#মন_পিঞ্জর
#লেখিকা_আরোহী_নুর
#পর্ব_২৮
আয়ান মাহিকে বার বার ফোন করছে কিন্তু মাহি ফোন উঠাচ্ছে না,আয়ানের ভিতরে ভয় কাজ করতে শুরু হয়েছে এবার,মাহি অনেক আগে বেড়িয়ে গেছে এখনও খোঁজ নেই,মনের ভিতর একটাই দুঃশ্চিন্তা শুরু হয়েছে ওর মাহি যদি ওর বাচ্চাটা নষ্ট করে দেয়,বাবা হবার একটা সুন্দর অনুভুতিময় আশা মনের কোনে উঁকি দিয়েছিলো আয়ানের,কিন্তু মাহি বাচ্চা নিতে নারাজ হবে তা কখনো কল্পনায়ও ভাবে নি আয়ান।মাহি কোথায় গেছে তাও জানে না তাই ঘরে হাত পা গুটিয়ে বসে থাকা ছাড়া কোনো উপায় খুঁজে পাচ্ছে না,বার বার দরজার পানে তাকাচ্ছে, এদিকে এই টেনশনে হাসপাতালে যাবার কথা মাথায়ই নেই,মাহিকে কলের উপর কল করছে কিন্তু ও কল ধরছে না, মেসেজ করলেও রিপ্লাই করছে না।
তাজবীর নড়ছে না,এতে ভয় পেয়ে সায়েদা ওর পানে এগিয়ে গেলো,অতপর ওর নিশ্বাস চেক করে দেখলো নিশ্বাসও চলছে না ,সায়েদা এবার অতিরিক্ত ভয় পেয়ে গেলো জোরে জোরে ডাকতে শুরু করলো তাজবীরকে কিন্তু তাজবীরের কোনো সাড়াশব্দ নেই, সায়েদার ভয়ের পরিমাণটা মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে গেলে সজোরে কান্না করতে শুরু করলো।কান্না করছে আর তাজবীরকে ডাকছে।
এই যে তাজবীর সাহেব প্লিজ উঠেন, আমি আপনাকে মারতে চাই নি প্লিজ আপনি উঠেন,আপনি না উঠলে আমার জেল ফাঁসি হয়ে যাবে উঠেন না,তাজবীর সাহেব।
সায়েদা কাঁদতে কাঁদতে বেহাল দশা করে নিয়েছে নিজের,এদিকে তাজবীর নিজের হাসি আর দমিয়ে রাখতে না পেরে উঠে বসে অট্টহাসিতে ফেঁটে পড়লো।তাজবীরকে হঠাৎ এভাবে উঠে হাসতে দেখে ভ্যাবাচ্যাকা খেলো সায়েদা,অল্প ক্ষনে বুঝতে পারলো তাজবীর এসবও মজা করছিলো ওর সাথে,এদিকে তাজবীর হাসতে হাসতে বলছে।
এমনি কি আর টিউবলাইট বলি, হা হা হা হা,বোকা গাঁদা মেয়ে কোথাকার,মানুষ বেঁচে আছে কি না তা জানতে পালস চেক করে আর তুমি আমার নিশ্বাস চলছে না দেখে ভাবলে আমি মরে গেছি হা হা হা,আবার কি না হবে ডাক্তার,হা হা হা।
সায়েদার এবার প্রচুর রাগ হলো সাথে কান্নাও এলো অনেক,রাগে গজ গজ করতে করতে বললো।
দেখে নিবো তাজবীর খান আপনাকে,আমিও আফরিনা চৌধুরী সায়েদা, শোধ তো আমি তুলবোই।
সায়েদা চলে গেলো কান্না করতে করতে,এবার তাজবীর নিজের হাসি খনিক থামালো তারপর বিড়বিড় করে বলতে লাগলো।
আমি একটু বেশি করে ফেললাম না তো,মনে হয় কষ্ট পেয়েছে অনেক,না আর লাগবো না ওর সাথে।
____________________
মাহি আসছে না, হঠাৎ আয়ানকে কেউ একজন ফোন করে কিছু কথা জানায় যা শোনার পর মনের কোনে আবারও ব্যাথা মোচড় দিয়ে যায় ওর,লোকটা নিশ্চিত করে আঁখি আদৃত স্বামী স্ত্রী,যেহেতু দিদু জেনে যাবার ভয়ে প্রায় অনেক ক্ষেত্রেই স্বামী স্ত্রী পরিচয়ে আছে ওরা কিন্তু আসল সত্য লোকটা জানতে ব্যার্থ হলো,কথাটা শুনে আর মাথা ঠিক থাকলো না আয়ানের উঠে চলে গেলো কোথাও।
ভার্সিটি টাইম শেষ, আজকে সায়েদা কলেজ যায় নি,আদৃত আর আঁখি বাড়ি আসবে তখনি আদৃত দেখে ওর গাড়ির একটা টায়ারের হাওয়া বেড়িয়ে গেছে,এদিকে গাড়িতে অন্য টায়ার নেই এখন বাড়ি থেকে গাড়ি আনিয়ে যেতে হবে বলে বাড়িতে ফোন করলো ড্রাইবার গাড়ি নিয়ে আসছে নিশ্চিত করলো, আঁখি এমনটা করেছে ইচ্ছে করে কারন ও মনে ফন্দি করেছে রেখেছে অন্য কিছু,আদৃতকে বললো ওর ইমিডিয়েটলি বাড়ি যেতে হবে,বলে তাড়াহুড়ো শুরু করলো আদৃত গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে বললে বললো ও পারবে না ওর খুব দরকার ওকে এখনই যেতে হবে তাই ও লোকাল গাড়িতেই যেতে চায়।আর আদৃতকেও ওর সাথে যাওয়ার জেদ ধরলো।
দেখেন মিস আঁখি আমি কখনো লোকাল গাড়িতে যাই নি,তাই হঠাৎ যেতে কেমনটা লাগবে।
অনেক ভালো লাগবে চলেন।
কথাটা বলে আদৃতের হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে লাগলো।ওটোর বদলে বাসে উঠলো তাও খালি বাস দেখে উঠলো না ভরা বাসে উঠলো আদৃত কোনোমতেই বুঝে উঠতে পারছে না আঁখির মতলব,এদিকে আঁখি মুচকি মুচকি হাসছে, আদৃতের সন্দেহ হচ্ছে আঁখির উপর অনেক,কিন্তু ওর সাথে তো আর পেরে উঠে না বেচারা আদৃত যে পরিমাণে জেদি আঁখি,বাসের মধ্যে দাঁড় করিয়ে ধাক্কা মুক্কি খাইয়ে কোথাও নিয়ে এলো আদৃতকে,আদৃত কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না,এবার খিদে লেগেছে বলে নরমাল একটা হোটেলে নিয়ে এলো ওকে, আদৃত কোনো রেস্টুরেন্টে যেতে চাইলে যেতে দেয় নি তারপর আচ্ছা মতো নিজে খেয়ে আদৃতকেও খাওয়ালো সেখানের নরমাল খাবার অতপর আবারও কোথাও ছুটলো,একটা ছোট্ট মাঠে কিছু বাচ্চারা ফুটবল খেলছিলো তাদের সাথে গিয়ে যোগ দিলো আদৃত যেতে না চাইলেও ওকে টেনে টুনে নিয়ে গিয়ে যোগ দেওয়ালো,সারাদিন এখানে ওখানে ঘুড়ালো আদৃতকে নিয়ে, প্রথমে আদৃতের বিরক্তি লাগলেও আস্তে আস্তে সবকিছু আদৃতের ভালো লাগতে শুরু হলো,খনিকের জন্য ভুলে গেলো জীবনের সব তীক্ত স্মৃতি, আঁখির সাথে আজ আদৃতেও মন পিঞ্জরখানা উড়াল দিতে বড্ড ইচ্ছুক হলো,আঁখি আদৃতের হাত ধরে নিয়ে যাচ্ছে আবার কোনো ভালোলাগার সন্ধানে আদৃত ঠোঁটের কোনে আলতো হাসি টাঙিয়ে কোনো দিক বিবেচনা না করেই চলছে আঁখির সাথে,চোখ দুটি ওর আঁখিতেই সীমাবদ্ধ হয়ে আছে,মনে চলছে আচমকা এক অনুভুতি যার মানে আদৃতের না জানা থাকলেও বড্ড ভালো লাগছে ওর এই অনুভুতিটা,আঁখি আদৃতের হাত ধরে নিয়ে এলো নদীতীরবর্তী বিশাল একটা শিমুল গাছের নিচে, শান্ত শীতল সেখানকার পরিবেশ, বয়ে আসা বাতাস দুল খাইয়ে যাচ্ছে মনে, নিজের সাথে নিয়ে আসা ভালোলাগা সেই যুবক আর রমনীকে উপহারে দিয়ে সাথে করে নিয়ে যাচ্ছে যেনো ওদের বিষাক্ত অতীতের তিক্ত স্মৃতি ।আঁখি মুখে বিশ্ব জয় করা হাসি টাঙিয়ে নদীর পাড়ের মনমাতানো বাতাস উপভোগ করছে আর আদৃত অপলকে তাকিয়ে আছে আঁখির পানে আর আনমনে ভাবছে কিছু কথা।সত্যিই যে আঁখি ওর কল্পনার বাইরে,কি করে পারে এতো ভালো থাকতে আর অন্যকেও ভালো রাখতে,তবে কি আঁখির কথা অনুযায়ী আদৃতেরও জীবনে এগিয়ে যাওয়া দরকার?ভালো থাকাটা শিখে নেওয়া দরকার?তবে দোষ কি হবে তাতে?আরোহী যখন নিজের স্বার্থ বেঁছে নিয়ে ভালো আছে তবে আদৃত কেনো পিছুটানে পড়ে থাকবে,সত্যিই যে পৃথিবীটা অনেক সুন্দর, সারাদিন নিজের কাজ নিয়ে পড়ে থাকে আদৃত নিজেকে নিয়ে আলাদা করে ভাবার সমটুকুও নেই তবে আজকে আঁখির সাথে একটু বেড়িয়ে অনেক ভালো লাগলো ওর,আদৃত বুঝতে সক্ষম হলো যে জীবনে পিছুটান সবকিছু হয় না,পৃথিবীটা যে অনেক সুন্দর, জীবনের সব কষ্টের রেশ ভুলে গিয়ে প্রকৃতিতে মন ভুলালে তা জীবনে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা দেয়,ভাবনার ক্ষন কাটিয়ে এবার আদৃত আঁখিকে খনিক কৌতুহল নিয়ে জিজ্ঞেস করলো।
আপনি ইচ্ছে করেই এসব করেছেন না যাতে আমি কিছু সময়ের জন্য হলেও ভালো থাকি?
দেখেন ড.আদৃত, ভালো থাকা আর না থাকা সব কিছু নিজের হাতে থাকে,নিজে ভালো থাকতে চাইলে কেউ সে ভালোলাগা কেড়ে নিতে পারে না।আপনি এতোদিন এজন্য ভালো ছিলেন না কারন আপনি ভালো থাকতে চান নি, অতীত নিয়ে পড়ে ছিলেন আমিতো শুধুই নিজের হাতটা বাড়িয়ে আপনাকে সেই তিক্ত অতীত থেকে বাইরে আনার চেষ্টা করেছি মাত্র,জানিনা কতোটুকু পেরেছি আর কতটুকু পারবো কিন্তু হাল আমি ছাড়বো না।
আপনি নিজেকে ছাড়া সবাইকে নিয়ে ভাবেন তাইনা?
আঁখি এবার মৃদ্যু হেসে আকাশের দিকে তাকিয়ে আঙুল দিয়ে ইশারা করে বললো।
ওই যে উপরে যিনি বসে আছেন উনি আমাকে নিয়ে ভাবেন আর উনি থাকতে আমাকে নিয়ে আর অন্য কেউ ভাবতে হবে না,আমার জন্য উনিই যথেষ্ট।
অতপর দুজন মৃদ্যু হেসে একে অপরের সাথে কথা বলতে মগ্ন হয়ে পড়লো,দুইজনের মনে যেনো নদীতীরের সেই শীতল পরিবেশ অজানা এক অনুভুতির জাগরণ ঘটাচ্ছে যার মানে দুজনেরই অজানা এদিকে একজোড়া চোখ আড়াল থেকে দেখে যাচ্ছে দুজনকে,পারছে না সে চোখজোড়ার মালিক দৃশ্যটা মেনে নিতে,চোখ উপচে পড়ছে জল যা নিজের শারীর আঁচল দিয়ে বার বার মুছতে ব্যাস্ত রমনী,অল্প ক্ষনে মনে বাঁধিয়ে নিয়েছে অনেক ক্ষোভ।
না এ হতে পারে না,ও শুধুই আমার,আমি ছাড়া অন্য কেউ ওর জীবনে না ছিলো আর না আসবে,আমি তা হতে দিবো না।
মনে মনে কঠিন কোনে প্রতিঙ্গায় আবদ্ধ হয়ে চলে গেলো সে রমনী সেখান থেকে।
আয়ান তখন হাসপাতালে চলে এসেছিলো লোকটার কথা শুনে,মাথায় খনিকে যে রাগ চেপেছিলো হয়তো তা নামাতে,তখনি দেখলো আদৃত আঁখি বাসে চড়ছে আর তারপর ওদের পিছু নিতে লাগলো,ওরা যেখানে যেখানে ঘুরলো আয়ানও ওদের ফলো করলো সে জায়গাগুলোতে,তখন আদৃত আর আঁখির ওভাবে ঘুরে বেড়ানো বার বার আঘাত করেছে আয়ানের মনে,কখনো যে আদৃতের জায়গায় আয়ান থাকতো,যখনি আয়ানের মন খারাপ হতো আঁখি ওকে নিয়ে বেড়িয়ে পরতো তারপর এভাবেই গন্তব্যহীন হয়ে ঘুরে বেড়াতো ওকে নিয়ে যা নিমিষেই মন ভালো করে দিতো আয়ানের,তবে আজ নিজের জায়গায় আদৃতকে দেখে মোটেও মেনে নিতে সক্ষম হতে পারছে না আয়ানের হৃদয়, তবে কি আদৃত ওর জায়গা নিয়ে নিলো আঁখির জীবনে,আঁখিকে কি তবে হারিয়ে ফেললো আয়ান ভাবনাটা হৃদয় কাঁপালো ওর সেই ভাবনার পরিনামে আর দুদিক না ভেবেই আয়ান তেড়ে গিয়ে আদৃতের নাক বরাবর একটা ঘুষি মেরে বসলো,আদৃত আর আঁখি দুজনেই হতবাক হলো আয়ানের এমন কান্ডে, আয়ান আবারও আদৃতকে মারতে গেলে এবার আদৃত ওর হাত ধরে নিয়ে নিজে একটা বসিয়ে দিলো আয়ানের নাক বরাবর,তারপর দুজনের মধ্যেই লড়াই শুরু হলো, কেউ কারো থেকে কম যাচ্ছে না আঁখি অনেক করেও দুজনকে থামাতে পারছে না অবশেষে আঁখি আয়ানকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে ওর গাল বরাবর বসিয়ে দিলো কড়া একটা থাপ্পড়।নিবোর্ধের মতো প্রতিক্রিয়ায় এবার বললো আয়ান।
ওর জন্য তুমি আমার গায়ে হাত উঠালে আঁখি?
বেশ করেছি,জিনিসটা অনেক আগে করার দরকার ছিলো আমার।হাউ ডেয়ার ইউ?সাহস হয় কি করে আপনার উনার গায়ে হাত তোলার।
সেই থাপ্পড়ের থেকেও এই কথাটা আয়ানের মনে জোড়ালো প্রহার করলো,আঁখির পানে ছলছল চোখ স্থির রেখে মৃদু কন্ঠে বললো আয়ান।
আমি ওর গায়ে হাত তুলেছি দেখে এতো খারাপ লাগছে তোমার?এতো ভালোবেসে ফেলেছো ওকে?
হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ ভালোবেসে ফেলেছি, এতে আপনার কি? আপনি যাকে ইচ্ছে ভালোবাসবেন,বিয়ে করবেন আর আমি তা করলে দোষ।আমি যাকে ইচ্ছে বিয়ে করি ভালোবাসি এতে আপনার কি?কে হন আপনি আমার কে হন?আমি ভালোবাসি ড.আদৃতকে আপনার কি তাতে বলেন?বলেন না দাঁড়িয়ে কেনো আছেন বলেন?শান্তি হয় নি বিয়ে করে সংসার পেতে? কেনো পিছন পড়ে আছেন আমার?কেনো? কি চাই আমার কাছ থেকে আপনার বলেন?আনসার মি।
চিৎকার করে কথাগুলো বলে আঁখি আবারও এগিয়ে যাচ্ছে আয়ানের দিকে আদৃত আঁখির অবস্থা আন্দাজ করতে পেরে ওকে আটকে নেয় আঁখি যে নিজের আয়ত্ত্বে নেই সেটা বুঝতে সক্ষম হলো আদৃত।
মিস আঁখি কি করছেন আপনি এসব?শান্ত হন প্লিজ।
ছেঁড়ে দিন আমাকে ড.আদৃত,আজ আমি ওর কাছ থেকে জেনেই ছাড়বো কেনো আমার আগ পিছন ঘুরে ও, কি চাই ওর আমার কাছ থেকে আর?ছাড়েন আমায়। আমাকে ছাড়েন নইলে ওকে বলেন চলে যেতে, নয়তো আমি কি করবো তা আমি নিজেও জানি না।
আয়ান আর সেখানে দাঁড়াতে পারলো না,এখনও যে আঁখি আদৃতের বাহুডোরে আবদ্ধ পারলো না আর এসব মেনে নিতে উল্টো পায়ে স্থান ত্যাগ করলো তবে চোখের জল গড়িয়ে পড়া আটকাতে ব্যার্থ হলো।
_________________
আয়ান নিরাশ হয়ে চলে আসছে বাড়িতে, মাহি এখনও ফিরে নি,হঠাৎ ওর ফোনে মেসেজ আসলো মাহির,মেসেস টা অপেন করলো আয়ান।
আয়ান আমি বাচ্চা এবোর্ট করেছি,শরীর খারাপ আমার তাই মম ডেডের কাছে চলে এসেছি শরীর ভালো হলে বাড়ি চলে আসবো।
মেসেটা পড়ে মাথায় রক্ত চড়লো আয়ানের,আঁছড়ে মারলো ফোনটা দেয়ালে,যার ফলস্বরূপ খান খান হয়ে ফোনটা ভেঙে পড়লো ফ্লোরে।
চলবে………
#মন_পিঞ্জর
#আরোহী_নুর
#পর্ব_২৯(আঁখির রহস্য ফাঁস)
আয়ান পারছে না নিজের রাগ দমন করতে,বার বার কানে ভাসছে আঁখির বলা কথাগুলো,আঁখি আদৃতকে ভালোবাসে,এর একটা মানে আঁখি আর আয়ানকে ভালোবাসে না,আঁখি আদৃতের,যা মানতে নারায আয়ানের মন,যে আঁখি কখনো আয়ানের জন্য পাগল ছিলো সে নাকি আজ ওকে ভালোবাসে না, আজ অন্য কারো জন্য ওর উপর হাত উঠালো,কি করে মেনে নিবে এই তিক্ত সত্য,এদিকে নিজের বাচ্চাকেও হারাতে হলো,যাকে এক মুহুর্তের জন্য অনুভবেও নিতে পারলো না আয়ান,অনেক কষ্ট হচ্ছে আজ আয়ানের,পারছে না কোনো কিছু মেনে নিতে আর, তাই ঘরের জিনিস ভাঙচুর করতে শুরু করেছে, ইচ্ছেমতো তাই ভাঙচুর করেই নিলো অতপর আবার বেড়িয়ে গেলো কোথাও।
আঁখি চুপচাপ বসে আসে তখনি আদৃত ওর পাশে এসে বসলো,খানিক্ষন পিনপিন নিরবতা কাজ করলো ওদের মধ্যে তারপর নিরবতা কাটালো আঁখি।
আমি দুঃখীত ড.আদৃত,বার বার আমার কারনেই আয়ান আপনার সাথে খারাপ ব্যবহার করে।
আপনি কেনো দুঃখীত বলছেন মিস আঁখি,আয়ান লোকটাই এমন নিজের চাহিদা সম্পর্কে কোনো যথেষ্ট জ্ঞান নেই উনার,খাপছাড়া মানুষগুলো যে এমনই হয়,এতে আপনার কি দোষ,এবার চলেন খেয়ে নিন।
হুম চলেন।
আঁখি উঠে চলে যায়,আদৃত আসার পর ফ্রেস হলেও এখনও চেঞ্জ করে নি তাই ভাবলো চেঞ্জ করে আবার অল্প ফ্রেস হয়ে খেতে যাবে সেই ভাবনাতে কাবার্ড খোললো নিজের কাপড় বের করতে তখনি ভুলবশত আঁখির ব্যাগে হাত লাগলে তা নিচে পড়ে যায়, ব্যাগটার চেন খোলা ছিলো হয়তো আঁখি তা খেয়াল করে নি যার পরিনাম স্বরুপ ব্যাগের ভিতর থেকে বেড়িয়ে আসে সব জিনিসপত্র, আদৃত সেসব তুলতে নিলে ওর হাতে লাগে কিছু ওষুধ, যা দেখে আদৃত হতবাক হয়।
আরে এই ওষুধগুলো মিস আঁখির ব্যাগে কি করছে?এগুলোতো…….
আদৃতের মনে সন্দেহ জায়গা করে নেয় খনিকে,তবে কি আঁখি কিছু লুকিয়ে যাচ্ছে সবার থেকে,বার বার মাথা ঘুরা,মাথা ব্যাথা হওয়ার সিনড্রম আর এখন এই ওষুধগুলো তা তো একটা দিকেই ইঙ্গিত করছে,এছাড়া সেদিন আঁখির টেস্ট করাতেও না চাওয়া এবার সন্দেহটা আরও প্রখড় করলো আদৃতের, যা ভয়ের সৃষ্টি করছে ওর মন পিঞ্জরে।কিছু একটা ভেবে আদৃত ওষুধগুলো লুকিয়ে নিলো।
____________________
চার-পাঁচ ঘন্টা পর আয়ান বাড়ি ফিরেছে একদম মাতাল অবস্থায়, হাঁটতেও পারছে না ঠিকমতো,হেলেদুলে হেঁটে এসে কলিংবেল বাজালো,একজন কাজের লোক দরজা খুলে দিলে ঘরে ঢুকতে নিলে পড়তে নিলো আয়ান তখনি লোকটা ওকে ধরলে আয়ান ঝাটকা দিয়ে লোকটাকে ছাঁড়িয়ে নেয়।
ডন্ট টাচ মি,আমি ঠিক আছি আমার কারো সহানুভূতির দরকার নেই,আমি ঠিক আছি,একদম ঠিক।তারপর একা একা যেতে নিয়ে কয়েকবার পড়লো অতপর কোনোরকম রুমে চলে গেলো,ঘরে দুজন কাজের লোক মাত্র দুজন স্বামী স্ত্রী,ওরা দুজন গেলো ওর সাথে,আয়ান বিছানার উপর চিত হয়ে পড়ে রয়েছে,এক হাতে এখনও মদের বোতল,এদিকে পুরো জ্ঞানে নেই ও,বিড় বিড় করে বলছে।
আঁখি তুমি কেনো এমন করলে?আঁখি, আঁখি আসো না আমার কাছে,কথা বলো না আমার সাথে,পাশে থাকো আমার,আমার যে আজ বড্ড একা লাগছে,আঁখি। আঁখি।
এদিকে আয়ানের এমন হালে চিন্তিত স্বামী স্ত্রী দুজনই,লোকটা মদের বোতল নিয়ে নিলো,তারপর দুজন মিলে ওকে ভালো করে শুইয়ে দেয়।
ওগো ছারের তো দেহি অনেক জ্বর মেডামরে কল করমু।
হো তাই করি।
ওরা মাহিকে কল করে বললে মাহি বললো ডাক্তার ডেকে এনে ওকে দেখিয়ে দিতে, তারপর আর কিছু না বলে ফোন কেটে দিলো যেনো ওর কোনো যায় আসে না এতে।
এহন কি করুম?
ডাক্তাররে খবর দেই,তাছাড়া তো আমরা ছারের আর কোনো আত্নীয়রে ছিনি না,স্যার কোন আঁখির নাম নিতাছে উনারে ও তো ছিনি না,ডাক্তারেই কল করি।
তারপর ওরা ডাক্তার ডেকে আনে ডাক্তার আয়ানকে দেখে ওষুধ দিয়ে যান।আয়ানের নেশা এখনও নামে নি খনিক পর পর আঁখি বলে বলে ডেকে উঠছে।
আঁখি খেয়ে এসে নিজের ওষুধগুলো খুঁজে পাচ্ছে না তাই পাগলের মতো খুঁজতে লেগেছে,এদিকে আদৃত বিছানায় বসে ওর সমস্ত কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছে,ওর ছটফটের কারনও আন্দাজ করতে পারছে।
কোথায় রাখলাম ওষুধগুলো পাচ্ছি না কেনো?সময়মতো না খেলে যে মাথা ধরবে অনেক,এখন তো আশেপাশে কোনো ওষুধের দোকানও খোলা পাবো না,কি যে করি? কোথায় যে রেখেছি?
আঁখির ভাবনাতে ছেঁদ ঘটিয়ে ললাটে সন্দেহের ভাজ ফেলে গম্ভীর কন্ঠে আদৃত ওকে প্রশ্ন করলো।
কি খুঁজছেন মিস আঁখি?
আঁখি আমতা কন্ঠে বললো কিছুনা তারপর গিয়ে সোফায় শুয়ে পড়লো,কিছুসময়ের মধ্যেই আঁখির মাথাধরা শুরু হয়ে গেলো,আঁখি নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করেও পারছে না,আস্তে আস্তে ব্যাথা বাড়ছে,এবার অতিরিক্ত ব্যাথায় আঁখি ছটফট করতে শুরু করেছে,বার বার বালিশ চেপে ধরছে মাথায়,হাত দিয়ে কপাল ঘষছে পারছে না আর সহ্য করতে হঠাৎ আদৃত এসে প্রকট হলো ওর সামনে,এক হাতে পানি আর অন্য হাতে কয়েকটা ওষুধ, ওগুলো নিয়ে স্বাভাবিকভাবে বললো।
খেয়ে নিন।
আঁখি আর দুদিক ভাবলো না,পীড়া কমাতে ঝট করে ওষুধগুলো হাতে নিয়ে খেয়ে নিলো,ব্যাথা কমতে সময় লাগবে আঁখি জানে তাই কোনোরকম কষ্ট সহ্য করার চেষ্টায় আছে,বর্তমানে আর অন্য কিছু খেয়াল করার অবস্থায় ও নেই,আদৃত ওকে সোফাতে শুইয়ে দিলো পরম যত্নে, তারপর নরম কন্ঠে বললো।
শুয়ে থাকুন কিছু সময় নড়াচড়া করবেন না একটু সময়ে ব্যাথাটা নেমে যাবে,ব্যাথায় আঁখির হাত পা গুলো কাঁপতে শুরু হয়েছে,অধরগুলোরও কাঁপন থামছে না,আদৃতের হাত শক্ত করে ধরে রেখেছে আদৃতও ওকে যথেষ্ট সাহস জোটাচ্ছে,অনেকক্ষণ পর আঁখি স্বাভাবিক হয়,ব্যাথা কমে গেছে এখন,যার ফলস্বরূপ উপস্থিত মুহুর্তের অবস্থা বুঝতে সক্ষম হচ্ছে আঁখি,আদৃত ওষুধগুলো এনে দিয়েছে, কিন্তু আদৃত ওগুলো কোথায় পেলো? আর কি করে জানলো আঁখির এই ওষুধগুলো প্রয়োজন?প্রশ্নবোধক চাহনিতে আঁখি চেয়ে আছে আদৃতের পানে আদৃত এবার স্বাভাবিক স্বরে বললো।
আমি দুঃখীত,আমি চাই নি আমার জন্য আপনার কষ্ট হোক,কিন্তু সত্যটা জানতে গিয়ে এমনটা হয়ে যাবে কখনো ভাবি নি,আমি সত্যিই অনেক দুঃখীত,তবে সত্যটা তো আমি জানতে পেরে গেছি,এখন রোগটার নাম আমি আপনাকে বলবো না আপনি আমাকে বলবেন?
মা মা মানে,কোন রোগ? কিসের রোগ?আমার কোনো রোগ হয় নি?
আমতা আমতা করবেন না মিস আঁখি,আমি একজন ডাক্তার,আর ওষুধগুলো সম্পর্কে আমি ভালো করে জানি,এই ওষুধগুলো ব্রেন টিউমারের রোগিদের দেওয়া হয় মিস আঁখি যেগুলো আপনি এই মাত্র সেবন করলেন,আপনি কি এখনও চুপ থাকবেন।
আঁখি কিছু বলছে না,মাথা নিচু করে ঠায় বসে আছে।
চুপ করে বসে আছেন কেনো মিস আঁখি?বলেন কবে থেকে এই রোগটা ধরা পরেছে?আপনি সবার কাছ থেকে কেনো লুকিয়ে যাচ্ছেন এটা?বলেন মিস আঁখি চুপ করে আছেন কেনো বলেন?
হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ আমার ব্রেন টিউমার,৬ মাস ধরে আমি এটার সাথে লড়াই করছি,টিউমারটা অনেক আগ থেকেই আমার মাথায় প্রায় ১ বছর, সংসারের চাপ সামালতে গিয়ে নিজের দিকে খেয়াল করতে ব্যার্থ হই আমি যার কারনবশত এর সিনড্রোমগুলো এড়িয়ে যাই আর এখন এমন সময় এসে খেয়াল করতে পেরেছি যে সময়ে এর থেকে বেঁচে যাবো বলে কোনো নিশ্চয়তা নেই,ডাক্তার বলেছেন বাঁচার চান্স ৩০ পার্সেন্টও নেই,যখন তখন আমার সাথে যেকোনো কিছু হয়ে যেতে পারে,এখন আপনি বলেন কি করে বলতাম সবাইকে এ কথা,আর কাকেই বলতাম,আয়ানকে বলে লাভ নেই,আয়েশা আর মা এটা শুনলে নিজেরাই ভেঙে পড়বেন,তাজবীর কি করবে কে জানে আর বাকি রইলেন আপনি আর আপনার পরিবার,আপনাদের আমি শুধু শুধু দুঃশ্চিতায় ফেলতে চাই নি।কারো উপর বোঝা আমি হতে চাই না।
আর ইউ সিরিয়াস মিস আঁখি,আপনি বুঝতে পারছেন আপনি কি বলছেন,১ বছর হয়ে গেছে যার চার মাস
আপনি তা বুঝতেই পারেন নি আর এখন পার্সেন্টেজ
৩০ থেকেও কম,এর মানে জানেন আপনি?আপনি আমাকেও বলতে পারতেন।নিজে সবার জন্য সব করবেন আর অন্যরা কিছু করতে চাইলে তাকে নিজের উপর সহানুভূতি ছাড়া কিছুই মনে করবেন না,অবিশ্বাস্য।আজ থেকে আপনার চিকিৎসা আমি করবো,এটার দায় ভার শুধু আমার ঘাড়ে থাকবে,আর আপনার কোনো জেদকে এখানে কাজ করতে দিবো না আমি,ইট’স মাই প্রোমিজ টু ইউ,আর আজ থেকে আপনি বেডে ঘুমাবেন,কারন আপনার জন্য খোলা আর বড় জায়গায় ঘুমানো দরকার।
আপনি বললেই হলো আমি বেডে ঘুমাবো না।
আপনাকে ঘুমাতে হবে।
কি করছেন? ছাড়েন আমায়।
আদৃত ঝট করে আঁখিকে কোলে করে বিছানায় নিয়ে গিয়ে শুইয়ে দিলো,আঁখি উঠতে চাইলে।
একদম উঠবেন না,নইলে এখনই আয়েশা,মিরা আন্টি আর তাজবীরকে সত্যটা বলে দিবো।
আপনি আমাকে ব্লেকমেইল করছেন?
ওটাই মনে করেন,এটা ছাড়া আমার কাছে আর কোনো রাস্তা নেই আপনাকে কথা শুনানোর,নাও স্লিপ,সকালে উঠে আগে আমার সাথে হাসপাতাল যাবেন।
আঁখি মুখে একরাশ বিরক্তি নিয়ে আদৃতকে মুখ বাকিয়ে ভেংচি কেটে শুয়ে পড়লো।
এদিকে আদৃতের মন ভরে উঠছে হরেক রকম দুঃশ্চিতায় যা শুধু আঁখিকেই নিয়ে।
____________________
সকালের মিষ্টি রোদ মুখে এসে আপছে পড়লে আঁখির ঘুম ভেঙে যায়,মিষ্টি হাসি উপহারে দিয়ে আঁড়মোড়া ভেঙে উঠে পড়ে আঁখি,চোখ খুলতেই দৃষ্টি পড়ে আদৃতের উপর,বিছানার সামনেই একটি চেয়ারে বসারত অবস্থায় ঘুমিয়ে আছে সে,মুখটা আঁখির পানে করা, যেনো সারারাত ওকেই দেখছিলো….. অপলকে,আঁখির ঠোঁটের কোনে অজানা এক ভালোলাগার হাসি ফুঁটলো কারনটা যেনো সাত সকালে আদৃতের দ্বিধার করতে পেরে,উপস্থিত মুহুর্তে বড্ড ভালো লাগছে আঁখির আদৃতকে দেখতে,এতো খেয়াল করে আঁখি এর আগে আদৃতকে দেখে নি,ললাটে চিন্তার রেশ,গালে খোঁচা দাঁড়ি ফর্সা গালে যেনো বড়ই মানানসই,ললাটে সামনের কিছু চুল আপছে পড়ে আছে,বাইরের বাতাসে দোল খাওয়াচ্ছে আদৃতকে যার ফলস্বরূপ ওর ঘন ছোটো চুলগুলোও খনিক খেলতে ব্যাস্ত,যা দেখতে আঁখির ভালোই লাগছে,বড্ড ইচ্ছে হচ্ছে আঁখির উঠে গিয়ে আদৃতের মুখখানি অল্প ছুঁয়ে দিতে,আগত বাতাসের তেজে উস্কো হয়ে যাওয়া চুলগুলো নিজের আলতো হাতে ঠিক করে দিয়ে আসতে,ভাবনার টানে আঁখি যেনো আগ পিছ সব ভুলে গেলো উঠে গেলো ভাবনাটাকে পুরণ করতে,যেই আদৃতের মুখ ছুঁতে যাবে তখনি আঁখির মনে ধরা দিলো কিছু কথা।
এসব আমি কি করছি?আমি আবার কারো মায়ার পড়ে যাচ্ছি না তো?না,না এমনটা কখনো হতে পারে না,আঁখি কন্ট্রোল ইউরসেল্ফ,আট বছর আগের ভুল আবার করতে যাস না,আর তাছাড়া সে ভুল করার যথেষ্ট ক্ষমতা আর অধিকার দুটোই তোর নেই।
উক্ত ভাবনায় আঁখি গুটিয়ে নেয় হাত আর উল্টো পায়ে চলে যায় ফ্রেস হতে।
আয়ানের নেশা কেটে গেছে এবার।ঘুম থেকে উঠে অনেক মাথা ধরেছে ওর,সাথে মনে পড়তে শুরু হয়েছে সব করুন সত্য যা ওর মাথা ধরার পরিমান আরও বাড়িয়ে তুলছে।বার বার নিজের বাচ্চাকে হারানোর ব্যাথাটাই বেশি মোচড় দিচ্ছে ওর মনের কোনে।এদিকে কোথাও কেউ নেই সে দুই কাজের লোক ছাঁড়া,বাড়িটা শুধুই একটা বন্ধ কুটির থেকে বেশি কিছু মনে হচ্ছে না ওর,আজ বড্ড একা লাগছে আয়ানের,মনের মধ্যে বড়ই লোভ জাগছে যদি এখন আঁখি পাশে থাকতো তবে কোনো একাকিত্ব, কোনো নিরাশা গ্রাস করতে পারতো না ওকে,আঁখি সব কিছু নিমিষেই উড়িয়ে দিতে,আঁখি মানেই তো ছিলো সব কিছুর সুন্দর সমাধান,আঁখির কথা মনে পড়তেই আয়ানের চোখে জল খেলা করতে শুরু করলো,চারিদিকে শুধু শুন্যতা কাজ করতে লাগলো।
আয়েশা এদিকে নিজের ডায়েরি খুঁজে পাগল।
যখনি দেখেছি হয়েছি দিশেহারা,জানতাম না সে অনুভুতির মানে,আগে যে কখনো আসে নি তা অনুভবে,জানা ছিলো কি এই পাগলামি টা আমায়ও করবে গ্রাস? যার নাম হয়তো ভালোলাগা,তবে যে তা না,এটা যে ভালোবাসা,ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি।
হ্যাঁ আপনাকে ভালোবাসি নো…….
দে ওটা, ওটা কোথায় পেলি তুই?ফাজলামোর একটা সীমা থাকে আঁখি।
হা হা হা,আমার দোস্ত ক্ষেপেছে,উনার লুকন্ত অনুভুতি যে ধরা পড়েছে,নোমান সাহেবকে মন দিয়েছেন উনি,আমার কাছ থেকে কখন কথা লুকাতে শিখলি শুনি।
আরে তা নয়,আমি উনাকে ভালোবাসি তবে সেটা আমি কাউকে জানাতে চাই না এমনকি উনাকেও না,এটা আমার মনে সারাজীবন লুকন্ত থাকবে।
চলবে………….