#ভালোবাসার_অধিকার❤❤
লেখা- পূজা
পর্ব- ১৭
।
।
ঈশান আর আবির বাগানে গিয়ে দেখে দ্বীপ এক সাইডে দারিয়ে আছে আর নেহা গালে হাত দিয়ে দ্বীপের পেছনে দারিয়ে আছে। ঈশান আর আবির এগিয়ে গেলো দ্বীপের দিকে।
ঈশান: দ্বীপ!
দ্বীপ ঘুরে তাকালো। চোখ লাল হয়ে গেছে রাগে। এতো রাগ কেনো উঠছে দ্বীপের ওরা বুঝতে পারছে না।
আবির: কি হয়েছে তর।
দ্বীপ: কিছু না। আমার কি হবে।
ঈশান: তকে দেখেই মনে হচ্ছে খুব রেগে আছিস। আর নেহা গালে হাত দিয়ে দারিয়ে আছে কেনো?
দ্বীপ: এটা ওকেই জিজ্ঞেস কর।
এটা বলেই দ্বীপ এখান থেকে চলে আসলো। নেহা একবার ঈশান আর আবিরের দিকে তাকিয়ে নেহা ও চলে গেলো। ঈশান লক্ষ্য করলো নেহার চোখে পানি টলমল করছে।
আবির: ওদের মাঝে কি হয়েছে বুঝতে পারছি না।
ঈশান: আই থিংক দ্বীপ নেহাকে থাপ্পড় মেরেছে। ওর গালে দাগ দেখেছি আর চোখে পানি।
আবির: বাট উয়াই?
ঈশান: ডোন্ট নো।
আবির: চল ভেতরে।
।
রোদ দিয়া আর অনুর কাছে আসলো। অনু রোদকে দেখে একটা মুচকি হাসি দিলো।
রোদ: ওয়াও ইউর স্মাইল ইজ সো কিউট।
অনু: থ্যাংকস।
রোদ: আমরা তো এখন ফ্রেন্ড। রাইট?
অনু: হুম।
রোদ: তোমার নাম্বারটা পেতে পারি।
অনু: সিওর। উয়াই নট।
অনু ওর নাম্বারটা রোদকে দিলো। রোদ ও ওর নাম্বারটা অনুকে দিলো। দিয়া দারিয়ে দারিয়ে এসব দেখছে বাট কিছু বলে নি। অনু ও ওর মতো করে রোদের সাথে গল্প করছে। এর মাঝে দ্বীপ ভেতরে ডুকলো আবার অনুকে রোদের সাথে দেখে ওর মাথা গরম হয়ে গেলো বাট কিছু বললো না। এক সাইডে গিয়ে বসে পরলো। অনু দ্বীপকে দেখে ও না দেখার ভান করলো।
এর মধ্যে আবির মাউস নিয়ে ড্রয়িংরুমের মাঝখানে এসে দারালো। আর বললো,”লেডিস এন্ড জেন্টলমেন্ট। এটেনশন প্লিজ। আজ আমার জন্য খুবই স্পেশাল একটা দিন। আমার খুব কাছের একজন মানুষের জন্মদিন। তো এই দিনটাকে আমি আর একটু স্পেশাল করতে চাই। তো আমি দ্বীপকে রিকুয়েষ্ট করবো একটা গান গেয়ে শুনানোর জন্য। ও খুব ভালো গান গেতে পারে।”
সবাই হাতে তালি দিলো। বাট দ্বীপ রাগি লুকে আবিরের দিকে তাকালো। আবির এসব দেখে ও না দেখার ভান করছে।
আবির: দ্বীপ প্লিজ একটা গান। আমার জন্য। সবার সামনে এনাউন্সমেন্ট করে ফেলেছি এবার গান না গেলে সবাই কি ভাববে।
দ্বীপের ইচ্ছে করছে আবিরকে মাথায় তুলে আচার মারতে। নিজের রাগটাকে অনেক কষ্টে কন্ট্রোল করলো।
ঈশান: দ্বীপ না করিস না। গেয়ে ফেল।
আবির এনে মাউসটা দ্বীপের হাতে দিলো।
দ্বীপ চোখ বন্ধ করে গান গাওয়া শুরু করলো।
পাস আয়ে দূরিয়া
ফির ভি কাম না হুয়ি
এক আধুরি সি
হামারি কাহানি রাহি
আসমা কো যামি
ইয়ে জারুরি নেহি
জা মিলে…. জা মিলে
ইস্ক সাচ্চা ওয়াহি
যিসকো মিলতিনেহি
মানজিলে…. মানজিলে….
রাঙ থে নুর থা
জাব কারিব তু থা
এক জান্নাত সা থা ইয়ে যাহা…
ওয়াক্ত কি রেত পে
কুছ মেরে নাম সা
লিখকে ছোর গায়া তু কাহা্
হামারি আধুরি কাহানি…
হামারি আধুরি কাহানি…
হামারি আধুরি কাহানি…
হামারি আধুরি কাহানি…
খুশবুও সে তেরি
ইউহি টাকরা গায়ে
চালতে চালতে দেখো না
হাম কাহা আ গায়ে
জান্নাতে আগার ইয়েহি
তু দিখে কিউ নেহি
চান্দ সুরায সাভি হে ইয়াহা
ইন্তেজার তেরা সাদিওছে কার রাহা
পিয়াছি ব্যাঠি হে কাব সে ইয়াহা
হামারি আধুরি কাহানি…
হামারি আধুরি কাহানি…
হামারি আধুরি কাহানি…
হামারি আধুরি কাহানি…
গান গাওয়া শেষে সবাই হাতে তালি দিলো।
অভি: একটা রোমান্টিক গান গাইতি এটা কি গান গেয়েছিস।
দ্বীপ: আমার যা ইচ্ছা করেছে তাই গেয়েছি😡
অভি: ওকে ওকে এতো রাগ করছিস কেনো?
।
দ্বীপের গান শেষ হতেই অনুর চোখ থেকে দু ফোটা জল গরিয়ে পরলো। সাথে সাথে মুছে ও নিলো। বুঝতে পারতেছে না অনু গানটা শুনে ওর এতো কষ্ট কেনো হচ্ছে।
রোদ: অনু আর ইউ ওকে।
অনু: ইয়াহ। আমার কি হবে?
রোদ: না চোখ লাল দেখা যাচ্ছে।
অনু: ও কিছু না। হয়তো চোখে কিছু পরেছে।
রোদ: সিওর।
অনু: হুম।
আবির এবার তিথিকে কেক কাটার জন্য ডাকলো। কেক কেটে যে যার মতো কাপল ডান্স করছে। অভি মায়রা শুভ সিমি আবির আর তিথি ওরা ও ডান্স করছে।
হঠাৎ রোদ ওর হাত অনুর দিকে বারিয়ে দিলো।
রোদ: ডান্স।
অনু কি করবে বুঝতে পারছে না দ্বীপের দিকে তাকিয়ে দেখে ও অনুর দিকেই তাকিয়ে আছে।
অনু: (দ্বীপ তুমি তো বলেছো আমায় ভালোবাসো না। তাহলে এমন কেনো করছো। কতোটা কষ্ট হয় আমার তা কি তুমি বুঝো না)
রোদ: অনু।
অনু: হুম।
রোদ: ডান্স?
অনু: ওকে।
অনু ওর হাত রোদের হাতে দিলো আর রোদ অনুকে নিয়ে ডান্স এর এখানে আসলো। দ্বীপের এতো রাগ উঠেছে ড্রিংস এর গ্লাস হাতে ছিলো ওটা চাপ দিয়ে ভেঙ্গে ফেলেছে।
প্রহর দিয়ার কাছে আসলো। এসে চুপচাপ দারিয়ে থাকলো কিছু বললো না। দিয়া প্রহরের আসা দেখেই বুঝে গেছে কেনো এসেছে প্রহর।
দিয়া: চলুন।
প্রহর অবাক হয়ে দিয়ার দিকে তাকালো।
দিয়া: আমি জানি আপনি কেনো এসেছেন।
দিয়া প্রহরের দিকে হাত এগিয়ে দিলো। প্রহর মুচকি হেসে দিয়ার হাত ধরলো আর ডান্স ফ্লোরে নিয়ে গেলো।
নেহা ভয়ে দ্বীপের কাছে যেথে পারছে না। যেথে গেলেই বাগানে দ্বীপের থাপ্পড় এর কথা মনে হয়ে যায়।
দ্বীপ এর পিছু পিছু নেহা ও বাগানে গিয়ে ছিলো। পিছন থেকে নেহা দ্বীপের হাত ধরে। দ্বীপ ঘুরে তাকায়।
দ্বীপ: উয়াট?
নেহা: তুমি ওই থার্ড ক্লাস মেয়েকে ওইভাবে নিয়ে গিয়েছিলে কেনো? আর ওর ড্রেসইবা চেন্জ করতে বললে কেনো। ও যা ইচ্ছা তাই পরবে। ওই সব মেয়েদের তুমি চেনো না। ছেলেদের ইম্প্রেস করার জন্য ওই সব ড্রেস পরে।
এতক্ষণ দ্বীপ দাতে দাত চেপে নেহার কথা শুনে লাস্ট কথা বলতেই টাস করে নেহার গালে একটা চর বসিয়ে দেয়।
দ্বীপ: জাস্ট সাট আপ ওকে। নিজের সাথে অনুকে একদম তুলনা করবে না😡
।
নেহা দ্বীপের থেকে একটু দুরে দারিয়ে আছে। আর দ্বীপকে দেখছে।
নেহা: তোমাকে আমি সত্যি খুব ভালোবাসি দ্বীপ। অনুর থেকে ও বেশি। তাই অনুর থেকে তোমাকে দুরে রাখার জন্য আমি সব কিছু করতে পারবো।
হঠাৎ নেহা তাকিয়ে দেখে দ্বীপের হাত থেকে রক্ত পরছে। নেহা এগিয়ে যায় দ্বীপের দিকে।
নেহা: দ্বীপপপ এটা কিভাবে হলো?
নেহা দ্বীপের হাত ধরতে গেলেই দ্বীপ চিৎকার করে বলে,”ডোন্ট টাচ্ মি।”
দ্বীপের চিৎকারে সবাই দারিয়ে যায় গান ও বন্ধ হয়ে যায়। অনু রোদকে ছেড়ে দেয় আর দ্বীপের দিকে তাকায়। আর তাকিয়েই ও আতরে উঠে। দ্বীপের হাত থেকে টপটপ করে রক্ত পরছে। অনু দৌড়ে দ্বীপের কাছে চলে যায়।গিয়ে দ্বীপের হাত ধরে। দ্বীপ কিছু বলে নি তাকিয়ে আছে অনুর দিকে। অনু দ্বীপের হাত নিয়ে দেখে কাচ ডুকে গেছে হাতে। অনু চোখ বন্ধ করে কাচ বের করে। রক্ত ও খুব ভয় পায়। হাত কাপছে তবুও ওকে এটা করতে হচ্ছে। বাট দ্বীপ স্টিল বসে আছে।
অনু: তিথি জলদি ফাস্ট এড বক্স নিয়ে আয়।
তিথি: ওয়েট।
তিথি দৌড়ে উপরে গিয়ে বক্স নিয়ে আসলো আর অনুর হাতে দিলো। দ্বীপ চোখ বন্ধ করে আছে। সবাই ওদের দিকে তাকিয়ে আছে। অনু দ্বীপের হাতে বেন্ডেজ করে দিলো অনুর চোখ থেকে টপটপ করে জল পরছে।
অনু: এমনটা কেনো করলে?
দ্বীপ কিছু বলছে না। অনু কিছুক্ষণ দ্বীপের দিকে তাকিয়ে উঠে এখান থেকে চলে গেলো। দিয়া অনুর পিছু পিছু গেলো গিয়ে দেখে অনু কাদছে।
দিয়া: কাদছিস কেনো? ভাইয়ার কিছু হয় নি তো।
অনু; কেনো ও এমন করলো।
দিয়া: জানি না।
।
এদিকে ঈশান আবির শুভ জিজ্ঞেস করছে এটা কিভাবে হলো দ্বীপ কিছুই বলছে না। নেহা ঠিকই বুঝতেছে দ্বীপের এমন করার কারন।
নেহা: আমার সাথে ভালো করে কথা ও বলো না। আর অনুর জন্য হাত কেটে ফেলেছো। যাই করো দ্বীপ তোমাকে আমি চারছি না। তোমাকে আমার সাথেই থাকবে হবে।
অনু সবার সামনে এসে বলে,”অনেক লেইট হয়ে গেছে। এবার আমাকে যেথে হবে।”
দিয়া: আমরা তো তকে ড্রপ করে দেবো।
অনু: না। আমি আংকেলকে ফোন দিয়েছি। উনি এসে গেছেন।
তিথি: এখনি চলে যাবি।
অনু: হুম। আসি। কাল দেখা হবে। বাই
অনু আর কারো সাথে কোনো কথা না বলে বাসায় চলে যায়। আস্তে আস্তে সবাই নিজেদের বাসায় চলে যায়। দ্বীপ ঈশান নেহা আর দিয়া এক সাথে বের হয়। গাড়িতে দিয়া দ্বীপকে জিজ্ঞেস করে,”কি হয়েছিলো তর।”
দ্বীপ: আমার কি হবে?
দিয়া: তাহলে এমন বিহেভ করলি কেনো?
দ্বীপ: কি করেছি?
দিয়া: এবার বুঝে ও না বুঝার ভান করবি।
ঈশান: বাদ দাও এসব।
দিয়া: হুম।
কেউ আর কিছু বললো না ওরা ওদের বসায় চলে গেলো।
অনু বাসায় যেথেই অনুর ফোনে রোদের কল এলো। অনু বেলকনিতে গিয়ে ফোনটা রিসিভ করলো।
অনেকক্ষণ রোদের সাথে কথা বলে অনু গিয়ে শুয়ে পরলো।
।
।
চলবে?🙄