#ভালোবাসার_অধিকার❤❤
লেখা- পূজা
পর্ব- ২০
।
।
অনু রোদের সাথে কথা বলতে বলতেই হঠাৎ ওর চোখ দ্বীপের দিকে যায়। দ্বীপ বসে আছে আর ওর পাশে নেহা। দ্বীপের মা বাবার সাথে নেহা ও এসেছে। এই নেহা নামক জিনিসটাকে অনু দ্বীপের পাশে একদমই সহ্য করতে পারে না। এবার অনু ও রোদের সাথে ক্লোজ হয়ে কথা বলছে। দ্বীপ পারলে ও কেনো পারবে না। সিমি আর শুভকে একসাথে বসানো হয়েছে। আর বাকি সবাই যে যার মতো ইনজয় করছে। আবির এসে তিথিকে নিয়ে গেছে এবার অনু আর রোদ শুধু কথা বলছে। দ্বীপ এসব দেখছে আর রাগে ফুসছে।
দ্বীপ: দিয়া।
দিয়া: কি?
দ্বীপ: তরা এখানে অনু ওখানে একা কি করছে ওকে নিয়ে আয়।
দিয়া: একা কোথায় রোদ তো আছে সাথে।
দ্বীপ: তকে যা বলছি তাই কর। নিয়ে আয়। এতো কথা বলিস কেনো?
দিয়া: জেলাস😜
দ্বীপ: 😐ওসব কিছু না।
দিয়া: তা তো দেখতেই পারছি।
দিয়া দ্বীপের কাছ থেকে এসে অনুর কাছে গেলো। গিয়ে বললো,”অনু চল আমার সাথে তকে ওখানে ডাকছে।”
অনু: কেনো? রোদ তো একা হয়ে যাবে।
দিয়া: বেশি টাইম লাগবে না। চল না।
রোদ: নো প্রবলেম। তুমি যাও। আমি আছি এখানে।
অনু: ওকে।
দিয়া অনুকে সবার কাছে নিয়ে এলো আর দ্বীপের অন্যসাইডে বসিয়ে দিলো।
অনু: আরে,,
অনু উঠতে গেলেই দ্বীপ অনুর কোমড় জরিয়ে ধরে আরো কাছে নিয়ে আসে যাতে অনু উঠে চলে যেথে না পারে। অনু চোখ বড় বড় করে দ্বীপের দিকে তাকালো আর আস্তে করে বললো,”এটা কি করছো দ্বীপ। সবাই আছে এখানে।”
দ্বীপ: চুপচাপ এখানে বসে থাকো উঠার চেষ্টা ও করবে না।
অনু: কেনো তোমার পাশে আমি বসবো। বসবো না। কে হও তুমি আমার। ছারো আমায়। যেথে দাও।
দ্বীপ: আমি কে হই এটা কিছুদিন পর জানতে পারবে। এখন এখানে চুপচাপ বসে থাকো।
দ্বীপ এতো শক্ত করে ধরে রেখেছে যে অনু হাত ছুটাতেই পারছে না।
দ্বীপ: এত লাফালাফি না করে চুপচাপ বসে থাকো। লোকজন দেখলে অন্যকিছু ভাববে😜।
অনু: সাট আপ।
দ্বীপ: 😁
কিছুক্ষণ এভাবে বসার পর হঠাৎ অনু দ্বীপের দিকে তাকিয়ে বললো,”ভালোবাসো আমায়।”
অনুর কথা শুনে দ্বীপ সাথে সাথে অনুকে ছেড়ে দেয়।
অনু: ভালোই যখন বাসো না তাসলে এতো কাছে কেনো আসো দ্বীপ। তুমি জানো না তুমি কাছে আসলে আমি নিজেকে ধরে রাখতে পারি না।
দ্বীপ: ভালোবাসো আমাকে। আর সবসময় ওই রোদের সাথে থাকো।
অনু: রোদ শুধু আমার ফ্রেন্ড।
দ্বীপ: রোদকে দেখলে তো মনে হয় না। ও শুধু তোমায় ফ্রেন্ড মনে করে।
অনু: ও যাই ভাবোব তাতে আমার কিছু যায় আসে না। আর রোদের বিষয়ে একটা ও কথা তুমি বলবে না। ও যতেষ্ট ভালো। তোমার মতো না। কারো মনে ভালোবাসার সৃষ্টি করে তাকে ছেড়ে দিয়ে অন্য একটা মেয়ের সাথে থাকবে। তুমি না নেহাকে ভালোবাসো না তাহলে…..
দ্বীপ: এসবের মাঝে একদম নেহাকে ডুকাবে না।
অনু: আমি ডুকাই নি তুমি ডুকিয়েছো। এনিউয়ে, আমি এসব নিয়ে কথা বলতে চাই না।
অনু উঠে চলে আসলো। দ্বীপ আর অনুকে আটকালো না। অভি মাউস নিয়ে সবার সামনে এসে বললো,”লেডিস এন্ড জেন্টলমেন্ট। এটেনশন প্লিজ। এবার আমাদেরকে কাপল ডান্স করে দেখাবে আমার সবার প্রিয় জুটি শুভ এন্ড সিমি। লেটস স্টার্ট দা মিউজিক। সাথে বাকি জুটিরা ও পার্টিসিপেট করতে পারবে।”
অভির এনাউন্সমেন্ট এর সাথে সাথে মিউজিক বেজে উঠলো। সং,”ইস্ক উয়ালা লাভ।”
শুভ সিমির সাথে আবির তিথি অভি মায়রা আরো অনেক কাপল ডান্স ফ্লোরে আসলো। দ্বীপ বুঝতে পারছে রোদ এখন অনুকে নিয়ে এখানে আসবে। তাই ও বসা থেকে উঠে দারালো। দ্বীপ উঠতেই নেহা হাত এগিয়ে দিলো ডান্স করার জন্য।
দ্বীপ: সরি। প্রহর?
প্রহর: কি?
দ্বীপ প্রহরের হাত এনে নেহার হাতে দিয়ে দিলো।
দ্বীপ: যা ডান্স কর।
নেহা দ্বীপের এমন কাজে অনেক রেগে গেলো। প্রহর চেয়েছিলো দিয়াকে নিয়ে ডান্স করতে। তা আর করতে পারলো না। তবুও প্রহর মুচকি হেসে নেহাকে নিয়ে গেলো। রোদ অনুর হাত ধরতে গেলেই দ্বীপ গিয়ে পেছন থেকে অনুর হাত শক্ত করে ধরলো। অনু রোদের সাথে কথা বলতে ছিলো। হঠাৎ ওর হাত ধরায় ও চমকে উঠে পেছনে তাকালো। দ্বীপকে দেখে হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করে।
অনু: আরে কি করছো ছারো।
রোদের ও খুব রাগ উঠতেছে দ্বীপের এমন কাজে ও হাত ধরার আগেই দ্বীপ ধরে ফেললো। দ্বীপ কোনো কিছুর পরোয়া না করে অনুকে টান দিয়ে ওর কাছে নিয়ে আসে আর ডান্স এর এখানে নিয়ে যায়।
অনু: সবসময় আমার সাথে তুমি কেনো জোর করো?
দ্বীপ: এটা জোর না। অধিকার।
অনু: কিসের অধিকার বলো। তুমি তো আমাকে বলেই দিয়েছো ভালোবাসো না আমায় তাহলে……
দ্বীপ: এখন তোমাকে নিয়ে না আসলে রোদের সাথে ডান্স করতে।
অনু: হুম। করতাম তাতে তোমার কি।
দ্বীপ: আমি থাকতে এটা হতে দেবো না।
এবার অনু দ্বীপকে জরিয়ে ধরলো আর বললো,”আমি জানি দ্বীপ তুমিও আমায় ভালোবাসো তাহলে কেনো স্বিকার করো না। প্লিজ একবার বলো না।”
দ্বীপ: ভুল জানো।
রোদ দুর থেকে এসব দেখছে আর রাগে জ্বলছে। একটার পর একটা ড্রিংস এর গ্লাস খালি করছে। দ্বীপ অনুকে জোর করে নিয়ে যাওয়ায় যতটা না রাগ উঠেছে তার থেকে বেশি কষ্ট পাচ্ছে অনু দ্বীপকে জরিয়ে ধরায়।
রোদ: কাল ফ্রাইডে। এই দিনটারই ওয়েট করছিলাম আমি। কালই ভাইয়া মা তোমাদের বাসায় যাবে। যাই হয়ে যাক অনু। আমি তো তোমাকেই বিয়ে করবো। জাস্ট ওয়েট এন্ড সি।
।
অনু: ওহ তাই ভুল জানি। তাহলে কিসের অধিকারে আমার সাথে এসব করো আজ তোমায় বলতেই হবে।
দ্বীপ: তা তুমি বুঝবে না।
অনু: আর আমি বুঝতে চাই ও না। ছারো আমায়।
দ্বীপ: ছারলে কি করবে। রোদের কাছে যাবে।
অনু: হুম যাবো ওর সাথে ডান্সও করবো।
দ্বীপ আরো শক্ত করে অনুকে ধরে।
।
ঈশান, আবির অভি আর শুভর আলাদা আলাদা ভিডিও করছিলো ডান্স এর। হঠাৎ দিয়া সামনে চলে আসে।
ঈশান: কি?
দিয়া হাত এগিয়ে দিয়ে বলে,”ডান্স।”
ঈশান: 😮স্বপ্ন দেখছি না তো।
দিয়া: 😡আসবে কিনা বলো।
ঈশান: এতো বড় সুযোগ কি মিস করা যায়। চলো।
ঈশানও দিয়ার হাত ধরে ডান্স এর এখানে যায়। এটা প্রহরের চোখ এরায় না। প্রহর মনে মনে অনেক কষ্ট পায়।
।
দ্বীপ শক্ত করে ধরায় অনু অনেক ব্যাথা পাচ্ছে তবুও কিছু বলছে না। তারপরো শান্তি লাগছে। ভালোবাসার মানুষটা সাথে থাকলে কোনো কষ্টই কষ্ট মনে হয় না। অনু চোখ বন্ধ করে দ্বীপের কলার শক্ত করে ধরে। দ্বীপ বুঝতে পারে অনু হয়ত ব্যাথা পাচ্ছে তাই ও হাতটা হালকা করে দেয়। অনু চোখ খুলে দ্বীপের দিকে তাকায়।
দ্বীপ: সরি।
অনু: শরিরের কষ্ট থেকে ও মনের কষ্টটা অনেক বেশি।
এতক্ষণ দ্বীপ অনুর দিকেই তাকিয়ে ছিলো। অনুর এই কথায় দ্বীপ অনুর থেকে চোখ সরিয়ে নিলো। অনুর চোখে পানি টলমল করছে। দ্বীপ ওর হাত দিয়ে অনুর চোখের পানি মুচে দিলো।
দ্বীপ: ডোন্ট ক্রাই।
ডান্স শেষে,,
দ্বীপ অনুকে ছেড়ে দিতেই অনু চলে যায় অন্যদিকে। আর দ্বীপ আবার গিয়ে বসে পরে। এবার প্রহর মাউস নিয়ে এনাউন্সমেন্ট করলো ইনগেইজমেন্ট এর অনুষ্টান শুরু করা হবে। সিমি আর শুভকে মধ্যেখানে আনা হলো। শুভর মা এসে শুভর হাতে একটা রিং দিলেন আর সিমির মা সিমির হাতে রিং দিলেন।
প্রথমে শুভ সিমিকে রিং পরালো তারপর সিমি শুভকে। রিং পরানোর পর সবাই হাত তালি দিলো।
রাত ১০টা,
আস্তে আস্তে মানুষ যাওয়া শুরু করে দিয়েছে। অনু দিয়া তিথি মায়রা সিমির রুমে বসে আড্ডা দিচ্ছে। আর ছেলেরা ড্রয়িংরুমে বসেই গল্প করছে।
অনুকে ওর মা ফোন করে বলেছেন জলদি চলে আসতে উনারা ওয়েট করছেন।
অনু: অনেক রাত হয়ে গেছে এবার মনে হয় যাওয়া উচিৎ।
দিয়া: চল নিচে। গিয়ে দেখি ওরা কি করছে। শুভরা কি চলে গেছে?
তিথি: না আবির বলেছে চলে যাবে এখন।
দিয়া: তাহলে নিচে চল।
সিমি: আমি যাবো না।
মায়রা: আপনি এখানেই বসে থাকেন আপনাকে আর অসতে হবে না।
ওরা সবাই নিচে আসলো। এসে দেখে শুভ এরা যাওয়ার প্রস্তুতিই নিচ্ছে। অনু গিয়ে প্রহরের মাকে বললো,”আন্টি আমি এখন চলে যাবো। মা ফোন করে ছিলো।”
প্রহরের মা: কি করে যাবি?
অনু: আমি আংকেলকে এখনই ফোন দিয়ে গাড়ি নিয়ে আসতে বলছি।
দ্বীপ: আমি ড্রপ করে দেবো।
হঠাৎ দ্বীপের এমন কথায় সবাই দ্বীপের দিকে তাকালো। নেহা একটু দুরে দারিয়ে ছিলো দ্বীপের কথায় দ্বীপের কাছে এসে বললো,”দ্বীপ তুমি কিন্তু এটা করতে পারো না। তুমি আমাকে…..”
দ্বীপ: জাস্ট ড্রোপ করবো। অন্যকিছু তো না।
অনু: নো থ্যাংকস। আমি যেথে পারবো।
দ্বীপের মা: কি যেথে পারবি। দ্বীপ যখন বলেছে। তাহলে ওর সাথেই চলে যা।
অনু: কিন্তু আন্টি……
দ্বীপ: চলো।
দ্বীপ চলো বলেই অনুর আর কোনো কথা না শুনেই বাইরের দিকে হাটা দিলো। অনু সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে দ্বীপের পিছন পিছন চলে গেলো।
গাড়িতে বসে সিটবেল্ট লাগালো না। অনু ভেবেছিলো দ্বীপ নিজের হাতে সিটবেল্টটা লাগাবে। কিন্তু,,
দ্বীপ সামনে দিকে তাকিয়ে বললো,”সিটবেল্ট লাগাও।”
অনু: 😐হুহ।
অনু সিটবেল্ট লাগাতেই দ্বীপ গাড়ি স্টার্ট দিলো। সারা রাস্তা কেউ কোনো কথা বলে নি। অনু শুধু ভেবেছে। কেনো দ্বীপ এমন করছে। মুখে তো বলে ভালোবাসে না বাট কাজ গুলো এমন করে মনে হয় কতো ভালোবাসে। কেনো করে দ্বীপ এরকম? সারারাস্তা অনু শুধু দ্বীপের কথাই ভেবেছে আর আড়চোখে দ্বীপকে দেখেছে। বাট দ্বীপ সামনের দিকে তাকিয়ে গাড়ি চালিয়েছে একবারো অনুর দিকে তাকায়নি। এই জন্য অনুর মাথা অনেক গরম হয়ে গেছে। অনুর বাসার সামনে এসে দ্বীপ গাড়ি থামালো। অনু গাড়ির দরজাটা খুলে বের হয়ে টাস করে আবার দরজাটা লাগিয়ে দিলো। অনু এটা করে বুঝাতে চেয়েছে অনু অনেক রেগে আছে বাট দ্বীপ ওদিকে ভ্রুক্ষেপ ও করলো না। এতে অনু আরো বেশি রেগে গেলো। হনহন করে ভেতরে চলে গেলো। অনু ভেতরে চলে যেথেই দ্বীপ মুচকি হেসে গাড়ি ঘুরিয়ে চলে গেলো।
।
আবির তিথিকে আর অভি মায়রাকে ওদের বাসায় ড্রপ পরে দিলো। ঈশান দিয়া নেহা আর দ্বীপের মা বাবা একসাথে চলে গেছেন বাসায়।
অনু বাসায় ডুকতেই ড্রয়িংরুমে ওর মা বাবাকে দেখতে পেলো। তারা কি একটা নিয়ে হয়তো কথা বলছিলেন অনুকে আসতে দেখে উনারা চুপ হয়ে গেলেন।
অনুর মা: তুই এসে গেছিস। আমরা তর জন্যই ওয়েট করছিলাম।
অনু: তোমরা কিছু একটা নিয়ে হয়তো কথা বলছিলে আমি আসতেই থেমে গেলে। কি নিয়ে কথা বলছিলে।
অনুর বাবা: তেমন কিছু না। তুমি ফ্রেস হতে যাও। কাল তোমাকে সব বললো।
অনু: বাবা তুমি জানো ওয়েট জিনিসটা আমার পছন্দ না।
অনুর মা: কিন্তু তকে তো ওয়েট করতেই হবে। কাল বলবো। আর আমরা তর মা বাবা। তর খারাপ কিছু অবশ্যই চাইবো না। আমাদেরকে বিশ্বাস করিস তো?
অনু: কি যে বলো। এখানে অবিশ্বাস করার কথা আসছে কোথা থেকে। তোমরা যা করতে বলবে আমি চোখ বন্ধ করে তা করে নেবো।
অনুর বাবা: তাহলে এখন তুমি রুমে যাও। কাল সব জেনে যাবে।
অনু: ওকে।
অনু রুমে যেথেই অনুর মা আবার চিন্তিত হয়ে অনুর বাবাকে বললেন,”ও রাজি হবে তো এই বিয়েতে। যদি না হয়।”
অনুর বাবা: হবে। আমি আমার মেয়েকে চিনি। ওই ছেলেটা খুব ভালো। অনুকে খুব ভালো রাখবে। আমি যেমন ছেলে চেয়েছিলাম ও ঠিক তেমনই।
অনুর মা: ও তো দ্বীপকে ভালোবাসে।
অনুর বাবা: 😡তুমি জানো আমি আমার মেয়ের কষ্ট সহ্য করতে পারি না। ওই ছেলেটার সাহস কি করে হয়েছে আমার মেয়েকে ফিরিয়ে দেওয়ার। তোমার জন্য চুপ আছি নয়তো……. ওই ছেলেটা যদি নিজ থেকে এসে বলে অনুকে ও ভালো রাখবে ভালোবাসে তাহলেই আমি ওসব মেনে নেবো।
বাট এটা পসিবল হবে না। এই ছেলেটা মনে হয় না আসবে। তাই আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অনু রাজি না হলে আমরা বুঝাবো।
অনুর মা: আচ্ছা এটা নিয়ে কাল কথা বলবো। এখন চলো ডিনার করবে। অনুর চিন্তায় তো খেলে ও না।
অনুর বাবা: হুম চলো। ও তো মনে হয় খাবে না।
অনুর মা: হুম।
অনুর বাবা মা ডিনার করে রুমে চলে গেলেন। আর অনুর চোখে ঘুম নেই। আজকের সব কিছুই অনু ভাবছে। দ্বীপের সাথে কাটানো মুহূর্ত গুলা।
অনুর মন কু ডাকছে। ওর মনে হচ্ছে সামনে এমন কিছু ঘটতে চলেছে যার জন্য ও দ্বীপের থেকে আরো অনেক দুরে চলে যাবে। এসব ভাবতে ভাবতেই অনু একসময় ঘুমিয়ে পরে😴।
।
।
চলবে?🙄🙄
#ভালোবাসার_অধিকার❤❤
লেখা- পূজা
পর্ব- ২১
।
।
পরেরদিন,,
অনু ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে নিচে যায় গিয়ে দেখে ফুলি(কাজের মেয়েটা) ঘড় পরিষ্কার করছে ঝারছে। আর অনুর মা রান্না ঘরে একনো কাজ করছেন। আর অনুর বাবা ড্রয়িংরুমে বসে চা খাচ্ছেন আর পেপার পরছেন। অনু গিয়ে ওর বাবার পাশে বসলো। আর ওর বাবাকে জিজ্ঞেস করলো,”আজ কি আমাদের বাসায় কেউ আসবে। ঘড় ঘুছানো হচ্ছে কেনো?”
অনুর বাবা: হুম। তোমাকে দেখতে আসবে।
অনু: কিইইইইইই?
অনুর বাবা: আমার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনো তারপর রিয়েক্ট করো।
অনু ওর বাবার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
অনুর বাবা: আরো দুদিন আগে তোমার বিয়ের প্রস্থাব নিয়ে একটা ছেলে আসে আমার অফিসে। “রোদ্দুর” ওর ছোট ভাইয়ের জন্য। রোদ্দুরকে আমি খুব ভালো করে চিনি। ওর বাবা ৩বছর আগে মারা যান। ওর বাবার সাথে খুব ভালো রিলিশন ছিলো আমার বিজন্যাস এর ক্ষেত্রে। ওর বাবা মারা যাওয়ার পর রোদ্দুর অফিসে জয়েন করে আর ওর সাথে ও খুব ভালো সম্পর্ক হয় ওর ভাই ওকে কাজে হেল্প করে। যেকোনো প্রয়োজনে ওর হেল্প পাই আমি। তো দুদিন আগে ও আমার কাছে আসে। আর ওর ছোট ভাই এর কথা বলে। ওর ভাই তোমাকে নাকি খুব পছন্দ করে। রোদ্দুরের ফ্যামিলি খুব ভালো। তাই আমি না করতে পারি নি। আমার বিশ্বাস আছে তোমার উপর তাই তোমাকে না বলেই ওদের আজ আসতে বলেদিয়েছি।
অনু: বাবা তোমাকে একটা কথা বলি নি আমি।
অনুর বাবা: আমি জানি। তোমার মা আমাকে সব বলেছে। ছেলেটা তো তোমাকে ফিরিয়ে দিয়েছে। যদি ফিরিয়ে না দিতো তাহলে আমি নিঃসন্দেহে মেনে নিতাম। এখন তোমাকেও আমার কথা মানতে হবে। ছোট থেকে আজ পর্যন্ত তোমার কোনো চাওয়া আমি অপূর্ন রাখি নি।
অনু: আমি দ্বীপ ছাড়া অন্য কাউকে কখনো ভালোবাসতে পারবো না।
অনুর বাবা: পারবে বিয়ের পর সব ঠিক হয়ে যাবে। ও তোমাকে ভালোবাসে আর তোমাকে ঐছেলেটাকেই বিয়ে করতে হবে। আর আজ আমার মানসম্মান তুমি নষ্ট করবে না। ওদের সামনে ভালোভাবেই আশা করি আসবে।
অনু: বাবা আমি পারবো না😭
অনুর বাবা: আমি আমার মেয়ের কষ্ট কোনোভাবেই দেখতে পারবো না। যখন তোমার মায়ের মুখে সব শুনি তখনি ডিসিশন নিয়ে নিয়েছি তোমার বিয়ে আমি খুব তারাতারি দেবো। তাও এমন ছেলের সাথে যে আমার মেয়েকে অনেক ভালোবাসবে। আর ঐছেলেটার সাথে আমি দেখা করেছি ছেলেটা একদম আমার মনের মতো।
অনু: 😭
অনুর বাবা গিয়ে অনুকে জরিয়ে ধরলেন।
অনুর বাবা: মামনি প্লিজ কান্না করো না। তোমার ভালোর জন্যই এসব করছি আমি। দেখো তুমি খুব সুখি হবে। ঐ ছেলেটাকে ভুলে যাও। ও তো তোমাকে ভালোবাসে না। তাহলে কেনো ওর জন্য কষ্ট পাবে।
অনু: আমি জানি দ্বীপ ও আমাকে ভালোবাসে😭
অনুর বাবা: ওকে। আমি তোমাকে একটা শেষ সুযোগ দেবো। আজ দেখতে আসবে বলে এই নয় আজই বিয়ে। বিয়ের আগ পর্যন্ত তোমার কাছে টাইম থাকবে। ততদিনে ছেলেটি যদি তোমাকে এক্সেপ্ট করে নেয় তোমার কাছে ফিরে আসে তাহলে ঠিক আছে। আমি সব মেনে নেবো।
অনু ওর বাবার দিকে অবাক হয়ে একবার তাকালো তারপর এখান থেকে উঠে ওর রুমে চলে গেলো গিয়ে বালিশে মুখ গুজে ও কাদতে শুরু করলো।
অনু: দ্বীপ কেনো আমার সাথে এরকম করছো। কি করেছি আমি। তোমাকে ছাড়া অন্য কাউকে কিভাবে এক্সেপ্ট করবো আমার লাইফে। পারবো না। প্লিজ ফিরে এসো তুমি।
অনু ফোন বের করে দিয়াকে ফোন দেয়। কিছুক্ষণ পর দিয়া ফোন রিসিভ করে।
দিয়া: হ্যা বল।
অনু: দিয়া আজ আমায় পাত্রপক্ষ দেখতে আসবে😭
দিয়া: উয়াটটট!!
অনু: প্লিজ দ্বীপকে বল না আমি পারবো না অন্য কাউকে ভালোবাসতে। খুব ভালোবেসে ফেলেছি দ্বীপকে।
দিয়া: অনু তুই কান্না বন্ধ কর। আমি একনি ভাইয়ার সাথে কথা বলছি। কিছু হবে না। তুই একটু শান্ত হো।
অনু দিয়ার ফোন কেটে একটু জোরেই কান্না করে দেয়। অনুর মা রুমে এসে অনুকে এই অবস্থায় দেখে তারাতারি অনুর কাছে গিয়ে অনুকে জরিয়ে ধরেন।
অনুর মা: তুই এভাবে কাদছিস কেনো কি হয়েছে?
অনু: আমি অন্য কাউকে বিয়ে করতে পারবো না মা😭
অনুর মা: ওহ! এই ব্যাপার।তার জন্য কাদছিস কেনো? তর বাবা তো বলেছে বিয়ের আগ পর্যন্ত তর কাছে টাইম আছে। দ্বীপের সাথে কথা বল। দ্বীপ যদি তর লাইফে ফিরে আসে তাহলে ভালো নয়ত তকে এটা বুঝতে হবে দ্বীপ তকে কখনো ভালোবাসে নি। আর যে ভালোবাসে নি তকে। তার জন্য তুই কেনো কষ্ট পাবি। সব কিছু ভুলে ঐ ছেলেটাকে বিয়ে করবি।
অনু: কিন্তু….
অনুর মা: কোনো কিন্তু না। তর কাছে একটা শেষ সুযোগ আছে। এতে হয় দ্বীপ তর লাইফে ফিরে আসবে নয়ত সারাজীবনের জন্য তর লাইফ থেকে চলে যাবে।
অনু এখন নিঃশব্দে ওর মাকে জরিয়ে ধরে কাদছে।
অনুর মা: কান্না বন্ধ কর। তর জন্য যা ভালো তাই হবে দেখিস। এখন ফ্রেস হয়ে নে। এখন ১১টা বাজে। ওরা ১২টায় আসবে।
অনুর মা এটা বলে চলে গেলেন। অনু গেলো শাওয়ার নিতে।
এদিকে দিয়া দ্বীপকে অনেকক্ষণ ধরে ফোন দিচ্ছে দ্বীপ ফোন ধরছেই না। আবিরকে ফোন দিলো আবির ও ফোন ধরছে না। এবার অভিকে দিলো। অভি ফোন রিসিভ করলো।
দিয়া: হ্যালো অভি। ভাইয়া কোথায়।
অভি: দ্বীপ তো কনফারেন্স রুমে কিছু ইমপর্টেন্ট কাজে আছে। কেনো?
দিয়া: ভাইয়ার সাথে খুব দরকার ছিলো।
অভি: বিকেলের আগে তো ওকে পাবি না। দ্বীপের সাথে আবির আর শুভ ও আছে।
দিয়া: তুই ভাইয়াকে মনে করে বলবি কাজ শেষ হলেই যেনো আমাকে ফোন দেয়। অনেক বেশি দরকার।
অভি: কিছু হয়েছে?
দিয়া: একনো হয়নি হবে। তুই প্লিজ ভাইয়াকে বলিশ।
অভি: ওকে।
দিয়া অভির ফোন কেটে জলদি রেডি হয়ে নেয় অনুর বাসায় যাওয়ার জন্য।
।
অনু ওয়াশরুম থেকে বেরতেই অনুর মা রুমে আসেন একটা শাড়ি নিয়ে।
অনুর মা: আয় তকে এই শাড়িটা পরিয়ে দেই।
অনু: মা প্লিজ আমি এইসব পরবো না।
অনুর মা: তর সব কাজে আমরা তর সাথে থেকেছি কখনো না করি নি যে এটা করিস না। আজ আমরা তর কাছে একটা জিনিস চাইছি তাও তর খুশির জন্য তুই আমাদের ফিরিয়ে দিচ্ছিস।
অনু: (ইমোশনাল ব্রেকমেইল) দাও পরিয়ে।
অনু চোখ বন্ধ করে দ্বীপের কথা ভাবছে আর অনুর মা অনুকে শাড়ি পরিয়ে দিচ্ছেন। শাড়ি পরানো শেষ হতেই অনুর মা অনুকে ড্রেসিং টেবিলের সামনে নিয়ে যান। চুল আচরিয়ে দেন। চোখে একটু কাজল দিয়ে দেন আর ঠোটে হালকা লিপষ্টিক। এতেই অনেক কিউট লাগছে। অনু একবার নিজেকে দেখলো। অনেকদিন পর শাড়ি পরেছে। ভালোই লাগছে।
অনুর মা: শুন তুই এখানে বসে থাক। উনারা রাস্তায় এখনি এসে যাবেন। উনারা আসলে আমি তকে নিতে আসবো। অনু কিছু বললো না। চুপচাপ বসে রইলো। ওদের জায়গায় দ্বীপের ফ্যামিলি হলে হয়তো ভালো হতো।
কিছুক্ষণ পর রোদ্দুর রোদ ওদের মা আর ভাবি অনুদের বাসায় ডুকলেন। অনুর বাবা ওদের ড্রয়িংরুমে এনে বসালেন।
রোদ্দুর: আংকেল কেমন আছেন? আপনাদের কষ্ট দিয়ে ফেলছি নাতো।
রোদের মা: আমার ছেলেটাকে অনেক মেয়ে দেখালাম কাউকেই পছন্দ হলো না। হঠাৎ করেই আপনার মেয়ের কথা এসে বললো। আমরা ও আর না করতে পারলাম না। দেখা করতে চলে এলাম।
অনুর বাবা: হুম। রোদ্দুর আমাকে সব বলেছে।
রোদ শুধু উপরে তাকাচ্ছে অনুকে দেখার জন্য। অনুর বাবা বিষয়টা লক্ষ্য করলেন।
অনুর বাবা: একটু পর অনুকে ওর মা নিয়ে আসবে।
অনুর বাবার কথা শুনে রোদ লজ্জায় মাথা নিচু করে নিলো।
অনুর বাবা: এতে লজ্জার কিছু নেই।
হঠাৎ আবার কলিংবেল বেজে উঠে। ফুলি গিয়ে দরজা খুলে দেয়। দিয়া এসেছে। দিয়া ড্রয়িংরুমে এসে রোদকে দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। দিয়ার চোখ বড় বড় হয়ে গেছে।
অনুর বাবা: দিয়া তুমি? ভালো করেছো এসে। অনু উপরে আছে। যাও তো ওকে নিয়ে এসো।
দিয়া কিছু না বলে দৌরে উপরে চলে যায়। উপরে গিয়ে দেখে অনু মাথা নিচু করে বিছানায় বসে আছে।
দিয়া: তুই তো আমাকে বললি না। রোদের সাথে ফ্রেন্ডশিপ ছাড়া ও অন্য কোনো রিলেশন আছে তর।
দিয়া একটু রেগেই কথাটা বলে। হঠাৎ দিয়ার কন্ঠ শুনে অনু চমকে উঠে মাথা তুলে তাকায়।
অনু: তুই?
দিয়া: হুম। আগে আমার প্রশ্নের উওর দে। আমাকে বললি না কেনো রোদের সাথে তর আরো একটা রিলেশন আছে।
অনু: তুই এসব কি বলছিস কিসের রিলেশন।
দিয়া অনুর হাত ধরে টেনে বাইরে নিয়ে আসে। উপর থেকেই অনুকে আঙ্গুল দিয়ে রোদকে দেখায়। অনু রোদকে দেখে পুরো হা হয়ে যায়। “এখানে রোদ কি করছে” অনু ভাবছে।
অনু: আরে এখানে রোদ কি করছে?
দিয়া: যে ছেলেটা তকে দেখতে এসেছে ও রোদই।
অনু: উয়াট? আমি তো রোদকে ফ্রেন্ড ছাড়া অন্য কিছু ভাবি নি। তাহলে….
দিয়া: তাহলে রোদের সাহস কি করে হয় তর বাসায় বিয়ের প্রস্থাব দেওয়ার। আবার দেখতে ও আসছে।
অনু: দিয়া আমি সত্যি বলছি। তুই আমাকে ভুল বুঝছিস। আমার সাথে নিচে চল। সব ক্লিয়ার করছি।
অনু দিয়াকে নিয়ে নিচে যায়। অনুর মা এগিয়ে এসে অনুকে বলেন,”উচু গলায় কথা বলবি না। আর মাথা নিচু রাখবি”
অনুর ওর মাথা শুনে খুব রাগ হচ্ছে। বাট কিছু বলতে ও পারছে না ওর মা বাবা কষ্ট পাবেন। অনু ও মায়ের কথা মতো মাথা নিচু করে সবার সামনে গেলো অনুর সাথে সাথে দিয়া ও আসলো। অনু গিয়ে রোদের পাশে বসলো। আর রোদকে আস্তে করে বললো,”এসব কি রোদ।”
রোদ: তোমাকে আমার প্রথম দেখায়ই ভালো লেগে যায়। তাই ভাবলাম দেরি করে কি হবে বিয়ের প্রস্থাব তোমার বাসায় পাঠিয়ে দেই।
অনু: আমি দ্বীপকে ভালোবাসি। তোমাকে না। তোমাকে শুধু আমার খুব ভালো বন্ধু ভেবেছি। আর তুমি……
রোদ কিছু বলতে যাবে তার আগেই রোদের ভাবি এসে অনুর পাশে বসলেন আর বললেন,”বাহ রোদের পছন্দ তো খুব ভালো। খুব মিষ্টি মেয়েকেই পছন্দ করেছে।”
রোদের মা: একদম ঠিক বলেছো। আমাদের তো ওকে খুব ভালো লেগেছে। এবার আপনারা বলুন। আমাদের তরফ থেকে তো হ্যা।
অনুর বাবা: রোদকে আমার ও পছন্দ হয়েছে। না বলার কোনো কারনই নেই।
রোদ্দুর: তাহলে আংকেল আজই রিং পরিয়ে দেই। আমরা চাই বিয়েটা খুব জলদি হয়ে যাক।
ওদের কথা শুনে অনুর বাবা অনুর মার দিকে তাকালেন। অনুর মা ইশারা দিয়ে অনুকে দেখালেন।
অনুর বাবা: আচ্ছা তোমরা যা বলবে তাই হবে।
অনু ওর বাবার কথা শুনে অবাক হয়ে ওর বাবার দিকে তাকালো। চোখে পানি টলমল করছে। সবার সামনে কিছু বলতে ও পারছে না।
রোদের মায়ের হাতে রোদের ভাবি একটা রিং দিলেন অনুর মা উপর থেকে রিং নিয়ে আসলেন। দিয়া শুধু দারিয়ে দারিয়ে এসব দেখছে। কিছুই করতে পারছে না। অনুর মা অনুর কাছে এসে রিংটা ওর হাতে দিলেন।
অনুর মা: এই রিংটা পরিয়ে দে রোদকে।
অনু ছলছল চোখে ওর মায়ের দিকে তাকালো অনুর মা অনুর চোখ মুচে দিয়ে বললেন রিং পরানোর জন্য। রোদ আগে পরিয়ে দিলো। অনু পরাচ্ছে না দেখে অনুর মা অনুর হাত নিয়ে পরিয়ে দিলেন। রিং পরাতেই অনু এখান থেকে উঠে দৌড়িয়ে উপরে চলে গেলো অনুর পিছন পিছন দিয়া ও গেলো। রোদের ফ্যামিলি ভেবেছে অনু লজ্জা পেয়ে উপরে চলে গেছে।
রোদ্দুর: সামনের সপ্তাহে বিয়ের খুব ভালো একটা ডেইট আছে। আংকেল আপনার যদি কোনো আপত্তি না থাকে…..
অনুর মা: এতো জলদি।
রোদ্দুর: আসলে অন্টি ১৩দিন পর অফিসের কাজে ১মাসের জন্য আমাকে একটু বাইরে যেথে হবে। আংকেল এটা জানেন। আমি চাইছিলাম আমি যাওয়ার আগে বিয়েটা দিয়ে যেথে। কারন আমার সাথে করে মিরাকে(রোদ্দুরের ওয়াইফ) নিয়ে যাবো। মা বাসায় একা থাকবেন। অনু থাকলে ভালো হতো।
অনুর বাবা: বুঝেছি। তোমরা যে ডেইট ঠিক করেছো সেই ডেইট এই বিয়ে হবে।
রোদের মা: অনুর সাথে একবার এই বিষয়ে কথা বললে ভালো হতো না। আর রোদের সাথে আলাদা কথা বলতে দিলে ও ভালো হতো।
রোদ: মা তোমাকে তো বলেছিলাম অনুর সাথে আমার যোগাযোগ আছে। অনুর সাথে আমার প্রতিদিনই কথা হয়।
(রোদ এখন অনুর সাথে কথা বলতে চাইছে না কারন রোদ জানে অনু এখন কি বলবে)
অনুর বাবা: হুম। আলাদা কথা না বললে ও হবে। আমরা ওর সাথে কথা বলেছি।
।
অনু রুমে গিয়ে শুধু কাদছে কাদতে কাদতে হেচকি উঠে গেছে।
দিয়া: আমি এই ভয়টাই পাচ্ছিলাম। আর এটাই সত্যি হলো।
অনু: আমি দ্বীপকে ছাড়া থাকতে পারবো না। আমি দ্বীপের কাছে যাবো😭।
দিয়া: ভাইয়ার সাথে বাসায় গিয়েই কথা বললো। এখন ভাইয়া একটা কাজে আছে তাই কথা হয়নি।
অনু: আমি ওর সাথে কথা বলবো। ও যদি বাবাকে এসে বলে ও আমাকে বিয়ে করতে চায় তাহলে বাবা রাজি হয়ে যাবে। নয়ত রোদকেই আমার বিয়ে করতে হবে।
দিয়া: হুম,, বুঝেছি। ভাইয়াটা ও না। ওর মনে যে কি চলছে কিছুই বুঝতে পারছি না।
অনু: আমি অন্য কাউকে মরে গেলে ও বিয়ে করবো না😭
দিয়া: এখন হো রোদের সাথে ক্লোজ। আমার তো ওকে প্রথম থেকেই অপছন্দ ছিলো।
দিয়া অনুর সাথে ঘন্টা খানের এর মতো ছিলো তারপর ও বাসায় চলে গেলো। ওকে এখন দ্বীপের সাথে এই ব্যাপারে কথা বলতে হবে।
দিয়া বাসায় গিয়ে আবার দ্বীপকে কল দেয় এবারো ফোন ধরে না। দিয়ার মাথা গরম হয়ে যায়। এতো সময় ধরে কি এমন কাজ করছে। দিয়া বিছানায় মাথায় হাত দিয়ে বসে পরে।
পুরো ৩০মিনিট পর দ্বীপ কল বেক করে।
দিয়া ফোন রিসিভ করেই বললো,”দরকারের সময় তকে পাওয়া যায় না কেনো😡।”
দ্বীপ: আরে কি হয়েছে এতো রেগে আছিস কেনো?
দিয়া: রেগে থাকার মতো ঘটনা ঘটলে, রেগে থাকবো না😡
দ্বীপ: কি হয়েছে?
দিয়া: আজ অনুকে রোদের ফ্যামিলি দেখতে এসেছিলো। রিং পরিয়ে গেছে। সামনের সপ্তাহে বিয়ে ও ঠিক হয়ে গেছে।
দ্বীপ: whattttttt
দিয়া: কখন থেকে তকে এটা জানানোর জন্য ফোন দিচ্ছি তকে তো পাওয়াই যাচ্ছে না। কাদতে কাদতে অনুর অবস্থা খারাপ।
দ্বীপ: অনু এই বিয়েতে রাজি না।
দিয়া: ভাইয়া তুই কি জানিস না অনু তকে কতো ভালোবাসে। তকে ছাড়া অন্য কাউকে ও কিভাবে বিয়ে করবে।
দ্বীপ: ওর ফ্যামিলি জোর করে ওকে বিয়ে দিতে চাচ্ছে কেনো?
দিয়া: এই প্রশ্নটা না তর মুখে মানায় না। তর জন্যই সব হচ্ছে।
দ্বীপ: মানে?
দিয়া: আমি বলেছিলাম না অনুর মা বাবা এসব জানলে উনারা মেনে নেবেন না এসব। অনু যাতে তর কথা ভেবে কষ্ট না পায় তাই এইসব করছেন উনারা।
দ্বীপ: অনু কি বলেছে?
দিয়া: শুধু কাদছে আর বলছে তকে ছাড়া অন্য কাউকে ভালোবাসতে পারবে না। মরে যাবে তবুও বিয়ে করবে না। তর জন্য আজ অনুর এই অবস্থা।
দ্বীপ কিছুই বলছে না দ্বীপ কি বলবে বুঝতে পারছে না। দিয়া আবার বললো,”অনু তকে সত্যি অনেক ভালোবাসে ভাইয়া প্লিজ ওকে এতো কষ্ট দিস না।”
দ্বীপ: তকে সেদিন বলেছিলাম তো কিছু প্রবলেম আছে। আমাকে আর এক সপ্তাহ সময় দে।
দিয়া: ওকে। এক সপ্তাহ পর অনুর বিয়েতে আসিস।
দিয়া রেগে ফোন কেটে দেয়। দ্বীপ টেনশনে পরে যায়। কি করবে চারদিকে প্রবলেম আর প্রবলেম।
দ্বীপ: হ্যালো আংকেল। আপনি কবে আসবেন।
অন্যপাশে: ??
দ্বীপ: আপনাকে আমি কিভাবে বুঝাবো অনেক লেইট হয়ে যাবে।
অন্যপাশে: ??
দ্বীপ: আই নো কাজ কমপ্লিট করেই আসতে হবে। বাট….
অন্যপাশে: ??
দ্বীপ: ওকে বাট ঐদিনই আপনাকে ঠিক টাইমে আসতে হবে। আর এক সেকেন্ড ও লেইট করতে পারবেন না।
অন্যপাশে: ??
দ্বীপ: ওকে। বাই।
দ্বীপ ফোন কেটে এক গ্লাস পানি খেলো এসির পাওয়ার বারিয়ে দিয়ে চেয়ারে বসলো। মাথাটা ব্যাথা করছে। এতো কাজ তার উপর এতো টেনশন।
দ্বীপ ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখে অনু ফোন দিতেছে। দ্বীপ ফোনটা রিসিভ করলো। রিসিভ করতেই অনুর কান্নার শব্দটা শুনতে পেলো।
অনু: দ্বীপ কখন থেকে তোমায় ফোন দিচ্ছি ফোন ধরছিলে না কেনো। জানো আজ আমাকে ওরা দেখতে এসেছিলো😭তুমি আমাকে বিয়ে না করলে রোদের সাথে আমার বিয়ে দিয়ে দেবে।
দ্বীপ: হুম জানি দিয়া বলেছে।
অনু: তুমি জেনে ও চুপ আছো কেনো। তুমি কি সত্যি আমাকে ভালোবাসো না?
দ্বীপ: ??
অনু: কিন্তু আমি তো তোমাকে ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করতে পারবো না দ্বীপ। তুমি বলো আমি এখন কি করবো।
দ্বীপ: বিয়ের প্রিপারেশন নাও।
অনু: কিইইই? এটা তুমি বলছো। বাবা বলেছে তুমি যদি নিজে এসে বলো তুমি আমাকে বিয়ে করতে চাও আমাকে ভালোবাসো তাহলে বাবা সব মেনে নেবে। প্লিজ একবার এসে বাবাকে বলো না।
দ্বীপ: আমি তোমার সাথে পরে কথা বলছি। এখন আমার খুব ইমপর্টেন্ট একটা কাজ আছে।
অনু: প্লিজ ফোন কেটো না হ্যালো দ্বীপ…..
দ্বীপ ফোন কেটে দিলো। এদিকে অনু আবার কাদছে। ফোনের দিকে তাকিয়ে। দ্বীপ ফোনটা এভাবে কেটে দিলো।
দ্বীপ সবাইকে বলে বাসায় চলে গেলো কাজে আর মন বসবে না।
দ্বীপ রুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে বিছানায় বসতেই নেহা আসলো এসে দ্বীপের পাশে বসলো।
নেহা: দ্বীপ শুনেছি অনুর নাকি বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। সামনের সপ্তাহে বিয়ে। আমাদের কবে বিয়ে হবে।
দ্বীপ: নেহা এখন অফিস থেকে জাস্ট এসেছি। এসব নিয়ে পরে কথা বলি। আর আমি বলেছিলাম না তোমাকে বিজন্যাসটা ভালোভাবে দার করানোর পর বিয়ে করবো।
নেহা: ওকে। তোমার জন্য আমি সারাজীবন ওয়েট করতে পারবো। আচ্ছা আমি তোমার জন্য কফি নিয়ে আসছি। তুমি রেষ্ট নেও।
নেহা খুশি হয়ে দ্বীপের জন্য কফি বানাতে চলে যায়। আর দ্বীপ বিছানায় শুয়ে পরে।
দিয়া কিছুষণ পর দ্বীপের রুমে এসে দেখে দ্বীপ মাথায় হাত দিয়ে শুয়ে আছে।
দিয়া: ভাইয়া।
দ্বীপ: হুম।
দিয়া: আমি অনুকে কি বলবো একটু ক্লিয়ারলি বলবি। তুই এসব কেনো করছিস।
দ্বীপ: আমি……… দিয়া মাথাটা খুব ব্যাথা করছে আর খুব খিদে ও পেয়েছে। খাবার নিয়ে আসবি রুমে প্লিজ। নিচে যেথে ইচ্ছে করছে না।
নেহা: দ্বীপ তোমার কফি।
দ্বীপ: থ্যাংকস।
দিয়ার রাগে ইচ্ছে করছে দ্বীপের মাথাটা পাটিয়ে দিতে। রাগটাকে কন্ট্রোল করে নিচে চলে গেলো খাবার আনতে।
নেহা: দ্বীপ আমি তোমার মাথা টিপে দেবো।
দ্বীপ: না। লাগবে না। তুমি তোমার রুমে যাও। আমি ঠিক আছি।
নেহা: ওকে।
।
।
চলবে?🙄