বিয়ে পর্ব-১৮

0
800

#বিয়ে
#লেখনীতে -ইসরাত জাহান ফারিয়া
#পর্ব-১৮

ধ্রুব মিটিং শেষ করে বাড়ি ফিরলো রাত দশটায়।
ক্লান্ত ভঙ্গিতে বাবা-ছেলে যখন লিভিংরুমে পা রাখলো তখন রুখসাত জাহানের পরিবারকে দেখতে পেয়ে হতবিহ্বল হয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো। আশফাক সাহেব ঘোর থেকে বেরিয়ে সহাস্যে এগিয়ে গেলেন বন্ধু নাজমুল সাহেবের দিকে। আর ধ্রুব হাত মুঠো করে দেখছিলো রাদিফের সাথে হেসে হেসে গল্প কর‍তে থাকা অদ্রিকে। কই, ওর সাথে তো অদ্রি এভাবে কখনো কথা বলে নি, এভাবে সুন্দর করে হাসেনি! ও ঠাঁই দাঁড়িয়ে দেখছিল ওকে, অদ্রিও দেখলো ক্লান্ত ধ্রুব’কে। পরক্ষণেই মুখ ফিরিয়ে নিলো। জরিনা কিছু একটা বলছিলো সেটা শুনতে মন দিলো। এদিকে অদ্রি ধ্রুবকে দেখেও অন্যের কথায় মনোযোগ দেওয়ায় ওর মন পুড়ছিলো তীব্রভাবে। কিভাবে বলবে সে অদ্রিকে যে ওর এ ধরনের আচরণ ধ্রুব’র বুকের ভেতর তোলপাড় তৈরি করে দেয়?

চমকিত এবং ক্লান্ত ধ্রুবকে দেখে ফ্লোরা একপ্রকার প্রায় দৌড়েই এলো। ধ্রুবকে জড়িয়ে ধরতে গেলেই ও একপ্রকার সরে দাঁড়ায়। আলতো হেসে বলে,
— উহু! এখন আমি মেয়েদের সাথে হাগ করি না।
ফ্লোরা হেসে ফেলে। নিজেকে সামলে নেয়। কন্ঠে খুশি উপচে পড়ছে তার,
— ব্যাপার কি? দেশের কালচারে অভ্যস্ত হয়ে গেলে নাকি?
— তা তো অবশ্যই!
— তো? অবশেষে বাংলাদেশেই সেটেল্ড হলে?
ধ্রুব হেসে বলল,
— মায়ের জেদ। মানতেই হলো। তবে এখনো পুরোপুরি সেটেল্ড হতে পারি নি…
কথাটা সে অদ্রির দিকে তাকিয়ে বললো। কিন্তু অদ্রি তা খেয়াল করলো না। ও চুপচাপ শায়লার পাশে বসে আশফাক সাহেব আর নাজমুল সাহেবের মেলবন্ধনের দৃশ্য অবলোকন করছে। ধ্রুব হতাশ নিঃশ্বাস ফেললো।
এদিকে ধ্রুব’র কথা শুনে ফ্লোরা প্রশ্ন করলো,
— কেন?
ধ্রুব বলল,
— আছে বহু কারণ!
ফ্লোরা চোখ ছোট ছোট করে বলল,
— সিক্রেট নাকি? বলা যাবে না একদমই?
ধ্রুব হেসে বলল,
— যাবে না।
ফ্লোরা ঠোঁট উল্টালো। বলল,
— যাক বাবা, আমি আবার কারোর সিক্রেট শুনতে
চাইনা।
ফ্লোরা আরো কিছু বলতে যাবে তার মাঝে ধ্রুবকে দেখে রাদিফ আসর ছেড়ে ওঠে এলো। লম্বা পা ফেলে এগিয়ে এসে বুকে জড়িয়ে নিলো ধ্রুবকে। ছোটবেলা থেকেই দু’জন বেশ ভালো বন্ধু। স্কুল-কলেজ, ভার্সিটিতে একসাথে পড়েছে। ধ্রুব হাসার চেষ্টা করে বলল,
— ফোন করে জানালি ও না? সত্যিই আমি সারপ্রাইজড!
রাদিফ হেসে বলল,
— সব মায়ের কারসাজি। আমরাও আর বাধা দিইনি।
পুরো ব্যাপারটা এনজয় করেছি!
দু-বন্ধুর মধ্যে কথা হচ্ছে দেখে ফ্লোরা আর বাগড়া দিলো না। গিয়ে বাকিদের মাঝে বসলো। এদিকে ধ্রুব রাদিফকে প্রশ্ন করলো,
— তো? সব কেমন চলছে?
— আগের মতোই। বাট ওখানে তোকে অনেক মিস করছি আমরা…
ধ্রুব ওর পিঠে হাত চাপড়ে মনমরা হয়ে বলল,
— আমিও!
এভাবেই ধ্রুব আর রাদিফের মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ টুকটাক আলাপচারিতা চললো। রুখসাত জাহান আর নাজমুল সাহেবের সাথেও কুশলাদি বিনিময় হলো।
তবে এর মধ্যে দারুণ এক কান্ড ঘটে গেলো। শায়লা যেখানে পরে রুখসাত পরিবারকে ধ্রুব’র বিয়ের খবর দিয়ে চমক দিতে চেয়েছিলো, সেখানে আশফাক সাহেব
নিজেই শায়লাকে চমকে দিলেন। হঠাৎ অদ্রিকে দেখিয়ে সবার উদ্দেশ্যে জিজ্ঞেস করলেন,
— তোহ? আমার পুত্রবধূকে কেমন লাগলো তোমাদের? ভেবেছিলাম কিছুদিনের মধ্যে তো দেশে আসবেই
তখন জানাবো! চমকে দিলাম তো?
ঘরভর্তি সকলের হাসিমুখ মুহূর্তের মধ্যেই থমকে গেলো৷ মুখের কথা মুখেই রয়ে গেলো। বিস্ময়ের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেলো নাজমুল সাহেবের পরিবারের প্রতিটি সদস্য। আশফাক সাহেব সবাইকে এমন হতভম্ব হতে দেখে নিজেই অবাক হয়ে গেলেন। এদিক-ওদিক ঘাড় ঘুরাতেই শায়লাকে দেখলেন তার দিকে হতাশ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে। তিনি কিছুই বুঝে ওঠতে পারলেন না। শায়লা এসে নিচু গলায় বললেন,
— তোমাকে এখনি বলতে হলো? আমি তো ভেবেছিলাম কাল দেব। যত্তসব…
আশফাক সাহেব বিস্ময় প্রকাশ করলেন,
— তার মানে তুমি ওদের এখনো পর্যন্ত জানাওনি?
— না।
— পারোও বটে! আগে বলে রাখবে না আমাকে।
— মাথায় ছিলো না…
ফ্লোরা এতক্ষণে বলে ওঠলো,
— আই কান্ট বিলিভ দিস নিউজ! ব্রো তো বিয়েই করতে চায়নি, সে কীভাবে…..
শায়লা ফ্লোরার দিকে তাকিয়ে হাসিমুখে বলল,
— তোর ব্রো-র কাছ থেকেই জেনে নিস।
রুখসাত জাহান ভীষণ অবাক হয়ে বলল,
— তুই পারলি এটা কর‍তে? ছেলের বউ আনলি আর একবারও জানানোর প্রয়োজন মনে করলি না?
শায়লা উত্তরে বললেন,
— বিয়েটা তড়িঘড়ি করে দিয়েছিলাম তখন৷ আত্মীয়রাও অনেকেই জানতো না। তবে তোদেরকে খবর দিতে চেয়েছিলাম, পরে ভাবলাম দেশে তো খুব শ্রীঘ্রই আসবি, এসে না হয় একটা চমক পেলি! রাগ করিস না।
শায়লার কথা শুনে নাজমুল সাহেব এবার সহাস্যে বলে ওঠলেন,
— ভাবি আপনি কিন্তু কাজটা একদম ঠিক করেন নি। নতুন বউ সেই কখন থেকে আমাদের পাশে বসে আছে, আর আমরা কি-না বুঝতেই পারিনি!
রুখসাত জাহান তবুও মেকি রাগ দেখিয়ে বললেন,
— আমার ছেলের বিয়েতেও তোকে এভাবে চমকে দেব।
রাদিফ মায়ের কথা শুনে বলে ওঠলো,
— আহ মম! এসব পরে দেখা যাবে। আগে কংগ্রাচুলেশনস তো করো নতুন কাপলকে…
বলে পাশে দাঁড়ানো ধ্রুব’র দিকে ফিরলো। সেও বেশ অবাক হয়ে এতক্ষণ ঘটে যাওয়া কান্ড দেখছিলো। ধ্রুবও চিন্তা করছিলো তার মায়ের এই আজগুবি চমক দেওয়ার আইডিয়াটাও কি জরিনা দিয়েছে? তবে মনে মনে নতুন এক অনুভূতি হচ্ছে। বিয়ের পর সব ছেলেদের মনেই কি অমন বসন্তের বাতাস লাগে? হোক সেটা নিজের ইচ্ছেতে বা ইচ্ছের বিরুদ্ধের বিয়েতে!
ভাবনায় মত্ত ধ্রুবকে দেখে রাদিফ ভ্রু কুঁচকে তাকালো। পিঠে চাপড় মেরে অট্টহাস্যের সহিত বলে ওঠলো,
— মিস্টার ইফতেখার হাসান ধ্রুব, অবশেষে আপনিও?
— সবই মায়ের জেদ।
রাদিফ নিজের ভ্রু কুঁচকালো,
— মায়ের জেদ? সত্যিই?
রাদিফের কথা শুনে ধ্রুব হেসে ফেললো। লালচে আভা
ফুটে ওঠলো কানে। বন্ধুমহলে সর্বদাই সে বিয়ের বিরুদ্ধে কথা বলতো। আর আজ বন্ধুদের মধ্যে সে-ই সবার আগে বিয়ে করেছে। ধ্রুব আড়চোখে অদ্রিকে দেখলো। মেয়েটাকে ঘিরে রেখেছে রুখসাত জাহান, ফ্লোরা। ধ্রুব’র বউ হিসেবে পরিচয় পাবার পর নতুন করে অদ্রিকে নিয়ে আলোচনায় মেতেছে তারা। ধ্রুব মনে মনে বলল,
— পুরো পৃথিবী জেনে যাক তুমি আমার, অদ্রি!

ডিনারে সবাই একসাথে বসলো। ফ্লোরা ধ্রুব’র পাশে অদ্রিকে বসিয়ে দিলো। অদ্রি বেশ সময় নিয়ে খাবার খায়, দ্রুত খাওয়ার অভ্যেস নেই ওর। সেজন্য ধীরগতিতে খেতে লাগলো। ওর পাশে বসে ধ্রুব বারবার আড়চোখে শুধু ওকেই দেখতে থাকে, খাবারে অমনোযোগী হয়ে পড়ে। কিন্তু অদ্রির কোনো হেলদোলই নেই। তাছাড়া ধ্রুব ভেবেছিলো আজ অন্তত এত মানুষের সামনে অদ্রি হয়তো খানিকটা লজ্জা পাবে, ওর দিকে আড়চোখে তাকাবে। কিন্তু অদ্রি বেশ স্বাভাবিক। বিগত দিনগুলোর মতোই ওর ব্যবহার। ধ্রুব শুধু নিজ মনের হতাশায় ভুগে খাবারে মনোযোগ দিলো।

বাড়িতে নতুন মেহমান। সেজন্য আজ অদ্রিকে ধ্রুব’র ঘরেই থাকতে হবে। সেটা ও নিজেই বুঝে নিলো। তাছাড়া মেহমানভরা বাড়িতে সবার জন্য আলাদা রুম দেওয়াও তো সম্ভব নয়। এতে বেশ ঝামেলায় পড়া লাগবে শায়লাদের। পুরো দিনটা বেশ ধকল গেছে সবার ওপর দিয়ে। যদিও হৈ-হুল্লোড় পরিবেশ অদ্রির ভালো লাগে না। সামাজিকতা পালন করতে ওর ইচ্ছে হয় না। কিন্তু শায়লার প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বরুপ ও এ কাজগুলো করে। নিজের মেয়ের মতো এত যত্ন যে দিতে পারে, তার জন্য এটুকু সেক্রিফাইস করা কোনো ব্যাপারই নয়। এসব ভেবেই ধ্রুব’র ঘরের দরজায় নক করে। কেমন অস্বস্তি লাগে ওর। ভেতর থেকে ধ্রুব’র কন্ঠ শোনা গেলো,
— কাম ইন।
অদ্রি দরজা ঠেলে ঘরে ঢুকে। ধ্রুব ওকে দেখে একটু অবাক হয়। অদ্রি ব্যাপারটা বুঝতে পেরে বলে,
— থাকতে এসেছি।
ধ্রুব গম্ভীরমুখে বলল,
— দরজায় নক না করে ঢুকে পড়লেই হতো! এত ফর্মালিটি না করলেও চলবে। আমি তো সবসময়
আর ঘরে চেঞ্জ করি না।
অদ্রি রেগে চোখ রাঙালো। লোকটা আসলেই অসহ্যকর। ও কথার পিঠে জবাব না দিয়ে মেঝেতে বিছানা করার প্রস্তুতি নিতেই ধ্রুব জোরে বলে ওঠলো,
— আজ তো বেশ ঠান্ডা।
অদ্রি ভ্রু কুঁচকায়,
— তো?
— না মানে, তুমি বিছানায় শুয়ে পরো।
অদ্রি তীক্ষ্ণ স্বরে বলল,
— আপনি কি চান আমি এ ঘর থেকে বেরিয়ে যাই?
ধ্রুব আচমকা কান ধরে ফেলে। নমনীয় স্বরে বলল,
— কিচ্ছু দেখবো না অদ্রি, আই প্রমিজ।
অদ্রি তবুও সন্দেহ নিয়ে তাকিয়ে থাকে ওর দিকে।
সেটা দেখে ধ্রুব বলে,
— প্রমিজ। মেঝেতে থাকলে ভালো দেখায় না তোমাকে।
সেজন্যই বলছি। অন্য কোনো ইন্টেনশন নেই আমার। বিশ্বাস করতে পারো।
অদ্রি ভ্রু উঁচিয়ে জিজ্ঞেস করে,
— সত্যি?
ধ্রুব নির্লিপ্ত কন্ঠে বলে,
— হুঁ।
অদ্রি শুকনো গলায় বলে,
— আসলে আমি এতো ভালোভাবে ঘুমাতে পারি না। ঘুমের মধ্যে বেশ নড়াচড়া করি। এতে আপনার বেশ সমস্যা হবে। তাছাড়া নিজের জন্যই বলছি, আমি নিচে শুতে পারবো।
ধ্রুব এবার বেশ চটে যায়। একপ্রকার টেনেই অদ্রির হাত থেকে বিছানা আর কম্বল নিয়ে নেয়। সেগুলো মেঝেতে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। আর বলে ওঠে,
— সবটা স্পেস তোমাকে দিলাম। আর কোনো
বাহানা শুনতে চাই না।
অদ্রি ওর কান্ড দেখে বলল,
— একি! আপনি নিচে শুবেন নাকি? না না আমি ঠিক….
ধ্রুব শক্ত গলায় বলল,
— একবার বলে দিয়েছি। এটা নিয়ে তোমার সাথে তর্কে যেতে চাই না।

অদ্রি আর কথা বাড়ায় না। থাকুক যদি থাকতে পারে মেঝেতে, ওর কী! অদ্রি ফ্রেশ হতে ওয়াশরুমের দিকে পা বাড়ায়। আর ধ্রুব মেঝেতে নিজের বিছানা তৈরি করতে থাকে আর নিজেকেই গালি দেয়। এত ত্যাড়া মেয়ে সে তার পুরো জীবনে দেখেনি। অদ্রি ভদ্রতাবশতও তো একবার বলতে পার‍তো ‘‘আপনি বিছানায় শুয়ে পড়ুন, আমার কোনো সমস্যা হবে না।’’ কিন্তু নাহ, একবার সাধেও নি। আর সাধলেও কি ধ্রুব চলে যেতো নাকি? কখনোই না।

ফ্রেশ হয়ে অদ্রি বহুদিন পর ব্যলকনিতে গিয়ে বসে। এখানে বসেই ধ্রুব ল্যাপটপে কাজ করে বেশিরভাগ রাতে। বাইরে ঠান্ডা বাতাস বইছে। আকাশ পরিষ্কার। কোটি কোটি নক্ষত্ররাজি দ্যুতি ছড়াচ্ছে। গভীর রাতকে গ্রাহ্য না করেই দু’একটা রাতজাগা পাখি ওড়ে চলছে বহুদূরে। অদ্রি উপভোগ করে সবকিছু। একসময় অদ্রি বিছানায় এসে শুয়ে পড়ে। ঘরের আলো নিভিয়ে দেয়। মাথার কাছে থাকা জানালাটা অর্ধখোলা। অদ্রি ঘুমঘুম চোখে দেখতে থাকে আকাশভরা তারকারাজি বৃষ্টির মতো পৃথিবীতে নামিয়ে দিচ্ছে আলোর ঝলকানি। সেই অদ্ভুত সুন্দর দৃশ্য দেখতে দেখতে অদ্রির হঠাৎ বাবার কথা মনে পড়ে। ভুলেই গেলো অবশেষে তার অতি আদরের মেয়েটিকে? অদ্রির ঠোঁটে তাচ্ছিল্যের হাসি ফুটে ওঠে। বুক ভার হয়ে আসে। নিষ্ঠুর এ পৃথিবীতে নিষ্ঠুর এক বাবা সে!

এদিকে মেঝেতে শুয়ে ধ্রুব’র মন বিষন্নতায় ঘিরে আছে। সারাদিন কলুর বলদের মতো অফিস করে এসে বাড়িতে আসে। অদ্রি না ঠিক করে তাকায়, না স্বাভাবিকভাবে কথা বলে। এই সার্কাসময় জীবন ওর আর ভালো লাগছে না। ধ্রুব’র ইচ্ছে করছে পৃথিবীর সবকিছু ধ্বংস করে দিতে। রাত তিনটা। বিছানায় ঘুমিয়ে আছে অদ্রি। ধ্রুব ওঠে ওকে দেখতে থাকে। সত্যিই মেয়েটা ভালো করে ঘুমাতে জানে না। তবে এলোমেলো ভাবেই ওকে বেশ মিষ্টি দেখাচ্ছিলো।
ঘুমন্ত অদ্রিকে যেন সে কতকাল পরে দেখছে। বহুদিন পর ওকে এত কাছে দেখে ধ্রুব’র গলা শুকিয়ে আসে। ও অদ্রির কপাল থেকে চুল সরিয়ে কানের পাশে গুঁজে দেয়। তখনই অদ্রি নড়েচড়ে ওঠে, আচমকা চোখ খুলে তাকায়। প্রথমে বুঝে ওঠতে পারে না ও কোথায় আছে, পরক্ষণেই সব মনে পড়ে। অন্ধকারে হঠাৎ ধ্রুবকে নিজের কাছে দেখে অদ্রির ভ্রু কুঁচকে যায়। এদিকে ধ্রুবও বেশ ঘাবড়ে যায়। ও ভাবতেই পারেনি এভাবে ধরা পড়ে যাবে। অদ্রি চেঁচিয়ে বলে ওঠলো,
— আপনি এখানে কি করছেন?

চলবে।