রহস্যময়ী লেডি কিলার পর্ব-২১

0
202

#রহস্যময়ী_লেডি_কিলার
#লেখক_আকাশ_মাহমুদ
#পর্ব_২১

–“রুমের অবস্থা দেখে কোনো দিক থেকেই মনে হচ্ছে না যে এটা আমার বাসস্থান। মনে হচ্ছে যেনো এটা কোনো ভয়ানক যুদ্ধের ময়দান। রুমের মধ্যে যারা যারা ছিলো, সবাই চোখে-মুখে হাত দিয়ে ফ্লোরের উপরে গড়াগড়ি খেতে আরম্ভ করেছে। যেটা দেখে আমার বুকের ভিতরে ধুপধুপানি শুরু হয়ে গেছে! তবে আমার শরীরে কোনো ধরনের চোট আসেনি। কারন অবনীর রক্ষাকবচটা যে সে আমার শরীরে পরিধান করিয়ে রেখেছে। তবে আমার কিছু না হলেও বাকিদের অবস্থা দেখে আমার ভিতরটা দুমড়ে-মুচড়ে দলা পেকে যাচ্ছে।
তখনি অববী আমায় বলে উঠলো,

–প্রিয় আপনি ওদের সবাইকে সামলান। তবে আশা করি এই বিস্ফোরণে কারোর তেমন কোনো ক্ষতি হবে না। কারন এই আলোর বিস্ফোরণে সাময়িকের জন্য মানুষ ব্লাইন্ড হয়ে যায়। এছাড়া আর কোনো ক্ষতিই হয় না। তাই আপনি সবাইকে সামলান। আর আমি আমার ক্লোনকে অন্য কোথাও নিয়ে গিয়ে নষ্ট করে দিয়ে আসছি।

–অবনীর কথা শুনে আরো শকট হয়ে গেলাম! কারন সে তার ক্লোনকে অন্য কোথাও নিয়ে গিয়ে নষ্ট করতে চাচ্ছে। তাই তাকে জিজ্ঞাস করলাম, এই অবনী তুমি তোমার ক্লোনকে নষ্ট করবে মানে কি?

–মানে হলো আমার এই ক্লোন এখন পুরোপুরি আমার হাতে নেই। ড্রয়িডের লোকজন হয়তো আমার এই ক্লোনের এক্সেস নিয়ে তাকে নিজেদের দখলে করে রেখেছে। আর তার জন্যই আমার ক্লোন হুট করে নিচে এসে এভাবে পাগলামো করেছে।

–তুমি ক্লোনের এক্সেস কোনো ভাবে তাঁদের থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার ট্রাই করো। না হয় অন্য কোনো উপায়ে ক্লোনকে ঠিক করো। তারা তোমার ক্লোনের এক্সেস নিয়ে নিয়েছে, তার জন্য তো এটাকে নষ্ট করে দেওয়ার কোনো কারন দেখছি না। এটাকে চেষ্টা করলে তো ঠিক ও করা যেতে পারে। আর তাছাড়া এই ক্লোন তো তোমার সাথে কানেক্টেড। ক্লোনকে নষ্ট করলে তোমার ও তো ক্ষতি হতে পারে।

–নাহ প্রিয় এই ক্লোনের এক্সেস নেওয়া আর কোনো ভাবেই সম্ভব না। কারন এখানে বড় কেও লেগেছে। আর তাছাড়া ক্লোন নষ্ট করলে আমার কিছুই হবে না। কারন ক্লোন কে আমি আমার ক্ষতি হয় মতন করে তো নষ্ট করবো না। আমি সেটাকে নষ্ট করলে আমার নিয়মে নষ্ট করবো। যাতে করে আমার কোনো ক্ষতি না হয়। আর তাছাড়া এই ক্লোনকে নষ্ট না করে নিজের কন্ট্রোলে নেওয়ার প্রয়াস করলে বিপদটা নিজেরই হবে। কারন এই ক্লোন আমার তৈরী না। এই ক্লোন ড্রয়িডের ক্লোন-স্পেশালিষ্ট রা বানিয়েছে। তারা চাইলে যে কোনো সময় এই ক্লোনকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে পারে। তাই এটাকে নষ্ট করা এখন ফরজ আমার জন্য।

–ঠিক আছে তাহলে নষ্ট করে দাও ওকে।

–হুম ওকে আমি টেলিপোর্টের সাহায্যে অন্য কোথাও নিয়ে গিয়ে নষ্ট করছি। না হয়তো এখানে করলে আবার একটা বিস্ফোরণ ঘটবে। আর আপনি সবাইকে এতো সময়ের মাঝে সামলে নিন।

–আচ্ছা।
অবনী তার ক্লোনকে নিয়ে টেলিপোর্টের সাহায্যে অদৃশ্য হয়ে গেছে। আর আমি সবাইকে একেক করে সামলে নিলাম। সবাই আমার কথা মতন চুপচাপ শান্ত হয়ে বসে আছে। কিন্তু তারা এখনো কেউ কিছু দেখতে পাচ্ছে না। তবে কিছুক্ষণ যেতেই অবনীর কথা মতন সবার চোখের জ্যোতি ফিরে এলো। সবাই বড় বড় নিশ্বাস নিচ্ছে। কারন অনেকটা সময় পর তারা এই দাঙ্গাল থেকে মুক্তি পেয়েছে। এছাড়া যাদের শরীরে আঘাত লেগেছে অবনীর ক্লোনের ছুঁড়ে মারা রিং দ্বারা, তারা ব্যথায় কোকাচ্ছে। তাই মুজাহিদকে বললাম তার সেই ডক্টরকে আবারো নিয়ে আসতে। তখনি সে আমায় বললো,

–ভাই নিয়ে আসতে হবে না। কারন সে আমার ফ্যামিলি ডক্টর৷ তাকে ফোন করলেই সে চলে আসবে।

–ঠিক আছে তাহলে ফোন করে আসতে বল। আর তুই নিজের হাতের ও একটু খেয়াল রাখ। কারন রিংয়ের আঘাতে তোর হাত ও অনেকখানি কেটে গেছে।

–আমাকে নিয়ে আমার কোনো টেনশন নাই। আমার টেনশন বাকিদেরকে নিয়ে।

–আচ্ছা তাও নিজের খেয়াল রাখায় কমতি রাখিস না।

–আচ্ছা ভাই।

–মুজাহিদ আমার কথা মতন ডক্টরকে ফোন করে আসতে বললো। কিছু সময়ের মাঝে ডক্টর চলে এসেছে৷ ডক্টর এসে যাদের হাতে আঘাত লেগেছে, তাঁদের সবাইকে ট্রিটমেন্ট করলো। ট্রিটমেন্ট করা শেষ হতেই মুজাহিদকে বললাম তিনাকে খুশি করতে। আর গাড়ি পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে আসতে। মুজাহিদ তাই করলো। ডাক্তারকে ফিস দিয়ে তিনাকে গাড়ি পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে আবারো ঘরে ফিরে আসলো। মুজাহিদ ঘরে ফিরে আসতে আসতে অবনীও এসে হাজির হয়েছে। অবনী হাজির হয়েই আমাকে বললো,

–আপনি কবে ড্রয়িডের মিশনে যাবেন?

–ভেবেছিলাম তো তুমি আমি সুস্থ হলে যাবো। কিন্তু এখন তো তোমার ক্লোন সবার অবস্থা বারোটা বাজিয়ে দিয়েছি। তাই আরো কিছুদিন সময় লাগবে।

–না আপনি আর কোনো সময় নিবেন না। কারন ড্রয়িডের লোকজন অনেক বেড়েছে। তাঁদের পাখনা কাটতে হবে। অবশ্য জানি আমি মুখে বললেই সেটা হয়ে যাবে না। কারন তারা অনেক শক্তিশালী। তবে আপনি যেহেতু তাঁদের বিরুদ্ধে লড়াই করবেন এই, তাহলে আজকেই মিশনে যাওয়া উচিৎ।

–অবনী আজকে কি করে? তুমি সবার অবস্থা দেখেছো? আর তাছাড়া সেখানে যেতে অনেক সময় লাগে। বললেই তো এই অবেলায় সেখানে চলে যেতে পারবো না।

–তাহলে আগামীকাল চলুন। আর বাকিটা আমি দেখে নিব। কিন্তু সেই ড্রয়িডের লোকজনকে আপনার শেষ করতে হবে। তাঁদের সব কয়টাকে মেরে বালি চাপা দিবেন।

–ঠিক আছে। আমিও ভেবেছিলাম জলদি সেখানে যাবো। কিন্তু শরীর খারাপের জন্য দুই-একদিন অপেক্ষা করলাম। আর তাতে আমাদের যাওয়ার কাজ আরো পিছিয়ে গেছে। তবে আমরা থেমে থাকবো না। আগামীকাল এই সেখানে যাবো।

–হুম।
কারন আপনি যতো দেরি করবেন, ততো সমস্যা বাড়বে।

–এই মুজাহিদ তোরা সবাই প্রিপারেশন নে। আমরা সবাই মিলে আগামীকাল ড্রয়িডে যাবো।

–আচ্ছা আমি হেলিকপ্টার ঠিক করা থেকে শুরু করে সমস্ত ছেলেপেলেকে জানিয়ে দিব।
.
মুজাহিদের কথার পর অবনী বলে উঠলো,

–আচ্ছা যা যা করার আপনারা করেন। তবে আমি একটা পারফেক্ট প্ল্যান বলতে পারি আপনাদেরকে। যাতে করে আপনাদের কাজ আরো সহজ হয়ে যাবে। আর তাছাড়া প্ল্যান করেই সব করতে হবে। না হয় ড্রয়িডের কাউকেই আপনারা কিছু করতে পারবেন না।
.
অবনীর কথা শুনে আকাশ অবনীকে জিজ্ঞাস করে,

–কি প্ল্যান অবনী?

–আমি পুরো ড্রয়িডকে টেলিপোর্টের মাধ্যমে তাঁদের নিজ স্থান থেকে সরিয়ে অন্য জায়গায় নিয়ে আসবো। আপনারা সবাই দুই দলে বিভক্ত হয়ে একদল তাঁদের ড্রয়িডকে ভেঙ্গে চুরমার করে দিবেন। আর আরেকদল আমার সাথে থেকে ড্রয়িডের লোকজনকে মারতে সহায়তা করবেন। আর প্রিয় আপনি সব কিছু থেকে নিজেকে একটু সামলে রাখবেন। সম্ভব হলে সব কিছু থেকে দূরত্ব বজায় রাখবেন।

–অবনী আমাকে তুমি কেন যে এতোটা আগলে রাখতে চাও আমি বুঝি না। এই আমাকে কি তোমার বাচ্চা মনে হয়?

–না আপনি বাচ্চা না। কিন্তু আমি চাই আপনার কোনো ধরনের ক্ষতি না হোক।

–অবনী আমার চিন্তা তুমি মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলো। কারন আমি নিজেকে সামলে রাখতে জানি। আর তার উপরে আমি একজন মাইন্ড গেমার ও বলতে পারো। দেখো তোমার প্ল্যানটা ঠিক আছে। কিন্তু তাতে আমাদের দুই দলে বিভক্ত হতে হবে না। আমি বলছি কি ভাবে কি করবে। প্রথমত আমরা সবাই তোমার সাথে থাকবো। আর দু’জন মানুষ জায়গা মতন থাকবে। তুমি ড্রয়িডকে টেলিপোর্ট করে নিয়ে যেতে না যেতেই দেখবে তারা ড্রয়িডের নকশা সহ পাল্টে ফেলেছে।

–কি ভাবে নকশা পাল্টাবে তারা?

–অবনী আমার কাছে এমন দু’জন মানুষ আছে, তারা শহরের উঁচু উঁচু ইমারত বা যে সকল বড় বড় বিল্ডিং আছে, সেসব কে লেন-মাইনের দ্বারা মুহূর্তের মধ্যেই ধুলোয় মিশিয়ে দিতে পারে।

–বাহ তাহলে তো ঠিক আছে। শুনেন আপনরা একটা লোকেশান ঠিক করুন। আমি পুরো ড্রয়িডকে টেলিপোর্টের সাহায্য উঠিয়ে সেখানে নিয়ে আসবো। আর আপনার লোক আগ থেকে সেখানে মাইন পুঁতে রাখবে। তাতে করে ড্রয়িড মুহূর্তের মাঝেই খতম হয়ে যাবে। আর আমরা এদিকে সবাই মিলে ড্রয়িডের লোকজনকে ধরবো।

–হুম অবনী এমনটাই করবো। তবে লোকেশন আমি নয় তুমি ঠিক করো। কারন তুমি ড্রয়িডের জঙ্গল সম্পর্কে ভালো বলতে পারবে।

–আচ্ছা তাহলে আমিই বলছি। ড্রয়িড থেকে কিছুটা দূরপ একটা ফাঁকা জায়গা আছে। সেখানে আপনি আপনার লোক পাঠিয়ে রাখবেন। আর আমরা ড্রয়িডের লোকজনকে শেষ করে তারপর পুরো ড্রয়িডকে শেষ করবো।

–আচ্ছা ঠিক আছে৷ এখন চলো ঘুমোতে যাবে। রাত হয়ে এসেছে। আর শোন তোরা সবাই ঘুমিয়ে পড়। কারন সকাল সকাল উঠতে হবে।
.
আকাশের কথায় সবাই ঘুমোতে চলে যায়৷ আকাশ ও অবনীকে নিয়ে রুমে চলে আসে। তারা দু’জন একই সাথে থাকে। তবে যদিও তাঁদের বিয়ে হয়নি। কিন্তু তারা এখন থেকেই বেড শেয়ার করে ঘুমোয়। এই বিষয় নিয়ে আপনারা আবার কিছু মনে করবেন না যেনো। কারন তারা এক সাথে ঘুমোলেও মাঝে বালিশ দিয়ে রাখে। অবশ্য মাঝে বালিশ থাকুক আর যাই থাকুক চাহিদা এতসব কিছু মানে না। এই নিয়ে একটা প্রবাদ ও আছে। যে কুকুর চিনেনা মানুষের পাত৷ ইশক্ চিনেনা জাত-কুজাত। তবে একটা কথা কি, সব কিছুই কিন্তু আপনার নিজের মধ্যে। আপনি নিজেকে কতোটুকু সংযত রাখবেন সেটা একান্তই আপনার উপরে নির্ভর করবে। বাকি সবার কথা তো বলতে পারবো না, তবে আকাশ এই বিষয় নিয়ে প্রচন্ড সেনসেটিভ। সে এসবের ধারেকাছেও নেই। অবনীকে মাঝেসাঝে সে বুকে টেনে নেয়। যেমনটা বাকি প্রেমিক পুরুষরাও করে। সে এই বুকে টেনে নেওয়ার পর্যন্তই সীমাবদ্ধ। কিন্তু রাতের বেলায় সেটাও সে করে না। কারন শয়তান মানুষকে সঠিক পথ দেখিয়ে সত্তুর হাজার ভাবে ধোঁকা দিতে পারে। সেখানে অসৎ পন্থার তো অভাব নেই। তাই সে নিজের সুরক্ষার জন্য মাঝে বালিশ দিয়ে রেখে ঘুমোয়। “অন্যদিকে অবনী চায় আকাশের কাছে যেতে। কিন্তু সে আকাশের যংযত হওয়া দেখে নিজেকেও গুটিয়ে রাখে। রাতের বেলায় দু’জন দু’জনের মতন শুয়ে আছে। দেখতে দেখতে সকাল হয়ে গিয়েছে। সকাল হতেই সবাই ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে মিশনের জন্য তৈরী হয়ে যায়। আকাশ সেই দু’জনকে রাতেই ফোন করে জানিয়ে দিয়েছে, যে সে ঘুম থেকে উঠার আগেই যেনো তারা বাংলোয় চলে আসে। সেই দু’জন আকাশের কথা মতন আকাশ ঘুম থেকে উঠবার আগেই আকাশের বাংলোতে এসে হাজির হয়। সবাই ফুল প্রিপারেশন নিয়ে বসে আছে। এখন খালি মুজাহিদের মোতায়ন করা হেলিকপ্টার গুলো আসা বাকি। কিছু সময়ের মাঝে হেলিকপ্টার ও এসে পড়ে। একে একে সবাই হেলিকপ্টারের উপরে উঠে উঠে বসছে। বাকি আছে খালি আকাশ আর অবনী। তাই আকাশ অবনীকে বলে হেলিকপ্টারে উঠে বসতে। কিন্তু অবনী তা না করে আকাশকে বলে,

–আমি হেলিকপ্টারে করে যাবো না। আর আপনারো হেলিকপ্টারে করে যেতে হবে না। আপনি সবাইকে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হতে বলুন। আর আমি আপনাকে টেলিপোর্ট করে সেখানে নিয়ে যাচ্ছি।

–আচ্ছা।
এই মুজাহিদ তোরা সবাই রওয়ানা হ। আমি অবনীর সঙ্গে আসছি।
.
আকাশের কথা শুনে রাজ বলে উঠে,

–ভাই আমি আগেই জানতাম আপনি ভাবীর সাথে অন্য ভাবে সেখানে যাবেন। তাই আমি কোনো কথাবার্তা ছাড়া আগেই হেলিকপ্টারে এসে উঠে বসেছি। যাক ভাই জলদি চলে আসবেন। আর ভাবী ভাইকে একটু সাবধানে সেখানে নিয়ে আসবেন।

–সেটা নিয়ে আপনারা একদম চিন্তা করবেন না। আমার উনাকে আমি ঠিক সামলে নিয়ে যাবো। আর হ্যাঁ একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা। আমি একটা রাস্তা বলে দিচ্ছি। আপনারা সবাই সেই পথ ধরে যাবেন। তাহলে জলদি পৌঁছাতে পারবেন।

–আচ্ছা ভাবী বলেন।

–আপনার উত্তর দিশা ধরে ড্রয়িডে যাবেন। তাহলে সোজা ড্রয়িডের কাছাকাছি একটা জায়গায় গিয়ে পৌঁছাবেন। সেখানে পৌঁছে দেখবেন অনেক বড় একটা খালি জায়গা আছে। সেখানে আপনারা হেলিকপ্টার ল্যান্ড করে মিনিট দুয়েক সামনে হাঁটলেই ড্রয়িডের অদৃশ্য দেওয়াল দেখতে পাবেন। আমি আর উনি আগ থেকেই সেখানে থাকবো।

–ঠিক আছে ভাবী।
এবার আমরা চললাম।

–হুম।
.
সবাই ড্রয়িডের উদ্দেশ্যে রওনায়া হয়। তার ঘন্টা খানিক বাদে অবনী আকাশকে জড়িয়ে ধরে টেলিপোর্টের মাধ্যমে ড্রয়িডের অদৃশ্য রক্ষাকবচ বা অদৃশ্য সীমানার সামনে যায়। তারা সেখানে গিয়ে কিছু সময় অপেক্ষা করলেই বাকিরা অবনীর বলা পথ অনুসরণ করে সেখানে চলে আসে। তারপর অবনী সবাইকে একত্রে হতে বলে সে তার শক্তির মাধ্যমে অদৃশ্য দেওয়াল টাকে হাত দিয়ে ছুঁয়ে দেয়। যার ফলে অদৃশ্য দেওয়াল টা পুরো গায়েব হয়ে যায়। অদৃশ্য দেওয়াল গায়েব হতেই সবাই হুর হুর করে ড্রয়িডের ভিতের যাওয়ার জন্য রওয়ানা হয়। তারা এগোতো এগোতে ড্রয়িডের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে। তখনি ড্রয়িডের ভিতর থেকে পঁচিশ-ত্রিশজন বেরিয়ে আসে। আর তাঁদের পিছন পিছন আরেকটা লোক বেরিয়ে আসে। যার সারা শরীর উজ্জ্বল নক্ষত্রের ন্যায় জ্বলজ্বল করে জ্বলছে। যার চেহারার আকৃতি উজ্জ্বল রশ্মির কারনে মোটেও দেখা যাচ্ছে না। সেই লোকটা সবাইকে হুমুক করে আকাশদেরকে মারার জন্য। সবাই সেই লোকটার কথা মতন আকাশদের দিকে তেড়েফুঁড়ে আসে সবাইকে শেষ করে দেওয়ার জন্য। যেটা দেখে সবাই ঘাবড়ে যায়৷ কিন্তু তারা পিছু হাঁটে না। কারন তারাও প্রিপারেশন নিয়ে এসেছে। তার উপরে তাঁদের সাথে তো অবনী আছেই। সবার বিশ্বাস অবনী তাঁদের সবাইকে বাঁচিয়ে নিবে। তেড়ে আসা লোক গুলো আকাশদের একদম কাছাকাছি এসে সবাই থেমে যায়। আর জোরে জোরে হাসতে আরম্ভ করে। যেটা দেখে আকাশ অবনীকে ইশারায় বলে,

–তুমি তাঁদের সবাইকে শেষ করে দেওয়ার লক্ষ্যে সামনে আগাও। আমরাও তোমার সঙ্গে সঙ্গে সামনে আগাচ্ছি।
.
অবনী আকাশের এইরূপ ইশারা পেয়ে তেড়ে আসা লোক গুলোর দিকে এগিয়ে যায়। কিন্তু সে এগিয়ে গিয়ে তাঁদের কিছুই করে না। বরং সে তাঁদের কাছে এগিয়ে গিয়ে তাঁদের দলে ভিড়ে যায়। তারপর সে শব্দ করে হাসতে হাসতে ড্রয়িডের লোকজনকে বলে,

–এই যে নাও ড্রয়িডবাসী। তোমাদের জন্য সব কয়টা মুরগাকে আমি ধরে নিয়ে এসেছি। এবার তোমরা সবাই মিলে সব কয়টা মুরগার রোস্ট বানাও। আর এমন ভাবে রোস্ট বানাবে, যাতে করে তাঁদের হাড়গোড় ও দেখতে পাওয়া না যায়।
.
মুহূর্তের মধ্যেই অবনীর এই মিরজাফরি রূপ দেখে আকাশ এবং বাকি সবার হুঁশ উড়ে যায়! সবাই অবাক দৃষ্টিতে অবনীর দিকে তাকিয়ে আছে….

চলবে….