মন পিঞ্জর পর্ব-২১

0
823

#মন_পিঞ্জর
#লেখিকা_আরোহী_নুর
#পর্ব_২১

কিছুটা জ্বর এখন কম আয়ানের তবে পুরো সাড়ে নি,আজকে হাসপাতাল যেতে হবে মন চাইছে না তারপরও নিজেকে প্রস্তুত করে নিলো কোনো মতে যাবার জন্য,তখনি মাহি রুমে প্রবেশ করলো।

বেবি তুমি হাসপাতালে চলে যাচ্ছো ভালোই করছো শুধু শুধু বাড়িতে পড়ে থেকে কি লাভ বলো?তা তুমি কাজের লোকদের সন্ধান লাগিয়ে দিয়েছো তো?কাল রাতে হুট করে এসে মম ডেড স্যারপ্রাইজ দিলেন কি যে ভালো লেগেছে তখন আমার,কিন্তু রাতে তো ওই শায়লাকে দিয়ে একা যতটুকু পেরেছি ততটুকু আপ্যায়নই করিয়েছি উনাদের কিন্তু এভাবে তো হবে না বেবি,উনারা আমাদের বাড়িতে বেড়াতে আসলেন আর উনাদের যথেষ্ট খাতিরদারি না করলে কেমনে হবে বলো,তুমি বরং জলদি করে আরও কয়েকটা কাজের লোক আনিয়ে দাও কেমন।আমি বর্তমানে উনাদের নিয়ে বাইরে যাচ্ছি কিছু সপিং করবো তারপর উনাদের নিয়ে রেস্টুরেন্টে খেয়ে আসবো।

আঁখি আমি কোনো টাকার মেশিন না,যে হাত বাড়ালেই টাকার বদলে যা চাইবো তাই পাবো,এখানে উনারা লোক তো আর ১০ জন না তিনজন লোকের খাতিরাদারি কি এক চাকরে হয় না,তাছাড়া কালই তো তুমি সপিং করলে এখন আবার কিসের সপিং,দিন দিন এভাবে টাকা উড়ালে আমাদের ফিউচারের কি হবে মাহি।

আবার তুমি ফিউচার নিয়ে পড়ে গেলে আয়ান,হ্যাঁ আমি আজও সপিং এ যাবো কালকে আমার জন্য সপিং করেছি তো কি হয়েছে আজকে আমার পরিবারের জন্য করবো, উনারা কি বলবেন উনারা বেড়াতে এলেন আর আমরা উনাদের কিছুই দিলাম না,দেখো তুমি শুধু এটা ওটা বলে আমার মাথা খেয়ো না তো,আমার পরিবারের কারো কানে এসব কথা গেলে উনারা কতো কষ্ট পাবে আন্দাজ করতে পারছো তুমি,আমার ফ্যামিলি আবার যথেষ্ট আত্মসম্মানি এমন কথা শুনলে উনারা এখানে থাকার কথা আর দুবার ভাববেন না আর আশা করি তুমি আমার ফ্যামিলিকে নিয়ে কোনো বাজে কথা আর বলবেও না।

এক্সকিউজ মি,আমি তোমার ফ্যামিলিকে নিয়ে বাজে কথা কখন বললাম?

হয়েছে আমি আর তোমার সাথে কোনো আরগিউ করতে চাই না আয়ান,তুমি যটফট কিছু কাজের লোকের ব্যবস্থা করো।আমি আর কিছু শুনতে চাই না।

মাহি চলে গেলো রুমের বাইরে হনহনিয়ে আয়ানকে কথাগুলো শুনিয়ে।
________________

আজ ভার্সিটি টাইমের আগেই আঁখি বেড়িয়ে গেলো নিজের চেক আপ করাতে।ডাক্তার বললেন ওকে দুঃশ্চিন্তার পরিমাণ কমাতে হবে,অতিরিক্ত চিন্তার ফলে ওর মাথা বেশি ঘুরে তাছাড়া ব্যাথার পরিমানও বেশি,ও মানসিকভাবে শক্ত হওয়ায় এতো দুঃশ্চিন্তা করার পরও ও এখনও অনেক ভালো আছে,ওর জায়গায় অন্য কেউ হলে হয়তো অনেক বড় কিছুই হয়ে যেতো এতোদিনে, তবে এভাবে দুঃশ্চিন্তা করতে থাকলে আঁখির প্রাণে অনেক বড় সংকট হতে পারে খুব শিগ্রই,তাই ওকে চিন্তামুক্ত থাকার জন্য বার বার সচেতন করলেন ডাক্তার, যা উনি প্রায় বলেন কিন্তু উনার তো জানা নেই যে দুঃশ্চিন্তাই তো আঁখির নিত্ন সঙ্গী, তবে আঁখি এবার ভেবে নিয়েছে আর কোনো দুঃশ্চিন্তা করবে না ও,হয়তো ওর কাছে জীবনে খুব বেশি দিন নেই তবে যে কটা দিন আছে সে দিনগুলো সে হাসিমুখে সত্য খুশির সন্ধানে কাটাবে, ডাক্তারের চেম্বার থেকে বেড়িয়ে আনমনে এসব কথা ভাবতে গিয়ে হঠাৎ আঁখির চোখ গেলো একটা কেবিনের দিকে, কেবিনের ভিতর দুজন লোক একজন আদৃত আর ওপরজনকে আঁখি এই প্রথম দেখছে,আদৃতকে হঠাৎ এখানে দেখে আঁখির মনে সন্দেহ খেলা করতে শুরু করলো,কারন আদৃত আজকে অনেক সকালে বেড়িয়ে আসছিলো আঁখি জিজ্ঞেস করলে ওকে বললো যে হাসপাতালে আজকে এক্সট্রা কাজ আছে তাই সকাল বেরুচ্ছে, তবে আদৃত নিজের হাসপাতাল ছেড়ে এখানে কি করছে,আঁখির হঠাৎ খেয়ালে গেলো সেদিন রিপোর্টে যে হাসপাতালের নাম ও দেখেছিলো এটা সেই হাসপাতাল, তারপর আঁখি আর দুদিক ভাবলো না বরং কেবিনটার পাশে গিয়ে জানালার সাইডে কান পাতলো।

তুমি সিওর তো আর কোনো কপি রয়ে যায় নি?

স্যার এই দেখেন উনার সব রিপোর্ট এই ফাইলেই আছে এগুলার কপি করে পুলিশকে দেওয়া হয়েছিলো, আপনি এগুলা যাচাই করে দেখে নিতে পারেন। এখানে অন্য কোনো অরিজিনাল বা কপি রিপোর্ট নেই,যা আছে সব আপনার সামনে,এ ছাড়া উনার আর কোনো রিপোর্ট এই হাসপাতালেও নেই।

আঁখি স্পষ্ট দেখতে পেলো আদৃতের হাতে একটা ফাইল,যেটার ভিতর বেশ কটা রিপোর্ট,যেগুলা আদৃত খুব মনোযোগ সহকারে দেখছে।রিপোর্টগুলো দেখে আদৃত ওই লোকটাকে উদ্দেশ্য করে বললো।

গুড জব,কথাটা যেনো বাইরে না যায়।

ওকে স্যার।

অতপর আদৃত চলে যায় আর লোকটা ফাইল নিয়ে হাটা শুরু করে,আঁখিও লোকটার পিছু নেয়,লোকটা একটা রুমে ঢুকে ফাইলটা নিয়ে, ওখানে শুধুই বিভিন্ন প্রকারের ফাইল্সই রাখা,ওই ব্যক্তি ফাইলটা একটা ফাইলের রেকে রেখে বেড়িয়ে গেলো, এবার আঁখি চারিদিকে তাকিয়ে সুযোগ বুঝে ওই কক্ষে ঢুকে গেলো,তারপর ঝটফট ফাইলটা হাতে নিয়ে ভিতরে থাকা রিপোর্টগুলার কয়েকটা ছবি নিয়ে নিলো ওগুলা না পড়েই কারন এখন তা পড়তে নিলে ধরা পড়ার সম্ভাবনাও বেশি হবে তাই।ছবি তোলা হয়ে গেলে ফাইলটা নিজের জায়গায় রেখে আঁখি চুপিচুপি বেড়িয়ে যায়।
____

আঁখি আজকে ক্লাসচলারত অবস্থায় অনেকবার লক্ষ্য করলো আয়ানকে, আজকে ঠিক স্বাভাবিক দেখাচ্ছে না ওকে,বার বার ললাটে হাত ছোঁয়াচ্ছে যেনো ওর মাথা অনেক ধরেছে,এছাড়া কয়েকবার কাশতেও লক্ষ্য করলো,এতে আঁখি বুঝতে সক্ষম হলো আয়ান অসুস্থ।
আঁখি আয়ানের কেবিনের সামন দিয়ে যাচ্ছিলো তখনও লক্ষ্য করলো আয়ান মাথায় হাত দিয়ে চোখ বুজে বসে আছে,আঁখি এবার এগিয়ে গিয়ে দরজা নক করলো।

মে আই কাম ইন আয়ান স্যার।

আয়ান আঁখিকে দেখে খনিক আশ্চর্য হলেও স্বাভাবিক ভাবে বললো।

আসো আঁখি।

আঁখি এবার সোজা গিয়েই আয়ানের ললাটে নিজের হাতের উল্টো দিক ছোঁয়ালো,তাতেই বুঝতে পারলো জ্বরে আয়ানের গা পুড়ে যাচ্ছে।আয়ান তো আরেক দফা আশ্চর্যের ছোঁয়ায় চলে গেলো আঁখির এমন কাজে।

এতো জ্বর নিয়ে কাজে আসার কি দরকার ছিলো আপনার?ওষুধ খেয়েছিলেন।

হুম।

শুধু ওষুধ খেলে হবে না নিজের খেয়ালও রাখতে হবে, আপনার এই মুহুর্তে প্রোপার রেস্ট প্রয়োজন,ঠান্ডা লাগাবেন না,বাড়ি যান আপনি আর হ্যাঁ আমি কাউকে দিয়ে আঁদা দিয়ে চা করে পাঠাচ্ছি খেয়ে বাড়ি যাবেন আর বাড়ি গিয়েও দু-তিনবার আঁদার চা করে খেয়ে নিবেন কাশি গলাব্যাথা এমনকি জ্বরও চলে যাবে।

স্বাভাবিকভাবে আঁখি কথাগুলো বলে চলে যেতে নিলে আয়ান বসা থেকে উঠেই আঁখির হাত খপ করে ধরে নিজের দিকে টান দিলো এতে আঁখি একদম আয়ানের পাশে চলে আসলো,আয়ান এবার নরম স্বরেই আঁখিকে কিছু কথা বলতে নিলো।

আজও নিজের অবস্থা আমি তোমাকে আলাদা করে বলতে হয় নি,তুমি বুঝেই নিলো,কি করে পারো তা আঁখি?ভালোবাসায় কি সত্যিই এতো জোর হয়, এতো কিছু হয়ে যাওয়ার পরও কি তুমি আমায় ভালোবাসো?

আয়ানের শরীরের তীব্র উত্তাপ আঁখির শরীর যেনো জ্বালিয়ে তুলছে এদিকে আঁখির মনের জ্বালা বাড়িয়ে তুলছে আয়ানের নেশাক্ত চাহনি, প্রশ্নের জবাবের আশারত দুটি চোখে নেশাক্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আঁখির পানে,যা আঁখিকে ক্রমশ দূর্বল করে তুলছে,তীক্ত হলেও এটাই সত্য যে এই লোকটার সাথে আঁখির সম্পর্কটা অনেক পুরোনো,যে সম্পর্কে একসময় আঁখির প্রাণ আটকে ছিলো, মনের পুরোনো এই টানটা আজকে যে আঁখির মনকে অনেক বেহায়া করে ফেলছে,আয়ানের এমন পাশে আসা যে আঁখির জন্য নতুন কিছু না আর প্রতিবারের মতো যে এবারও আঁখি আয়ানকে ফিরিয়ে দিতে সক্ষম হতে পারছে না,আয়ানও আঁখির অবস্থা যেনো অনুমানে নিয়ে নিতে সক্ষম হলো অল্পতেই,আঁখির চোখের দিকে অপলকে তাকিয়ে নিজেও যেনো একটা ঘোরে চলে গেছে তাই আর এদিক ওদিক বিবেচনা না করে আয়ান আঁখির অধরের দিকে এগুতে শুরু করলো এবার।

আঁখিকে আয়ানের কেবিনে ঢুকতে দেখেছিলো আদৃত,তখন আঁখির জন্য চিন্তা আর মনের কৌতুহলের বশে সেদিকে এগিয়ে আসলো আদৃত তাই কেবিনের জানালা দিকে উক্ত মুহুর্ত টা চোখের অগোচরে গেলো না ওর,সাথে সাথেই আদৃতের মাথায় যেনো রক্ত চড়ে গেলো, চোখে যেনো ওর আগুন ধরলো মুহুর্তেই, বুকের ভিতর ঝড় বইতে শুরু হলো অল্প ক্ষনেই, আর সেখানে খাঁড়া থাকতে পারলো না,আয়ান আঁখির অধরের একদম পাশাপাশি অল্পতে ছুঁইছুঁই, আদৃতের তখন ইচ্ছে করছিলো ছুটে গিয়ে আয়ানকে শেষ করে দিতে কিন্তু অনেক করে আদৃত নিজেকে দমন করলো,সাথে সাথে ঘুরে গিয়ে হাত মুষ্টিবদ্ধ করলো তারপর নিজেকে সামলানোর ব্যার্থ চেষ্টায় নিজের কেবিনের দিকে এগিয়ে গেলো।

আয়ান আঁখির একদম পাশে,ওর উষ্ণ নিশ্বাস উপছে পড়ছে আঁখির চেহারাতে,যা আঁখির শরীরে আলাদা এক শীহরন সৃষ্টি করছে, উক্ত অনুভুতিতে সারা দিয়ে সেই কভেই আঁখি চোখ বন্ধ করে নিয়েছিলো, কিন্তু হঠাৎই আঁখির চোখের সামনে ধরা দিতে লাগলো জীবনের সব তিক্ত স্মৃতি, মনের কোনে সত্যতা কড়া নেড়ে উঠলো, একদিন যে ঠিক একই অবস্থায় আয়ানকে আঁখি অন্য মেয়ের সাথে দেখেছিলো আর আজও আয়ান সেই একই জিনিস ওই মেয়েকেও পবিত্র সম্পর্কের তিক্ত প্রতিদান হিসেবে দিতে যাচ্ছে যা একসময় আঁখিকে দিয়েছিলো,উক্ত এই অনুভুতি এবার আঁখিকে আয়ানের সাথে তিক্ত ব্যবহার করতে বাধ্য করলো,কোনো অঘটন ঘটে যাওয়ার আগেই আঁখি ঝটফট আয়ানকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলো নিজের থেকে,আয়ান হতভম্ব দৃষ্টি স্থির করলো আঁখির দিকে এবার।আঁখি ঝাঁঝালো কন্ঠে বলতে লাগলো।

খুব সহজ না আপনার জন্য এসব?মেয়েদের মন নিয়ে খেলা করতে ভালো লাগে তাই না?এসব ভালোবাসা,সম্পর্ক সব কিছুই আপনার জন্য শুধু খেলা?ভালো লাগে না এমন খেলা করতে আপনার?তবে শুনে রাখেন আয়ান রাহমান এসব ভালোবাসা, সম্পর্ক কোনো কিছুই আমার কাছে কখনো খেলা ছিলো না আর হবেও না,নিজের মন আর শরীরকে নিজের আয়ত্তে আনতে শিখুন নয়তো অনেক পস্তাতেও হতে পারে আপনাকে,আর যতোটুকু কথা আমি এখন আর আপনাকে ভালোবাসি কি না,তার একটাই জবাব আছে আছে আমার কাছে, আমি আপনাকে ভালোবাসি না,আট বছর থেকে আপনাকে জানি তাই আপনার ভালো খারাপ অনুভুতির অনুমান করতে পারি,আজকেও অনুমান করতে পেরেছিলাম আর আমার মাহির ব্যক্তিত্ব সম্পর্কেও ভালো জানা আছে,ঘরে মা আর আয়েশাও নেই তাই মনুষ্যত্বের খাতিরেই আপনাকে দেখতে এসেছিলাম এটাকে বেশি কিছু ভাবা আপনার ভুল ছাড়া আর বড় কিছু ছিলো না,আশা করি সামনে থেকে এমন ভুল আর করবেন না।

আঁখি ছুটে চলে গেলো সেখান থেকে,আয়ান হাতবাক হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো,চোখগুলো ছলছল করতে শুরু হলো ওর,আঁখি কি বলে গেলো এসব, ও ওকে আর ভালোবাসে না, শুধু মনুষ্যত্বের খাতিরে ওর খোঁজ নিচ্ছিলো কথাটা পোড়াচ্ছে আয়ানের মন পিঞ্জর আজ বড্ড,আঁখিকে আজ কিস করতে নিয়েছিলো আয়ান,কিন্তু কেনো? ওই আঁখিতে তো মন ভরে উঠেছিলো ওর, তবে আজ কেনো এমনটা করতে চাইলো,নিজের মনের কাছ থেকে জবাব পেতে ব্যার্থ হচ্ছে আয়ান বার বার,মস্তিষ্কও যেনো আয়ানের সাহায্য করতে চাইছে না,তবে কি আয়ান অনেক বড় ভুল করে বসলো,মোহ আর ভালোবাসার মধ্যে পার্থক্য বুঝে উঠতে সক্ষম হলো না।
_____

তাজবীর অফিস থেকে এসেছে মাত্র,রুমের দিকে অগ্রসর হচ্ছিলো তখনি ফায়সাল খান পিছন থেকে গম্ভীর কন্ঠে ওকে আওয়াজ দিলেন।

দাঁড়াও তাজবীর।

জি বাবা বলো?

বোনের সাথে লুকিয়ে লুকিয়ে আজকাল তো ভালোই দেখাসাক্ষাৎ হচ্ছে শুনলাম।

তাজবীর এবার একটু সময় নীরবতা পালন করলো তারপর নিজেও নিজের কন্ঠে গাম্ভীর্য ভাব ফুঁটিয়ে বললো।

কেনো বাবা দোষ কি তাতে?তুমিও তো ওর ছবি নিয়ে কতোদিন লুকিয়ে কেঁদেছো,হয়তো প্রায় কাঁদো তা আমার চোখেই কয়েকদিন পড়েছে মাত্র।

ছেলের কথায় কিছুটা দমলেন ফায়সাল খান,নিজের চুরি যে ধরা পড়েছে অনেক আগে সেটা হঠাৎ জেনে কি প্রতিক্রিয়া করবেন তা ভেবে বের করতে ব্যার্থ উনি,এবার তাজবীর আবারও বললো।

বাবা আমরা সবাই জানি আঁখি আমাদের কাছে কতোটা ইমপোর্টেন্ট,ও যাই করুক আমরা কখনো ওকে ঘৃণা অন্ততো করতে পারবো না,তাই তার অভিনয়টাও আমাদের সাজায় না বাবা।

তারপর আর কিছু না বলে তাজবীর নিজের কক্ষের দিকে অগ্রসর হলো,আর ফায়সাল খানের চোখ বেয়ে পড়লো দুঁফোটা জল,যা ঝটফট মুছে নিলেন উনি হয়তো কেউ দেখে নেওয়ার ভয়ে।
_____________________

নোমান বাগানের দোলনাতে বসে কারো সাথে ফোনে কথা বলছে, অনেকটা হেসে এদিকে আয়েশা উপর থেকে অপলকে ওতে দৃষ্টি বোলাচ্ছে ,আয়েশা ছাঁদে গেছিলো কিছু শীতল বাতাস নিজের গায়ে মাখানোর সুবিধার্থে তখনি চোখ গেলো দোলনাতে দোলরত অবস্থায় নোমানের উপর,দোলে দোলে কারও সাথে কথা বলছে নোমান,কথা বলার অঙ্গভঙ্গিতে আয়েশার মন টা বড় খচখচ করতে শুরু করেছে, আয়েশার কেনো যেনো মনে হচ্ছে নোমান কোনো মেয়ের সাথে কথা বলছে,যা ওর মনে জ্বালাতন সৃষ্টি করছে প্রতিনিয়ত,আয়েশা নোমানকে নিয়ে নিজের মনে জন্মানো মধুর অনুভুতির নাম জানতে পেরেছে অনেক আগে,সেই অনুভুতি যতোটা তৃপ্তি আয়েশার মনে দান করছে ততোটা ভয়ও জাগিয়ে তুলছে বার বার,কারন হলো আয়েশার মনে যে অনুভুতি নোমানকে নিয়ে ধরা দিয়েছে সেটা নোমানের মনেও আছে তার তো কোনো নিশ্চয়তা নেই তাছাড়া নোমানের জীবনে যদি প্রথম থেকে অন্য কেউ থেকে থাকে তবে কি হবে আয়েশার।
কথাগুলো অনেক জ্বালাতন করছে আয়েশাকে।মনের ভয় যে সময়ের সাথে বেড়েই চলেছে ওর।

চলবে………….