বৃষ্টিস্নাত তুমি পর্ব-০১

0
537

#বৃষ্টিস্নাত_তুমি ( সূচনা পর্ব )
হুযাইফা মাইশা

চেয়ারম্যান বাড়িতে এলাহি কান্ড! চেয়ারম্যান সাহেবের বড় পূত্রের বিয়ে আজ। সেজন্য সমস্ত আত্মীয়-পাড়া-প্রতিবেশীতে বাড়ি মুখোরিত। চেয়ারম্যান ইয়াসিন ইমতেহান কোনো কমতি রাখছেন না। কিন্তু একটা টপ সিক্রেট ব্যাপার হচ্ছে, বিয়ের খবরটা বর বাদে সকলেই জানে। এই ব্যাপারটা আবার ঘরের মানুষ ছাড়া কেউ জানেনা। ইয়াসিন সাহেব গতকাল রাত্রে উনার বড় পুত্রকে ফোন দিয়ে আসতে বলেছেন। তাও খুব শীঘ্রই। কারণবশত নিজের অসুস্থ হওয়ার অজুহাত দিয়ে কল কেটে দিয়েছেন। এতক্ষণে ছেলেটার চলে আসার কথা। এই কথা ভেবে ভেবে দরজার সামনে পায়চারি করছেন উনি। আশেপাশের মানুষের যেনো রাজ্যের তাড়া। কনে উনার ভাই সম বন্ধুর মেয়ে। গুণে-রূপে একদম পার্ফেক্ট। সেই মেয়ের ছবি একবারের জন্যও উনি উনার ছেলেকে দেখাতে পারেননি। মুখের উপর ছেলে না করে দিয়েছে। কিন্তু উনি উনার সিদ্ধান্তে অটল। এমন একটা মেয়েকেই পুত্রবধূ হিসাবে ঘরে তুলবেন সেটাও ভাবা ততক্ষণে শেষ।

খানিক পরে কালো রঙের গাড়িটা বাড়িতে প্রবেশ করল। ইয়াসিন সাহেব হন্তদন্ত হয়ে ছুটলেন। ছেলে বেরিয়ে আসতেই একহাতে ছেলেকে জড়িয়ে ধরে বললেন,
‘ এতো সময় লাগে নাকি!’
‘ এতো এলাহি কান্ড কিসের, পুরো বিয়ে বাড়ি!’

পৈ’শাচিক আনন্দ পেলেন যেন ইয়াসিন সাহেব। ছেলের কাঁধ চাপ’ড়ে বাড়িতে পা রাখতে রাখতে মনে মনে বললেন, ‘ তোরই তো বিয়ে রে!’

বহুদিন পর ছেলেকে দেখে কাজলের প্রায় কাঁদো কাঁদো অবস্থা। ছেলেকে বুকে জড়িয়ে বললেন,
‘ আহহা, আমার ছেলে কতোদিন পর বুকে ফিরে এল।’

‘ এমনভাবে বলছো যেন আমি তোমার ছেলে না। শুধু ইয়াভকিন ভাই-ই তোমার এক ছেলে!’

ইয়াদের উদাসীন কণ্ঠে প্রশ্ন। পরমুহূর্তেই কাজলের ধ’ম’কে তটস্থ হয়ে বসল সোফায়। ইয়াভকিন গা ঝাঁড়া দিয়ে তার পাশে বসল। অত্যন্ত নিচু কণ্ঠে জিজ্ঞাসা করল,
‘ বাড়িতে কি হচ্ছে এসব! এতো আয়োজন, এতো মানুষ। কার বিয়ে? বাড়িতে অনুষ্ঠান অথচ আমি জানিনা! স্ট্রেঞ্জ!’

মুখে হাসি দেখা দিল ইয়াদের। তার বড় ভাই কি বোকা! ইয়াসিন সাহেব চোখের ইশারা দিতেই উঠে দাঁড়িয়ে ইয়াভকিনের হাত ধরে টানল,
‘ রুমে চলো ভাই।’
‘ টানাটানি করছিস কেন, ছাড়!’

হাত ছাড়িয়ে পা বাড়াল ইয়াভকিন। চোখমুখে বিরক্তি, বিস্ময়। কুঁচকানো কপাল। কিছু তো একটা গন্ড’গোল আছেই! সেই সন্দেহ মনে গাঢ় হচ্ছে ধীরে ধীরে।

নিজের বিয়ের কথা শুনে প্রায় মিনিট খানেক চুপ ছিল ইয়াভকিন। পরের মিনিটে রুমের কর্ণারে রাখা সুন্দর ফুলদানি খানা ভেঙে খানখান হলো। টুকরো টুকরো হয়ে মাটিতে পড়ল। ইয়াদ দরজার পাশে দাঁড়িয়ে। ভাইয়ের রাগ সম্পর্কে সে অবগত। এত বড় একটা কান্ড ঘটছে। ইয়াভকিন জানলে রাগ করবে সেটাও সবাই জানে।

কাজল হন্তদন্ত হয়ে ছুটে আসলেন। ভাঙা ফুলদানিটার দিকে একপল তাকিয়ে কাজের মেয়েটাকে ডাকলেন। ইয়াসিন সাহেব আর বাকিরা আসলো তারপর। একান্তে কথা বলার উদ্দেশ্যে পরপরই সবাইকে একটু বাইরে যেতে বললেন উনি। সবাই বেরিয়ে গেলে দরজাটা লাগিয়ে দিলেন। ইয়াভকিনের রাগ তখন মাথায় চেপে। হাতে কাছে ভাঙার মতো পাচ্ছে কিছু। ইয়াসিন সাহেব তার মনের বাসনা মুহুর্তেই ধরে ফেললেন। রাগ,জেদ সবই উনার থেকে পাওয়া। বুঝতে হবে!
খানিক নিশ্চুপ থেকে বলে উঠলেন,
‘ দেখো..’
‘ দেখার বাকি রেখেছ কি বাবা? এটা কি ধরণের কাজ! আমার বিয়ে, আমার মত নেই। ইচ্ছার প্রাধান্য নেই। কার সাথে বিয়ে সেটাও জানিনা। সারাটা জীবন থাকার বিষয় এটা।’
‘ কথা শুনো আমার, মাথা ঠান্ডা করো। তোমাকে আগে বলেছিলাম মেয়ের ছবি দেখতে। দেখোনি, শুনোনি আমার কথা। এভাবে একা থাকা যায়না। বিয়ে একসময় করতেই হতো। যাইহোক, মেয়েটা সব দিকেই ঠিকঠাক। তুমি চিনবে তাকে। ফারুকের ছোট মেয়ে।’
‘ ওই বি’চ্ছু মেয়েটা? বাবা এসব কি বলছো তুমি?’

রাগ হতভম্বীতে পরিণত হলো ইয়াভকিনের। শেষমেশ কিনা ওই মেয়েকেই পছন্দ করতে হল উনার!

‘ এভাবে বলেনা। মানছি, মেয়েটা একটু বেশি মিশুক। তাই বলে বি’চ্ছু বলবেনা।’
‘ ওটাকে মিশুক না বে’য়াদব বলে বাবা।’
‘ সে যাইহোক, বিয়ে হবেই। কথা আমি দিয়ে দিয়েছি। আগে যদি ছবি দেখতে, মানা করতে তাহলে হয়তো আমিও না করে দিতাম। তোমার ভুল।’

কি সুন্দর, সাবলীল ভাষায় দোষটা ইয়াভকিনের ঘাড়ে চাপিয়ে উনি সুরসুর করে বেরিয়ে গেলেন। বাড়ির সকলে একে একে উঁকি দিল একবার। শান্ত ইয়াভকিনকে দেখে কারোরই পরমুহূর্তের পরিস্থিতির আভাস পেতে বাকি রইল না। সবাই চলে গেলেও কাজল থেকে গেলেন। ইয়াভকিন দরজা লাগানোর আগেই তড়াক করে ঘরে ঢুকলেন। ছেলেকে বিছানায় বসিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললেন,
‘ দেখ, তোর বাবা কথা দিয়ে ফেলেছে। কথার খেলাফ তোর বাবা করেনা। এখন সব এভাবে নষ্ট করে দিলে উনার সম্মান তলানিতে ঠেকবে। নিশ্চয়ই তোর ভালো লাগবেনা সেটা।’
‘ বিয়ে সারাজীবনের ব্যাপার মা।’
‘ বিশ্বাস রাখ একটু।’
‘ আমাকে একটু একা থাকতে দিবে মা? প্লিজ।’

বেরিয়ে গেলেন কাজল। ধরাম শব্দে দরজা লাগিয়ে ঘরের সব জিনিস লন্ড-ভন্ড করল। সুন্দর, সাজানো গুছানো রুমটা মুহুর্তে অগোছালো হলো। বাইরে থেকে সেসবের আওয়াজ সবার কানেই গেল। কিন্তু কেউ সাহস করে একটা টুকা ও দিলনা দরজায়।

সন্ধ্যার আগে শেরওয়ানি নিয়ে ইয়াদ হাজির। ইয়াভকিন তখন বারান্দায় দাঁড়িয়ে সিগা’রেট ফুঁকছে। মা’রাত্মক গম্ভীর চেহারা। ইয়াদ শেরওয়ানিটা বিছানার উপর রেখে ভাইয়ের কাছে এল। নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে ডাকল,
‘ ভাই? ‘
‘ তুই এটলিষ্ট জানাতে পারতি।’
‘ বাবা জানাতে মানা করেছে সবাইকে।’ অসহায় কণ্ঠ ওর।
‘ আমি কি মেয়ে? এভাবে জোর করে বিয়ে দিচ্ছে!’

ইয়াদ মুখে হাত চেপে ধরল। হাসি আটকানোর চেষ্টা। তার ভাইয়ের বিয়ের প্রতি রাজ্যের বিরো’ধিতা।

‘ ভাই, শেরওয়ানিটা..’

রক্তিম চোখে তাকাল ইয়াভকিন। বেরিয়ে গেল ইয়াদ। খানিক পরে ইয়াসিন সাহেব এলেন। ছেলের পিঠ চা’পড়ে বললেন,
‘ যা যা, শেরওয়ানি পড়ে আয়। আমার রাজা ছেলেকে কেমন দেখায় একটু দেখি।’
‘ ঠা’ট্টা করতে মন চাইছে তোমার?’

তন্মধ্যে ঠেলেঠুলে তাকে শেরওয়ানি পড়ালেন ইয়াসিন সাহেব। এরপর বাইরে নিয়ে গেলেন। বাড়ি ভর্তি মানুষ হলেও বরযাত্রী স্বরুপ মানুষজন গেলেন কম। মোটে তিনটে গাড়ি।

ওদের বাড়ি পৌঁছাতে সন্ধ্যা হল। মাগরিবের আজান রাস্তায় হয়েছে। কাজি আগে থেকেই বসা। কনের মুখ থেকে ‘কবুল’ বলিয়ে উনি এলেন বরের নিকট। শেষমুহুর্তে না পারতে কবুল বলল ইয়াভকিন। সঙ্গে সঙ্গে বুকে পা’থর পড়ল যেন। খানিক পরে নববধূকে বসানো হলো তার পাশে। চোখ তুলে একবার তাকাল অব্দি না।

গাড়ি উঠার সময় ফ্যাচফ্যাচে কান্নার মুখোরিত হল চারপাশ। ইয়াভকিন আড়চোখে একবার শাড়ি পরিহিতা পূর্ণতাকে দেখে মনে মনে বলল, ‘ বি’চ্ছু মেয়ে, আমায় বিপদে ফেলে নিজে কাঁদছে।’
গাড়ি উঠার পরপরই কান্না থেমে গেল পূর্ণতা। শক্ত চোখ-মুখে বসা ইয়াভকিনকে সরাসরি দেখে গা ছেড়ে বসল। গাড়িতে আপাতত ওরা দুইজন আর ড্রাইভার। বিয়েটা তবে শেষমেশ হয়েই গেল!

বাসরঘর বলতে শুধু বিছানার চারপাশে ফুল দিয়ে সাজানো। বিছানার উপর রাখা ফুলের পাঁপড়ি গুলো সযত্নে একপাশে রেখে হাই তুলে শুয়ে পড়ল পূর্ণতা। সে জানে লোকটার বিয়েতে মর্জি ছিলনা। কেন ছিলনা সেটাও বোধগম্য তার।
পূর্বে ঝ’গড়া বেঁধেছে ওদের। খানিকটা বড়সড়ই। বছর দুই এক আগের কথা। পূর্ণতাদের আসল বাড়িটা কাছেই। পুরো পরিবার নিয়ে ওদের বাড়িতে বেড়াতে গেছিলেন ইয়াসিন সাহেব। পূর্ণতা স্বভাবস্বরুপ সবার সাথে মিশলেও ইয়াভকিনকে চুপচাপ থাকতে দেখে মুখ ভেঙ্গ’চালো। তক্ষুনি সেটা ইয়াভকিন দেখে ফেলল। ধুপধাপ পা ফেলে এসে জিজ্ঞেস করল, ‘ এই মেয়ে মুখ ভেঙ্গচালে কেনো?’
তাজ্জব বনে পূর্ণতা বলল, ‘ আমার মন চেয়েছে তা!’
‘ মন চেয়েছে মানে, তুমি আমার দিকে তাকিয়ে মুখ ভেঙ্গচালে কেনো?’

ব্যস! শুরু হলো মূল কাহিনি। পূর্ণতার ত্যাড়া ত্যাড়া জবাব ইয়াভকিনের গা জ্বা’লিয়ে দিচ্ছিল। পূর্ণতা শেষমেশ রেগে’মেগে হাতে থাকা পানির গ্লাসের সব পানি ইয়াভকিনের মাথায় ছু’ড়ে ক্ষান্ত হলো। পরপরই ছুটে পালাল।
‘ এত বড় একটা মেয়ে কি করে এরকম কান্ড ঘটাতে পারে!’ তখন শুধু মাথায় এটা ঘুরছিল ইয়াভকিনের। ইগোর কারণে ঘটনাখানা নিজের মধ্যেই চেপে গিয়েছিল। একা একা সবার আগে গাড়ি নিয়ে বাড়ি ফিরেছিল। আর কোনোদিন ও বাড়িতে পা মাড়ায় নি।

উপাধি হিসেবে, ‘বেয়া:দব, ম্যানারলেস’ পেয়েছে পূর্ণতা। তবে সেসবে পাত্তা দেয়নি সে কোনোকালেই। মূলত সে ইয়াভকিনকে সবার অগোচরে পা’গ’ল বলে ডাকে। তবে এই পা’গ’ল তার কপালে জুটবে সেটা সে জেনেছে মাত্র কয়দিন আগে। বাবার বাধ্য মেয়ে বিধায় টু শব্দ অব্দি করেনি।

গভীর ঘুমে তলিয়ে পূর্ণতা। আশেপাশের খেয়াল তো নেই-ই। রাত একটার দিকে রুমে ঢুকল ইয়াভকিন। দরজা নিঃশব্দে লাগিয়ে বিছানায় শোয়া পূর্ণতাকে একবার দেখে নিল। রাগ চেপে বসল পরক্ষণে। মেয়েটা আরামসে ঘুমোচ্ছে। আর তাকে কিনা চিন্তায় ম-রতে হচ্ছে! তাকাতে তাকাতে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল ইয়াভকিন। কালই ভোরে ঢাকা ফিরবে। মেয়েটাকে এখানে রেখেই একা একা ফিরবে। ভাবনাটায় শান্তি লাগল খানিকটা। টান মেরে পাশ থেকে বালিশ কে’ড়ে নিয়ে সোফাটায় শুয়ে পড়ল।

পূর্ণতার ঘুম ভেঙেছে খুব সকালে। অভ্যাস কিনা! সর্বপ্রথম চোখ গেল সামনের সোফাটা উপুড় হয়ে শুয়ে থাকা মানুষটার দিকে। উঠে বসে মুখ বাঁকিয়ে বলল,
‘ ইশ, নায়কদের মতো ঢং!’

এরপর উঠে ফ্রেশ হয়ে বাইরে গেল। বাড়িটায় এসেছে আরো অনেকবার। সব কিছুই চেনা জানা। তবে আজ একটু ব্যাতিক্রম। বর্তমানে সে এ বাড়ির বউ। সুতরাং মাথায় আঁচল টেনে ভদ্র হয়ে বাইরে গেল।

ইয়াভকিনের ঘুম শেষ হয়েছে সাড়ে দশটায়। লেট করে ঘুমানোর ফল! ফোন অফ দেখে লাফ দিয়ে উঠে বসল। ঘড়ির দিকে তাকাতেই সময় দেখে তাজ্জব বনে গেল। বেরোনোর কথা ছিল ছয়টার দিকে। চুপি চুপি একদম,কেউ যাতে টের না পায়—সেজন্য। অথচ, এখন বাজে দশটার উপর। যাবে কি করে!

ঝটপট উঠে ফ্রেশ হলো সর্বপ্রথম। ব্যাগ গুছিয়ে গাড়ির চাবি নিয়ে বের হলো। খাবার টেবিল থেকে সরাসরি সদর দরজা দেখা যায়। ইয়াসিন সাহেব সবে চেয়ারে বসেছেন। ছেলেকে ওমনভাবে যেতে দেখে বললেন,
‘ উঠে গেছো নাকি! এক্ষুনি ডাকতে পাঠাতাম। যাইহোক, নাস্তাটা করেই যাও।’
তীক্ষ্ণ চোখে তাকিয়ে নাস্তা করতে বসলো ইয়াভকিন। টেবিলে বাড়ির সব পুরুষরা বসা। ইয়াভকিনের বরাবর বসা ওর ছোট চাচা, ইব্রাহীম। চা খেতে খেতে উনি জিজ্ঞেস করলেন,
‘ আজই ফিরে যাচ্ছো নাকি! ক’টা দিন থাকো নাহয় নতুন বউকে নিয়ে..’

তাজ্জব বনে গেল ইয়াভকিন। যাওয়ার ব্যাপারটা কারোর জানার কথাই নয়। চা কোনোমতে খেয়ে উঠে পড়ল।

গাড়ি স্টার্ট দেয়ার ঠিক পূর্বমুহূর্তে পাশের সিটটা দখল করে নিল পূর্ণতা। নির্লিপ্ত ভঙ্গিমায় বসে সিট বেল্ট লাগিয়ে নিল। ইয়াভকিন তেঁতে উঠল,
‘ এই মেয়ে, এখানে কি?’
‘ কি মানে?’
‘ গাড়িতে উঠেছ কেনো?’
‘ যাওয়ার জন্য।’
‘ কোথায় যাবে?’
‘ আপনি যেখানে যাচ্ছেন!’
‘ নামো বলছি!’
‘ আপনার কথায় উঠিনি আমি। যে বলবেন আর নেমে যাব!’
‘ আমার গাড়িতে বসে আমাকে এসব বলছো। বেয়া’দব!’

জানালার ধার থেকে ইয়াসিন সাহেব ধ’মকে উঠলেন,
‘ তুমি বেয়া’দব। বউয়ের সাথে কিভাবে ব্যবহার করতে হয় জানোনা দেখছি! যাকগে, এবারের মতো মাফ করে দিলাম। পরের বার এমন বিহেভ করলে সঙ্গে সঙ্গে আমায় জানাবি, ঠিক আছে মা?’
শেষের বাক্যটা পূর্ণতার উদ্দেশ্যে বলা। মিষ্টি হেসে মাথা নাড়াল পূর্ণতা। পরপরই ইয়াসিন সাহেব ফিসফিস করে বললেন,
‘ আমি জানি, আমার এই ছেলেকে একমাত্র জব্দ তুই করতে পারবি। আশাহত করিস না দয়া করে। কিছু বললে সোজা আমায় বলবি!’

ফিসফিস করে বলা হলেও পাশ থেকে বসে বসে সব কর্ণকুহরে প্রবেশ করল ইয়াভকিনের। বিড়বিড় করে দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
‘ এ আমার বাপ, নাকি শ’ত্রু!’

.
.
.
চলবে।