ভালোবেসে থাকবো পাশে পর্ব-২০ এবং শেষ পর্ব

0
1070

#ভালোবেসে_থাকবো_পাশে💝
#পর্বঃ_২০(অন্তীম পর্ব)
#লেখিকা_ইসরাত_জাহান_ইমা

সবাই একসাথে হাত তালি দিয়ে উঠলো। সায়ান ছোঁয়া কে হাত ধরে উঠিয়ে জড়িয়ে ধরলো। সে ভাবতেই পারেনি ছোঁয়া এভাবে রাজি হয়ে যাবে যেখানে তাদের মাঝে সবসময় ঝগড়া লেগেই থাকতো। ছোঁয়াও যে তাকে এতো ভালোবাসে সে তো বুঝতেও পারেনি। সায়ান ছোঁয়াকে ছেড়ে দিয়ে বললো,, ছোঁয়া আজ আমি অনেক খুশি। আজ থেকে আমার প্রেয়সীকে আমি পেয়ে গেছি। আর আমাদের কেউ আলাদা করতে পারবে না। আমি আজকেই বাসায় গিয়ে আম্মুকে বলবো কালকেই যেনো তোমার বাড়িতে বিয়ের কথা বলতে যাই। আমি চাই আরুদের সাথে আমাদের বিয়েটাও হয়ে যাক।

ছোঁয়া বিয়ের কথা শুনে লজ্জায় লাল হয়ে গেলো। সে পারলে এক্ষুনি দৌড়ে বেরিয়ে যেতো। কিন্তু আরিয়া তা হতে দেবে না।

–ভাইয়া এভাবে বলো না দেখো না বেচারি লজ্জায় শেষ। তবে তাড়াতাড়ি বিয়ের ব্যবস্থাটা করে ফেলো। আমাদের সাথেই তোমাদের বিয়েটা হয়ে যাক।(আরিয়া)

তখনি আহিল বলে উঠলো, তাহলে আমরা বাকি থাকবো কেন? এই অন্তু চল আমরাও বিয়ে করে ফেলি ওদের সাথেই।

কিহ্…..!! আমরাও বিয়ে করবো মানে কী? আর আমি এখন ছেলে কই পাবো বল?(অন্তু)

–কেন আমাকে কী তোর চোখে পড়ে না?(আহিল)

–হোয়াট! কী বলতে চাস তুই আহু?(আরিয়া)

–আরু আমি এতো ঘুরিয়ে বলতে পারবো না। আমি অন্তুকে অনেক আগে থেকেই ভালোবাসি। ওকে আমার চাই-ই চাই।(আহিল)

সবাই বিস্ফোরিত চোখে আহিলের দিকে তাকিয়ে আছে। তূর্যের তো বিষম খাওয়ার মতো অবস্থা। তার ভাইও নাকি কাউকে ভালোবাসে! অন্তু হাবলার মতো তাকিয়ে আছে। সে নিজের কান-কে বিশ্বাস করতে পারছে না।

সবাই আমার দিকে এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো? আমাকে দেখে কী তোমাদের মঙ্গল গ্রহের এলিয়েন মনে হচ্ছে?(আহিল)

আহু তুই ঠিক আছিস? জ্বর-টর আসে নি তো আবার। কী বলছিস তুই? সত্যিই অন্তুকে ভালোবাসিস?(ছোঁয়া)

–হুম আমি অন্তুকে সত্যিই ভালোবাসি।(আহিল)

–তাহলে তুইও এখন প্রপোজ করে ফেল। আর আমি আগেই বুঝেছিলাম আহু অন্তুকে ভালোবাসে। তাড়াতাড়ি কর।(আরিয়া)

–হুম। বলেই আহিল ছোঁয়ার থেকে একটা কালো গোলাপ নিয়ে অন্তুর সামনে হাঁটু গেড়ে বলতে শুরু করলো__

তুমি চাইলে এই শহরের প্রতিটি দেয়ালে দেয়ালে নোটিশ লাগিয়ে জানিয়ে দিব আমি তোমাকে ভালোবাসি। দেয়ালে প্রতিটা লাইনে উল্লেখ থাকবে আমার এই মানুষটাকে আমি ব্যতিত অন্যকেউ ভালোবাসতে পারবে না। নোটিশের প্রতিটা লাইনের শব্দ জুড়ে থাকবে শুধু তুমি আর তুমি। তুমি চাইলে আমি পারি। তুমি চাইলে আমি লিখে দিব তোমাকে আমার আজন্ম চাই। তোমাকে নিয়ে আমি শহরের প্রতিটা গলিতে ঘুরতে চাই। আমি চাই তুমি আমার নোটিশ এর প্রতিটি শব্দ জুড়ে থাকো। আমি আবারো বলছি শহরের প্রতিটা দেয়ালে তোমার জন্য আমি ভালোবাসা নোটিশ লাগিয়ে দিব। ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি ভালবাসি। হ্যাঁ ছোঁয়া খুব ভালোবাসি তোমাকে। প্লিজ ফিরিয়ে দিয়ো না আমাকে।(আহিল)

–ছোঁয়ার চোখে পানি টলমল করছে। সে ফুলটা হাতে নিয়ে আহিলকে তুলে বলল,, আহু তুই যদি আমাকে আগে বলতি তুই আমাকে ভালোবাসিস তাহলে আমি তোকে কখনোই ফিরিয়ে দিতাম না। কারণ, আমিও যে তোকে ভালোবাসি অনেক দিন থেকেই। আমি তোকে কথাটা অনেক আগেই বলতে চাইছিলাম কিন্তু বলতে পারিনি যদি আমাদের বন্ধুত্ব টা নষ্ট হয়ে যাই সে কারণে! আর আমি এটাও বুঝতে চাইছিলাম তুই আমাকে ভালোবাসিস কিনা সেটা বুঝতে চাইতাম কিন্তু একবারও মনে হতো না তুই আমাকে ভালোবাসিস। আর এখন তোকে ফিরিয়ে দিচ্ছি কারণ, বাসায় আমার বিয়ের কথা চলছে। ফুলটা এই আমাদের বন্ধুত্বের খাতিরে নিলাম। আসি বলেই ছোঁয়া চলে গেলো। এদিকে আহিলের চোখে পানি টলমল করছে।

সায়ান এসে আহিলের কাঁধে হাত রেখে বলল,, আহিল মন খারাপ করো না। মনে রেখো কাউকে পাওয়ার জন্য প্রার্থনা করেও যদি তাকে না পাও,বা পেয়েও হারিয়ে ফেলো! তাহলে বুঝে নিও তোমাকে পাওয়ার জন্য অন্য কেউ প্রার্থনা করছে! যার প্রার্থনার জোর শক্তি তোমার
প্রার্থনার থেকে ও অনেক বেশি! সুতরাং যে যেতে চায় তাকে হাসি মুখে তার মতো করে তাকে যেতে দাও, তোমার শূন্যতা পূরণ করার মানুষ তার জীবনে ঠিক এসে গেছে! নয়তো কেউ এমনি এমনি বদলে যায় না হারিয়ে যায় না! মনে রেখো জোর করে কাউকে ধরে রাখা যায় না! যে যাবার সে দুদিন আগে আর পরে
যে কোনো অজুহাতে চলে যাবেই! আর যে রবে শতো ঝড় তুফান উপেক্ষা করে ও তোমার রয়ে যাবে! তাই অপেক্ষা করো সময়ের।

–না ভাইয়া আমি অন্তু কে অন্য কারো হতে দিতে পারবো না। আমি অন্তুকে খুব ভালোবাসি আর তাকেই চাই। প্লিজ আরু তুই অন্তুর আব্বু আম্মুকে বুঝিয়ে বল! আমি অন্তুকে সত্যিই অনেক ভালোবাসি। আমিও এতদিন আমাদের বন্ধুত্ব যদি নষ্ট হয়ে যায় তার জন্য বলিনি। প্লিজ তোরা কিছু কর!(আহিল)

–আচ্ছা আহু আমরা কালকে অন্তুর বাসায় যাব আর আঙ্কেল আন্টিকে বুঝিয়ে বলবো। এখন বাসায় চল।(আরিয়া)

__________________

পরেরদিন আরিয়া, তূর্য, আহিল, ছোঁয়া আর সায়ান অন্তুদের বাসায় যাবার উদ্দেশ্যে বের হলো। আরিয়া কলিং বেল বাজাতেই অন্তুর আম্মু দরজা খুলে দিলো! কুশলাদি বিনিময় করে ভেতরে ঢুকলো তারা।

আন্টি ছোঁয়া কোথায়?(আরিয়া)

–ওর রুমেই আছে। কাল বেরিয়ে ছিলো তোমাদের সাথে সেখান থেকে ফিরে আসার পর কারো সাথে কথাও বলছে না আবার ঠিক মতো খাবারও খাচ্ছে না। কিছু হয়ে ছিলো কী কাল?

–না আন্টি তেমন কিছুই না! আঙ্কেল বাড়িতে থাকলে একটু ডেকে দিবেন প্লিজ!(আরিয়া)

–হুম বাসাতেই আছে। তোমরা বসো আমি ওনাকে নিয়ে আসছি।

কিছুক্ষণ পর অন্তুর আব্বু আসলো। উনাকে দেখে সবাই ওঠে দাঁড়ালো। কুশলাদি বিনিময় করে উনি সবাইকে বসতে বললেন। অন্তুর আম্মু নাস্তা নিয়ে আসলো। সবাই মিলে নাস্তা শেষ করলো।

আরিয়া তোমাকে দেখছি অনেকক্ষণ যাবত উসখুস করছো! কিছু বলবে মা?(অন্তুর বাবা)

আঙ্কেল কী ভাবে বলবো বুঝতে পারছি না৷(আরিয়া)

আরে মা নির্ভয়ে বলো!

–আঙ্কেল আপনারা নাকি অন্তুর বিয়ে ঠিক করছেন!(আরিয়া)

— হুম তবে এখনো ঠিক হয় নি! বিয়ের কথা চলছে!(অন্তুর বাবা)

— কিন্তু আঙ্কেল অন্তু যে অন্য কাউকে ভালোবাসে!(আরিয়া)

কথাটা শুনে অন্তুর বাবা চমকে জিজ্ঞেস করলো,, কী বলছো এসব? কাকে ভালোবাসে অন্তু?

–অন্তু আহিলকে ভালোবাসে আর আহিলও অন্তুকে খুব ভালোবাসে! আমরা আপনাকে সেটাই বলতে এসেছি আঙ্কেল। প্লিজ অন্তুকে অন্য কোথাও বিয়ে দিয়েন না!(আরিয়া)

–দেখো মা আহিল আর অন্তু সমবয়সী! ওরা একসাথে পড়ালেখা করে। তাছাড়া আহিল বেকার। ও কবে নিজের পায়ে দাঁড়াবে! আমরা আজ আছি কাল নেই! ওর তো আর কোনো ভাই বোন নাই যে ওকে দেখবে। তাই বিয়ে ঠিক করতেছি। আর অন্তুর বিয়ে যার সাথে ঠিক করছি সে একজন বড় বিজনেসম্যান! ভালো ফ্যামিলির ছেলে! সব দিক থেকেই অন্তুর জন্য পারফেক্ট!(অন্তুর বাবা)

আরিয়া কিছু বলতে যাবে তার আগেই তূর্য অন্তুর বাবার উদ্দেশ্যে বলে উঠলো,, আঙ্কেল টাকা দিয়ে সব কেনা গেলেও সুখ কেনা যায় না। আপনি একবার ভেবে দেখুন অন্তু আহিলকে ভালোবাসে আর তাদের পরিচয় টাও অনেক দিনের। আঙ্কেল জানি আমি সমবয়সী রিলেশন শুনলেই একটা বোকা বোকা ফিলিংস আসে। হয়তো খুব হাতে গোনা কিছু রিলেশন আছে যেগুলো বিয়ে র্পযন্ত টিকিয়ে নিয়ে যায়। কিন্তু আপনি কি জানেন? সমবয়সী রিলেশনের মতো অন্য রিলেশনে এতো ভালো সমঝোতা থাকে না। তারা একজন আরেকজনকে যতটা বুঝতে পারে সেটা অন্য রিলেশনে বোঝা সম্ভব হবে না। হয়তো দিন শেষে রাতের আধারে
হারানোর ভয়ে চোখের জ্বলে বালিশ ভিজে যায় হয়তো পরিবার থেকে হাজারটা কটু কথা শুনতে হয়। কিন্তু আপনি কি জানেন, দিন শেষে এরাই সেরা জুটি। হয়তো সমবয়সী রিলেশনগুলো বাস্তবতার কাছে হেরে যায়। কিন্তু তারপর ও জিতে যায় কখনো ভালোবাসা, হেরে যায় বাস্তবতা। আপনি অন্তুর মতের বিরুদ্ধে বিয়ে দিলেই কী ও সুখী হবে? একটু ভেবে দেখবেন। আর আহিল তো সারাজীবন বেকার থাকবে না। পড়ালেখা করছে একটা না একটা জব কখনো পেয়ে যাবে। তাছাড়া আব্বুর বিজনেস আছে সেটা সামলাবে। সবসময় বেকার থাকবে এটা তো কোনো কথা না! অনেক কথাই বললাম ভুল হলে মাপ করবেন আঙ্কেল!

তূর্যের কথা শুনে উনি কিছুক্ষণ চুপ করে বসে থাকলেন। আর আহিল আল্লাহ আল্লাহ করছে যেনো অন্তুর বাবা রাজি হয়ে যায়।

অন্তুর বাবা সবাইকে অবাক করে দিয়ে গম্ভীর গলায় বলে উঠলেন,, দেখো বাবা আমি তোমার সব গুলো কথাকেই সাপোর্ট করি। কিন্তু আহিলের মা-বাবাকে তো এসে বলতে হবে তাই না। উনাদের আসতে বলো! আর আমি এতোটাও খারাপ লোক না যে আমি আমার সন্তানের সুখ কেড়ে নেব!

–আঙ্কেল আমি আহিলের বড় ভাই। চিন্তা করবেন না আব্বু আম্মু কালকেই চলে আসবে। আপনারা বিয়ের প্রস্তুতি নিতে থাকুন। ৬ দিন পরই বিয়ে হবে।(তূর্য)

–কি বলছো বাবা এত তাড়াতাড়ি কেন?

–আসলে আঙ্কেল জানেনই তো আমার আর আরুর বিয়ে ৬ দিন পর। আর ওদের ইচ্ছে চার ফ্রেন্ড একসাথে বিয়ের পিরিতে বসবে তাই আরকি। আজ আসি আমরা। বিয়ের কেনাকাটা করতে হবে।(তূর্য)

–আচ্ছা তাহলে কাল তোমার মা-বাবাকে পাঠিয়ো।

____________________
৫ দিন পর…..

আজ আরিয়া, ছোঁয়া, আর অন্তুর গায়ে হলুদ! ওদের তিন জনকেই হলুদ লেহেঙ্গা পড়ানো হয়েছে। আর তূর্য, সায়ান আর আহিলকে হলুদ পাঞ্জাবি পড়ানো হয়েছে।

(সেদিন ছোঁয়া আর সায়ানের মা-বাবাকে ওরা সবাই মিলে অনেক কষ্টে রাজি করিয়েছে। আর রাতুল আর ফারিয়া এখন আলাদা থাকে। রাতুল ফারিয়াকে সময় দিতো না তার জন্য ফারিয়া পরকীয়ায় জরিয়ে পড়ে। রাতুল অনেকবার আরিয়ার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছে কিন্তু আরিয়া সুযোগ দেই নি!)

–সবাইকে এক সাথেই হলুদ দেওয়া হচ্ছে। সব কাপল একসাথে৷ তূর্য আরিয়ার কানে কানে বললো,, এক একটা রাত আরুপাখি। তারপর থেকে তুমি আমার। আরিয়া কোনো কথা না বলে মাথা নিচু করে বসে রইলো।

____পরেরদিন বিয়ে বাড়িতে মানুষ গম গম করছে। বিয়ে উপলক্ষে বাড়িতে অনেক মানুষের আনাগোনা। সবাই ব্যস্ত।

আরিয়া, ছোঁয়া আর অন্তু লাল লেহেঙ্গা, লাল চুড়ি, ম্যাচিং অর্নামেন্ট পড়ে, চুলে ফুল গুঁজে লাল পরি সেজে বসে আছে। অপরদিকে তূর্য, সায়ান আর আহিল নিজেরাও লাল শেরওয়ানি পড়েছে।

–এভাবে আর কতক্ষণ বসে থাকবো। নিজেকে এতো ভারী লাগছে বুঝাতে পারবো না!(আরিয়া)

–আহারে মেয়েটা তার শিশুর কাছে যাইতে অস্থির হয়ে গেছে রে। বুঝলি ছোঁয়া ভালোবাসবে তবুও স্বীকার করবে না”(অন্তু)

–এই চুপ কর মে’রি মা এমনি সহ্য হচ্ছে না আমার! (আরিয়া)

এই সব গুলা চুপ করে বস কাজি সাহেব আসছে বিয়ে পড়াতে।(আরিয়ার আম্মু)

কিছুক্ষণ পর বিয়ে পড়ানো শেষ হয়ে গেছে। এখন কণে বিদায়ের পালা! সবাইকে আরিয়াদের বাড়ি থেকেই বিদায় দেওয়া হচ্ছে।

__________
বাসর ঘরে বসে আছে আরিয়া। চারদিকে ফুলের গন্ধে তার গা গুলিয়ে আসছে। কিছুক্ষণ পর তূর্য রুমে আসলো। আরিয়ার কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখে একা একাই বলে উঠলো,, আমি তো জানতাম বাসর রাতে বউ তার হাজবেন্ডের পা ধরে সালাম করে কিন্তু আমার কী কপাল আমার বউ একটু নড়চেও না!

–আপনি কী ভাবছেন আমি আপনার পায়ে ধরে সালাম করবো আর আপনি বাংলা সিনেমার নায়কদের মতো আমাকে আটকিয়ে বুকে জড়িয়ে ধরে ভাব নিয়ে বলবেন আমার স্থান আমার পায়ে না আমার বুকে। আর আমি এটা তো কখনোই হতে দিতে পারি না হুহ্!

হইছে আমি তো ভুলে গেছিলাম আমার বউটা যে ঘাড় ত্যাড়া! যাও গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসো দুজন একসাথে দু’রাকাআত নফল নামাজ আদায় করবো।

হুম!!

নামাজ শেষ করেই তিন কাপল বসে চন্দ্র বিলাস করছে। আজ তারা খুব খুশি! তাদের প্রেয়সীকে তারা নিজের করে পেয়েছে। কিছুক্ষণ গল্প করার পর তূর্য আরিয়াকে খুলে তুলে রুমে নিয়ে আসলো। খাটে শুইয়ে দিয়ে নিজেও পাশে শুইলো! তূর্য আরিয়ার ঠোঁটে ঠোঁট বসিয়ে দিলো। কিছুক্ষণ পর দু’জন ডুবে গেলো ভালোবাসার অন্য জগতে।

আর কইতে পারুম না মোর শরম করে🙈

__________
তিনবছর পর,,

আজ আরিয়া, ছোঁয়া আর অন্তুর বিবাহ বার্ষিকী৷ আরিয়া আর তূর্যের দু’টো ছেলে মেয়ে হয়েছে জমজ! ছোঁয়া আর সায়ানের একটা ছেলে, আহিল আর অন্তুর একটা মেয়ে। বর্তমানে সবাই তূর্যদের বাড়িতে আসছে একসাথে বিবাহ বার্ষিকী পালন করবে বলে।

রাত ৯ টায় কেক কাটার পর সবাই মিলে ১২ টা পর্যন্ত গল্প করে সবাই সবার রুমে চলে গেলো। ছোঁয়ারাও আজ এই বাসাতেই থাকবে। আরিয়া রুমে এসে তার ছেলেমেয়েদের ঘুম পাড়ালো! তূর্য রুমে এসে কোনো কথা না বলেই আরিয়াকে খুলে তুলে নিলো। বেলকনিতে দোলনায় বসিয়ে সে নিজেও পাশে বসলো। আরিয়াকে বুকে জড়িয়ে বললো,, এভাবেই যেনো তোমার সাথে সারাজীবন একসাথে চলতে পারি আরুপাখি। খুব বেশি ভালোবাসি তোমায়! সারাজীবন #ভালোবেসে_থাকবো_পাশে💝

আমিও আপনাকে খুব ভালোবাসি। সারাজীবন আপনার হাত ধরে রাখবো কথা দিলাম।

#সমাপ্ত….!!!!

[কিছু কথাঃ- সত্যিই একটা কথা আছে রিভেঞ্জ অফ ন্যাচার। অর্থাৎ প্রকৃতি কাউকে ছাড় দেই না, বদলা নিয়েই ছাড়ে! যে ঠকায় সেও ঠকে। পার্থক্য শুধু সময়ের। ফারিয়া আর রাতুল নিজেদের কর্মের শাস্তি পাচ্ছে। আবার সব ছেলেরা মেয়েদের ঠকাই না। এখনো এমন অনেক ছেলে আছে শুধু একজনকেই মন থেকেই ভালোবাসে। কোনো কারণ ছাড়াই। সত্যি কারের ভালোবাসা কখনও ঠুনকো আঘাতে ভেঙ্গে পড়ে না, এমন কি আঘাতের পর আঘাত ও সত্যিকারের ভালোবাসার কোন ক্ষতি করতে পারে না। পছন্দের প্রিয় মানুষটির সাথে দুটো মনের কথা বলতে পারলেই হয়তোবা সবকিছু ঠিক হয়ে যেত কিন্তু আপনি সে সুযোগটা পাচ্ছেন না অথবা আপনার সাথে অন্যায় হয়েছে আপনাকে অপবাদ দেওয়া হয়েছে অথবা কষ্ট জমে আছে বুকের ভেতরে অনেক; চেষ্টা করে দেখুন, আপনার দূর থেকে কাছের মানুষগুলো আপনার মত করে কষ্টটা অনুভব করতে পারবে না কোনদিনও। অথচ যে মানুষটির কাছে আপনার কিছুই খুলে বলতে হতো না, মুখ দেখেই পড়ে নিতে পারত আপনার কষ্ট গুলোকে..! যার শ্বাস প্রশ্বাসের শব্দ আপনার শ্রবণশক্তির খুবই পরিচিত…!! সে মানুষটি কোন এক সময়, কোন না কোন অজুহাতে আপনার কষ্টকর শ্বাস-প্রশ্বাসের কারণ হয়ে দাঁড়াবে….তার কথা মনে পড়লে ভেতর থেকে শুধু আসবে একটি….নিঃশ্বাস, যা কিনা আপনার হৃদয় থেকে কষ্টগুলোকে নিংড়ে বের করবে; যার নাম……””দীর্ঘশ্বাস””….. হ্যাঁ, তুমি আমার শ্বাস-প্রশ্বাস ছিলে কিন্তু এখন শুধুমাত্র দীর্ঘশ্বাস থেকে চলে আজীবনের জন্য….!!! অনেক কথাই বললাম ভুল হলে ক্ষমা করবেন।]

আল্লাহ হাফেজ..!! 🖤