#ভালোবাসা_অবিরাম
#পর্বঃ১৩
#আইরাত_বিনতে_হিমি
পূর্ব আকাশে সোনালী রঙ্গের আভা দেখা যাচ্ছে চারপাশে পাখির কল্লোল ধ্বনি আশেপাশে যেনো সতেজতায় ভরে উঠেছে জানালার পর্দা ভেদ করে রুমের ভেতর সূর্যের কীরন ডুকছে বিছানায় বাচ্চাদের মতো নাক ফুলিয়ে ঘুমাচ্ছে নিলু পাশে শোফায় দুগ্লাস কফি নিয়ে বসে আছে আসফি তার ভীষণ রাগ হচ্ছে এই মেয়ে এত ঘুম কাতর কেন এই নিলু উঠো এথ বেলা করে কেউ ঘুমায় উঠো বলছি এইবার না উঠলে কিন্তু খারাপ হয়ে যাবে বলে দিচ্ছি
এই নিয়ে আসফি নিলুকে তিনবার ডাকলো কিন্তু নো রেসপোন্স নিলু ঘুমিয়েই যাচ্ছে এইবার আর আসফির সহ্য হলো না তাই সে নিলুকে কোলে তুলে নিলো তাও তার কোনো হুস নেই আসফি রাগে নিলুকে নিয়ে ওয়াশরুমে গেলো আর কোলে থেকে নিলুকে বাথটাবে ফেলে দিলো নিলু ভয়ে এক চিৎকার দিয়ে উঠলো
ওহ মাগো আমি মনে হয় মরেই গেলাম
হাতপা নিলু পানির মধ্যে ছোটাছুটি করছে যেনো সে ডুবে যাচ্ছে আসফি এইবার বিরক্ত বোধ করলো আর বললো
এই মেয়ে ড্রামা বন্ধ করো এইখানে তোমার হাটুসমানও পানি নেই বুঝছো
এতোক্ষণে নিলুর হুস এলো সে ভাবছিলো সে স্বপ্ন দেখছিলো কিন্তু না তার রাক্ষস বরটা তাকে এই সাজ সকালে পানিতে ফেলে দিছে তাই আর নিজেকে কন্ট্রোল করতে না পেরে নাক ফুলিয়ে রেগে বলতে লাগলো
এইসব কি মিঃ চৌধুরী সাজ সকালে এইসব কি বাচ্চামো করছেন আপনি কেনো আমায় এই পানিতে ফেলে দিলেন How dare you আপনার তো সাহস কম না
আমার সাহস নিয়ে কি তোমার কোনো ডাউট আছে থাকলে বলো সেইটা ক্লিয়ার করে দেয়
রাগ দেখিয়ে আসফি বললো
Further আমি যদি দেখছি আমি ডাকার পরোও তুমি ঘুমাচ্ছো তাহলে বলে দিচ্ছি আমি আসফি চৌধুরী তোমাকে এই দুতলার উপর থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা করবো এবং জেলে যাবো understand
নিলু ভয় পেলো তাই সে বললো হুম কিন্তু মনে মনে বললো
সালা খবিশ কত বড় খারাপ আমাকে পানিতে ফেলে দিয়ে আবার আমার সাথে হম্বিতম্বি করছে সালা দাড়া তরে আমি বাগে পায়ে নেয়
আসফি নিলুকে এইভাবে দাড়িয়ে থাকতে দেখে বলে উঠলো
আমাকে মনে মনে বকা দেওয়া শেষ হলে ফ্রেশ হয়ে আসেন
নিলুতো অবাক তাই আবার মনে মনে বললো
আরে একি মনোস্তাতিক নাকি মনে মনে যা বলি তাও শুনে ফেলে
আসফি নিলুর অবস্থা দেখে মুচকি একটা হাসি দিয়ে ওয়াশরুম থেকে বাহির হয়ে গেলো কিছুক্ষণ পর নিলু ওয়াশরুম থেকে বাহির হয়ে আসলে আসফি ওর হাতে একটা কফি মগ দেয় আর নিজে বেলকনিতে চলে যায় নিলু আসফির এত দরদ দেখে বিরবির করে বললো
এতক্ষণ মেরে ফেলা হচ্ছিলৌ এখন কফি দিয়ে দরদ দেখানো হচ্ছে খবিশ কোথাকার
আসফি বেলকনিতে থেকে বলে উঠলো
নিলু বেলকনিতে আসো
এহহ বেলকনিতে আসো(মনে মনে)
আসছি
এই কথা বলে নিলু বেলকনিতে গেলো গিয়ে একটা বেতের মড়া টান দিয়ে বসলো আর দেখলো আসফি এক ধ্যানে আকাশ দেখছে তাই তো তার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য ঝেড়ে কেশে উঠলো নিলুর কাশি শুনে আসফি নিলুর দিকে তাকলো আর ভ্রু নাচিয়ে জিঙ্গাসা করলো কি হয়েছে তখন নিলু বললো এইখানে ডাকার কারণ
তোমার সাথে একসাথে বসে কফি খাবো আর আকাশ দেখবো বলে
এইকথার শোনার পর নিলু যেনো অবাকের চরম সীমায় পৌঁছালো তার মুখ আপনা আপনি হা হয়ে গেলো তার এমন অবস্থা দেখে আসফি ম্লান হাসলো তবুও নিজের হাসিটা নিলুকে বুঝতে না দিয়ে বলে উঠলো
এত অবাক হওয়ার মতো কিছু হয় নাই মিসেস নিলিমা চৌধুরী আপনাকে আর একটা কাজে এইখানে ডাকা হয়েছে
নিলু লজ্জা পেলো নিজেকে আরাল করার জন্য বললো
আমি অবাক হয় নি বুঝছেন আর আর একটা কারণ কি শুনি
তুমি এখন পড়তে বসবা বুঝছো
কিহ এই সকালে আমি পড়তে বসবো
তাহলে কে বসবে এইখানে কি আর কেউ আছে
নাহ আমি পড়তে বসবো না
Sure তো একটু আগের কথা মনে আছে তো
কে বলেছে নিলু পড়তে বসবে না নিলু পড়তে বসবে নিলুতো ভদ্র মেয়ে তাই সে পড়তে বসবে সে সব কথা শুনবে
এই কথা বলে নিলু একদৌড় দিলো পড়ার টেবিলের দিকে আসফি নিলুর কান্ড দেখে উচ্চস্বরে হেসে উঠলো আর বলল
পাগলি একটা
ডাইনিং টেবিলে বসে বসে বাড়ির সবাই ব্রেক ফাস্ট করছে সাথে আজ নিলুও বসছে কারণ আজ তার কলেজ আছে আসফি খাবার শেষে টিসু দিয়ে হাত মুঝতে মুঝতে বললো
নিলু তোমার হলো চলো লেট হয়ে যাচ্ছে তো
আপনি যান আমি একাই যেতে পারবো কালকে তো বড় আব্বু এডমিশন করেই আসছে
কিহ কিহ বললা তুমি একা যাবে এখানে তুমি এখনো কিছু চিনো তাছাড়া আজ কলেজে তোমার First দিন সবকিছু বুঝিয়ে দিয়ে আসতে হবে আর সব চিনলেই বা কি তুমি কি ভাবছো তোমাকে আমি একা ছাড়বো আর বোরকা ছাড়া তো তুমি এক পাও বাসা থেকে বাহির হবে না আমি চাই না তোমার ফেশ কেউ দেখুক কারণ আসফি চৌধুরীর অনেক শত্রু আর সেই শত্রুরা আমার week point গুলোতেই হাত দিবে সো আমি চাই না তোমার কোনো ক্ষতি হোক আশা করি বুঝতে পারছো
আসফি যে তাকে indirectly কতটা ভালোবাসার অনূভুতি বুজিয়ে দিলো তা আর নিলুর বুঝতে বাকি রইলো না শুধু নিলু না ডাইনিংয়ে বসা সবাই অবাক রেখা চৌধুরীর তো আনন্দে চোখে পানি চলে আসছে চোখের পানি আচল দিয়ে মুছে নিলুকে জড়িয়ে ধরলো আর বললো
অনেক সুখী হো মা তোর এই ভালোবাসায় কারো যেনো চোখ না লাগে
নিলুও শাশুড়িকে জড়িয়ে ধরে বললো
মা আমার জন্য দোয়া করবেন যাতে সুখে দুখে আপনার ছেলের পাশে থাকতে পারি
হুম দোয়া করিতো মা আমি জানি তুই আমার ছেলেকে দেখে রাখতে পারবি
আসফি ঘরির দিকে একবার তাকিয়ে বললো
আপনাদের বউমা শাশুড়ির সুখ দুখের কথা শেষ হলে আমরা কি যেতে পারি লেট হয়ে যাচ্ছে তো
হুম হুম শেষ তো এই নিলু দাড়িয়ে আছিস কেনো যা দেরি হয়ে যাচ্ছে তো
হুম যাচ্ছি মা আসি বাবা বড় আম্মু বড় আব্বু মামনি চাচ্চু আসছি হ্যা
সবাই একসাথে বলে উঠলো
আচ্ছা আসো তাহলে
নিলু আর আসফি একসাথে বাহির হয়ে গেলো আসফি গাড়িড় কাছে গিয়ে গেট খুলে দিয়ে বললো যাও বসো
নিলু ভিতরে গিয়ে বসলো আসফিও ভিতরে গিয়ে বসলো তারপর নিলুর সিটবেল্ট লাগিয়ে দিলো নিজেও লাগালো তারপর গাড়ি স্টার্ট দিলো গাড়ি গিয়ে থামলো কলেছ গেইটের সামনে আসফি নিজে গাড়ি থেকে নেমে নিলুকে গাড়ি থেকে নামতে বললো নিলুও নামলো তারপর তাকে নিয়ে কলেজের ভিতরে গেলো তারপর নিলুকে তার শ্রেণিতে বসিয়ে দিয়ে প্রয়োজনি কিছু কথা শেরে নিলো আর বললো আমি না আশা অবধি এক পাও কলেজ থেকে বাহির হবে নে ওকে নিলু মাথা নাড়ালো তারপর সে চলে গেলো
দুর দেখে দুজোড়া চোখ তাদের সেই কখন থেকে দেখে যাচ্ছে এইবার সেই ব্যাক্তি দূর থেকেই বলে উঠলো যতই চেষ্টা করো না কেনো আসফি চৌধুরী এইবার আর তুমি তোমার week point কে বাচাতে পারবে না দেখোই না আগে আগে কি হয়
এই কথা বলে লোকটা উচ্চস্বরে হাসতে লাগলো আর বললো তোমার জীবনের এই সুখ যাস্ট কয়েকটা দিন তোমার মনে দাবানলের আগুন লাগিয়ে দিবো আমি
#চলবে
