ভালোবাসার_অভিনয় পর্ব-৩৭+৩৮

0
3192

#ভালোবাসার_অভিনয়
#Anuridhi_Rahman
#পর্ব ৩৭

পরী-আসলে ডাক্তার আমি এই খবরটা নিজে আর ফ্যামেলি মেম্বার দের দিতে চাই,,,তাই বলছি আপনি যদি কাওকে কিছু না বলতেন তাহলে ভালো হতো আর কী,,,

ডাক্তার -ওহ ওকে,,,

তখনি কেবিন এর ডোর এ নক হলো,,,
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
রেদ সকাল থেকে পরীর অপেক্ষা করছে না কাল রাতে পরী ও পরী একবার আসেনি,,,,রেদ এর সব কাজ সার্ভেন্ট রা করছে,,,

রেদ এর আবার আর ভালো লাগছে না সেই যে মেয়েটা বক্স টা দিয়ে গেছে এর পর আর একবার ও দেখতে আসলো না,,,,

রেদ জোড়ে জোরে মিলিকে ডাকতে লাগলো তার ডাক শুনে এক সার্ভেন্ট তার রুমে আসে বলে মিলি বাড়ি নেই,,,,,

রেদ-কোথায় গেছে,,,

-মিলি তো পরী আপামনির সাথে গিয়েছে,,,,

রেদ-পরী কোথায় গেছে আর কখন গেছে,,,,

-স্যার পরী আপা মনি আর মিলি কাল রাত ১০ দিকে বেরিয়েছে,,,পরী আপা মনির বোন নাকি হাসপাতালে ভর্তি তূকে দেখতে,,,,

রেদ-ও আচ্ছা এখন তুমি য়াও,,,,আর পারলে এক কাপ কফি দিও,,,,

-ওকে স্যার বলে লোক টা চলে গেলো,,,,

রেদ ভাবতে লাগলো দাদিজান এর কথা যদি ঠিক হয় পরী যদি আমার ভালোবাসার মানুষ হয় তাহলে ওর সাথে তো আমার ছবি আমার ফোন এ থাকবে রেদ নিজের ফোন নিয়ে বসলে,,,,

পরী তার মা এর কোলে মাথা রেখে শুয়ে রয়েছে,,,,,পরী নিজের ফ্লাট এ চলে এসেছে নিজের মা নানা মিলি আর আনিল কে নিয়ে,,,,,

মামি মা তাকে তারা দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে,,,,আর বাড়ি এসেছে পর থেকে পরী তার মায়ের কোলে মাছে রেখে শুয়ে আছে,,,,

আনিল নিজের বাবা কে কল করে সকাল থেকে ঘটা সব কথা তাকে জানিয়ে দিলো,,,আনিল বেশি না বুঝলে ও এটা বুঝছে যে পরীই তার বড় বোন আর এটা তার মায়ের পরিবার,,,,

তৃনা পরীর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে,,,তার চোখে মুখে এক রকম তৃপ্তিকর খুশি,,,,

পরী-আমাকে কেনো নিজের কাছে রাখলে না,,,,,

তৃনা-আমার ভুল হয়ে গেছে,,,আর হবেনা এই ভুল,,,,

পরী উঠে বসে বলল-তোমার এই ভুল এর কারনে আমি ২১ টা বছর হারিয়ে ফেলেছি,,,,

নিজের ফ্যামেলি থাকতেও অনাথ এর মতে বড় হয়েছি,,,জানো একটা অনাথ কত কষ্ট করে নিজেকে প্রতিষ্টাব করে,,,,

১৮ বছর পর্যন্ত তো অনাথ আশ্রম এর লোকরা আমার সব খরচ চালিয়েছে,,,,মীম আমার থেকে ১বছর এর বড় ছিলো তাই ও ১বছর আগে অনাথ আশ্রম থেকে চলে গিয়েছিলো,,,,,

বাট ও আমার সাথে দেখা করতে আসতো কারন আমি ওকে আমার বড় বোন ভাবতাম আর ও আমাকে নিজের ছোটো বোন,,,

কিন্তু আমার পরিবার থাকা কালিন তখন কেও আমার পাশে ছিলো না,,,
বলে পরী হিচকি তুলে কাঁদতে লাগলো,,,পরীর কথা শুনে তৃনার চোখে ও পানি চলে এলো,,,,,

আড়াল এ দাড়িয়ে থাকা আনিল এর চোখে ও পানি চলে এলো,,,

তৃনা-আনাকে ক্ষমা করে দে মা,,,তোকে বাচানোর জন্য আমি তোকে মায়ের কাছে দিয়ে এসেছিলাম কিন্তু মা তোকে অনাথ আশ্রম এ দিয়ে আসবে তা আমি কখনো কল্পনায় ও ভাবিনি,,,,

পরী নিজের মাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিলো,,,,,

পরী-মা তোমাকে আমার খুব প্রয়োজন,,,,,আমাকে আর ছেড়ে যেও না,,,,

তৃনা-একবার এই ভুল করেছি আর এই ভুল করবো না,,,, আমি আমার মেয়েকে আর ছেড়ে যাবো না,,,,তুই আমার মেয়ে আমার,,,,

তখনি দরজায় বেল বজে উঠলো,,,,মিলি গিয়ে দরজা খুলে দিলো তৃনা পরীকে এখনো জড়িয়ে ধরে রয়েছে,,,,,

মিলি-কাকে চাই,,,,

-আমি মো. আমিন সাহ,,,,আনিল আর তৃনা মানে আমার ছেলে আর স্ত্রী এখানে আছে,,,,তাই

মিলি বুঝতে পারলো উনি পরী আপুর মায়ের হাজবেন,,,,,

মিলি-জ্বী আসুন,,,,

আমিন সাহেব ভেতরে ডুকলো,,,,আনিল তার বাবাকে দেখে তার কাছে এগিয়ে গেলো,,,,

আনিল-পাপা তুমি আর মম আমাকে আগে জানাও নি কেনো আমার একটা বড় বোন ও আছে,,,,

আনিল এর কথা শুনে সিদ্দিক সাহেব নিজের ঘর থেকে বের হয়ে এলো,,পরী আর তৃনা ও বেরিয়ে এলো,,,,

সিদ্দিক সাহেব কে দেখে আমিন সাহেব বললেন-আসসালামু আলাইকুম বাবা

সিদ্দিক সাহেব-ওয়ালাইকুম আসসালাম তুমি আমিন না,,,,

তৃনা-আপনি এখানে,,,,,

আমিন সাহেব-জ্বী বাবা,,,,আমি আমিন আপনার বন্ধু আসরাফুল এর ছেলে আমিন,,,,

সিদ্দিক সাহেব-তুমি এখানে কেনো,,,

আমিন সাহেব-বসে কথা বলি যদি আপনি রাজি থাকেন,,,,,

সিদ্দিক সাহেব-হুম চলো,,,

সিদ্দিক সাহেব সোফায় গিয়ে বসলো,,,আমিন সাহেব এর চোখ গেলো তৃনার পাশে দাড়িয়ে থাকা পরীর দিকে,,,,

আমিন সাহেব-একদম মায়ের মতো হয়েছো,,,

তৃনা-আপনি কী বাবাকে সব বলে দিবেন,,,

আমিন-যা সত্যি তাই বলবো,,,,আর আমাদের সন্তানদের আধিকার আছে সত্যি জানার,,,,

তৃনা-ঠিক আছে চলুন আনিল পরী চলো,,,,

রেদ নিজের ফোন নিয়ে থম ধরে বসে রয়েছে,,,,ও ফোনে যা পেয়েছে তাতে ও এখন সিউর দাদিজান সত্যি বলছে,,,

মানে পরী তার ভালোবাসার মানুষ আর রেদ যে পরীকে কতটা ভালোবাসে তা একটা ভিডিও তাকে বুঝিয়ে দিয়েছে,,,

আর পরী তাকে কতটা ভালোবাসে তা পরী এই কয়দিনে বুঝিয়ে দিয়েছে,,,,,পরী বাড়িতে আসলে তারসাথে কথা বলতে হবে আজ,,,,

রেদ বক্স থেকে পাওয়া লকেট টা হাতে নিয়ে বলল -হ্যা আমার কিছু মনে পরেনি বাট এখন বেশ বুঝে গিয়েছি,,,ভালোবাসি তোমাকে ভালোবাসি,,,,

yes I love you pori I love you♥♥♥

বাকিটা পরে জানবেন

#ভালোবাসার_অভিনয়
#Anuridhi_Rahman
#পর্ব ৩৮

আর পরী তাকে কতটা ভালোবাসে তা পরী এই কয়দিনে বুঝিয়ে দিয়েছে,,,,,পরী বাড়িতে আসলে তারসাথে কথা বলতে হবে আজ,,,,

রেদ বক্স থেকে পাওয়া লকেট টা হাতে নিয়ে বলল -হ্যা আমার কিছু মনে পরেনি বাট এখন বেশ বুঝে গিয়েছি,,,ভালোবাসি তোমাকে ভালোবাসি,,,,

yes I love you pori I love you♥♥♥
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
২১ বছর আগে,,,,,,

সেদিন রাতে তৃনা নিজের মেয়েকে নিজের ভাবি আর মায়ের হাতে দিয়ে সেদিন বাড়ি ফিরতে তার সকাল হয়ে যায়,,,,

আর এটাই হয়ে দাড়ায় তার জন্য কাল,,,, বাড়িতে ডুকতেই মোহনা তৃনা চুল এর মুঠি ধরে বাড়ির বেতরে এনে মেজেতে ছুরে মারলো,,,,

মোহনা-রাজিব রাজিব দেখো তোমার বউ সারা রাত ফোসটি নোসটি করে সকালে বাড়ি ফিরছে,,,,

রাজিব তার মা বড় ভাই ভাবি নিচে এলো,,,তৃনাকে দেখে রাজিব এর গা রাগে ফেটে যাচ্ছে,,,,

রাজিব-হাসপাতাল থেকে কোথায় গায়েব হয়ে গিয়েছিলে আর যেই আপদটাকে জন্ম দিয়েছ সেটা কই,,,,

তৃনা উঠে নিজের চোখ মুছে দাড়ালো -এই নরক থেকে দূরে,,,,

রাজিবের মা-ও বাবা মুখে আমার বড় বড় বুলি ফুটেছে দেখি,,,,

তৃনা-সত্যি বলছি শুধু,,,,,

রাজিব সাথে সাথে তৃনাকে মারতে লাগলো,,,তৃনা এমনি খুব দূর্বল ছিলো রাজিব এর এতো মার সয্য করতে না পেয়ে জ্ঞান হারিয়ে মেজেতে পরে গেলো,,,,

এভাবেই তৃনার দিন কাটছিলো প্রতিনিয়ত শারিরিক আর মানোসিক টর্চার করতে লাগলো,,,,এভাবে আরো ৩বছর কেটে গেলো,,,,

হঠাৎ তৃনা জানতে পরালো সে আবার মা হাতে চলেছে,,,তার গর্ভে ২মাস এর সন্তান,,,, সে এই কথাটা কাওকে জানায়নি,,,,,

তৃনা এই কথা জানার তিন দিন পরে রাজিব তৃনার হাতে ডিভর্স লেটার দিয়ে বলো,,

রাজিব-সাইন করে আমি মোহনাকে বিয়ে করবো,,,,

তৃনা-কী বলছেন এসব আমি আপনার স্ত্রী,,,,

রাজিব-আর মোহনা আমার হবু ছেলের মা ওর গর্ভে আমার সন্তান,,,,

তৃনা-আমার কী হবে তাহলে,,আমি কী করবো,,,

রাজিব-সেটা আমি জানি না এখনি সাইন করে এক কাপরে এ বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যাবে,,,,

তৃনা সাইন করে দিলো তারপর আলমারি খুলে নিজের একটা বক্স খুলে একটা সোনার চেন বের করে পরে,,, নিজের গায়ের সোনার কানের দুল নাক ফুল আর হাতে আংটি টা খুলে রেখে দিলো,,,

তৃনা-এগুলো আপনার মা দিয়েছিলো সামির নিসানি হিসেবে,,,,আর এই চেন আমাকে আমার বাবা দিয়েছিলে তাই নিয়ে গেলাম,,,,

তৃনা কাওকে কিছু না বলে বেরিয়ে গেলো,,,,চোখে দিয়ে একফোটা জল বের হলো,,,সে বুঝলো না এটা শুখের জল নাকি কষ্টের কিন্তু আজ খুব শান্তি লাগছে,,,,,

সারাদিন রাস্তায় হেটে ক্লান্ত হয়ে একটা নিরব জায়গায় বসে পরে,,,,তখন কিছু দূরে ২জন লোক তৃনাকে দেখে এগিয়ে এলো,,,,

-আপা কিছু হেল্প লাগবে কী,,,,

তৃনা-না ভাইজান লাগবে না কোনো হেল্প,,,,

-আপা গলার চেন টা সুন্দর তা চেন টা দেখি,,,,,

তৃনা-মানে কী চেন দেখবেন মানে,,,,

-ভালোই ভালো দিন নাইলে,,,,,

লোকটা একটা চাকু বের করে তৃনার সামনে ধরে,,,তখন তৃনা কোনো বুদ্ধি না পেয়ে বলল-পুলিশ,,,,,

লোক দুটা পিছন তাকাতেই তৃনা লোক দুটোকে ধাক্কা দিয়ে দৌড় দেয়,,,দৌড়াতে দৌড়াতে তৃনা একটা গাড়ির সামনে ধাক্কা লেগে নিচে পরে যায়,,,,

গাড়ি থেকে আমিন বের হয়ে তৃনা কে দেখে চিনতে পারে,,, সে তৃনাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়,,,,সে জানতে পারে তৃনা প্রেগন্যান্ট,,,

সে তৃনার কাছে গেলে তৃনা আমিন কে চিনতে পারে,,,,তৃনা আমিন কে সব খুলে বলে তার সাথে কী কী হয়েছে,,,,

আমিন তৃনাকে বলে তার ফ্যামেনি এর সাথে যোগাযোগ করতে,,,তৃনা মানা করে দেয়,,,,আমিন তৃনাকে নিয়ে নিজের বাড়ি যায়,,,,

আমিন বাড়ি যাওয়ার আগে তৃনাকে আগে কাজি অফিস এ নিয়ে গিয়ে বিয়ে করে নেয়,,,, যাতে তৃনার প্রেগন্যান্সির জন্য ওর ওপর কেও প্রশ্ন না করতে পারে,,,,,

তৃনা যখন আনিল কে জন্ম দিলো তখন সে আর পারলো না নিজেকে আটকাতে সে নিজের বাড়িতে কল দিলো,,,,আর তার মা তাকে এমন ভাবে বলল যে তার মেয়ে মৃত্যু হয়েছে,,,,,

সে এটা মেনে নিতে পারেনি সে তার তার মেয়ের মৃতু্ এর জন্য নিজেকে দায়ি করতে লাগলো কেন সে তাকে এক নরক থেকে বাচাতে মৃত্যুর মুখে ডেলে দিয়েছিলো,,,,

এই জন্য সে এতো বছর এই কারনে নিজের পরিবার এর সাথে যোগাযোগ করেনি,,,, বাট আজ হঠাৎ এই ভাবে সব সামনে এসবে তা কখনো ভাবেনি,,,,,

বর্তমান

সবাই বসে বয়েছে সবাই চুপ কেও কথা বলছে না,,,,পরী আর আনিল এর চোখে পানি পরী উঠে নিজের রুমের বারান্দায় চলে যায়,,,,,চোখের পানি যেন ভাধা মানছে না,,,,

পিছন থেকে আনিল বলল-আপি,,,,,

পরী পিছন দিকে ঘুরে তাকালো তার পেছনে আনিল মাথা নিচু করে দাড়িয়ে রইছে,,,,,

পরী-এদিকে আসো আনিল,,,,

আনিল পরীর পাশে গিয়ে দাড়ালো,,,,,

পরী-আনিল তোমার বসয় ঠিক কতো,,,,

আনিম পরীর দিকে তাকিয়ে বলল-সামনের মাশে ১৮ হবে,,,,,কিন্তু কেনো

পরী-১৮ টা বছর আমি আমার ভাই এর কাছ থেকে দূরে ছিলাম ভাবতেই কেমন যেনো লাগে,,,,

আনিল-আপি একটা কথা বলবো,,,

পরী-হুম বলো,,,,

আনিল-আমাকে একটু বুকে জড়িয়ে ধরবে বড় বোন নাকি মায়ের দ্বিতীয় রুপ,,,,,

পরী আনিল কে বুকে জড়িয়ে ধরে কেদে দিলো,,,,দরজার বাইরে আমিন আর তৃনা দাড়িয়ে তাদের দেখতে লাগলো,,,,

আমিন-আজ আমাদের পরিবার পূন হলো,,,,

তৃনা-আজ আমি পূন হলাম আপনাদের ৩জন কে পেয়ে,,,,,

বাকিটা পরে জানবেন,,,,,,