#ভালোবাসি
#পর্বঃ১৫
#Tanisha Sultana (Writer)
“আপনি জানলেন কি করে আমি এখানে থাকি?
” মন থেকে কাউকে খুঁজলে ঠিক পাওয়া যায়।
“বাসায় যাবো
তুলি আর রুহি হাঁটা শুরু করে
” আমি এতো কষ্ট করে এতো দুরে আসলাম আর তুমি আমাকে দেখে পালিয়ে যাচ্ছ
“আসলে এটা আমার শশুর বাড়ির এলাকা। আমি বিবাহিত। এবাবে আপনার সাথে কথা বললে আমার বদনাম হবে। আশা করি বুঝতে পারছেন
তুলি আর রিককে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে চলে যায়। গাড়িতে উঠে জোরে জোরে শ্বাস নেয়
” তুলি তোমার স্যার
“হুম। খুব সাংঘাতিক
তুলি বাড়ি ফিরে ফ্রেশ হয়। সায়ানকে রুমে না দেখে ভাবে হয়ত মায়ার রুমে আছে। তাই মায়ার রুমে যায়। দরজায় টোকা দেওয়ার আগেই কিছু কথা তুলির কানে আসে মায়ার রুম থেকে
” মা আমি ঠিক আছি। আর সেভ আছি। তুমি চিন্তা করো না আমার জন্য। আমি আমার কাজ শেষ করেই শান্ত হবো। তার আগে না
তুলি চিন্তা করতে থাকে।
“মায়ার বাবা মা হারায় নি। ওনারা আছে। আর মায়া আপু কোনো একটা প্লান করেছে। হয়ত আমাকে আর সায়ানকে আলাদা করে চায়। আমাকে মায়ার প্লান জানতেই হবে। কিন্তু এখানে থেকে সম্ভব নয়। খুব তারাতাড়ি ঢাকা ফিরে যেতে হবে আমাদের।
তুলি রুমে এসে গভীর মনোযোগ দিয়ে ভাবছে। তখন সায়ান আছে
” কি রে কি ভাবছিস
“কিছু না
” আমি তোর মুখ দেখেই বুঝতে পারছি
“বুঝতেই যখন পারছেন তখন জিজ্ঞেস করছেন কেন? শুনুন কাল সকালেই আমরা ঢাকা ফিরে যাবো
” কিন্তু কেনো?
“গেমস খেলতে
” বুঝলাম না
“এতো বুঝতে হবে না।
তুলি জামাকাপড় গোছাতে থাকে।
সকালে ওরা ঢাকার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পরে। মায়া ঢাকা যাওয়ার কথা শুনে ঘাবড়ে গেছিলো।
তুন ঘন্টা জার্নি করার পরে ওরা বাড়ি চলে আসে। মায়াকে সায়ান একটা রুম দেখিয়ে দেয়। মায়া রুমে চলে যায়। অনেক দিন অফিসে যাওয়া হয় না তাই সায়ান অফিসে চলে যায়। তুলি রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পরে।
সন্ধায় তুলির ঘুম ভাঙে। চোখ খুলে দেখে সায়ান কারো সাথে ফোনে কথা বলছে। তুলি একটু ভালো করে তাকিয়ে দেখে ফোনটা তুলির। তুলি এক লাফে উঠে সায়ানের কান থেকে ফোনটা নিয়ে আসে।
“ফোনটা নিলি কেনো?
রাগী গলায় বলে সায়ান। তুলি ঢোক গিলে বলে
” কার সাথে কথা বলছিলেন
“তোর নাগরের সাথে
” নাগর আবার কার নাম
“আজ থেকে তোর ফোনে কোনো ছিম থাকবে না
” আপনার কথায়
“হুম আমার কথায়। আমি তোর হাজবেন
” আই নো। এই কথা বারবার বলার কি আছে
“তুই তো ভুলে যাস তাই মনে করিয়ে দিলাম
তখন দরজায় মায়া নক করে
” আসো
মায়া ভেতরে এসে বলে
“আমি আজ খাবার বানিয়েছি। চলো খাবে তোমরা
” তুমি বানিয়েছো
“তুলি শুরু কি তুমিই রান্না করতে পারো আর কেউ পারে না
” সেটা কখন বললাম।
“তুমি খেলে খাবে না খেলে নেই। সায়ান তুমি চলো তো
মায়া সায়ানের হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে থাকে। তুলি থামিয়ে বলে
” আমি হাজবেন কানা না। চোখে দেখতে পায় তো টানাটানি করে নেওয়ার কিছু নেই।
মায়া চলে যায়। সায়ান আর তুলিও যায়। তুলি খাবার টেবিলে বসে বলে
“কোন রেস্টুরেন্টে থেকে এনেছো
” মানে? কি বলতে চাইছো তুমি?
রেগে বলে মায়া
“এতো রান্না তুমি করো নি
” আমি করেছি
“ওহহ গুড তাহলে বলো মাংস রান্নায় কি কি লাগে
মায়া আমতাআমতা করে। তুলি শব্দ করে হেসে ওঠে। সায়ান বলে
” আমার খিদে পেয়েছে
মায়া সায়ানকে খাবার বেরে দেয়। তুলিও খায়।
খাওয়াদাওয়া শেষে মায়া সায়ান কিছু একটা নিয়ে আলোচনা করছে। আর ওদের থেকে একটু দুরে তুলি টিভি দেখছে।
টিভিতে বারবার একটা নিউস দেখাচ্ছে। সেটা হলো কিছুদিন আগে প্রায় তিন কোটি টাকা অত্তসাদ করে বিদেশে পালিয়েছে এক দম্পতি। মহিলা আর লোকটার ছবিও দেওয়া আছে। মহিলাটার চেহারার সাথে মায়ার চেহারার কিছুটা মিল আছে।
তুলি নিউস দেখে জোরে জোরে হাসা শুরু করে। সায়ান আর মায়া তুলির দিকে তাকায়
“এভাবে হাসসিস কেনো
তুলি হাসি কিছুটা থামিয়ে বলে
” এই নিউজ টা দেখে হাসি পেলো
“এতে হাসির কি আছে
” দেখেন এই মহিলাটার একটা মেয়ে আছে। তাহলে সেই মেয়েটার নাম হলো চোরের মেয়ে চোর। আর ওই মেয়েটা বফ হলো চোরের বফ। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সবাই চোর
“স্টুপিট থামো
মায়া ধমক দিয়ে বলে
” আরে আপু তোমার গায়ে লাগলো কেনো বুঝলাম না
“আমার গায়ে লাগবে কেনো?
” সেটাই তো
“সায়ান তোমার বউকে বলো তো চুপ থাকতে
” আমি ততক্ষণ চুপ থাকবো না যতখন না ওই লোক দুটো ধরা না পরবে
বিরবির করে বলে তুলি। তুলি নিজের রুমে চলে যায়।
“মায়া আমাকে একটু হেল্প করবে
” কি রকম
“আমি তুলিকে প্রপোজ করবো। বাট কিভাবে সব শুরু করবো ভেবে পাচ্ছি না
মায়া মুখটা ছোট করে বলে
” ওহহ
“ওহহ কি। একটু বলো না। কাল তুলির বার্থডে কাল কেই প্রপোজ করতে চায় আমি
” আমি তোমাকে কি হেল্প করবো
“ভাবছি ছাঁদে প্রপোজ করবো। তো ছাঁদটা কিভাবে সাজাবো এই বিষয়ে একটু হেল্প করো
” ঠিক আছে
“ধন্যবাদ
সায়ান রুমে চলে যায়। মায়া কাউকে ফোন করে
” কাল কেই যা করার করতে হবে। কাল সায়ান তুলিকে প্রপোজ করবে। আমি কেনেভাবেই সায়ান আর তুলিকে এক হতে দেবো না। তুমি কাল বাড়ির পেছনে ওয়েট করবে। কোনো ভুল যেনো না হয়
রুমে বসে তুলি ফোনে গেমস খেলছে তখন সায়ান হাতে একটা ব্যাগ নিয়ে আসে
“কাল তুই এটা পরিস
” কেনো?
“আমি বললাম তাই
” পারতে পারি একটা শর্তে
“কি
” আমাকে তুমি করে বলতে হবে
“বলতে পারি তবে একটা শর্তে
” কিি
“আমাকে তুমি করে বলতে হবে
সায়ান আর তুলি এক সাথে হেসে ফেলে।
” এইটুকুনি একটা পিচ্চি মেয়ে তাকে তুমি বলতে হবে
“এতো বড় একটা ছেলে তাকে তুমি বলতে হবে
” আবার মুখে মুখে তর্ক করছিস
“হুমমম
” দেবো একটা
“কিস না কি🙈
” থাপ্পড়
“হুরর
” হপপ
“চুপ
” ধুর
“কথায় বলবো না আপনার সাথে
” কানটাএকটু রেস্ট পাবে
“কি বললেন 😡
” কি বললাম
“হনুমান
” আমার পিচ্চি বউ
তুলি সায়ানের কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে পড়ে। সায়ান তুলির মাথায় হাত বুলায়
“জানিস প্রথমে তোকে দেখলেই রাগ হতো আর এখন না দেখলে রাগ হয়
” সেম টু ইউ। তবে আপনি আমার ওপর অনেক টর্চার করছেন
“সরি
” খুব কষ্ট দিছেন। ছোটবেলা থেকে অনেক কষ্ট পেয়েছি। এখন একটু সুখে থাকতে চাই। ভালো থাকতে চায়
“আমি আর কখনো তোকে কষ্ট দেবো না প্রমিজ
” ধন্যবাদ।
“কাল কিন্তু সন্ধায় রেডি থাকিস
” কোথায় যাবো
“সারপ্রাইজ আছে
” ঠিক আছে
চলবে