ভালোবাসি হয়নি বলা পর্ব-২০+২১

0
423

#ভালোবাসি_হয়নি_হয়নি বলা
#লেখকঃmahin_al_islam
#পর্বঃ২০

নার্সের চিৎকার শুনে আরও কয়েকজন ডাক্তার শহ নার্স কেবিনে প্রবেশ করলো

সবাইকে কেবিনে প্রবেশ করে দীপাকে ওই অবস্থায় দেখে তাড়াহুড়ো করে সবাই দীপাকে একটা কেবিনে শিফট করালো

এবং দীপার দ্রুত চিকিৎসা শুরু করলো

বেশ কিছুক্ষণ হয়ে গেলো তাও দিপার জ্ঞান ফিরতে চায় না

ডাক্তার এবং নার্স অবাক এটা কিভাবে সম্ভব

ডক্টর ঃ রোগী তো শরীর একদম দুর্বল এত দুর্বল যে ওর এখন কোন ধরনের মেডিসিন প্রয়োগ করা যাবে না

নার্স ঃ তাহলে তো খুব বিপদে আছে কখন যে নিঃশ্বাসটা বন্ধ হয়ে যায় বুঝতে পারতেছি না এখন কি করব স্যার

ডক্টর ঃ এখন আর আমাদের হাতে কিছু করার নেই এখন সব উপরওয়ালার হাতে যদি ওনার হায়াত থেকে থাকে তো উনি বেঁচে থাকবে আর যদি হায়াত না থেকে থাকে তাহলে আমাদের কিছু করার নেই উনি পরপারে পাড়ি জমাবেন

নার্স ঃ এই রোগীর ভাইয়া আমাদের এখানে ভর্তি আছেন অনেকদিন যাবৎ আর তার মাও এই হসপিটালে আছে আমি কি তাদের এই খবরটা এখন দিব নাকি না

ডক্টর ; এই কাজ ভুলেও করবেন না তাহলে উনারা অনেক উত্তেজিত হয়ে যাবে এবং উনার ভাইয়ের অনেক বড় একটা ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে আর আমি যতোটুকু জানি ওনার মা হাটের রোগীর এই খবর যদি উনি শুনে হয়তো ওনার হার্ট এটাক করতে পারে তাই আমাদের এখন কাউকে কিছু বলা উচিত হবে না সব উপরওয়ালার হাতে এখন সবাই আল্লাহর কাছে হাত তুলে দোয়া করেন মেয়েটার জন্য

ডাক্তার এবং নার্স সবাই নফল নামাজ পড়ে দীপার জন্য দোয়া করল যাতে যেন মেয়েটা আবার সুস্থ মত পৃথিবীতে ফিরে আসে

এইদিকে,

১ম মেয়েঃ এই তোর এখন থাম আর মারিস না একদম মেরে ফেললে আমাদের বিপদে পড়তে হবে পুলিশ কেস হতে পারে তখন সামলাতে অনেক জটিল হয়ে যাবে এমনিতেই অনেক পিটায়ছিস আর এখন ওর অবস্থা মর্মান্তিক যেকোনো সময় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যেতে পারে তাই আমাদের আর এখানে থাকা উচিত হবে না চল সবাই

2য়: তুই একদম ঠিক কথা বলতেছিস পুলিশকে কেস হয় গেলে একটু ঝামেলা হবে তখন আবার
বাসায় অনেক ঝামেলা হবে আব্বু-আম্মু অনেক বকাবকি করবে তার থেকে একে এই অবস্থায় ফেলে যাই যখন মারা যায় যাবে

ওখান থেকে সবাই চলে গেল মাহিন মাঝ রাস্তায় পড়ে আছে আর ধীরে ধীরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে

(কখন যে নিশ্বাস থেমে যায় আর মাহিন পরপারে চলে যায় সেটা কেউ নিশ্চিত না এমনকি আমিও)

মাহিন অনেক চেষ্টা করতেছে চোখদুটো খোলা রাখার জন্য কিন্তু পারতাছে না যতই চেষ্টা করতেছে চোখ দুটো খোলা রাখার জন্য

চোখ দুটো ততই তার সাথে বেইমানি করতেছে চোখদুটো আস্তে আস্তে বন্ধ হয়ে আসতেছে

মাহিন আবার চেষ্টা করতেছে চোখ খোলা রাখার জন্য কিন্তু পারতেছেনা চোখ দুটো আপনা আপনি বন্ধ হয়ে আসতেছে

মাহিনের চোখের সামনে শুধু ভেসে উঠতেছে
দীপার সেই কান্না ভরা মুখখানি যে মুখে রয়েছে অনেক মায়া

চোখে রয়েছে গভীর অতল মায়ার সাগর
যে চোখ দুটোর মায়ায় পরে মা হিন্দি পার প্রেমে পড়েছিল আজকে সেই চোখ দুটোয় মাহিনের জন্য শুধু ঘৃণায় দেখতে পেয়েছিল

মাহিন ভুলেই গিয়েছে তার শরীর থেকে রক্ত ঝরে যাচ্ছে আর মাহিনের রক্ত দিয়ে পুরো রাস্তাটা লাল হয়ে যাচ্ছে

মাহিনের চারদিকে রাস্তাটা লাল হয়ে আছে মাহিনের রক্তে আর সেই রক্তের উপর শুয়ে আছে মাহিনের অস্তিত্ব,, অস্তিত্ব আর কিছুক্ষণ থাকবেন তারপর বিলীন হয়ে যাবে সবার মাঝে থেকে

মাহির অনেক চেষ্টা করতেছে তার বেইমান চোখ দুটোকে খুলে এই পৃথিবীটা দেখার জন্য কিন্তু তার বেইমান চোখদুটো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে কালো মেঘে ছেয়ে যাচ্ছে তার হৃদয়

( একদিন মাটির ভিতরে হবে ঘর রে মন আমার কেন বান্ধ দালান ঘর)

মাহিন আধো আধো চোখ দিয়ে দেখতে পেল একটা গাড়ি তার দিকে এগিয়ে আসতেছে

মাহিন চোখ দুটো ভালোভাবে খুলে দেখতে চাইল গাড়ীটা কার হবে কিন্তু পারল না মাহিনের চোখদুটো বন্ধ হয়ে গেল

মাহিনের চোখদুটো বন্ধ হয়ে গেল নিঃশ্বাসটাও থেমে গেল

,,
রাকিবঃ এই ড্রাইভার গাড়ি থামা,, সামনে দেখত ওটা কি পড়ে আছে মানুষ না

ড্রাইভার ঃ জি স্যার মানুষ এত মনে হচ্ছে কিন্তু এরকম ভাবে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে আছে কি জন্য

রাকিবঃ আরে গাধা কোথাকার হয়তো কেউ ওকে পিটিয়েছে আর রাস্তায় ফেলে দিয়ে গেছে চল তো দেখি এখনো বেঁচে আছে কিনা

তারপর রাকিব আর ড্রাইভাররা দুজনে মিলে মাহিনের কাছে চলে গেল

ড্রাইভার ঃ স্যার লোকটার সামান্য পরিমাণ পালস রেট চলতেছে

রাকিবঃ বলিস কি তারা তারি নে লোকটাকে হসপিটালে নিয়ে যেতে হবে

ড্রাইভার : যদি পড়ে পুলিশের খপ্পরে পড়ে যায় বলা তো যায় না বাংলাদেশের পুলিশ

রাকিবঃ আরে চুপ থাক একটা লোক মরে যাচ্ছে আর অনি আছে পুলিশকে নিয়ে

রাকিব এবং ড্রাইভার দুজনে মাহিনকে ধরাধরি করে গাড়িতে তুলে নিল এবং হসপিটালের উদ্দেশ্যে রওনা দিল

ড্রাইভার ঃ স্যার আপনি কি একটা জিনিস লক্ষ্য করেছেন মানুষ এত নিষ্ঠুর হতে পারে একটা মানুষকে কেমনে এইভাবে পিটাইতে পারে তাদের মনে কি একটুও দয়া মায়া নাই আর মানুষটাকে দেখতেছেন তরতাজা একটা মানুষ মুখে এখনো হাসির রেখা ফুটে আছে

রাকিবঃ আরে পাগল এই দুনিয়াটা আর আগের মত নেই এখন মানুষ টাকার জন্য যে কোন পর্যায়ে পৌঁছে যেতে পারে,, আরে এখন টাকার জন্য ছেলে মাকে খুন করতেছে মা ছেলেকে খুন করতেছে বাবা ছেলেকে খুন করতেছে ছেলে বাবাকে খুন করতেছে,, এখন থেকে শুনে সাবধানে তাড়াতাড়ি গাড়িটা হসপিটালে নিয়ে যা

তারপর ড্রাইভার অতি সাবধানে সাথে গাড়িটা অনেক দ্রুত চালিয়ে হসপিটালে নিয়ে গেল

হসপিটালে গিয়ে রাকিব কয়েকজন নার্সকে ডেকে মাহিনকে হসপিটাল একটা কেবিনে মাহিনকে শিফট করালো

নার্সরা মাহিনের এই অবস্থা দেখে অনেকটা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে তারা কখনো এরকম পেশেন্ট দেখেনি

একজন নার্স ওই হসপিটালের সবথেকে অভিজ্ঞ ডাক্তার কে খুব তাড়াতাড়ি ডেকে আনলেন

তারপর ডক্টর মাহিনকে দেখে অনেকটা আপসেট হয়ে পড়লেন তিনি ভাবতে পারতেছিনা আনছে পেশেন্টকে বাচাতে পারবে কিনা

ডাক্তার ঃ নার্স রোগীকে তাড়াতাড়ি আই সি ইউ তে নিয়ে যাও খুব তাড়াতাড়ি অপারেশন করাতে হবে নয়তো উনাকে আর বাঁচানো সম্ভব হবে না বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছা আমাদের যতটুকু কর্তব্য আমি করে যাব

তারপর খুব দ্রুত মাহিনকে আইসিইউতে নেওয়া হলো

কেউ সিওর দিতে পারতেছে না যে মাহিনকে বাঁচাতে পারবে

সবাই বলতেছে তাদের নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করবে,, বাকিটা মহান আল্লাহতালার হাতে তিনি যদি তার হায়াত রেখে থাকে তো বেঁচে থাকবে নয়তো পরলোকে গমন করবে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে

রাকিব এবং ড্রাইভার অনেক চিন্তিত হয়ে আইসিইউ এর বাহিরে অপেক্ষা করতাছে হাটাহাটি করতেছি টেনশন কমানোর জন্য কিন্তু টেনশন কমতাছে না কারণ তাদের চোখ সামনে জলজ্যান্ত একটা মানুষ লাশ হয়ে আসবে সেটা কখনোই মেনে নিতে পারতেছে না রাকিব চৌধুরী

ড্রাইভার ঃ স্যার আমার এই প্রথম অন্য কারো জন্য চোখ থেকে পানি পড়তেছে

রাকিবঃ জানিস আমি কখনো এরকম তার মুখোমুখি হই নাই আজকে প্রথম হলাম আমার ইচ্ছা করতেছে আমি অনেক জোরে জোরে কান্না করে নিজের মনটাকে হালকা করি কিন্তু সেটাও পারতেছি না কারণ পুরুষ মানুষকে কান্না করতে নেই

তারপর ড্রাইভার আর রাকিব চৌধুরী অনেক কথাবাত্রা বললেন এবং দুজনের চোখেই পানি টপ টপ টপ টপ করে পড়তেছে গাল বেয়ে

এইদিকে,,,

দীপা বেডে শুয়ে আছে তার হাতে পাঁচটা স্যালাইন লাগানো হয়েছে

পেনশন নার্স দীপার কেবিনে বসে আছে কখন কি হয় সেটা ডাক্তারকে জানানোর জন্য নার্সরা অনেক কান্না করেছে কারণ এই মেয়েটা অনেক কষ্ট করেছে নার্সরা সেটা ভালো করেই জানে

কারণ যেদিন এই মেয়েটা তার ভাইকে এই হসপিটালে নিয়ে এসেছিল সেদিন থেকেই নার্স রা দিপা কে চেনে

১ম নার্সঃ জানো আমি এই প্রথম কোন পেশেন্ট এর জন্য কান্না করতেছি কিন্তু কেন কান্না করতেছি সেটা নিজেও জানিনা

২য় নার্সঃ একটা মেয়ে এতটা দুর্বল কিভাবে হতে পারে আমি এটাই চিন্তা করতেছি তখন থেকে

৩য় নার্সঃ আমি ঐ কথাটা ভাবতেছি একটা মেয়ে এতটা দুর্বল কিভাবে হতে পারে আমার জানা মতে হয়তো মেয়েটা অনেক টেনশন করে খাওয়া-দাওয়ার কোন ঠিক নেই আর মানসিক চাপ আছে যার ফলে এরকম টা হয়েছে না হলে কখনো এরকমটা হতো না

নার্স রা অনেক বিষয় নিয়ে কথা বলাবলি করতে লাগল এবং আল্লাহর কাছে দোয়া করতে লাগল যথেষ্ট মেয়েটা সুস্থভাবে ফিরে আসে এবং তার পরিবারের সাথে হাসিখুশি মুখের বাসায় ফিরে যেতে পারে

(আপনারা সবাই জানতে চেয়েছিলেন যে কি এমন কথা শুনে ছিল যার কারণে দীপা মাহীনের সাথে এইরকম মিস বিহেভ করল

ওকে তাহলে তাই এই পর্বে শুনে নিন আমি এই পর্বে দিতে চাইছিলাম কিন্তু আপনারা হয়তো একটু)

ডক্টর ঃ আরে মাহিন বাবা যে আসো আসো

মাহিনঃ আচ্ছালামু আলাইকুম আঙ্কেল কেমন আছেন

ডক্টর ঃ ওয়ালাইকুম আসসালাম আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি তুমি কেমন আছো বাবা

মাহিন: আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো আছি

ডক্টর : হ্যাঁ সেটা তোমার মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে তুমি অনেক হাসি খুশি আছো

মাহিনঃ আঙ্কেল আপনার কাছে যে জন্য আসা

ডক্টর : হ্যাঁ বাবা বলো কিভাবে তোমাকে সাহায্য করতে পারি

মাহিনঃ আসলে আমি দীপাকে অনেক ভালোবাসি অনেক আমার নিজের থেকেও বেশি আর আমাদের বিয়ের আগে হয়নি বেশ কিছু দিন আগে হয়েছে আমি আপনাকে মিথ্যা বলেছিলাম

ডক্টর : কিন্তু কেন তুমি কি আগে থেকে মেয়েটাকে ভালবাসতে

মাহিনঃ আরে আঙ্কেল না হঠাৎ করে পরিচয় হঠাৎ করে প্রেমে পড়ে যাওয়া হঠাৎ করে বিয়ে

ডক্টর : তোমরা এখনকার ছেলে মেয়ে কখন কি করে বসো আমাদের চিন্তাধারার বাহিরে ,,, এমন কিছু ভুল সিদ্ধান্ত নিও না যাতে দু’জনকেই সারা জীবন কান্না করতে হয়

মাহিনঃ আঙ্কেল দোয়া করবেন এরকম যেন কোনো ভুল সিদ্ধান্ত আমি না নেই,,, আমি দীপাকে আমার নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসি আমি চাই আমার ভালোবাসা দিয়ে ওকে আগলে রাখতে

ডক্টর ঃ তাহলে কি তুমি মেয়েটাকে আগে দয়াকরে টাকা দিয়েছিলে

মাহিনঃ জ্বী আঙ্কেল তাকে দয়া করে ছিলাম আমি

আর দীপা সেই সময়ে এসে দরজার সামনে উপস্থিত হয় যখন ডক্টর কথাটা বলেছিল আর মাহিন কথাটার উত্তর দিয়েছিল

যার ফলে দিপা মাহিন কে ভুল বুঝতে শুরু করে আর পরে ঝগড়াটা তো আপনারা ভালো করেই জানেন
,,,,,,,

হঠাৎ দীপার কেবিন থেকে একজন নার্স বেরিয়ে এসে ডক্টর ডক্টর বলে চিৎকার করতে লাগল

(বানান ভুল হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন প্লিজ)

চলবে………

#ভালোবাসি_হয়নি_বলা
#লেখকঃmahin_al_islam
#পর্বঃ২১

হঠাৎ দীপার কেবিন থেকে একজন নার্স বেরিয়ে এসে ডক্টর ডক্টর বলে চিৎকার করতে লাগল

ডক্টর ঃ কি হয়েছে এইভাবে চেঁচাচ্ছেন কি জন্য এটা হসপিটাল একটু আসতে

নার্স: এক্সট্রিমলি সরি,,, আসলে দীপা নামের যে প্রেসেন্ট আছে তার জ্ঞান ফিরে এসেছে তা অবিশ্বাস্য কাহিনী

ডক্টর ঃ আরে কি আজব কথাবার্তা বলতেছেন আপনার মাথা কি ঠিক আছে আমরা একটু আগে দেখে আসলাম তার অবস্থা অনেক খারাপ আর আপনি এখন বলতেছেন তার জ্ঞান ফিরে এসেছে এটা কিভাবে সম্ভব

নার্স ঃ আমিও তো সেটাই ভাবতেছি এটা কিভাবে সম্ভব হতে পারে তাই তো আমি আপনাদের ডাকার জন্য ছুটে এলাম আর কি ধরণের অদ্ভুত অদ্ভুত কথা কথা বলতেছে

ডক্টর : চলুন তো দেখি কি অবস্থা

নার্স এবং ডক্টর দুজনেই দিপার কেবিনে প্রবেশ করল ডক্টর কেবিনে প্রবেশ করেই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে দিপার দিকে কারণ তার লাইফের ফার্স্ট টাইম এরকম প্রেসিডেন্টকে এত তাড়াতাড়ি সুস্থ হতে দেখলে

ডক্টর ঃ এটাকি কবে হতে পারে এ রকমই হতে পারে না একটা মানুষ এত তাড়াতাড়ি কিভাবে সুস্থ হতে পারেনা এটা একটা স্বাভাবিক মানুষের ক্ষেত্রে কখনো হতে পারে না

দীপা: ডক্টর কি হতে পারে না আর আপনি কি আবোল তাবোল কথাবার্তা বলতেছেন আমি তো সুস্থ মানুষ আমি আবার অসুস্থ হলাম কবে

দীপার কথা শুনে ডক্টর যেন আকাশ থেকে মাটিতে এইমাত্র পরল

নার্স অবাক হয়ে দিপার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে মুখ হা করে

দিপাঃ আজব ব্যাপার আপনারা এরকম ব্যবহার করতেছেন কেন আর আমি এইভাবে শুয়ে আছি কেন,,,আর আমার ভাই তো একদম সুস্থ হয়েছে আমি তো আপনার সাথে কথা বলতে যাচ্ছিলাম কবে রিলিজ দিবেন সেই ব্যাপারটা নিয়ে তাহলে আমি এখানে কিভাবে আসলাম

ডক্টর এবং নার্স অবাক এর উপর অবাক হচ্ছে কি হচ্ছে তাদের সাথে তারা কি আদৌ ঠিক আছে নাকি তারাই অসুস্থ মেন্টালিটির সমস্যায় ভুগছে

দিপাঃ ডক্টর যাই হোক আমি এখন আসি আমার আম্মু হয়তো আমার জন্য টেনশন করতেসেন

ডক্টর আর নার্স কিছুই বলল না দীপার চলে জাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে তারা অবাক হচ্ছে এটা কিভাবে হতে পারে এত দুর্বলতা মানুষ এত তাড়াতাড়ি কিভাবে সুস্থ হয়ে উঠতে পারে তাদের মাথায় ঢুকতেছেনা তারা শুধু এটাই ভাবতাছে

দীপাকে কে রুমে প্রবেশ করতে দেখে দীপার আম্মু

আম্মুঃ আরে মা তুই সেই কখন বেরিয়েছিস রুম থেকে এখন রুমে আসার নাম হলো

আমিঃ আবে আম্মু আর বলবো না আমার সাথে কি আজব আজব ঘটনা ঘটে যাচ্ছে আজকে আবার আরেকজনের সাথে দেখা পেলাম সে আমাকে এখানে নিয়ে গেল সেখান থেকে আসলাম

আম্মুঃ তো ডক্টর কি বলল তোর ভাইকে কবে রিলিজ দিচ্ছে আর আমরা কবে বাসায় যাচ্ছি আর এখানে ভালো লাগতেছে না রে মা

আমিঃ আরে আম্মু কালকের রিলিজ দিবে আজকের রাতটা কোনো রকম থাকো কালকে বাসা যাব সবাই তার পর বাসায় গিয়ে থাকবো আর কখনো হসপিটাল আসতে হবে না আমাদের

তারপর মা মেয়ে অনেক গল্প করল তাদের হৃদয়ের জমে থাকা নানা ধরনের কথা

(কি ভাবতাছেন দীপা এত তাড়াতাড়ি কেন সুস্থ হলো তাই তো,, কি করব ভাই আমি একটু তাড়াতাড়ি সুস্থ করে দিলাম নয় তো এইসব অসুস্থতার কারণে আরও একটা পাঠ লিখতে হতো,,, আর আপনাদের সবারই কমেন্ট দেখলাম তাদেরকে খুব তাড়াতাড়ি মিল করে দেওয়ার জন্য হ্যাঁ আমিও সেই চেষ্টা করতেছি কিন্তু গল্পটা তো লিখে যেতে হবে তাই না প্লিজ একটু ধৈর্য্য নিয়ে পড়ুন অনেক মজা পাবেন সেষসময় আমিও চেষ্টা করতেছি ওদের খুব তাড়াতাড়ি মিল করে দেওয়ার জন্য এবং ওদের খুনসুটি আবার শুরু করার জন্য তাই কেউ এটা জিজ্ঞেস করবেন না যে দীপার কি এমন হলো যার কারনে এত তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে গেল )

এইদিকে.

ডক্টর কি অপারেশন রুম থেকে বেরিয়ে আসতে দেখে রাকিব চৌধুরী ডক্টরের কাছে এগিয়ে গেলেন

রাকিবঃ ডক্টর পেশেন্ট এর কি অবস্থা

ডক্টর : টেনশন করার কিছুই নেই টেনশন মুক্ত থাকতে পারেন 72 ঘন্টার মধ্যে জ্ঞান ফিরে আসবে,,, আমরা আমাদের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করেছি বাকিটা আল্লাহতালার হাতে আমরা আশা করতেছি 72 ঘণ্টার মধ্যেই জ্ঞান ফিরে আসবে আর যদি না আসে তাহলে কোমায় চলে যাবে

রকিব চৌধুরি ডক্টর মুখ থেকে এরকম কথা শুনে নির্বাক হয়ে গেলেন এবং মাথাটা নিচু করে আবার চেয়ারে গিয়ে বসে পড়লেন দু গালে হাত দিয়ে

ড্রাইভার : স্যার এত চিন্তা করবেননা তো খুব তাড়াতাড়ি ওনার জ্ঞান ফিরে আসবে দেখবেন আমার মন বলতেছে উনি বেঁচে আসবে

রাকিবঃ তোমার কথাই যেন সত্যি হয়

নার্স : আপনাদের প্রেসিডেন্ট কে ক্যাবিনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে চাইলে আপনারা দেখে আসতে পারেন তাকে

রাকিব চৌধুরী এবং তার ড্রাইভার দুজনে মিলে মাহিনকে দেখতে গেল কেবিনে

তারপর মাহীন কে দেখে সেখান থেকে দুজনেরই বেরিয়ে আসলো

রাকিব চৌধুরী ডক্টর সাথে কিছুক্ষণ কথা বললেন মাহিকে নিয়ে এবং ড্রাইভারসহ রাকিব চৌধুরী চলে গেলেন তাদের নিজ বাসায় আর ডক্টর কে বলে গেলেন যদি জ্ঞান ফেরে তাদেরকে খবরটা জানাতে

এইদিকে,,,

ছুটকিঃ আরে আম্মু একটা জিনিস খেয়াল করেছো ভাইয়া বাসায় এখনও আসতেছে না ব্যাপারটা কি

আম্মুঃ আরে তোর ভাইয়ের এখন নতুন বউ হইছে না তাকে তো একটু সময় দিতে হবে এখন তো আর আমাদের সময় দেওয়ার মত ওর হাতে সময় নাই তাই এটা তোকে এখনো মেনে নিতে হবে

ছুটকিঃ তাই বলে কি বাসায় একবারও আসবেনা আমার মনটা না কেমন জানি করতেছে

আম্মুঃ ভুলেও কুলক্ষণে কথা মুখে আনবি না আমার ছেলে একদম ঠিক আছে যেখানে আছে আর খুব তাড়াতাড়ি আমার কোলে ফিরে আসবে

ছুটকিঃ তাও আমার মনটা না কেমন কেমন জানি করতেছে ভাইজান মনে হয়

আম্মুঃ চুপ থাকবি মনটা কেমন কেমন করতেছে ভাইজান মনে হয় একদম চুপ থাক আর একটা কথা বলবি না চুপচাপ গিয়ে পড়তে বোশ যা আমার চোখের সামনে থেকে যা এখন

ছুটকি আর কিছু না বলে চুপচাপ তার আম্মুর সামন থেকে সরে গেল এবং রুমে গিয়ে তার ভাইয়াকে ফোনে ট্রাই করতে লাগলো কিন্তু ফোনটা তুলতেছে না

ছুটকি এভাবে কয়েকবার ট্রাই করলা যখন ফোনে মাহিন কে পেলোনা চুপ চাপ বিসানায় গিয়ে শুয়ে পড়ল

এইদিকে,,,

আমিঃ আম্মু আমি একটু বাইরে থেকে আসতেছি তুমি দাঁড়াও আমি 5 মিনিটের ভিতর আসতেছি

আম্মুঃ না পড়ে 5 মিনিট 5 ঘন্টা হয়ে যাবে তোর তার থেকে ভালো হবে তুই এখন আর রুম থেকে বেরোবি না তাহলে

আম্মু অনেক টা রাগী কন্ঠে আমাকে কথাগুলো শুনিয়ে দিলেন বুঝতে পারলাম আম্মু অনেকটা রেগে আছে

তাই চুপচাপ আমার ভাইয়ের বেডে বসে পড়লাম কারণ এখন আম্মুর সাথে এখন কথা বাড়ানো ঠিক হবে না তাহলে সন্দেহ শুরু করে দিবে

কিন্তু আমার মন মানছে না আমার মন বলতেছে উনি ভালো নেই

তকজন কেন যে তার সাথে ওই রকম ব্যবহার করতে গেলাম এখন নিজেই কষ্ট পাইতেছি

উফফফ কি করতেছে এখন উনি,, যে পরিমাণ রাগী মানুষ উনি রাগের বশে নিজের কোনো ক্ষতি করে ফেলবে নাতো আবার

উফ আর কোন কিছুই ভাবতে পারতেছিনা মাথাটা একদম ফেটে যাচ্ছে টেনসনে

সেদিনের মত অনেক কষ্ট করে রাতটা পার করলাম

সকালে ভাইয়াকে নিয়ে বিজি হয়ে গেলাম ভাইয়া রিলিজ নিয়ে ভাইয়াকে গাড়িতে করে বাসায় নিয়ে আসলাম

তারপর বাসার অনেক কাজ-কর্ম করলাম এতক্ষন পর্যন্ত উনার কথা আমার মনে পড়ে নি

উনার কথা মনে পরতেই বুকে ধুকধুকানি বেড়ে গেল আমার কেন জানি মনে হচ্ছে উনি এখন ভালো নেই যদি ভাল থাকতো তাহলে সকাল বেলা একবার হলেও আমাকে দেখার জন্য হসপিটালের গেটে ঘুরঘুর করত

কিন্তু আমি তো একবারও দেখলাম না ওনাকে বা উনার গাড়ি কিছুই তো দেখতে পেলাম না

না আমি আপনাকে না দেখে থাকতে পারবো না এখনি আমাকে বাসা থেকে বের হতে হবে উনার বাসায় যাব আমি।।।

তারপর মায়ের চোখ ফাঁকি দিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে পড়লাম উদ্দেশ্য উনার বাড়ি

একটা রিক্সা ভাড়া করে উনার বাসায় পৌছে গেলাম

উনার বাসায় পৌঁছানোর পর যেটা দেখলাম আর যেটা শুনলাম আমি একদম হতবাক এতো কিছু হয়ে গেছে।।। আমার একটু ভুলের জন্য

(বানান ভুল হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন প্লিজ)

চলবে…….