ভালোবাসা অবিরাম পর্ব-২৯

0
520

#ভালোবাসা_অবিরাম
#পর্বঃ২৯
#আইরাত_বিনতে_হিমি

মানুষ শব্দটা ছোট হলেও এর মাহাত্ম্য অনেক বেশি। আমরা মানুষ আমাদের জীবন ভালো-মন্দ, সুখ-দুঃখ, ভালোবাসা-বেদনা এইসব নিয়েই। আল্লাহ্ পাক আমাদের আশরাফুল মাখলুকাত করে এই পৃথিবীতে পাঠিয়েছে। অথচ মানুষ তার দাম দিতে জানে না। মানুষ হয়ে যায় পশুর চেয়েও অধম। আমাদের জীবন এখন এমন এক পর্যায়ে আছে যেখানে আপন হয় পর আর পর হয় আপন। আপন মানুষ ধোকা দিয়ে বিশ্বাসঘাতকতা করে আমাদের মৃত্যুর মুখে ফেলে দেয়। আবার পর মানুষ বিপদ থেকে রক্ষা করে আপন করে নিচ্ছে। আসলেই জীবনটা এক রঙ্গমঞ্চ। রাবেয়া চৌধুরী রুমানা চৌধুরীর সামনা সামনি বসে এইসবই চিন্তা করছিলো। অতীতে তার আপন বোন তাকে মৃত্যু মুখে ঠেলে দিয়েছে। কিন্তু পর মানুষ আপন করে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে এনেছে। আজ তার মস্তিষ্ক বার বার বলছে সামনে থাকা এই মানুষটাই তোকে মেরে ফেলতে চেয়েছে রাবু। তোর আর তোর ভালোবাসাকে আলাদা করেছে। সংসার জীবনকে কেড়ে নিয়েছে। তোর জীবন থেকে ২৫ টা বছর ধ্বংস করে দিয়েছে। তুই একে ছেড়ে দিস না। এ মানুষ রুপী কালসাপ। একে ছেড়ে দিলে এই লোক আরো মানুষের ক্ষতি করবে। মেরে দে খতম করে দে শাস্তি দে রুমানাকে।
কিন্তু রাবেয়ার মনযে বলছে আরেক। সে বলছে রাবু এইবারের মতো ক্ষমা করে দে। হতে পারে সে ভুল করেছে অন‍্যায় করেছে তাতে কি। দিনশেষে তো সে তোর আপন মায়ের পেটের বোন। ছোট মানুষ হয়ে একটা নাহয় ভুল করেই ফেলেছে। তাই বলে তাকে খুন করবি তুই। না না না তুই মানুষ হয়ে মানুষ খুন করতে পারিস না। এইটা তোর ধর্ম বা শিক্ষা কোনটাতেই নেই।

রাবেয়া নিজের মন মস্তিষ্কের সাথে লড়াই করে ক্লান্ত। তাই সে চিৎকার দিয়ে হাতে দেখে ছুরিটা ফেলে দেয় আর বলে

আহহ আমি পারবো না পারবো না আমি নিজের বোনকে নিজের হাতে খুন করতে। ওহ মানুষ না হলেও আমি মানুষ। আমি মনুষ্যত্বের ধর্মকে বির্সজন দিতে পারবো না। ( কাদতে কাদতে মাটিতে বসে পরে )

আসফি এগিয়ে আসে রাবেয়াকে নিজের দুহাত দিয়ে নিজের কাছে নিয়ে আসে আর বলে

বড় আম্মু নিজের মাথায় পেশার দিও না। তুমি না পারলে থাক। আর তুমি পারবেই বা কি করে তুমি তো আর পশু নও। আসো তুমি আমার সাথে আসো বসবে এসো।

এইকথা বলে আসফি রাবেয়াকে ভিতরে নিয়ে যায় আর ওনাকে ঠাণ্ডা করে বাহিরে চলে আসে। তারপর রুমানা চৌধুরীর দিকে তাকিয়ে ঘার কাত করে বলে

আপনার কপাল খারাপ তাই আমার হাতে আপনাকে ছেড়ে দিয়ে গেলো।

হোল্ড করো আসফি আমার কিছু কথা জানার আছে

কি কথা।

রাবেয়া বেচে আছে কি করে।

আল্লাহর কৃপায়। মরেই গিয়েছিলেন যদি না ঐখানের এক পর্যটন ওনাকে সময় মতো হাসপাতালে নিয়ে আসতো। ওনি প্রায়ই দীর্ঘ ২৫ বছর কোমায় ছিলেন। গত ৫ বছর আগে চিৎসার জন‍্য ওনাকে আমার কাছে নিয়ে আসা হয় আমি ওনার ট্রিটমেন্ট করি। আমি তো আর ওনাকে চিনতাম না। হঠাৎ একদিন নিজের একটা কাজে স্টোর রুমে যায় জিনিস পত্র ঘাটাঘাটি করতে করতে একটা এ‍্যালবাম হাতে আসে। আর ঐ এ‍্যালবামেই ওনার ছবি ছিলো। তারপর সোর্স লাগিয়ে জানার চেষ্টা করি এঈ চৌধুরী মহলের সাথে ওনার কি কানেকশণ। আর ওনাকে প্রাণপনে সুস্থ করার চেষ্টা করি। আমি সফলও হয় গত ১ মাস আগে। তারপর ওনার মুখ থেকে সব সত্য জানতে পারি।

কথা শেষ না করতে করতেই পেছন থেকে আসফিকে আয়মান ছুরিকাঘাত করে আসফির পেট দিয়ে গলগলিয়ে রক্ত পরছে। এক হাত দিয়ে নিজেল পেট ধরে অন‍্য হাতে আয়মানের গলা চেপে ধরে আর বলে

ইউ আর ফিনিস আয়মান শিকদার

আসফি আয়মানকে পাশে থাকা পুকুরে ফেলে দেয়। যেখানে আসফির পালিত কুমির ছিলো। কিছুক্ষণের মধ‍্যে পুকুরের পানি লাল হয়ে উঠে। আসফি নিজের পেট ধরে মাটিতে বসে পরে এখনো প্রচুর ব্লেডিং হচ্ছে। পাশ থেকে আদি আর আরিয়ান আসফিকে হসপিটালে যাওয়ার জন‍্য তাগিদ দিচ্ছে কিন্তু আসফি আস্তে আস্তে দাঁড়িয়ে নিজের গায়ের কোট এক টানে খুলে ফেলে পেটের মধ‍্যে শক্ত করে বাধন দেয়। তারপর এক পায়ে এক পায়ে হেটে রুমানা চৌধুরীর কাছে যায় আর বলে

আপনি মানুষটা বড্ড খারাপ। একটা নিকৃষ্ট প্রাণী আর নিকৃষ্ট প্রাণীদের আমি এই পৃথিবীতে বেচে থাকতে দেয় না।

এই কথা বলে আসফি হাতের ছুরি দিয়ে এক টানে রুমানা চৌধুরীর ঘার থেকে মাথা আলাদা করে ফেলে।যা দেখে আদি আর আরিয়ান চিৎকার দিয়ে নিজের হাত দিয়ে মুখ ঠেকে ফেলে। পাশে থাকা আফজাল শিকদার ভয়ে আবল তাবল বলতে থাকে। আসফি দাড়াতে পারছে না। তার শরীর অবস হয়ে আসছে। তবুও নিজের সুঠাম দেহের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে দাড়িয়ে আছে আর হেটে হেটে আফজাল শিকদারের কাছে যায় আর বলে

আপনি সেই পুরুষ যে কিনা ক্ষমতার লোভে নিজের স্ত্রীকে অন‍্য পুরুষের কাছে পাঠায়। আপনি সেই পুরুষ যে কিনা বউয়ের কথায় উঠে আর বসে। আপনি পুরুষ না পুরুষ নামের কলঙ্ক। আপনার বেচে থাকার কোনো অধিকার নেই। এই কথা বলে আসফি নিজের হাতের ছুরি দিয়ে একটানে আফজাল শিকদারের চোখের মধ‍্যে আঘাত করে। আফজক শিকদারের চোখ দিয়ে তরতরিয়ে রক্ত ছুটে।সে মাটিতে লুটিয়ে পরে আর গলা কাটা মুরগির মতো ছোটফট ছোটফট করতে থাকে। তবুও আসফিথ শান্তি নেই।সে আফজালের বুকে পা রেখে একের পর এক ছুরিকাঘাত করতে থাকে। এখন আর আফজাল শিকদারের দেহ কাপছে না। তরপাচ্ছে না। আসফি থেমে যায় তার মাথা ঘুরছে সামনে শুধু অন্ধকার আর অন্ধকার দেখছে। আসফি দাড়ানো থেকে ঠাস হয়ে নিচে পরে যায়। যা দেখে আদি আর আরিয়ান দৌড়ে তার কাছে আসে আর বলে

আসফি আসফি চোখ খুল। ভাই তুই ঠিক আছিস। আসফি এই আসফি কথা বলো।

আসফি নিশ্চুপ। সে কথা বলছে না। তার চোখ বন্ধ। পালস খুব আস্তে আস্তে চলছে। যা দেখে আরিয়ান বলে
মামা হাসপাতালে নিতে হবে emergency

#চলবে