ভেতরে বাহিরে পর্ব-০৯

0
812

#ভেতরে_বাহিরে
পর্বঃ০৯
লেখিকাঃ #রুবাইদা_হৃদি
আবেশে দরজায় ঠেস দিয়ে হেলে দাঁড়িয়ে আছে৷ মাধুর্য তার বুকের উপর মাথা দিয়ে চোখ-মুখ খিঁচে দাঁড়িয়ে আছে৷ বুক ধড়ফড়িয়ে উঠছে মাধুর্যের৷ আবেশের উষ্ণতা তার মাঝে ছড়িয়ে গেলো খানিকটা সময়ের ব্যবধানে৷ আবেশকে পাশ কাটিয়ে ওয়াশরুমের বাইরে যেতে গেলেই শাড়িতে বেজে হুমড়ি খেয়ে পড়ে আবেশের বুকে৷ ভাগ্যিস পেছনে দরজা ছিলো! আবেশ সেখানে গিয়ে বাড়ি খায় আর মাধুর্য তার বুকে ৷ আবেশের বুকে ঢিপঢিপ আওয়াজ মাধুর্যের ভেতর কাঁপিয়ে দিলো৷ ওয়াশরুমের দরজায় লাগানো আয়নার প্রতিফলন সামনে লাগানো বেসিনের আয়নায় প্রতিফলিত হচ্ছে৷ মাধুর্য দরজায় লাগানো আয়নায় দেখতে পেলো আবেশ তার দিকেই তাকিয়ে আছে ৷ বলিষ্ঠ দেহের হাতজোড়া তার কোমড়েই নিবদ্ধ৷ কম্পমান আবেশের চোখ ৷ কুঁচকে আছে কপাল৷ চোখের ভেতরের তিলটা নড়ছে পলকের সাথে সাথে৷

‘ এতো কেয়ারলেস কেন,তুমি? এইভাবে কেউ দৌড় দেয়?’

আবেশের কথার ভাজে মাধুর্য উঠে আসতে গেলেই বুঝতে পারে আবেশের হাত এখনো তার কোমড়ে ৷ অস্থিরতা ঘিরে ধরলো তাকে৷ কোমড়ের ডান পাশে ব্যথার অস্তিত্ব টের পেলো ৷ বিয়ের দিন সকালে’ই রাব্বী আঘাত করেছিলো সেখানে ৷ মাধুর্য ব্যথাতুর কন্ঠে বলল,

‘ আহ্! হাত সরান৷’

‘ নিজে থেকেই তো হুমড়ি খেয়ে পড়েছো৷’

‘ আপনার হাতের স্পর্শের জন্য ব্যথা লাগছে,হাত সরান৷’

মাধুর্যের কন্ঠে আবেশ দ্রুত হাত সরিয়ে ফেলে৷ ভ্রু কুঁচকে বলল,

‘ সামান্য স্প..’ বলেও থেমে গেলো আবেশ ৷ চোখ উঠিয়ে তাকালো মাধুর্যের দিকে ৷ অস্থির কন্ঠে বলল,

‘ আগে বলবা তো৷ ব্যথা করছে?’

‘ হু৷’ মাধুর্য ছোট করে জবাব দিলো৷ আবেশ তীক্ষ্ণ কন্ঠে বলল,

‘ কবে মেরেছিলো?’

‘ আপনার আর আমার বিয়ের দিন সকালে৷’

‘ দোষ কী ছিলো?’ আবেশের কন্ঠে তেজ৷ চোখেমুখে আছড়ে পড়ছে রাগ৷ মাধুর্যের কী হলো কে জানে? সে একনাগাড়ে বলল,

‘ ওর কথা না শোনার জন্য৷ ওর ভাইকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার জন্য৷ তার ভাইকে যে জিনিস দিয়ে মেরেছিলাম ও সেটা আমার উপর ভাঙ্গতে গিয়ে কোমড়ে লেগেছিলো৷’

মাধুর্যের কন্ঠে আজ জড়তা নেই না আছে ভয়ের রেশ৷ আবেশ ক্ষীণ স্বরে বলল,

‘ শাহেদ আঙ্কেল নিজেও মারতো?’

আবেশের কথায় মুখে হাসি ফুঁটে উঠলো মাধুর্যের৷ বিষাদময় হাসি! চোখে টলটলে পানি মুখে বিষাদের হাসি৷ মাধুর্য পলক ফেলতেই গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়লো পানি৷ আবেশ স্তব্ধ,নির্বাক৷ মাধুর্য পানিটুকু মুছে বলল,

‘ হ্যাঁ,এইযে দেখুন..’ মাধুর্য নিজের ঘাড়ের নীচে দেখিয়ে বলল,

‘ স্টিলের স্কেল দিয়ে মেরেছে এখানে৷ কেন মেরেছে জানেন?’

‘ কেন?’

‘ তার ছেলে রাব্বী আমাকে বিক্রি করে দিতে চেয়েছিলো৷ সেদিন আমি দিশেহারা হয়ে কোনোরকম পালিয়ে পুলিশ স্টেশনে যাচ্ছিলাম৷ মাঝ রাস্তা থেকে ধরে এনে মেরেছিলো৷’

মাধুর্যের এলোমেলো শাড়ি,কান্নারত মুখের দিকে তাকিয়ে তীব্র ঘৃণা জন্মালো তার অতি প্রিয় শাহেদ আঙ্কেলের জন্য ৷ যে মানুষটার ব্যক্তিত্ব ছিলো প্রখর সে কী’ভাবে জঘন্য হয়ে গেলো? আবেশ নিজের হাত মুষ্টিবদ্ধ করে বলল,

‘ রাব্বী কেন মারতো,তোমাকে? শাহেদ আঙ্কেল বলতো বলে?’

‘ ন..না..’ মাধুর্যের গলা ধরে এলো ৷ নিজেকে পাগল পাগল লাগলো৷ ভেজা গলায় নিজের শাড়ি খাঁমচে ধরে বলল,

‘ লতা বেগম মানে মা সাথে রাব্বীকে যখন আব্বু বাসায় নিয়ে এলো আম্মু হারিয়ে যাওয়ার দুই বছর পর৷ রাব্বী তখন বেশ বড়৷ আমাকে ওর সহ্য হতো না ৷ এক্সামে বরাবর আমি ওর থেকে ভালো করতাম তখনো আমার আব্বু আমার ছিলো৷ আমি যখন ভালো রেজাল্ট করতাম ও আমাকে মারতো৷ আব্বু ওর খারাপ রেজাল্টের জন্য লতা বেগম কে বকেছিলো সেই দিন থেকে ও আমার এক্সামের আগে হাত কেটে দিতো৷ আমাকে মারতো তবে,চুপিচুপি৷’

বলে থামলো মাধুর্য৷ তার নাক লাল হয়ে উঠেছে৷ কষ্ট উঁপচে পড়ছে চোখে৷ বাইরে থেকে সুমধুর সুরে আজান ভেসে আসছে৷ টপ টপ শব্দের গড়িয়ে পড়ছে পানি৷ আবেশ নির্লিপ্ত ভাবে তাকিয়ে আছে৷ আবেশ পাল্টা প্রশ্ন করে বলল,

‘ তারপর থেকে রাব্বী মারতো তোমাকে? সেটা শাহেদ আঙ্কেলের চোখে পড়তো না?’

মাধুর্য কেমন উন্মাদের মতো কেঁদে উঠলো৷ নিজের চুল টেনে ধরলো৷ আরেক হাত মুখের উপর দিয়ে ডুকরে কেঁদে উঠে বলল,

‘ তারপর থেকে সব পাল্টে যায়৷ আমার আব্বু রাব্বীর আব্বু হয়ে যায়৷ তার সামনে আমাকে মেরে ফেললেও তাকিয়ে দেখার প্রয়োজন টুকু মনে করতো না..’

আবেশ মাধুর্যের দিকে এগিয়ে গেলো৷ মেয়েটা কতোটা সহ্য করেছে৷ সে মাধুর্যের কাছাকাছি দাঁড়িয়ে হাত ধরে বলল,

‘ লুক মাধু,সেই সব বাজে স্বপ্ন৷ সব ঠিক হয়ে যাবে৷ শাহেদ আঙ্কেল আর রাব্বীকে আমি দেখে নিবো৷’

শেষের কথাটুকু বলার সময় তীব্র রাগ প্রকাশ পেলো আবেশের কন্ঠে৷ রাগে তার শরীর কাঁপছে৷ মাধুর্য কান্নার মাত্রা বাড়িয়ে দিয়ে বলল,

‘ রাব্বী মেরে ফেলবে আমাকে৷ ও আমাকে বিক্রি করে দিতে চেয়েছিলো বিয়ের আগের দিন রাতেই মোটা টাকার বিনিময়ে৷ তবে লতা বেগমের কথায় দেয় নি৷ ও কতোটা ভয়াংক আপনার ধারণা নেই৷ আপনাকেও মেরে ফেলবে..সবাইকে মেরে ফেলবে…ও বলেছে আমায়৷’

‘ কিছু হবে না,মাধু৷ তোমার প্রতি ওদের প্রতিটা নির্যাতনের শাস্তি পাবে৷ এই আবেশ এহসান তোমায় কথা দিচ্ছে৷’

আবেশের কথায় কান্নারত চোখে তাকালো মাধুর্য৷ গোধূলি রাঙা বিকেলে বদ্ধ দরজার আড়ালেহাজারো দুঃখের কথা আটকা পড়লো সুন্দর এক সকালে সূচনা কী তবে এইবার হবে মাধুর্যের অভিশপ্ত অন্ধকারে ডুবে থাকা জীবনের?

____________

ভোরের নম্র আলো জানালার কাচে চিকচিক করছে৷ অন্ধকার রুম আলোকিত করতে ঢোকার বাহানা খুজছে৷ নীড় ছাড়া পাখির কলরব সুর তুলছে প্রকৃতির কোলে৷ আষাঢ়ের বৃষ্টির অবাধ্যতা যেন বিরামহীন৷ আকাশ বেয়ে হুটহাট নেমে পড়াই তাদের ধর্ম! সোনালী রোদ্দুর ঢেকে দিয়ে শুরু হলো মুষুলধারে বৃষ্টি ৷ খোলা বারান্দায় নৃত্য করছে তারা৷ আবেশের ঘুম ভাঙ্গলো গুড়ুম গুড়ুম শব্দে৷ গত কয়েকদিন যাবত ডাবল সোফায় ঘুমানোর দরুন তার ঘুম হচ্ছে না,একদম ৷ উঠে বসতে গেলেই টের পেলো তার ঘাড় ব্যথা করছে লাগামহীন ভাবে ৷ উঠে বসতেই সোজাসুজি নজরে পড়লো খাটের একদম পাশে শুয়ে থাকা মাধুর্যের দিকে৷ আলুথালু হয়ে আছে চুল৷ কুঁচকে গেছে কাপড়৷ তৈলাক্ত মুখ ঢেকে আছে চুলের বাহারে ৷ আবেশ আড়মোড়া ভেঙ্গে উঠে দাঁড়ালো ৷ কাল ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে মাধুর্য একদম চুপচাপ হয়ে গিয়েছিলো৷ রাতে মাহফুজা নিজে হাতে খাইয়ে দিয়ে গেছে৷ আবেশের ইম্পোর্ট্যান্ট ইমেইল চেক আর ভিডিও কনফারেন্স ছিলো বলে বারান্দায় চলে গিয়েছিলো৷ কাজ শেষে ফিরে খাটে মাধুর্যকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখে বালিশ নিয়ে সোফায় ঘুমিয়েছে ৷
আবেশ ধীরপায়ে এগিয়ে গেলো মাধুর্যের দিকে৷ বৃষ্টিরা তখন জানালায় আছড়ে পড়ছে৷ বিন্দু বিন্দু পরশ আঁকছে৷ আবেশ মাধুর্যকে একনজর দেখে চিন্তিত স্বরে নিজ মনে বিরবির করে বলল,

‘ আরেকটু হলেই তো গড়িয়ে পড়বে নীচে৷ সম্পূর্ণ খাট ছেড়ে কিনারে কে শুতে বলেছে! শরীরে ব্যথায় পরিপূর্ণ এখান থেকে পড়লে যেটুকু আছে সেটুকুও যাবে৷’

এইসব ভেবে মাধুর্যকে ডাকতে গেলে থমকে যায় আবেশ৷ ইরা বারবার বলেছে,মাধুর্যকে ঘুমুতে দিতে,যতোটা সম্ভব৷ ইরার বলা কথা মনে হতে হাঁটু মুড়ে মাধুর্যের সামনে বসে আবেশ৷ মাধুর্যের ঘাড়ের কালচিটে দাগটা দেখে ভেতরের রাগ ফুঁসে উঠে তার৷ শুধুমাত্র তার আম্মার বারণের জন্য সে চুপ আছে৷ না’হলে রাব্বী আর শাহেদকে জিন্দা কবর দেওয়ার ক্ষমতা তার আছে ৷

‘ আরে..আরে পড়ে যাবা তো..’ মাধুর্য আরো কিনারে এসে পড়তেই আবেশ ভাবনা ছেড়ে বলে উঠে৷ মাধুর্য আবারো পাশ ফিরতে গেলে আবেশ দ্রুত মাধুর্যের পেটের মাঝে ধরে অস্ফুটস্বরে বলল,

‘ এতো ঘুম কোথা থেকে আসে,মাধু তোমার? কেউ উঠিয়ে নিয়ে গেলেও তো টের পাবা না৷’

‘ তুমি আমার পাশে আছো,তো৷ যে উঠাতে আসবে ঘুষি মেরে তার নাক ফাটিয়ে দিবা।’ মাধুর্য ঘুম কন্ঠে বলল৷ আবেশের কুঁচকানো ভ্রু আরো কুঁচকে গেলো ৷ বলল,

‘ সোজা হয়ে শুতে পারো না? এই মেয়ে..’ আবেশের কথা মাধুর্যের কর্ণপাত হলো না সে আবেশের দিকে আরো ল্যাপ্টে গেলো ৷ মাথা রাখলো তার বুকে৷ আবেশ অবাক হয়ে আছে!সে সরাতে আসলো আর তাকেই বেড বানিয়ে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে! আবেশ কিছুটা ধারালো কন্ঠে বলল,

‘ মাধুর্য..সোজা হয়ে শোও৷’

আবেশের কথার রেশ মাধুর্যেত কান অবধি পৌছাতেই পিটপিট করে চোখ তুলে তাকায় সে৷ চোখের সামনে আবেশের মুখ দেখতে পেয়ে বলল,

‘ সরুন তো,আমাকে ঘুমুতে দিন৷’

‘ আমার উপর থেকে উঠে ঘুমাও ৷ উফফ! কী মেয়েরে বাবা৷’

‘ আপনি আমার জায়গায় এসেছেন কেন? ওইযে,ওইপাশে আপনার জন্য জায়গা রেখেছি আমি৷’

মাধুর্য ঘুম চোখেই তার বা পাশে ইশারা করে বলল৷ আবেশে হতবিহ্বল চোখে তাকিয়ে আছে৷ বলে কী এই মেয়ে? সে যথেষ্ট ধৈর্য নিয়ে বলল,

‘ চোখ খুলো তাকিয়ে দেখো আমার কোলে এসে শুয়ে আছো৷’

‘ আমাকে কী বাচ্চা পেয়েছেন? আমি আপনার কোলে শোবো কেন?’

আবেশ পড়েছে ঝামেলায়৷ সে হাঁটুতে ভর দিয়ে বসে আছে৷ মাধুর্যের শরীরের ভার সম্পূর্ণ পড়তেই হাঁটু ভেঙ্গে আসছে৷ মাধুর্যকে উঠানো ও দায় হয়ে গেছে এমন হলে যেকোনো মুহূর্তে মাধুর্য পড়ে যাবে৷ নিজের রাগ কন্ট্রোল করে বলল,

‘ তুমি কেন বাচ্চা হবা?আমি বাচ্চা! তাই এই বাচ্চার উপর রহম করে চোখ তুলে তাকিয়ে দেখো কোথায় আছো৷’

আবেশের কথার রেশে ঘুম ছুটে গেলো মাধুর্যের৷বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আবেশকে দেখে বলল,

‘ তুমি…মানে আপনি এখানে কেন?’

‘ মশা মারছি আর তাড়াচ্ছি৷ এইবার তুমি উঠো তারপর দুইজনে মিলে তাড়াবো৷’ আবেশ দাঁতে দাঁত চেপে বলল৷ মাধুর্য নিজের অবস্থান বুঝতে পেরে খাটে উঠে বসলো৷ কালকের ওয়াশরুমের ঘটনা আবার এখনকার ঘটনা তার মুখে লজ্জার রক্তিম আভা ফুঁটিয়ে তুললো৷ সব ব্যথা সব কষ্ট ভুলে মাথা নীচু করে একরাশ লজ্জা নিয়ে বসে রইলো৷ আবেশ মাধুর্যের দিকে তাকিয়ে দুইদিলে মাথা দুলিয়ে বলল,

‘ লজ্জা ছেড়ে উঠে ব্রেকফাস্ট করে মেডিসিন নিয়ে আবার লজ্জা পেয়ো৷’

‘ ক..ক..কে বলেছে আমি লজ্জা পাচ্ছি? ঘুমের জন্য সব এলোমেলো লাগছে৷’

‘ সেটা দেখাই যাচ্ছে৷’ আবেশ উঠে দাঁড়িয়ে যেতে যেতে বলল৷ আবেশের চলে যাওয়া দেখে মাধুর্য মুখ তুলে তাকিয়ে হাফ ছেড়ে বাঁচলো৷ সকাল সকাল এতোটা লজ্জাজনক ব্যপার ঘটবে জানলে সে ঘুমাতো না.. একদম না৷

___________

‘ অফিসের কাজ গুছিয়ে মাধুর্যকে নিয়ে দূরে থেকে কোথাও একটা ঘুরে এসো৷’

‘ না আম্মা মাধুর্যের আব্বু আর ওই রাব্বীকে আগে উচিৎ শিক্ষা দিবো৷’ আবেশ জুসের গ্লাস ঘুরাতে ঘুরাতে বলল৷ মাহফুজা অসন্তোষ চোখে তাকিয়ে বলল,

‘ তোমার আব্বু ফিরবে তারপর এর বিহিত হবে,কারণ সেই কিন্তু মাধুর্যের খোজ পেয়েছিলো৷’

‘ আম্ম তুমি বুঝতে পারছো না৷ এইসব নরপশুদের কুকুর দিয়ে খাওয়ানো উচিৎ৷’

‘ আবেশ,তোমাকে আমি শেষবার বলছি তোমার আব্বু না আসা পর্যন্ত কোনো স্টেপ নিবে না,তুমি৷’

মাহফুজার কথায় জুস রেখেই উঠে দাঁড়ালো আবেশ৷ রাগে কটমট করে বলল,

‘ আমি দেখে নিবো তাদের ৷’

‘ আবেশ মাথা ঠান্ডা কর৷’

‘ আমার মাথা ঠান্ডা হবার নয় আম্মা,তুমি চুপ থাকতে বলেছো বলেই চুপ আছি৷ কিন্তু আর না।’

বলেই আবেশ গটাগট পা ফেলে চলে গেলো রুমে৷ মাহফুজা পেছন থেকে অনেক বার ডাকলো। শুনলো না আবেশ। তার ছেলের রাগ বাধঁন ছাড়া এইটা জানেন মাহফুজা।এখন রেগে কিছু করলে কেলেংকারি হয়ে যাবে।অনিশ্চিত আশংকায় বুক কেঁপে উঠলো মাহফুজার।

আবেশ রুমে ঢুকে দেখলো মাধুর্য ফ্রেশ হয়ে বেরিয়েছে ৷ চোখে-মুখে পানির পরশ।চুল বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে পানি ।হাতের মাঝে তোয়ালে।মাধুর্যের হাত থেকে তোয়ালে নিয়ে ছুড়ে ফেললো আবেশ।তারপর কড়া কন্ঠে বলল,

‘ আজকে বা একটু পর মুহূর্তে ঘটা সব ঘটনার জন্য নিজেকে প্রস্তুত রাখো,মাধুর্য।’

চলবে,,,