ভুলিনি তোমায় পর্ব-৩২

0
3880

#ভুলিনি_তোমায়?
#Nishat_Tasnim_Nishi
#পর্ব :৩২

আমিও তো সেটাই বলতেছি, এসব কী?”

–“যা দেখতে পাচ্ছেন তা,,কেনো?”

–“একদম হেয়ালী করবে না। তুমি কী বুঝতেছো না আমি কী বলছি?”

–“ফার্স্টলি আমাকে আপনি বললে খুশি হবো, কারন আমি আপনার বড় ভাইয়ের বউ।বয়সে বড় না হলেও সম্পর্কে বড়,তাই সম্মান দিয়ে কথা বলাটা বেটার হবে।সেকেন্ডলি হেয়ালী করার কী আছে,আপনি আমাকে বলুন যে আপনি কোনসব বুঝতে পারছেন না, আমি বুঝিয়ে দিচ্ছি।”

–“বাহ,বোবার মুখে খই ফুটেছে।আবার ইংলিশও বলা হচ্ছে!এসব আমার সামনে দেখাতে এসো না।দু-চারটা ইংরেজী বললে কেউ শিক্ষিত হয়ে যায় না।নিজেকে কী মনে করতেছো?তুমি কেমন আমার খুব ভালোই জানা আছে।

–“এক্সকিউজ মি,আমি একবারও বলি নাই যে আমি শিক্ষিত,আপনি নিজেই এসব বলছেন।আপনি যেহেতু আমাকে ভালোভাবেই চিনেন তাহলে তো গুড।”

—“এই এই একদম আপনি আপনি বলবে না।আগে তো তুমি ছাড়া কথা বলতে না। হঠাৎ আপনি কেনো বলতেছো?”

—“কারনটা মনে হয় আমার থেকে ভালো আপনার জানার কথা।পিছনের কথা বললে বলবো,ওটা পাস্ট,,আর পাস্ট সবসময় পাস্ট ই হয়।আগের নায়লা আর বর্তমানের নায়লার মধ্যে অনেক পার্থক্য। এখন,সরুন সামনে থেকে,আপনার সাথে কথা বলতেও আমার রুচিতে লাগছে।”

—“বাহ,,!!তাই নাকী?আমার সাথে কথা বলতে রুচিতে বাঁধছে,সিরিয়াসলি?দু-তিন ঘন্টা যাবৎ যে আমার কথা শুনার জন্য অপেক্ষা করতো এখন নাকি তার আমার সাথে কথা বলতেও রুচিতে লাগে। এত পরিবর্তন!কীভাবে? ”

আমি কেনো জবাব দিলাম না।চুপচাপ পাশ কাটিয়ে চলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে পা বাড়াতেই সৌরভ আবারো আমার সামনে চলে আসে।

–“কী হলো পালাচ্ছো কেনো?আর আমার দিকে না তাকিয়ে এদিক-ওদিক তাকিয়ে কেনো কথা বলছো?আমি জানি,তুমি এখনও আমার প্রতি দূর্বল,এখনও আমাকে ভালোবাসো,তাই তো আমার দিকে তাকাচ্ছো না,তাই না?”

–“এটা আপনার ভুল ধারনা।আমি আপনার দিকে তাকাচ্ছি না কারন আপনার চেহারা দেখলে আমার ঘিন লাগে,নিজের প্রতি রাগ লাগে যে কীভাবে আমি এমন একটা ছেলেকে ভালোবেসেছিলাম।”

–“তাই নাকি?কিন্তুু তোমার চোখ তো অন্যকিছু বলছে।”

–“আপনি আবার কবে থেকে আমার চোখের ভাষা বুঝেন?”

–“মানে?”

–“কিছু না।সরুন,আমাকে যেতে হবে।”

–“হুম,যেতে তো হবেই।তার আগে এটা তো বলো, তুমি কীভাবে জানলে যে এহসান আমার ভাই হয়?”

সৌরভের কথা শুনে আমি প্রশ্নবিদ্ধ চোখে ওর দিকে তাকালাম।সৌরভ হালকা কেশে মুখে হাসি ফুটিয়ে বললো,,”এত অভিনয় হজম করতে পারতেছি না। আমি খুব ভালো করেই জানি আমার থেকে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্যই তুমি ভাইয়াকে বিয়ে করেছো। তুমি এত খারাপ হয়ে গেছো,যে প্রতিশোধের জন্য আমার ভাইয়ের লাইফ টা নষ্ট করে দিচ্ছো।”

–“হোয়াট?আপনি কী পাগল? কী বলছেন এসব? আপনার থেকে প্রতিশোধ মানে?আপনার বোধ হয় মাথায় সমস্যা আছে।আরে আপনি কে যে আপনার থেকে প্রতিশোধ নিবো,আপনার মতো মানুষকে আমি নায়লা কেয়ারও করি নি।আর বিয়ের কথা,তাহলে শুনুন আপনার ভাই আমাকে বিয়ে করেছে,আমি যেচে যেচে বিয়ে করি নি। সো এসব ফালতু কথা একদম বলবেন না।”

–“মানে?”

–“মানে টা আপনাকে বলা প্রয়োজন মনে করছি না।আর আমার লাইফ নিয়ে এত না ভাবলেও চলবে।একচুয়েলী আপনার আলগা পিরিত দেখে আমার গা জ্বলতেছে।”

কথাগুলো বলে সৌরভকে পাশ কাটিয়ে চলে আসলাম। পিছন থেকে ও নানান কথা বলতেছে, আমি শুনেও না শুনার ভান করলাম। এই ছেলেটা কে আমার একটুও পছন্দ না,নিজের প্রতি রাগ লাগতেছে এটা ভেবে যে একটা সময় ওকে আমি পছন্দ করেছিলাম। অবশ্যই ওটা আমার দোষ নয় বয়সের দোষ।তখন এমন একটা সময় ছিলো যে,যাকেই দেখতাম তাকেই ভালো লাগতো। কিন্তুু সৌরভের প্রতি অন্যরকম টান ছিলো যা সময়ের সাথে তিক্ত হয়ে গিয়েছে,এখন আর ওর প্রতি আগের মতো টান অনুভব করি না।তাই বলে কী ওকে আমি ভালোবাসি নি,মোটেও না। সৌরভ আমার প্রথম ভালোবাসা,যা আমি চাইলেও কখনও ভুলতে পারবো না। কিন্তু তাই বলে সৌরভকে মনে করে আমি আমার বর্তমানকে অর্থাৎ এহসানকে উপেক্ষা করবো? এতটা স্বার্থপর আমি নই,আমার কোনো দিক না দেখেই আমাকে বিয়ে করেছে এবং ভালোবেসেছে।উনি আমাকে ভালোবাসি বলেন নি তো কী হয়েছে,আমি তো জানি ভালোবাসে।উনি আমাকে ভালোবাসে ভাবতেই শরীরে হিম বাতাস বয়ে গেলো।
_____________________

অনুভূতিগুলো দিন দিন কেমন উতলা হয়ে উঠছে,সময় যত এগুচ্ছে এহসানের প্রতি ভালোলাগা টা ততই বেড়ে যাচ্ছে। উনার প্রতি টানগুলোও আগের থেকে কয়েক শত গুন বেড়ে গিয়েছে,এত দিনে আমার ফিলিংসগুলো আমি বুঝতে পেরেছি।আজ আমি নিশ্চিত যে আমি দ্বিতীয়বারের মতো প্রেমে পড়েছি।আমি এহসানকে ভালোবেসেছি।দ্বিতীয়বারও যে কাউকে ভালোবাসা যায় তা আমার জানা ছিলো না। ভাবতাম ভালোবাসা বোধ হয় একবারই হয়।জীবনটা হলো পরীক্ষা আর এই পরীক্ষা কখনও সহজ হয় না।প্রত্যেকটা ধাপে ধাপে পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়।ভালোবাসা টাও একটা পরীক্ষা।

গ্রামে এসেছি মাস খানেক পেরিয়ে যাচ্ছে। যদিও আমাদের পরের দিন চলে যাওয়ার কথা ছিলো।বাবার কারনে যেতে পারি নি। উনারর কড়া নির্দেশ ছিলো আমরা যেনো এক পা ও উনার ঘরের বাহিরে না দেই। “সারাটা জীবনই তো বাহিরে বাহিরে থেকেছিস আমার শেষ সময় ই না হয় আমার পাশে থাক,আর বাচবোই বা কতদিন।” বাবার এই একটা বাক্যই যথেষ্ট ছিলো আমাদের আটকে দেওয়ার জন্য,এহসান সেদিন আর কোনো কথা বলে নি। আমিও এহসানকে বলেছিলাম থাকার জন্য,উনি অনেক ভেবেচিন্তি বলেছিলেন যে উনি থাকবেন তবে উনার কিছু শর্ত আছে।জানি না কী শর্ত বলেছিলো কারন আমি তখন উনাদের কাছে ছিলাম না।আমিও কখন উনাকে প্রশ্ন করি নি যে কী শর্ত ছিলো।কী দরকার,প্রয়োজন হলে উনি নিজেই বলবে। সৌরভের সাথে সেদিনের কথা বলার পর আর কোনো কথা হয় নি।আর ও তেমন একটা থাকে না,শুনেছি কোনো এক প্রজেক্ট নিয়ে বিজি। যত বারই ওর সামনে পড়েছি ততবারই ইগনোর করেছি।ও প্রথম প্রথম এত গায়ে মাখতো না কিন্তু বেশ কয়েকদিন ধরে দেখছি ও কেমন বিরক্ত আমার এ ব্যবহারে।আমার অবশ্য এতে কোনো সমস্যা নেই। মাঝে মাঝে আমার মনে হয় আমাকে আর উনাকে একসাথে দেখলে ওর হয়তো খারাপ লাগে,কারন ও তখন সেখান থেকে পাশ কেটে চলে যায়।ওহ্,এ কয়েকদিনে আবার শাশুড়ি মায়ের সাথেও ভালো সম্পর্ক হয়েছে,উনি খুব মিশুক। আমাকে অনেক হেল্প করে,আমিও করি।উনার আর আমার সম্পর্ক টা অনেকটা ফ্রেন্ডের মত হয়ে গিয়েছে,,আমাদেরকে কেউ বউ-শাশুড়ী বলবেই না। উনার ফ্যামিলি কত সুন্দরে আমাকে মেনে নিয়েছে,আজ যদি বাবা দেখতেন তাহলে নিশ্চই অনেক খুশি হতো। জানালার গ্রিল ধরে মেঘাচ্ছন্ন আকাশের দিকে তাকিয়ে অন্যমনস্ক হয়ে এসব ভাবছিলাম।
.

–“কী ভাবছো এত গভীর মনোযোগ দিয়ে, যে আমি এতবার ঢেকেও সারা পায় নি?”

হঠাৎ কেউ আমাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে কানের কাছে ফিসফিস করে কথাগুলো বলে উঠলো। আমি খুব ভালো করেই জানি কে,আমি কিছু বললাম না উল্টো পুরো শরীরের ভার ছেড়ে দিলাম উনার উপরে। উনি আমাকে আগের থেকেও আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলেন।

উনি মৃদু হেসে বললেন,,”মেডাম কী আজ রোমান্টিক মুডে নাকি?”

আমি উনার হাতে চিমটি দিয়ে বললাম,,”আপনার কাছে শুধু এসব পঁচা কথা, তাই না?”

উনি নিঃশব্দে হাসলেন।কতক্ষন যে এভাবে দাড়িয়েছিলাম জানা নেই।অনেকক্ষণ পর উনি ধীর কন্ঠে বললেন,,”একটা কথা বলি?”

আমি গাড় নাড়িয়ে সম্মতি দিলাম।উনি কয়েক সেকেন্ড চুপ থেকে বলে উঠলেন,,”সৌরভ কে কী এখনো ভালোবাসো?”

উনার প্রশ্ন শুনতেই মুখের রং বদলে গেলো,মনটা কেমন যেনো করতে লাগলো। উনি হঠাৎ এই প্রশ্ন কেনো করলেন।এর আগে যতবার এ প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছিলাম ততবারই এড়িয়ে গিয়েছিলাম। কী বলবো ভেবে পাচ্ছি না।

আমি নিজেকে শান্ত রেখে একটু হেসে বললাম,,”সত্য বলবো না মিথ্যা বলবো?”

উনি স্বাভাবিকভাবেই বললেন,,

–“সত্য বলো।

আমি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললাম,,”সত্যি বলতে গেলে আমি বলবো,হ্যা,বাসি।

আমার কথাটা উনার কান পর্যন্ত পৌঁছাতেই উনার মুখে আষাঢ়ের ঘন-কালো মেঘ নেমে আসলো।আমার কথাটা উনার হাসিখুশি মনটাকে খারাপ করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিলো।

উনার রিয়েকশন দেখে আমি স্মিত হেসে বললাম,,
“একটা কথা আছে না,সত্য সবসময় তিতা হয়। কথাটা একদম খাটি।আপনার ক্ষেত্রেও তাই,আমার কথাটা আপনার নিকট তিতা ঠেকেছে তা আমি ভালোই উপলব্ধি করতে পারতেছি। আমি চাইলেই আপনাকে মিথ্যা বলতে পারতাম।সৌরভকে ভালোবাসি তবে আগের মত নয়,ওর প্রতি আমার ভালোবাসাটা তিক্ততায় ভরে গিয়েছে। ও আমার প্রথম ভালোবাসা,আমি চাইলেও ওকে ভুলতে পারবো না। ”

উনি ছোট্ট একটা নিশ্বাস ফেলে বললেন,”ওহ্।”

সৌরভের কথা বলতেই মনে একরাশ কষ্ট অনুভব করলাম।

–“জানেন,আমি কখনও ভাবি নি যে আমি দ্বিতীয়বার কাউকে ভালোবাসবো। দ্বিতীয়বার কারো প্রেমে পড়বো।সে মানুষ টা যে আপনি হবেন সেটা তো কল্পনাও করি নি। আমার জীবনের প্রত্যেকটা মোড়ে এসে আমি এটাই ভেবেছিলাম যে এমন হবে সেটা তো কখনো ভাবি নি। কেউ যদি আমাকে বলে আপনাকে কেনো ভালোবাসি,তাহলে আমি বলবো,আপনার মতো মানুষকে কে না ভালোবাসবে,আপনি সবসময় আমার খেয়াল রাখেন, আমার যত্ন নেন,নিঃশ্বার্থ ভাবে ভালোবাসেন,আমার কোনো দিক না থাকা স্বত্তেও আমাকে বিয়ে করেছেন।তাহলে আমি কেনো আপনাকে ভালোবাসবো না।

আর যদি বলি সৌরভকে কেনো ভালোবেসেছিলাম,তাহলে আমি বলবো জানি না,কোনো কারন ছাড়াই আমি ওকে ভালেবেসেছিলাম,ঠিক আপনাকেও যদি বলি আমাকে কেনো ভালেবেসেছেন আপনিও একই উত্তর দিবেন।তাই না?”

উনি আরো ঘনিষ্ঠ হয়ে বললো,,”কী ব্যাপার,আজ এত জ্ঞানী টাইপ কথাবার্তা বলছো?”

আমি হেসে বললাম,,”কথা কাটাচ্ছেন,ভালো।আমি নিজেও এ বিষয়ে কথা বলতে চাইছি না।আচ্ছা,আপনি বলুন এ অসময়ে আমার সাথে কী কথা বলতে এসেছেন?”

উনি কোনো সাড়াশব্দ করলেন না,আমিও চুপ করে রইলাম। খানিক বাদে উনি উশখুশ করে বললেন,,”কেমন আছো?”

উনার কথা শুনে আমি অনেক অবাক হলাম,সাথে কেমন যেনো অনুভব করলাম,ভালো না খারাপ জানি না।

–“হঠাৎ এ প্রশ্ন?”

–“জানতে মন চাইলো,তাই।”

–“ওহ,আপাতদৃষ্টিতে বলতে গেলে ভালো আছি।আবার ভালো নেই।”

–“ভালো নেই কেনো?”

–“কারন গত কয়েক টা দিন থেকে তলপেটে অন্যরকম অসহ্যনীয় ব্যাথা অনুভব করছি।আজকেও একবার করেছিলো।আমি জানি না কেনো এমন করছে,তবে এর আগেও অনেকবার এমন করেছে।”

আমার কথা শেষ হতেই উনি এক ঝটকায় আমাকে সরিয়ে ফেললেন। আচমকা এমন হওয়ায় আমি কিছুটা চমকে উঠলাম,উনার দিকে তাকাতেই দেখলাম উনার চোখ দুটো লাল হয়ে আছে। উনি প্রচন্ড রেগে বললেন,,”এত কিছু হয়ে গেছে আর আমাকে এখন বলছো।”

–“আরে,আপনি এত সিরিয়াস হচ্ছেন কেনো?অল্প কয়েক সেকেন্ড ব্যাথা করে এরপর তো ঠিক হয়ে যায়। স্বাভাবিক এত সিরিয়াস হওয়ার কিছু নেই।”

উনি রাগে গিজ গিজ করে বলতে লাগলেন,,”তুমি বেশি বুঝো, তাই না?কালকেই ডাক্তারের কাছে যাবো।সবকিছু হেলাপেলা করা ঠিক না।”

আমি হেসে বললাম,,”আচ্ছা,ঠিক আছে।আপনি যেভাবে বলবেন ওভাবে শুনবো।এখন বলেন আপনি এসময়ে বাসায় কেনো?”

উনি একটু স্বাভাবিক হয়ে বললেন,,”আর বলো না।আসলে,আমি ছুটি নিয়ে এসেছি।”

আমি ভ্রু কুচকে বললাম,,”বাবা, কিছু বলে নি?”

উনি একটু হেসে বললেন,,”কী বলবেন,আমি তো পেট ব্যাথা বলে চলে এসেছি।”

আমি চোখ ছোট ছোট করে বললাম,,আচ্ছা,তাহলে কাজে ফাকি দিয়ে এসে বউ এর সাথে রোমান্স করা হচ্ছে।”

আমার কথার প্রতিউত্তুরে উনি দাত কেলিয়ে হাসলেন।উনাকে হাসতে দেখে আমিও হাসলাম।গ্রামে আসার পর উনি বাবার সাথে বাবার ব্যবসায় যোগ দিয়েছেন,সারাদিন কাজ-কর্মে বিজি থাকেন।বাড়ীতে খুব কমই থাকেন।সারাদিন আমি আর শাশুরী মা ই ঘরে থাকি,ঘরটা কেমন শূন্য শূন্য লাগে।
.
বিকাল চারটা বাজে রুমের জানালার পাশে চুল ছেড়ে দিয়ে চশমা দিয়ে টেবিলে বসে উপন্যাস পড়ছিলাম,তখনই রুমের দরজায় কেউ টোকা দিল। এ সময় কে হতে পারে,ভাবলাম শাশুড়ী মা তাই মাথা তুলে বইয়ের দিকে তাকিয়ে বললাম,,”ভেতরে আসুন।”

আমার কথা শেষ হতেই মিনিট দুয়েক এর মধ্যে কেউ এসে আমার সামনে দাড়াল।আমি আড়চোখে একবার নিচের দিকে তাকাগেই পুরুষালী দেহ দেখলাম।ভাবলাম হয়তো উনি এসেছেন,আমি বইয়ের দিকে মুখ রেখে হেসে বললাম,,”কী ব্যাপার আজ বারবার আসা হচ্ছে।বউয়ের কথা কী খুব বেশি মনে পড়ছে।”

আমার কথার জবাব না পেয়ে আমি বই এ হাত রেখে বন্ধ করে উপরের দিকে মুখ তুলে তাকালাম।আমার সামনে সৌরভ দেখে আমি চমকে উঠলাম,সৌরভ এ সময় আমার ঘরে,কেনো? কয়েক সেকেন্ড ঘম মেরে দৌড়াদৌড়ি করে ওড়না টা খুজতে লাগলাম।
.
.
.
চলবে?