#ভালোবাসি তাই
#পর্বঃ১৮
#Tanisha Sultana
অভি তানহার চারপাশে ঘুরছে আর গুনগুন করে গান গাইছে
“তুমি কই
তুমি নাই
আমি তোমাকে চাই
তানহার বিরক্ত লাগছে।
” আপনাকে চেনাচেনা লাগছে। কোথায় যেনো দেখেছি?
ভাবনার ভান করে বলে অভি।
তানহা চোখ পাকিয়ে তাকায় অভির দিকে।
“এমন করে তাকাইয়ো না এখানে (বুকের বা পাশে হাত দিয়ে) লাগে
“বদের হাড্ডি
বিরবির করে বলে তানহা রুমে চলে যায়। অভি ঠোঁট মেলে দেয়। অভিও রুমে আসে। কাবাড থেকে সেই নীল শার্ট আর এ্যাশ কালার টাউজার বের করে দেয়।
” চেঞ্জ করে আসো।
“আমার ড্রেস কই? হাত ভাজ করে বলে তানহা।
” আমি খেয়ে ফেলছি। এবার যাও
তানহা ছো মেরে নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে। অভি দীর্ঘ শ্বাস ফেলে।
একটু পরে তানহা বেরিয়ে আসে। অভি তোয়ালে হাতে দাঁড়িয়ে ছিলো। তানহা বেরোতেই তানহাকে খাটে বসিয়ে দিয়ে চুল মুছাতে থাকে।
“ঢং দেখাতে হবে না।
ভেংচি কেটে বলে তানহা।
” দেখতে না চাইলে দেখো না।
“চোখের সামনে দিয়ে ঘুরাঘুরি করলে তো দেখতেই হবে।
” চোখ বন্ধ করে থাকো।
“আপনি একটা যা তা
” তোমার বর
“মাই ফুট
দাঁত কটমট করে বলে তানহা।
“বড্ড বেশি কথা বলো তুমি
তানহা ভেংচি কেটে চুপ করে থাকে। অভির সাথে কথা বলতেও তানহার খারাপ লাগে। এই লোকটা ভালো না।
চুল মুছে অভি তানহার হাতা ফোল্ড করে দিতে থাকে। তানহার প্রচন্ড ঠান্ডা লাগছে তাই কিছু বলে না। হাতের হাতা গুটিয়ে দিয়ে পায়ের কাছে বসে। তানহার পা অভির পায়ের ওপর রেখে পায়ের টাওজার গুটিয়ে দেয়
” সব সময় এমনটা কেনো করেন?
বিরক্তি নিয়ে বলে তানহা।
“আমার ভালো লাগে
নির্বাক ভাবে উওর দেয় অভি।
” আমার ভালো লাগে না
উঠে দাঁড়িয়ে বলে তানহা।
অভি তানহাকে টান দিয়ে বুকের সাথে মিশিয়ে নেয়।
“এএটা কি হলো?
তানহা এক হাত অভির বুকের ওপর রেখে বলে
” এখনো কিছু হয় নি।
“ছাড়ুন
হালকা ধাক্কা দিয়ে বলে তানহা। অভি তানহাকে ছেড়ে বিছানায় বসায়। অভি তানহার পাশে বসে।
” চলে গেছিলে। কিন্তু থাকার কোনে জায়গা পেলে না। এই শহরে আমি ছাড়া তোমার কেউ নেই। বিয়ে হয়ে গেছে তোমার আমার। এবার সবটা মেনে সুন্দর সংসার করা উচিৎ
তানহা কাঁদো কাঁদো ফেস করে বলে
“সংসার করার ইচ্ছে তো আমারও ছিলো। ভেবেছিলাম বিয়ের পরে আমার এগারোটা জুনিয়র নেইমার হবে। সারাক্ষণ এগারেজন আমাকে মা মা বলে ডাকবে। কতো স্বপ্ন ছিলো আর আপনি সব নষ্ট করে দিলেন।
“স্বপ্ন ছিলো মানলাম তাই বলে এগারো জন
মাথায় হাত দিয়ে বলে অভি।
” আমার তো আরও বেশি বেবি নেওয়ার ইচ্ছে। রেফারি গোলি আর মাঠের বাইরেও তো কতোগুলো খেলোয়ার থাকে। মোটমাট চব্বিশ পঁচিশ টার মতো বেবি দরকার। কিন্তু বর যদি আপত্তি করে তাই এগারো জন্য।
গাল ফুলিয়ে বলে তানহা।
অভি হা করে তাকিয়ে আছে।
“তুমি বাঁচবা তো?
অভির কথা শুনে তানহা চোখ ছোটছোট করে তাকায় অভির দিকে।
” আমি মরবো কেনো?
“এতো গুলো বেবি?
” আপনি জানেন আমার দাদিমা রা কয় ভাই বোন?
অভি মাথা নারায় মানে জানে না।
“উনিশ ভাই বোন। আমার দাদিমার মা বাঁচলে আমি মরবো কেনো?
” আমি তো ভুলেই গেছিলাম আমি একটা ইস্টুপিটের কথা বলছি। দাঁতে দাঁত চেপে বলে অভি।
“আমিও ভুলে গেছিলাম আমি করলার সাথে নিজের ড্রিম শেয়ার করছি।
ভেংচি কেটে বলে তানহা।
” তুমি এখান থেকে যাবে?
“আপনার আশপাশে থাকার ইচ্ছেও আমার নাই। আপনিই খালি চিপকান
” আমার বইয়েই গেছে তোমার সাথে চিপকানোর
“হুমম তাই তো দেখি সারাক্ষণ ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে থাকেন। আর কিভাবে টাচ করবেন সেই ধান্দা খোঁজেন। রেগে বলে তানহা।
” ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে দেখি এতো বিশ্রী ঠোঁট কি করে হয়? তোমার থেকে রানু দিদার ঠোঁট বেশি সুন্দর।
“বাংলাদেশ এতো কিউট কিউট মেয়ে থাকতে যে রানু দিদার ঠোঁট দেখে সে যে কেমন স্বভাবের জানা হয়ে গেছে।
” তুমি
অভিকে থামিয়ে তানহা বলে
“ওই মুখে কথা বইলেন না। লজ্জা পাবেন
অভি দাঁত কটমট করে।
” প্রেমে পড়েছে
অভি প্রেমে পড়েছে
বুড়ি একটা রানু অভি ভাইয়াকে পাগল করেছে
তানহা গান গাইতে গাইতে বেরিয়ে যায়।
“বিশ্ব কটা
বিরবির করে বলে অভি।
🌹
অতিরিক্ত ড্রিংক করে আবির বাড়ি ফিরে। কলিং বেল বাজানোর সাথে সাথে অভির বাবা দরজা খুলে দেয়।
” তুমি মদ খেয়েছো? রেগে জিজ্ঞেস করে।
আবির ওনাকে পাশ কাটিয়ে টলমল পায়ে ভেতরে ঢুকে।
“আমি মদ খেয়েছি। আরও খাবো। বেশি করে খাবো
বলতে বলতে রুমে চলে যায়।
” ছেলেটা উচ্ছনে চলে যাচ্ছে
হতাশার সুরে বলে দরজা বন্ধ করে দেয়।
মায়া বিছানা ঠিক করছিলো। আবির এসে মায়াকে রুমে দেখলে চিৎকার চেচামেচি করবে। ঘাড় ধাক্কা দিয়ে মায়াকে বের করে দেবে তাই তারাহুরো করছে। আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে আবিরের মনে একটু জায়গা করার জন্য। কিন্তু বিফল হচ্ছে। এ জীবনে আবিরের মন থেকে তানহা নামটা মুছবে না এটা বেশ বুঝে গেছে মায়া। হঠাৎ শাড়ি ভেদ করে পেটে কারো স্পষ্ট পেয়ে চমকে ওঠে মায়া। মুখটা একটু ঘুরিয়ে দেখে আবির মায়ার ঘাড়ে মুখ ডুবিয়ে আছে।
“তানহা আই নিড ইউ
আধো আধো কন্ঠে বলে আবির।
মায়া বেশ বুঝতে পারে আবির নেশার ঘোরে আছে আর মায়াকে তানহা ভাবছে। তবুও মায়া ঠিক করে নেয় আবিরকে বাধা দেবে না।ভুল করে যদি একটু ভালোবাসা পেয়ে যায় হ্মতি কি তাতে?
মায়ার চুল থেকে মুখ তুলে মায়াকে ঘুরিয়ে নেয় আবির।
” তোমার মধ্যে কি আছে বলো তো তানহা? যা প্রতিনিয়ত আমাকে তোমার কাছে নিয়ে যায়?
মায়া মাথা নিচু করে আছে।
আবির মায়ার মুখটা তুলে ঠোঁট ঠোঁট মেলায়।
আবির মায়াকে বিছানায় শুয়িয়ে দেয়। মায়ার মুখের কাছে মুখটা নিয়ে নেশালো কন্ঠে বলে।
“আমি কি তোমায় ভালো বাসতে পারি?
মায়া সাথে সাথে জাপ্টে জড়িয়ে ধরে মায়াকে।
আবির সম্মতি পেয়ে মুচকি হাসে।
🌹🌹
” এখানে থাকতে হলে তোমাকে রান্না করতে হবে।
তানহা ফোন টিপ ছিলো তখন অভি এসে বলে।
“আপনাকে থালাবাসন মাজতে হবে। ফোন থেকে চোখ সরিয়ে বলে তানহা।
“এটা আমার বাড়ি। ভাব দেখিয়ে বলেঅভি।
” এখানে আপনি ভাড়া থাকেন মিষ্টার।
“তো
” এটা আপনার বাড়ি না।
“ওকে মানলাম এখন যাও রান্না করো।
তানহা দাঁত কেলিয়ে লাফ দিয়ে উঠে
” এখুনি রান্না করে আনছি প্রাণের সুয়ামি
বলে চলে যায়। অভি হা হয়ে যায়।
“হলো টা কি?
ভাবছে অভি।
তানহা শার্টের হাতা উঁচু করে রান্নায় লেগে পড়ে।
” প্রেম জেগেছে আমার মনে বলছি আমি তাই
তোমায় আমি ভালোবাসি তোমায় আমি চাই
উচ্চস্বরে গান গাইছে আর রান্না করছে। অভি খাবার টেবিলে বসে বারবার ঢোক গিলছে
“না জানি কিআছে কপালে।
পাক্কা দুই ঘন্টা পরে তানহার রান্না শেষ হয়। করলা ভাজি ভাত আর ডাল। অভিকে খেতে ডাকে। অভি খাবারের দিকে একবার চোখ বুলাই। দেখতে ভালোই।
” একি প্রাণের সুয়ামি খাচ্ছেন না কেনো? খান না বেবি
ভাতে ডাল দিয়ে বলে তানহা। তানহার চোখে মুখে হাসি। অভির কলিজা কাঁপছে। বিসমিল্লাহ বলে খাবার মুখে দেয়। তানহা লাফ দেয়। প্রচন্ড ঝাল খাবার। অভি ঝাল একদম খেতে পারে না। মুখের খাবার ফেলে দেয়।
“শখ মিটেছে আমার রান্না খাওয়ার?
দাঁত কেলিয়ে বলে তানহা। অভি পানি খাচ্ছে তো খাচ্ছেই। ঝাল কমার নামই নেই। চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। মুখ পুরো লাল হয়ে গেছে। তানহা অভির ভাব দেখছে।অভি তানহার হাত টান দিয়ে কাছে এনে ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে দেয়। তানহা চোখ মুখ খিঁচে বন্ধ করে টাওজার চেপে ধরে। অভির মুখটা পুরো গরম হয়ে গেছে সেটা তানহাও বুঝতে পারে। একটু পরে তানহাকে ছেড়ে দেয়। ঝাল কমছেই না।
” কে বলেছিলো কিস করলে ঝাল কমে তাকে ঠাটিয়ে চড় মারতে ইচ্ছে করছে অভি। তানহা এখনো চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে আছে। বুকের ভেতর টিপটিপ করছে। নিশ্বাস নিতেও লজ্জা করছে। তাকানোর সাহস নেই। অভিকে জ্বালাতে গিয়ে নিজেই জ্বলছে।
তানহা চোখ খুলতে যাবে তখন আবার অভি তানহার
চলবে