#ভালোবাসি_বুঝে_নাও🍁🍁
#পর্ব_১৫
#সুমাইয়া_সুলতানা _সুমী(writer)
.
রাতে ছাদে বসে বসে ভাবছে মেহরাব। কি হতে পারে মাহির প্রশ্নের উত্তর,,, আজব প্রশ্ন একি রকম দেখতে দুটো ফুলের মধ্যে থেকে আমি কীভাবে মাহি কোনটা জানবো,, উফ।
তোর ভালোবাসা যদি সত্যি হয় তুই যদি ওকে সত্যি নিজের সব টুকু দিয়ে ভালোবাসিস তাহলে অব্যশই তুই চিনতে পারবি (পিছন থেকে মেঘ বলল)
কি বলছিস,, তুই অন্তত এই কথা বলিস না, আর কেউ না জানুক তুই তো জানিস আমি মাহিকে কতটা ভালোবাসি (মেহরাব)
তাহলে এত চিন্তা করছিস কেনো?? ঠান্ডা মাথায় ভাব দেখবি ঠিক পারবি,,, আচ্ছা তুই কি একটা জিনিস ভেবে দেখেছিস??(মেঘ)
কি??
মাহি প্রশ্নের মধ্যে কিন্তু অনেক কিছু বলে দিয়েছে তোকে (মেঘ)
যেমন??(মেহরাব বলল)
আরে বুদ্ধু একবার ভালো করে প্রশ্ন টা ভাব তোরা তিনজন মেঘলা তুই মাহি বেড়াতে গিছিস পার্কে গিয়ে কিন্তু বাদামটা তুইও আনতে পারতি কিন্তু না মাহি সেখানে মেঘলাকে পাঠিয়েছিলো তারপর সেখানে তুই আর মাহি একা ছিলি,, আর মাহি ফুলের মধ্যে থেকে ওকেই কেনো বাছতে বলল মেঘলা কেউ তো বাছতে বলতে পারতো কেননা মেঘলা তোর বোন,, কিন্তু না মাহি তোকে ওকেই খুঁজে নিতে বলেছে তারমানে বুঝতে পারছিস??(,,,(লেখিকা;সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী)মাহি তোকে পরিক্ষা করছে যে তুই ওকে ভালোবাসিস কি না আর যদি বাসিসও তাহলে আদৌ কতটুকু ভালোবাসিস এবার বুঝলি??(মেঘ)
আরে বাবা বলিস কি এতটুকু মেয়ের মাথায় কত প্যাচ দেখেছিস?? তারমানে ও বোঝে যে আমি ওকে ভালোবাসি ওকে চাই তবুও ও না বুঝার ভান করে থাকে বাবাগো কতবড় শেয়ানা (মেহরাব)
হুৃম ভাই মেয়েরা এমনি ওরা চাই যে বাবার পরে যে ওদের ভালোবাসবে সে ঠিক ওকে কতটা সুখে রাখতে পারবে কতটা ভালোবাসতে পারবে,, বাবার মতো ঠিক কতটা আগলে রাখতে পারবে,,, তাই জন্যই তো ওরা বুঝেও না বোঝার ভান করে ওরা দেখতে চাই যে,,, যে ওকে ভালোবাসে বলছে সে ওর জন্য ঠিক কি করতে পারে। (মেঘ)
হুম বুঝলাম,,, আর এরপর কি করতে হবে সেটাও বুঝলাম,,, এখন চল ঘুমাই কালকে তো আবার তোর বিয়ে কত কাজ আছে পরশোদিন আবার ঢাকা ফিরতে হবে সকাল সকাল,,, অফিসে অনেকে কাজ জমে গেছে ঢাকায় ফিরে তো শ্বাসও নিতে পারবো না এতো কাজ (মেহরাব)
হুম আমারো তো থানায় অনেক কাজ জমা হয়ে গেছে ছুটি নিয়েছি তবুও কাজ তো আর বসে থাকবে না,, যেয়ে সেই কাজ করতেই হবে, এখন চল (এরপর দুজন নিচে চলে গেলো,,,,)
সকালে,,,,
কলপাড়ে দাড়িয়ে হাতে ব্রাশ নিয়ে ব্রাশ করছিলো মাহি ঠিক তখনি কেউ পিছন থেকে বলল।
এই পিচ্চি (নেহাল)
মাহি মুখ থেকে থু থু ফেলে পিছনে তাকিয়ে দেখলো নেহাল দাড়িয়ে আছে।
আপনি??এখানে কীভাবে??
বারে আমি আসবো না তো কে আসবে, আমি হলাম তোমার মেঘ ভাই এর একমাত্র ছোট ভাই নেহাল।
এতোদিন তো দেখিনী আজকে হঠাৎ করে কোথা থেকে উদয় হলেন।??
আরে আমার ভার্সিটীতে কিছু কাজ ছিলো তাই আসতে পারিনী,,, আর আমি কাল রাতেই এসেছি,, শুনলাম তোমরা নাকি এ কদিন অনেক মজা করেছো,, ইস আমি মিস করে গেলাম।
মাহি কিছু বলতে যাবে তার আগেই মেহরাব ওকে ডাক দিলো।
তোর ওখানে কি?? এগিকে আয় ফুপি ডাকছে তোকে (রেগে বলল মেহরাব)
আ,,,আসছি ভাইয়া,, এই বলে মাহি চলে গেলো।
বুঝলাম না আমি যখনি মাহির সাথে কথা বলতে যায় তখনি মেহরাব ভাই এমন কেনো করে (নেহাল মনে মনে ভাবতে ভাবতে চলে গেলো)
এদিকে,,, মাহি বারান্দা দিয়ে হাঁটছে আর একা একা বকবক করছে।
কই মা তো আমায় ডাকছে না তাহলে ভাইয়া কেনো বললো যে মা আমায় ডাকছে শুধু শুধু মায়ের কাছে আমায় বকা শুনালো। মাহি যখন এসব ভাবছিলো তখনি কেউ ওর হাত ধরে টেনে একটা দেওয়ালের সাথে মিশে দাড় করালো।
এই কেরে (এই বলে যেই মাহি সামনে তাকালো দেখলো মেহরাব রাগি চোখে ওর দিকে তাকিয়ে আছে)
কি ভাইয়া আপনি মিথ্যা বললেন কেনো?? মা তো আমায় ডাকিইনি (মাহি)
নেহাল এর সাথে তোর এত কিসের কথা হুম (রেগেমেগে বলল মেহরাব)
আরে এমন কেনো করছেন আমি তো শুধু ভদ্রতার খাতিরে কথা বলছিলাম এই আর কি।
তোকে এতো ভদ্র না হলেও চলবে ওকে,, আর শোন ওর থেকে এবং বাকি সব ছেলেদের থেকে দূরে থাকবি বুঝলি?? নয়ত তোর এই গাল আর গাল থাকবে না মেরে খাল করে দেবো,,, এই বলে মেহরাব চলে গেলো আর মাহি ওখানে দাড়িয়েই বলতে লাগল।
বলবো বলবো একশো বার কথা বলবো,, নিজে তো ভালো করে কথা বলেই না আবার অন্য কেউ বললে কেমন খারুচ এর মতো করে,,,
উফ সব রুমে শুধু মানুষ আর মানুুষ একেবারে মানুষ এ গিজগিজ করছে,, কোথায় গিয়ে যে একটু রেস্ট নিই,, সারারাত জার্নি করে এসে আমি অনেক ক্লান্ত একটু ঘুমালে ভালো হতো (সব রুম দেখতে দেখতে বলল নেহাল,, তখনি একটা খালি রুম পেলো সেই রুমে কেউ নেই শুধু বিছানায় চাদরে মোড়ানো কিছু পড়ে আছে,, নেহাল ভেবেছে ওটা কোল বালিশ তাই বলল)
যাক বাবা অবশেষে একটা খালি রুম পেলাম সাথে তো আবার কোলবালিশ ও আছে দেখছি যায় শুয়ে পড়ি।
এই বলে নেহাল গিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লো সাথে ওটা কে শক্ত করে জরিয়ে ধরে।
এদিকে,,, বিছানায় চাদর মুরি দিয়ে আরামে ঘুমিয়ে ছিলো মীরা তখনি কেউ ওকে আস্টেপিস্টে জরিয়ে ধরে আছে,, ও নরতেও পারছে না দম যেনো আটকে যাবে যাবে ভাব তখনি গায়ের সমস্ত জোর দিয়ে ধাক্কা দিয়ে ফেলে মীরা উঠে বসল।
আরে কোলবালিশ দেখি আবার ধাক্কাও মারে এই বলে নেহাল সামনে তাকিয়ে দেখলো একটা মেয়ে বসে আছে তা দেখে নেহাল চেচিয়ে উঠলো।
আআআআআআআআআআআআআ(নেহাল)
আআআআআআআআআআআআআ(মীরা)
এই মেয়ে কে তুমি?? আর এখানে কি করছো?? এভাবে চিল্লাচ্ছো কেনো??(নেহাল)
আপনি কে হ্যাঁ?? আর এভাবে অসভ্যর মতো আমায় জরিয়ে ধরেছিলেন কেনো। আর আপনি চেচালেন তাই আমিও চেচালাম (মীরা)
তারপর দুজনের মাঝে ছোট খাটো একটা ঝড় বয়ে গেলো,,, কেউ কারো থেকে কম না, দুজন ঝগড়া করে দুদিকে চলে গেলো আর যাওয়ার আগে থ্রেট দিয়ে গেলো যে পরে দেখে নেবে।
,,দেখতে দেখতে দুপুর গরিয়ে বিকেল,,আর বিকেল গরিয়ে সন্ধ্যে হয়ে গেলো, সবাই কাজে ব্যাস্ত গ্রামের মানুষ জনও সবাই আসতে শুরু করেছে,, পুরো বাড়ি যেনো গম গম করছে,, মেঘলাকে সাজানো হচ্ছে আজকে বিয়ে হবে তারপর কাল একদম ভোরে সবাই ঢাকা রওনা দেবে,৷,,
কই গো তোমাদের সাজানো হলো?? বর তো এসে পরবে (মাহির মা)
কি আম্মু তুমি কি যে বলো মেঘ ভাইয়ারা তো এখানেই ওনারা আবার কীভাবে আসবে??(মাহি)
বাহ আমার মেয়েকে আজ কি সুন্দর লাগছে একদম বউ বউ…
বারে ছোট ফুপি শুধু তোমার মেয়েকেই সুন্দর লাগছে আর আমাদের বুঝি বান্দর লাগছে?? (ইশিতা)
না না আমার সব গুলো মেয়েকেই ভীষণ সুন্দর লাগছে।
মেহরাব আজকে গোল্ডেন কালার এর শেরোআনি পরেছে,, মেঘ ও সেমই পরেছে দুই বন্ধ একেবারে সেম পোশাক।।
কি বন্ধু আজতো আমি নিশ্চিত মাহি তোকে দেখে ফিদা হবেই ১০০% শিওর।
হুম??? ফিদা না ছাই আমার সাথে দেখা হলেই শুধু বলছে মেহরাব ভাই উওরটা তো দিলেন না,,, কি আজব মেয়ে আজব প্রশ্ন করেছে,, কি আজব উওর কে জানে।
হুম এই আজব মেয়েকেই তো আপনি এতো ভালোবাসেন।
হয়েছে তোর ঙ্গান দেওয়া?? এখন চল সবাই বাইরে অপেক্ষা করছে।
তারপর দুজন বাইরে চলে গেলো মেহরাব স্টেজ এর দিকে যেতে গেলে দেখলো মাহি বারান্দায় দাড়িয়ে কি যেনো করছে তাই ও মেঘকে যেতে বলে বারান্দার দিকে গেলো।
এই তোরা কে কোনটা বলতো?? আমি তো কাউকেই চিনতে পারছি না,, তোরা দুজন কোনো চিন্হ রাখতে পারিস না?? তাহলে আমি চিনতে পারতাম। (আসোলে মাহি স্টেজ এর দিকে যেতে গেলে দেখলো যে রকি আর রাকিব দুজন সেম একি কালার এর জামা পড়ে একি রকম সেজে যাচ্ছে তাই মাহি ওদের ডেকে বলল)
কি আপু তুমি যদি না চেনো তাহলে আমরা কি বলবো বলো,, আচ্ছা শোনো আমি হলাম রকি আর ও হলো রাকিব বুঝেছো??
নারে ও বুঝবে না মাথায় গোবর পোড়া তো তাই (পিছন থেকে মেহরাব বলল)
মাহি পিছনে তাকিয়ে মেহরাবকে দেখে তো হা হয়ে গেলো,, কি সুন্দর লাগছে লোকটাকে একদম রাজকুমার এর মতো।
আর মেহরাব তো মাহির দিকে হা করে তাকিয়েই আছে প্রথম থেকে,, এই মেয়েটা যে আর কত ভাবে ওকে মারবে তা এই মেয়েই জানে,, মনে চাচ্ছে একদম রসগোল্লার মতো টুপ করে খেয়ে ফেলি উফ আমার পরীটা (মনে মনে বলল মেহরাব)
আচ্ছা এখন অনেক চেনা চেনি হয়েছে এখন চল সবাই বিয়ে পড়ানো হবে। তারপর মেহরাব মাহির হাত ধরে স্টেজ চলে গেলো,, অনেক সুন্দর ভাবে বিয়ে সম্পূর্ণ হলো,, বিয়ে পরাতে পরাতে অনেক রাত হয়ে গেলো তারপর বিয়ে শেষ হওয়ার পর বাধলো আরেক কান্ড।
চলবে,,,,,,