মেঘবৃত্ত পর্ব-৩৬+৩৭

0
464

#মেঘবৃত্ত
#পর্ব_৩৬ ( ধামাকা ২)
#আভা_ইসলাম_রাত্রি

শ্যামা নারীর গায়ে জড়ানো লাল রঙের ফিনফিনে শাড়ি। আঁচল মাটি ছুঁইছুঁই! চুলগুলো খোঁপা করে, তাতে জড়ানো প্রিয় মানুষের দেওয়া বকুল ফুলের গাজরা। নাকে বিয়ের নাকফুল, হাতে দুটো বালা। সর্বোপরি বৃত্তের মেঘ এখন নতুন বধূ সাজে এগিয়ে যাচ্ছে নদীর দিকে। মেঘা জানতো, বৃত্ত নদীর তীরেই আছে। তার জীবনের সবেচেয়ে প্রিয় মানুষটি তার জন্যে অধীরআগ্রহে অপেক্ষা করছে। প্রতিটা প্রহর তাকে দেখার জন্যে তড়পাচ্ছে! মেঘার খুব হাসতে ইচ্ছে করছে। এখনো চোখের কোণায় জলের বিন্দু চিকচিক করছে। গড়াচ্ছে।কিসের এত জল, মেঘা জানে না। শুধু জানে, তার খুব সুখ সুখ পাচ্ছে। মনে হচ্ছে, অতি সুখে মেঘা যেকোন সময় জ্ঞান হারিয়ে বৃত্তের বুকে লুটিয়ে পড়বে।

ওই তো, বৃত্ত! সোনালী রঙের পাঞ্জাবি পরিধান করে নদীর তীরে গা ভাসিয়ে শুয়ে আছে। মেঘা এবার দ্রুত পা চালালো। ইশ, পথটা এতো দীর্ঘ কেনো?
মেঘা ধীরদেহে বৃত্তের ঠিক পাশটায় বসলো। বৃত্ত আকাশের দিকে চেয়ে। আকাশে মেঘের স্তর। মেঘ যেনো অপেক্ষা করছে, কখন বৃত্ত হয়ে নামবে! ভিজিয়ে দেবে পৃথিবীর এই মেঘবৃত্তকে! বৃত্তের গা থেকে তখন কি সুন্দর এক সুভাস নাকে আসছিলো। মেঘার মন চাইলো, বৃত্তের ঘাড়ে নাক ডুবিয়ে সেই সুভাস নিজের মধ্যে ধারণ করে নিবে। কিন্তু, জড়তার কারণে সম্ভব হলো না। বৃত্ত হঠাৎ করেই নীরবতা কাটালো। বললো,
— লাল শাড়িতে সুন্দর লাগছে তোকে!

ইশ, মেঘার আর সহ্য হচ্ছে না। মাথাটা ঝিমঝিম করছে যেনো। হুট করে বৃত্তের মুখে নিজের প্রশংসা শুনে মেঘা দিশেহারা! মেঘা জড়তা নিয়ে শাড়ির আঁচল কোলে রাখলো। মৃদু স্বরে বললো,
— তুই আমাকে ভালো করে দেখলি কোথায়?

বৃত্ত হাসলো। হাতের সিগারেট সজোরে ফেলে দিল নদীর স্বচ্ছ পানিতে। সিগারেটের আগুনটা দপ করে নিভে গেলো। বাকি রইলো, এক অবহেলায় জর্জরিত ভিজে সিগারেট! হঠাৎ বৃত্ত মেঘার দিকে সম্পূর্ণ ঘুরে গেলো। তাকালো ঠিক মেঘার চোখের দিকে। এই প্রথম বৃত্তের চাওনি মেঘাকে তুমুল লজ্জায় ক্ষতবিক্ষত করে ফেললো। লজ্জায় মাথা তোলবার জো রইলো না। নত মুখে চেয়ে রইলো নিজের কোলের দিকে। বৃত্ত হাসলো মেঘার এমন লাজুকতায়। মিহি সুরে বললো,
— এই যে দেখে ফেললাম। এবার বলি? সত্যিই সুন্দর লাগছে তোকে।

ইশ, মেঘার থুতনি চিবুকে ঠেকে গেলো। সারা গালে চেয়ে গেলো লাল আভা। বৃত্ত হুট করে উঠে দাঁড়ালো। পাঞ্জাবি থেকে ময়লা ঝেড়ে হাত বাড়িয়ে দিলো মেঘার দিকে। মেঘা মাথা তুলে সে হাতের দিকে তাকালো। বৃত্ত বললো,
— আমার হাতটা একটু ধরবি? আসলে, খুব নার্ভাস লাগছে। প্রথম তো!

কথাটা বলে বৃত্ত মাথা চুলকালো। মেঘা হেসে ফেললো। বালা জোড়ার শব্দে চারপাশ ঝমঝনিয়ে হাত রাখলো প্রিয়তমের হাতে। বৃত্ত সঙ্গেসঙ্গে মেঘার হাতটা নিজের হাতের মুঠোয় আকড়ে ধরলো। মেঘার হাত গরম হয়ে গেলো, মনে বয়ে গেলো শীতল এক স্রোত! শরীর-টাও কাঁপছে একটু-আকটু।

মেঘবৃত্ত এগিয়ে গেলো সামনে। নদীর তীরে বেঁধে রাখা এক রাজকীয় নৌকা।
বৃত্ত প্রথমে নৌকায় উঠলো। মেঘা তীরেই দাঁড়িয়ে আছে। বৃত্ত হাত বাড়ালো মেঘার দিকে। মেঘা সেই হাত রাখলো। নৌকাতে উঠে দাঁড়ালো। বৃত্ত নৌকা ছেড়ে দিলো। নৌকার বৈঠাতে হাত রাখলো সে। সামনে বসে আছে মেঘা। রাতের আকাশের নিচে নদীর পানিতে ভেসে বেড়ানোর অনুভূতিটা খুব চমৎকার! মেঘা ভুলে গেলো চারপাশ, মত্ত হয়ে গেলো নদীর কলকলে। বৃত্ত নৌকা চালিয়ে নদীর মাঝখানে এলো। এবার সে বৈঠা চালানো থামালো। এই নৌকা আবার ইঞ্জিনেও চলে। বৃত্ত নৌকার বৈঠা একপাশে রেখে ইঞ্জিন চালু করে দিলো। নৌকা চলছে তার নিজের মত। বৃত্ত মেঘার সামনে দাঁড়িয়ে বললো,
— একটু উঠে দাঁড়াবি?

মেঘা মুহূর্তের মধ্যে দাঁড়িয়ে গেলো। এক ন্যানো সেকেন্ডও ক্ষয় করলো না। বৃত্ত কাঁচুমাঁচু কণ্ঠে বললো,
— তোর হাতটা একটু ধরতে পারি? জাস্ট পাঁচ মিনিটের জন্যে?

মেঘার খুব হাসি পাচ্ছে। সে ফিক করে হেসে ফেললো। চুপচাপ নিজের হাত বাড়িয়ে দিলো বৃত্তের দিকে। বৃত্ত মুচকি হেসে হাত দুটো আকড়ে ধরলো। এবার বৃত্ত নিজেকে একটু প্রস্তুত করে নিলো। চোখ রাখলো মেঘের চোখের দিকে। আজ একটু বেশিই লজ্জা লাগছে তার। নিজের বেস্ট ফ্রেন্ডকে ভালোবাসার প্রস্তাব দিতে তার বেশ অস্বস্তি হচ্ছে। তবুও সে বলবে। অনেক তো হলো এই লুকোচুরি খেলা। এবার নাহয় প্রকাশ পাক সব ভালোবাসা!

বৃত্ত চোখ বুজে লম্বা এক শ্বাস নিলো। অতঃপর অতি মিহি কণ্ঠে সুধালো,
— দেখ, মেঘ। ভালোবাসা অনেকরকম হয়। তোর আর আমার সম্পর্ক ভালোবাসার চেয়েও উর্ধ্বে! তার কারণ কি জানিস? কারণ আমার দুজন সবচেয়ে ভালো বন্ধু! বন্ধুত্বের উর্ধ্বে কোনো সম্পর্ক হয়না। মা-ছেলে, বাবা-মেয়ে, ভাই-বোন, স্বামী-স্ত্রী, এদের সম্পর্কের প্রথম ধাপ হলো বন্ধুত্ব। কিন্তু, এখন? আমার মনে হয় আমি তোর জন্যে কিছু ফিল করতে পারছি। সেটাকে ভালোবাসা বলতে চাইলে দ্যান ইটস লাভ। আমি তোকে বন্ধুর চেয়েও বেশি কিছু ভাবছি। এই বেশি কিছুকে তুই ভালোবাসা বলতে চাইলে বলতে পারিস। আচ্ছা তুই কি জানিস, মেঘ আর বৃত্তের মধ্যে সম্পর্ক কি?

মেঘা তখনো অবাক চোখে বৃত্তের দিকে চেয়ে। এখন যা হচ্ছে সব তার স্বপ্ন মনে হচ্ছে। বৃত্তের করা প্রশ্ন শুনে মেঘা মাথা নাড়ালো। যার অর্থ, যে জানে না!
বৃত্ত বললো,
— একটা মেঘ তখনই বৃত্তকে স্পর্শ করতে পারে, যখন সে বৃত্তের আকারে বৃষ্টি হয়ে নামে। মেঘ বৃত্তের মাথায় ছায়া হয়ে থাকে, বৃত্তকে সূর্যের অভিশাপ থেকে রক্ষা করে। তুই কি আমার এমন মেঘ হবি? যে সারাক্ষণ আমার ছায়া হয়ে রবে, যখন বৃষ্টি নামবে তখন সে এই মানুষরুপি বৃত্ততে রূপান্তরিত হবে? হবি কি আমার এমন মেঘ?

বৃত্ত থামলো। অতঃপর, অনেক আশা নিয়ে তাকালো তার মেঘের দিকে। মেঘ তখনো বৃত্তের দিকে চেয়ে। কথা বলতে পারছে না সে। মনে হচ্ছে, কথা বললেই বৃত্ত হারিয়ে যাবে। তার সাথে হারিয়ে যাবে এই এক আকাশ ভালোবাসা! বৃত্ত মেঘার নীরবতা দেখে খানিক আশাহত হলো না। বরং, মেঘার হাতে একটু চাপ দিয়ে মেঘাকে ধ্যানে ফেরালো। মেঘা সম্ভিত ফিরে পেলো। চোখ ভরে এলো তার। চোখের কাজল রেখা সেই পানিতে নষ্ট হলো। মেঘা নিজেকে আর সামলাতে পারলো না। হুট করেই বৃত্তকে জড়িয়ে ধরলো। কাঁদতে কাঁদতে বললো,
— হুম, হবো এমন মেঘ। বৃত্তের মেঘ হবো আমি। তোর মেঘ হবো আমি। তুই যা বলবি তাই হবো আমি, তাই-ই হবো।

#চলবে

#মেঘবৃত্ত
#পর্ব_৩৭ ( ধামাকা ৩)
#আভা_ইসলাম_রাত্রি

মেঘা নিজেকে আর সামলাতে পারলো না। হুট করেই বৃত্তকে জড়িয়ে ধরলো। কাঁদতে কাঁদতে বললো,
— হুম, হবো এমন মেঘ। বৃত্তের মেঘ হবো আমি। তোর মেঘ হবো আমি। তুই যা বলবি তাই হবো আমি, তাই-ই হবো।

বৃত্ত হাসলো। বুকের সাথে লেপ্টে থাকা প্রিয়তমাকে আঁকড়ে ধরলো শক্ত করে। নাক ডুবালো মেঘার ঘাড়ে। মেঘার নিজস্ব ঘ্রাণ নিল প্রানভরে। বৃত্তের অধর ছুঁলো মেঘার ঘাড়ের আশপাশ। মেঘা আবেশে চোখ বুজে ফেললো। কান্না থেকে গেলো চকিতেই। মুচড়ে ধরলো বৃত্তের পিঠের পাঞ্জাবি।

— মেঘ?
এতক্ষণ মেঘা আরামে বৃত্তের ঘাড়ে প্রায় ঘুমিয়েই পড়েছিল। বৃত্ত যেমন আদর করছিল তাকে, মেঘার মনে হচ্ছিল সে মরেই যাচ্ছে। বৃত্তের নরম কণ্ঠের নিজ নাম শুনে মেঘা চোখ খুললো। বৃত্তের পিঠের পাঞ্জাবি আরো একটু শক্ত করে খামচে ধরে মিহি সুরে জবাব দিলো,
— হু?
— একটা গিফট আছে তোর জন্যে! দেখবি?

মেঘা হাসলো খানিক। বৃত্তের ঘাড়ে মুখ ডুবিয়ে সুধালো,
— উহু! এভাবেই বেশি ভালো লাগছে!
বৃত্ত মানলো না। জোরপূর্বক মেঘাকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বললো,
— আরে বাবা, আমি তো আর পালিয়ে যাচ্ছি না।

মেঘার মুখের রং হুট করেই পাল্টে গেলো। হঠাৎ করেই জ্বলন্ত ক্রোধ নিয়ে বৃত্তের কলার খামচে ধরে বললো,
— পালানোর কথা মাথায়ও আনবি না। আমি সত্যিই মরে যাবো তাহলে। বুঝলি?

বৃত্ত একটুখানি অবাক হলো। কিন্তু পরক্ষণেই মেঘার ভালোবাসার পরিমাপ করতে পেরে ফিক করে হেসে ফেললো। মেঘার ললাটে অধর ছুঁইয়ে হেসে বললো,
— আমার পথের শেষটায় শুধু তোর অস্তিত্ব রে মেঘ! তোকে ছেড়ে কোথায় যাবো আমি, পাগল!

মেঘা তখনো নাক ফুলিয়ে আছে। বৃত্ত মুচকি হেসে মেঘার নাক টিপে দিলো। মেঘা রাগ ভাঙলো নিমিষেই। বৃত্ত বললো,
— হয়েছে, আর নাক ফুলাতে হবে না। চল এখন।

মেঘবৃত্ত এসে দাঁড়ালো নৌকার ইঞ্জিনের সামনে। বৃত্ত নৌকার চাবিটা খুলে মেঘার দিকে বাড়িয়ে দিলো। মেঘা তখনো অবাক চোখে চেয়ে। বৃত্ত বললো,
— এই নৌকা আজ থেকে এই মেঘের। সে যখন নদীতে ভাসতে চাইবে, তখন এই নৌকা তার খেদমতে হাজির হবে। সে যখন মেঘ থেকে বৃত্ত হতে চাইবে, এই নৌকা সর্বদা হাজির থাকবে তখন।

মেঘা তখনো স্থির, শান্ত। বিশ্বাস করতে বেশ কষ্ট হচ্ছে তার। একদিনে এত সুখ সহ্য হচ্ছে না তার। মনে হচ্ছে, ঘুম ভাঙলেই সব ফুড়ুৎ! হাওয়ায় মিলিয়ে যাবে এত সুখ, এত ভালোবাসা! ঘুম ভাঙলেই বৃত্ত প্রেমিক থেকে আবারও সেই বন্ধু হয়ে যাবে। মেঘা মনে মনে দোয়া করতে লাগলো, এই ঘুম যেনো সারা জনমে না ভাঙ্গে। বৃত্ত মেঘাকে চুপ থাকতে দেখে ভ্রু কুঁচকালো। মেঘার হাত ধরে জোরপূর্বক চাবিটা মেঘার মুঠোয় পুড়ে দিলো। মেঘা সম্ভিত ফিরে পেলো। চোখ নরম করে নিজ হাতের দিকে তাকালো। বৃত্ত মেঘার অভিপ্রায় বুঝতে পারলো। মেঘা যে এখনো এসব কিছু বিশ্বাস করতে পারছে না, সে বেশ বুঝতে পারছে সে। সে এগিয়ে আসলো। চোখ বন্ধ করে মেঘার ললাটে অধর ছোঁয়ালো। বেশ সময় নিয়ে, ধীর গতিতে। মেঘা চোখ খিচে ফেললো। চোখের কোণা বেয়ে গড়ালো এক ফোঁটা জল। বৃত্ত মেঘার কানের কাছে ফিসফিসিয়ে সুধালো,
— এসব কিছু সত্য, তোর ভ্রম নয়। ডাফার বৃত্ত তার ইন্টেলিজেন্ট মেঘকে ভীষন, ভীষন ভালোবাসে!
____________________________
রাত হয়ে গেছে। মেঘবৃত্ত একটু আগেই বাসায় ফিরলো। রাতের খাওয়া দাওয়া শেষ করে বৃত্ত ঘরে এলো। মেঘা রান্নাঘর গোছাচ্ছে। আজ যেনো মেঘার কাজ ফুরাচ্ছেই না। কবে বৃত্তের কাছে যাবে, তর সইছে না মেঘার। মেঘা জলদি জলদি হাত চালিয়ে সব কাজ শেষ করলো।
বৃত্ত নিজের ঘরে বসে ফাইল ঘাটছে আর বারবার চোখ তুলে দরজার দিকে তাকাচ্ছে। মেঘ এখনো কেনো আসছে না? এত দেরি হয় আসতে? সে কি জানেন, তার বৃত্ত তড়পাচ্ছে তার জন্যে?

একটু পর মেঘা ঘরে এলো। বিছানায় বসে থাকা বৃত্তের দিকে একপলক চেয়ে লজ্জা পেয়ে গেলো সে। আজ হুট করেই তার খুব লজ্জা লাগছে। মনে চাচ্ছে, পায়ের নিচের মাটি ফাঁক হোক, সে মাটির গভীরে মুখ লুকাক। ইশ, বৃত্তের মেঘ হওয়া এত সুখের কেনো?

বৃত্ত মেঘাকে কিছু বলতে যাবে, তার আগেই মেঘা বাথরুমের ঢুকে গেলো। দরজা-টাও আটকে ফেললো। বৃত্ত মেঘার এই আচরণে হতবম্ব হয়ে গেলো। মেঘার এই অদ্ভুদ আচরনের কারণ তার বোধগম্য হলো না। কিন্তু কয়েক মিনিট পরেই বৃত্ত বুঝতে পারলো, তার মেঘ লজ্জা পাচ্ছে! বৃত্ত হাসলো খুব। এই মেয়েটার একেক সময় একেক রূপ! আজকের দিন না আসলে মেঘার এই লজ্জার রূপ বৃত্তের অজানাই থেকে যেত। আর কে কত রূপ দেখতে হবে এই মেয়েটার!

দশ মিনিট পর মেঘ বাথরুম থেকে বের হলো। ঘরের বাতি নেভানো দেখে মেঘার ভ্রু কুঁচকে গেলো। সে কি ঘুমিয়ে গেছে তবে? মেঘার মনটা মুহূর্তেই খারাপ হয়ে গেলো। আজকের এই বিশেষ দিনে বৃত্ত এভাবে ঘুমিয়ে যেতে পারলো? সত্যিই একটা ডাফার সে!
মেঘা মুখটা ভার করে বিছানায় গা এলিয়ে দিলো। বৃত্তের দিকে মুখ ফিরে তার দিকে চেয়ে রইল অপলক! আজ থেকে এই মানুষটা তার! ইশ, মেঘার এত সুখ সুখ অনভুব হচ্ছে কেনো?

ভাবনার মধ্যে আচমকা বৃত্ত হাত বাড়িয়ে মেঘাকে জড়িয়ে ধরে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে ফেললো। মেঘা মুহূর্তেই যেনো জমে গেলো! চোখ বড়বড় করে তাকালো বৃত্তের মুখের পানে। বৃত্ত মেঘার নাকে নাক ঘষে মিহি সুরে বললো,
— তোর ধারনা ভুল, ঘুমাই নি আমি। কিন্তু, এখন ঘুমাবো। আজ দুজন একসাথে সুখ ঘুম ঘুমাবো।

মেঘা মুচকি হেসে বৃত্তের বুকে মুখ গুজলো। বৃত্ত পরম আদরে মেঘাকে জড়িয়ে ধরলো। নিজের সাথে মিশিয়ে ফেললো তার প্রিয়তমাকে।

#চলবে।