বেষ্ট_ফ্রেন্ড_নাকি_স্বামী পর্ব-১০ এবং শেষ পর্ব

0
2694

#বেষ্ট_ফ্রেন্ড_নাকি_স্বামী?
#Part_10_& #last_part
#Written_By_Nilima_Zabin_Tanmona

রাফি আর রিধী এখন অনেক সুখেই আছে। রিধীও এখন রাফিকে সম্পূর্ণ টেক কেয়ার করে। রাফিকে নিজের বন্ধু আর স্বামী দুইটাই ভাবে রিধী।

৩ মাস পর হঠাৎ রাফি রিধীকে ডেকে বলল
-আজ রাতেই আমি আমেরিকা যাচ্ছি রিধী।
-কই আগে তো আমাকে বললা না? কিন্তু কেন যাচ্ছো?
-আমার খুব গুরুত্বপূর্ন একটা মিটিং আছে। তাই আমাকে সেখানে উপস্থিত থেকে করতে হবে। (রিধীর গালে হাত রেখে)
-কিন্তু তোমায় ছাড়া থাকব কি করে? (চোখের কোনে পানি)
-আরে পাগলি আমি ৫ দিন পরই চলে আসব। তোমার শরীরটাও তো ভাল নেই নয়ত তোমায় নিয়ে যেতাম। তোমাকে ছাড়া যে আমিও থাকতে পারব না রিধী । (রিধীকে বুকে জড়িয়ে ধরে) আমি আয়মান ভাইয়া আর কাশফি আপুকে বলে যাচ্ছি তোমার খেয়াল রাখতে আর আমি না বললেও তারা তোমার খেয়াল রাখবে আমি জানি।
-রাফি আমি পারব না তোমায় ছাড়া থাকতে। (রাফির শার্ট হাতের মুঠোয় শক্ত করে ধরে)
-রিধী তোমায় আমি আদর করে দিয়ে যাই, ৫ দিনের আদর এক সাথে? তাহলে আমাকে কম মিস করবা। (রিধীকে নরমাল করার জন্য রাফি এই কথা বলল)

রিধী তখন রাফিকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিল। রাফি পা দিয়ে ধাক্কা দিয়ে দরজা লক করে দিল। আর হাত দিয়ে রিধীকে জড়িয়ে ধরে আছে। রাফি রিধীকে কোলে তুলে নিল। রিধী রাফির দিকে তাঁকিয়ে আছে ছলছল চোখ নিয়ে। রাফি নিজের বালিশে রিধীকে শুইয়ে দিল। রিধী ঘাড় ঘুরিয়ে ফেলেছে সাথে সাথে লজ্জায়। কারণ রিধী জানে এখন রাফি কি করবে! রাফি রিধীর উপর ঝুঁকে আছে। রিধীর ঘাড়ে আলতো করে চুমু দেয় রাফি আর রিধীও রাফির শার্ট খামচে ধরে। রাফি রিধীর কাছে আসলেই রিধীর হার্ট বিট বেড়ে যায় আর সেটা রাফি উপভোগ করে রিধীর বুকে মাথা রেখে। আজও তাই করল। রিধী রাফিকে জড়িয়ে নিল। আর বলল
-তারাতারি চলে এসো প্লিজ। তোমায় ছাড়া আমি থাকতে পারব না আর নিজের খেয়াল রেখো। (এখনো রিধীর চোখ ছলছল করছে)
-আমি খুব তারাতারিই চলে আসব। তুমি নিজের আর রাফসানের খেয়াল রেখো। নিজে নিজে একদম রান্না ঘরে যাবেনা। আমি সার্ভেন্ট দের বলে দিয়ে যাব ওরাই সব করবে। তুমি শুধু সবসময় আমার সাথে কথা বলবে।
-হুম।

(এরপর যা হলো তা আমার হাত লিখতে চাইছে না)

সন্ধ্যার পর রাফি ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নিল। জামাকাপড় সাথে কিছুই নেয়নি কারণ ও ওর আমেরিকার বাসায় থাকবে। শুধু মাত্র ইম্পোরটেন্ট কয়েকটা ফাইল আর পেন্ড্রাইভ নিল। বেরিয়ে যাওয়ার আগে রিধীকে জড়িয়ে ধরে চুমু দিয়ে গেল। আর রাফসানকে আদর করে গেল। রাফি বের হওয়ার পর রিধী রুমে এসে অনেক কান্না করছে রাফি আর ওর ছবি জড়িয়ে ধরে। কাশফি রিধীকে শান্ত করল। রাতে হঠাৎ রিধী মাথা ঘুরে পরে গেল। কাশফি আর আয়মান দ্রুত রিধীকে হাসপাতালে নিল। রিধী সেন্সলেস। হয়ত অসুস্থ তাই কান্নাকাটি করার জন্য সেন্সলেস হয়ে গেছে। কিছুক্ষন পর ডাক্তার এসে আয়মান কে জানালো রিধী মা হতে চলেছে। কাশফি এত খুশি হয়েছিল যা ধারনার বাইরে কারণ কাশফি মা হতে পারবেনা। রাফসানকে নিজের সন্তান বানিয়েছে আয়মান আর কাশফি। কাশফি আর আয়মান দ্রুত রিধীর কাছে গেল। কাশফি রিধীকে জড়িয়ে ধরে বলল

-তোর ২ টা সন্তান ই আমার।
-২ টা সন্তান মানে? (রিধী অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল)
-বোন রাফির সন্তান তোর গর্ভে। তুই মা হতে যাচ্ছিস।
-আপু?
-হ্যাঁ রে রিধী।

রিধী আনন্দে আত্মহারা। কিন্তু মন খারাপ আজ এমন একটা দিনে রাফি নেই। রিধী কাশফি আর আয়মানকে বলল রাফিকে যাতে এই খবর না জানায়। রাফি বাংলাদেশে আসলে রিধী জানাবে।

“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন

সেইরাতে রিধী হাসপাতালে ছিল। সকালে বাসায় এসে রাফির সাথে কথা বলল। ৪ দিন হয়ে গেছে। আজ রাতে রাফি ঢাকা ব্যাক করবে। রিধী রাফিকে রিসিভ করতে যায়নি কারণ আয়মান নেয়নি। শুধুমাত্র আয়মান গিয়েছিল রাফিকে রিসিভ করতে। রাত ১ টায় রাফি বাসায় আসলো। রাফি রাফসানকে আদর করে কাশফির কোলে দিয়ে নিজের ঘরে চলে আসলো। এসে দেখে ঘরের বাতি নিভানো। রাফি রিধী রিধী বলে ডাকে। কিন্তু কোনো সারা পায়না। রাফি ঘরের আলো জ্বালায় আর দেখে রিধী জানালার পাশে দাঁড়িয়ে রাফির দিকে তাঁকিয়ে আছে। অদ্ভুত সুন্দর লাগছে রিধীকে। আর রাফি হা হয়ে দেখছে রিধীকে। রাফি রিধীর কাছে গিয়ে রিধীকে জড়িয়ে ধরে। রিধী রাফিকে জড়িয়ে ধরার পর রাফির ডান হাত রিধীর পেটের উপর রাখে।

-কি হলো? (রাফি রিধীকে ছেড়ে জিজ্ঞেস করল)
-আমি প্রেগন্যান্ট রাফি।
-রিধীইই!!!
-হুম রাফি। আমি তোমার সন্তানের মা হতে যাচ্ছি।

রাফি কিছু বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছে। রাফির চোখ থেকে পানি পরছে। কি বলবে ও! রাফি রিধীকে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে ফেলে।

-এত বড় সারপ্রাইজ পাব আমি? আশা করিনি।
-খুশি হয়েছো তুমি?
-তোমায় বলে বোঝাতে পারব না কতটা খুশি হয়েছি আমি। আজকে আমিই পৃথীবির সেরা সুখিদের মধ্যে একজন।

প্রায় ৬ বছর পর

-মাম্মা রাফসান ভাইয়া কই? (রাগে গজগজ করতে করতে রাফি আর রিধীর মেয়ে রুজবা)
-কি হইছে মা? রাফসান আজকে আবার কি করল তোমায়?
-দেখো আমার প্রিয় টি-শার্ট টা ও নষ্ট করে ফেলেছে রং দিয়ে। (কেঁদে দিল)
-রুজবা তুই কোথায়? দেখ তোর নতুন টি-শার্ট হুবহু ওই রকম। (বাসায় ঢুকতে ঢুকতে রাফসান রুজবাকে বলল)
-তুই নষ্ট করিস আবার নিয়েও আসিস। নষ্ট কেন করিস তাহলে? (রিধী রাফসানের কান টেনে জিজ্ঞেস করল)
-ওহ মাম্মা লাগছে ছাড়ো। এইটা পাপাকে জিজ্ঞেস কর।
-কেন তোর পাপাকে জিজ্ঞেস করব? তোর পাপা কি নষ্ট করেছে।
-যখন আমি রুজবার প্রিয় জিনিসগুলো নষ্ট করে ফেলি তখন পাপাকে বলি আর পাপা হুবহু আরেকটা কিনে এনে দেয়। সাথে সোনা মা (কাশফি) আর বাবাই (আয়মান) ও আমায় সাপোর্ট করে।
-এই করিস তোরা!!
-ভাইয়া আজ তোকে দেখ আমি কি করি!!(দৌঁড়ে)
-কি করবি কর (দৌঁড় দিয়ে)

-রুজবা, রাফসান সাবধানে পরে যাবা কিন্তু (রাফি)
-তুমি এতদিন ওদের ভুলগুলোকে মাথায় তুলে রেখেছো তাই তো? (রিধী কোমরে হাত দিয়ে)
-কি করব বল? ২টা সন্তানই তো আমার (রিধীকে কাছে টেনে এনে)
-হায় আল্লাহ আমারে উঠায় নাও এদের রোম্যান্স দেখতে দেখতে আমি বুড়া হয়ে গেলাম। (আয়মান)
-ভাইয়া আমরাও দেখি বুঝছো যখন তুমি আপুকে শুরশুরি…. কি আরো কিছু বলব? (কথা থামিয়ে দিয়ে)
-ভাল ভাল ২ ভাই মিলে আমার প্রেস্টিজ পাঞ্চার করছো। (কাশফি)
-আরে না আপু। লাভ ইউ। (রাফি কাশফিকে বলল)
-কিইইইইই? (রিধী চোখ রাঙিয়ে)

রাফির এখন কি অবস্থা করবে রিধী তা আমি জানিনা কিন্তু গল্পটা শেষ করছি। পুরো গল্পটা কেমন লেগেছে অবশ্যই জানাবেন।
সমাপ্ত