ভোরের_কুয়াশা
#পর্বঃ১২
#Misty Meye(মরিয়ম)
তারপর আমি উঠতে গেলে আর উঠতে পারছি না।কি ব্যাপার আমি উঠতে পারছি না কেনো?ভোরের সাথে সাথে আঠা আমাকেও ধরে রাখলো নাকি,,,,
আমি উঠতে পারছিনা আর ভোর তা দেখে হাসছে।কতো বড় বজ্জাত। নিজেও তো উঠতে পারছে না।কই সেটা ভেবে কান্না করবে আর আমি দেখবো তা না হাসছে।(মুখ বাকিয়ে)
আমি উঠার চেষ্টা করছি আর ভোর গালে হাত দিয়ে হাসছে।
___কি হলো,,,,,এতো হাসার কি আছে,,,,আমি এখনি উঠছি।বলে উঠতে যাচ্ছি।কিন্তু উঠতে আর পারছিই না।
এভাব ভোর জোড়ে জোড়ে হাসতে লাগলো।তারপর ভোর চেয়ার থেকে উঠে বলে,,,,
আর আমি অবাক আর হা করে তাকিয়ে আছি।ভোর উঠে গেলো কিভাবে,,,,,
___তুমি সত্যিই বোকা কুয়াশা।তুমি এতো কিছু আমার জন্য করছো।সবইতো তোমার উপরই পরছে তারপর ও তুমি আমার পিছেই পড়ে আছো।কেনো?বারবার তুমিই তো তোমার ফাদে পড়ছো।তবুও সেই একই ভুল কেনো বারবার করো বলতো।
___আপনি উঠলেন কিভাবে,,,,,
___কেনো?আমার কি উঠার কথা ছিলো না?
___নাতো।,,,,আমি তো আপনার চেয়ারে আঠা (অর্ধেক কথা বলে জিহ্বায় কামর দিই)
___কিহলো বাকিটা বলো।যে,,,,তুমি আমার চেয়ারে আঠা ঢেলে দিয়েছো।আর সেই চেয়ারটায় তুমি আমাকে সুন্দর করে বসিয়ে পালিয়ে যেতে চেয়েছিলে,,,,
___আঠা,,,,আপনি কি করে এতো কিছু জানলেন।
___মিসেস কুয়াশা আহমেদ,,,,,এই বাড়িটা আমার।এই বাড়ির কোথায় কি হচ্ছে না হচ্ছে তার সবটা আমার নজরে আছে।আমি জানতাম তুমি কিছু একটা করবা।তা না হলে আমাকে এতো আদর যত্ন করে অফিসে পাঠাতে চাইতে না।তবে কি জানো?আমি ও তোমাকে আটকাতে চেয়েছিলাম।কিন্তু কিভাবে বুঝতে পারছিলামনা।কিন্তু তুমি আমাকে আটকানোর যে ব্যবস্থা করেছো।আমি তা দেখে সত্যি অবাক।আর তোমার প্লেন দিয়েই আমি তোমাকে আটকালাম।তোমার বিছানো জালেই আমি তোমাকে মাত দিলাম।তুমি কেনো এখনো বুঝতে পারছো না কুয়াশা।আমার জন্য তুমি যেই ফাদ পাতবে তুমি নিজেই সেই ফাদে পড়ে যাবে।কি,,,,,কেমন আইডিয়া,,,,,,(মুচকি হেসে)
___কিইইইইইই,,,,,আপনি আমাকে আঠায় বসিয়ে দিলেন।এখন আমি উঠবো কি করে।আমাকে এই আঠা মুক্ত করুন। প্লিজ।(করুন দৃষ্টিতে)
___হুম,,,, করবোতো অবশ্যই।তবে,,,,,
___তবে আবার কিইইই,,,,
___তবে সেটা আমি অফিস থেকে আসার পর,,,,,
___এহহহহ,,,,তাহলে কি এতোক্ষন আমি এখানেই বসে থাকবো।
___হুম থাকবা।আর এটা তোমার শাস্তি।
___নাআয়ায়ায়ায়ায়া,,,,,,না। আমি এতোক্ষন এখানে বসে থাকতে পারবো না।আমি কি খাবো,,,, আমার ক্ষুধা লাগবেতো।
___সেই ব্যবস্থা আমি করে যাচ্ছি।তুমি চিন্তা করো না।নাও এগুলা(কলা,পাউরুটি, পানি সামনে এগিয়ে দিয়ে)
___কি এগুলা,,,,
___কেনো দেখতে পারছো না।নাকি চিনতে পারছো না।
___দেখতে ও পাচ্ছি আর চিনতেও পারছি।কিন্তু এগুলা আমি খাই না।এটা কি কলা,,,,ওয়াক থু,,,,কলা পাউরুটি এগুলা কিভাবে খাবো।আমি এগুলা খাই না।আর আমিতো অসুস্থ না।যে এগুলা আমাকে খেতে হবে।
___তুমি না খেলে আর কি করার।আমি সামনে রেখে গেলাম। খেলে খাবে,,,,না খেলে নেই।আর শোন আমি তোমার উপর সবসময় নজর রাখবো।তাই সাবধান।আর আমি এসে তোমাকে নিয়ে রাতের রান্না করবো।
___আপনি চলে গেলে নজর থাকবো কেমনে।
___সেটা তুমি না জানলেও চলবে,,,,,
___বললে কি হয়,,,,,
___না শুনলেও তেমন কোন ক্ষতি হবে না।আর আমি আসলে তোমার একটা ব্যবস্থা করবো।ততক্ষণএ আমি নিশ্চিন্তে অফিস করে আসি কি বলো,,,,
___আমি আপনাকে ছাড়বো না।(রেগে)
___আবার কিছু করবা আর আবার তুমিই ফাসবা।
___হু,,,,,,
এরপর ভোর বের হয়ে অফিস চলে যায়।আর আমি ভাবতে থাকি আমি এখান থেকে ছুটবো কিভাবে।
___দূর,,,, কে বলছিলো কুয়াশা তোকে যে চেয়ারে আঠা দে।(আমি)এখন তো নিজেই ফেসে গেলি।সত্যি আমি ভোরের জন্য যা করি সবই আমার উপরই পড়ে।কেমনে যে পড়ে আল্লাহই জানে।এখন সাড়াদিন বসে থাক আর কলা রুটি খা,,,,,
ভোর এদিকে নিশ্চিন্ত হয়ে অফিস করছে।
আমি কিছু খাবো না বলে বসেই আছি।বসে থাকতে থাকতে আমার কোমর ব্যথা হয়ে গেছে।আমি আর পারছিনা।এদিকে বিকাল হয়ে আসছে আমার ভিষন ক্ষুধা লাগছে।আর থাকতে পারছি না।ক্ষুধার জন্য আমি ওই রুটি কলাই পেট ভরে খাই।আমার একটু ও খারাপ লাগেনি খেতে।এই জন্যই মানুষ বলে ক্ষুধা থাকলে পান্তাও পোলাওর মতো খাওয়া যায়।
খাওয়া শেষ করে বসে আছি কখন ভোর আসবে।আর কখন আমি মুক্ত হবো।সময় যেন আজকে কাটতেই চাইছে না।আমি মনে হয় এবার ব্যাকা হয়ে যাবো বসে থাকতে থাকতে।
রাত আটটায় ভোর আসে।এসে দেখে আমি ঘুমিয়েই গেছি।তারপর ভোর এসে ফ্রেশ হয়ে আমাকে ডেকে তুলে।আর তারপর আঠা তুলে আমাকে চেয়ার থেকে ছুটিয়ে বলে,,,,
___কেমন লাগলো আজকে,,,,,,সারাদিন বসে থেকে,,,,,
___আপনার জন্যই সব হলো।
___নাহ,,,,আমার জন্য না।এটা তোমার নিজের জন্যই হয়েছে।
___হ,,,,আপনার জন্যই হয়েছে।আপনাকেইতো আমি,,,,,
___থাক আর বলতে হবে না।যাও এখন,,,,,,
___কই যাবো,,,,,বাইরে,,,,,,ওকে,,,,আমি এক্ষুনি যাচ্ছি বলে যেই দরজার দিকে যাবো তখনই ভোর আমার হাত টেনে বলে নিজের সাথে মিশিয়ে বলে,,,,,
___এতো পালাতে চাও কেনো তুমি,,,,,আমাকে কি তোমার ভালো লাগে না।আমার কি খারাপ বলোতো।কুয়াশা আমি তোমার হ্যাজবেন্ড।তাহলে আমার কাছ থেকে কেনো পালাতে চাইছো তুমি,,,,,
___…………….
___কি হলো চুপ করে আছো কেনো?বলো,,,,
___…………….
___ওকে যাও।এখন গোসল করে এসো।
___এতো রাতে গোসল করবো।
___হুম,,,, করবে,,,,,যাও।গায়ে আঠা লেগে আছে যাও।আর তারপর রান্না করবো।
___আজকেও আমাকে রান্না করতে হবে,,,,,
___হবে,,,,,তবে কালকের থেকে সত্যি সত্যি তোমাকেই রান্না করতে হবে।
___???
___কি হলো,,,,,এভাবে মুখ করে আছো……………..
চলবে…………………