ভালোবাসাময় প্রহর পর্ব-১৭

0
356

#গল্পের_নাম_ভালোবাসাময়_প্রহর
#লেখনীতে_Alisha_Rahman_Fiza
পর্ব:১৭

রাতের কথা শুনে রাজ একটু হেসে বললো,

~আপনার কথা তো শুনলাম মিস্টার কিন্তু আপনার বোনের কথাও তো আমার শুনতে হবে বিয়েটা তো ওনার।

রাত রাজের মুখোমুখি বসে বললো,

~ঠিক আছে তন্নির কথাও শুনে নিন।

তন্নি তাদের দুজনের দিকে একবার তাকিয়ে নাক ফুলিয়ে বললো,

~আমার বিয়ে করার কোনো প্ল্যান নেই আর আমি কোনোদিনই বিয়ে করবো না সারাজীবন সিঙ্গেল থাকবো খুশি আপনারা?

বলেই সে নিজ রুমে চলে গেলো অধরার বাবা রাজ আর তার মায়ের দিকে তাকিয়ে বললেন,

~আপনারা তো তন্নির কথা শুনলেনই এখানে আর আমার কোনো মতামত নেই।

রাজ মুচকি হেসে বললো,

~অবশ্যই আমরা বুঝতে পেরেছি আঙ্কেল আর তন্নি হয়তো পড়াশোনা করতে চায় নিজ ক্যারিয়ার গঠন করতে চায় এতো কোনো খা/রা/প কথা না।

অধরা বাবা বললেন,

~তুমি খুবই মিচিউর একজন ছেলে তোমার সাথে দেখা হয়ে খুব ভালো লাগলো।

রাজ বললো,

~আমারও খুব ভালো লাগলে আপনাদের সাথে দেখা করে।

বলেই সে আর তার মা বিদায় নিয়ে চলে গেলেন তারা চলে যেতেই অধরার বাবা রাতকে বললেন,

~নাস্তা করে যাও রাত আমার সাথে।

রাত বললো,

~ঠিক আছে।

রাত চেয়ারে গিয়ে বসে পরলো অধরার মা রাতের প্লেটে পরোটা দিতে দিতে বললেন,

~আমার মনে হয় ছেলেটা অনেক ভালো আমাদের খোজখবর নেওয়া উচিত।

রাত এই কথা শুনে বিষম খেলো অধরার বাবা বললেন,

~এতো তাড়াহুড়ো করে কোনো সিদ্ধান্ত আমি নিতে চাইনা সময় হলে সব হবে।

রাতের কেনো যেন আর খাওয়া হলো না সে চু/প/চা/প খাবার টেবিল থেকে উঠে হাত ধুয়ে তন্নির ঘরের দিকে গেলো।রাতের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে অধরার বাবা মুচকি হাসলেন সে রাতের অস্থিরতার কারণ বুঝে ফেলেছেন।রাত তন্নির রুমে গিয়ে দেখলো সে ব্যাগ গুছিয়ে নিচ্ছে ঘুরতে যাওয়ার জন্য।রাত তন্নির কাছে এসে বললো,

~তুই কী আমার ওপর রা/গ করেছিস?

তন্নি একবার রাতের দিকে তাকিয়ে বললো,

~আজ যেটা করেছো তা আর কখনো করবেনা তুমি যেভাবে লোকটার সাথে কথা বলেছো একদম ভালো লাগে নি আমার। বিষয়টা শুধু আমার ছিলো আমি ম্যানেজ করে নিতাম তোমাকে সেসময় দেখে মনে হচ্ছিলো তুমি আমার প্রেমিক।এসব ব্যবহার বাহিরে করোনা লোক জানলে খা/রা/প ভাববে সব কিছুর একটা সৌন্দর্য আছে সেভাবেই সব করতে হয়।

রাত একধ্যানে তন্নির কথা শুনছে কেন যেন তন্নির ব/কাও তার অনেক ভালো লাগছে।তন্নি রাতের চাহনি দেখে বললো,

~তোমায় আমার স/ন্দে/হ হচ্ছে আমার রুম থেকে বাহিরে যাও।

রাত আর কিছু না বলে তন্নির রুম থেকে বের হয়ে গেলো। তন্নি রাতের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে বললো,

~ব/ল/দ/ সবসময় ব/ল/দ/ই থাকে।

সন্ধ্যায় রক্তিম,অধরা,রাত,তন্নি গাড়িতে উঠে বসলো প্রভাকে তন্নি সাথে আনতে চেয়েছিলো কিন্তু প্রভা স্কুলের পিকনিকে যেতে চায় তাই তন্নি মন খা/রা/প করে তন্নিকে রেখে যাচ্ছে।রক্তিম ড্রাইভ করছে তার পাশে রাত বসেছে আর অধরা,তন্নি পিছনের সীটে বসেছে রক্তিম তন্নিকে বললো,

~মন খা/রা/প করো না তন্নি। প্রভা তো বন্ধুদের সাথে সময় কা/টা/তে চায়।

তন্নি বললো,

~প্রভাকে ছাড়া ভালো লাগে না ভাইয়া।

অধরা বললো,

~আমি আছি তো তোর সাথে।

তন্নি বোনের কাঁধে মাথা রাখলো রাত ১০ টায় তারা রির্সোটে পৌছায় রক্তিম আর রাত মিলে রুম বুকিং থেকে শুরু করে সবকিছু করে নেয়।অধরা তন্নি রির্সোট দেখতে ব্যাস্ত তন্নি বললো,

~আপু,জায়গাটা অনেক সুন্দর ওখানে মনে হয় বাগান সকালে গিয়ে দেখে আসবো।

অধরা বললো,

~একদম ঠিক বলেছিস এই রির্সোটের পাশে অনেক ঘুরতে যাওয়ার জায়গা আছে আমরা ২দিনে ঘুরতে পারবো।

তখনই রক্তিম এসে তন্নির হাতে রুমের চাবি দিয়ে বললো,

~এটা তোমার রুমের।

অধরা বললো,

~একা ঘুমাতে ভ/য় পাবিনা তো?

তন্নি বললো,

~আমার কোনো প্রবলেম নেই।

রাত রক্তিমের হাত ধরে বললো,

~ভাইয়া,আমার অনেক ভ/য় করে তুমি আমার সাথে ঘুমাও।

রাতের কথা শুনে অধরা আর তন্নি হেসে উঠলো রক্তিম বললো,

~অনেক ভ/য় না তোমার আহা গো আমার ভাইটা তাহলে গাড়ির চাবি নে আর বাসায় যা।

রক্তিমের কথা শুনে অধরা আর তন্নি আরো হাসতে লাগলো রাত মুখটা ছোট করে বললো,

~বিয়ের পর তুমি আমাকে ভুলে গেছো ভাইয়া একা একা আমার ঘুম আসে না।

অধরা বললো,

~এই জন্যই তো আমরা চাইছি তোকে বিয়েটা দিতে।

রাত বললো,

~সময় হলে বিয়েটা করেই নিবো।

ডিনার শেষে যে যার রুমে চলে গেলো অধরা রুমে এসে শাড়ি বদলিয়ে কামিজ পরে নিলো আয়নার সামনে দাড়িয়ে চুলগুলোতে বেণুনি পাকিয়ে নিলো।রক্তিম ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে বের হতেই তার নজর অধরার দিকে পরলো।অধরা আয়না দিয়ে রক্তিমকে দেখে বললো,

~এমন ভাবে দেখছেন যেন আমাকে আর কোনদিন দেখেননি।

অধরার কথায় রক্তিম বললো,

~আমি প্রতিদিনই তোমাকে নতুন ভাবে আবিষ্কার করি আর প্রতিদিন তোমার প্রেমে পরি।

অধরা পিছন ফিরে রক্তিমের দিকে তাকিয়ে বললো,

~বাহ আজ তো কবি হয়ে গেলেন।

রক্তিম অধরার কাছে এসে তার কোমড় জড়িয়ে ধরে নিজের কাছে টেনে এনে বললো,

~তোমার জন্য আরো অনেক কিছু হতে পারবো।

অধরা রক্তিমের গলা জড়িয়ে বললো,

~এতো ভালোবাসা আজ।

রক্তিম অধরার গালে ঠোঁট ছুইয়ে বললো,

~রোজই তো ভালোবাসি।

অধরা রক্তিমের চোখে চোখ রেখে বললো,

~ভালোবাসি।

বলেই সে রক্তিমের বুকে মাথা রাখলো রক্তিমের হৃদস্পন্দন শুনতে লাগলো।রক্তিম চোখ বন্ধ করে ফেললো নিজেকে তার বড়ই ভাগ্যবান মনে হচ্ছে তার প্রিয়তমা তার সাথেই আছে বুকে মাথা রেখে আছে।রক্তিম অধরাকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো এই সময়টা যাতে এখানেই থেমে যাক এটাই তাদের ইচ্ছা।

চলবে