#ভালোবেসে_ফেলেছি
part : 1
writer : Mohona
.
☆ : মনি .. মনি… ও আমার নয়ন মনি… কোথায় তুমি… এটা কিন্তু ঠিক না… আমি কতোক্ষন এই দুধ আর ডিম হাতে নিয়ে ঘুরবো হামম ? খেয়ে নাও … দেন লুকোচুরি খেলবো…
● : আহা … আর কোনো মেয়ে পেলোনা … ও কি আর সেই মেয়ে যে বলবে আর এসে খেয়ে যাবে… ও হচ্ছে বিশ্ববজ্জাত মেয়ে । কান ২টা আচ্ছা করে মলে দিলেই গরগর করে খাবে…
☆ : আহ মামনি… একদম আমার বোনটাকে কিছু বলবেনা… মনি ও মনি… আর লুকিয়ে থেকোনা প্লিজ… দেখো তোমাকে খাইয়ে ভাইয়া অফিস যাবো… তুমি তো জানোই একটু দেরি হলে জল্লাদ বাপ শাস্তি দিবে… কাম ফাস্ট প্লিজ…
●: তুমি অফিসে চলে যাওনা… ১দিন বোনকে ব্রেকফাস্ট না করিয়ে গেলে কিছু হবেনা… যাও আমি খাইয়ে দিবো…
☆ : নো নেভার… আমার নয়ন মনিকে ব্রেকফাস্ট না করিয়ে আমি বাসা থেকে বের হবোনা…. মনি মনি মনি… দেখো যদি এখন আমার নয়নমনিটা ব্রেকফাস্টটা করে নেয় তবে ভাইয়া আসার সময় ভাইয়া ১টা নতুন ডল হাউজ নিয়ে আসবো… সো রান রান রান…
মনি : ভাইয়া আমি এখানে…
বলেই মনি ছুটে এলো…
☆: এসে পরেছে আমার নয়ন মনিটা…
● : আসবেনা… ডলহাউজের কথা শুনেছে যে। ঘুষখোর নাম্বার ওয়ান ।
☆ : মামনি…
মনি : ভাইয়া পিংক কালার ডল হাউজ আনবে কিন্তু…
☆ : যেটা তুমি বলবে…
মনিকে খাইয়ে ওর কপালে চুমু দিয়ে মামনিকে বাই বলে মনির ভাইয়া চলে গেলো অফিসে।
{{{পরিচয় করিয়ে দেই। মনির ভাইয়াই হলো নায়ক মশাই…. তার নাম ‘দহন আহমেদ’ … বাবার নাম দীপন আহমেদ। মায়ের নাম নিশা আহমেদ। আর দহনের আদরের বোনের নাম মনি আহমেদ । মনি দহনের চোখের মনি। নিজের জীবনের থেকেও বোনকে বেশি আদর করে। দহন মাস্টার্স করছে । সেই সাথে বাবার অফিসেও বসে। আর মনি ক্লাস ফাইভে পড়ে । দহনের স্বভাব চরিত্র … দেখতেই পারবেন সবাই।
নায়িকার পরিচয় ইকটুশ খানি পর দিচ্ছি। }}}
.
দহন অফিসে পৌছালো। আর পৌছাতেই দীপনের কাছে বকা খেলো। দেরি হওয়ার জন্য। আর দীপনকে দেখে দহন ভীষন ভয় পায়। ভাই-বোন ২জনই ভয় পায় দীপনকে দেখলে। ভয় কি … আসলে রেসপেক্ট ।
দীপন : এতো দেরি কেন বলবে তো নাকি? কখন থেকে চুপ করে দারিয়ে আছো। কিছু তো বলো।
দহন বিরবির করে
বলল : কখন আর কিভাবে বলবো…. সেই তখন থেকে তো নিজেই ক্ষেপে ক্ষেপে প্রশ্ন করে যাচ্ছো…
দীপন : কিছু বললে…
দহন : নো বাপী।
দীপন : তো বলো যে দেরি করলে কেন?
দহন : আসলে বাপী… মনিকে ব্রেকফাস্ট করাতে গিয়ে লেইট হয়ে গিয়েছি।
দীপন : দেখো সময়ের কাজ অসময়ে করার আমার ভালো লাগেনা। সেটা তুমি জানো… আর মনিকে কি মামনি খাওয়াবে না হামমম?
দহন : না মানে বাপী আসলে…
দীপন হেসে দিলো।
দীপন : আর কি বলবো… এমন বোন তো আর কারো নেই তাইনা আব্বাজান…
দহন : 😊😅।
দীপন : দেখবো দেখবো ১বার বিয়ে হয়ে গেলে বোনের কথা কতো মনে থাকে…
দহন : বাবা…. বোন তো বোনই থাকবে। মনি তো চিরকাল আমার নয়ন মনিই থাকবে…
দীপন : নাউ গো টু ইউর কেবিন… গো গো।।
দহন নিজের কেবিনে গিয়ে বসলো। আর বসতেই ফোনটা বেজে উঠলো। স্ক্রিনে ‘জান’ লেখাটা ভেসে উঠলো। দহনের মুখে হাসি ফুটলো। কারন ওর জান ‘কাকন’ কল করেছে। দহন রিসিভ করলো।
দহন : হ্যালো মাই জান… গুড মর্নিং…
কাকন : গুড মর্নিং জান … অফিসে পৌছে গিয়েছো ?
দহন : হামমম। ব্রেকফাস্ট করেছো?
কাকন : করছি আর তোমার সাথে কথা বলছি… তুমি করেছো?
দহন : হামম। মনিকে ব্রেকফাস্ট করিয়ে দেন নিজে করে অফিস এলাম। জল্লাদ বাপীর কাছে বকা খেয়ে কেবিনে এলাম আর আমার জানটা কল করলো…
কাকন : আচ্ছা তুমি আমার সুইট আংকেলটাকে কেন ডাকো বলো তো…
দহন : তুমি তো আমার বাপীকে চেনোনা তাই জানোনা। বিয়ের পর যখন বাসায় আসবে তখন বুঝবে যে আমার বাপী ঠিক কতোটা জল… ভালো বাপী… 😅..
কাকন : ভালো বাপী? নিশ্চয়ই আংকেল চলে এসেছে?
দহন : হামম রাখছি । বিকালে দেখা হচ্ছে।
বলেই রেখে দিলো।
দীপন : কাজের সময় অন্যকিছু আমার ভালো লাগেনি । আর আমি তো বলিওনি যে এখনই অফিস জয়েন করো। বলেছিলাম না মাস্টার্স টা কমপ্লিট করে দেন জয়েন করো । বাট ইউ… কাজ শেখার জন্য আগেই জয়েন করলে অথচ কাজে নজর নেই । দ্যাটস নট ডান…
দহন : সরি বাপী।
দীপন : ইটস ওকে। বাই দ্যা ওয়ে আমি যে তোমাদের কাছে ভালো বাপী নই… জল্লাদ বাপী সেটা কিন্তু জানি….
বলেই দীপন হাহা করে হেসে দিলো।
দীপন : ফাইল গুলো দেখে নিও।
বলেই দীপন বেরিয়ে গেলো।
দহন : বাপী তুমি না জাস্ট জল্লাদ নও হিটলার অলসো… বাট স্টুপিড মার্কা ফাইলগুলো তে কি আছে?
.
বিকালে…
কাকন বাসার নিচে দারিয়ে আছে । দহন ঠিক ওর সামনে এসে গাড়ি থামালো।
দহন : হ্যালো মাই ডার্লিং… কাম…
কাকন উঠে বসলো।
দহন : এভাবে তাকানোর কি আছে? আমি জানি আমি অনেক হ্যান্ডসাম। আর আজকে একটু বেশিই ভালো লাগছে… 😏.
কাকন : আহাহাহা… তো আজকে বিকালে বের হওয়ার কারনটা কি হামম?
দহন : আসলে মনির জন্য ডল হাউজ কিনতে হবে। এন্ড ইউ নো না যে আমার কোনো আইডিয়া নেই। এর আগের ডলহাউজটা মনির ভালো লাগেনি দ্যাটস হুয়াই তোমাকে নিয়ে বের হলাম।
কাকন : ভালো করেছো… মনির জন্য তো আমার জানও হাজির…
.
ওরা টয়শপে পৌছালো। ওরা ঘুরে ঘুরে ডলহাউজ দেখতে লাগলো।
দহন : এটা কেমন হবে?
কাকন : একদম বাজে…
দহন : তাহলে তাহলে তাহলে… এটা ?
কাকন : দহন … আর ইউ ম্যাড …? মনি এমন ধরনের ডলহাউজ কখনোই পছন্দ করবেনা।
দহন : আমি তো জাস্ট তোমাকে হেল্প করছিলাম…
কাকন : দেন প্লিজ চুপচাপ এখানটাতে বসো আর আমাকে সিলেক্ট করতে দাও…
দহন : ইয়েস ম্যাম…
একটুপরই কাকন দহন দহন বলে চেচাতে লাগলো। দহন উঠে গেলো।
দহন : ইয়েস ডার্লিং
কাকন : দেখো এই ডলহাউজটা। সুন্দরনা?
দহন : ভীষন।
কাকন : এটা মনির ভীষন ভালো লাগবে।
দহন : হামম। এক্সকিউজ মি… প্লিজ প্যাক দিস ডলহাউজ প্লিজ…
☆: সরি স্যার এটা সোল্ড । আমি এটা জাস্ট প্যাক করছিলাম তার জন্য…
দহন : আচ্ছা এটাকি ১পিসই ?
☆: জী স্যার….
দহন : একটু ম্যানেজ করে দেখুননা এটা আমাকে দেয়া যায় কিনা প্লিজ…
☆: সরি স্যার..
দহন : প্লিজ প্লিজ প্লিজ… আমার ছোটবোনের জন্য এই ডলহাউজটা ভীষন ভালো লেগেছে… প্লিজ প্লিজ প্লিজ…
☆: আপনি তাহলে যে কিনেছে তারসাথে কথা বলুন…
দহন : কে কিনেছে… কোথায় সে?
☆ : ওই যে দেখুন ১টা মেয়ে দারিয়ে আছে… ব্লু ড্রেস…
দহন : থ্যাংক ইউ…
দহন ছুটে গেলো ব্লু ড্রেস পরা মেয়েটার কাছে।
দহন : এক্সকিউজ মি… মিস ব্লু ড্রেস…
মেয়েটা পিছে ঘুরলো।
¤ : জী…
দহন : আসলে আপনি ১টা পিংক কালার ডলহাউজ কিনেছেন তাইতো?
¤ : জী …
দহন : ওটা আমি আমার ছোটবোনের জন্য পছন্দ করেছি। নিতে চাই। কিন্তু এই দোকানে ওই ১টাই আছে। আশেপাশের দোকানেও আর অমনটা নেই…
¤ : ওহ।
দহন : প্লিজ আপনি এটা নিবেননা। ওটা আমাকে দিয়ে দিন প্লিজ…
¤ : …
দহন : দেখুন ছোটমানুষ তো… খুব কান্নাকাটি করবে…. প্লিজ…
¤ মনে মনে : কি করবো? দিয়ে দিবো? কিন্তু রিদি তো এই ডলহাউজটাই নিতে চাইলো … ও কি বুঝবে? কান্নকাটি করবেনা তো… কোথায় ও? ও তো ভাবির সাথে অন্য খেলনা দেখতে ব্যাস্ত । দিয়েই দেই। লোকটা কতো করে বলছে…
দহন : হ্যালো মিস প্লিজ… দিননা। আমি আপনাকে ডাবল টাকা দিয়ে দিচ্ছি তবুও আপনি দিন না…
¤ : 😒..
দহন টাকা বের করে এগিয়ে দিলো।
দহন : এই নিন…
¤ : টাকার গরম দেখাচ্ছেন? আমি দিয়েই দিচ্ছিলাম … কিন্তু এখন দিবোনা… আপনার টাকা আছে বলে কি কেবল আপনারই ফিলিংস আছে আর কারো নেই… আমি কি টাকার কথা বলেছি?
দহন : আপনি এতো রিঅ্যাক্ট করেছেন কেন? আসবে ওভারিঅ্যাক্ট করছেন….
¤ : আমি মোটেও ওভারিঅ্যাক্ট করছিনা। আপনার ডাবল পেমেন্ট করতে চাইছেন এরমানে কি? এখন যদি আমি বলি যে আমি ত্রিপল টাকা দিবো তাও ডলহাউজটা নেয়ার জেদ করবেননা তবে আপনার কেমন লাগবে বলুন তো…
দহন : আপনি তিল থেকে তাল বানাচ্ছেন… এমন ইস্যু করার কি আছে? সিন ক্রিয়েট করছেন কেন?
¤ : আশ্চর্য … সিন ক্রিয়েট কোথায় করলাম। আমি তো জাস্ট বললাম। আর আপনি যেমন এটা ১টা বাচ্চার জন্য নিচ্ছেন তেমনি আমিও । আপনি নিচ্ছেন বোনের জন্য আর আমি নিচ্ছি আমার ভাতিজির জন্য। তবুও আমি ভেবেছিলাম যে এটা দিয়ে দিবো।
দহন : বাট এখন দিবেন না । এটাই তো বলবেন। আমি ভালো মতোই জানি আপনাদের মতো মেয়েদের । পায়ে পা দিয়ে ঝগড়া করেন। চিপ মাইন্ডেড …. আমি যখন বলেছি যে আমি এটা নিবো তখন আমি নিবোই। গট ইট…
তখন রিদি ফপ্পি বলে ছুটে এলো। ফুপ্পির কোলে উঠলো। দহন দেখলো রিদি মনির থেকেও ছোট।
রিদি : ফপ্পি ফপ্পি… ওই আনতেলতা তোমাকে বকছে কেন ?
¤ : না তো প্রিন্সেস … কিছুনা…
রিদি : না আমি দিকিচি… বলোনা ও ফপ্পি ও ফপ্পি …
¤ : তোমার ডলহাউজটার জন্য এই আংকেলটা আমাকে বকছে। কারন সে এটা নিতে চায়….
রিদি : ফপ্পি আমাকে ইততু নামাও তো …
¤ : কেন ?
রিদি ; নামাও না…
ফুপ্পি নামিয়ে দিলো। নেমে রিদি কোমড়ে হাত দিয়ে দহনের কাছে গেলো ।
রিদি : তুমি ওই দলহাউজটাল জন্য আমাল ফপ্পিকে বকছো…. আমি বাবাকে বিচাল দিবো। আল ওই দলহাউজেল জন্য ফপ্পিকে বকছো তো .. যাও নিয়ে নাও ওই দলহাউজ… আমি এল থেকেও সুন্দল দলহাউজ কিনবো। তাও একদম আমাল ফপ্পিকে বকবেনা… তলো ফপ্পি…
¤ : চলো প্রিন্সেস…
দহন : এই যে মিস টাকা তো নিয়ে যান…
¤ : লাগবেনা… মনে করুন এটা আপনার বনের জন্য আমার তরফ থেকে গিফ্ট…
দহন : এই যে হ্যালো। এখন আপনি টাকার গরম দেখাচ্ছেন।। দহন আহমেদ কারো ঋণ রাখেনা। এই নিন টাকা।
¤ : নিবোনা…
দহন : দেখুন আপনি কিন্তু অ্যাটিটিউড দেখাচ্ছেন… নিতে বলেছি নিবেন…
¤ : আজব মানুষ তো আপনি… সরুন যেতে দিন…
দহন : ওহ হ্যালো আমি বলেছি নিতে হবেই…
বলেই দহন মেয়েটার ওরনা ধরে সেটার এক কোনায় টাকা বেধে দিলো। আর এমন ভাবে গাট দিলো যা বলার মতোনা।
দহন : বা বাই মিস ব্লু…
লেটস গো জান…
¤ : আর ইউ ম্যাড…?
দহন : এনি ডাউট…
বলেই দহন ডলহাউজটা নিয়ে কাকনকে সাথে করে চলে গেলো।
¤ : কি অদ্ভুদ…
{{{ এই মহাশয়া আমাদের নায়িকা। তার নাম বহ্নি রহমান। অনার্স থার্ড ইয়ারের ছাত্রী । বাবার নাম আরফান রহমান। মায়ের নাম বিনা রহমান। ভাইয়ের নাম বিষয় রহমান। ভাবির নাম দিনা রহমান। আর ভাতিজি রিদি রহমান। বহ্নি এমনিতে মোটামোটি শান্ত স্বভাবেরই । }}}
.
দহন : মনি … মনি…. আমার নয়ন মনিটা কোথায় রে … হামমম?
মনি : এই যে ভাইয়া…
মনি ছুটে এলো। দেখলো দহনের হাতে কিছু নেই।
মনি : ভাইয়া আমার ডলহাউজ আনোনি…?
দহন : ডলহাউজ…? ওহ শীট। সরি মনি… আমি একেবারে ভুলে গিয়েছি । ভাইয়া এই এতততোগুলো সরি…
মনি : যাও তোমার সাথে আরি। কথা নেই…
দহন : মনি যদি ভাইয়ার সাথে কথা না বলে তবে ভাইয়ার যে অনেক কষ্ট হবে…
মনি : হুহ…
মনি গাল ফুলিয়ে বসে রইলো। দহন মুচকি হেসে ডলহাউজটা মনির সামনে ধরলো … মনি তো খুশি হয়ে গেলো।
মনি : আই লাভ ইউ ভাইয়া….
.
চলবে…???