েও বারবার ফিরে এসেছি উনার ভয়ে। উনি এই সমস্যার কথা জানতে পারলেই কপট রাগ দেখিয়ে বকতে আরম্ভ করবেন। আর দোষ হবে আমার খাবারের! উনার বক্তব্য, আমি নাকি ঘরের খাবারের চেয়ে বাইরের খাবারের প্রতি বেশি আকৃষ্ট হই। এটা সত্যি নয়, আমার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অপবাদ। বিয়ের আট মাসের মাথায় ফার্স্ট ইয়ারের ফাইনাল টার্ম শেষ করে যেখানে আজই প্রথম ক্লাস করতে এলাম সেখানে বাইরের খাবার কিভাবে খাওয়া হলো?
—-” ক্যান আই সিট প্লিজ?”
প্রত্যাশা ছিলো রাহিয়ান! পরিবর্তে মুখে অদ্ভুত রকমের হাসি এঁটে সামনে এসে দাঁড়ালেন কেশব। কম করে হলেও উনাকে এই আটমাস বাদে দেখা। আমাদের বিয়ের আগে উনাকে নিয়ে অনেক কাহিনী হলেও বিয়ের পর উনাকে আর দেখা যায়নি কোথাও। রিম্মি আপু জানিয়েছিলো উনি নাকি আবারও বিদেশে ফিরে গিয়েছেন! কবে এলো কে জানে?
আমি নড়েচড়ে বসলাম। উনি অনুমতির অপেক্ষা করলেন না। আমার সামনের চেয়ারটা টেনে বসে পড়লেন। মুখে পূর্বের ন্যায়ই হাসি জুড়ে বললেন,
—-” কেমন আছেন নিধি?”
—-” ভ,,ভালো। আপনি কবে ফিরলেন দেশে?”
কেশব নিঃশব্দে হেসে উঠলেন। চেয়ারে পিঠ ঠেকিয়ে ডান হাত টা তুলে ভ্রু চুলকে বললেন,
—-” দেশে থেকেই কি দেশে ফেরা যায়?”
আমি ভাবুক কন্ঠে বললাম,
—-” মানে?”
—-” আমি তো দেশেই ছিলাম। কোথাও যায়নি তো!”
—-” তবে যে রিম্মি আপু বলেছিল…”
—-” কারন ওরা জানে আমি দেশের বাহিরে আবারও ব্যাক করেছি তাই।”
—-” মানে?”
—-” মানে এটাই যে আমি কোথাও যায়নি! আমি দেশেই ছিলাম তবে ফ্যামিলির থেকে আলাদা। এই যে আমি আপনার সামনে আছি এটাও কেউ জানেনা আপনি ব্যাতীত। ইভেন আপনার হাজবেন্ডও নয়। আশাকরি জানবেও না। কি বলুন?”(ভ্রু নাচিয়ে)
আমার ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠল। উনি কেমন অদ্ভুত ভঙ্গিতে কথা বলছেন! উনি এতদিন দেশেই ছিলেন কিন্তু কাউকে না জানিয়ে! কিন্তু কেন? আর এতোদিন পর হঠাৎ করে আমার সামনেই বা এলেন কেন? কি উদ্দেশ্য উনার?
—-” আপনি হঠাৎ এতোগুলো দিন বাদে আমার সামনে কেন এলেন? কি দরকার?”
আমার কথায় উনি ঠোঁট বাঁকিয়ে হাসলেন। এতক্ষণ চেয়ারে পিঠ লাগিয়ে ঠেস দিয়ে বসলেও এবার সোজা হয়ে বসলেন। ঘাড়টা দু’বার এপাশ ওপাশ কাত করে আমার চোখের দিকে তাকালেন। উনার চোখের মাঝে লালচে দাগ। হিংস্রতা ভরপুর। আমি চোখ নামিয়ে নিলাম উনার থেকে। উনি চেয়ার টেনে আরেকটু এগিয়ে এলেন আমার দিকে। আমি পিছিয়ে যেতে নিলেই উনি বলে উঠলেন,
—-” সিক্রেট কথা। এটা শুধু আমার আর রাহিয়ানের মধ্যেই হয়েছে। আর কেউ জানেনা। ভাবলাম আপনাকেও জানাই কারন আপনি আর রাহিয়ান তো একই হলেন তাই না?”
আমি চমকে উঠলাম উনার ফিসফাস আওয়াজে। ঢোক গিলে বিরস মুখে বললাম,
—-” রাহিয়ান আর আপনার মধ্যে সিক্রেট কথা!”
—-” হু। কেন? আপনি জানেন না? রাহিয়ান আপনাকে কিছু জানায়নি?”
আমি অবাক হওয়ার চেষ্টা করে বললাম,
—-” কি জানাবেন?”
—-” এই যে ওর আর আমার মাঝে আপনাকে নিয়ে ডিল হয়েছে?”
আমি হোঁচট খেলাম উনার কথায়। মনের মধ্যে তোলপাড় শুরু হতেই আমি কঠিনস্বরে বললাম,
—-” আপনি কি বলতে চাচ্ছেন স্পষ্ট করে বলুন?”
উনি বাঁকা হাসলেন। গলার স্বর পরিস্কার করে বললেন,
—-” রাহিয়ানের ধারনা আমি আপনার বাবাকে মার্ডার করেছি! তাই সে ঠিক এক বছর সময় নিয়েছে এটা প্রুফ করতে। আর এই এক বছরের মাথায় আমি দেশ ছেড়ে কোথাও যেতে পারব না! সো, আমার এই ক্ষতিপূরণ চুকাতে আমিও ওর সামনে একটা ডিল রেখেছি, ও যদি সত্যি প্রুফ করতে পারে আমি আপনার বাবাকে মার্ডার করেছি তবে আমি নিজে সারেন্ডার করবো পুলিশের কাছে। আর যদি ও প্রুফ করতে না পারে তাহলে ও আপনাকে ছেড়ে দিবে। আমার জন্য।”
আমি নির্বিকার চোখে তাকালাম। বুকের ভেতরটা আজ বহুদিন পর যেন আবারও বাবার শূন্যতায় খা খা করে উঠলো। লোকটা এসব কি শোনালো? তবে কি আমার বাবার মৃত্যুটা স্বাভাবিক ছিলো না? নাকি স্বাভাবিক ছিলো! রাহিয়ান কি করে উনার এই ডিলটা মেনে নিতে পারলো? উনার কি একবারও মনে হলো না আমার কথা? আমার মাথার মধ্যে চিনচিন করে ব্যাথা আরম্ভ হলো। নিজেকে কেমন ভার শূন্য লাগছে। কেশবের থেকে আর একটা কথাও শোনার জন্য রুচিতে টানলো না। উনারা দু’জনেই সমান! লোকটা আমার বাবার খুনি! আমি কম্পিত শরীর নিয়ে উঠে দাঁড়ালাম। চারপাশে প্রকৃতির যথেষ্ট আলো থাকলেও আমার চোখ দুটোতে ভর করেছে অন্ধকার। যেদিকে তাকাচ্ছি সেদিকেই কেবল অন্ধকার! সামনের দিকে বোধকরি দুই পা এগিয়েছিলাম। আর হাঁটা সম্ভব হলো না। ওখানেই শরীরের ভার ছেড়ে লুটিয়ে পড়লাম। মনে হচ্ছিলো এই বুঝি জীবনের শেষ দিন। চোখ খুলে আরও একবার দুনিয়া দেখার শখ জেগে উঠেলো না। কিন্তু কথায় আছেনা, মানুষ যা চায় তা পায়না। আর যা চায়না তা-ই পায়!
#চলবে____________________